আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

এগ্রোবিজ

ফুলের চারা বিক্রি করে স্বচ্ছল কুষ্টিয়ার চাষিরা

‘নার্সারি মালিকরা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাই না। এমনকি কোনো ঋণ সুবিধাও নেই । সব কিছু নিজেদের অর্থায়নে করতে হয়। যা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে’

ফুলের চারা উৎপাদনে কুষ্টিয়ার বিশেষ সুনাম রয়েছে। শীত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফুলের নার্সারিগুলোত চারার বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। কৃষদের ভাষ্য,প্রচলিত ফসলের চেয়ে ফুলের চারা বিক্রি করে বেশি লাভবান হচ্ছেন তারা। 

সরেজমিন জেলার বিভিন্ন নার্সারি ঘুরে দেখা যায়হাইব্রিড জাতের গাঁদারক্ত গাঁদাকুইন সুপার গাঁদাবারমাসি গাঁদার চারা ১০ টাকা করে পিস বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও হাইব্রিড জাতের ডালিয়া খুচরা ১৫ টাকাচন্দ্রমল্লিকা ১৫ টাকাস্নোবল ২০ টাকাক্যালেন্ডুলা ১০ টাকাজিনিয়া ১০ টাকাফ্লোস ২০ টাকাগ্যাজোনিয়া ১০ টাকাডাইনথাজ ১০রঙ্গমিক্স ১০ টাকাদোপাটী ১০স্টার ১০পাপিয়া ২০সিলভিয়া ১০ফায়ার বল ১৩০অপূর্বিয়া ৮০ টাকাপানচাটিয়া ১৫০ টাকারক্তজবা ৮০ টাকারঙ্গন ৮৫ টাকাচায়না টগর ২০ টাকাকসমস ১০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। 

হাইব্রিড গোলাপের মধ্যে তাজমহল গোলাপ খুচরা ১০০ টাকারাণী গোলাপ ১০০ টাকাবিশ্ব সুন্দরী গোলাপ ১০০ টাকাইরানি গোলাপ ২৫ টাকাকাচা হলুদঘিয়াসাদাজরিনা গোলাপ প্রকার ভেদে ১০০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশি জাতের গোলাপ ১০ টাকা দরে খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে।

মিরপুর উপজেলার লিমন নার্সারির মালিক পারভেজ হাসান জয় বলেনএইসব ফুলের চারা ও বীজ যশোর গদখালীঝুমঝুমপুরবাসুদেবপুরবগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে সংগ্রহ করা হয়। বছরের অন্য সময় ফুলের চারা তেমন বিক্রি হয় না। তবে শীত মৌসুমে ফুলের চারা বিক্রি হয় বেশি। ফুল চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। তবে সেখান থেকে সরকারি ভাবে কোনো সার-বীজ পাইনি। পেলে আরও লাভবান হাওয়া যেত।

মিরপুর জিয়া সড়কে অবস্থিত এসআর গার্ডেন সেন্টারের মালিক এ রহমান জানানপ্রায় চারমাস শীতকালীন ফুলের চারা ব্যাবসা হয়। এ বছর ফুলের চারার বেশ চাহিদা রয়েছে।

নার্সারিটিতে কর্মরত শ্রমিক মো. টুটুল হোসেন জানানএখানে সারা বছরই কাজ করি। মালিকেরা লাভবান হওয়ায় আমারাও ভালোই আছি। 

ফুলের চারা খুচরা বিক্রেতা মো. আমজাদ হোসেন জানানআমরা নার্সারি থেকে পাইকারি ফুলের চারা সংগ্রহ করে শহর এলাকায় বিক্রি করি। প্রতিদিন চারা বিক্রি করে দুইশ থেকে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। এতে আমাদের সংসার ভালই চলে। 

জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল গণি সান্টু বলেননার্সারি মালিকরা কোনো সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাই না। এমনকি কোনো ঋণ সুবিধাও নেই । সব কিছু নিজেদের অর্থায়নে করতে হয়। যা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে ওঠে।

কুষ্টিয়া নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম ওয়াসিফ আবির জানানশীত মৌসুমে জেলায় প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকার ফুলের চারা ক্রয়-বিক্রয় করা হয়।  

কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস বলেনকুষ্টিয়ায় অনেক বেসরকারি নার্সারি রয়েছে। তবে সেগুলো কৃষি বিভাগের আওতার বাইরে। তবে জেলায় একটি সরকারি নার্সারি রয়েছে। কিন্তু সেটি আকারে অনেক ছোট।

এগ্রোবিজ

গোলাপ চাষ এর সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে বেশি ফুল পাওয়ার উপায়

গোলাপ চাষ এর সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে বেশি ফুল পাওয়ার উপায়
গোলাপ চাষ এর সহজ পদ্ধতির মাধ্যমে বেশি ফুল পাওয়ার উপায়

পরিচিতি

সৌন্দর্য্য ও লাবন্যের প্রতীক গোলাপ। এটি একটি শীতকালীন মৌসুমী ফুল । তবে বর্তমানে গোলাপ সারা বছর ধরেই চাষ করা হচ্ছে। বর্ণ, গন্ধ, কমনিয়তা ও সৌন্দর্যের বিচারে গোলাপকে ফুলের রানী বলা হয়। পুষ্প প্রেমীদের সবচেয়ে প্রিয় ফুল গোলাপ। এটি বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন জলবায়ুতে খুব সহজেই মানিয়ে নিতে পারে বলে পৃথিবীর সব দেশেই সারাবছর কমবেশি গোলাপের চাষ হয়। গোলাপ সাধারণত কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, বাগান, লন, কেয়ারী, বারান্দা সাজাতে গোলাপের জুড়ি নাই। আতর ও সুগন্ধি শিল্পেও গোলাপের ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।

জলবায়ু ও মাটি

গোলাপ শীত ও নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলের ফুল। অধিক উষ্ণ ও আর্দ্রতায় গোলাপ ভাল হয়না। ২২-৩০ ডিগ্রী সে. তাপমাত্রা, ৮৫% আপেক্ষিক আর্দ্রতা এবং ১০০-১২৫ সেমি গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত গোলাপ চাষের জন্য উপযোগী। গোলাপ চাষের জন্য ৬.০-৬.৫ pH মানযুক্ত  সুনিষ্কাশিত এবং উর্বর দোঁ-আশ মাটি  উত্তম।ফুলের গুনগতমান সূর্যালোকের উপস্থিতির উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। এক্ষেত্রে বিকাল অপেক্ষা সকালের রোদ বেশি কার্যকর।

জাত

পৃথিবীতে অনেক জাতের গোলাপ আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে চাষ হয় এমন কতকগুলো জাত হলোঃ মিরান্ডি, পাপা মেলান্ড, ডাবল ডিলাইট, তাজমহল, প্যারাডাইস, ব্লু-মুন, মন্টেজুমা, টাটা সেন্টার, সিটি অব বেলফাষ্ট ইত্যাদি

জাত, জলবায়ু ও মাটি
জাত, জলবায়ু ও মাটি

রোপণ সময়

রোপণ সময় ও বংশবৃদ্ধি
রোপণ সময় ও বংশবৃদ্ধি

বাংলাদেশে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত গোলাপের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।

বংশবৃদ্ধি

গোলাপ সাধারণতঃ বীজ, কাটিং, গুটি কলম এবং চোখ কলমের মাধ্যমে বংশ বৃদ্ধি করে। বীজের মাধ্যমে বংশ বি¯তার শুধুমাত্র প্রজনন বা ফসল উন্নয়ন কর্মসূচীতে ব্যবহৃত হয়। নতুন গাছ উৎপন্নের প্রধান পদ্ধতি বাডিং বা চোখ কলম, যার মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে কাটা ফুলের উৎপাদন করা হয়ে থাকে।যে জাতটির বংশবৃদ্ধি করা হয় তার চোখ অপর একটি সুবিধামত আদিজোড় বা (rootstock) এর উপর স্থাপন করা হয়। আদিজোড় গাছের সজীবতা, উৎপাদনশীলতা, ফুলের গুনাবলী, ঝোপের স্থায়ীত্ব, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মাটি ও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আদিজোড়ের কাটিং সমূহ (পেন্সিল আকৃতি) গ্রীষ্মের শেষে তৈরী করা হয়ে থাকে এবং নার্সারীতে সারি করে ২৫ -৩০ সেঃ মিঃ দুরত্বে রোপন করা হয়। প্রায় ৬ মাস পর এইসব কাটিংসমূহ বাডিং এর জন্য উপযুক্ত আকৃতির কান্ড তৈরী করে থাকে। গোলাপে প্রধানতঃ T-বাডিং করা হয়।

টবে গোলাপের চাষ
টবে গোলাপের চাষ

টবে গোলাপের চাষ

টবের স্থান

খোলা-মেলা আলো বাতাসপূর্ণ এমন স্থানে টব রাখতে হবে যাতে সকালের সূর্য কিরণ পায় এবং অন্ততঃ ৬-৮ ঘন্টা রোদ পায়। বিকেলের রোদ (বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে) না লাগানোই ভাল, কেননা এতে ফুলের রং ফ্যাকাসে হয়ে যায়। গোলাপ গাছটিতে যাতে চারিদিক হতেই আলো পড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। তা না হলে গাছটি কেবল আলোর দিক দিয়েই বাড়বে। এজন্য টবসহ গাছটি মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে নিতে হয়। গ্রীষ্মের প্রখর রোদ থেকে টবের গোলাপ গাছকে রক্ষা করার জন্য পর্যায়ক্রমে রোদ ও ছায়ায় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টব রাখলে গাছ ভাল থাকবে। ফুলও বেশি দিন ধরে পাওয়া যাবে।

মাটি তৈরি

এঁটেল মাটি গোলাপ চাষের জন্য ভাল নয়। টবের জন্য সার মাটি এমনভাবে তৈরি করতে হবে যাতে মাটি বেশ ফাঁপা থাকে এবং পানি না দাঁড়ায়। ১ ভাগ দো-আঁশ মাটি, ৩ ভাগ গোবর সার বা কম্পোষ্ট, ১ ভাগ পাতা পচা সার, আধ ভাগ বালি (নদীর সাদা বালি হলে ভাল হয়) দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে তাতে এক মুঠো সরিষার খৈল ও এক চামচ চুন মিশিয়ে ১টি ২০ সেঃমিঃ (৮ ইঞ্চি) টবে একমাস রেখে দিতে হবে। এই একমাস টবেপানি দিয়ে মাটি উল্টে পাল্টে দিতে হয়। এতে মাটির মিশ্রণ ভাল হবে। অনেকে মাটির মিশ্রণে ব্যবহৃত চা পাতা ব্যবহার করেও ভাল ফল পেয়েছেন। টবে নিচের কয়েক সেঃমিঃ পরিমাণ অংশে ইট বা মাটির হাড়ি পাতিলের ভাংগা টুকরা এমন ভাবে বিছিয়ে দিতে হয় যাতে টবের মাটি এগুলোর উপর থাকে। এতে বাড়তি পানি নিকাশের সুবিধা হবে।

টবের স্থান ও মাটি তৈরি
টবের স্থান ও মাটি তৈরি

টবের আকার

টবের আকার নির্ভর করে যে গোলাপের চাষ করা হবে তার জাতের উপর। ছোট জাতের জন্য ২০ সেঃমিঃ (৮ ইঞ্চি) টব ভাল, বড় জাতের জন্য ৩০ সেঃমিঃ (১২ ইঞ্চি) বা আরো বড় টব ব্যবহার করতে হয়। তবে প্রথম বছর যে আকারের টবে গাছ বসানো হবে পরের বছর বড়- আকারের টবে গাছ স্থানান্তর করলে বড় আকারের বেশী ফুল পাওয়া যায়।

টবে চারা বসানোর সময়

বছরের যে কোন সময়ই টবে গোলাপের চারা বসানো যায়। তবে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর ও জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস চারা লাগানোর উত্তম সময়। এসময় চারা লাগালে বেশী দিন ধরে ফুল পাওয়া যায়, গাছের পরিচর্যা করতে সুবিধা হয, রোগ পোকার আক্রমণও কম থাকে।

চারা সংগ্রহ

চারা সংগ্রহের সময় সুস’-সুন্দর চারা সংগ্রহ করা উচিত। চারা সংগ্রহের সময় এর গোড়ার মাটির গোল্লাটি অবিকল আছে কিনা তা ভাল করে দেখে নিতে হবে। মাটির গোল্লাসহ চারার গোড়ার শিকড় বেরিয়ে থাকা অবস’ার চার গাছ না নেয়াই ভাল। বিশ্বস- এবং পরিচিত নার্সারি থেকে চারা সংগ্রহ করা উচিত ।চারা সংগ্রহের ব্যাপারে অভিজ্ঞ লোকের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

টবে চারা বসানোর সময়, চারা সংগ্রহ, টবে চারা বসানো ও টবের আকার
টবে চারা বসানোর সময়, চারা সংগ্রহ, টবে চারা বসানো ও টবের আকার

টবে চারা বসানো

চারাগাছ বা কলমচারা মাটির গোল্লাসহ পলিথিন ব্যাগে অথবা ছোট মাটির টবে কিনতে পাওয়া যায়। চারাটি যদি টবের হয়, তাহলে টব থেকে পুরো মাটিসহ চারাটি এমনভাবে নিতে হবে যাতে ভেংগে না যায় বা শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। ভেজা মাটির গোল্লাসহ চারা সংগ্রহ করলে তা একটু শুকিয়ে নিতে হয়। চারা বসাবার আগেই গাছের অপ্রয়োজনীয় পুরোনো বা মরা ডাল পালা হালকা ভাবে ছেঁটে দিতে হবে। এরপর চারাটি টবের মাঝখানে সোজা করে বসিয়ে টবের ওপরে কিছু কম্পোষ্ট সার দিয়ে গাছের গোড়ারমাটি হালকা চাপ দিয়ে বসিয়ে দিতে হবে। চারা এমনভাবে বসাতে হবে যাতে কুঁড়ি বের হবার গিট/ পর্ব টি মাটির ওপরেই থাকে।

সেচ

টবে বসানোর পর অন্তত ২/৩ বার পানি সেচ দিতে হবে। চারা অবস্থায় গাছ যাতে প্রখর রোদ বা বৃষ্টির ঝাপ্টা থেকে রক্ষা পায় সে দিকে খেয়াল রাখা দরকার। প্রথম অবস্থায় ৩/৪ ঘন্টা এবং ধীরে ধীরে বাড়াতে বাড়াতে ৭/৮ ঘন্টা রোদ পাওয়ার ব্যবস্থা করলে গোলাপ ভাল হবে। পানি সেচের সময়লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে গাছের গোড়ায় পানি দাঁড়িয়ে না যায়। কচি পাতা ও কুঁড়ি ছাড়ার সময় একটু বেশী পানি দরকার। এ সময় সকাল সন্ধ্যা সেচ দেয়া উচিত। ঝাঁঝরি দিয়ে ডাল-পালাসহ সমস্ত গাছটিই পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে।

সার প্রয়োগ

টব বসাবার পর গাছ ধরে গেলে একমাস পর থেকে ১৫ দিন বা এক মাস পর পর সার দিতে হয়। শীতের ঠিক পরেই অর্থাৎ মার্চের শেষে বা এপ্রিলের প্রথম দিকে টবের উপরের ৮/১০ সেঃমিঃ মাটির স্তর তুলে দিয়ে খালি জায়গায় পচা গোবর সার ও নতুন ফাঁপা মাটি দিয়ে ভরে দিতে হয়। এর পর খড় বা পাতা দিয়ে ঢেকে গ্রীষ্মের প্রখর রোদ থেকে গাছের শিকড়কে রক্ষা করতে হয়। শীতকালে গাছ ছাটার পর, প্রতি টবে ৩ মুঠা গুঁড়া গোবর সার ও ১ মুঠা স্টিমড্ হাড়ের গুঁড়া বা স্টেরামিল প্রয়োগ করিতে হইবে। এরপর পুরো শীতকাল ধরে ১ মাস অন-র অন-র ১ মুঠা করে স্টিমড্ বোন মিল বা স্টেরামিল প্রয়োগ করতে হবে।

সেচ ও সার প্রয়োগ
সেচ ও সার প্রয়োগ

গোলাপের ভাল ফুল উৎপাদনের জন্য পাতার সার ও ফলিয়ার স্প্রের জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েকটি রাসায়নিক সার মিশিয়ে এই সার প্রস্তুত করতে হয়। শীতকালে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের সকাল ৮টার মধ্যে ফলিয়ার স্প্রে করতে হয়। দুই প্রকারের পাতা সার গাছে ব্যবহার করা হয়, ১টি গাছের স্বাস্থ্য ও ফুল ভাল করার জন্য অপরটি ট্রেস এলিমেন্টের জোগান দেয়ার জন্য, যেমন- ইউরিয়া, ডাই-অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ডাই-পটাশিয়াম ফসফেট প্রতিটি ১০ গ্রাম করে ১০ লিটার পানিতে গুলে স্প্রে দ্রবণ তৈরি করতে হবে। ট্রেস এলিমেন্টের জন্য ম্যাগনেশিয়াম সালফেট ২০ গ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ সালফেট ১৫ গ্রাম, ফেরাস সালফেট ১০ গ্রাম, বোরাক্স ৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে প্রতি লিটার পানিতে উল্লেখিত মিশ্রণটির ২ গ্রাম করে গুলিয়ে স্প্রে করতে হবে। দুইটি পাতা সারের সাথেই কীটনাশক বা বালাইনাশক মিশিয়ে স্প্রে করা যায় কিন্তু দুটি সার এক সাথে মিশিয়ে স্প্রে করা যাবে না। পাতার সার টবের গোলাপের জন্য অপরিহার্য এবং জমির গোলাপের জন্য উপকারী। সেপ্র করার সময় যেন পাতার দু’দিকেই ভালভাবে লাগে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। টবের গাছে সারা বছরই তরল সার প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক মাত্রা বা প্রয়োগ বিধি না জেনে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করাই ভাল। কেননা, মাত্রায় বা ব্যবহার-বিধিতে একটু ব্যতিক্রম হলে গাছের ক্ষতির আশংকা থাকে। রাসায়নিক তরল সারের পরিবর্তে গোবর ও সরষের খৈল ৪/৫ দিন পানিতে পচিয়ে তরল করে সপ্তাহে দু’দিন করে ব্যবহার করা যায়। গাছের নতুন ডাল-পালা বাড়াতেও ফুলের আকার বড় করতে এ ধরনের তরল সার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তরল সারের অভাবে ছোট মাছপঁচা পানি গাছের গোড়ায় দেয়া যায়। দুর্বল গাছে প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হিসারে ইউরিয়া মিশিয়ে সকাল বিকাল পাতায় স্প্রে করলে গাছ তাজা হয়।

চুন-পানি প্রয়োগ

প্রতি লিটার পানিতে ১ চামচ গুড়ো চুন পরিস্কার পািনতে ভাল করে গুলে পাতলা ন্যাকড়ায় ছেঁকে প্রতি ৩ মাস পর পর দিতে হয়। চুন-পানি দেবার ১৫ দিনের মধ্যে অন্য কোন সার না দিয়ে শুধু পানি দিতে হয়।

চুন-পানি প্রয়োগ ও গাছ ছাঁটাই
চুন-পানি প্রয়োগ ও গাছ ছাঁটাই

গাছ ছাঁটাই

মৃত ও রোগগ্রস-ডাল অপসারনের জন্য, গাছের উপযুক্ত আকৃতি প্রদানের জন্য, প্রতিটি ডালে ফুল আসবার জন্য এবং প্রয়োজনীয় রোদ্র পাবার জন্য নিয়মিত গাছ ছাটাইয়ের প্রয়োজন হয়। গোলাপ প্রচুর শাখা বিস্তারকারী গুল্ম জাতীয় গাছ। গাছের ফুল দেয়া শেষ হলেই গাছ ছেঁটে দিতে হবে। নিয়মিতগাছ ছাঁটাই করলে বেশী ও বড় আকারের ফুল পাওয়া যায়। বর্ষার পর অক্টোবর-নভেম্বর মাস ছাঁটাইয়ের জন্য ভাল সময়। সাধারনত ২০-২৫ সেঃমিঃ (৮-১০ ইঞ্চি) বড় রেখে ডাল ছেঁটে দিতে হয়। ডাল এমনভাবে কাটতে হবে যাতে থেঁতলে বা ছিঁড়ে না যায়। এ জন্য ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হয়। সাদা, হলুদ, হালকা হলুদ ও দো-রঙা জাতের গোলাপ গাছ খুব হালকা ছাঁট আর লাল জাতের গোলাপ গাছে শক্ত ছাঁট দিতে হয়।

গাছ ছাঁটাইয়ের পর ডাইব্যাক রোগের আক্রমণ হতে পারে। সুতরাং গাছ ছাঁটাইয়ের আগে ও পরে কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক দুইই  প্রয়োগ করা দরকার।

রোগ-পোকা দমন
রোগ-পোকা দমন

রোগ-পোকা দমন

শুঁয়ো পোকা বা অনিষ্টকারী অন্য যে কোন পোকা দেখা মাত্র ধরে মেরে ফেলা উচিত। লাল মাকড়সার আক্রমণ ও ডাইব্যাক রোগই বেশ মারাত্মক।

সেচের সময় টবে জল জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করলে লোহার শিক দিয়ে টবের মাটি ছিদ্র করে পানি বের হবার পথ করে দিতে হবে। এ কাজটা একটু সাবধানে করা দরকার যাতে শিকড়ের কোন ক্ষতিনা হয়। পানি দেবার আগের দিন প্রতিবারই টবের ধারের কাছের মাটি বেশী করে এবং মাঝখানের মাটি কম করে খুঁচিয়ে দিতে হয়।

গ্রীষ্মকালীন পরিচর্যা

টব ছাদে বা পাকা স্থানে রাখলে পুরু খড় বিছিয়ে তার উপর ইট বা কাঠের টুকরা রেখে সেগুলোর ওপর টব রাখা উচিত । গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড তাপের সময় পানি না দিয়ে রাতের দিকে যখন তাপমাত্রা কমতে থাকে (রাত ৮ টার পর) ছাদের টবে তখন জল দেয়াই ভাল। এসময় পানির তাপমাত্রা আবহাওয়ার সঙ্গে মোটামুটি সামঞ্জস্য পূর্ণ থাকে।

গ্রীষ্মকালীন ও বর্ষাকালীন পরিচর্যা
গ্রীষ্মকালীন ও বর্ষাকালীন পরিচর্যা

বর্ষাকালীন পরিচর্যা

টবের নিচের খড় কুটো, ইট এসব সরিয়ে টবগুলো কেবল ছাদ বা পাকা স্থানেই রাখতে হবে এবং ঝড় থেকে টব ও গাছকে রক্ষার প্রস্তুতি নিতে হবে। টবের মাটি মাঝখানের দিকে উচিয়ে কোণাকৃতি করে দিলে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করতে পারবে না। অতিরিক্ত মাটি বর্ষা শেষে সরিয়ে ফেলতে হয়।

প্রদর্শনী ফুলের জন্য করণীয়

প্রদর্শনীর জন্য বর্ষাকালে উন্নত জাতের গোলাপ গাছ নির্বাচন করে টবে রোপণ করতে হবে। নিয়মিত সেচ ও সার প্রয়োগের দ্বারা গাছটিকে এমন করে তুলতে হবে যেন গাছে প্রচুর ও সুন্দর পাতা জন্মায় এবং প্রস্ফুটিত ফুল বেশ বড় আকারের হয়। প্রদর্শনীর সময় থেকে অন্ততঃ আড়াই মাস আগে গাছটিকে বিবেচনারসহিত ছাঁটাই করা উচিত। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি গাছ ছাঁটাই করলে ফেব্রুয়ারী মাসে গাছে ফুল ফোটে। মাঝে মাঝে কচি ডালগুলো এমনভাবে ছেঁটে দিতে হবে যেন গাছটি বেশ ঝোপালো হয়। গাছের প্রতিটি শাখায় দু’টো কুঁড়ি রেখে বাকি কুঁড়িগুলো ছিড়ে ফেলে দিতে হবে। যাতে বড় ফুল ফোটে সেদিকে যত্ন রেখে পরিচর্যার কাজ করতে হয়। যদি নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কুঁড়ি জন্মায়,তাহলে কুঁড়িগুলো ছিঁড়ে ফেলতে হবে। ফুলের ঔজ্বল্য বড়াতে হলে ৪ লিটার পানিতে ২৫ গ্রাম আয়রন সালফেট গুলে ফুলে প্রয়োগ করতে হয়। প্রদর্শনী আরম্ভ হবার অন্ত ১ সপ্তাহ পূর্বে ছায়াযুক্ত স্থানে টব রাখলে ভাল হয়। এতে দুপুরের প্রখর রোদ্রে ফুলের পাপড়ি নষ্ট হয় না।

জমিতে গোলাপ চাষ

জমি, গর্ত ও বেড তৈরী

প্রচুর রোদ ও খোলা বাতাসপূর্ণ উঁচু সমতল স্থানে গোলাপ চাষের জন্য নির্বাচন করা উচিত। জমিকে গভীরভাবে কুপিয়ে বা লাংগল দিয়ে এর মাটি ওলট-পালট করে দিতে হয়। জমি থেকে আগাছা, ইটের টুকরা ইত্যাদি বেছে ফেলে বার বার চাষ দিয়ে মাটিকে বেশ ঝুরঝুরা, নরম ও সমতল করে নিতে হয়। উন্নতমানের বড় বাগান করতে হলে বর্ষার ঠিক আগে মে-জুন মাসে বেড তৈরি করতে হয় যাতে বেডের খৈল ও অন্যান্য উপাদান ভালভাবে পচে অক্টোবর গাছ লাগানোর উপযোগী হয়। বেডের আশে পাশে যাতে পানি না জমে সে জন্য জল নিকাশের ব্যবস্থা রাখতে হয়।

জমিতে গোলাপ চাষ
জমিতে গোলাপ চাষ

ছোট বাগানের জন্য গাছ রোপণের অন্তত ৩ সপ্তাহ আগে বেড তৈরি করলেই চলে। আবহাওয়া শুকনো থাকলে বেড তৈরীর পর পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিলে খৈল ও জৈব সার পচে যাবে এবং বেড গাছ লাগানোর উপযোগী হবে।

বেড তৈরির পর চারা রোপণের জন্য বিভিন্ন জাতের জন্য বিভিন্ন দূরত্বে গর্ত করতে হয়, যেমন- ডোয়ার্ফ পলিয়েন্থা ০.৫ মিটার, ফ্লোরিবান্ডা ও চায়না ০.৬৫ মিটার, হাইব্রিড টি ১ মিটার, হাইব্রিড পারপেচুয়েল, মন ও দামাস্ক ও টি ১.৫০ মিটার, নয়সেট-২.০ মিটার ও লতা গোলাপ ২.৫০ মিটার।

বিভিন্ন জাতের গাছ সারিতে লাগাতে হয়, এতে সার প্রয়োগ, পানি সেচ ও অন্যান্য পরিচর্যার কাজের সুবিধা হয়। রোপণের জন্য ১ মিটার গভীর ও ০.৬৫ মিটার ব্যাস বিশিষ্ট গোলাকার গর্ত করতে হয়। গর্ত করার সময় উপরের ২০-২২ সেঃমিঃ মাটি আলগা করে রেখে বাকী মাটির সাথে মাটির পরিমানের এক তৃতীয়াংশ সমান পচা গোবর, আধা কেজি গুঁড়ো খৈল, ১৮ কেজি টি.এস.পি ভালভাবে মিশিয়ে দিয়ে গর্তটি ভরাট করতে হবে। তারপর আলাদা করে রাখা মাটির সাথে কম্পোস্ট, সবুজ সার ইত্যাদি জৈব সার মিশিয়ে গর্তে দিতে হবে এবং দেখতে হবে যাতে গর্তের স্থান পাশের জমি থেকে উঁচু হয়।

যদি বেড তৈরি দু’একদিনের মধ্যে গাছ লাগানো প্রয়োজন হয়, তাহলে কম্পোস্ট বা পচা গোবর সার বেশি করে দিয়ে গাছ লাগানো উচিত। গাছ লেগে যাবার পর খৈল ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হবে। গোবর সার বেশি ব্যবহার করলে ইউরিয়া সার না দিলেও চলবে। এ ক্ষেত্রে খৈল ৪/৫ দিন ভিজিয়ে জলের সাথে মিশিয়ে গোড়ার চারপাশে দিয়ে ৩/৪ দিন হালকা করে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।

চারা রোপণ

সাধারণত গোলাপের চারা পলিথিনের ব্যাগে থাকে বলে চারা রোপণের সময় ব্যাগটি ছিঁড়ে ফেলে দিতে হয়। তারপর গর্তের মধ্যে গাছটি এমনভাবে ঢুকাতে হবে যাতে চারাটির গোড়া আগে যতটুকু মাটির নীচে ছিল, গর্তে লাগানোর পরও যেন ঠিক ততটুকুই মাটির নীচে থাকে। চারা গাছ গর্তের মধ্যে বসানোর পর কিছু পচা গোবর ও ভিটির বালি বা দো-আঁশ মাটি ভাল করে মিশিয়ে শিকড়ের চারিপাশে ছিটিয়ে দিতে হয়। তারপর গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে ভাল করে চেপে দিয়ে পানি দিতে হয়। চারা লাগানোর পর প্রথম রোদ থেকে গাছকে রক্ষা করার জন্য ছায়ার ব্যবস্থা করতে হয়। গাছ লেগে গেলে মাটি বুঝে পানি দিতে হয়। বেলে মাটির বেলায় ঘন ঘন আর এঁটেল মাটি বা ভারি মাটির বেলায় ২/৩ দিন পর পর পানি দেয়া দরকার। তবে কোনক্রমেই যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

অন্তবর্তীকালীন  পরিচর্যা
অন্তবর্তীকালীন  পরিচর্যা

গোলাপের শিকড়ে যদি শক্ত মাটি থাকে, তাহলে গাছ লাগানোর আগে পানি দিয়ে ভিজিয়ে মাটি নরম করে নিতে হয় যাতে শিকড় ঠিকমত বাড়তে পারে।

যেসব চারার গোড়ায় মাটি থাকে না, সেসব চারা মাটিতে লাগানোর আগে ২/৩ ঘন্টা পানি ভিজিয়ে তারপর লাগাতে হয়।

পুরানো গাছ জায়গা বদল করে লাগাতে হলে প্রথমত কচি ডগা, মরা ডাল ইত্যাদি ধারালো ছুরি বা সিকেচার দিয়ে ভাল করে ছেঁটে নিতে হয়। তারপর শিকড়ের চারপাশে বেশ জায়গা নিয়ে খুঁড়ে গাছটিকে এমন ভাবে উঠাতে হবে যাতে খুব কম সংখ্যক শিকড় কাটে। গাছটিকে একই পদ্ধতিতে গর্তে লাগিয়ে প্রচুর পানি দিতে হবে এবং অন্তত ২/৩ দিন ছায়া দিতে হবে। শুকনো মৌসুমে গরমের দিনে পুরানো গাছের জায়গা বদল না করাই ভাল।

অন্তবর্তীকালীন  পরিচর্যা

সার প্রয়োগ

গাছের প্রয়োজন অনুসারে সময় সময় সার দিতে হয়। তবে অক্টোবওে গাছ ছাঁটাইয়ের সময়ে একবার শীতের শেষে মার্চ মাসে আরেক বার সার দিতে হয়। ছাঁটাইয়ের সময় সার না দিয়ে ছাঁটাইয়ের ১০-১২ দিন পরে সার প্রয়োগ করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

ছাঁটাইয়ের আগে প্রতি ২/৩ কেজি শুকনো গোবর সার, ৫০ গ্রাম টি.এস.পি ও ৫০ গ্রাম পটাশ প্রয়োগ করতে হবে। বেডের উপরের ১০ সেঃমিঃ পরিমাণ মাটি সরিয়ে নিচের মাটি কিছুটা আলগা করে সার গুলো মাটির সাথে সাবধানে মিশিয়ে দিতে হবে যেন শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। গোলাপের জন্য হাঁস-মুরগি বা কবুতরের বিষ্ঠা উত্তম সার।

সার পানি দিয়ে গুলে ব্যবহার করলে ভেজা মাটিতে দিতে হয়। রাসায়নিক সার গাছ খুব তাড়াতাড়ি গ্রহন করে। শুকনো মাটিতে তরল সার দিলে অতিরিক্ত কড়া হবার দরুন গাছের ক্ষতি হতে পারে। তাই তরল সার দিতে হবে মাটি ভেজা অবস্থায়। তরল সার দেবার পর পানি সেচ দিতে হয়। অনেক সময় দেখা যায় মাটিতে পর্যাপ্ত সার থাকা সত্ত্বেও ছাঁটাইয়ের পর গাছের পাতা সতেজ হচ্ছে না বা গাছ ঠিকমত বাড়ছে না। এ ক্ষেত্রে পাতার মাধ্যমে সার প্রয়োগ করে ভাল ফল পাওয়া যায়।

অঙ্গ ছাঁটাইকরণ
অঙ্গ ছাঁটাইকরণ

অঙ্গ ছাঁটাইকরণ

গোলাপ গাছের পুরানো ডাল বেশি দিন ফুল দিতে চায় না। প্রতি বছরই গাছের গোড়া থেকে বা পুরানো ডাল থেকে নতুন ডাল বের হয়। গাছের অঙ্গ ছাঁটাই করে এসব নতুন ডালকে সুষ্টুমত বাড়তে দিতে হয়। ফুলের মৌসুমের আগেই অর্থাৎ অক্টোবর  মাসেই অঙ্গ ছাটাই করার ভাল সময়। ফুলের আকার বড় করতে, নতুন শাখাকে ভাল করে বিস্তৃত করতে সাহায্য করার জন্য এবং ক্ষত ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে বাদ দেবার জন্য অঙ্গ ছাঁটাইয়ের প্রয়োজন। ধারালো সিকেচার বা বিশেষ এক প্রকার ছুরি দিয়ে অঙ্গ ছাঁটাই করতে হয়। ডাল কাটার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন থেঁৎলে না যায়। এতে গাছে ছত্রাক রোগের আক্রমণ হতে পারে।

সাধারনত তিন রকমের ছাঁটাই করা হয়, হালকা ছাঁটাই, মাঝারি ছাঁটাই ও কঠোর ছাঁটাই। লম্বা ডালের এক তৃতীয়াংশ কাটা বা মরা ও অসুস্থ ডাল কেটে ছেঁটে ফেলাকে হালকা ছাঁটাই, মাটির উপরে ৩০-৩৫ সেঃমিঃ রেখে ছাঁটাই করাকে মাঝারি ছাঁটাই ও মাটির উপরে ডালের উচ্চতা ১৪-২০ সেঃমিঃ রেখে ছাঁটাই করাকে শক্ত ছাটাই বলা হয়। কোন ধরনের ছাঁটাই হবে তা নির্ভর করে পারিপার্শ্বিকতা, গাছ ও মাটির রকম ভেদের উপর। বালি প্রধান মাটিতে ক্রমাগত কঠোর ছাঁটাই করলে গাছ মারা যেতে পারে। তবে মাটি যদি ভাল হয় এবং প্রদর্শনীর জন্য বড় ফুল ফোটাতে হয় তাহলে কঠোর ছাঁটাই প্রযোজ্য। অন্য ক্ষেত্রে মাঝারি ছাঁটাই করতে হয়। মাঝারি ছাঁটাইয়ের ফুল খুব বড় হয় না বটে, তবে বেশী ফুল পাওয়া যায়। ছাঁটাইয়ের পর কাটা অংশে ‘প্রুনিং পেইন্ট’ লাগাতে হবে, নতুবা কাটা অংশ দিয়ে পোকার আক্রমন ও তৎপরে ছত্রাকের আক্রমন ঘটতে পারে। দেশীয় গোলাপে কাটা স্থানে অবশ্য গোবর লাগানোই উত্তম। প্রুনিং পেইন্ট তৈরির ফরমূলাঃ পাইরিফস বা পাইরিবান ১ ভাগ, কপার কার্বনেট ৪ ভাগ, লাল লেড ৪ ভাগ এবং তিষির তেল ৫ ভাগ।

পোকা-মাকড় দমন
পোকা-মাকড় দমন

পোকা-মাকড় দমন

যেসব উল্লেখ যোগ্য পোকা-মাকড় গোলাপ গাছকে আক্রমণ করে তা নিন্মে আলোচনা করা হলো।

উইপোকাঃ কাটিং লাগাবার পর নতুন শিকড় বের হবার আগেই পুরান শিকড়গুলোকে নষ্ট করে দেয়।

দমন ব্যবস্থাঃ মাটিতে উই পোকা থাকার সম্ভাবনা থাকলে পাইরিফস বা উপযুক্ত কীটনাশক দিয়ে মাটি শোধন করে নিলে উই পোকার আক্রমণ প্রতিহত করা যায়।

লাল ক্ষুদে মাকড়সাঃ এ পোকা পাতার নিচের পিঠে থেকে পাতার রস চুষে খায় বলে গাছ নিস্তেজ হয়ে পড়ে। পাতর উপরের পিঠে পিন ফোটানো দাগ এবং আক্রান্ত পাতা ও ডালে সুক্ষ্ম জাল দেখা গেলে এদের আক্রমণ সনাক্ত করা যায়। আক্রমণ বেশী হলে সবুজ রং হালকা হয়ে যায় এবং পাতা কুঁকড়িয়ে যায়। অনেক সময় গাছ মারাও যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ সংখ্যায় কম থাকতেই লাল খুদে মাকড়সা দমন করতে হয়, নতুবা পরে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। কেলথেন-৪২, থিওভিট-৮০, ইথিওন-৪৬.৫ ইসি প্রভৃতি কীটনাশকের যে কোন একটি পানির সংগে নির্দিষ্ট পরিমাণ মিশিয়ে পাতার উল্টো পিঠে স্প্রে করে এদের দমন করতে হয়। শুধুমাত্র ঠান্ডা পানি জোরে সেপ্র করেও এদের দমন করা যায়।

পরিচিতি
পোকা-মাকড় দমন

শ্যাফার বিটলঃ এ পোকা বড় ও লালচে রং এর। রাতের বেলা গাছের পাতা খেয়ে ঝাঁঝরা করে দেয়, ফুলের পাপড়ি ও রেনু খায় এবং চারা গাছের বৃদ্ধিতে বিশেষ ক্ষতি করে। বর্ষাকালেই এ পোকার আক্রমন বেশী হয়। এ পোকা মাটিতে ডিম পাড়ে এবং ক্রীড়া গোলাপের শিকড় খেয়ে ক্ষতি করে।

দমন ব্যবস্থাঃ পাইরিফস, পাইরিবান বা উপযুক্ত কীটনাশক দিয়ে কীটনাশক দিয়ে মাটি শোধন করলে কীড়া মারা যায়। রাতের বেলা হাতে বেছে পোকা ধরে মেরেও এ পোকা দমন করা যায়।

শুঁয়ো পোকাঃ এরা গাছের পাতা খেয়ে ক্ষতি করে।

দমন ব্যবস্থাঃ পোকা অল্প ও বড় আকারের হলে ধরে মেরে ফেলা সহজ। কিন্তু আকারে ছোট ও সংখ্যায় বেশি হলে রিপকর্ড ১০ ইসি প্রতি লিটার পানিতে ১.১ মিলি বা যেকোন স্পর্শ বিষ স্প্রে করতে হয়। একবারে দমন না হলে ২/৩ দিন পর আবার স্প্রে করার সময় আশে পাশের গাছ ও ঘাসে স্প্রে করতে হয়।

ডিগার বোলতাঃ ছাঁটাইয়ের পর অনেক সময় এরা ডালের কাটা অংশ দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ভিতরে গিয়ে বাসা বাঁধে। এই ক্ষত দিয়ে গাছ ছত্রাক দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং পরে ডাইব্যাক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়।

দমন ব্যবস্থাঃ ডাল ছাঁটাইয়ের পর কাঁটা অংশে প্রুনিং পেইন্ট লাগিয়ে এ পোকা প্রতিরোধ করা যায়।

পোকা-মাকড় দমন
পোকা-মাকড় দমন

থ্রিপসঃ মার্চ হতে এপ্রিল পর্যন্ত গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ায় থ্রিপসের আক্রমণ হয়। এরা ঝাঁক ধরে এসে আক্রমণ করে এবং অল্প সময়েই ফুলের কুঁড়ি ও অপরিণত ডগার রস চুষে খেয়ে গাছের বিশেষ ক্ষতি করে। ফলে ফুর কুঁচকানো অবস্থায় ফোটে বা ফুটতেই পারে না। কচি ডগার পাতা কুঁকড়ে যায়। আক্রান্ত ডগা ও ফুল পরীক্ষা করলে পরিণত ও অপরিণত থ্রিপস দেখা যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ আক্রান্ত ডগা এবং ফুল কেটে পুড়িয়ে ফেলে এবং মিপসিন ৭৫ ডব্লিউপি নামক কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২.০ গ্রাম হারে পানিতে মিশিয়ে সপ্তাহে একবার করে ২/৩ বার পরে দু সপ্তাহ পর একবার করে নিয়মিত স্প্রে করতে হয়।

জাব পোকাঃ জাব পোকা জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে পাতা, কচি ডগা ও ফুলের রস চুষে খেয়ে ক্ষতি করে।

দমন ব্যবস্থাঃ এ পোকা দমনের জন্য ২মিলি লিটার ম্যালাথিয়ন প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

পোকা-মাকড় দমন
পোকা-মাকড় দমন

রোগঃ

গোলাপ গাছে ছত্রাকজনিত ও খাদ্যের অভাবজনিত রোগ দেখা যায়। ছত্রাকজনিত রোগ ও প্রতিকার নিন্মরূপঃ

ডাইব্যাকঃ রোগাক্রান্ত গাছের ডাল বা কান্ড মাথা থেকে কালো হয়ে মরতে শুরু করে। এ লক্ষণ ক্রমেই কান্ডের মধ্য দিয়ে শিকড় পর্যন্ত পৌঁছে এবং সম্পূর্ণ গাছ মারা যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ ডাইব্যাক শুরু হলে রোগাক্রান্ত বেশ নিচ পর্যন্ত কেটে ফেলে দিয়ে কাটা মাথায় প্রুনিং পেইন্ট লাগিয়ে দিতে হয়, আক্রান্ত অংশ কেটে পুড়িয়ে দিতে হয় এবং  যে সিকেটিয়ার বা ছুরি দিয়ে আক্রান্ত গাছ কাটা হয় তা স্পিরিট দিয়ে মুচে দিয়ে অন্য গাছ কাটতে হয়।

পাউডারী মিলডিউঃ শীতের শেষের দিকে পাতায় সাদা সাদা পাওডারের মত দেখা যায়। এগুলো ছত্রাকের অনুজীব। রোগ বেশী হলে আক্রান্ত গাছের কচি পাতা ও ডগা এসব অনুজীব দ্বারা একেবারে ঢেকে যায়। কুঁড়ি ফোটে না, নষ্ট হয়ে যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ রোগাক্রান্ত ডগা ও পাতা তুলে পুড়িয়ে দিতে হবে এবং হেকোনাজল ৫ ইসি বা ডাইথেন এম-৪৫ অথবা ইন্ডোফিল এম-৪৫ দিয়ে স্প্রে করতে হবে।

ফুল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা
ফুল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা

ফুল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা

সদ্য ব্যবহারের জন্য আধফোটা গোলাপ ফুলের কুড়ি কাটা উচিত। কিন্তু কয়েক দিন পর ব্যবহারের লক্ষ্যে গোলাপ ফুলের কুঁড়ির পর্যায়ে আসার পর কাটা উচিত। কাটা ফ্লাওয়ার হিসাবে ফুল লম্বা পুষ্প দন্ড কয়েকটি পাতা সহ ধারালো ছুরি দিয়ে কাটতে হয়। ফুল কাটার কাজটি খুব সকালে অথবা শেষ বিকেলে করা উচিত। ফুলদানীর পানিতে ৩%  চিনি ও ৬০০ পিপি এম ৮- HQC এর দ্ররণে ফুল রেখে আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি করা সম্ভব। বাজারের চাহিদার উপর ফুলের প্যাকেজিং নির্ভরশীল। অনেক উৎপাদনকারী নিকটস্থ স্থানীয় বাজারের জন্য প্যাকেজিং ছাড়াই ফুলের আঁটি বা গোছা বাজারে সরবরাহ করে থাকে।কিছু কিছু ক্ষেত্রে আঁটিসমূহ খবরের কাগজ দ্বারা আবৃত থাকে।

ফলন
ফলন

ফলন

গোলাপের ফলন প্রধানতঃ আবহাওয়া ও জাতের উপর নির্ভরশীল। আদর্শ উৎপাদন পরিবেশে লম্বা কান্ডযুক্ত জাত প্রতি বছর গাছ প্রতি প্রায় ১৫ থেকে ৩০ টি ফুল উৎপন্ন করে। গ্রীষ্মকালীন সময়ে বিশেষ করে যখন ফুলের মান এবং বাজার দর কমে যায়, তখন কুঁড়ি ছাঁটাই করে গাছের দৈহিক গঠন ও বৃদ্ধি  ঠিক রাখতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ

বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ
বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ

সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের কাছে ফুলের আবেদন চিরন্তন। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়েই চলছে। ফলে এখন ফুলেও লেগেছে বাণিজ্যের ছোঁয়া। দিন দিন বেড়ে চলছে ফুলের চাষ ও ব্যবহার। তাই আপনিও ফুলের চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে পারেন।

চাষের স্থান
সারাদেশে এখন বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা যায়। গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিলজুড়ে চাষ করা যায় নানা জাতের ফুল। এছাড়া বাড়ির পাশের জমিতে ফুলের চাষ করা যায়। চাষ করতে পারেন বাড়ির ছাদেও।

যে ধরনের ফুল
লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, রজনীগন্ধা, ভুট্টা ফুল, গাঁদা, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, জারবরা, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি, ডালিয়া, কসমস, পপি, গাজানিয়া, স্যালভিয়া, ডায়ান্থাস, ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ডেইজি, ভারবেনা, হেলিক্রিসাম, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, লুপিন, কারনেশন, প্যানজি, অ্যাস্টার ও চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল চাষ করা যায়।

পুঁজি
প্রথম খুব বেশি পুঁজির দরকার হয় না। জমির আকারের ওপর নির্ভর করে খরচ কম-বেশি হতে পারে।

চাষ ও পরিচর্যা
ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস। টবসহ চারাও কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হয়। সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝর দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

বিক্রয়
শহরে গিয়ে ফুল বিক্রি করতে ঝামেলা হতে পারে। অনেক সময় ঠিকমতো দামও পাওয়া যায় না। তাই উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য এলাকাতেই ফুলের দোকান গড়ে তুলতে পারেন।

কর্মসংস্থান
অন্যান্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষে লাভ অনেক বেশি। আর ফুল চাষ করার ফলে বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। কারণ ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার, ফুল ছেঁড়া, ফুলের মালা গাঁথাসহ অনেক কাজে পুরুষ এবং নারী সম্পৃক্ত হতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করছেন যে যুবক

শুধু ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করেন এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার। জেনে নিন সেই যুবক সম্পর্কে।

কাজের প্রতি যদি ভালোবাসা তৈরি না হয়, তা হলে যত টাকাই মাইনে পান না কেন, সে কাজে উত্সাহ আসে না। রোজ জোর করেই শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে অফিসে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু যদি এমন সুযোগ সামনে আসে, যেখানে টাকাও আছে আর ভালোলাগাও!
কাজের প্রতি যদি ভালোবাসা তৈরি না হয়, তা হলে যত টাকাই মাইনে পান না কেন, সে কাজে উত্সাহ আসে না। রোজ জোর করেই শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে অফিসে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু যদি এমন সুযোগ সামনে আসে, যেখানে টাকাও আছে আর ভালোলাগাও!
এমন সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করতে চাইবেন! না। যেমন চাননি ভারতের হরিয়ানার সইদপুরে এক চাষি পরিবারের ছেলে। তার নাম বিপিন রাও যাদব।
এমন সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করতে চাইবেন! না। যেমন চাননি ভারতের হরিয়ানার সইদপুরে এক চাষি পরিবারের ছেলে। তার নাম বিপিন রাও যাদব।
বিপিন পেশায় একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক বিপিন একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যান।
বিপিন পেশায় একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক বিপিন একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যান।
বিপিনের বাবা চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি প্রথম থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন, তার দুই ছেলেকে কখনো এই কষ্টের পেশায় আনবেন না। তারা দু’জনেই ভালো চাকরি করবেন।
বিপিনের বাবা চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি প্রথম থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন, তার দুই ছেলেকে কখনো এই কষ্টের পেশায় আনবেন না। তারা দু’জনেই ভালো চাকরি করবেন।
বিপিন এবং বিপিনের দাদা দুজনেই বাবার স্বপ্ন দেখা পথেই এগিয়েছেন। তার দাদাও বি টেক সম্পূর্ণ করে চাকরিতে ঢুকে গিয়েছেন।
বিপিন এবং বিপিনের দাদা দুজনেই বাবার স্বপ্ন দেখা পথেই এগিয়েছেন। তার দাদাও বি টেক সম্পূর্ণ করে চাকরিতে ঢুকে গিয়েছেন।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
এক, বিপিন যেভাবে জীবন কাটাতে চাইতেন, প্রাপ্য মাইনেতে তা সম্ভব ছিল না। দুই, তার উপর সেই কাজের প্রতি ভালোবাসাও তৈরি হচ্ছিল না।
এক, বিপিন যেভাবে জীবন কাটাতে চাইতেন, প্রাপ্য মাইনেতে তা সম্ভব ছিল না। দুই, তার উপর সেই কাজের প্রতি ভালোবাসাও তৈরি হচ্ছিল না।
এক বন্ধুর পরামর্শে বিপিন বাড়ির কাছের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দেন। কীভাবে লাভজনক উপায়ে কৃষিকাজ করা যায়, কী ভাবে প্রচুর জমি ছাড়াই চাষাবাদ করা যায়, এরকম নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।
এক বন্ধুর পরামর্শে বিপিন বাড়ির কাছের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দেন। কীভাবে লাভজনক উপায়ে কৃষিকাজ করা যায়, কী ভাবে প্রচুর জমি ছাড়াই চাষাবাদ করা যায়, এরকম নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
সাহস এবং আত্মবিশ্মারের সঙ্গে গুরুগ্রামের চাকরি ছেড়ে চাষ করতে বাড়ি ফিরে আসেন বিপিন। বিপিনের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই মানতে পারছিল না তার পরিবার। গ্রামের লোকের কাছেও হাসির খোরাক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কিন্তু সে সবে পাত্তা না দিয়ে নিজের জমানো দুই লাখ টাকা দিয়ে প্রথমেই চাষের প্রয়োজনীয় মালপত্র কিনে ফেলেন। বাবার জমি থেকে প্রথমে মাত্র ১০০ বর্গ ফুট জমিতে পলিহাউস তৈরি করে চাষ শুরু করেন।
কিন্তু সে সবে পাত্তা না দিয়ে নিজের জমানো দুই লাখ টাকা দিয়ে প্রথমেই চাষের প্রয়োজনীয় মালপত্র কিনে ফেলেন। বাবার জমি থেকে প্রথমে মাত্র ১০০ বর্গ ফুট জমিতে পলিহাউস তৈরি করে চাষ শুরু করেন।
প্রথমেই খুব লাভ হতে শুরু করে তা নয়। হাতে কলমে কাজ করতে গেলে অনেক ভুলভ্রান্তি হয়, আর তা থেকেই শেখা যায়। বিপিনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল।
প্রথমেই খুব লাভ হতে শুরু করে তা নয়। হাতে কলমে কাজ করতে গেলে অনেক ভুলভ্রান্তি হয়, আর তা থেকেই শেখা যায়। বিপিনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল।
মাটি ছাড়া কোকোপিট এবং আরও নানারকম উপকরণ দিয়ে টবেই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১৬ সালে চাষ করা শুরু করেছিলেন বিপিন। তার দু’বছরের মধ্যেই আশাতীত ফল পান।
মাটি ছাড়া কোকোপিট এবং আরও নানারকম উপকরণ দিয়ে টবেই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১৬ সালে চাষ করা শুরু করেছিলেন বিপিন। তার দু’বছরের মধ্যেই আশাতীত ফল পান।
নানা প্রজাতির ফুল, সব্জি সব কিছুই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। আলাদা করে ১৮০০ বর্গ ফুটের জমি ভাড়া নিয়ে সেখানে পলিহাউস তৈরি করে চাষ করতে শুরু করেন।
নানা প্রজাতির ফুল, সব্জি সব কিছুই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। আলাদা করে ১৮০০ বর্গ ফুটের জমি ভাড়া নিয়ে সেখানে পলিহাউস তৈরি করে চাষ করতে শুরু করেন।
বর্তমানে তার আড়াই হাজার ট্রে এবং টব রয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ ফুল ফোটান তিনি। মূলত ফুলের ব্যবসা তার।
বর্তমানে তার আড়াই হাজার ট্রে এবং টব রয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ ফুল ফোটান তিনি। মূলত ফুলের ব্যবসা তার।
বর্তমানে বিপিনের বয়স মাত্র ২০ বছর। এখনই তিনি মাসে আয় করেন অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এই ব্যবসাকে আরও বড় করাই তার উদ্দেশ্য এখন। তার মতো তরুণরা অহেতুক চাকরির পিছনে না ছুটে চাষাবাদকেই আপন করে নিন, এটাই চান তিনি।
বর্তমানে বিপিনের বয়স মাত্র ২০ বছর। এখনই তিনি মাসে আয় করেন অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এই ব্যবসাকে আরও বড় করাই তার উদ্দেশ্য এখন। তার মতো তরুণরা অহেতুক চাকরির পিছনে না ছুটে চাষাবাদকেই আপন করে নিন, এটাই চান তিনি।
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

খাগড়াছড়িতে জার্বেরা ফুল চাষের সম্ভাবনা ভালো

জার্বেরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। বিদেশি ফুল হলেও বাংলাদেশের পাহাড়ে এই ফুল চাষের সম্ভাবনা বাড়ছে। সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠানে দেখা মেলে লাল, কমলা, গোলাপি, হলুদ, সাদা, বেগুনিসহ নানা রঙের জার্বেরার। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ বলেন, গত দুই বছর ধরে এখানে জার্বেরা ফুলের চাষ হচ্ছে। ৭৫টি গাছে ২০০ থেকে ৩০০টির বেশি ফুল আসছে, ভালো ফুল ফুটছে। খাগড়াছড়িতে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এই ফুল চাষের। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ বাড়ালে কৃষক লাভবান হবেন।

বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
ফুটন্ত জার্বেরা
ফুটন্ত জার্বেরা
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ

ভালো বীজ নির্বাচন করুন

  • বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
  • রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
  • প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।

বীজ শোধন প্রক্রিয়া

  • শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
  • পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
  • জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।

বীজের সঠিক সঞ্চয়ন

  • শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
  • আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
  • বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।

অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন

  • বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
  • পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।

বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা

  • ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
  • উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।

বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ

  • মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
  • বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
  • দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
  • শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
  • মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
  • খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।

বীজ ড্রেসিং

এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ আচ্ছাদন

বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

বীজের বড়ি দেওয়া
বীজের বড়ি দেওয়া

বীজের বড়ি দেওয়া

এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।

বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ

শস্যকীট/রোগবীজ পরিচর্যা
আখশিকড়ে পচন, ধসা রোগকার্বেন্ডাজিম(০.১%)
২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ধানশিকড়ে পচনট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে)
অন্যান্য পোকামাকড়ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়াসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন
লঙ্কাস্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপিপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপসইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই
অড়হরধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
মটরশিকড়ে পচনব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা,
১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ
সাদা পচনপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান
ঢ্যাঁড়শশিকড়ের গ্রন্থিতে রোগবীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স
টম্যাটোমাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো,
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ধনেধসাপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে
বেগুনব্যাকটেরিয়াজনিত ধসাপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স
শুঁটিজাতীয় শস্যমাটি বাহিত সংক্রমণ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
নেমাটোডকাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ)
সূর্যমুখীবীজের পচনপ্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাইপ্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস,
প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস
গমউইরোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে
শিষে কালো হয়ে যাওয়াথিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি,
কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি,
টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই,
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি
ফুলকপি,
বাঁধাকপি,
ব্রকলি,
মুলো
মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া)১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড)বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ছোলাধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা
কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা
আলুমাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগএমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা
বার্লিকালো হয়ে যাওয়া, উইপ্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা
ক্যাপসিকামশিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোডপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ

বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।

৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

  • সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ