আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফসল

ভুট্টায় দোল খাচ্ছে কৃষকের হাসি

উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় কালীগঞ্জ উপজেলায় এবার সবচেয়ে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে। তাছাড়া ভুট্টা মানুষের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনই এটি এখন পোল্ট্রি ও মাছের খাবারসহ বিভিন্ন খাবারে যুক্ত হয়েছে

কৃষকদের ভর্তুকি বা প্রণোদনা দেওয়ায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় বেড়েছে ভুট্টার চাষ। মাঠের পর মাঠ সবুজ পাতার আঁড়ালে হাসছে হলুদ রঙের ভুট্টার মোচা (ফল)। বসন্তের আগমনী বাতাসে দোল খাচ্ছে এসব ভুট্টার ক্ষেত। বাতাসে দোল খাওয়ার সাথে চাষীদের মুখেও ফুটে উঠেছে স্বপ্ন পূরণের হাসি। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ১৫শ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে ১৩ হাজার ২শ কৃষক ২৩২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ৮২৫ হেক্টর বেশি। 

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উন্নয়ন শাখায় কর্মরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বিশ্বাস জানান, ভুট্টা চাষে চলতি বছর সরকার কালীগঞ্জ উপজেলার ৮০০ চাষিকে প্রণোদনা ও ৬৪ জন চাষিকে প্রদর্শনী প্লট করার জন্য সহযোগিতা করেছে। ৮০০ জন চাষির প্রত্যককে ২ কেজি করে ভুট্টার বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ড্যাপ সার) ও ১০ কেজি এমওপি (পটাশ) সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া রাজস্ব খাত থেকে ৬০ জন ও এনএটিপি (ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোজেক্ট) প্রকল্পের আওতায় ৪ জনসহ মোট ৬৪ জন কৃষককে ভুট্টার ওপর প্রদর্শনী প্লট দেওয়া হয়েছে। এসব কৃষকের প্রত্যককে নগদ ১৫শ টাকাসহ সার, কীটনাশক, সাইনবোর্ড বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ২৩২৫ হেক্টর, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪৫০ হেক্টর, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩৫০ হেক্টর, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১১০ হেক্টর, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১৩৫ হেক্টর ও ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ১০৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। 

কৃষি বিভাগের মতে, কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, নিয়ামতপুর, ত্রিলোচনপুর, হাসানহাটি, তিল্লা, ঈশ্বরবাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা ভুট্টার আবাদ বেশি করেছেন। 

উপজেলার ঈশ্বরবা গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, ধানের চেয়ে ভুট্টায় লাভ বেশি। তিনি ৩৩ শতকের ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। গত বছর তিনি বিঘা প্রতি জমিতে গড় ৪৫ মণ করে ভুট্টা পেয়েছিলেন এবং ৩শ মণ ভুট্টা বিক্রি করেছিলেন। চলতি বছরও ভুট্টার ভালো পাবেন বলে তিনি আশা করেন। 

একই গ্রামের কৃষক তারিকুল ইসলাম জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। ভুট্টা আবাদ করতে সেচ সার, বীজ, পরিচর্যা ও কীটনাশকসহ বিঘা প্রতি অনুমানিক ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা খবর হয়। ভুট্টা ভাল হলে প্রতি বিঘায় ৪০ থেকে ৫০ মণ ফলন পাওয়া যায়। বাজারে গত বছর কাঁচা ভুট্টা ৪৫০ টাকা ও শুকনা ভুট্টা ৭৫০ মণ বিক্রি হয়েছে। এক্ষেত্রে তিনি খরচ বাদে অর্ধেক লাভ করবেন।  

উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ বেশি হওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় কালীগঞ্জ উপজেলায় এবার সবচেয়ে বেশি ভুট্টার আবাদ হয়েছে। তাছাড়া ভুট্টা মানুষের জন্য যেমন পুষ্টিকর তেমনই এটি এখন পোল্ট্রি ও মাছের খাবারসহ বিভিন্ন খাবারে যুক্ত হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টা চাষিদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছি। 

উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল করিম বলেন, ভুট্টা চাষে ঝুঁকি কম আবার লাভও ভাল। এটি আবাদের জন্য কৃষকদের সার, বীজ, কীটনাশক ও নগদ টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। যে কারণে ভুট্টা চাষে চাষিদের আগ্রহ বেড়েছে। 

তিনি আরও বলেন, “ভুট্টার রোগবালাই কম হয়। দেশের বিভিন্ন জেলায় “আর্মি ওয়ার্ম” নামের একটি পোকার আক্রমণের কথা শোনা গেলেও এই উপজেলার কোথাও কোনো ভুট্টা ক্ষেতে কেো পোকার আক্রমণের কথা শোনা যায়নি। তাই আশা করছি চলতি বছর এ উপজেলার ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে।” 

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ফসল

পার্চিং পদ্ধতি: কৃষি জমিতে পোকা দমন এবং ফলন বৃদ্ধি করার কার্যকর উপায়

পার্চিং পদ্ধতি: কৃষি জমিতে পোকা দমন এবং ফলন বৃদ্ধি করার কার্যকর উপায়
পার্চিং পদ্ধতি: কৃষি জমিতে পোকা দমন এবং ফলন বৃদ্ধি করার কার্যকর উপায়

পার্চিং পদ্ধতি হলো একটি প্রাকৃতিক এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতি, যা জমিতে পোকামাকড় দমন ও ফসলের ফলন বাড়াতে সহায়ক। এই পদ্ধতিতে জমির মাঝখানে বা প্রান্তে কাঠি বা বাঁশের টুকরো স্থাপন করে পাখিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়, যাতে তারা ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। এটি সহজ এবং কম খরচে কার্যকর একটি প্রাকৃতিক উপায়।

পার্চিং পদ্ধতির কাজ করার ধরন

কাঠি স্থাপন:

  • জমির বিভিন্ন স্থানে ৪-৫ ফুট লম্বা কাঠি বা বাঁশের ডগা মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।
  • প্রতিটি কাঠির মাঝে ১০-১৫ মিটার দূরত্ব রাখা হয়।

পাখিদের বসার ব্যবস্থা:

  • কাঠি বা বাঁশের মাথায় একটি হালকা শাখা বা ক্রসবার লাগানো হয়, যাতে পাখিরা সহজে বসতে পারে।
  • পাখিরা এই কাঠিতে বসে জমিতে থাকা ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে।

ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন:

  • জমিতে থাকা লেদা পোকা, মাজরা পোকা, এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পোকা পাখিরা খেয়ে ফেলে।
  • ফলে রাসায়নিক কীটনাশকের প্রয়োজন কমে যায়।

পরিবেশ সংরক্ষণ:

  • এই পদ্ধতি পরিবেশবান্ধব, কারণ এতে বিষাক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার প্রয়োজন হয় না।

পার্চিং পদ্ধতির উপকারিতা

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি:

  • রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • মাটি, পানি, এবং পরিবেশ দূষণ কম হয়।

কম খরচে কার্যকর:

  • এই পদ্ধতিতে তেমন খরচ লাগে না। শুধুমাত্র কয়েকটি কাঠি বা বাঁশের প্রয়োজন হয়।

ফসলের ফলন বৃদ্ধি:

  • ক্ষতিকারক পোকামাকড় কমে যাওয়ায় ফসল ভালো হয় এবং ফলন বৃদ্ধি পায়।

পাখিদের খাদ্য সরবরাহ:

  • জমিতে পার্চিং ব্যবস্থার মাধ্যমে পাখিরা খাদ্য পায়, যা প্রাকৃতিক খাদ্যচক্র বজায় রাখতে সাহায্য করে।

জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ:

  • জমিতে পাখিদের উপস্থিতি জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে সহায়ক।

পার্চিং পদ্ধতি কোথায় প্রযোজ্য?

পার্চিং পদ্ধতি হলো একটি প্রাকৃতিক এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি, যা ফসলের জমিতে পোকামাকড় দমন এবং ফলন বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হয়। এটি বিশেষভাবে কার্যকর এবং বহুল ব্যবহৃত একটি কৃষি কৌশল। তবে পার্চিং পদ্ধতি সব ধরনের ফসলের জমিতে ব্যবহার করা যায় না। সঠিকভাবে এই পদ্ধতি প্রয়োগ করার জন্য ফসল এবং জমির ধরন সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা গুরুত্বপূর্ণ।

নিচে পার্চিং পদ্ধতি কোথায় এবং কীভাবে প্রযোজ্য তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

পার্চিং পদ্ধতির উপযুক্ত ফসল ও জমি
পার্চিং পদ্ধতির উপযুক্ত ফসল ও জমি

পার্চিং পদ্ধতির উপযুক্ত ফসল ও জমি

ধান চাষে (Rice Cultivation): পার্চিং পদ্ধতি ধানক্ষেতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত মাজরা পোকা, লেদা পোকা, এবং পাতা কাটার পোকার আক্রমণ দমনে এটি কার্যকর।

অঞ্চল: বোরো, আমন, এবং আউশ মৌসুমে পার্চিং ব্যবহার করা হয়।

কাজ: পাখিদের মাধ্যমে ক্ষতিকারক পোকামাকড় খাওয়ানো হয়, যা ধানের ফলন বাড়ায়।

শাকসবজি চাষে (Vegetable Farming): শাকসবজি, যেমন লাউ, কুমড়ো, টমেটো, এবং বেগুন চাষেও পার্চিং পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।

কাজ: ফল ছিদ্রকারী পোকা এবং লেদা পোকার আক্রমণ কমায়।

ফলাফল: রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমানো যায় এবং সবজির গুণগত মান ভালো থাকে।

ডাল জাতীয় ফসল (Pulse Crops): মসুর, ছোলা, এবং মুগ ডালের ক্ষেতে পোকামাকড় দমন করার জন্য পার্চিং পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

কাজ: ফসলের দানায় ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধ।

ফলাফল: উৎপাদিত ডালের গুণগত মান উন্নত হয়।

তেলজাত ফসল (Oil Seeds): সরিষা, সূর্যমুখী, এবং তিলের ক্ষেতে ক্ষতিকারক পোকা দমনে পার্চিং ব্যবহার করা হয়।

কাজ: ফুলের ক্ষতি রোধ এবং ফসলের ফলন বৃদ্ধি।

ভুট্টা ও গম চাষ (Maize and Wheat Farming): ভুট্টা ও গম চাষে পাতা ছিদ্রকারী পোকা এবং লেদা পোকা দমনে পার্চিং পদ্ধতি কার্যকর।

কাজ: জমিতে বসানো কাঠিতে পাখিদের উপস্থিতি পোকামাকড় খেয়ে ফেলে।

পার্চিং পদ্ধতি প্রয়োগের সঠিক সময়

পোকামাকড়ের আক্রমণ শুরু হলে: ফসলের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগেই পার্চিং ব্যবস্থা চালু করা উচিত।

ফসলের বিভিন্ন স্তরে: চারা রোপণের প্রথম দিক থেকে ফসল কাটা পর্যন্ত পদ্ধতিটি প্রয়োগ করা যায়।

পার্চিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের সহজ ধাপসমূহ
পার্চিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের সহজ ধাপসমূহ

পার্চিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের সহজ ধাপসমূহ

পার্চিং পদ্ধতি একটি সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি কৌশল, যা ক্ষতিকারক পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকর। এটি বাস্তবায়ন করতে খুব বেশি সময় বা খরচের প্রয়োজন হয় না। সঠিক পরিকল্পনা এবং পদ্ধতি অনুসরণ করলেই সফলভাবে পার্চিং করা সম্ভব। নিচে পার্চিং পদ্ধতি বাস্তবায়নের ধাপসমূহ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

জমি পর্যবেক্ষণ করুন

  • ক্ষতিকারক পোকামাকড় চিহ্নিত করুন: ফসলের ক্ষতি করছে এমন পোকার ধরন এবং সংখ্যা যাচাই করুন।
  • জমির আকার নির্ধারণ করুন: জমির আকার এবং ফসলের ধরণ অনুযায়ী পার্চিং কাঠি স্থাপনের পরিকল্পনা করুন।

কাঠি বা বাঁশ সংগ্রহ করুন

  • ৪-৫ ফুট লম্বা কাঠি, বাঁশ বা লাঠি সংগ্রহ করুন।
  • প্রতিটি কাঠি মজবুত হওয়া উচিত, যাতে এটি হাওয়া বা বৃষ্টিতে পড়ে না যায়।

কাঠি স্থাপন করুন

  • জমির মাঝখানে এবং চারদিকে সমান দূরত্বে কাঠি পুঁতে রাখুন।
  • দূরত্ব বজায় রাখুন: প্রতিটি কাঠির মধ্যে ১০-১৫ মিটার দূরত্ব রাখুন।
  • জমির আকারের উপর ভিত্তি করে কাঠির সংখ্যা নির্ধারণ করুন।

পাখিদের বসার ব্যবস্থা তৈরি করুন

  • কাঠির মাথায় একটি হালকা শাখা বা ক্রসবার স্থাপন করুন, যা পাখিদের বসার জন্য উপযুক্ত।
  • কাঠির উপরে আলকাতরা বা তেল লাগাবেন না, যাতে পাখিদের বসতে সমস্যা না হয়।

পাখিদের আকৃষ্ট করুন

  • জমিতে পাখিদের আকৃষ্ট করার জন্য পরিবেশ শান্ত রাখুন এবং আশেপাশে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ জিনিস এড়িয়ে চলুন।
  • জমিতে কিছু পাখির প্রিয় খাবার যেমন ধান বা শস্য রেখে তাদের উপস্থিতি বাড়ানো যায়।

নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন

  • প্রতিদিন জমি পর্যবেক্ষণ করে দেখুন কাঠিতে পাখি বসছে কি না।
  • যদি পাখি না আসে, তবে কাঠির অবস্থান বা সংখ্যা পরিবর্তন করুন।

কাঠি স্থাপনের সংখ্যা বাড়ান (প্রয়োজনে)

  • যদি জমিতে পোকার আক্রমণ বেশি হয়, তবে কাঠির সংখ্যা বাড়িয়ে জমি আরও সুরক্ষিত করতে পারেন।

জমির পরিচর্যা করুন

  • জমি পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং পার্চিং কাঠিগুলি নিয়মিত পরীক্ষা করুন।
  • পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হলে বুঝবেন পদ্ধতিটি কার্যকর হয়েছে।

ফসল কাটার সময় কাঠি সরিয়ে নিন

  • ফসল কাটার পর কাঠি সরিয়ে সংরক্ষণ করুন, যাতে পরবর্তী মৌসুমে ব্যবহার করা যায়।

পার্চিং পদ্ধতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • ক্ষতিকারক পোকার সংখ্যা বাড়ার আগেই পার্চিং শুরু করুন।
  • পাখিদের কোনোভাবেই বিরক্ত করবেন না, কারণ তারা পোকামাকড় দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
  • প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে পাখিদের ভূমিকা বুঝুন এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হন।

পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহারিক উদাহরণসমূহ

পার্চিং পদ্ধতি কৃষিক্ষেত্রে পোকামাকড় দমন ও ফসলের ফলন বাড়ানোর একটি কার্যকর, পরিবেশবান্ধব এবং সহজ কৌশল। বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় এবং এর সফল উদাহরণ রয়েছে। নিচে বিভিন্ন ক্ষেত্র ও ফসলের উপর ভিত্তি করে পার্চিং পদ্ধতির ব্যবহারিক উদাহরণ আলোচনা করা হলো:

ধান চাষে পার্চিং পদ্ধতি
ধান চাষে পার্চিং পদ্ধতি

ধান চাষে পার্চিং পদ্ধতি

অঞ্চল: বাংলাদেশে ধান চাষের প্রধান এলাকা যেমন ময়মনসিংহ, সিলেট, কুমিল্লা, ও যশোরে পার্চিং পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • আমন ও বোরো মৌসুমে মাজরা পোকা এবং লেদা পোকার আক্রমণ দমনে পার্চিং পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।
  • পাখিরা এই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে, ফলে রাসায়নিক কীটনাশকের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়।
সবজি চাষে পার্চিং পদ্ধতি
সবজি চাষে পার্চিং পদ্ধতি

সবজি চাষে পার্চিং পদ্ধতি

অঞ্চল: সাভার, গাজীপুর, এবং বগুড়ার মতো সবজি উৎপাদনকারী এলাকাগুলো।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • লাউ, কুমড়ো, করলা, টমেটো, এবং বেগুন চাষে ফল ছিদ্রকারী পোকা নিয়ন্ত্রণে পার্চিং পদ্ধতি কার্যকর।
  • এটি ফসলের গুণগত মান রক্ষা করে এবং রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার কমায়।
তেলজাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে পার্চিং
তেলজাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে পার্চিং

তেলজাতীয় ফসলের ক্ষেত্রে পার্চিং

অঞ্চল: পাবনা, সিরাজগঞ্জ, এবং ফরিদপুরে সরিষা চাষের ক্ষেত্রে।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • সরিষা ও সূর্যমুখীর ক্ষেতের ফুলে ক্ষতিকারক পোকামাকড় দমন করতে পার্চিং ব্যবহৃত হয়।
  • পোকা নিয়ন্ত্রণের ফলে ফসলের ফলন উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।
ডালজাতীয় ফসল চাষে পার্চিং পদ্ধতি
ডালজাতীয় ফসল চাষে পার্চিং পদ্ধতি

ডালজাতীয় ফসল চাষে পার্চিং পদ্ধতি

অঞ্চল: ময়মনসিংহ এবং রাজশাহী অঞ্চলে।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • মসুর ডাল এবং মুগ ডালের ক্ষেতে দানা ছিদ্রকারী পোকা নিয়ন্ত্রণের জন্য পার্চিং ব্যবহৃত হয়।
  • এটি ফসলের গুণগত মান উন্নত করার পাশাপাশি উৎপাদন ব্যয় কমায়।
গম ও ভুট্টা চাষে পার্চিং পদ্ধতি
গম ও ভুট্টা চাষে পার্চিং পদ্ধতি

গম ও ভুট্টা চাষে পার্চিং পদ্ধতি

অঞ্চল: রাজশাহী, নওগাঁ, এবং দিনাজপুরে গম ও ভুট্টা চাষে।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • গমের ক্ষেত্রে পাতা ছিদ্রকারী পোকা নিয়ন্ত্রণ করতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
  • ভুট্টা ক্ষেতে পোকামাকড়ের আক্রমণ কমাতে এটি অত্যন্ত কার্যকর।
ফল চাষে পার্চিং পদ্ধতি
ফল চাষে পার্চিং পদ্ধতি

ফল চাষে পার্চিং পদ্ধতি

অঞ্চল: নাটোর, সাতক্ষীরা, এবং দিনাজপুরে।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • আম, পেঁপে, এবং কলার বাগানে পোকামাকড়ের আক্রমণ কমাতে পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
  • পাখিদের মাধ্যমে ক্ষতিকারক পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়, যা ফলের মান উন্নত করে।
প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে পার্চিং
প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে পার্চিং

প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে পার্চিং

অঞ্চল: বাংলাদেশের অর্গানিক ফার্মিং বা প্রাকৃতিক চাষাবাদ প্রচলিত এলাকাগুলো।

ব্যবহারিক উদাহরণ:

  • রাসায়নিক মুক্ত চাষাবাদে পোকা দমন করতে পার্চিং পদ্ধতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • এটি কৃষি জমির প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়ক।

পার্চিং পদ্ধতির সফলতা থেকে শিক্ষণীয় বিষয়

পরিবেশবান্ধব: রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই পোকা দমন করা সম্ভব।

সাশ্রয়ী: পদ্ধতিটি কার্যকর করার জন্য খুব কম খরচ হয়।

ফলন বৃদ্ধি: জমিতে ক্ষতিকারক পোকার সংখ্যা কমে যাওয়ায় ফলন বৃদ্ধি পায়।

পার্চিং পদ্ধতি একটি সহজ, সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি কৌশল। এটি পোকামাকড় দমনের পাশাপাশি কৃষি উৎপাদন বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যদি আপনি রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার কমাতে চান এবং ফসলের গুণগত মান উন্নত করতে চান, তবে পার্চিং পদ্ধতি হবে আপনার জন্য সেরা বিকল্প।

আপনার ফসল রক্ষা করতে এবং কৃষি উৎপাদন বাড়াতে পার্চিং পদ্ধতি আজই ব্যবহার করুন!

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইথিওপিয়া

কফি চাষের প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা

কফি চাষের প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা
কফি চাষের প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা

কফি চাষ একটি সময়সাপেক্ষ এবং যত্নশীল প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট আবহাওয়া ও মাটির গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে কফি চাষ সম্প্রতি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নিচে কফি চাষের ধাপসমূহ বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।

কফি চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ
কফি চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ

কফি চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ

আবহাওয়া: ১৮-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কফি চাষের জন্য আদর্শ। ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থান উপযুক্ত।

মাটি: উর্বর, দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি যেখানে পানি জমে না। মাটির পিএইচ মান ৫.৫-৬.৫ হওয়া উচিত।

উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০-১২০০ মিটার উচ্চতা।

কফি চাষের ধাপসমূহ
কফি চাষের ধাপসমূহ

কফি চাষের ধাপসমূহ

বীজ সংগ্রহ ও প্রস্তুতি

  • উন্নত মানের কফি বীজ নির্বাচন করুন। সাধারণত অ্যারাবিকা (Arabica) এবং রোবাস্টা (Robusta) জাতের কফি বীজ চাষ করা হয়।
  • বীজ বপনের আগে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
চারা তৈরির পদ্ধতি
চারা তৈরির পদ্ধতি

চারা তৈরির পদ্ধতি

  • নার্সারি প্রস্তুতি: দোআঁশ মাটি, জৈব সার, এবং বালি মিশিয়ে নার্সারিতে চারা তৈরি করুন।
  • বপন: বীজগুলো ২ সেন্টিমিটার গভীরে বপন করুন।
  • পরিচর্যা: পর্যাপ্ত পানি এবং ছায়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।

জমি প্রস্তুতি

  • আগাছা পরিষ্কার করে মাটি চাষ করুন।
  • জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন।
  • গাছ লাগানোর জন্য ২ মিটার দূরত্বে গর্ত তৈরি করুন।

গাছ রোপণ

  • চারাগুলো ৮-১২ মাসের পর জমিতে রোপণ করুন।
  • প্রতি গর্তে একটি চারা রোপণ করুন এবং মাটির সঙ্গে ভালোভাবে চেপে দিন।

পরিচর্যা

  • সেচ: নিয়মিত পানি দিন, বিশেষত শুকনো মৌসুমে।
  • ছাঁটাই: বেশি ডালপালা ছেঁটে গাছের বৃদ্ধি ও ফলন নিশ্চিত করুন।
  • ছায়ার ব্যবস্থা: কফি গাছের জন্য কিছুটা ছায়া প্রয়োজন, তাই অন্যান্য গাছের ছায়া নিশ্চিত করুন।
  • সার প্রয়োগ: বছরে দুইবার জৈব সার ও প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করুন।
পোকামাকড় ও রোগ দমন
পোকামাকড় ও রোগ দমন

পোকামাকড় ও রোগ দমন

  • রোগ: কফি রস্ট (Coffee Rust) এবং ব্লাইট (Blight) রোগ দমনে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন।
  • পোকা: পাতার পোকা এবং ফলের পোকা দমনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করুন।

ফসল সংগ্রহ

  • কফি গাছ সাধারণত রোপণের ৩-৪ বছর পর ফল দেওয়া শুরু করে।
  • লাল রঙের পাকা কফি ফল হাতে তুলে বা মেশিনের সাহায্যে সংগ্রহ করুন।
  • সংগ্রহের পর কফি ফল থেকে বীজ পৃথক করুন এবং শুকানোর জন্য রোদে দিন।
বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক দেশসমূহ
বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক দেশসমূহ

বিশ্বের কফি চাষের দেশসমূহ: বিস্তারিত আলোচনা

কফি, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়, যা প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ। কফি চাষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। এই নিবন্ধে আমরা কফি চাষের শীর্ষ দেশসমূহ, তাদের বৈশিষ্ট্য, এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক দেশসমূহ

ব্রাজিল

বিশ্বে অবস্থান: শীর্ষ কফি উৎপাদনকারী দেশ।

বৈশিষ্ট্য:

  • বিশ্বব্যাপী মোট কফি উৎপাদনের প্রায় ৩০-৪০% ব্রাজিলে চাষ হয়।
  • অ্যারাবিকা এবং রোবাস্টা জাতের কফি চাষে তারা দক্ষ।
  • বিখ্যাত উৎপাদন অঞ্চল: মিনা জেরাইস, সাও পাওলো, এবং পারানা।

বিশেষত্ব: ব্রাজিলিয়ান কফি তাদের মৃদু স্বাদ এবং ভারসাম্যপূর্ণ সুগন্ধির জন্য বিশ্বখ্যাত।

ভিয়েতনাম

বিশ্বে অবস্থান: দ্বিতীয় বৃহত্তম কফি উৎপাদক।

বৈশিষ্ট্য:

  • ভিয়েতনাম রোবাস্টা কফি উৎপাদনে শীর্ষে।
  • দক্ষিণ মধ্যভাগ অঞ্চলে প্রচুর কফি চাষ হয়।

বিশেষত্ব: সাশ্রয়ী মূল্যের এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার কারণে রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কলম্বিয়া

বিশ্বে অবস্থান: তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদক।

বৈশিষ্ট্য:

  • অ্যারাবিকা কফির জন্য বিখ্যাত।
  • আন্দিজ পর্বতের ঢালে চাষ হওয়া কফি স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।

বিশেষত্ব: সুগন্ধি ও মসৃণ স্বাদের জন্য জনপ্রিয়।

ইন্দোনেশিয়া

বিশ্বে অবস্থান: চতুর্থ বৃহত্তম।

বৈশিষ্ট্য:

  • সুমাত্রা, জাভা, এবং বালির কফি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।
  • বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি “কোপি লুয়াক” কফি তাদের পরিচিতি বাড়িয়েছে।

বিশেষত্ব: রোবাস্টা জাতের কফি উৎপাদনে দক্ষ।

ইথিওপিয়া

বিশেষত্ব: কফির জন্মভূমি।

বৈশিষ্ট্য:

  • অ্যারাবিকা কফির জন্য বিশ্বখ্যাত।
  • হারার, সিদামো, এবং ইয়ারগেচেফ অঞ্চলের কফি সুগন্ধি এবং প্রাকৃতিক স্বাদের জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত।

গুয়াতেমালা

বৈশিষ্ট্য:

  • উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে অ্যারাবিকা কফি চাষ হয়।
  • আগ্নেয়গিরির মাটি কফির মান উন্নত করে।

বিশেষত্ব: অনন্য স্বাদ এবং গভীর সুগন্ধির জন্য বিখ্যাত।

ভারত

বৈশিষ্ট্য:

  • দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ু রাজ্যে কফি চাষ হয়।
  • “মনসুনড মালাবার” নামে পরিচিত বিশেষ প্রক্রিয়াজাত কফি।

বিশেষত্ব: রোবাস্টা এবং অ্যারাবিকা উভয় কফি উৎপাদনে পারদর্শী।

কেনিয়া

বৈশিষ্ট্য:

  • উজ্জ্বল অম্লীয়তা এবং ফলমূলের স্বাদযুক্ত কফি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।

বিশেষত্ব: আফ্রিকার অন্যতম স্বাদযুক্ত কফি।

কোস্টা রিকা

বৈশিষ্ট্য:

  • পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত।

বিশেষত্ব: উচ্চমানের অ্যারাবিকা কফি।

মেক্সিকো

বৈশিষ্ট্য:

  • অ্যারাবিকা কফি উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ।
  • যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা
বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা

বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা

বাংলাদেশে কফি চাষ এখনও নবযাত্রায় থাকলেও এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত। পাহাড়ি অঞ্চল যেমন বান্দরবান, রাঙামাটি, এবং খাগড়াছড়িতে কফি চাষ শুরু হয়েছে। দেশের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু এবং পাহাড়ি মাটির গুণগত মান কফি চাষের জন্য আদর্শ।

উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপায়:

  • উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার।
  • আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ।
  • স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা:

  • স্থানীয় চাহিদা পূরণ।
  • আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির সুযোগ।

বিশ্বজুড়ে কফি চাষের বৈচিত্র্য এবং এর গুণগত মান নির্ভর করে স্থানীয় আবহাওয়া, মাটি এবং চাষ পদ্ধতির ওপর। বাংলাদেশে কফি চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হতে পারে।

কফি চাষের উপকারিতা
কফি চাষের উপকারিতা

কফি চাষের উপকারিতা

  • কফি একটি উচ্চমূল্যের অর্থকরী ফসল।
  • দেশে-বিদেশে এর চাহিদা অনেক বেশি।
  • পাহাড়ি এলাকায় কফি চাষ মাটির ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
  • অন্যান্য ফসলের তুলনায় কফি চাষে দীর্ঘমেয়াদি আয় হয়।

কফি চাষ একটি লাভজনক কৃষি উদ্যোগ, বিশেষত পাহাড়ি অঞ্চলে। সঠিক পরিকল্পনা, যত্ন, এবং আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে কৃষকরা সহজেই ভালো ফলন ও আয় নিশ্চিত করতে পারেন।

কফি চাষে আগ্রহী? এখনই উদ্যোগ নিন এবং এই লাভজনক খাতের অংশ হয়ে যান!

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

অন্যান্য

জানুয়ারি মাসের কৃষিতে করণীয় কাজ সমূহ

জানুয়ারি মাসের কৃষিতে করণীয় কাজ সমূহ
জানুয়ারি মাসের কৃষিতে করণীয় কাজ সমূহ

জানুয়ারি মাস বাংলাদেশের কৃষিতে শীতকালীন রবি মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ সময়। এ সময়ে ফসলের যত্ন নেওয়া, রোপণ, এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভালো ফলন নিশ্চিত করা যায়। জানুয়ারি মাসে কৃষিতে করণীয় কাজগুলো নিম্নরূপ:

ধান চাষ
ধান চাষ

ধান চাষ

বোরো ধানের বীজতলা প্রস্তুতি ও পরিচর্যা:

  • বীজতলায় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
  • বীজতলায় রোগ বা পোকার আক্রমণ হলে তা দ্রুত প্রতিকার করুন।
  • চারা ৩০-৩৫ দিনের হলে জমিতে রোপণের জন্য প্রস্তুতি নিন।

বোরো ধানের জমি প্রস্তুত:

  • জমি চাষ ও মই দিয়ে সমান করুন।
  • সঠিক পরিমাণ সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করুন।
শাকসবজি চাষ
শাকসবজি চাষ

শাকসবজি চাষ

বিভিন্ন শীতকালীন শাকসবজি:

  • ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, গাজর, শিম, বেগুন ইত্যাদির পরিচর্যা চালিয়ে যান।
  • অতিরিক্ত শীত বা কুয়াশা থেকে ফসল রক্ষায় পাতার আবরণ ব্যবহার করুন।

সেচ এবং আগাছা দমন:

  • প্রয়োজন মতো সেচ দিন।
  • জমিতে আগাছা জন্মালে দ্রুত পরিষ্কার করুন।

গম ও ভুট্টা চাষ

গম:

  • গমের জমিতে প্রয়োজনীয় সেচ দিন।
  • রোগবালাই দেখা দিলে উপযুক্ত বালাইনাশক ব্যবহার করুন।

ভুট্টা:

  • সঠিক পরিমাণ সার প্রয়োগ করুন।
  • পোকামাকড় থেকে রক্ষার জন্য প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিন।
ডাল ফসল চাষ
ডাল ফসল চাষ

ডাল ফসল চাষ

  • মসুর, খেসারি, মুগ ইত্যাদি ডালের জমিতে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করুন।
  • জমি শুকিয়ে গেলে সেচ দিয়ে আর্দ্রতা বজায় রাখুন।
সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল
সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল

সরিষা ও অন্যান্য তেল ফসল

  • সরিষার ফুল ধরার সময় জমি শুকনো থাকলে সেচ দিন।
  • পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিন।
আলু চাষ
আলু চাষ

আলু চাষ

  • আলুর জমিতে সঠিক সেচ এবং রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
  • আলু সংগ্রহের আগে জমি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করুন।

মাছ ও গবাদি পশুর যত্ন

মাছ চাষ

  • পুকুরের পানি পরিষ্কার রাখুন।
  • মাছের খাদ্য সরবরাহ নিয়মিত করুন।

গবাদি পশু

  • ঠাণ্ডা থেকে রক্ষা করতে গোয়াল ঘর গরম রাখুন।
  • গবাদি পশুকে পর্যাপ্ত খাদ্য ও পরিষ্কার পানি দিন।

জানুয়ারি মাসের সঠিক কৃষিকাজ ফসল উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ

??বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি ???
??বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি ???

বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ

ভালো বীজ নির্বাচন করুন

  • বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
  • রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
  • প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।

বীজ শোধন প্রক্রিয়া

  • শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
  • পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
  • জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।

বীজের সঠিক সঞ্চয়ন

  • শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
  • আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
  • বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।

অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন

  • বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
  • পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।

বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা

  • ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
  • উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।

বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ

  • মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
  • বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
  • দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
  • শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
  • মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
  • খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।

বীজ ড্রেসিং

এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।

বীজ আচ্ছাদন
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ আচ্ছাদন

বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

বীজের বড়ি দেওয়া
বীজের বড়ি দেওয়া

বীজের বড়ি দেওয়া

এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।

বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ

শস্যকীট/রোগবীজ পরিচর্যা
আখশিকড়ে পচন, ধসা রোগকার্বেন্ডাজিম(০.১%)
২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ধানশিকড়ে পচনট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে)
অন্যান্য পোকামাকড়ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়াসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন
লঙ্কাস্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপিপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপসইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই
অড়হরধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
মটরশিকড়ে পচনব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা,
১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ
সাদা পচনপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান
ঢ্যাঁড়শশিকড়ের গ্রন্থিতে রোগবীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স
টম্যাটোমাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো,
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ধনেধসাপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে
বেগুনব্যাকটেরিয়াজনিত ধসাপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স
শুঁটিজাতীয় শস্যমাটি বাহিত সংক্রমণ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
নেমাটোডকাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ)
সূর্যমুখীবীজের পচনপ্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাইপ্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস,
প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস
গমউইরোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে
শিষে কালো হয়ে যাওয়াথিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি,
কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি,
টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই,
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি
ফুলকপি,
বাঁধাকপি,
ব্রকলি,
মুলো
মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া)১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড)বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ছোলাধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা
কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা
আলুমাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগএমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা
বার্লিকালো হয়ে যাওয়া, উইপ্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা
ক্যাপসিকামশিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোডপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ

বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।

৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

  • সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

কাউনের উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি: পুষ্টিকর এবং লাভজনক ফসল চাষের সহজ উপায় – দা এগ্রো নিউজ

কাউনের উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি: পুষ্টিকর এবং লাভজনক ফসল চাষের সহজ উপায়
কাউনের উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি: পুষ্টিকর এবং লাভজনক ফসল চাষের সহজ উপায়

কাউন হলো এক ধরনের প্রাচীন খাদ্যশস্য, যা পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং চাষাবাদের জন্য সহজ একটি ফসল। এটি মানুষের খাদ্যতালিকায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে এবং বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। আসুন, কাউনের উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

কাউনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

কাউনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
কাউনের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ভেসজ গুন
ব্যবহারঃ ছোট দানা বিশিষ্ট শস্যটি এ দেশে গরীবদের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

পুষ্টিগুণ: কাউন স্বাস্থ্যকর শস্য হিসেবে পরিচিত। এতে রয়েছে:

প্রোটিন: পেশি গঠনে সহায়ক।

ফাইবার: হজমশক্তি উন্নত করে।

মিনারেলস: ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম, এবং আয়রন সমৃদ্ধ।

ভিটামিন: বি-কমপ্লেক্স ভিটামিনের ভালো উৎস।

লো ক্যালোরি: কম ক্যালোরি থাকায় এটি ডায়েট উপযোগী।

উপকারিতা

হজম উন্নত করে: ফাইবারসমৃদ্ধ হওয়ায় এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: কম চর্বিযুক্ত হওয়ায় এটি হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

ওজন কমাতে সহায়ক: পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত ক্ষুধা কমায়।

পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে: সহজলভ্য খাদ্য হিসেবে এটি পুষ্টির চাহিদা মেটায়।

কাউনের চাষ পদ্ধতি
কাউনের চাষ পদ্ধতি

কাউনের চাষ পদ্ধতি

উপযুক্ত জমি ও মাটিঃ প্রায় সব ধরনের মাটিতে কাউনের চাষ করা যায়। তবে পানি দাঁড়ায় না এমন বেলে দোঁআশ মাটিতে এর ফলন ভাল হয়।

জমি প্রস্তুতি

মাটির ধরন: দোআঁশ মাটি এবং বেলে দোআঁশ মাটি কাউনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত। জমির pH মান ৫.৫ থেকে ৭.৫ এর মধ্যে থাকা উচিত।

জমি প্রস্তুত: ২-৩ বার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করুন। আগাছা পরিষ্কার করে জমি প্রস্তুত করুন।

বীজ বপন

বীজ নির্বাচন: উন্নত জাতের বীজ নির্বাচন করুন। প্রতি হেক্টরে ৮-১০ কেজি বীজ প্রয়োজন।

বপনের সময়: কাউনের জন্য আদর্শ বপন সময় হলো বর্ষা মৌসুম (জুন-জুলাই) ।

পদ্ধতি: সারি পদ্ধতিতে বীজ বপন করুন। গাছের মধ্যে ২০-২৫ সেন্টিমিটার এবং সারির মধ্যে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রাখুন।

কাউনের জাত পরিচিতি
কাউনের জাত পরিচিতি

কাউনের স্থানীয় জাত ছাড়া বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কর্তৃক উদ্ভাবিত ‘তিতাস’ নামের একটি জাত আছে। কাউনের এ জাতটি শিবনগর নামে ১৯৮০ সালে কুমিল্লা জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয় এবং দেশী বিদেশী জাতের সাথে তুলনামূলক মূল্যায়ণের পর ১৯৮৯ সালে তিতাস নামে অনুমোদন করা হয়। তিতাস জাত উচ্চ ফলনশীল, আগাম রোগ ও পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন। তিতাস জাতের গাছ মাঝারি লম্বা, পাতা সবুজ , কান্ড শক্ত । গাছ সহজে নুয়ে পড়ে না । শীষ বেশ লম্বা, মোটা এবং রেশমী। বীজ মাঝারি আকারের এবং ঘিয়ে রংয়ের । হাজার বীজের ওজন ২.৩-২.৫ গ্রাম । স্তানীয় জাতের চেয়ে ফলন প্রায় ৩০-৩৫% বেশী । জাতটি রবি মৌসুমে ১০৫-১১৫ দিনে এবং খরিফ মৌসুমে ৮৫-৯৫ দিনে পাকে । তিতাস জাতটি গোড়া পচা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন । রবি মৌসুমে তিতাসের ফলন হেক্টর প্রতি ২.০-২.৫ টন। খরিফ মৌসুমে এর ফলন একটু কম হয়।

কাউন বপনের সময়
কাউন বপনের সময়

বপনের সময়

দেশের উত্তরাঞ্চলে অগ্রহায়ণ থেকে মাঘ মাস (মধ্য নভেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারী) পর্যন্ত বীজ বোনা যায়। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে বীজ বোনা হয়। 

বীজের হার

 কাউনের বীজ ছিটিয়ে ও সারিতে বোনা যায়। ছিটিয়ে বুনলে হেক্টর প্রতি ১০ কেজি এবং সারিতে বুনলে ৮ কেজি বীজের প্রয়োজন হয়। বীজ সারিতে বুনলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ২৫-৩০ সেমি  রাখতে হবে। চারা গজানোর পর ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে সারিতে চারার দূরত্ব ৬-৮ সেমি রেখে বাকি চারা তুলে ফেলতে হবে। 

কাউনের সার ব্যবস্থাপনা
কাউনের সার ব্যবস্থাপনা

সার ব্যবস্থাপনা

কাউন চাষে সচরাচর রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয় না । তবে অনুর্বর জমিতে হেক্টর প্রতি নিম্নরূপ সার প্রয়োগ করলে ফলন বেশী হয়।

সারের নাম         সারের পরিমান/শতকে              সারের পরিমান / হেক্টর   

ইউরিয়া                  ৩৮৫-৪২৫ গ্রাম                         ৯৫-১০৫ কেজি   
টি এসপি                 ২৮৩-৩০৪ গ্রাম                           ৭০-৭৫   কেজি   
এমওপি                   ১২১-১৬২ গ্রাম                        ৩০-৪০   কেজি   

সার প্রয়োগ পদ্ধতি

সেচ বিহীন চাষে সবটুকু সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। সেচের ব্যবস্থা থাকলে শেষ চাষের সময় অর্ধেক ইউরিয়া এবং সবটুকু টিএসপি ও এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া বীজ বপনের ৩৫-৪০ দিন পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে।

সার ও সেচ ব্যবস্থাপনা

সার: বপনের আগে জৈব সার (কম্পোস্ট) এবং প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার ব্যবহার করুন। পটাশিয়াম ও ফসফরাস সার প্রয়োগ করলে ভালো ফলন হয়।

সেচ: বর্ষাকালে সেচের প্রয়োজন হয় না। শুষ্ক আবহাওয়ায় ১-২ বার সেচ দিন।

সেচ আগাছা ব্যবস্থাপনা

একটি খরা সহিষ্ণু ফসল । তবে রবি মৌসুমে খরা দেখা দিলে ১-২ টি হালকা সেচের ব্যবস্থা করলে ফলন বেশী হয়। জমিতে আগাছা দেখা দিলে নিড়ানী দিয়ে দমন করতে হবে।

রোগবালাই ও প্রতিকার

কাউনের চাষে সাধারণত রোগবালাই কম দেখা যায়। তবে কিছু ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত রোগ হতে পারে:

পাতার দাগ: পাতা ঝলসে যাওয়া বা দাগ পড়া এড়াতে নিয়মিত ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করুন।

পোকার আক্রমণ: কীটনাশক ব্যবহার করে পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ করুন।

ফসল সংগ্রহ

বপনের ৮০-১০০ দিনের মধ্যে ফসল পরিপক্ক হয়। কাঁচা শস্যের রঙ পরিবর্তন হলে ফসল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। ফসল সংগ্রহের পর ভালোভাবে শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।

কাউন ফসল সংগ্রহ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব
কাউন ফসল সংগ্রহ ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব

অর্থনৈতিক গুরুত্ব

বাজার চাহিদা: স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কাউনের চাহিদা বাড়ছে।

উচ্চ লাভ: উৎপাদন খরচ কম এবং ভালো দাম পাওয়া যায়।

রপ্তানি সম্ভাবনা: স্বাস্থ্যকর শস্য হওয়ায় কাউনের রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়ছে।

কাউন একটি পুষ্টিগুণে ভরপুর, সহজে চাষযোগ্য এবং লাভজনক ফসল। এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কারণে এটি বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল হয়ে উঠতে পারে। সঠিক পদ্ধতিতে কাউন চাষ শুরু করে আপনি হতে পারেন সফল কৃষকের উদাহরণ। আজই চাষ শুরু করুন এবং এর সুফল ভোগ করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন
??বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি ???

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের – দা এগ্রো নিউজ

ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন

ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ

কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয়

কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয় – দা এগ্রো নিউজ

জমি এবং কৃষক ছাড়াই যেভাবে কৃষিকাজে বিপ্লব আনছে জাপান

জমি এবং কৃষক ছাড়াই যেভাবে কৃষিকাজে বিপ্লব আনছে জাপান – দা এগ্রো নিউজ

ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ

ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ

দেশি সুস্বাদু ও লাভজনক শিং মাছের চাষ পদ্ধতি: সঠিক পদ্ধতিতে অধিক লাভ করুন

দেশি সুস্বাদু ও লাভজনক শিং মাছের চাষ পদ্ধতি: সঠিক পদ্ধতিতে অধিক লাভ করুন – দা এগ্রো নিউজ

খামার বর্জ্য থেকে মিশ্রসার তৈরি করব কীভাবে?

খামার বর্জ্য থেকে মিশ্রসার তৈরি করব কীভাবে? – দা এগ্রো নিউজ

শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া

শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া – দা এগ্রো নিউজ

কমলা চাষের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ: স্বাস্থ্যসম্মত এবং লাভজনক ফল উৎপাদনের সহজ উপায়

কমলা চাষের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ: স্বাস্থ্যসম্মত এবং লাভজনক ফল উৎপাদনের সহজ উপায় – দা এগ্রো নিউজ

শীর্ষ সংবাদ