আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

মৎস্য

বরিশালের বাজার ইলিশে সয়লাব

বরিশালে ইলিশের সবচেয়ে বড় বাজার (মোকাম) নগরের পোর্ট রোড। সেই বাজারের চিরচেনা রূপ বদলে গেছে। প্রতিবছর শীতের এ সময়ে এই মোকামে সামুদ্রিক মাছের দাপট থাকত, সেখানে পুরো বাজার দখল করে আছে তাজা ইলিশ। শ্রমিকদের ব্যস্ততা, ক্রেতাদের ভিড়, মহাজনদের হাসিমুখ। ঘাটে নোঙর করা ট্রলারগুলোর খোল ভরে আছে রুপালি ইলিশে।

শীতে বরিশালের বাজার ইলিশে ঠাসা। গড়নে উজ্জ্বল এই রুপালি ইলিশ ওজন-আকৃতিতেও বড়। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে। এক সপ্তাহ ধরে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীতে ইলিশের এমন প্রাচুর্য অবাক করেছে ব্যবসায়ী, জেলে, ক্রেতাসহ সবাইকে। কারণ, বিগত দিনে এই মৌসুমে এমন ঘটনা আর ঘটেনি।

দেশের ইলিশ বিশেষজ্ঞরা শীত মৌসুমে ইলিশের এমন প্রাচুর্যকে অস্বাভাবিক মনে না করে বরং ইতিবাচক ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এম নিয়ামুল নাসের প্রথম আলোকে বলেন, এ সময়ে ইলিশের প্রজনন পর্বের দ্বিতীয় অধ্যায়। শীতের শেষ দিকটায় এমনটা হয়। সংরক্ষণ ভালো হওয়ায় এবার ইলিশের পরিমাণ বেড়েছে এবং আকার বড় হয়েছে।

বরিশালের পোর্ট রোডের ব্যবসায়ী জহির উদ্দীন বললেন, ‘কোনো দিন শীতে এত বড় আর এত ইলিশের আমদানি দেখিনি। আগের বছরগুলোতে এই সময়ে ছিটেফোঁটা ইলিশ আসত। তা-ও আকারে ছোট, সেসব ইলিশ তেমন পরিপুষ্ট ছিল না; কিন্তু এবার আমদানি যেমন ব্যাপক, তেমনি ইলিশের আকার বড় এবং পরিপুষ্ট। মনে হয় আমাদের সুদিন ফিরবে ইলিশে।’

ব্যবসায়ীরা বললেন, গত শনিবার এই মোকামে ৫৫০ মণ ইলিশ এসেছে। রোববারও একই পরিমাণ ইলিশ এসেছে। আজ সোমবার কিছুটা কমে গেলেও ৪৫০ মণের মতো এসেছে। এই সময়ে এটা অবিশ্বাস্য।

পোর্ট রোডের মৎস্য আড়দার সমিতির সভাপতি আশরাফ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৌসুমে এবার ইলিশ তেমন মেলেনি। এ জন্য জেলে-ব্যবসায়ীরা লাভের মুখ দেখেননি। কিন্তু শীত মৌসুমে অসময়ে ইলিশের আমদানি আমাদের সব কষ্ট ধুয়ে দিয়েছে। দামও কম। ৭০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২৫ হাজার টাকা। আর এক কেজির ওপরে ওজনের ইলিশ মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকায়। আর ৪৫০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মণপ্রতি ১২ হাজার থেকে ২০ হাজারের মধ্যে বিক্রি হচ্ছে পাইকারি বাজারে।’

ইলিশের আকার-আকৃতি ও ওজন বাড়ছে
ইলিশের আকার-আকৃতি, ওজন, প্রজনন ও দাম নিয়ে নিয়মিত জরিপ করে মৎস্য অধিদপ্তর ও আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের ইকো ফিশ প্রকল্প। তাদের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত তিন বছরে দেশের ইলিশের গড় আকৃতি ও ওজন বেড়েছে। ২০১৪ সালে ধরা পড়া ইলিশের গড় ওজন ছিল ৫১০ গ্রাম। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৮৮০ গ্রাম। একই সময়ে ধরা পড়া মাঝারি আকৃতির (আধা কেজি থেকে ১ কেজি) ইলিশ ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭৭ শতাংশ হয়েছে। আর জাটকা ধরার পরিমাণ ৬০ শতাংশ থেকে কমে ১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এতে ইলিশের গড় দামও গত এক বছরে ২০ শতাংশ কমেছে। অসময়ে আকারে বড় ইলিশ ধরা পড়ার বিষয়টি বিশেষজ্ঞদের সেই ধারণার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উৎপাদন বাড়ছে, বড় অবদান বরিশালের
ইলিশ আহরণে বরিশাল বিভাগের ঐশ্বর্য ক্রমেই বাড়ছে। গত ১০ বছরে এই বিভাগে ইলিশ আহরণের পরিমাণ দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি কয়েক বছর ধরেই দেশের মোট ইলিশের ৬৬ ভাগের বেশি আহরিত হচ্ছে এই বিভাগ থেকে। চলতি অর্থবছরেও তা আরও বাড়বে বলে মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
পরিসংখ্যান বলছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে ইলিশ আহরণের পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ৪ দশমিক ১৯ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। সে অনুযায়ী বরিশালেও তা প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন বৃদ্ধি পায়।
মৎস্য বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মোট ইলিশ আহরিত হয় ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বরিশাল বিভাগ থেকেই আহরিত হয়েছিল ৩ লাখ ৩২ হাজার ২৫ মেট্রিক টন। এর আগের অর্থবছরে দেশে আহরিত মোট ইলিশের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪১৭ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বরিশাল থেকে আহরিত হয়েছিল ৩ লাখ ২৪ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন, যা দেশে মোট উৎপাদনের প্রায় ৬৬ শতাংশ।

বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইলিশের জোগান দেয় ভোলা ও বরগুনা। ভোলায় গত অর্থবছরে ইলিশ আহরিত হয় ১ লাখ ৬১ হাজার ৮৩২ মেট্রিক টন ও বরগুনায় আহরিত হয় ৭০ হাজার ২৩৭ মেট্রিক টন।

ইলিশ রক্ষায় প্রকল্প
উপকূলের নদ-নদীতে ইলিশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় দেশের আট জেলায় ‘ইকো ফিশ’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর আওতায় দেশে প্রথমবারের মতো ইলিশের বংশবিস্তার, প্রজননকাল নির্ধারণসহ নানা দিক নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের মার্চে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের মেয়াদ ৫ বছর। প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, শরীয়তপুর, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলায়। এতে মৎস্য অধিদপ্তরকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিশ।

প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, ২০০১ সাল থেকে দেশে ইলিশ আহরণের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে কমতে শুরু করে। এরপর নানামুখী উদ্যোগে ইলিশ আহরণ কিছুটা বাড়ে। তবে ২০১৪ সালের পর এর পরিমাণ অনেকটা বাড়ে। ২০১৬ সালে যেখানে দেশে ইলিশ আহরণের হার ছিল ৩ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন, সেখানে তার পরের বছর থেকে তিন বছরে ধরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ ১৭ হাজার ১৮৮ মেট্রিক টনে। এটা সম্ভব হয়েছে ইলিশ নিয়ে পরিকল্পিত ও বিজ্ঞানভিত্তিক কার্যক্রম হাতে নেওয়ায়।

ইকো ফিশ প্রকল্পের দলনেতা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুল ওহাব গতকাল সোমবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় উপকূলের ইলিশ মাছ অতিমাত্রায় আহরণ থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং তা বড় হওয়ার সুযোগ পাওয়ায় দেশে ইলিশের উৎপাদন অবিশ্বাস্য হারে বেড়েছে। এতে ইলিশ মাছের পাশাপাশি অন্য মাছ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা পেয়ে সেসবের উৎপাদনও আগের চেয়ে অনেকাংশে বেড়েছে।

মৎস্য

রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ

রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ
রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ

রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ সহজ এবং সুবিধাজনক। বেকারত্ব দূর করতে কম খরচে অত্যাধিক লাভজনক এই মাছ চাষ সম্পর্কে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ। তিনি জানান, অন্যান্য মাছ চাষের চেয়ে এই মিশ্র মাছ চাষের সুবিধা বেশি।

এই মাছ চাষের সুবিধা, চাষের পদ্ধতি, মাছের পরিচর্যা, পোনা মজুদ এবং মাছ ধরার সময়সহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হলো-

সুবিধাসমূহ
মৌসুমী পুকুর, বার্ষিক পুকুর ও অন্যান্য জলাশয়ে এ মাছ চাষ করা যায়। এ মাছ চাষে পুকুরের সব স্তরের খাবারের ব্যবহার নিশ্চিত হয়। ৫-৬ মাসের মধ্যেই কয়েক ধরনের রুইজাতীয় মাছের পাশাপাশি পাবদা ও গুলশা মাছ বাজারজাত করা যায়। শুধু রুইজাতীয় মাছ চাষের চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়। পাবদা ও গুলশা মাছ সুস্বাদু, তাই বাজার মূল্য অনেক বেশি।

পুকুর প্রস্তুত
শুকনো মৌসুমে পুকুর থেকে জলজ আগাছা পরিষ্কার ও পাড় মেরামত করতে হবে। ছোট মাছ চাষের ক্ষেত্রে পুকুর শুকানো উচিত নয়। তাই বার বার ঘন ফাঁসের জাল টেনে রাক্ষুসে মাছ ও ক্ষতিকর প্রাণি অপসারণ করতে হবে। প্রতি শতকে ১ কেজি পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। মাটির গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে চুনের মাত্রা কম-বেশি হয়ে থাকে। পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মানোর জন্য পোনা ছাড়ার আগে সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি শতকে ৪-৬ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করা ভালো। পানির রং সবুজ বা বাদামি সবুজ হলে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত হয়।

 রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ
রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ

পোনা মজুদ
পুকুরে মাছ চাষের সফলতা নির্ভর করে ভালো জাতের সুস্থ, সবল ও সঠিক প্রজাতির পোনা সঠিক সংখ্যায় মজুদের ওপর। পুকুরে পোনা ছাড়ার আগে পরিবহনকৃত পোনা পুকুরের পানির তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে ১০ লিটার পানি ও ১ চামচ (৫ গ্রাম) পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট অথবা ১০০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করে তাতে ১-২ মিনিট গোসল করিয়ে পোনা জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
নিম্নের ছকে বর্ণিত যে কোনো একটি নমুনা অনুযায়ী ১০-১২ সেন্টিমিটার আকারের রুইজাতীয় মাছ ও ৫-৭ সেন্টিমিটার আকারের পাবদা বা গুলশা মাছের সুস্থ সবল পোনা মজুদ করতে হবে।
কার্প-পাবদা মডেল– ১ এর জন্য মাছের প্রজাতি ও সংখ্যা হচ্ছে কাতলা-১২, রুই-৮, মৃগেল-৮, গ্রাসকার্প-২, পাবদা-৭০, মোট-১০০টি।
কার্প-পাবদা মডেল– ২ এর জন্য মাছের প্রজাতি ও সংখ্যা হচ্ছে সিলভার কার্প-৮, কাতলা-৪, মৃগেল-৮, গ্রাসকার্প-২, সরপুটি-৮, পাবদা-৭০, মোট-১০০টি।
কার্প-পাবদা-গুলশা মডেলের জন্য মাছের প্রজাতি ও সংখ্যা হচ্ছে কাতলা-৮, রুই-১০, মৃগেল-১০, গ্রাসকার্প-২, পাবদা- ৫০, গুলশা-৫০, মোট-১৩০টি।

মজুদ পরবর্তী পরিচর্যা
পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য রাখার জন্য দৈনিক বা ৭-১৫ দিন পরপর নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হয়। সাধারণ নিয়মানুসারে দৈনিক শতক প্রতি ১৫০ গ্রাম গোবর অথবা ৩০০ গ্রাম কম্পোস্ট, ৫ গ্রাম ইউরিয়া ও ৫ গ্রাম টিএসপি একটি পাত্রে পানির সঙ্গে ১ দিন ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকাল ১০-১১টায় পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। অথবা ৭ দিন বা ১০ দিন পরপর সার ব্যবহার করতে হলে উপরোক্ত পরিমাণে দিনের গুণিতক হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে প্রতিদিন সার ব্যবহার করাই সর্বোৎকৃষ্ট। জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে পরিমাণমতো ও নিয়মিত ব্যবহার করলে বেশি উৎপাদন পাওয়া যায়।

সম্পূরক খাদ্য সরবরাহ
কার্প-পাবদা-গুলশার মিশ্র চাষে সম্পূরক খাবার হিসেবে ব্যবহৃত খাদ্য উপাদান শতকরা মিশ্রণের হার- চালের মিহি কুড়া-৪০, গমের ভুসি-২০, সরিষার খৈল-২০, ফিশমিল-২০, মোট-১০০। ১০-১২ ঘণ্টা ভেজানো সরিষার খৈলের সঙ্গে শুকনো গমের ভুসি বা চালের মিহি কুড়া মিশিয়ে গোলাকার বল তৈরি করতে হবে। পুকুরে মজুদকৃত মাছের মোট ওজনের শতকরা ৩-৫ ভাগ হারে দৈনিক খাবার দিতে হবে। শীতকালে খাবারের পরিমাণ শতকরা ১-২ ভাগ হারে সরবরাহ করতে হবে। বরাদ্দকৃত খাবার দিনে ২ বার প্রয়োগ করা ভালো। মাসিক নমুনায়নের মাধ্যমে খাবারের পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠিত কোম্পানির বাণিজ্যিক পিলেট খাবারও মাছকে সরবরাহ করা যেতে পারে।

সতর্কতা
পুকুরের তলদেশে কাদা থাকলে গ্যাস জমে থাকতে পারে। দড়ির সঙ্গে লোহা বা মাটির কাঠি কিংবা ইট বেঁধে হররা তৈরি করে পুকুরের তলঘেঁষে আস্তে আস্তে টেনে তলার গ্যাস বের করে দিতে হবে। প্রতি মাসে একবার কিছু মাছ ধরে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। নিয়মিত খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। পুকুরে পানি কমে গেলে পানি সরবরাহ করতে হবে। পানি বেশি সবুজ হয়ে গেলে সার প্রয়োগ বন্ধ রাখতে হবে।

 রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ
রুইজাতীয় মাছের সঙ্গে পাবদা ও গুলশার মিশ্র চাষ

আংশিক আহরণ
রুইজাতীয় সব মাছ ও পাবদা-গুলশা মাছের বৃদ্ধির হার সমান নয়। বেশি লাভের জন্য বড় মাছ আহরণ করে ছোট মাছগুলোকে বড় হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া উচিত। তাই রুইজাতীয় যে মাছগুলো ৫০০-৭০০ গ্রামের উপরে হবে তা আহরণ করে সমসংখ্যক পোনা ছাড়তে হয়।

চূড়ান্ত আহরণ
বছর শেষে সব মাছ আহরণ করে ফেলতে হবে। বাজার দর এবং পরবর্তী ফসলের জন্য পোনা প্রাপ্তির ওপর নির্ভর করে চূড়ান্ত আহরণের সময়কাল ঠিক করতে হবে। পাবদা ও গুলশা মাছ ৮-৯ মাস চাষে যথাক্রমে ২৫-৩০ গ্রাম ও ৪৫-৫০ গ্রাম ওজনের হয় এবং তা বিক্রির উপযুক্ত হয়।

পরামর্শ
আগ্রহীরা বিস্তারিত তথ্যের জন্য নিজ নিজ উপজেলা ও জেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়

পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়
পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়

আমরা মাছেভাতে বাঙালি। আর পাবদা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু মাছ। তবে মাছটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে মাছটির বংশবৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। তার মধ্যে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এ মাছ রক্ষা করা সম্ভব। এর জন্য কিছু কৌশল জেনে নেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নেই কৌশলগুলো-

ব্রুড প্রতিপালন

প্রজনন ঋতুর ৪-৫ মাস আগে থেকেই ব্রুড মাছগুলোকে বিশেষ যত্নের সঙ্গে লালন পালন করা উচিত। এ সময় খাবার হিসেবে ফিশমিল, চালের কুঁড়া, গমের ভূষি, সয়াবিন মিল, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, আটা এবং ভিটামিনের প্রিমিক্সের মিশ্রণ মাছের মোট ওজনের ৫-৮ ভাগ দিতে হবে। ডিম্বাশয়ের পরিপক্বতা আনার জন্য ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ খাবার ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাছাড়া পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যের পর্যাপ্ততার জন্য নিয়মিত গোবর, ইউরিয়া ও টিএসপি পরিমাণ মতো দিতে হবে।

মাছ বাছাই

ব্রুড বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পুরুষ মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে স্ত্রী মাছের চেয়ে ছোট হবে। পুরুষ মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট চাপা থাকে এবং পুরুষ মাছের বক্ষ পাখনা খাঁজকাটা থাকে। আর স্ত্রী মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে পুরুষ মাছ থেকে বড় হয়। স্ত্রী মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট ফোলা ও নরম থাকে এবং স্ত্রী মাছের বক্ষপাখনা তেমন খাঁজকাটা থাকে না।

টেকসইকরণ

ইনজেকশন দেওয়ার ৮-১০ ঘণ্টা আগে মাছ ধরে সেগুলোকে পুকুরে স্থাপিত গ্লাস নাইলনের হাপাতে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় পর্যন্ত অক্সিজেনের জন্য মাছকে ছিদ্রযুক্ত পিভিসি পাইপের সাহায্যে ওপর থেকে অনবরত পানির ফোয়ারা দিতে হবে।

ইনজেকশন প্রদান

পাবদা মাছের প্রণোদিত প্রজননের জন্য পিজি এবং এইচসিজি দু’টোই ব্যবহার করা যায়। মাছকে মাত্র একবারই ইনজেকশন দিতে হয়। পিজির জন্য সবচেয়ে ভালো মাত্রা হচ্ছে প্রতি কেজি পুরুষ মাছের জন্য ১২.০ মিলিগ্রাম এবং প্রতি কেজি স্ত্রী মাছের জন্য ১৮.০ মিলিগ্রাম। ইনজেকশন দেওয়ার সময় ভেজা কাপড় দিয়ে মাথা জড়িয়ে পৃষ্ঠপাখনার নিচে ৪৫ কোণে ইনজেকশন দিতে হবে। ইনজেকশন দেওয়ার ৯-১২ ঘণ্টার মধ্যে হাপাতেই প্রাকৃতিক প্রজনন ক্রিয়ার মাধ্যমে স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ে এবং পুরুষ মাছ শুক্রাণু ছেড়ে ওই ডিম নিষিক্ত করে।

নিষিক্ত ডিম স্থানান্তর

ডিম ছাড়ার পর যত দ্রুত সম্ভব মাছগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে হাপা থেকে সরিয়ে ফেলতে এবং ডিমগুলোকে ট্রেতে স্থানান্তর করতে হবে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে ট্রে ও পুকুরের পানির তাপমাত্র যেন প্রায় একই থাকে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে পুকুরের পানি ছেঁকে ট্রেতে দেওয়া যেতে পারে। ডিম স্থানান্তর করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেতে ওপর থেকে ছিদ্রযুক্ত পিভিসি পাইপ দিয়ে অনবরত পানি সরবরাহ করতে হবে যাতে ডিমগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায়। এভাবে ১৬-২০ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে আসে।

রেনু পোনার খাবার

ট্রেতে ডিম থেকে ফোটার ২১-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রেনু পোনাকে প্রাথমিক খাবার দিতে হবে। প্রাথমিক খাবার হিসেবে টিউবিফিসিড ওয়ার্ম সবচেয়ে ভালো। টিউবিফিসিড ওয়ার্ম ছোট বাটিতে নিয়ে কুচি কুচি করে কেটে দিতে হয়। টিউবিফিসিড ওয়ার্ম না পাওয়া গেলে পুকুর থেকে জুপ্লাংকটন ধরে সুক্ষ্ন ছাকনি দিয়ে ছেঁকে ট্রেতে দিতে হবে।

পোনার পরিচর্যা

পোনার চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন ২-৩ বার খাবার দিতে হবে। এভাবে ৬-৮ দিন ট্রেতে প্রতিপালন করার পর পোনাগুলোকে সিস্টার্নে স্থানান্তর করতে হবে। ২.৪, ১.৩, ০.৫ ঘনমিটার সাইজের সিস্টার্নে ৩০০-৫০০টি পোনা লালন করা যাবে। পানির উচ্চতা ৩০-৪০ সেন্টিমিটার বজায় রাখতে হবে। সিস্টার্নে ১০-১৫ দিন প্রতিপালন করার পর পোনার আকার ২-৩ সেন্টিমিটার হলে পোনাগুলোকে নার্সারি পুকুরে মজুদ করা যাবে।

নার্সারি পুকুরে প্রতিপালন

পুকুরের আয়তন ৩-৬ শতাংশ হবে। পুকুর প্রস্তুতির পর শতাংশে ৩০০-৪০০টি করে পোনা ছাড়া যাবে। পোনা ছাড়ার আগে ভালোভাবে ছোট ফাঁস জাল টেনে পোকামাকড়, সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে। পোনা সকাল কিংবা সন্ধ্যার আগে ছাড়তে হবে। পোনা ছাড়ার পর প্রতিদিন পোনার দেহ ওজনের ১০-২০ ভাগ সম্পূরক খাবার দিতে হবে। প্রতি ১৫ দিন পর পর জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

খরচের তুলনায় লাভ ভালো হওয়ায় ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাবদা মাছের চাষ। ২০১৬ সালে ২ জন চাষির মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে এখন পাবদা চাষির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। আর গেল মৌসুমে ১৫০ মেট্রিকটনের বেশি পাবদা উৎপাদিত হয়েছে। সামনের মৌসুমে উৎপাদন আরো বেশি হবে বলে আশা করছে মৎস্য বিভাগ।

জানাগেছে, ময়মনসিংহের বিভিন্ন বেসরকারি হ্যাচারি থেকে খামারীরা পোনা সংগ্রহ করে আনেন। পরবর্তিতে সেগুলো পুকুরে মিশ্র ও দানাদার খাবার খাইয়ে বড় করা হয়। সাধারণত এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা যায়। পুকুর পাড় থেকেই গড়ে ৩৩০ টাকা কেজি দরে পাবদা বিক্রি হয়। সাথে পানির পরিবেশ ঠিক রাখতে পুকুরে রাখা হয় অন্য জাতের মাছ ।

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

পাবদা খামারী আব্বাস জানান, পাবদা মাছের গঠন ঠিক রাখতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় দানাদার খাবার। বিক্রিতেও রয়েছে সুবিধা। দেড় শ’ কিংবা দুই শ’মণ যে পরিমাণই মাছ ধরা হোক না কেন তা পুকুর পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যান ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বড় বড় পাইকাররা। ফলে লাভ এবং বিক্রয় সুবিধা পাওয়াই পাবদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে।

রাজু জানান, লেখা-পড়া শেষ করে বাবার সাথে পাপদা মাছের চাষ করছি। এবছর প্রায় আড়াই লাখ টাকার পাবদা মাছ বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করি। এছাড়া এ পাবদা মাছের সাথে আরো অন্যান মাচের চাষ করতে হয় পানি ঠিক রাখার জন্য। যাকে বলে মিশ্র চাষ।

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

অপর এক খামারী জানান, পাবদা মাছ চাষে বর্তমানে মানুষকে বেশি আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এ মাছ বিক্রি করতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না । দেড় শ’ কিংবা দুই শ’ মণ মাছ পুকুর পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আনেক চাষি এখন এ মাছ চাষে ঝুঁকে পড়ছে। তিনি আরো জানান মৎস্য বিভাগ আমাদের বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দিচ্ছে, কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা এসে পুকুরের পানি পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

মাছ আহরণ
মাছ আহরণ

মহেশপুর, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, কৃষির যে কোন সেক্টরের তুলনায় পাবদা চাষ লাভজনক। এই চাষ বৃদ্ধিতে নিয়মিত খামারীদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিক্রিতেও সহযোগীতা করছে মৎস্য বিভাগ। তিনি আরো জানান জেলার মহেশপুরে উৎপাদিত এসব পাবদা মাছ ভারতে এলসির মাধ্যমে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশিয় বিভিন্ন বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ভালো লাভবান হচ্ছেন খামারীরা। সাধারণত মার্চ মাসের শুরুতে পুকুরে পাবদা পোনা ছাড়া হয় এবং ছয় মাস পর থেকে তা সংগ্রহের উপযোগী হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা
পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে সেগুলো মৎস্য চাষিদের ভালোভাবে জানতে হবে। আগের দিনে আমাদের দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে ব্যাপকহারে মাছ পাওয়া যেত। পুকুরে অনেকেই এখন পাবদা মাছ চাষ করে থাকেন। আজকের এই লেখাতে আমরা জেনে নিব পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে-

পুকুর প্রস্তুত করা
পুকুর প্রস্তুত করা

পুকুর প্রস্তুত করা

বছরে অন্তত ৭-৮ মাস পানি থাকে এমন সেচকৃত পুকুর নির্বাচন করা ভালো। তবে সারা বছর পানি থাকে অর্থাৎ অন্য মাছের চাষ(পুরোনো পুকুর) হচ্ছে এমন পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করা আরো ভালো । নতুন পুকুরের পাড় মেরামত ও জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে । পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে । চুন প্রয়োগের ২ থেকে ৩ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫ কেজি হারে গোবর প্রয়োগ করতে হবে । এতে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মাবে । পুকুর থেকে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ থাকলে তা দূর করতে হবে।

মিশ্র চাষের জন্য পোনা মজুদ

পুকুরের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট গড় উচ্চতা ও হালকা সবুজাভ হলে পোনা মজুদ করতে হবে । মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সাইজের ৫০টি পাবদা , ১০০টি শিং এবং ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি সাইজের ৫টি কাতলা , ১০টি রুই , ১০টি মৃগেল , ২টি সিলবার কার্প ও ২টি গ্রাস কার্পের সুস্থ পোনা মজুদ করতে হবে।

খাদ্য প্রয়োগ

নিয়মিত সম্পূরক খাদ্য মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৩ থেকে ৮ ভাগ হারে প্রয়োগ করতে হবে । অনুর্বর পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধির জন্য ১৫ দিন পর পর প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৫ কেজি পচা গোবর প্রয়োগ করতে হবে । পানির রং গাড় সবুজ হয়ে গেলে অবশ্যই গোবর প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং পানির পি,এইচ পরীক্ষা করতে হবে । এখানে একটি ব্যাপার উল্ল্যেখ্য যে , পাবদা মাছ পুকুরের তুলনা মূলক ছোট মাছ খেয়ে ফেলবে তাই চাষের অন্যান্য মাছ যাতে পাবদার চাইতে বড় সাইজের হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে এবং পুকুরের আমাছা খেয়ে পুকুর যেমন চাষযোগ্য রাখবে তেমনি পাবদার বৃদ্ধিও দ্রুত হবে।

মাছ আহরণ
মাছ আহরণ

মাছ আহরণ

পাবদা মাছ ৬০ থেকে ৭০ গ্রাম ওজনের হলে বিক্রির জন্য আহরণ করা যেতে পার। পোনা মজুদের ৭ থেকে ৮ মাস পর সব মাছ আহরণ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তবে ১ বছরের অধিক সময় পর আহরণ করলে মাছের ওজন দ্বিগুনের চাইতেও বেশি হতে দেখা গেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার
মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

মাছের উকুন রোগের কারণে নানা সমস্যায় পড়তে হয় চাষিদের। অনেকেই বুঝতে পারেন না রোগটি কেমন। আসুন জেনে নেয়ে যাক মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।

মাছের উকুন রোগের কারণ ও লক্ষণ: আরগুলাস নামক বহিঃপরজীবী এর মাধ্যমে এই রোগে মাছ আক্রান্ত হয়। এই পরিজীবি মাছের দেহের রক্ত চুষে ক্ষত সৃষ্টি করে।

মাছের দেহ পৃষ্ঠ ও পাখনায় উকুন লেগে থাকে। শক্ত কিছু পেলে মাছ দেহ ঘষে। মাছ লাফালাফি করে। দেহ থেকে রক্তক্ষরণ হয়। পরজীবী খালি চোখে দেখা যায়। মাছ ক্লান্তহীনভাবে সাঁতার কাটে। আক্রান্ত স্থানের চারপাশ লালচে বর্ণ হয়।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার: পুকুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন দেয়া। জৈবসার প্রয়োগ কমিয়ে দেয়া। আক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে সরানো।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার
মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

ডিপটারেক্স (ডাইলকস, নেগুভন, টেগুভন) ০.৫ পিপিএম হারে পুকুরে প্রয়োগ করা। সপ্তাহে একবার ও পরপর ৫ বার অথবা ০.৮ পিপিএম হারে সুমিথিয়ন প্রয়োগ করা। প্রতি সপ্তাহে একবার ও পরপর ৫ বার অথবা ০.২৫ পিপিএম পটাশ দ্রবণে ৫-৬ মিনিট গোসল করাতে হবে।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার সংবাদটির তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস এর মৎস্য বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ