ফুল
শরতের শিউলি ফুল
দক্ষিণ এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্ব থাইল্যান্ড থেকে পশ্চিমে বাংলাদেশ, ভারত, উত্তরে নেপাল ও পূর্বে পাকিস্তান পর্যন্ত এলাকাজুড়ে শরৎকালে শিউলি ফুল দেখতে পাওয়া যায়। শেফালি নামেও এর পরিচিতি রয়েছে। আরও কয়েকটি প্রচলিত নাম হলো- পারিজাত, শেফালিকা, কোরাল জেসমিন, রাগাপুষ্পি, খারাপাত্রাকা, পারিজাতা ইত্যাদি। ফুল ছোট এবং সুগন্ধযুক্ত। কোমল ফুলে ছয়টি পাপড়ি থাকে, পাপড়ির রং সাদা হলেও বোঁটার অংশ কমলা রঙের এবং পাপড়ির সংযোগস্থল বৃত্তাকার কমলা রঙে বিস্তৃত থাকে। এর ফল চ্যাপ্টা ও বাদামি হূৎপিণ্ডাকৃতির। ফুলগুলো রাতে ফোটে এবং সকালে ঝরে যায়। শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি ফুল অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে। শিউলি ফুলকে কখনও কখনও ‘দুঃখের বৃক্ষ’ বলা হয়। কারণ দিনের আলোতে এ ফুল তাদের উজ্জ্বলতা হারিয়ে ফেলে। শিউলি কেবল কবিদেরই বিমুগ্ধ করেনি, যুগে যুগে তার অসংখ্য মুগ্ধ অনুরাগী তৈরি হয়েছে।
হিন্দু পৌরাণিক কাহিনিতে শিউলি ফুল বা পারিজাত-এর কথা অনেকবার উঠে এসেছে। কৃষ্ণের দুই স্ত্রী- সত্যভামা ও রুক্সিণীর খুব ইচ্ছে তাদের বাগানও পারিজাতের ঘ্রাণে আমোদিত হোক। কিন্তু পারিজাত তো স্বর্গের শোভা! কৃষ্ণ তার স্ত্রীদের খুশি করতে চান। তাই তিনি লুকিয়ে স্বর্গের পারিজাত বৃক্ষ থেকে একটি ডাল ভেঙে এনে সত্যভামার বাগানে রোপণ করেন; যার ফুল রুক্সিণীর বাগানেও ঝরে পড়ে সুগন্ধ ছড়ায়। এদিকে স্বর্গের রাজা ইন্দ্র ঘটনাটা জেনে খুব রেগে যান! তিনি বিষ্ণু অবতারের ওপর গোপনে ক্রুদ্ধ ছিলেন। এ কারণে তিনি কৃষ্ণকে শাপ দেন- কৃষ্ণের বাগানের পারিজাতবৃক্ষ ফুল দেবে ঠিকই, কিন্তু কোনোদিন ফল আসবে না; তার বীজে কখনও নতুন প্রাণের সঞ্চার হবে না।
আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরিতে ফুল থেকে পাতার ভেষজ গুণ বেশি। শিউলির পাতা সাইটিকা বাত, আর্থ্রাইটিস, জ্বর ইত্যাদি নানারকম যন্ত্রণাদায়ক সমস্যায় ব্যবহার করা হয়। মাথার খুসকি দূর করতে শিউলি-বীজ উপকারী। সাইটিকার ব্যথায় প্রতিদিন সকালে ২-৪টি শিউলি পাতা ও ২-৪টি তুলসী পাতা একত্রে কেটে নিয়ে পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি ছেঁকে সকাল ও সন্ধ্যায় খেলে উপকার পাওয়া যায়। আর্থ্রাইটিসের ব্যথায় প্রতিদিন সকালে চায়ের মতো এক কাপ পানিতে ২টি শিউলি পাতা ও ২টি তুলসী পাতা ফুটিয়ে ছেঁকে খেলে উপকার পাওয়া যায়। শিউলি পাতার রস সকাল-বিকেল দু’বেলা গরম পানি দিয়ে খেলে কেঁচোর মতো কৃমি পড়ে যায়; গুঁড়া কৃমির উপদ্রবও কমে যায়। গলা বসার ক্ষেত্রে শিউলি পাতার রস বেশ উপকারী। এ ক্ষেত্রে শিউলি পাতার রস সকাল-বিকেল দু’বার খেলে উপকার পাওয়া যায়। শিউলি ফুল হলুদ রং তৈরি করতে ব্যবহার করা যায়। এ ফুলের বোঁটাগুলো শুকিয়ে গুঁড়া করে পাউডার করে হালকা গরম পানিতে বা জলে মেশালে চমৎকার রং হয়।
ফুল
সুর্যমুখী

ফসলের নাম :সূর্যমুখী(Sunflower)
উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Hellianthus annus.
১. পুষ্টিমূল্য/উপাদান : বীজে লিনোলিক এসিড বিদ্যমান। উন্নতমানের তৈল থাকে।
২. ভেষজগুণ : হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী।
৩. ব্যবহার :সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথাগুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৪. উপযুক্ত জমি ও মাটি : সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী।

৫. জাত পরিচিতি : এ পর্যন্ত বারি কর্তৃক ২টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যথা (১) কিরণী (ডিএস-১) এবং বারি সুর্যমুখী-২।
কিরণী:১৯৯২ সালে জাতটির অনুমোদন দেয়া হয়। বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। জাতটির কান্ডের ব্যাস ১.৫-২.০ সে.মি.। পরিপক্ক পুষ্পমঞ্জুরী বা শাখার ব্যাস ১২-১৫ সে.মি.। প্রতি মাথায় বীজের সংখ্যা ৪০০-৬০০। বীজের রং কালো। ১০০০ বীজের ওজন ৬৮-৭২ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৪ ভাগ। জাতটি মোটামুটি অলটারনারিয়া বৱাইট রোগ সহনশীল। জীবনকাল ৯০-১১০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ১.৬ হতে ১.৮ টন।
বারি সূর্যমুখী-২ : গাছের কান্ডের ব্যাস ২.০-২.৪ সে.মি.। পরিপক্ক পুষ্পমঞ্জুরী বা শাখার ব্যাস ১৫-১৮ সে.মি.। বীজের রং কালো। ১০০০ বীজের ওজন ৬৫-৭০ গ্রাম। প্রতি মাথায় বীজের সংখ্যা ৪৫০-৬৫০। তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৪ ভাগ। জীবনকাল রবি মৌসুমে ৯৫-১০০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ৯০-৯৫ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন রবি মৌসুমে ২.০ হতে ২.৩ টন এবং খরিপ মৌসুমে ১.৫ হতে ১.৮ টন।

৬. বীজের হার : ৮-১০ কেজি/হেক্টর।
৭. বপন সময় ও বপন পদ্ধতি : সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায়। তবে অগ্রহায়ন মাসে (মধ্য থেকে চাষ করলে এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। খরিপ-১ মৌসুমে অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠে (মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য মে) মাসেও এর চাষ করা যায়। সূর্যমুখী বীজ সারিতে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সে.মি. এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সে.মি.।
৮. সার ব্যবস্থাপনা :ভালো ফলনের জন্য সূর্যমুখীতে নিম্নরূপ সার ব্যবহার করতে হবে।
সারের নাম | সারের পরিমাণ/হেক্টর |
ইউরিয়া | ১৮০-২০০ কেজি |
টিএসপি | ১৫০-২০০ কেজি |
এমওপি | ১২০-১৫০ কেজি |
জিপসাম | ১২০-১৭০ কেজি |
জিংক সালফেট | ৮-১০ কেজি |
বরিক এসিড | ১০-১২ কেজি |
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট | ৮০-১০০ কেজি |

সার প্রয়োগ পদ্ধতি :অর্ধেক ইউরিয়া এবং বাকি সব সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ২ ভাগ করে প্রথম ভাগ চারা গজানোর ২০-২৫ দিন এবং দ্বিতীয় ভাগ ৪০-৪৫ দিন পর (ফুল ফোটার পূর্বে) প্রয়োগ করতে হবে।
৯. সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা :সূর্যমুখী ফসলের ফলন বেশী পেতে হলে কয়েকবার সেচ দেয়া প্রয়োজন। প্রথম সেচ বীজ বপনের ৩০ দিন পর (গাছে ফুল আসার আগে), দ্বিতীয় সেচ বীজ বপনের ৫০ দিন পর (পুষ্পস্তবক তৈরির সময়) এবং তৃতীয় সেচ বীজ বপনের ৭০ দিন পর (বীজ পুষ্ট হবার আগে) সেচ দেয়া দরকার।সূর্যমুখীর জমি সর্বদা আগাছামুক্ত রাখতে হবে। জমিতে আগাছা দেখা দিলে উহা তুলে ফেলতে হবে।

১০. পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা :
পোকার নাম : বিছা পোকা
ভূমিকা : ছোট অবস্থায় এরা দলবদ্ধভাবে থাকে।
পোকা চেনার উপায় : কীড়া বা বিছা হলুদ রংয়ের এবং গায়ে কাঁটা থাকে।
ক্ষতির নমুনা : এরা সাধারণত গাছের পাতায় আক্রমণ করে। এ পোকার কীড়া দলবদ্ধভাবে থেকে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে পাতলা সাদা পর্দার মতো করে ফেলে।
অনুকূল পরিবেশ :উষ্ণ আবহাওয়া।

ব্যবস্থাপনা : পোকা দেখার সংগে সংগে গাছ থেকে পোকাসহ পাতা সংগ্রহ করে পোকা মেরে ফেলতে হবে। সেচ নালায় কেরোসিন মিশ্রিত পানি থাকলে কীড়া পানিতে পড়ে মারা যায়।
প্রতি লিটার পানিতে ডায়াজিনন-৬০ ইসি ২ মিলি হারে মিশিয়ে বিকালে জমিতে স্প্রে করতে হবে।

১. রোগ ব্যবস্থাপনা :
রোগের নাম :পাতা ঝলসানো রোগ
ক্ষতির নমুনা : অলটারনেরিয়াহেলিয়ানথী নামক ছত্রাকের সাহায্যে এ রোগ ছড়ায়। আক্রমণের শুরুতে পাতায় ধুসর বা গাঢ় বাদামী বর্ণের অসম আকৃতির দাগ পড়ে। এ দাগগুলো একত্রে মিলিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে এবং অবশেষে পুরো পাতা ঝলসে যায়।
বিস্তার : বীজ এবং বায়ুর সাহায্যে বিস্তার লাভ করে।

ব্যবস্থাপনা : কিরণী জাতের চাষ করা
প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম রোভরাল-৫০ ডব্লিউ পি মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার সেপ্র করা বা ফসল কাটার পর পরিত্যক্ত কান্ড, মূল ও পাতা পুড়িয়ে ফেলা।
১২. ফসল তোলা : ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়।
ফুল
শীতে টবের গাছের যত্ন নেবেন যেভাবে

শীতে প্রকৃতির প্রভাব সব কিছুর উপর পড়ে। বাসা-বাড়ির টবের পানিও শুকিয়ে যায়। ঘরের ভেতর, বাসার ছাদে বা বারান্দার টবে রাখা গাছগুলো এ সময় জীর্ণ হতে পারে। তাই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।
এই শীতে টবের গাছের যত্ন নেবেন যেভাবে, তা জেনে নিন—
১. শীত মানেই গাছ ঠান্ডা থাকবে এমন নয়। এ সময় গাছেরও সূর্যের আলোর প্রয়োজন আছে।
২. গাছের গায়ে সকালের রোদ লাগতে দিন। এতে শীতেও ভালো থাকবে গাছ।
৩. শীত যদি খুব বেশি হয়, ছোট টবগুলো ঘরের ভেতরেই রাখুন। পরদিন সকালে বারান্দায় রোদে দিন।
৪. শীতে গাছে অতিরিক্ত পানি দেবেন না। মাটি সহজে শুকায় না বলে শিকড় পচে যেতে পারে। মাটি পরীক্ষা করে পানি দিন।
৫. শীতের সময় গাছের গায়ে বাড়তি ধুলো জমতে পারে। পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুন।
৬. ঘরের টবে পানি দেওয়ার জন্য স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে বাড়তি পানি নষ্ট হবে না।
৭. শীত বেশি হলে অনেক গাছ মরে যেতে পারে। এমন হলে গাছ খানিকটা ছেঁটে দিতে পারেন।
৮. শীত কমে গেলে নতুন পাতা গজিয়ে সতেজ হয়ে উঠবে আপনার শখের গাছটি।
৯. ফেলে দেওয়া চা-পাতা, শাক-সবজির ছিলকা, ডিমের খোসা মিলিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরে বানানো সার। এ সার বেশ উপকারী।
১০. পাতার রং যদি হালকা হয়ে যায়, তবে পানি না দিয়ে মাটি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সূর্যের আলোতে গাছ রাখুন।
ফুল
টবে গোলাপ চাষের নিয়ম

শহরে কিংবা গ্রামে বাড়ির ছাদে বা আশেপাশে শখ করে অনেকেই টবে ফুল চাষ করেন। সেই ক্ষেত্রে বেশির ভাগেরই পছন্দ গোলাপ। আপনি যদি টবে গোলাপ চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে গোলাপ চাষ সম্পর্কে কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে।
চারা রোপণ
নতুন চারা না লাগিয়ে একবছরের পুরনো চারা লাগাতে পারেন। চারাটি সোজাভাবে গর্তের মধ্যে লাগাতে হবে। চারার শেকড় ভালোভাবে মাটি দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে দিতে হবে। জোড় কলমের মাধ্যমে উৎপাদিত চারার জোড়ের স্থানটি মাটি থেকে অন্তত ৩-৪ সেন্টিমিটার উপরের দিকে রাখতে হবে।
গাছ ছাঁটাই
নতুন শাখা ভালোভাবে বিস্তৃত করার জন্য পুরনো ডাল, ক্ষত ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে বাদ দিতে হয়। বড় গোলাপ পেতে হলে গাছ নিয়মিত ছাঁটাই করতে হয়। আশ্বিন মাসকে গাছ ছাঁটাইয়ের উপযুক্ত সময় ধরা হয়।
সার প্রয়োগ
গাছ ছাঁটাইয়ের ১০-১২ দিন আগে সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছ প্রতি ২-৩ কেজি পঁচা শুকনো গোবরের সঙ্গে ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম পটাশ দিতে হবে। টবের উপর থেকে ১০ সেন্টিমিটার মাটি সরিয়ে নিচের মাটি কিছুটা আলগা করে সারগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। হাঁস-মুরগি বা কবুতরের বিষ্ঠা সার হিসেবে গোলাপ গাছে দেওয়া যেতে পারে।
পানি
• চারা লাগানোর পরে চারার গোড়ায় প্রথম দিকে ঘন ঘন পানি দিতে হবে।
• টবের মাটিতে ভালোভাবে চারা গজালে এবং নতুন ডালপালা ছাড়ার পরে খরা মৌসুমে প্রতি ১০ দিন পর পর একবার করে সেচের মতো পানি দিতে হবে।
• প্রত্যেকবার পানি সেচের পরে গাছের গোড়ার মাটি ঝরঝরে করে দিতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ
টবে চাষ করার সময় পোকা আক্রমণ করলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।
পরিচর্যা
১. চারার জোড়া জায়গাটির নিচে কোন প্রকার ডালপালা বের হলে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে দিন।
২. বড় আকারে ফুল পেতে হলে প্রথম দিকে বের হওয়া পুষ্পকুড়ি ভেঙে দিন।
৩. মার্চ-এপ্রিল মাসে পঁচা গোবর এবং কম্পোস্টের মালচ গাছের গোড়ায় দিন।
৪. পুরান ডালে ফুল ভালো হয় না। তাই ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে।
৫. ছাঁটাইকৃত ডালের সামনে ছত্রাকনাশক ঘন করে গুলে লাগিয়ে দিন।
৬. গাছের গোড়া থেকে ২০ সেন্টিমিটার দূরে গোল করে মাটি খুঁড়ে শেকড় বের করে দিন।
৭. ক্ষতিকর পোকামাকড় ধ্বংস করতে এভাবে মাটি খুঁড়ে ৮-১০ দিন রাখতে পারেন।
এগ্রোবিজ
বেকারত্ব দূর করতে ফুল চাষ

সৌন্দর্যপিপাসু মানুষের কাছে ফুলের আবেদন চিরন্তন। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে ফুলের প্রতি মানুষের আকর্ষণ বেড়েই চলছে। ফলে এখন ফুলেও লেগেছে বাণিজ্যের ছোঁয়া। দিন দিন বেড়ে চলছে ফুলের চাষ ও ব্যবহার। তাই আপনিও ফুলের চাষ করে বেকারত্ব দূর করতে পারেন।
চাষের স্থান
সারাদেশে এখন বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করা যায়। গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন বিলজুড়ে চাষ করা যায় নানা জাতের ফুল। এছাড়া বাড়ির পাশের জমিতে ফুলের চাষ করা যায়। চাষ করতে পারেন বাড়ির ছাদেও।
যে ধরনের ফুল
লাল গোলাপ, সাদা গোলাপ, রজনীগন্ধা, ভুট্টা ফুল, গাঁদা, বেলি, কামিনী, সূর্যমুখী, ডায়মন্ড, গরম ফেনিয়া, জারবরা, রতপুসুটি, টুনটুনি, জিপসি, স্টারকলি, ডালিয়া, কসমস, পপি, গাজানিয়া, স্যালভিয়া, ডায়ান্থাস, ক্যালেন্ডুলা, পিটুনিয়া, ডেইজি, ভারবেনা, হেলিক্রিসাম, অ্যান্টিরিনাম, ন্যাস্টারশিয়াম, লুপিন, কারনেশন, প্যানজি, অ্যাস্টার ও চন্দ্রমল্লিকাসহ নানা জাতের ফুল চাষ করা যায়।
পুঁজি
প্রথম খুব বেশি পুঁজির দরকার হয় না। জমির আকারের ওপর নির্ভর করে খরচ কম-বেশি হতে পারে।
চাষ ও পরিচর্যা
ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস। টবসহ চারাও কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হয়। সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝর দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।
বিক্রয়
শহরে গিয়ে ফুল বিক্রি করতে ঝামেলা হতে পারে। অনেক সময় ঠিকমতো দামও পাওয়া যায় না। তাই উৎপাদিত ফুল বিক্রির জন্য এলাকাতেই ফুলের দোকান গড়ে তুলতে পারেন।
কর্মসংস্থান
অন্যান্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষে লাভ অনেক বেশি। আর ফুল চাষ করার ফলে বেকার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। কারণ ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার, ফুল ছেঁড়া, ফুলের মালা গাঁথাসহ অনেক কাজে পুরুষ এবং নারী সম্পৃক্ত হতে পারে।
এগ্রোবিজ
ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করছেন যে যুবক
শুধু ট্রে আর টবে ফুল চাষ করে মাসে ৫০ হাজার আয় করেন এক কম্পিউটার প্রোগ্রামার। জেনে নিন সেই যুবক সম্পর্কে।















অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন