কম ক্যালরিযুক্ত পানীয়, একই সঙ্গে শরীর জুড়াবে ওজনও কমাতে সহায়তা করবে।
গরমকালে শরীর আর্দ্র ও ঠাণ্ডা রাখতে ফলের শরবত ও পানীয় গ্রহণ উপকারী। আবার যারা এই গরমে রোজা রাখছেন, তাদের জন্য ইফতারে রকমারি শরবতের ব্যবস্থা থাকেই।
তবে বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ভয়ে অনেকেই শরবত পান করতে চান না।
পুষ্টিবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখার পাশাপাশি কম ক্যালরি সম্পন্ন এবং ওজন কমাতে সহায়ক কয়েকটি পানীয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হল।
তরমুজের শরবত
মিষ্টি ও সতেজকারক তরমুজের শরবত গরমের চমৎকার পানীয়। তরমুজে ৯৪ শতাংশ পানি ও প্রচুর আঁশ থাকে। এর সঙ্গে কয়েকটা পুদিনা পাতা যোগ করে সতেজভাব বাড়ানো যায়। আলাদা চিনি যোগ করার প্রয়োজন পড়ে না।
তরমুজ প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি ও আর্দ্রতারক্ষাকারী। এক গ্লাস তরমুজের শরবত অনেকক্ষণ পেটভরা-ভাব আনে ও শরীর আর্দ্র রাখে। পাশাপাশি ইলেক্ট্রলাইট, ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ।
শসার রস
শসা অন্যতম আর্দ্রতা রক্ষাকারী ফল যা গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ও ক্যালরি কমাতে সহায়তা করে। এটা কম ক্যালরি, উচ্চ আঁশ ও জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ। আঁশ পেট ভরা ভাব আনে ও বাড়তি অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা কমায়। শসার শরবতের স্বাদ বাড়াতে এতে লেবু ও পুদিনার পাতা যোগ করা যায়।
বিটরুটের শরবত
ওজন কমাতে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বিটরুটের শরবত একটা পরিপূর্ণ পানীয়। এটা দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় খাদ্যাঁশ সমৃদ্ধ, যা পাচন ক্রিয়াকে সক্রিয় রাখে। বিটরুট লৌহ ও অন্যান্য পুষ্টি যেমন- আঁশ, ফোলাট (ভিটামিন বি-৯), ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, লৌহ ও ভিটামিন সি’য়ের ভালো উৎস। আঁশ সমৃদ্ধ বিটরুট খাওয়া পেশির ক্ষয় পূরণেও সাহায্য করে।
কমলার রস
কমলার রস খাওয়ার মাধ্যমে ভিটামিন সি খাবার তালিকায় যোগ করা যায়। ওজন কমাতেও সহায়তা করে। কমলার রস আলাদা করে চিনি ছাড়া পান করা যায়। এটা কোমল পানীয় খুব ভালো বিকল্প।
কমলা দেহের ক্যালরি পোড়াতে সহায়তা করে। এছাড়াও, দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকতে ও পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম।
আমের শেইক
গরমকালে আমের শরবত খাওয়ার উপকারিতার শেষ নেই। ভিটামিন কে, এ, সি, পটাশিয়াম ও ফোলাট সমৃদ্ধ এই ফল চিনি ছাড়া কম ননীযুক্ত দুধের সঙ্গে মিশিয়ে ‘শেইক’ তৈরি করে নেওয়া যায়। এটা ক্ষুধা নিবারণ করে, অস্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা কমায়। ফলে হৃদপিণ্ড, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
স্বল্প চর্বিযুক্ত দুধ এবং চিনি ছাড়া তৈরি আমের শ্যাঙ্ক পান করা তৃপ্তি বাড়িয়ে তুলতে পারে, অস্বাস্থ্যকর খাবারের জন্য আপনার আকাঙ্ক্ষা রোধ করতে পারে এবং আপনার হৃদয়, ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন