দৈনন্দিন
খাসির মাংসে রসনাবিলাস
ছুটির দিনে খাবার টেবিলে আকর্ষণ থাকে মাংসের বিভিন্ন পদের রান্না। এদিন পরিবারের সবাই তৃপ্তি করে মজার মজার খাবার খেতে পছন্দ করেন। আবার অতিথিরও আগমন ঘটে কোনো কোনো বাড়িতে। ছুটির দিনে খাসির মাংসের ৩টি মজার রেসিপি দিয়েছেন তাসনিয়া রহমান সৃষ্টি
খাসির মাংসের পিঠালি
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- খাসির মাংস (নরমাল টুকরা করে কাটা) ১ কেজি
- পেঁয়াজ কুঁচি ১/২ কাপ
- গরম মসলা আস্ত (এলাচ ৩টি, দারুচিনি ২ টুকরা, তেজপাতা ২টি, বড় এলাচ ১টি)
- পেঁয়াজ বাটা ৩ টেবিল চামচ
- আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
- রসুন বাটা ২ চা চামচ
- কাঁচা মরিচ বাটা ১ চা চামচ
- গরম মসলা বাটা ১ চা চামচ
- জিরা বাটা ১ চা চামচ
- ধনে বাটা ১ চা চামচ
- পোলাও চালের গুঁড়া ৩ টেবিল চামচ
- টক দই ১/৪ কাপ
- ঘি ৩ টেবিল চামচ
- সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ
- টমেটো কুঁচি ১টি
- লাল-সবুজ কাঁচা মরিচ ১০/১২টি
- হলুদ গুঁড়া ১ চা চামচ
- টমেটো পিউরি ১চা চামচ
- লবণ ও চিনি স্বাদমতো
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে সমস্ত বাটা ও গুঁড়া মসলা একসাথে মিশিয়ে মাংস দিয়ে মেখে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এবার কড়াইতে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি হালকা বাদামী করে ভেজে টমেটো আস্ত গরম মসলা দিয়ে নেড়ে মেখে রাখা মাংস দিয়ে কষিয়ে ১০মিনিট ঢেকে রান্না করতে হবে। এরপর পরিমাণমতো পানি দিয়ে আরো ৩০ মিনিট মাঝারি আঁচে রান্না করে কাঁচামরিচ ও চালের গুঁড়া পানিতে গুলে দিয়ে নেড়ে একটা বলক তুলে নামিয়ে পোলাও, খিচুড়ি, রুটি অথবা পারাটার সাথে পরিবেশন করুন মজার ‘খাসির মাংসের পিঠালি’।
সাহেবী কোরমা
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- মাংস সিদ্ধ :খাসির মাংস ১ কেজি
- রসুন বাটা ২ চা চামচ
- আদা বাটা ১ টেবিল চামচ
- টক দই ১ কাপ
- এলাচ ৩/৪টি
- বড় এলাচ ১টি
- দারুচিনি ২ টুকরা
- পেঁয়াজ গোল চাক করে কাটা ১ কাপ
- তিলের তেল ১ টেবিল চামচ
- মরিচ গুঁড়া ১ টেবিল চামচ
- সাদা তিল বাটা ১ টেবিল চামচ
- তেজপাতা ২টি
- পানি ২ কাপ
- সাহেবী কোরমা : ঘি ৩ টেবিল চামচ
- তেল ৩ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ কুঁচি ১ কাপ
- কাঁচামরিচ ১০/১২টি (মুখ ভাঙ্গা)
- কিশমিশ ১ টেবিল চামচ
- বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ
- তরল দুধ ১ কাপ
- ব্রাউন সুগার ১ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ বেরেস্তা ৩ টেবিল চামচ
- লেবুর রস ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমেই মাংসের সাথে মাংস সিদ্ধ করার সমস্ত উপকরণ দিয়ে মেখে সিদ্ধ করে পানি শুকিয়ে নিন। এবার কড়াইতে ঘি ও তেল গরম করে পেঁয়াজ কুঁচি বাদামী করে ভেজে মাংস, কিশমিশ, বাদাম বাটা, ব্রাউন সুগার, তরল দুধ ও কাঁচা মরিচ দিয়ে ১০ মিনিট ঢেকে রাখুন। সবশেষে ১০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে লেবুর রস ছড়িয়ে পরিবেশন করুন দারুণ স্বাদের ‘সাহেবী কোরমা’।
চিলি মাটন
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- খাসির মাংস সিদ্ধ : খাসির রানের মাংস ছোট টুকরা করে কাটা ১ কেজি
- তেল ৩ টেবিল চামচ
- আস্ত জিরা ১ চা চামচ
- আদা কিমা ১ টেবিল চামচ
- রসুন ছেঁচা ২ টেবিল চামচ
- পেঁয়াজ কুঁচি ১/২ কাপ
- টমেটো ২টি
- শুকনা মরিচ কুঁচি ১/২ কাপ
- লবণ স্বাদমতো
- চিলি মাটন: কারি পাতা ১০/১২টি
- পেঁয়াজ রিং করে কাটা ১ কাপ
- ধনেপাতা পরিমাণমতো
- লেটুস পাতা সাজাবার জন্য
- ঘি ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
প্রথমে খাসির মাংস ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এবার হাঁড়িতে তেল গরম করে আস্ত জিরা, শুকনা মরিচ, রসুন ছেঁচা, আদা কিমা দিয়ে নেড়ে মাংস দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজতে হবে। এরপর পেঁয়াজ কুঁচি দিয়ে নেড়ে লবণ ও টমেটো দিয়ে কষিয়ে ৩০মিনিটে ঢেকে রান্না করতে হবে। তারপর মাংস সিদ্ধ হয়ে যখন ঝোলটা শুকিয়ে আসবে তখন একটি কড়াইতে ঘি গরম করে পেঁয়াজ ও শুকনা মরিচ কুঁচি দিয়ে একটু লালচে করে ভেজে নিতে হবে। সবশেষে কারি পাতা দিয়ে নেড়ে মাংস ঢেলে আরো কিছুক্ষণ নেড়ে ধনেপাতা কুঁচি ছিটিয়ে পরিবেশন করুন সুস্বাদু ‘চিলি মাটন’।
দৈনন্দিন
বেগুনের দোলমা তৈরির সহজ রেসিপি

সুস্থ থাকতে সবজি খেতেই হবে। সারাবছরই পাওয়া যায় এমন সবজির মধ্যে বেগুন অন্যতম। সবাই কমবেশি বেগুন ভাজি থেকে শুরু করে নানা পদের তরকারি খান।
তবে সব সময় তো আর সবজির একঘেয়েমি পদ খেতে ভালো না! তাই সাধারণ সবজি দিয়ে চেষ্টা করুন অসাধারণ পদ তৈরি করার। তেমনই এক পদ হলো বেগুনের দোলমা।
এর স্বাদ একবার খেলে মুখে লেগে থাকবে সব সময়। আর তৈরি করাও বেশ সহজ। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক মজাদার এই পদ তৈরির সহজ উপায়-
উপকরণ
১. ভাজা বেগুন আধা কেজি
২. সরিষার তেল এক কাপ
৩. পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ
৪. পেঁয়াজ বাটা এক টেবিল চামচ
৫. টকদই এক কাপ
৬. আদা বাটা এক চা চামচ
৭. রসুন বাটা এক চা চামচ
৮. মরিচের গুঁড়া এক চা চামচ
৯. হলুদের গুঁড়া আধা চা চামচ
১০. লবণ স্বাদমতো
১১. পানি পরিমাণমতো
১২. তেঁতুল গোলা এক কাপ
১৩. চিনি এক চা চামচ
১৪. পাঁচফোড়ন আধা চা চামচ
পদ্ধতি
ফ্রাইপ্যানে তেল গরম করে নিন। এবার একে একে পেঁয়াজ বেরেস্তা, পেঁয়াজ বাটা, টকদই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদের গুঁড়া, মরিচের গুঁড়া, লবণ ও পানি দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিন।
এবার কষানো মসলার মধ্যে ভাজা বেগুন, তেঁতুল গোলা, চিনি, পেঁয়াজ বেরেস্তা ও ভাজা জিরার গুঁড় দিয়ে রান্না করুন।
অন্য চুলায় প্যান গরম করে সরিষার তেল দিন। গরম তেলে পাঁচফোড়ন দিয়ে ভেজে নিন। এবার রান্না করা বেগুন পাঁচফোড়নের মধ্যে দিয়ে দিন।
অন্তত পাঁচ মিনিট ঢেকে রান্না করুন। রান্না হয়ে গেলে নামিয়ে পরিবেশন করুন জিভে জল আনা বেগুনের দোলমা। ভাত, রুটি সবকিছুর সঙ্গেই দারুন মানিয়ে যায় এই পদ।
দৈনন্দিন
স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় কদবেল

আমরা কমবেশি সবাই কদবেল খেতে পছন্দ করি। পুষ্টিগুণে ভরপুর কদবেল। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে আলসার ও কিডনির সমস্যায় কদবেল কতটা উপকারি ফল। বিশেষ করে কাশি, সর্দি, হাঁপানি, ও যক্ষ্মা রোগ নিরাময়ে খুবই কার্যকর। সুগারে কুপোকাত? ওষুধের লম্বা লিস্ট নিয়ে দোকানে ছুটছেন? কদবেল খান।
আসুন জেনে নেই কদবেলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে
কদবেলের খনিজ উপাদান ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব উপকারী। ডায়াবেটিসের আয়ুর্বেদী চিকিৎসায় কদবেল ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়। ফলে গরম কম লাগে। ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেল মলম হিসেবেও ব্যবহার করা হয়।

পেট রোগ নিরাময়
কদবেলে ট্যানিন রয়েছে। ট্যানিন দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা ভালো করে। কদবেল গাছের বাকল মধু সঙ্গে মিশ্রিত করে খেলে পেটের রোগ আমাশা ভাল করে।
বদহজম নিরাময়ে
কাঁচা কদবেল ছোট এলাচ, মধু দিয়ে মাখিয়ে খেলে বদহজম দূর হয়।
কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়
কদবেলের ফুল শুকিয়ে পাউডার করে কয়েক মাস সংরক্ষণ করে রাখা যায়। ফল দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠবদ্ধতা ও আমাশা দূর করে।

শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ
কদবেল শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং স্নায়ুর শক্তি যোগায়। ত্বকের জ্বালা পোড়া কমাতে কদবেলের ক্বাথ মলম হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
কিডনি সুরক্ষা
এই ফল নিয়মিত খেলে কিডনি সুরক্ষা থাকবে। যকৃত্ ও হৃদপিন্ডের জন্যও উপকারি।
ক্যান্সার নিরাময়ে
স্তন ও জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধ করে কদবেল।

দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি
চোখের দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি করে কদবেল। চোখের ছত্রাক জনিত রোগে কদবেল পাতা একটি কাপড়ে পুটলি করে হালকা গরম অবস্থায় সেক নিলে চোখে লাল ভাব নিরাময় হয়।
রূপচর্চায় সহায়ক
কাঁচা কদবেলের রস মুখে মাখলে ব্রণ ও মেছতার সমস্যা কমে।।
দৈনন্দিন
জেনে নিন, যেসব গাছ মশা তাড়াবে

মশার আক্রমণ প্রায় সব ঋতুতেই দেখা যায় কমবেশি। এখন শীতকাল। প্রকৃতি এ সময়ে নিজেকে শীতল চাদরে মুড়িয়ে নিলেও মশার প্রকোপ বেড়ে যায় অনেকটাই। গাছ হতে পারে মশা তাড়ানোর সমাধান। এমন কিছু গাছ আছে, যা পড়ে থাকে অযত্নে, কিন্তু মশার যম। মশা দমন করতে ঘরে কিছু গাছ আনলে উপকার তো হবেই, আবার সবুজের ছোঁয়াও পাবেন একই সঙ্গে।
তুলসী, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার ও গাঁদাজাতীয় গাছে কীট প্রতিরোধক কিছু যৌগ থাকে। সাইপারমেথিরিন ও ম্যালাথিওন জাতীয় সক্রিয় যৌগ মশার ডিম, লাভা ও মশার বৃদ্ধি রোধ ও ধ্বংস করতে কাজ করে। যৌগিক পদার্থের সাধারণত দুই ধরনের প্রোপার্টিজ থাকে। একটি হলো শারীরিক, অন্যটি রাসায়নিক প্রোপার্টিজ। গাছের পাতার বা ফুলের তীব্র গন্ধ এর শারীরিক প্রোপার্টিজের জন্য। গন্ধ থাকার পাশাপাশি কীট প্রতিরোধক যৌগিকের সক্রিয় উপস্থিতি থাকতে হবে অবশ্যই। তবেই এ ধরনের গাছ মশা দূর করতে বা অনেক ক্ষেত্রে মশা ধ্বংস করতে কাজ করবে। এমনটাই জানালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অধ্যাপক নুহু আলম।
মশার মতো কীটপতঙ্গ তাড়াতে পারে এমন কিছু গাছের কথা থাকছে এখানে।

ল্যাভেন্ডার গাছ
বাড়িতে ল্যাভেন্ডার গাছ থাকলে খেয়াল করে দেখবেন, এর পাতার কাছে কোনো পোকাই বসে না। তার কারণ ল্যাভেন্ডারের গন্ধ। এই গাছের পাতায় একধরনের এসেনশিয়াল তেল থাকে। তাই এর সুতীব্র গন্ধে গাছ ও তার আশপাশে আসতে পারে না মশা। তাই অনেকে ল্যাভেন্ডারের গন্ধযুক্ত সুগন্ধিও ব্যবহার করে থাকেন। দেশীয় গাছ না হলেও ল্যাভেন্ডার কিন্তু খুব সহজেই জন্মায় এ দেশে। এই গাছের জন্য পানিনিষ্কাশন ও সূর্যের আলোর ব্যবস্থা থাকলেই হয়।

গাঁদা ফুল
শীতকালের অন্যতম ফুল এটি। বাড়ির চারপাশে বা বারান্দায় সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই হলুদ বা কমলা রঙের এই ফুলের গাছ লাগিয়ে থাকেন। এই ফুলের গন্ধেও অনেকেই বিমোহিত হন। কিন্তু গাছের পাতা বা ফুলের গন্ধ একেবারে সহ্য করতে পারে না মশা। গাঁদা ফুলের পাপড়ি এবং গাছের পাতায় থাকে অ্যান্টিসেপ্টিক। যার কারণে মশা একেবারেই দূরে থাকে এই গাছ থেকে। গাঁদা ফুলের গাছের যত্ন নেওয়াও বেশ সহজ, প্রয়োজনীয় পানি ও আলো পেলেই এই গাছ জন্মায়।

তুলসী গাছ
ঘরের আঙিনায় তুলসী গাছ লাগানোর রীতি বহু পুরোনো। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি তুলসীর একাধিক স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদিক গুণও আছে। তুলসীগাছ পরিবেশকে জীবাণুমুক্ত ও বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর ঝাঁজালো গন্ধ মশা দূর করে। এ ছাড়া তুলসীর রস প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন পানি এবং প্রয়োজনীয় সার ব্যবহারে সহজেই এজাতীয় গাছ বাঁচে।

পুদিনা গাছ
আজকাল অনেকেই শখ করে বারান্দায় ছোট পুদিনাপাতার গাছ লাগান। রান্না বা চায়ের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি মশার হাত থেকেও বাঁচাতে পারে এই গাছ। পেপার মিন্ট বা মেন্থলের সুগন্ধ মশা তাড়ানোর জন্য কার্যকর। এটি মশার প্রাকৃতিক কীটনাশকও বটে।
ঘাস প্রজাতির উদ্ভিদ সাইট্রোনেলা, রোজমারি ও লেমন বাম জাতীয় কিছু গাছও মশা দূরে রাখতে পারে। আগারগাঁও, গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, দোয়েল চত্বর এলাকাসহ যেকোনো নার্সারিতে পেয়ে যাবেন এই গাছের চারা। গাছের চারার বয়স অনুসারে ৭০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন এসব গাছ।
দৈনন্দিন
রোগ নিয়ন্ত্রণে ডাবের পানি

ডাবের পানির উপকারিতা সকলেই জানে। আমাদের শরীরকে যেমন ডাবের পানি অনেক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত রাখে , তেমনই উজ্জ্বল ত্বকের জন্যও ডাবের পানি উপকারী। কাঠফাটা রোদে হঠাৎ স্বস্তি দিতেও ডাবের পানির তুলনা নেই।

আজ দেখে নেব, ডাবের পানি ব্যবহার করে কীভাবে ত্বক আর চুলের জৌলুস বজায় রাখা যায়।
উচ্চ রক্তচাপ কমানো
ডাবের পানিতে পটাশিয়াম থাকার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ
নারকেল হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ করতে ডাবের পানি সাহায্য করে। এই পানি খেলে নিয়মীত পান করলে আমাদের বাজে কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্টের সমস্যা গুলো প্রতিরোধে সাহায্য করে।
হাইপোথাইরয়েডিজমযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য
হাইপোথাইরয়েডিজম, যা অপ্রচলিত থাইরয়েড বা কম থাইরয়েড হিসাবে পরিচিত, যাদের আছে তাদের জন্য ডাবের পানি পান করা উপকারী। এই পানিতে একটি প্রাকৃতিক এনজাইম থাকে যা একটি সক্রিয় থাইরয়েডকে উদ্দীপ্ত করতে সহায়তা করে। এটি যদি হাইপ্র্যাকটিভ হয় তবে এটি আপনার থাইরয়েডও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
হাইপোথাইরয়েডিজমের জন্য ডাবের পানি ব্যবহার করা ভাল কারণ এটি ওজন বাড়াতে এবং আপনার অন্ত্রগুলি নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে থাকে। খাওয়ার পরে ২০ দিনের জন্য দুই বা তিন গ্লাস ডাবের পানি পান করার চেষ্টা করুন।

ত্বকের যত্নে
তৈলাক্ত কিংবা শুষ্ক, যেকোনও ত্বকের ক্ষেত্রেই ডাবের পানি ভীষণ উপকারি। যাদের ব্রণ হওয়ার খুব ধাত রয়েছে, তারা ডাবের পানিতে তুলো ভিজিয়ে সেটা দিয়ে মাঝে মধ্যেই মুখ মুছতে পারেন। দেখবেন এতে ভাল ফল পাবেন।
মুখের দাগে
মুখে যদি কোনো অ্যালার্জির দাগ বা ব্রণর দাগ থাকে, তাহলে ডাবের পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুখ মুছে নিন। এক মাস এটা করলেই দেখবেন দাগগুলো আসতে আসতে কমে যাচ্ছে।
মুখে দানা বা কালো দাগ থাকলে প্রত্যেকদিন ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুলে এবং প্রচুর ডাবের পানি খেলে মুখের কালো দাগ সেরে যায় এবং দানা উঠাও বন্ধ হয়ে যায়।

চুল পড়ার সমস্যায়
অনেকেই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। ডাবের পানি হালকা গরম করে তা দিয়ে মাথায় আলতো করে ম্যাসাজ করুন। দেখবেন খুব কম সময়ের মধ্যেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। এছাড়া শ্যাম্পু করার পরে নারকেলের পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন। এতে চুল যেমন উজ্জ্বল হবে, তেমনি খুশকির সমস্যাও দূর হবে।
ঘামের দুর্গন্ধ
ঘামের দুর্গন্ধ দূর করতেও ডাবের পানি দারুণ কাজ করে। শরীরের যে অংশগুলোতে বেশি ঘাম হয় সেখানে ডাবের পানিতে তুলো ভিজিয়ে মুছে নিতে পারেন। কিংবা স্প্রেয়ার বোতলের মধ্যে ডাবের পানি ভরে স্প্রেও করতে পারেন। এতে ত্বকের ঐ জায়গার দুর্গন্ধ প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই চলে যায়।
কোষ্টবদ্ধতায়
প্রতিদিন সকালে একেবারে খালি পেটে এক কাপ করে ঝুনো ডাবের পানি ১০/১২ দিন খেলে কোষ্ঠবদ্ধতা চলে যাবে।
ক্রিমিতে
খাবার গ্রহণের পর একেবারে প্রাথমিক দিকের কচি ডাবের পানি যার স্বাদ লবণাক্ত ও কষাক্ত, মিষ্টি হলে একেবারেই চলবে না। তাতে উপকারের চেয়ে অপকারই বেশি হবে। খেতে হবে ৭/৮ দিন।

ডায়াবেটিস নিরাময়ে
ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি অনেক বেড়ে যায়, এক্ষেত্রে একটি কচি ডাবের মুখ ফুটো করে তাতে দুই চিমটি পরিমাণ কালোজিরা রাতে ঐ ডাবের পানিতে দিয়ে রাখবেন। পরের দিন সকালে খালি পেটে পুরো ডাবের পানি কালোজিরাসহ খাবেন। এরূপ পদ্ধতিতে দেড়-দুই সপ্তাহ খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তারপর মাঝে মাঝে খেলেই চলবে।
মাথা ব্যাথায়
এ রোগে ডাবের পানিতে ১০-১২টি দানা চিনি মিশিয়ে অল্প অল্প করে নাক দিয়ে টেনে অথবা ড্রপারে করে নাকে গলাধঃকরণ করতে হবে, ম্যাজিকের মাতা কাজ করবে।
মুত্রকৃচছতায়
অজীর্ণ জনিত কারণে, অত্যধিক রৌদ্রে ঘোরায়, অত্যধিক পরিশ্রমে অথবা একনাগাড়ে এক আসনে চেপে বসে থাকায় যে প্রস্রাবের কৃচ্ছতা আসে, এক্ষেত্রে একটা বা দুইটা ডাবের পানি খেলে সাময়িক ঐ অসুবিধা চলে যাবে।
দৈনন্দিন
বিভিন্ন প্রজাতির মাছ এবং তাদের উপকারিতা

মাছ পুষ্টির অসাধারণ উৎস এবং সুস্থ জীবনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিটি মাছের আলাদা পুষ্টিগুণ এবং স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

ইলিশ মাছ
উপকারিতা: ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়। ত্বক এবং চুল সুস্থ রাখে। আর্থ্রাইটিস এবং প্রদাহ কমাতে সহায়ক।

রুই মাছ
উপকারিতা: প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ, যা হাড় মজবুত করে। হজমশক্তি উন্নত করে। রক্তে কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

কাতলা মাছ
উপকারিতা: ভিটামিন এ এবং ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ, যা চোখের জন্য ভালো। মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

পুঁটি মাছ
উপকারিতা: ছোট মাছ হিসেবে ক্যালসিয়ামে সমৃদ্ধ, যা হাড় ও দাঁতের জন্য উপকারী। রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। ত্বক উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে।

তেলাপিয়া মাছ
উপকারিতা: কম ক্যালোরি এবং উচ্চ প্রোটিনযুক্ত, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

চিংড়ি মাছ
উপকারিতা: সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ, যা ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক। প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।

বোয়াল মাছ
উপকারিতা: হজমশক্তি উন্নত করে। পুষ্টিকর প্রোটিন সরবরাহ করে। ত্বক এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বাড়ায়।

মাগুর মাছ
উপকারিতা: আয়রন সমৃদ্ধ, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে। শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি এবং শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। পেটের অসুখে উপকারী।

শিং মাছ
উপকারিতা: ক্যালসিয়াম এবং আয়রনে সমৃদ্ধ, যা হাড় মজবুত করে। শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে। ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক।

পাঙ্গাস মাছ
উপকারিতা: প্রোটিন এবং ফ্যাট সরবরাহ করে, যা শরীরের শক্তি বজায় রাখে। হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।

কৈ মাছ
উপকারিতা: রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরকে দ্রুত শক্তি দেয়। সর্দি-কাশি এবং পেটের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর।

মাছ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানে সমৃদ্ধ এবং এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় মাছ রাখলে স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তাই, পুষ্টিগুণ অনুযায়ী মাছ বেছে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন