আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

মৎস্য

বড়শিতে গাঁথল প্রায় ৭ মণের শাপলা পাতা মাছ

তিন সহযোগী নিয়ে গত শনিবার গণি মিয়া মেঘনায় নৌকা ভাসান। তাঁর বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের জগন্নাথপুর এলাকায়। উদ্দেশ্য, বড়শি দিয়ে বোয়াল মাছ ধরা। কিশোরগঞ্জের ভৈরব ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেঘনা মোহনার সোনরামপুর এলাকায় বড়শিতে পুঁটি মাছ দিয়ে টোপ পাতেন। একপর্যায়ে বড়শিতে হ্যাঁচকা টান পড়ল। টোপ গিলেছে বড় কিছু—এমন ধারণা সবার। ধীরে ধীরে বড়শি ওপরে আনার পর ভেসে উঠল বিশাল আকারের একটি শাপলা পাতা মাছ।

এবার সবার চোখ ছানাবড়া। কোনোভাবে মাছটিকে বড়শিতে আটকে রাখা যাচ্ছে না। তাদের সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন জেলে। শেষে ফলা দিয়ে আঘাত করে মাছটিকে দুর্বল করা হয়। ৩০ মিনিটের চেষ্টায় মাছটিকে তীরে ওঠানো হয়। মেপে দেখা গেল এর ওজন প্রায় সাত মণ।

গণি মিয়া মেঘনায় মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।

এর আগে গত বছরের ১৫ নভেম্বর একই এলাকায় সাত মণ ওজনের আরও একটি শাপলা পাতা মাছ ধরা পড়েছিল।

স্থানীয় জেলেরা জানান, ওই দিন সন্ধ্যায় মাছটি বিক্রির জন্য প্রথমে নেওয়া হয় আশুগঞ্জ আড়তে। সেখানে বিক্রি করা যায়নি। এরপর রাত ৮টার দিকে নেওয়া হয় ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়তে। নদীয়া মৎস্য আড়তের মালিক মাছটি ৪৫ হাজার টাকায় কিনে নেন। পরে তিনি মাছটি কেটে টুকরা করে বিক্রি করেন। মাছটি দেখতে আড়তে ভিড় জমিয়েছিল উৎসুক জনতা।

গণি মিয়া বলেন, ‘প্রথমে মনে হয়েছে বড় আকারের বোয়াল আটকাইছে। বেশি জোর করতাছে। তখন মনে হইল বোয়াল না। শাপলা পাতা মাছ হইতে পারে, এমন ধারণা আছিল না।’ তাঁর সহযোগী কাজল মিয়া বলেন, ‘মাছটি দেখার পর মনে অনেক আনন্দ হইছে। আবার ডরও লাগতাছিল। না জানি ছুইটা যায়! তুইলা আনতে অনেক কষ্ট হইছে।’

ভৈরব নৈশ মৎস্য আড়ত সমবায় সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, একসময় মেঘনায় প্রায় প্রতিদিন শাপলা পাতা মাছ ধরা পড়ত। এখন বছরে একটি কি দুটির বেশি এই মাছের দেখা মেলে না।

মৎস্য

পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়

পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়
পাবদা মাছের বংশবৃদ্ধিতে করণীয়

আমরা মাছেভাতে বাঙালি। আর পাবদা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু মাছ। তবে মাছটি এখন বিলুপ্তপ্রায়। ফলে মাছটির বংশবৃদ্ধিতে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। তার মধ্যে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে এ মাছ রক্ষা করা সম্ভব। এর জন্য কিছু কৌশল জেনে নেওয়া জরুরি। আসুন জেনে নেই কৌশলগুলো-

ব্রুড প্রতিপালন

প্রজনন ঋতুর ৪-৫ মাস আগে থেকেই ব্রুড মাছগুলোকে বিশেষ যত্নের সঙ্গে লালন পালন করা উচিত। এ সময় খাবার হিসেবে ফিশমিল, চালের কুঁড়া, গমের ভূষি, সয়াবিন মিল, সরিষার খৈল, তিলের খৈল, আটা এবং ভিটামিনের প্রিমিক্সের মিশ্রণ মাছের মোট ওজনের ৫-৮ ভাগ দিতে হবে। ডিম্বাশয়ের পরিপক্বতা আনার জন্য ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ খাবার ব্যবহারে ভালো ফল পাওয়া যায়। তাছাড়া পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যের পর্যাপ্ততার জন্য নিয়মিত গোবর, ইউরিয়া ও টিএসপি পরিমাণ মতো দিতে হবে।

মাছ বাছাই

ব্রুড বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পুরুষ মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে স্ত্রী মাছের চেয়ে ছোট হবে। পুরুষ মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট চাপা থাকে এবং পুরুষ মাছের বক্ষ পাখনা খাঁজকাটা থাকে। আর স্ত্রী মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে পুরুষ মাছ থেকে বড় হয়। স্ত্রী মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট ফোলা ও নরম থাকে এবং স্ত্রী মাছের বক্ষপাখনা তেমন খাঁজকাটা থাকে না।

টেকসইকরণ

ইনজেকশন দেওয়ার ৮-১০ ঘণ্টা আগে মাছ ধরে সেগুলোকে পুকুরে স্থাপিত গ্লাস নাইলনের হাপাতে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় পর্যন্ত অক্সিজেনের জন্য মাছকে ছিদ্রযুক্ত পিভিসি পাইপের সাহায্যে ওপর থেকে অনবরত পানির ফোয়ারা দিতে হবে।

ইনজেকশন প্রদান

পাবদা মাছের প্রণোদিত প্রজননের জন্য পিজি এবং এইচসিজি দু’টোই ব্যবহার করা যায়। মাছকে মাত্র একবারই ইনজেকশন দিতে হয়। পিজির জন্য সবচেয়ে ভালো মাত্রা হচ্ছে প্রতি কেজি পুরুষ মাছের জন্য ১২.০ মিলিগ্রাম এবং প্রতি কেজি স্ত্রী মাছের জন্য ১৮.০ মিলিগ্রাম। ইনজেকশন দেওয়ার সময় ভেজা কাপড় দিয়ে মাথা জড়িয়ে পৃষ্ঠপাখনার নিচে ৪৫ কোণে ইনজেকশন দিতে হবে। ইনজেকশন দেওয়ার ৯-১২ ঘণ্টার মধ্যে হাপাতেই প্রাকৃতিক প্রজনন ক্রিয়ার মাধ্যমে স্ত্রী মাছ ডিম ছাড়ে এবং পুরুষ মাছ শুক্রাণু ছেড়ে ওই ডিম নিষিক্ত করে।

নিষিক্ত ডিম স্থানান্তর

ডিম ছাড়ার পর যত দ্রুত সম্ভব মাছগুলোকে সতর্কতার সঙ্গে হাপা থেকে সরিয়ে ফেলতে এবং ডিমগুলোকে ট্রেতে স্থানান্তর করতে হবে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে ট্রে ও পুকুরের পানির তাপমাত্র যেন প্রায় একই থাকে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে পুকুরের পানি ছেঁকে ট্রেতে দেওয়া যেতে পারে। ডিম স্থানান্তর করার সঙ্গে সঙ্গে ট্রেতে ওপর থেকে ছিদ্রযুক্ত পিভিসি পাইপ দিয়ে অনবরত পানি সরবরাহ করতে হবে যাতে ডিমগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায়। এভাবে ১৬-২০ ঘণ্টার মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়ে আসে।

রেনু পোনার খাবার

ট্রেতে ডিম থেকে ফোটার ২১-৩৬ ঘণ্টার মধ্যে রেনু পোনাকে প্রাথমিক খাবার দিতে হবে। প্রাথমিক খাবার হিসেবে টিউবিফিসিড ওয়ার্ম সবচেয়ে ভালো। টিউবিফিসিড ওয়ার্ম ছোট বাটিতে নিয়ে কুচি কুচি করে কেটে দিতে হয়। টিউবিফিসিড ওয়ার্ম না পাওয়া গেলে পুকুর থেকে জুপ্লাংকটন ধরে সুক্ষ্ন ছাকনি দিয়ে ছেঁকে ট্রেতে দিতে হবে।

পোনার পরিচর্যা

পোনার চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন ২-৩ বার খাবার দিতে হবে। এভাবে ৬-৮ দিন ট্রেতে প্রতিপালন করার পর পোনাগুলোকে সিস্টার্নে স্থানান্তর করতে হবে। ২.৪, ১.৩, ০.৫ ঘনমিটার সাইজের সিস্টার্নে ৩০০-৫০০টি পোনা লালন করা যাবে। পানির উচ্চতা ৩০-৪০ সেন্টিমিটার বজায় রাখতে হবে। সিস্টার্নে ১০-১৫ দিন প্রতিপালন করার পর পোনার আকার ২-৩ সেন্টিমিটার হলে পোনাগুলোকে নার্সারি পুকুরে মজুদ করা যাবে।

নার্সারি পুকুরে প্রতিপালন

পুকুরের আয়তন ৩-৬ শতাংশ হবে। পুকুর প্রস্তুতির পর শতাংশে ৩০০-৪০০টি করে পোনা ছাড়া যাবে। পোনা ছাড়ার আগে ভালোভাবে ছোট ফাঁস জাল টেনে পোকামাকড়, সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি সরিয়ে ফেলতে হবে। পোনা সকাল কিংবা সন্ধ্যার আগে ছাড়তে হবে। পোনা ছাড়ার পর প্রতিদিন পোনার দেহ ওজনের ১০-২০ ভাগ সম্পূরক খাবার দিতে হবে। প্রতি ১৫ দিন পর পর জাল টেনে মাছের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

খরচের তুলনায় লাভ ভালো হওয়ায় ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পাবদা মাছের চাষ। ২০১৬ সালে ২ জন চাষির মধ্যদিয়ে শুরু হয়ে এখন পাবদা চাষির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে। আর গেল মৌসুমে ১৫০ মেট্রিকটনের বেশি পাবদা উৎপাদিত হয়েছে। সামনের মৌসুমে উৎপাদন আরো বেশি হবে বলে আশা করছে মৎস্য বিভাগ।

জানাগেছে, ময়মনসিংহের বিভিন্ন বেসরকারি হ্যাচারি থেকে খামারীরা পোনা সংগ্রহ করে আনেন। পরবর্তিতে সেগুলো পুকুরে মিশ্র ও দানাদার খাবার খাইয়ে বড় করা হয়। সাধারণত এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা যায়। পুকুর পাড় থেকেই গড়ে ৩৩০ টাকা কেজি দরে পাবদা বিক্রি হয়। সাথে পানির পরিবেশ ঠিক রাখতে পুকুরে রাখা হয় অন্য জাতের মাছ ।

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

পাবদা খামারী আব্বাস জানান, পাবদা মাছের গঠন ঠিক রাখতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয় দানাদার খাবার। বিক্রিতেও রয়েছে সুবিধা। দেড় শ’ কিংবা দুই শ’মণ যে পরিমাণই মাছ ধরা হোক না কেন তা পুকুর পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যান ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বড় বড় পাইকাররা। ফলে লাভ এবং বিক্রয় সুবিধা পাওয়াই পাবদা চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে।

রাজু জানান, লেখা-পড়া শেষ করে বাবার সাথে পাপদা মাছের চাষ করছি। এবছর প্রায় আড়াই লাখ টাকার পাবদা মাছ বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করি। এছাড়া এ পাবদা মাছের সাথে আরো অন্যান মাচের চাষ করতে হয় পানি ঠিক রাখার জন্য। যাকে বলে মিশ্র চাষ।

যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ
যে কারণে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পাবদা মাছের চাষ

অপর এক খামারী জানান, পাবদা মাছ চাষে বর্তমানে মানুষকে বেশি আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এ মাছ বিক্রি করতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না । দেড় শ’ কিংবা দুই শ’ মণ মাছ পুকুর পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আনেক চাষি এখন এ মাছ চাষে ঝুঁকে পড়ছে। তিনি আরো জানান মৎস্য বিভাগ আমাদের বিভিন্নভাবে ট্রেনিং দিচ্ছে, কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা এসে পুকুরের পানি পরীক্ষাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

মাছ আহরণ
মাছ আহরণ

মহেশপুর, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, কৃষির যে কোন সেক্টরের তুলনায় পাবদা চাষ লাভজনক। এই চাষ বৃদ্ধিতে নিয়মিত খামারীদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিক্রিতেও সহযোগীতা করছে মৎস্য বিভাগ। তিনি আরো জানান জেলার মহেশপুরে উৎপাদিত এসব পাবদা মাছ ভারতে এলসির মাধ্যমে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশিয় বিভিন্ন বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ভালো লাভবান হচ্ছেন খামারীরা। সাধারণত মার্চ মাসের শুরুতে পুকুরে পাবদা পোনা ছাড়া হয় এবং ছয় মাস পর থেকে তা সংগ্রহের উপযোগী হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা
পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা

পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা কেমন হবে সেগুলো মৎস্য চাষিদের ভালোভাবে জানতে হবে। আগের দিনে আমাদের দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে ব্যাপকহারে মাছ পাওয়া যেত। পুকুরে অনেকেই এখন পাবদা মাছ চাষ করে থাকেন। আজকের এই লেখাতে আমরা জেনে নিব পাবদা মাছের মিশ্র চাষ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে-

পুকুর প্রস্তুত করা
পুকুর প্রস্তুত করা

পুকুর প্রস্তুত করা

বছরে অন্তত ৭-৮ মাস পানি থাকে এমন সেচকৃত পুকুর নির্বাচন করা ভালো। তবে সারা বছর পানি থাকে অর্থাৎ অন্য মাছের চাষ(পুরোনো পুকুর) হচ্ছে এমন পুকুরে পাবদা মাছ চাষ করা আরো ভালো । নতুন পুকুরের পাড় মেরামত ও জলজ আগাছা পরিষ্কার করতে হবে । পুকুরে প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন প্রয়োগ করতে হবে । চুন প্রয়োগের ২ থেকে ৩ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫ কেজি হারে গোবর প্রয়োগ করতে হবে । এতে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মাবে । পুকুর থেকে রাক্ষুসে ও অবাঞ্ছিত মাছ থাকলে তা দূর করতে হবে।

মিশ্র চাষের জন্য পোনা মজুদ

পুকুরের পানি ৪ থেকে ৫ ফুট গড় উচ্চতা ও হালকা সবুজাভ হলে পোনা মজুদ করতে হবে । মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সাইজের ৫০টি পাবদা , ১০০টি শিং এবং ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি সাইজের ৫টি কাতলা , ১০টি রুই , ১০টি মৃগেল , ২টি সিলবার কার্প ও ২টি গ্রাস কার্পের সুস্থ পোনা মজুদ করতে হবে।

খাদ্য প্রয়োগ

নিয়মিত সম্পূরক খাদ্য মাছের দেহ ওজনের শতকরা ৩ থেকে ৮ ভাগ হারে প্রয়োগ করতে হবে । অনুর্বর পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধির জন্য ১৫ দিন পর পর প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৫ কেজি পচা গোবর প্রয়োগ করতে হবে । পানির রং গাড় সবুজ হয়ে গেলে অবশ্যই গোবর প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং পানির পি,এইচ পরীক্ষা করতে হবে । এখানে একটি ব্যাপার উল্ল্যেখ্য যে , পাবদা মাছ পুকুরের তুলনা মূলক ছোট মাছ খেয়ে ফেলবে তাই চাষের অন্যান্য মাছ যাতে পাবদার চাইতে বড় সাইজের হয় সে দিকে নজর রাখতে হবে এবং পুকুরের আমাছা খেয়ে পুকুর যেমন চাষযোগ্য রাখবে তেমনি পাবদার বৃদ্ধিও দ্রুত হবে।

মাছ আহরণ
মাছ আহরণ

মাছ আহরণ

পাবদা মাছ ৬০ থেকে ৭০ গ্রাম ওজনের হলে বিক্রির জন্য আহরণ করা যেতে পার। পোনা মজুদের ৭ থেকে ৮ মাস পর সব মাছ আহরণ করার ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে তবে ১ বছরের অধিক সময় পর আহরণ করলে মাছের ওজন দ্বিগুনের চাইতেও বেশি হতে দেখা গেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার
মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

মাছের উকুন রোগের কারণে নানা সমস্যায় পড়তে হয় চাষিদের। অনেকেই বুঝতে পারেন না রোগটি কেমন। আসুন জেনে নেয়ে যাক মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য।

মাছের উকুন রোগের কারণ ও লক্ষণ: আরগুলাস নামক বহিঃপরজীবী এর মাধ্যমে এই রোগে মাছ আক্রান্ত হয়। এই পরিজীবি মাছের দেহের রক্ত চুষে ক্ষত সৃষ্টি করে।

মাছের দেহ পৃষ্ঠ ও পাখনায় উকুন লেগে থাকে। শক্ত কিছু পেলে মাছ দেহ ঘষে। মাছ লাফালাফি করে। দেহ থেকে রক্তক্ষরণ হয়। পরজীবী খালি চোখে দেখা যায়। মাছ ক্লান্তহীনভাবে সাঁতার কাটে। আক্রান্ত স্থানের চারপাশ লালচে বর্ণ হয়।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ ও প্রতিকার: পুকুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রতি শতাংশে ১ কেজি হারে চুন দেয়া। জৈবসার প্রয়োগ কমিয়ে দেয়া। আক্রান্ত মাছ পুকুর থেকে সরানো।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার
মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার

ডিপটারেক্স (ডাইলকস, নেগুভন, টেগুভন) ০.৫ পিপিএম হারে পুকুরে প্রয়োগ করা। সপ্তাহে একবার ও পরপর ৫ বার অথবা ০.৮ পিপিএম হারে সুমিথিয়ন প্রয়োগ করা। প্রতি সপ্তাহে একবার ও পরপর ৫ বার অথবা ০.২৫ পিপিএম পটাশ দ্রবণে ৫-৬ মিনিট গোসল করাতে হবে।

মাছের উকুন রোগের প্রতিরোধ, লক্ষণ ও প্রতিকার সংবাদটির তথ্য কৃষি তথ্য সার্ভিস এর মৎস্য বিভাগ থেকে নেয়া হয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

যে পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়

যে পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়
যে পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষে বেশি লাভবান হওয়া যায়

আমাদের দেশে সুস্বাদু মাছের মধ্যে পাবদা অন্যতম। স্বাদের জন্য এটি ভীষণ জনপ্রিয়। বর্তমানে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক জলাশয়ে পাবদা মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তবে আধুনিক পদ্ধতিতে এ মাছ হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে পাবদা মাছ চাষ করে বেশ লাভবানও হওয়া যায়।

এ মাছ চাষের জন্য ৭ থেকে ৮ মাস পানি থাকে এরকম ১৫-২০ শতাংশের পুকুর কিংবা জলাশয় নির্বাচন করতে হবে। পুকুরটি বন্যামুক্ত এবং পর্যাপ্ত আলো বাতাসযুক্ত হতে হবে।

পুকুরের পাড় মেরামত করতে হবে। প্রথমে পুকুরকে সেচের মাধ্যমে শুকিয়ে ফেলা প্রয়োজন। পুকুর শুকানো সম্ভব না হলে প্রতি শতাংশে প্রতি ফুট গভীরতার জন্য ১৮-২৫ গ্রাম রোটেনন পাউডার দিয়ে সব ধরনের মাছ অপসারণ করতে হবে।

পুকুরের তলায় কাদা হওয়ার বেশি সম্ভাবনা থাকলে হালকা করে কিছু বালি ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এর ফলে পুকুরের তলায় গ্যাস হবে না, পানি পরিষ্কার এবং পরিবেশ ভালো থাকবে।

জেনে নিন পাবদা চাষে করণীয় কী
জেনে নিন পাবদা চাষে করণীয় কী

রোটেনন প্রয়োগের ২ থেকে ৩ দিন পর শতাংশ প্রতি ১ কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করতে হবে। তবে চুন ছাড়াও জিওলাইট (প্রতি শতকে ১ কেজি) পুকুর প্রস্তুতির সময় প্রয়োগ করলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি তথা প্রাকৃতিক খাদ্য বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। পুকুর প্রস্তুতির শেষ ধাপে সার প্রয়োগ করা হয়। চুন প্রয়োগের ৪ থেকে ৫ দিন পর শতকে ৮০ গ্রাম ইউরিয়া এবং ৪০ গ্রাম টিএসপি সার প্রয়োগ করা হয়। পুকুরে কোনো প্রকার জৈব সার দেওয়া যাবে না।

পুকুরে পোনা ছাড়ার আগে পরিবহনকৃত পোনা পুকুরের পানির তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এর জন্য ১০ লিটার পানি ও ১ চামচ পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট অথবা ১০০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করতে হবে। এরপর তাতে ১ থেকে ২ মিনিট গোসল করিয়ে পোনা জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

সার প্রয়োগের ৪ দিন পর পানির রং সবুজ বা বাদামি হলেই পুকুরে পোনা মজুত করতে হবে। যদি সম্ভব হয় পোনা ছাড়ার সময় থেকে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পুকুরে হালকা পানির প্রবাহ রাখতে হবে। এককভাবে চাষের ক্ষেত্রে শতাংশ প্রতি ৩-৪ গ্রাম ওজনের সুস্থ-সবল ২০০-২৫০টি পোনা মজুদ করা যেতে পারে।

মিশ্র চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ২ থেকে ৩ ইঞ্চি সাইজের ৫০টি পাবদা, ১০০টি শিং এবং ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি সাইজের ৫টি কাতলা, ১০টি রুই, ১০টি মৃগেল, ২টি সিলবার কার্প ও ২টি গ্রাস কার্পের সুস্থ পোনা মজুদ করতে হবে। তেলাপিয়ার সঙ্গে পাবদা মাছ ভালো হয়ে থাকে এ কারণেই যে তেলাপিয়ার অবাঞ্চিত বাচ্চা পাবদা মাছ খেয়ে তাড়াতাড়ি বড় হয়।

নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ
নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ

৩০ শতাংশ ফিশ মিল, ৩০ শতাংশ সরিষার খৈল, ৩০ শতাংশ অটোকুড়া, ১০ শতাংশ ভূষি ও ভিটামিন প্রিমিক্স সহকারে সম্পূরক খাবার তৈরি করা যায় অথবা বাজারের কৈ মাছের ফিড খাওয়ালেও চলবে। এরা সাধারণত রাতে খেতে পছন্দ করে। তাই উপরে আলোচিত খাবারটি রাতে দুবার প্রয়োগ করা যেতে পারে। মিশ্র চাষের ক্ষেত্রে অন্যান্য মাছের জন্য স্বাভাবিক নিয়মে খাবার দিতে হবে। পোনা মজুদের পরের দিন থেকে মাছকে তার দেহ ওজনের ১২ শতাংশ থেকে আরম্ভ করে দৈনিক খাবার দিয়ে যেতে হবে। প্রতি ১৫ দিন অন্তর খাদ্য প্রয়োগের হার শতকরা ১ শতাংশ করে কমাতে হবে।
পাবদা মাছের ওজন ৩০ গ্রামের বেশি হলে খাদ্য প্রয়োগের পরিমাণ হবে তার দেহ ওজনের শতকরা ৫ শতাংশ।

৭ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ৩০-৩৫ গ্রাম ওজনের হলে মাছ আহরণ করা যাবে। আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে একক চাষের শতাংশে ১৪ থেকে ১৫ কেজি মাছ উৎপাদন করা যেতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ