এগ্রোবিজ
দুই দশকে চালের ভোক্তামূল্যে কৃষকের অংশ ৬৫ থেকে ৪১ শতাংশে নেমে এসেছে
দুই দশক আগেও চালের ভোক্তামূল্যের প্রায় ৬৫ শতাংশই পেতেন কৃষক। কালের বিবর্তনে ভোক্তা পর্যায়ে চালের মূল্য অনেকখানি বাড়লেও তাতে কৃষকের ভাগ কমেছে। দিন দিন আরো বঞ্চিত হয়েছেন কৃষক। বর্তমানে কৃষকের ভাগ্যে জুটছে ভোক্তামূল্যের মাত্র ৪১ শতাংশ। বাকি ৫৯ শতাংশই যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে। এর মধ্যে বড় অংশই থাকছে চালকল মালিকদের পকেটে।
চালের ভোক্তামূল্যে কৃষকের অংশ নিয়ে সম্প্রতি এক গবেষণা চালিয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ব্রি) কয়েকজন বিজ্ঞানী। বাংলাদেশ রাইস জার্নালে ‘ডাবলিং রাইস প্রডাক্টিভিটি ইন বাংলাদেশ: এ ওয়ে টু অ্যাচিভিং এসডিজি ২ অ্যান্ড মুভিং ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে গবেষণায় উঠে আসা ফলাফল প্রকাশ পেয়েছে। এতে ভোক্তামূল্যে চালের সরবরাহ চেইনের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি পক্ষের যৌক্তিক বণ্টন সম্পর্কেও একটি ধারণা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ভোক্তামূল্যের কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ পাওয়া উচিত কৃষক বা উৎপাদনকারীর। বাকি অংশের মধ্যে ধানের ফড়িয়া ৭ শতাংশ, মিলার ২৫ ও চালের ফড়িয়া ১৩ শতাংশ পেতে পারেন বলে অভিমত দেয়া হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, নানা ধরনের মধ্যস্বত্বভোগীর উত্থানের কারণেই বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। গত দুই দশকে যেমন কৃষকের অবস্থান নাজুক হয়েছে তেমনি চালকল মালিকদের অবস্থান আরো শক্তিশালী হয়েছে। ২০০০ সালেও ভোক্তামূল্যে চালকল মালিকের ভাগ ছিল ২০ শতাংশ। ২০১৯ সালের মধ্যেই তা ৩৫ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধান উৎপাদনের জন্য মৌসুমের শুরুতেই বিভিন্ন ধরনের ঋণ ও বাকিতে উপকরণ সংগ্রহ করা হয়। কৃষকদের আর্থিক অসংগতি ও মজুদক্ষমতা না থাকায় বাধ্য হয়েই তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করছেন মৌসুমের শুরুতেই। দেনা পরিশোধের চাপ থাকায় মৌসুমের শুরুতেই কম দামে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন কৃষক। এর সুযোগ নিচ্ছেন চালকল মালিক ও ফড়িয়ারা। মিলারদের বড় সুবিধা হলো বাজার থেকে সবচেয়ে কম দামে ধান কেনার সক্ষমতা। পরবর্তী সময়ে এ ধান প্রক্রিয়াজাত করে সরকারের কাছে বা বাজারে বিক্রি করছেন চালকল মালিকরা। গত কয়েক দশকে হাইব্রিড ধান আবাদ ও উৎপাদন বেড়েছে। বাজারে এ ধানের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ক্রেতা না থাকায় চালকল মালিকরা অনেক ক্ষেত্রে কম দামে তা কিনতে পারেন। পরবর্তী সময়ে এ ধান প্রক্রিয়াজাত করে উচ্চমূল্যে সরকারের কাছে বিক্রির মাধ্যমে অপ্রত্যাশিত মুনাফা করছেন চালকল মালিকরা। এতে কৃষক যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন তেমনি ব্যয় বাড়ছে সাধারণ ভোক্তাদেরও।
এ পরিস্থিতিতে চাল ও ধানের বাজার সহনীয় রাখতে কার্যকর উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, কৃষকের যৌক্তিক মূল্যপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের পাশাপাশি মৌসুমের শুরুতে ধানের দাম নির্ধারণ করা যেতে পারে। মৌসুমের শুরুতেই কৃষকরা যাতে ধান মজুদ বা সংরক্ষণ করতে পারেন, সে ব্যবস্থাও নেয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা বিপণন অধিদপ্তরকেও শক্তিশালী করতে হবে। তাহলে দাম নির্ধারণে একপক্ষীয় ভূমিকা কমে আসতে পারে
গবেষকদের অন্যতম এবং ও ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর এ বিষয়ে বলেন, বাজারে চাল সরবরাহে কোনো ধরনের সংকট তৈরি না হওয়া সত্ত্বেও দামের ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়। মূলত বিভিন্ন মধ্যস্বত্বভোগীর অনিয়ন্ত্রিত উত্থানের কারণেই সেটি হচ্ছে। প্রথাগত চাহিদা ও জোগানের পরিবর্তে এখানে সরকারের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের ভূমিকার প্রয়োজন রয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার কোনো বিকল্প নেই। ধান কেনায় আর্দ্রতা নিয়ে সমস্যা আসতে পারে। এ প্রতিবন্ধকতা মেটাতে হলে আর্দ্রতা অনুসারে দাম নির্ধারণ করে কৃষকের কাছ থেকেই কিনতে হবে। আর্দ্রতা কমাতে একটি প্রক্রিয়া তৈরি করা প্রয়োজন।
এছাড়া ধান ও চাল সংগ্রহ পদ্ধতি আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের নানা কার্যক্রম এরই মধ্যে ডিজিটালাইজড হয়েছে। সরকারি সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় এ সুবিধা বাস্তবায়ন করতে হবে। কৃষক ও ভোক্তা উভয়ের স্বার্থকেই গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। এ দুয়ের মধ্যে সমন্বয় করেই নীতি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। পাশাপাশি মধ্যস্বত্বভোগীদের যৌক্তিক আচরণ নিশ্চিতে তদারকি আরো বাড়াতে হবে।
সরকারের মজুদ সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছে। এছাড়া কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রচলন ঘটানোরও দাবি তুলছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, চিকন ও মোটা দানার চালের জন্য সরকারের পৃথক ন্যূনতম সহায়তা মূল্য (এমএসপি) ঘোষণা করা প্রয়োজন। তাছাড়া খাদ্য অধিদপ্তরেরও অন্তত মোট উৎপাদনের প্রায় ১০ শতাংশ সংগ্রহ করার সক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, চালকল মালিকরা তাদের মুনাফা দেখানোর সময় এক ধরনের চালাকির আশ্রয় নেন। অনেক সময় উপজাত দ্রব্য ভালো দামে বিক্রি করলেও সেটির হিসাব না দেখিয়ে তারা দাবি করেন, মুনাফা হচ্ছে না। এ বক্তব্যের ভিত্তিতে সরকারের কাছ থেকে বাড়তি সুবিধা আদায়েরও চেষ্টা করেন তারা। বিষয়টি সামনে এনে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চালকল মালিক পর্যায়েও কার্যকর উৎপাদন খরচ ও মুনাফার যৌক্তিক হার নির্ধারণ করে দেয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব আবদুল লতিফ মন্ডল বলেন, বিপণন ব্যবস্থায় কৃষক, ভোক্তা ও মধ্যস্বত্বভোগী সবার স্বার্থই রক্ষা করতে হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে চালের দাম নির্ধারণ ও বিপণন প্রক্রিয়ায় মধ্যস্বত্বভোগী, বিশেষ করে চালকল মালিকরা ভীষণ শক্তিশালী ও পারদর্শী। কারণ বাজার তৈরি ও নিয়ন্ত্রণে কৃষকের কোনো ধরনের সাংগঠনিক সক্ষমতা নেই। আবার সরকারের কর্তৃপক্ষ হিসেবে খাদ্য অধিদপ্তরের কাছে সে দক্ষতা ও হাতিয়ার নেই। ফলে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে উদ্যোগগুলো কার্যকর হচ্ছে না। সরকারের সংগ্রহ নিতান্তই কম। এ সংগ্রহ বাজারে বড় ধরনের প্রভাব রাখতে পারছে সেটিও বলা যাচ্ছে না। তাই কৃষককে কীভাবে শক্তিশালী করা যায় সে বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সেক্ষেত্রে সাপ্লাই চেইনে আরো দক্ষতা বৃদ্ধি এবং কৃষকের মজুদক্ষমতা বাড়ানো ও তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
আবার সঠিক নীতির অভাবে সরকারের বিভিন্ন মাধ্যম চাল কেনার ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের দিয়ে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত হতে দেখা যায় জানিয়ে তিনি বলেন, বাজার থেকে ধান না কেনার কারণে ধানের বাজারে একচ্ছত্র আধিপত্য চালকল মালিকদের কাছেই তুলে দেয়া হয়। ফলে বাজার থেকে ধান সংগ্রহের কোনো বিকল্প নেই। ধানের এত বড় বাজার এককভাবে চালকল মালিকদের কাছে রাখা মোটেও যৌক্তিক নয়। তাই কৃষকের যৌক্তিক দাম দেয়ার ক্ষেত্রে সরকারের সংগ্রহ কার্যক্রমে যেমন দক্ষতা আনতে হবে তেমনি সামগ্রিক প্রক্রিয়ায় কৃষকের মর্যাদাকে প্রাধান্য দিতে হবে। পাশাপাশি ভোক্তাস্বার্থ যাতে রক্ষা পায়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।
এগ্রোবিজ
বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ

সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের কাছে ফুলের আবেদন চিরন্তন। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়েই চলছে। ফলে এখন ফুলেও লেগেছে বাণিজ্যের ছোঁয়া। দিন দিন বেড়ে চলছে ফুলের চাষ ও ব্যবহার। তাই আপনিও ফুলের চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে পারেন।
চাষের স্থান
সারাদেশে এখন বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা যায়। গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিলজুড়ে চাষ করা যায় নানা জাতের ফুল। এছাড়া বাড়ির পাশের জমিতে ফুলের চাষ করা যায়। চাষ করতে পারেন বাড়ির ছাদেও।
যে ধরনের ফুল
লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, রজনীগন্ধা, ভুট্টা ফুল, গাঁদা, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, জারবরা, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি, ডালিয়া, কসমস, পপি, গাজানিয়া, স্যালভিয়া, ডায়ান্থাস, ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ডেইজি, ভারবেনা, হেলিক্রিসাম, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, লুপিন, কারনেশন, প্যানজি, অ্যাস্টার ও চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল চাষ করা যায়।
পুঁজি
প্রথম খুব বেশি পুঁজির দরকার হয় না। জমির আকারের ওপর নির্ভর করে খরচ কম-বেশি হতে পারে।
চাষ ও পরিচর্যা
ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস। টবসহ চারাও কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হয়। সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝর দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
বিক্রয়
শহরে গিয়ে ফুল বিক্রি করতে ঝামেলা হতে পারে। অনেক সময় ঠিকমতো দামও পাওয়া যায় না। তাই উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য এলাকাতেই ফুলের দোকান গড়ে তুলতে পারেন।
কর্মসংস্থান
অন্যান্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষে লাভ অনেক বেশি। আর ফুল চাষ করার ফলে বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। কারণ ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার, ফুল ছেঁড়া, ফুলের মালা গাঁথাসহ অনেক কাজে পুরুষ এবং নারী সম্পৃক্ত হতে পারে।
এগ্রোবিজ
ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করছেন যে যুবক
শুধু ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করেন এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার। জেনে নিন সেই যুবক সম্পর্কে।















এগ্রোবিজ
খাগড়াছড়িতে জার্বেরা ফুল চাষের সম্ভাবনা ভালো
জার্বেরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। বিদেশি ফুল হলেও বাংলাদেশের পাহাড়ে এই ফুল চাষের সম্ভাবনা বাড়ছে। সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠানে দেখা মেলে লাল, কমলা, গোলাপি, হলুদ, সাদা, বেগুনিসহ নানা রঙের জার্বেরার। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ বলেন, গত দুই বছর ধরে এখানে জার্বেরা ফুলের চাষ হচ্ছে। ৭৫টি গাছে ২০০ থেকে ৩০০টির বেশি ফুল আসছে, ভালো ফুল ফুটছে। খাগড়াছড়িতে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এই ফুল চাষের। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ বাড়ালে কৃষক লাভবান হবেন।

















এগ্রোবিজ
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।
বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ
ভালো বীজ নির্বাচন করুন
- বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
- রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
- প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।
বীজ শোধন প্রক্রিয়া
- শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
- পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
- জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
বীজের সঠিক সঞ্চয়ন
- শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
- আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
- বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।
অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন
- বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
- পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।
বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা
- ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
- উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।



বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ
- মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
- বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
- দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
- শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
- মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
- খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।
বীজ ড্রেসিং
এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।

বীজ আচ্ছাদন
বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

বীজের বড়ি দেওয়া
এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।
বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ
শস্য | কীট/রোগ | বীজ পরিচর্যা |
আখ | শিকড়ে পচন, ধসা রোগ | কার্বেন্ডাজিম(০.১%) ২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে ট্রাইকোডার্মা এসপিপি ৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে |
ধান | শিকড়ে পচন | ট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে) |
অন্যান্য পোকামাকড় | ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে | |
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়া | সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে | |
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড | ০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন | |
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড | ০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন | |
লঙ্কা | স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপি | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম |
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ | প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো | |
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপস | ইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই | |
অড়হর | ধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়া | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি |
মটর | শিকড়ে পচন | ব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা, ১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ |
সাদা পচন | প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান | |
ঢ্যাঁড়শ | শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ | বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স |
টম্যাটো | মাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো, বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম |
ধনে | ধসা | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে |
বেগুন | ব্যাকটেরিয়াজনিত ধসা | প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স |
শুঁটিজাতীয় শস্য | মাটি বাহিত সংক্রমণ | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে |
নেমাটোড | কাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ) | |
সূর্যমুখী | বীজের পচন | প্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে |
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাই | প্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস, প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস | |
গম | উই | রোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে |
শিষে কালো হয়ে যাওয়া | থিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি, কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি, টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি | |
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, মুলো | মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া) | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা, ১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো |
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড) | বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম | |
ছোলা | ধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া | প্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা, কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ, প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা |
আলু | মাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগ | এমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা |
বার্লি | কালো হয়ে যাওয়া, উই | প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ, প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা |
ক্যাপসিকাম | শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড | প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ |
বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।
৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
- সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
- পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
- উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।
এগ্রোবিজ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার গ্রামে এবার হচ্ছে মাঠজুড়ে চায়না জাতের তরমুজের চাষ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম শাহিন এবং কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক বিনধারা মাঠে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ব্লাকবেবী তরমুজের চাষ করছেন।

আকারে ছোট খেতে সুস্বাধু এ জাতের তরমুজের গায়ের রং কালো হওয়ায় ”ব্লাকবেবী” হিসাবেই পরিচিত। ব্লাকবেবী চাষ অন্য ফসলের তুলনায় বহুগুনে লাভজনক।
মাচা পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ বিবেচিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি পণ্য হিসাবে। এই তরমুজের জীবনকাল মাত্র ৬০ দিনের। ১ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজন ৫০ গ্রাম বীজ। যার দাম ৩ হাজার ৮’শ টাকা। বিঘাপ্রতি সেড তৈরীর মালসিং পেপার ৭ হাজার ৫’শ, মাচা পদ্ধতিতে শেড তৈরীর বাঁশ আর মজুরী খরচ ১০ হাজার, সার মাটি আর বালাই নাশক স্প্রে বাবদ ৭ হাজার ৫’শ, পরিচর্য্যা মজুরী ৬ হাজার, পরিবহন খরচ ২ হাজার সর্বমোট বিঘা প্রতি তরমুজ চাষে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

এক বিঘা জমিতে ৬০ দিনে তরমুজ উৎপাদন হয় প্রায় ১২ ’শ থেকে ১৫’শ পিস তরমুজ যার ওজন প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ মেট্রিক টন। প্রতিটি তরমুজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যার বিক্রি মূল্য হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় নীট লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের চাইতে অনেক লাভজনক। একটি সেড তৈরী হলে সেই শেডে নুন্যতম তিনটি তরমুজের আবাদ করা যায়। ফলে স্থায়ী এই খরচটি পরের দু’বার হয় না। ফলে পরের দু’বারে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের ভাগ আরো বেশী হয়।আবার বারোমাসই এই তরমুজ পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা বেশী। তাইওয়ানের জেসমিন-১, জেসমিন-২ ও ব্লাক প্রিন্স জাতের তরমুজে পোকামাকড়ের আক্রমণ তুলনা মূলক বলে ফসলে মার খাওয়ার ঝুঁকিও কম। গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা ছাড়া এই জাতের উৎপাদন ব্যাহত হবার আর কোন কারন নেই। এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সবচেয়ে বড় আশা জাগানিয়া কথা হচ্ছে বোরো ধান কাটার পর প্রায় দু’ আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। দু’টি ধান চাষের মাঝে অনায়াসে একার তরমুজের ফলন সম্ভব। ফলে জমির সঠিক ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে আয়। এ সব কারনে তরমুজ চাষে বাড়ছে কৃষকের সংখ্যা।

সরেজমিনে দেখাযায়, পলিথিন দিয়ে তরমুজের বীজ বোপনের জন্য বরাবর বেড তৈরী করা হয়েছে। বাশ ও জিআই তারে তৈরী ঝাংলায় তরমুজ গাছের সবুজ পাতাগুলো শোভা বর্ধন করছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিচিত এক বন্ধুর এ জাতের তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছে এবং তার কথা শুনেই তিনিও শুরু করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হলেও এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি। চায়না তরমুজ ছাড়াও তিনি টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজিও চাষ করেছেন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন