আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

এগ্রোবিজ

এক মাসে ৯ খাদ্য পণ্যের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত

 জরুরি নিত্যপণ্য হিসেবে পরিচিত চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা-ময়দা, পিঁয়াজ ও আলুর দাম বাড়ছে হু হু করে। মাছ, গরু বা খাসির মাংসের বদলে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির মাংস খেত গরিব মানুষ। সেই ডিম ও ব্রয়লার মুরগিও এখন তাদের নাগালের বাইরে। ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৪০ টাকা। ১ কেজি ব্রয়লার মুরগি প্রায় ২০০ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল ১৪০ টাকা। আর ছয় মাস আগে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা।

মাছ, মাংস, ডিম নিয়মিত খেতে না পারলে ডাল, আলুভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে জীবন ধারণ করত দিনমজুর। এখন সেই আলুভর্তার দামও বাড়তি। শুধু আলুর দামই বাড়েনি। আলুভর্তায় যে তেল, পিঁয়াজ, মরিচের দরকার সেই তিনটি পণ্যের দামও এখন আকাশচুম্বী। ফলে স্বচ্ছন্দে আলুভর্তা-ভাতও খেতে পারছে না গরিব মানুষ। তাই নিত্যদিনের বাজার খরচ মেটাতে দিশাহারা নিম্নমধ্যবিত্তরা। আয়-ব্যয়ের তাল মেলাতে পারছে না কিছুতেই। জীবন চালাতে ধার-কর্য করছে প্রতিনিয়ত। ডাল-ভাত খেতে নাভিশ্বাস উঠেছে দিনমজুরদের।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে গত এক মাসে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পিঁয়াজ ও ভোজ্য তেলের দাম। এক মাসে পিঁয়াজের দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। গতকাল দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬৫ টাকা কেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় পিঁয়াজ ৫০ টাকা। এই সময়ে ভোজ্য তেলের দাম বেড়েছে ৯ শতাংশ। আর এক বছরের ব্যবধানে পণ্য দুটির দাম বেড়েছে ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত। ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম এখন ১৫০-১৫৫ টাকা, যা এক মাস আগেও ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা। আর এক বছর আগে ছিল ৯০-৯২ টাকা। ফলে বছরের ব্যবধানে ভোজ্য তেলের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে।

এ ছাড়া জরুরি নিত্যপণ্য হিসেবে পরিচিত চালের দাম এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১১ শতাংশ। মোটা চালও এখন ৫০ টাকা কেজি। খোলা ও প্যাকেটজাত উভয় ধরনের আটা ও ময়দার দাম বেড়েছে ২ থেকে ১৬ শতাংশ পর্যন্ত। প্যাকেটজাত আটার দাম এক মাসে বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৭ টাকা আর খোলা ময়দা ১৬ টাকা পর্যন্ত।

টিসিবির হিসাবে গরিবের আমিষ হিসেবে পরিচিত এক ডজন ডিম প্রায় তিন মাস ধরেই ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ছিল ৯০-৯৫ টাকা। আর ব্রয়লার মুরগির বাজারে তো রীতিমতো আগুন লেগেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে দাম। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৯৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে, যা এক মাস আগে ছিল ১৪০ টাকা। আর ছয় মাস আগে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। সংস্থাটির ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, প্রতি কেজি আলু গতকাল বিক্রি হয়েছে ২৫-২৭ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৮-২০ টাকা।

শরীরে ক্লান্তি কাটাতে এক কাপ চা খাওয়ার খরচও বেড়েছে। কেননা চায়ের অনিবার্য উপাদান চিনির বাজার চড়া। সরকারের তরফ থেকে প্রতি কেজি লাল চিনির দাম ৭৫ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও ৮০ টাকার নিচে চিনি নেই বাজারে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাল চিনির কেজি ৮৫ টাকা। দুই মাস আগে এ চিনির দাম ছিল ৬৫-৭০ টাকা। এদিকে ভর্তা দিয়ে ডাল-ভাতও স্বচ্ছন্দে খাওয়ার সুযোগ হারিয়েছে মানুষ। কেননা আমদানি করা মোটা দানার ডালের প্রতি কেজির দাম ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই, যা তিন মাস আগে ছিল ৭০ টাকা। এমনকি করোনা মহামরীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার সময় এক বছর আগেও এ ডালের দাম ছিল ৬৫ টাকা।

ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারীর ফলে অসংখ্য মানুষ কাজ হারিয়েছে। দেশের বেশির ভাগ মানুষেরই আয় কমেছে। করোনার প্রথম দিকের সময়গুলোতে মানুষ ধারকর্জ করেছে বা সঞ্চয় ভেঙে জীবন চালিয়েছে। এখন কিন্তু সে অবস্থা নেই। ফলে মানুষ বাধ্য হয়ে খাবার কম খাচ্ছে। অনেকেই আবার কুলাতে না পেরে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছে। অর্থাৎ মাছ-মাংসের পরিবর্তে ভাত, আলু কিংবা ডালের ওপর নির্ভর করছে। তবে এসবের পরিমাণও ঠিক রাখতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের সংকট কাটানো কঠিন হবে।’ তবে এখানে সরকারের আরও অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

বাজারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, কয়েক মাস ধরে টানা পণ্যমূল্য বাড়ছে তো বাড়ছেই। মোটা চালও এখন ৫০ টাকা কেজি। খুচরা বিক্রেতারা দুষছেন পাইকারদের। আর পাইকাররা ডিলারদের। মাছ আর কাঁচাবাজারের আড়তেও ঊর্ধমুখিতা। খুচরা বাজারে ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। ছোট সাইজের একটি লাউ কিনতে হয় ৫০-৬০ টাকায়। সাইজ বড় হলে ৮০ টাকা। আলুর কেজিও ২৭ টাকা। ডাবল সেঞ্চুরি হাকিয়েছে কাঁচা মরিচ। ১ কেজি শসা ৮০ টাকা। মহামারী করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে টানা লকডাউনে কাজ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। বেশির ভাগ কর্মজীবীর আয় কমেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রায় সব মানুষেরই নাভিশ্বাস উঠেছে জীবন চালাতে। সংসার চালাতে না পেরে অনেকেই ঢাকা ছেড়েছে, ছাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশে খাদ্যপণ্যের শৃঙ্খলে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। এর প্রভাবে সামাজিক অস্থিরতা পর্যন্ত তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করছেন যে যুবক

শুধু ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করেন এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার। জেনে নিন সেই যুবক সম্পর্কে।

কাজের প্রতি যদি ভালোবাসা তৈরি না হয়, তা হলে যত টাকাই মাইনে পান না কেন, সে কাজে উত্সাহ আসে না। রোজ জোর করেই শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে অফিসে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু যদি এমন সুযোগ সামনে আসে, যেখানে টাকাও আছে আর ভালোলাগাও!
কাজের প্রতি যদি ভালোবাসা তৈরি না হয়, তা হলে যত টাকাই মাইনে পান না কেন, সে কাজে উত্সাহ আসে না। রোজ জোর করেই শরীরটাকে টেনে হিঁচড়ে অফিসে নিয়ে যেতে হয়। কিন্তু যদি এমন সুযোগ সামনে আসে, যেখানে টাকাও আছে আর ভালোলাগাও!
এমন সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করতে চাইবেন! না। যেমন চাননি ভারতের হরিয়ানার সইদপুরে এক চাষি পরিবারের ছেলে। তার নাম বিপিন রাও যাদব।
এমন সুযোগ কি কেউ হাতছাড়া করতে চাইবেন! না। যেমন চাননি ভারতের হরিয়ানার সইদপুরে এক চাষি পরিবারের ছেলে। তার নাম বিপিন রাও যাদব।
বিপিন পেশায় একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক বিপিন একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যান।
বিপিন পেশায় একজন কম্পিউটার প্রোগ্রামার। কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক বিপিন একটি কোম্পানিতে চাকরি পেয়ে যান।
বিপিনের বাবা চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি প্রথম থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন, তার দুই ছেলেকে কখনো এই কষ্টের পেশায় আনবেন না। তারা দু’জনেই ভালো চাকরি করবেন।
বিপিনের বাবা চাষবাস করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। তিনি প্রথম থেকেই স্থির করে ফেলেছিলেন, তার দুই ছেলেকে কখনো এই কষ্টের পেশায় আনবেন না। তারা দু’জনেই ভালো চাকরি করবেন।
বিপিন এবং বিপিনের দাদা দুজনেই বাবার স্বপ্ন দেখা পথেই এগিয়েছেন। তার দাদাও বি টেক সম্পূর্ণ করে চাকরিতে ঢুকে গিয়েছেন।
বিপিন এবং বিপিনের দাদা দুজনেই বাবার স্বপ্ন দেখা পথেই এগিয়েছেন। তার দাদাও বি টেক সম্পূর্ণ করে চাকরিতে ঢুকে গিয়েছেন।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
এক, বিপিন যেভাবে জীবন কাটাতে চাইতেন, প্রাপ্য মাইনেতে তা সম্ভব ছিল না। দুই, তার উপর সেই কাজের প্রতি ভালোবাসাও তৈরি হচ্ছিল না।
এক, বিপিন যেভাবে জীবন কাটাতে চাইতেন, প্রাপ্য মাইনেতে তা সম্ভব ছিল না। দুই, তার উপর সেই কাজের প্রতি ভালোবাসাও তৈরি হচ্ছিল না।
এক বন্ধুর পরামর্শে বিপিন বাড়ির কাছের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দেন। কীভাবে লাভজনক উপায়ে কৃষিকাজ করা যায়, কী ভাবে প্রচুর জমি ছাড়াই চাষাবাদ করা যায়, এরকম নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।
এক বন্ধুর পরামর্শে বিপিন বাড়ির কাছের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দেন। কীভাবে লাভজনক উপায়ে কৃষিকাজ করা যায়, কী ভাবে প্রচুর জমি ছাড়াই চাষাবাদ করা যায়, এরকম নানা বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন তিনি।
আর বিপিন ২০১৫ সালে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক হয়ে গুরুগ্রামের একটি কোম্পানিতে যোগ দেন। কিন্তু সেই চাকরি বিপিনের একেবারেই ভালো লাগত না।
সাহস এবং আত্মবিশ্মারের সঙ্গে গুরুগ্রামের চাকরি ছেড়ে চাষ করতে বাড়ি ফিরে আসেন বিপিন। বিপিনের এই সিদ্ধান্ত একেবারেই মানতে পারছিল না তার পরিবার। গ্রামের লোকের কাছেও হাসির খোরাক হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
কিন্তু সে সবে পাত্তা না দিয়ে নিজের জমানো দুই লাখ টাকা দিয়ে প্রথমেই চাষের প্রয়োজনীয় মালপত্র কিনে ফেলেন। বাবার জমি থেকে প্রথমে মাত্র ১০০ বর্গ ফুট জমিতে পলিহাউস তৈরি করে চাষ শুরু করেন।
কিন্তু সে সবে পাত্তা না দিয়ে নিজের জমানো দুই লাখ টাকা দিয়ে প্রথমেই চাষের প্রয়োজনীয় মালপত্র কিনে ফেলেন। বাবার জমি থেকে প্রথমে মাত্র ১০০ বর্গ ফুট জমিতে পলিহাউস তৈরি করে চাষ শুরু করেন।
প্রথমেই খুব লাভ হতে শুরু করে তা নয়। হাতে কলমে কাজ করতে গেলে অনেক ভুলভ্রান্তি হয়, আর তা থেকেই শেখা যায়। বিপিনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল।
প্রথমেই খুব লাভ হতে শুরু করে তা নয়। হাতে কলমে কাজ করতে গেলে অনেক ভুলভ্রান্তি হয়, আর তা থেকেই শেখা যায়। বিপিনের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল।
মাটি ছাড়া কোকোপিট এবং আরও নানারকম উপকরণ দিয়ে টবেই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১৬ সালে চাষ করা শুরু করেছিলেন বিপিন। তার দু’বছরের মধ্যেই আশাতীত ফল পান।
মাটি ছাড়া কোকোপিট এবং আরও নানারকম উপকরণ দিয়ে টবেই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। ২০১৬ সালে চাষ করা শুরু করেছিলেন বিপিন। তার দু’বছরের মধ্যেই আশাতীত ফল পান।
নানা প্রজাতির ফুল, সব্জি সব কিছুই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। আলাদা করে ১৮০০ বর্গ ফুটের জমি ভাড়া নিয়ে সেখানে পলিহাউস তৈরি করে চাষ করতে শুরু করেন।
নানা প্রজাতির ফুল, সব্জি সব কিছুই চাষ করতে শুরু করেন তিনি। আলাদা করে ১৮০০ বর্গ ফুটের জমি ভাড়া নিয়ে সেখানে পলিহাউস তৈরি করে চাষ করতে শুরু করেন।
বর্তমানে তার আড়াই হাজার ট্রে এবং টব রয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ ফুল ফোটান তিনি। মূলত ফুলের ব্যবসা তার।
বর্তমানে তার আড়াই হাজার ট্রে এবং টব রয়েছে। প্রতি মাসে প্রায় আড়াই লাখ ফুল ফোটান তিনি। মূলত ফুলের ব্যবসা তার।
বর্তমানে বিপিনের বয়স মাত্র ২০ বছর। এখনই তিনি মাসে আয় করেন অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এই ব্যবসাকে আরও বড় করাই তার উদ্দেশ্য এখন। তার মতো তরুণরা অহেতুক চাকরির পিছনে না ছুটে চাষাবাদকেই আপন করে নিন, এটাই চান তিনি।
বর্তমানে বিপিনের বয়স মাত্র ২০ বছর। এখনই তিনি মাসে আয় করেন অন্তত ৫০ হাজার টাকা। এই ব্যবসাকে আরও বড় করাই তার উদ্দেশ্য এখন। তার মতো তরুণরা অহেতুক চাকরির পিছনে না ছুটে চাষাবাদকেই আপন করে নিন, এটাই চান তিনি।
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

খাগড়াছড়িতে জার্বেরা ফুল চাষের সম্ভাবনা ভালো

জার্বেরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। বিদেশি ফুল হলেও বাংলাদেশের পাহাড়ে এই ফুল চাষের সম্ভাবনা বাড়ছে। সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠানে দেখা মেলে লাল, কমলা, গোলাপি, হলুদ, সাদা, বেগুনিসহ নানা রঙের জার্বেরার। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ বলেন, গত দুই বছর ধরে এখানে জার্বেরা ফুলের চাষ হচ্ছে। ৭৫টি গাছে ২০০ থেকে ৩০০টির বেশি ফুল আসছে, ভালো ফুল ফুটছে। খাগড়াছড়িতে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এই ফুল চাষের। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ বাড়ালে কৃষক লাভবান হবেন।

বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
ফুটন্ত জার্বেরা
ফুটন্ত জার্বেরা
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ

ভালো বীজ নির্বাচন করুন

  • বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
  • রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
  • প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।

বীজ শোধন প্রক্রিয়া

  • শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
  • পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
  • জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।

বীজের সঠিক সঞ্চয়ন

  • শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
  • আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
  • বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।

অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন

  • বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
  • পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।

বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা

  • ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
  • উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।

বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ

  • মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
  • বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
  • দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
  • শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
  • মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
  • খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।

বীজ ড্রেসিং

এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ আচ্ছাদন

বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

বীজের বড়ি দেওয়া
বীজের বড়ি দেওয়া

বীজের বড়ি দেওয়া

এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।

বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ

শস্যকীট/রোগবীজ পরিচর্যা
আখশিকড়ে পচন, ধসা রোগকার্বেন্ডাজিম(০.১%)
২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ধানশিকড়ে পচনট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে)
অন্যান্য পোকামাকড়ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়াসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন
লঙ্কাস্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপিপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপসইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই
অড়হরধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
মটরশিকড়ে পচনব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা,
১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ
সাদা পচনপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান
ঢ্যাঁড়শশিকড়ের গ্রন্থিতে রোগবীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স
টম্যাটোমাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো,
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ধনেধসাপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে
বেগুনব্যাকটেরিয়াজনিত ধসাপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স
শুঁটিজাতীয় শস্যমাটি বাহিত সংক্রমণ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
নেমাটোডকাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ)
সূর্যমুখীবীজের পচনপ্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাইপ্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস,
প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস
গমউইরোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে
শিষে কালো হয়ে যাওয়াথিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি,
কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি,
টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই,
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি
ফুলকপি,
বাঁধাকপি,
ব্রকলি,
মুলো
মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া)১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড)বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ছোলাধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা
কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা
আলুমাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগএমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা
বার্লিকালো হয়ে যাওয়া, উইপ্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা
ক্যাপসিকামশিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোডপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ

বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।

৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

  • সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার গ্রামে এবার হচ্ছে মাঠজুড়ে চায়না জাতের তরমুজের চাষ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম শাহিন এবং কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক বিনধারা মাঠে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ব্লাকবেবী তরমুজের চাষ করছেন।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

আকারে ছোট খেতে সুস্বাধু এ জাতের তরমুজের গায়ের রং কালো হওয়ায় ”ব্লাকবেবী” হিসাবেই পরিচিত। ব্লাকবেবী চাষ অন্য ফসলের তুলনায় বহুগুনে লাভজনক।

মাচা পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ বিবেচিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি পণ্য হিসাবে। এই তরমুজের জীবনকাল মাত্র ৬০ দিনের। ১ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজন ৫০ গ্রাম বীজ। যার দাম ৩ হাজার ৮’শ টাকা। বিঘাপ্রতি সেড তৈরীর মালসিং পেপার ৭ হাজার ৫’শ,  মাচা পদ্ধতিতে শেড তৈরীর বাঁশ আর মজুরী খরচ ১০ হাজার, সার মাটি আর বালাই নাশক স্প্রে বাবদ ৭ হাজার ৫’শ, পরিচর্য্যা মজুরী ৬ হাজার, পরিবহন খরচ ২ হাজার সর্বমোট বিঘা প্রতি তরমুজ  চাষে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

এক বিঘা জমিতে ৬০ দিনে তরমুজ উৎপাদন হয় প্রায় ১২ ’শ থেকে ১৫’শ পিস তরমুজ যার ওজন প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ মেট্রিক টন। প্রতিটি তরমুজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যার বিক্রি মূল্য হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় নীট লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের চাইতে অনেক লাভজনক। একটি সেড তৈরী হলে  সেই শেডে নুন্যতম তিনটি তরমুজের আবাদ করা যায়। ফলে স্থায়ী এই খরচটি পরের দু’বার হয় না। ফলে পরের দু’বারে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের ভাগ আরো বেশী হয়।আবার বারোমাসই এই তরমুজ পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা বেশী। তাইওয়ানের  জেসমিন-১,  জেসমিন-২ ও ব্লাক প্রিন্স জাতের তরমুজে পোকামাকড়ের আক্রমণ তুলনা মূলক বলে ফসলে মার খাওয়ার ঝুঁকিও কম। গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা ছাড়া এই জাতের উৎপাদন ব্যাহত হবার আর কোন কারন নেই। এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সবচেয়ে বড় আশা জাগানিয়া কথা হচ্ছে বোরো ধান কাটার পর প্রায় দু’ আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। দু’টি ধান চাষের মাঝে অনায়াসে একার তরমুজের ফলন সম্ভব। ফলে জমির সঠিক ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে আয়। এ সব কারনে তরমুজ চাষে বাড়ছে কৃষকের সংখ্যা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

সরেজমিনে দেখাযায়, পলিথিন দিয়ে তরমুজের বীজ বোপনের জন্য বরাবর বেড তৈরী করা হয়েছে। বাশ ও জিআই তারে তৈরী ঝাংলায় তরমুজ গাছের সবুজ পাতাগুলো শোভা বর্ধন করছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিচিত এক বন্ধুর এ জাতের তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছে এবং তার কথা শুনেই তিনিও শুরু করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হলেও এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি। চায়না তরমুজ ছাড়াও তিনি টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজিও চাষ করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

সুদূর যুক্তরাজ্য থেকে ‘পোকা’ এনে সিলেটের বিশ্বনাথে খামার গড়ে তুলেছেন খলিলুর রহমান নামের এক প্রবাসী যুবক। উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের নিজ বাড়ির পাশে ‘হাজি বায়োসাইকেল কোম্পানি’ নামে প্যারেট পোকার (ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) এই খামারটি গড়ে তুলেছেন তিনি। এ ধরনের পোকার খামার সিলেট বিভাগে এই প্রথম বলে জানা গেছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

রোববার সকালে সরেজমিনে খামারটিতে গিয়ে দেখা যায়, একটি টিনসেড ঘরের ভেতরে ৫টি বড় মশারি দিয়ে সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে ৫টি খাঁচা। খাঁচার ভেতরে রয়েছে পোকা। আর এই পোকার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিত্যক্ত বিভিন্ন খাবার (ওয়েস্ট ফুড)।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

যুক্তরাজ্য প্রবাসী খলিলুর রহমান জানান, মাতৃভূমিতে কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল দীর্ঘদিন থেকে। তাই জন্মভূমি বিশ্বনাথে একটি কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খামার করি। কিন্তু কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় চিন্তা করি কীভাবে কম মূল্যে খাবার সংগ্রহ করা যায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেই একটি প্যারেট পোকার খামার করার। যাতে কম মূল্যে খামারের কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহ সম্ভব হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যর একটি ফার্ম থেকে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসি। এরপর গত ২৬ জুন থেকে বাড়ির পাশে খামার তৈরি করে থেকে পোকার চাষ শুরু করি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

তিনি আরও জানান, পাখি ও মুরগির পুষ্টিকর খাবার ‘প্যারেট পোকা’। এই পোকায় রয়েছে ৪০ শতাংশ প্রোটিন ও ২০ শতাংশ ফ্যাট। একটি স্ত্রী পোকা ৫০০ থেকে ৬০০টি ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা (লার্ভা) জন্ম নেয়। এরপর ২১দিনে পোকা পরিপূর্ণ হলে তা পাখি ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৫ দিনে একটি পোকা ডিম দেয়ার উপযুক্ত হয় এবং ডিম দেয়ার পরই ওই পোকা মারা যায়। মরা এই পোকাই কোয়েল ও মুরগির প্রিয় খাবার।

পোকার খাদ্য হিসেবে উচ্ছিষ্ট ও পঁচা খাবার ব্যবহৃত হয়। চাষের জন্য প্রতি কেজি পোকা ১২ হাজার টাকা এবং পাখি ও মুরগির খাবারের জন্য ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। এটি একটি লাভজনক খামার। খামারে তিন ধরনের (ভিটল, কিক্রেটস ও ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) পোকা চাষ করা হচ্ছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ‘বায়োকনর্ভাশন ইনোভেটিভ’ সেন্টার শুরু করার লক্ষ্যে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা ২৫০ টাকায় ক্রয় করি। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার পোকা রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ