আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

এগ্রোটেক

প্রযুক্তি ব্যবহার করে কি ধানের দাম বাড়ানো যাবে? – দা এগ্রো নিউজ

ধানের দাম নাই। কিন্তু কৃষি খরচ বেশি।
ধানের দাম নাই। কিন্তু কৃষি খরচ বেশি।

বাজারে দাম না পাওয়ায় কৃষকদের মাঝে হাহাকার পড়েছে। সরকার ভাবছে প্রযুক্তির ব্যবহার ও চাল রপ্তানির কথা।

টাঙ্গাইল জেলার ক’দিন আগে একজন কৃষক ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে জমিতে পাকা ধানে আগুন লাগিয়ে দেন।

দেশে যে বছরই ধানের ফলন ভাল হয়, তখনই ধানের দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশায় পড়তে হয়।

এই চক্র থেকে বেরিয়ে আসার আদৌ কি কোন উপায় আছে – এই প্রশ্ন এখন উঠছে।

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী এলাকার মোসাম্মৎ বানেশা বেগম অন্যের তিন বিঘা জমি বর্গা নিয়ে বোরো ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু এখন তার শ্রম এবং খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় তিনি থমকে গেছেন।

“ধানের দাম নাই। কিন্তু কৃষি খরচ বেশি। ১২০০ টাকা দিয়া এক বিঘা ধান কাটাতে কামলা নিতে হয়। পোষায় না।”

টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার বানকিনা গ্রামের একজন কৃষক আবদুল সিকদার কয়েকদিন আগে তার জমিতে পাকা ধানে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন।

খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় ক্ষোভ এবং হতাশা থেকে তিনি এটা করেছিলেন বলে তার পরিবারের একজন সদস্য জানিয়েছেন।

বোরো ধান মণপ্রতি এখন কৃষকদের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।

এবারই প্রথম সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনবে
খরচের তুলনায় ধানের দাম কম হওয়ায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

কুড়িগ্রামের একজন কৃষক আজিজার রহমান বলছিলেন, প্রতি বছরই ধানের দাম নিয়ে তাদের হতাশায় পড়তে হচ্ছে।

“আমাদের জমিতে ধান ছাড়া অন্য ফসল করা যায় না। এটা ধানী জমি। সে কারণে বাধ্য হয়ে ধান করি।”

ধানের দাম বাড়াতে দুই উদ্যোগ – প্রযুক্তি ও রপ্তানী

সরকারও এ পরিস্থিতিটা স্বীকার করছে।

কৃষিমন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, এই বছর আমন এবং আউশের উৎপাদন বেশি হয়েছে। এখন বোরো ধানও এক কোটি ৯০ লাখ টনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

ফলন বেশি হওয়ায় ধানের দাম এবার আগের তুলনায় অস্বাভাবিক কম বলে তিনি মনে করেন।

ড: রাজ্জাক জানিয়েছেন, তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা সরকার নিচ্ছে।

তিনি বলেছেন, তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য চাল রপ্তানির বিষয় সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

“কৃষক আমন ধানও ভাল দামে বিক্রি করতে পারে নাই এই অস্বাভাবিক হারে দাম কমে গেছে। ইতিমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হাওর থেকেও ধান কাটা হয়ে গেছে। ফলে স্পষ্ট বোঝা যায়, অনেক ধান উদ্বৃত্ত থাকবে।”

“আমরা বেশি কিনতে পারতাম। কিন্তু সরকারি গুদামের ধারণ ক্ষমতা অনেক কম। সেজন্য আমরা ১২ লাখ টন টার্গেট করেছি। তার চেয়ে বেশি কেনা সম্ভব হবে না। আর সাড়ে তিন কোটি টন চালের মার্কেটে ১০ বা ১২ লাখ টন চাল কিনলে এর প্রভাব পড়ে না। এছাড়া কৃষকরা প্রত্যক্ষভাবে এর সুবিধাটা পায় না। ডিলাররা কিনলে তার একটা প্রভাব পড়ে।”

মন্ত্রী আরও বলেছেন, “সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে চাল রপ্তানির বিষয় আমরা বিবেচনা করছি।”

তবে কৃষি বিষয়ক অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ফলন ভাল হলেই ক্ষুদ্র এবং মাঝারী কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন।

চাতালের জায়গায় অটো রাইস মিলের উত্থান হয়েছে।
চাতালের জায়গায় অটো রাইস মিলের উত্থান হয়েছে।

সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএস-এর গবেষক ড: নাজনীন আহমেদ বলছিলেন, ধান চাল কেনার প্রচলিত পদ্ধতিতে সরকারের নজরদারি বাড়ানো হলে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

তবে কৃষকের উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দিলে দীর্ঘমেয়াদে ভাল সমাধান হতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

“সমস্যা অনেক, যেমন চাতালের জায়গায় অটো রাইস মিলের উত্থান। এর সাথে কৃষকের ফলন ধরে রাখার নিজেদের ব্যবস্থা নেই। ফলে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কৃষককে ধান কেটেই বিক্রি করতে হয়। তখন তারা দাম কম পায়।”

“এখানে সরকার যদি তাদের চাল কেনার প্রক্রিয়া একটু আগে শুরু করে, তাহলে সেখানে ধানের দাম যেটা ঘোষণা করা হবে, সেটা ক্ষুদ্র কৃষকের জন্য একটা বারগেইনিং পয়েন্ট হতে পারে। এটা এখনকার ব্যবস্থায় কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে দীর্ঘ মেয়াদে উৎপাদন খরচ কমাতে কৃষককে প্রযুক্তির দিকে নেয়া ছাড়া বিকল্প নাই।”

সরকার অবশ্য কিছুদিন আগে ৩৬ টাকা কেজিতে চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। আর ধানের দাম ঘোষণা করেছে ২৬ টাকা কেজি।

সরকারের এই দাম অনুযায়ী মণপ্রতি ধানের দাম এক হাজার টাকার বেশি হয়। কিন্তু সরকারি কেনার প্রক্রিয়া মাঠ পর্যায়ে এখনও সেভাবে শুরু হয়নি।

কৃষি মন্ত্রী ড: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকারও স্থায়ী উপায় হিসেবে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে চাইছে।

“ধান লাগানো এবং ধান কাটার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি খরচ হয়। এই ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য সরকার কৃষককে সহযোগিতা করছে। একটি যন্ত্র কিনতে কৃষক ৫০ টাকা দিলে সরকার বাকি ৫০ টাকা দিচ্ছে। আরও কিভাবে খরচ কমানো যায়, সেই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কিন্তু এটা একদিনে সম্ভব না। অনেক সময় প্রয়োজন।”

কৃষি অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারাদেশের কৃষকদের তালিকা এবং তথ্য সরকারের কাছে আছে। ফলে সরকার কৃষকদের সাথে নিয়ে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিলে অল্প সময়েই স্থায়ী সমাধান সম্ভব হতে পারে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোটেক

ড্রাম সিডার: আপনার কৃষিজমিকে করুন লাভজনক এবং উৎপাদনশীল! – দা এগ্রো নিউজ

ড্রাম সিডার: আপনার কৃষিজমিকে করুন লাভজনক এবং উৎপাদনশীল!
ড্রাম সিডার: আপনার কৃষিজমিকে করুন লাভজনক এবং উৎপাদনশীল!

কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর জন্য আধুনিক প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ড্রাম সিডার যন্ত্র এর মধ্যে অন্যতম, যা চাষাবাদকে আরও সহজ, দ্রুত এবং সাশ্রয়ী করে তোলে। জমিতে সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে বীজ বপনের জন্য ড্রাম সিডার একটি কার্যকর সমাধান।

ড্রাম সিডার যন্ত্র কী?

ড্রাম সিডার একটি আধুনিক বীজ বপন যন্ত্র যা কৃষকদের বীজ ছিটানোর কাজ সহজ করে। এটি জমিতে সমানভাবে এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে বীজ বপন করে, যা ফলনের গুণগত মান ও পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

ড্রাম সিডার যন্ত্র কী?
ড্রাম সিডার যন্ত্র কী?

ড্রাম সিডার যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা ?

১. সময় এবং শ্রম সাশ্রয়:

  • দ্রুত এবং সমানভাবে বীজ বপন করার জন্য ড্রাম সিডার নিখুঁত।
  • প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় এটি সময়ের অর্ধেক এবং শ্রমের ৩০% পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারে।

২. বীজের অপচয় রোধ:

  • বীজ সঠিক পরিমাণে এবং নির্দিষ্ট দূরত্বে ছিটানোর মাধ্যমে অপচয় কমায়।
  • সঠিকভাবে বপনের কারণে বীজের বৃদ্ধি ভালো হয়।

৩. ফসলের গুণগত মান বৃদ্ধি:

  • সমান দূরত্বে বপন হওয়ায় গাছগুলোর পুষ্টি সমানভাবে পায়।
  • জমিতে ফলনের পরিমাণ ও গুণগত মান বাড়ে।

৪. কম খরচে অধিক উৎপাদন:

  • জমির মাটির গঠন অনুযায়ী বীজ ছিটানোর ফলে সার, পানি এবং কীটনাশকের ব্যবহার কম হয়।
  • ফলে উৎপাদন খরচ কমে যায় এবং লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

৫. বহুমুখী ব্যবহার:

  • ধান, গম, পাট, সরিষা সহ বিভিন্ন ফসলের বীজ বপনে উপযোগী।
  • ছোট এবং বড় কৃষিজমি উভয়ের জন্য উপযুক্ত।
ড্রাম সিডার যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা ?
ড্রাম সিডার যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা ?

ড্রাম সিডার যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ?

  • সহজ নকশা: ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণ সহজ।
  • টেকসই নির্মাণ: দীর্ঘস্থায়ী এবং মজবুত।
  • পোর্টেবল: সহজে বহনযোগ্য।
  • কম জ্বালানি খরচ: সাশ্রয়ী কার্যক্ষমতা।
??জমিতে ড্রাম সিডার যন্ত্র ব্যবহারের সুবিধা
ড্রাম সিডার যন্ত্রের বৈশিষ্ট্য ?

কেন জমিতে ড্রাম সিডার ব্যবহার করবেন? ?

  • জমির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য সঠিক বপন নিশ্চিত করে।
  • বীজ, সার, এবং কীটনাশকের অপচয় কমায়।
  • ফলনের সময় কমিয়ে দ্রুত ফলন সংগ্রহের সুযোগ দেয়।
  • পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, যা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

ড্রাম সিডার: কৃষি খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ?

ড্রাম সিডারের ব্যবহার শুধুমাত্র কৃষকদের কাজ সহজ করছে না, এটি তাদের লাভের পথও প্রশস্ত করছে। প্রযুক্তি নির্ভর চাষাবাদ কৃষি খাতকে আরও আধুনিক, লাভজনক এবং টেকসই করে তুলছে।

জমিতে ড্রাম সিডার যন্ত্রের ব্যবহার: কম খরচে অধিক ফলনের আধুনিক সমাধান! ??

এখনই ড্রাম সিডার ব্যবহার শুরু করুন এবং কৃষি জীবনে আধুনিকতার ছোঁয়া আনুন। ?

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার: ফলনের গুণগত মান ও পরিমাণ বাড়ানোর সেরা উপায়!

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার: ফলনের গুণগত মান ও পরিমাণ বাড়ানোর সেরা উপায়!
ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার: ফলনের গুণগত মান ও পরিমাণ বাড়ানোর সেরা উপায়!

ফল বাগানের যত্ন নেওয়া মানে শুধু ফসল উৎপাদন নয়, এটি সুস্থ এবং রোগমুক্ত গাছ নিশ্চিত করার একটি কার্যকর উপায়। সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহার করলে কীটপতঙ্গ, ছত্রাক, এবং অন্যান্য রোগ থেকে গাছকে রক্ষা করা সহজ হয়। এতে ফলনের গুণগত মান ও পরিমাণ বাড়ে।

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের গুরুত্বপূর্ণ দিক

কীভাবে সঠিক স্প্রে যন্ত্র নির্বাচন করবেন?

স্প্রে যন্ত্রের ধরন বাছাই করুন: আপনার বাগানের আকার ও প্রকারের ওপর নির্ভর করে হ্যান্ড স্প্রে, ব্যাকপ্যাক স্প্রে, বা পাওয়ার স্প্রে নির্বাচন করুন।

স্প্রে নোজল ও ক্ষমতা: নোজলের ধরণ এবং স্প্রে করার ক্ষমতা ফসলের সঠিক সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।

স্প্রে যন্ত্রের সঠিক ব্যবহার

সময় নির্ধারণ করুন: স্প্রে করার জন্য সকাল বা সন্ধ্যার সময় বেছে নিন, যখন তাপমাত্রা কম থাকে।

ডোজের পরিমাণ: কীটনাশক বা সার মেশানোর সময় সঠিক নির্দেশনা মেনে চলুন।

সমানভাবে ছিটানোর কৌশল: গাছের প্রতিটি অংশে স্প্রে সঠিকভাবে পৌঁছানো নিশ্চিত করুন।

পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা

  • প্রতিবার ব্যবহারের পর যন্ত্র পরিষ্কার করুন।
  • সঠিকভাবে সংরক্ষণ করুন যাতে এটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের উপকারিতা
ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের উপকারিতা

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের উপকারিতা

গাছের রোগ প্রতিরোধ:

  • কীটপতঙ্গ ও ছত্রাক থেকে গাছকে সুরক্ষা দেয়।
  • ফলের গুণগত মান বজায় থাকে।

উচ্চ ফলন নিশ্চিত:

  • পুষ্টি সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে ফলনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
  • কম খরচে অধিক উৎপাদন।

শ্রম ও সময় সাশ্রয়:

  • উন্নত স্প্রে যন্ত্রের মাধ্যমে কম সময়ে পুরো বাগানে স্প্রে করা যায়।
  • গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী স্প্রে প্রয়োগ সহজ হয়।

পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি:

  • সঠিক ডোজ ব্যবহার করে রাসায়নিক অপচয় রোধ করা যায়।
  • বাগানের পরিবেশ স্বাস্থ্যকর থাকে।
আপনার ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের জন্য টিপস
আপনার ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের জন্য টিপস

আপনার ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্র ব্যবহারের জন্য টিপস

  • বিভিন্ন গাছের জন্য আলাদা স্প্রে নোজল ব্যবহার করুন।
  • প্রাকৃতিক কীটনাশক ও জৈব সার স্প্রে করার চেষ্টা করুন।
  • বছরে একাধিকবার স্প্রে যন্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষা করুন।
  • কর্মীদের সঠিক প্রশিক্ষণ দিন যাতে তারা দক্ষতার সঙ্গে যন্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ভবিষ্যৎ

উন্নত প্রযুক্তির স্প্রে যন্ত্র ব্যবহার কৃষিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। অটোমেটেড ও ড্রোন স্প্রে যন্ত্র ভবিষ্যতে কৃষি খাতকে আরও উন্নত করবে, যা ফল উৎপাদনের খরচ কমিয়ে দেবে এবং মান বৃদ্ধি করবে।

আপনার ফল বাগানকে উন্নত করুন সঠিক স্প্রে যন্ত্র দিয়ে!

ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার আপনার ফসলকে রোগমুক্ত, পুষ্টিসমৃদ্ধ, এবং উচ্চ মানের করবে। এখনই সঠিক যন্ত্র ব্যবহার শুরু করে আপনার বাগানকে আরও লাভজনক করুন।

ফলন বাড়ান, গুণগত মান নিশ্চিত করুনসঠিক স্প্রে যন্ত্রে আপনার বাগান হোক আদর্শ!

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: আধুনিক কৃষির সফলতার চাবিকাঠি – দা এগ্রো নিউজ

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: আধুনিক কৃষির সফলতার চাবিকাঠি
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: আধুনিক কৃষির সফলতার চাবিকাঠি

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ কী?

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ বলতে কৃষি কাজের বিভিন্ন ধাপে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির ব্যবহারকে বোঝানো হয়। জমি চাষ, বীজ রোপণ, সেচ, ফসল কাটা এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মতো কাজগুলোতে যান্ত্রিক পদ্ধতির অন্তর্ভুক্তি কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে তোলে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের গুরুত্ব

১. উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি:

  • কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে অল্প সময়ে অধিক জমি চাষ করা যায়।
  • ফসলের উৎপাদনশীলতা ও মান বৃদ্ধি পায়।

২. খরচ কমানো:

  • ম্যানুয়াল শ্রমের তুলনায় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে খরচ কম হয়।

৩. সময় সাশ্রয়:

  • যান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাজ দ্রুত শেষ করা যায়।

৪. কৃষকের আর্থিক উন্নতি:

  • উৎপাদন বাড়লে কৃষকরা অধিক লাভবান হন।

৫. প্রতিকূল আবহাওয়ার সাথে খাপ খাওয়ানো:

  • যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ে চাষাবাদ শেষ করা যায়, যা প্রতিকূল আবহাওয়ার প্রভাব কমাতে সাহায্য করে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের উদাহরণ

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: ট্রাক্টর
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: ট্রাক্টর

১. ট্রাক্টর:

  • জমি চাষের জন্য ট্রাক্টর অন্যতম জনপ্রিয় একটি যন্ত্র। এটি দ্রুত এবং কার্যকরভাবে বড় এলাকা চাষ করতে সাহায্য করে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: কম্বাইন হারভেস্টার
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: কম্বাইন হারভেস্টার

২. কম্বাইন হারভেস্টার:

  • ফসল কাটার জন্য কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করা হয়। এটি ফসল কাটা, মাড়াই এবং পরিষ্কার করার কাজ একত্রে করে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: রাইস ট্রান্সপ্লান্টার
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: রাইস ট্রান্সপ্লান্টার

৩. রাইস ট্রান্সপ্লান্টার:

  • ধান রোপণের জন্য রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার করা হয়, যা শ্রম এবং সময় দুটোই সাশ্রয় করে।

৪. ড্রিপ সেচ সিস্টেম:

  • ড্রিপ সেচ প্রযুক্তি পানি সাশ্রয়ী ও কার্যকর একটি পদ্ধতি, যা উদ্ভিদের শিকড়ে সরাসরি পানি সরবরাহ করে।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: ড্রোন প্রযুক্তি
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: ড্রোন প্রযুক্তি

৫. ড্রোন প্রযুক্তি:

  • ড্রোন ব্যবহার করে মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কীটনাশক স্প্রে করা যায়।

বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণের বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের নানান উদ্যোগ এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা কৃষিক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • সরকারি ভর্তুকি: কৃষকদের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।
  • বেসরকারি খাতের অবদান: বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
  • স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি: মোবাইল অ্যাপ এবং ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের চ্যালেঞ্জ

১. প্রাথমিক খরচ বেশি:

  • যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য বড় বিনিয়োগ প্রয়োজন।

২. প্রশিক্ষণের অভাব:

  • অনেক কৃষক আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে দক্ষ নন।

৩. যন্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ:

  • যন্ত্রপাতি মেরামত এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধার অভাব।

৪. বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা:

  • যন্ত্রপাতি চালানোর জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির প্রয়োজন, যা অনেক অঞ্চলে পর্যাপ্ত নয়।
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ:  কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
কৃষি যান্ত্রিকীকরণ: কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব। এর পাশাপাশি এটি কৃষকদের জীবনমান উন্নত করতে এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

  • রোবোটিক্স প্রযুক্তির ব্যবহার: ভবিষ্যতে আরও উন্নত রোবটিক প্রযুক্তি কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত হবে।
  • স্মার্ট ফার্মিং: ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং এআই প্রযুক্তি কৃষির প্রতিটি ধাপে কার্যকর হবে।
  • সবুজ প্রযুক্তি: পরিবেশবান্ধব এবং টেকসই প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে।

কৃষি যান্ত্রিকীকরণ একটি সময়োপযোগী প্রয়োজন, যা কৃষিক্ষেত্রকে আধুনিক ও লাভজনক করে তুলছে। সঠিক পরিকল্পনা এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব। কৃষি যান্ত্রিকীকরণে বিনিয়োগ করে দেশের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখা সম্ভব।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয় – দা এগ্রো নিউজ

সেই দিন কি তাহলে প্রায় এসে গেল, যখন এমন খাবার বিক্রি হবে দোকানে – যা তৈরি কৃত্রিম মাংস দিয়ে, কিন্তু তা থেকে আসল মাংসের মতোই ‘রক্ত’ বেরোয়?


কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয়
কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয়

সম্প্রতি কিছু কিছু দেশে ‘মিট-ফ্রি’ খাবার সহজলভ্য হয়ে ওঠায় বিশেষজ্ঞরা এমন কথাই বলছেন।

মানুষের খাদ্য কিভাবে পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে – তা নিয়ে একদিকে যেমন উদ্বেগ বাড়ছে, অন্যদিকে নিরামিষভোজী হবার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে।

এই ভেজিটেরিয়ানরা যে খাবার খান তাকে বলে ভেগান ফুড। বিভিন্ন মাংস-জাত খাবারের ভেগান সংস্করণ বের হতে যাচ্ছে এখন। যেমন: ভেগান সসেজ-রোল বা ভেগান বার্গার।

এতে যে মাংস ব্যবহৃত হবে – তা দেখতে চিরাচরিত মাংসের মতোই। এই ‘নিরামিষ মাংসের’ গন্ধ ও স্বাদও আসল মাংসের মতো। এ থেকে আসল মাংসের মতো ‘রক্ত’ও বেরোয়।

এগুলো তৈরি হচ্ছে উদ্ভিদজাত প্রোটিন থেকে। সাধারণত এ কাজে ব্যবহার হচ্ছে গম, মটরশুঁটি বা আলু থেকে। আর এই মাংসের ‘রক্ত’ তৈরি হচ্ছে বীটের রস দিয়ে।

গরুর মাংসের রঙ এবং স্বাদ তৈরি হয় যে প্রাণীজ উপাদানটি থেকে তার নাম হচ্ছে ‘হেম’। ইম্পসিবল ফুডস নামে একটি আমেরিকান ফার্ম সম্প্রতি উদ্ভিজ্জ ‘হেম’ তৈরি করেছে – যা কৃত্রিম মাংসকে আসলের চেহারা এনে দেবে বলেই তারা মনে করছেন।
বিজ্ঞানীরা এখন ল্যাবরেটরিতেও কৃত্রিম মাংস তৈরি করছেন। এটা তৈরি হচ্ছে প্রাণীর স্টেম সেল দিয়ে। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন স্তরের কৃত্রিম মাংস তৈরি করা যা রান্না করা বা খাওয়ার অভিজ্ঞতা হবে একেবারেই আসল মাংসের মতো – এর পার্থক্য ধরাই প্রায় অসম্ভব হবে।

এখন পাশ্চাত্যের কিছু সুপারস্টোরে একটা মাংস-মুক্ত শাখাও দেখা যাচ্ছে।

তবে কৃত্রিম মাংস দিয়ে তৈরি খাদ্য পণ্য এখনো বাজারে বা রেস্তোরাঁয় না এলেও কয়েক বছরের মধ্যেই তা পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

‘জাস্ট’ নামে একটি ফার্ম বলছে, ২০১৯ সাল শেষ হবার আগেই তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপার স্টোরগুলোতে ল্যাবরেটরিতে তৈরি করা চিকেন বা ‘মুরগির মাংস’ আনতে পারবে বলে তারা আশা করছে।

অবশ্য এ জন্য আমেরিকার ফুড এ্যান্ড ড্রাগ এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমতি লাগবে।

তা ছাড়া সে অনুমতি পাওয়া গেলেও ল্যাবরেটরিতে তৈরি মাংস সম্পর্কে মানুষের যে বিরূপ ধারণা বা ‘ছি ছি’ করে ওঠার প্রবণতা – তা একটি বড় বাধা হবে, এমনটাই অনেকের ধারণা।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের – দা এগ্রো নিউজ

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের

মনে পড়ছে সেই আশির দশকে যখন পুকুরে মাছ চাষের কথা গ্রামের কৃষককে বলতাম তখন কৃষক অবাক হতো। বলত, মাছের আবার চাষ কী? চাষ তো হয় ধান-পাটের। কৃষক ধান-পাট ছাড়া আর কোনো কিছু চাষের কথা চিন্তাও করত না। রংপুর ও পার্বত্য এলাকায় তামাক চাষ হতো। কোথাও কোথাও চাষ হতো পানের। খালে-বিলে হতো মাছের প্রাকৃতিক বংশবিস্তার। কৃষক পুকুর ব্যবহার করত কাপড় ধোয়া আর গোসলে। অথচ এই পুকুরে মাছ চাষ মেটাতে পারে তার পারিবারিক আমিষের চাহিদা, পাশাপাশি জোগান দিতে পারে বাড়তি অর্থ। কৃষককে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারণার জন্য নির্মাণ করেছিলাম ‘হাকিম আলীর মাছ চাষ’ নিয়ে ফিলার। খুব জনপ্রিয় হয়েছিল সেটি। এরপর বলা চলে সারা দেশে মাছ চাষের বিপ্লব শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দেশ এখন মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়। অন্যদিকে আমাদের বিজ্ঞানীদের গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন মাছের জাত আবিষ্কৃত হয়েছে। সরকারের মাছ চাষের সম্প্রসারণ নীতি ও উদ্বুদ্ধকরণমূলক প্রচারণার ফলে মাছ চাষ এগিয়েছে অনেকটা। মৎস্য অধিদফতরের তথ্যমতে, বাংলাদেশ মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ২০১৭ সালে দেশে ৪১ দশমিক ৩৪ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে।

১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৭.৫৪ লাখ মেট্রিক টন। ৩৩ বছরের ব্যবধানে ২০১৬-১৭ সালে এ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪১.৩৪ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ, এই সময়ের ব্যবধানে মোট মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ গুণ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশের মানুষের মাছ খাওয়ার পরিমাণ বেড়েছে। আগে জনপ্রতি প্রতিদিন গড়ে ৬০ গ্রাম মাছ খেত, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম। মাছে এতসব সাফল্যের পরও মাছের খামারিদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কিছু সমস্যার কথা শুনেছি বিগত বছরগুলোয়। এ বছরও কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেটে মাচের খামারিরা বেশ কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে কৃষিশ্রমিকের অপর্যাপ্ততা, পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, অক্সিজেন কমে যাওয়া, মাছের খাদ্যের উচ্চমূল্য, খাদ্যে পুষ্টি উপাদান যা থাকার কথা তা অনেক ক্ষেত্রেই না পাওয়া। এ অভিযোগগুলো শতকরা ৯০ ভাগ মাছ চাষির।
সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়ে এসেছেন এক কৃষকের সন্তান। নাম শফিউল আলম। পেশায় সফটওয়্যার প্রকৌশলী। তার কথাই আজ বলব, পাঠক।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাই এশিয়ার বৃহত্তম বার্ষিক উদ্ভাবনী মেলা দেখার জন্য। কোরিয়ার তাপমাত্রা তখন মাইনাসের নিচে। প্রচ- শীত। ঝকঝকে রোদের দিন। অথচ শীত গিয়ে যেন হাড়ে বিঁধছে। ব্যক্তিজীবনে আমি প্রচ- শীতকাতুরে মানুষ। শীতের পোশাক-আশাক যা ছিল সব নিয়েই হাজির হই সিউলে। এয়ারপোর্টে নেমেই দেখলাম সেখানকার তাপমাত্রা মাইনাস ৮। শীতের ভয়ের চেয়ে মনের ভয়েই কাবু হয়ে গেলাম অনেকখানি। ধরে নিলাম এভাবেই চলতে হবে একটি সপ্তাহ। যাই হোক, বার্ষিক উদ্ভাবনী মেলাটি বসেছে গ্যাঙনাম শহরে। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ইউটিউবের ইতিহাসে সাড়া ফেলানো গ্যাঙনাম স্টাইল গানটির কথা। গ্যাঙনাম স্টাইলের সেই গ্যাঙনাম শহরে কোয়েক্স হলে আয়োজন করা হয় উদ্ভাবনী মেলার। তারুণ্য, উদ্ভাবন, প্রযুক্তির অগ্রগতি আর বিশ্ববাণিজ্য সবকিছুর এক অন্যরকম মিশেল এ প্রদর্শনী ক্ষেত্র। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসারের কারণেই এ প্রদর্শনী বিশ্বব্যাপী জাগিয়েছে ব্যাপক সাড়া। পৃথিবীর ৩৩টি দেশের ৬০৬টি উদ্ভাবনের ভিতর থেকে বহুভাবে বাছাইয়ের পর মাত্র ৪০টি উদ্ভাবনী প্রকল্প প্রদর্শনের জন্য স্থান পেয়েছে। আয়োজনটি প্রধানত তত্ত্বাবধান করেছে কোরিয়ার আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়। আর এতে সহায়তা করেছে কোরিয়ার ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি অর্গানাইজেশন ও ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ইনভেনটরস অ্যাসোসিয়েশন। জীবনকে সুন্দর ও সহজ করার এই উদ্ভাবনী মেলায় আমাদের জন্য গর্বের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শফিউল আলম। অন্যদিকে বিশাল আয়োজনে এটিই একমাত্র কৃষিভিত্তিক উদ্ভাবন। আর সেটি আমাদের শফিউল আলমের। পৃথিবীতে মাছ উৎপাদনে বিশাল সাফল্যের বিবেচনায় আমাদের বাংলাদেশের জন্য এটি বড় রকমের সুখবর। উদ্ভাবক শফিউল এ মেলায় প্রতিনিধিত্ব করছেন বাংলাদেশের এ প্রজন্মের উদ্ভাবনী চিন্তা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অগণিত তরুণের।

মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে শফিউলের উদ্ভাবনের প্রটোটাইপটি। প্রকল্পটির প্রটোটাইপ দেখে বুঝে ওঠার উপায় নেই, এর উপযোগিতা বা বিশেষত্ব কত বড়। মেলায় শফিউলের সঙ্গে তার উদ্ভাবন নিয়ে কথা হয় বিস্তারিত। শফিউল বলেন, তার বাবা কৃষক, দাদাও কৃষক ছিলেন। উঠে এসেছেন এক কৃষকের পরিবার থেকেই। পাশাপাশি শৈশব-কৈশোরে বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচারিত ‘মাটি ও মানুষ’ তাকে জুগিয়েছে কৃষি নিয়ে স্বপ্ন দেখার অনুপ্রেরণা। তিনি ও তার স্ত্রী তানিয়া চৌধুরী দুজনই সফটওয়্যার প্রকৌশলী। দুজনের গবেষণার ফল একটি স্মার্ট ডিভাইস। যেটি অ্যারেটর (মাছের পুকুরে পানি কাটার দুটি প্রপেলার সমন্বয়ে একটি যন্ত্র যা অক্সিজেন তৈরিতে সাহায্য করে) হিসেবে কাজ করবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহ, অক্সিজেন সরবরাহ ও পানিতে অ্যামোনিয়ার পরিমাণ, মাছের গতিবিধি সম্পর্কেও ধারণা দেবে। অটো চার্জিং ব্যবস্থা থাকায় যন্ত্রটি ব্যবহারেও সুবিধাজনক। অগণিত তরুণ উদ্যোক্তা চাষির হাত ধরে বিশাল সাফল্যে পৌঁছেছে আমাদের মৎস্য চাষ খাত। অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনে পৃথিবীতে তৃতীয় স্থানে পৌঁছে যাওয়ার এ কৃতিত্ব আমাদের উদ্যোগী চাষিদের। যারা একের পর এক বহু সংকট মোকাবিলা করে এ খাত এগিয়ে নিচ্ছেন। রীতিমতো একটি শিল্পে রূপ নেওয়া এ খাতের সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তিকে বরাবরই স্বাগত জানিয়ে আসতৃণ। মাছের খামারের পুকুর সংস্কার, পানি পরিবর্তন থেকে শুরু করে একসময় উন্নত বিশ্বের ধারাবাহিকতায় অ্যারেটর যন্ত্রের সঙ্গেও পরিচয় ঘটে তাদের। মাছ চাষের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা কারিগরি সংযোজনের সঙ্গে সঙ্গেই স্বয়ংক্রিয় উপায়ে মাছের পুুকুরে খাদ্য দেওয়ার ব্যবস্থাও আসে একসময়। প্রযুক্তির এ ধারাবাহিক বিবর্তনের হাত ধরেই এসেছে সফটওয়্যার প্রকৌশলী শফিউল আলমের এ প্রকল্পটি। প্রকল্পটি নিয়ে বিশাল প্রদর্শনীর পর্যায়ে আসার পেছনে রয়েছে অনেক বড় গল্প। এটি কোরিয়া ইনভেনশন প্রমোশন অ্যাসোসিয়েশন কাইপা ও কোরিয়া প্রডাকটিভিটি সেন্টার কেপিসির আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারী হিসেবে বৃত্তি লাভ করেছে এবং অ্যা বিগ থিঙ্ক প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পুরস্কার লাভ করেই এখানে আসতে পেরেছে। কারিগরি প্রযুক্তি ও তথ্য যোগাযোগে বহুদূর অগ্রসর কোরিয়া পৃথিবীব্যাপী উন্নত গবেষণা আর কারিগরি সাফল্য খুঁজে ফিরছে। তারা বহুভাবে মূল্যায়ন করছে প্রকৃত সৃজনশীল উদ্ভাবককে। সে হিসেবে বাণিজ্যিক বিবেচনায় শফিউলের উদ্ভাবিত প্রকল্পটির স্বত্ব থাকবে কোরিয়ার কাছে।

কোয়েক্সে প্রশস্ত আর রঙিন প্রদর্শনী ক্ষেত্রের আবিষ্কার আর উদ্ভাবনের এ মেলায় অনেকেরই দৃষ্টি এ প্রকল্পের দিকে। দেখা হলো বাংলাদেশের কয়েকজনের সঙ্গেও; যার মধ্যে রয়েছেন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানানো প্রগতিশীল মাছ চাষি থেকে শুরু করে তরুণ গবেষক পর্যন্ত। সেখানেই কথা হয় জয়পুরহাটের কৃষক রফিকুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি বলছেন, শফিউলের এ আবিষ্কার সময়োপযোগী। এর উদ্ভাবনী উৎকর্ষ নিয়ে ভাবছেন তরুণ গবেষকরাও। কথা হলো কোরিয়ার চুংবক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে গবেষণারত ওবায়দুল্লাহ অভি ও স্বপন কুমার রায়ের সঙ্গে। তারাও গর্বিত শফিউলের এ সাফল্যে।

কোরিয়ার গবেষণা, উন্নয়ন এমনকি বাণিজ্যিক খাতের বড় বড় ব্যক্তির কাছেও এ উদ্ভাবনটি পেয়েছে বিশেষ গুরুত্ব। বিশেষ করে কোরিয়ার ফিশারিজ ইনফরমেশন অ্যান্ড কন্ট্যান্ট টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক পার্ক ইয়ং জন এ কাজটিকে দেখছেন বিশাল এক বৈজ্ঞানিক সাফল্য হিসেবে। তিনি জানান, শফিউলের এ আবিষ্কার দক্ষিণ কোরিয়া, বাংলাদেশসহ বিশ্বের মাছ চাষিদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বছরের মাঝামাঝি যন্ত্রটি পেটেন্ট পেয়ে যাবে। তারপর শুরু হবে বাণিজ্যিক উৎপাদন। পার্ক জানালেন, কোরিয়ায় শুধু মাছ নয়, সামগ্রিক কৃষি খাতেই স্মার্ট প্রযুক্তি সম্প্রসারণ হচ্ছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের মধ্যে কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে স্মার্ট প্রযুক্তি সংযোজনের বিশাল এক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তারা। আর এ ক্ষেত্রে তাদের দৃষ্টি বিশ্বের তরুণ বিজ্ঞানী, গবেষক এবং তাদের স্টার্টাপ উদ্যোগগুলোর দিকে। আমরাও কাজ করতে গিয়ে এর বাস্তবতা দেখেছি। বিশেষ করে একেকটি পুরস্কারপাপ্ত উদ্ভাবন ও উদ্ভাবকের জন্য পৃষ্ঠপোষকতার অনন্য নজির গড়ে তুলেছে হুন্দাই কার্ড ব্ল্যাক স্টুডিও নামের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। ঠিক এ যুগের তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উদ্ভাবকদের জন্য মনোলোভা পরিবেশ। দিনরাত কাজে মগ্ন থাকার সব ব্যবস্থাই রয়েছে সেখানে। যেখানে কাজ করছেন বাংলাদেশের তরুণ আইসিটি বিশেষজ্ঞ শফিউল। পাঠক! আপনাদের আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই, এ মেলাতেই শফিউলের উদ্ভাবনটি সিলভার মেডেল পেয়েছে।

উন্নত দেশগুলো এখন অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বিশ্বব্যাপী মেধা, বৈজ্ঞানিক উৎকর্ষ, উদ্ভাবন কিংবা ধারণা সংগ্রহে নিয়োজিত। আর এ বিবেচনায় বহুদূর এগিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া। প্রযুক্তির বিভিন্ন শাখায় তারা বিনিয়োগ করছে সর্বোচ্চ অর্থ ও মনোযোগ। তাই পেয়েও যাচ্ছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ পথের নতুন নতুন দিকনির্দেশনামূলক উদ্ভাবন আর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। এখানে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনেক অনুসরণীয় নজির রয়েছে। আমাদের সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উচিত হবে শফিউলদের মতো উদ্ভাবক এবং তাদের উদ্ভাবনগুলোর যথাযথ মূল্যায়ন করা। আজ মৎস্য খাতের জন্য অত্যন্ত জরুরি এ প্রযুক্তিটির গর্বিত দাবিদার আমরা হলেও এর বাণিজ্যিক স্বত্ব কোরিয়া লাভ করতে সমর্থ হয়েছে। এখানে আমাদের সম্ভাবনাময় তরুণদের কাজ ও চিন্তা বিশ্বায়নের দিকে যতটা সাফল্যের সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে, দেশের অর্জন দেশে রাখার জন্য ততটা নীতিগত প্রস্তুতিও দরকার।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন
??বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি ???

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের

মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের – দা এগ্রো নিউজ

ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন

ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ

কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয়

কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয় – দা এগ্রো নিউজ

জমি এবং কৃষক ছাড়াই যেভাবে কৃষিকাজে বিপ্লব আনছে জাপান

জমি এবং কৃষক ছাড়াই যেভাবে কৃষিকাজে বিপ্লব আনছে জাপান – দা এগ্রো নিউজ

ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ

ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ

দেশি সুস্বাদু ও লাভজনক শিং মাছের চাষ পদ্ধতি: সঠিক পদ্ধতিতে অধিক লাভ করুন

দেশি সুস্বাদু ও লাভজনক শিং মাছের চাষ পদ্ধতি: সঠিক পদ্ধতিতে অধিক লাভ করুন – দা এগ্রো নিউজ

খামার বর্জ্য থেকে মিশ্রসার তৈরি করব কীভাবে?

খামার বর্জ্য থেকে মিশ্রসার তৈরি করব কীভাবে? – দা এগ্রো নিউজ

শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া

শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া – দা এগ্রো নিউজ

কমলা চাষের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ: স্বাস্থ্যসম্মত এবং লাভজনক ফল উৎপাদনের সহজ উপায়

কমলা চাষের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ: স্বাস্থ্যসম্মত এবং লাভজনক ফল উৎপাদনের সহজ উপায় – দা এগ্রো নিউজ

শীর্ষ সংবাদ