বাংলাদেশ
‘খাদ্যের লড়াইয়ে অংশ নিয়েও কৃষক হতে পারেননি নারীরা ’
দেশে কৃষিকাজে নিয়োজিত শ্রমশক্তির সংখ্যা ২ কোটি ৫৬ লাখ। এর মধ্যে নারী ১ কোটি ৫ লাখেরও বেশি। তারপরও রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীদের “কৃষক” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্কের (খানি) আয়োজনে ও আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ব্রেড ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের সহযোগিতায় দেশব্যাপী নানা কর্মসূচিতে খাদ্য নিরাপত্তায় নারীদের অবদানের কথা উঠে আসে।
“খাদ্যের লড়াইয়ে নারী”- শ্লোগানকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে সংশপ্তক, কিশোরগঞ্জে ফ্যামিলি টাইস অফ উইমেন ডেভেলপমেন্ট, সাতক্ষীরার কালীগঞ্জে বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠন, রাজশাহীতে প্রান্তজন, নোয়াখালীতে পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশান নেটওয়ার্ক-প্রাণ এবং বরিশালে প্রান্তজন পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে।
কর্মসূচির মধ্যে খাদ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে নারীদের বৈষম্য অনুধাবন ও খাদ্যের লড়াইয়ে নারীদের অবদান তুলে ধরে মাইম শো’র উপস্থাপনা, “সুষম খাদ্য, নারীর অধিকার” শীর্ষক আলোচনা সভা, সকল পর্যায়ের বাজারে নারী কৃষকদের পণ্য বিক্রয়ের সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং নারীবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে নারীর উৎপাদিত খাদ্যের স্বাধীন প্রতীকী বাজার স্থাপন, খাদ্য লড়াইয়ে নারীযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান ও নারী অংশগ্রহণে সংস্কৃতি অনুষ্ঠান, এবং মূল স্লোগান নিয়ে শুনানি কার্যক্রম।
প্রতিটি কর্মসূচিতেই কোনো না কোনোভাবে নারী কৃষককে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান, নারীদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারজাত করণের জন্য নারীবান্ধব বাজার সৃষ্টি, কৃষিজমি সুরক্ষা আইনে নারীর মালিকানা ও ভোগদখলের বিষয়ক ধারা সংযুক্তিকরণ এবং নারী কৃষকদের মজুরী বৈষম্য প্রতিরোধ করার দাবি উঠে আসে।
কর্মসূচিগুলোতে বক্তারা জানান, যদিও জাতীয়ভাবে নারী কৃষকদের “কৃষক” হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, তারপরও এই সংখ্যাটা অনেক। কৃষিকাজের ২১টি ধাপের মধ্যে নারীরা ১৭টি ধাপের কাজ করে। তবুও নারীরা কৃষক হতে পারেননি। বাড়ির আঙ্গিনায় শাকসবজির চাষ কিংবা গবাদিপশুর যত্ন থেকে শুরু করে, ক্ষেতের ফসল বোনা, কাটা এবং পরিবহন; সবকিছুতেই নারীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ রয়েছে। এসব নারী কৃষকরা খাদ্য উৎপাদন নিয়ে লড়ছে, দেশের কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে।
এ সময় বক্তারা নারী কৃষককে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদানসহ পুরুষ কৃষকদের মতো সব ধরনের সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দাবি জানান।
অন্যান্য
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদান
বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। এ দেশের অধিকাংশ জনগণের জীবিকা কৃষির সঙ্গে সম্পৃক্ত। কৃষি খাত দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, এবং রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদনে কৃষির অবদান অত্যন্ত বিশাল।
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির অবদান
মোট দেশজ উৎপাদনে (GDP) অবদান
- কৃষি খাত বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (GDP) প্রায় ১৩-১৫% (২০২৩-এর আনুমানিক তথ্য অনুযায়ী) যোগান দেয়।
- ধান, গম, ভুট্টা, এবং অন্যান্য শস্য এ খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কর্মসংস্থান
- দেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৪০-৪৫% কৃষি খাতে।
- গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস।
খাদ্য নিরাপত্তা
- ধান, গম, আলু, এবং শাকসবজি উৎপাদন দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
- নিজস্ব খাদ্য উৎপাদনের ফলে আমদানি নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে।
রপ্তানি আয়ে অবদান
- কৃষিভিত্তিক পণ্য যেমন চা, পাট, চামড়া এবং ফলমূল দেশের রপ্তানি আয়ের একটি বড় অংশ যোগান দেয়।
- পাট বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রপ্তানি পণ্য এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ।
শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহ
- পাট, তুলা, আখ, এবং অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য বিভিন্ন শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- পাটশিল্প, চিনি শিল্প, এবং টেক্সটাইল শিল্পের জন্য কাঁচামাল সরবরাহ করে।
দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা
- কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাস করা সম্ভব হয়েছে।
- ক্ষুদ্র কৃষি উদ্যোগ এবং পশুপালন অনেক পরিবারকে স্বনির্ভর করেছে।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে অবদান
- কৃষিজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের বিকাশ ঘটিয়েছে।
- দেশীয় বাজারের পাশাপাশি রপ্তানি বাজারেও চাহিদা পূরণ করে।
স্থানীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখা
- কৃষি উৎপাদন স্থানীয় বাজারে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করে।
- স্থানীয় পর্যায়ে পরিবহন, বিতরণ, এবং খুচরা বিক্রয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক গতি বৃদ্ধি করে।
বাংলাদেশের কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ
- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ফসল উৎপাদনে ক্ষতি।
- কৃষি জমি কমে যাওয়া।
- আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতির অভাব।
- কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন বন্যা ও খরার প্রভাব।
উন্নয়ন ও টেকসই কৃষি ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা
- উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার এবং গবেষণা বৃদ্ধি।
- সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মাটির উর্বরতা সংরক্ষণ।
- জৈব কৃষি এবং পরিবেশবান্ধব উৎপাদন পদ্ধতি নিশ্চিত করা।
- ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য সহজ ঋণ এবং ভর্তুকি।
- রপ্তানি বাজারে কৃষি পণ্যের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
বাংলাদেশের কৃষি খাত দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে কাজ করে। খাদ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান, এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে এটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসাধারণ অবদান রাখছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আধুনিক কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির ভূমিকা আরও সুসংহত করা সম্ভব।
অন্যান্য
খাদ্য নিরাপত্তা ও বাংলাদেশের কৃষি
খাদ্য নিরাপত্তা হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে একটি দেশের সকল মানুষ, সকল সময়ে, পর্যাপ্ত, পুষ্টিকর এবং নিরাপদ খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করতে সক্ষম। এটি মানুষের সুস্থ জীবনযাপন এবং দেশের টেকসই উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
খাদ্য নিরাপত্তার উপাদানসমূহ
খাদ্যের সহজলভ্যতা (Availability)
- পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য উৎপাদন বা আমদানি নিশ্চিত করা।
- ধান, গম, শাকসবজি, মাছ, এবং মাংসের মতো প্রধান খাদ্য উপাদানের উৎপাদন বৃদ্ধি।
খাদ্যে প্রবেশাধিকার (Accessibility)
- সকল শ্রেণির মানুষের জন্য খাদ্যের অর্থনৈতিক ও ভৌতপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা।
- দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্য সহজলভ্য করা।
খাদ্যের মান (Utilization)
- খাদ্যের পুষ্টিমান বজায় রাখা এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ নিশ্চিত করা।
- জৈব এবং নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন।
স্থিতিশীলতা (Stability)
- খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
- প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অর্থনৈতিক সংকট বা অন্যান্য সমস্যার সময়ও খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা।
বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থা
বাংলাদেশ একটি কৃষিভিত্তিক দেশ হলেও, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের কারণে খাদ্য নিরাপত্তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে দেশটি উল্লেখযোগ্য উন্নতি করলেও কিছু নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এই নিবন্ধে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ এবং সমাধানের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তার বর্তমান চিত্র
খাদ্য উৎপাদনের উন্নতি
- বাংলাদেশ ধান, গম এবং শাকসবজির মতো প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে।
- ২০২২-২৩ অর্থবছরে ধানের উৎপাদন ৩.৮৬ কোটি মেট্রিক টনে পৌঁছেছে, যা দেশের খাদ্য চাহিদা মেটাতে সহায়ক।
পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব
- যদিও চাল উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ, তবে পুষ্টিকর খাদ্য যেমন ফল, দুধ, ডিম এবং প্রোটিনের প্রাপ্যতায় এখনও ঘাটতি রয়েছে।
- FAO এর তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৩০% শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে।
খাদ্য প্রাপ্যতা ও বিতরণ
- খাদ্য প্রাপ্যতা শহরাঞ্চলে তুলনামূলকভাবে সহজ হলেও, প্রত্যন্ত অঞ্চলে খাদ্যের অভাব একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
- পরিবহন ব্যবস্থা এবং সরবরাহ চেইনের উন্নয়ন প্রয়োজন।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রায়ই বন্যা, খরা এবং ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে, যা খাদ্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততার কারণে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে।
খাদ্য নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ
জনসংখ্যা বৃদ্ধি
- ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার কারণে খাদ্যের চাহিদা বাড়ছে।
- সীমিত কৃষি জমি ও প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ।
জলবায়ু পরিবর্তন
- বন্যা, খরা, এবং ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফসলের ক্ষতি।
- শস্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব।
জমির সংকট
- কৃষি জমি কমে যাওয়া এবং নগরায়ণের ফলে খাদ্য উৎপাদনে বাধা।
অপুষ্টি এবং খাদ্যের বৈষম্য
- দরিদ্র জনগোষ্ঠী পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য পায় না।
- পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে শিশুদের বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ব্যাহত হয়।
খাদ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ সমস্যা
- উৎপাদিত খাদ্যের সঠিক সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় অনেক খাদ্য নষ্ট হয়ে যায়।
- সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থার অভাব।
খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায়
কৃষি উন্নয়ন
- উন্নত প্রযুক্তি এবং উচ্চফলনশীল বীজ ব্যবহার।
- কৃষি যান্ত্রিকীকরণ এবং সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন।
খাদ্য সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা
- আধুনিক গুদাম এবং হিমাগার স্থাপন।
- খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থার উন্নতি।
পুষ্টি শিক্ষার প্রসার
- পুষ্টিকর খাদ্যের গুরুত্ব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা।
- অপুষ্টি দূরীকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ।
সরকারি সহায়তা
- দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ভর্তুকি এবং খাদ্য সহায়তা।
- খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা স্থিতিশীল রাখা।
খাদ্য নিরাপত্তা একটি দেশের উন্নয়নের মৌলিক চাহিদা। বাংলাদেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, সুষ্ঠু বিতরণ ব্যবস্থা, এবং জনগণের জন্য পুষ্টিকর খাদ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী জাতি গড়ে তোলা সম্ভব।
ইথিওপিয়া
কফি চাষের প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা
কফি চাষ একটি সময়সাপেক্ষ এবং যত্নশীল প্রক্রিয়া যা নির্দিষ্ট আবহাওয়া ও মাটির গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে। বাংলাদেশে কফি চাষ সম্প্রতি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নিচে কফি চাষের ধাপসমূহ বিশদভাবে আলোচনা করা হলো।
কফি চাষের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ
আবহাওয়া: ১৮-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কফি চাষের জন্য আদর্শ। ঠাণ্ডা ও ছায়াযুক্ত স্থান উপযুক্ত।
মাটি: উর্বর, দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি যেখানে পানি জমে না। মাটির পিএইচ মান ৫.৫-৬.৫ হওয়া উচিত।
উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬০০-১২০০ মিটার উচ্চতা।
কফি চাষের ধাপসমূহ
বীজ সংগ্রহ ও প্রস্তুতি
- উন্নত মানের কফি বীজ নির্বাচন করুন। সাধারণত অ্যারাবিকা (Arabica) এবং রোবাস্টা (Robusta) জাতের কফি বীজ চাষ করা হয়।
- বীজ বপনের আগে ২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
চারা তৈরির পদ্ধতি
- নার্সারি প্রস্তুতি: দোআঁশ মাটি, জৈব সার, এবং বালি মিশিয়ে নার্সারিতে চারা তৈরি করুন।
- বপন: বীজগুলো ২ সেন্টিমিটার গভীরে বপন করুন।
- পরিচর্যা: পর্যাপ্ত পানি এবং ছায়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন।
জমি প্রস্তুতি
- আগাছা পরিষ্কার করে মাটি চাষ করুন।
- জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন।
- গাছ লাগানোর জন্য ২ মিটার দূরত্বে গর্ত তৈরি করুন।
গাছ রোপণ
- চারাগুলো ৮-১২ মাসের পর জমিতে রোপণ করুন।
- প্রতি গর্তে একটি চারা রোপণ করুন এবং মাটির সঙ্গে ভালোভাবে চেপে দিন।
পরিচর্যা
- সেচ: নিয়মিত পানি দিন, বিশেষত শুকনো মৌসুমে।
- ছাঁটাই: বেশি ডালপালা ছেঁটে গাছের বৃদ্ধি ও ফলন নিশ্চিত করুন।
- ছায়ার ব্যবস্থা: কফি গাছের জন্য কিছুটা ছায়া প্রয়োজন, তাই অন্যান্য গাছের ছায়া নিশ্চিত করুন।
- সার প্রয়োগ: বছরে দুইবার জৈব সার ও প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করুন।
পোকামাকড় ও রোগ দমন
- রোগ: কফি রস্ট (Coffee Rust) এবং ব্লাইট (Blight) রোগ দমনে ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন।
- পোকা: পাতার পোকা এবং ফলের পোকা দমনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করুন।
ফসল সংগ্রহ
- কফি গাছ সাধারণত রোপণের ৩-৪ বছর পর ফল দেওয়া শুরু করে।
- লাল রঙের পাকা কফি ফল হাতে তুলে বা মেশিনের সাহায্যে সংগ্রহ করুন।
- সংগ্রহের পর কফি ফল থেকে বীজ পৃথক করুন এবং শুকানোর জন্য রোদে দিন।
বিশ্বের কফি চাষের দেশসমূহ: বিস্তারিত আলোচনা
কফি, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয়, যা প্রতিদিন কোটি কোটি মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের অংশ। কফি চাষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। এই নিবন্ধে আমরা কফি চাষের শীর্ষ দেশসমূহ, তাদের বৈশিষ্ট্য, এবং বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বিশ্বের শীর্ষ কফি উৎপাদক দেশসমূহ
ব্রাজিল
বিশ্বে অবস্থান: শীর্ষ কফি উৎপাদনকারী দেশ।
বৈশিষ্ট্য:
- বিশ্বব্যাপী মোট কফি উৎপাদনের প্রায় ৩০-৪০% ব্রাজিলে চাষ হয়।
- অ্যারাবিকা এবং রোবাস্টা জাতের কফি চাষে তারা দক্ষ।
- বিখ্যাত উৎপাদন অঞ্চল: মিনা জেরাইস, সাও পাওলো, এবং পারানা।
বিশেষত্ব: ব্রাজিলিয়ান কফি তাদের মৃদু স্বাদ এবং ভারসাম্যপূর্ণ সুগন্ধির জন্য বিশ্বখ্যাত।
ভিয়েতনাম
বিশ্বে অবস্থান: দ্বিতীয় বৃহত্তম কফি উৎপাদক।
বৈশিষ্ট্য:
- ভিয়েতনাম রোবাস্টা কফি উৎপাদনে শীর্ষে।
- দক্ষিণ মধ্যভাগ অঞ্চলে প্রচুর কফি চাষ হয়।
বিশেষত্ব: সাশ্রয়ী মূল্যের এবং উচ্চ উৎপাদনশীলতার কারণে রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কলম্বিয়া
বিশ্বে অবস্থান: তৃতীয় বৃহত্তম উৎপাদক।
বৈশিষ্ট্য:
- অ্যারাবিকা কফির জন্য বিখ্যাত।
- আন্দিজ পর্বতের ঢালে চাষ হওয়া কফি স্বাদের জন্য বিশ্বব্যাপী সমাদৃত।
বিশেষত্ব: সুগন্ধি ও মসৃণ স্বাদের জন্য জনপ্রিয়।
ইন্দোনেশিয়া
বিশ্বে অবস্থান: চতুর্থ বৃহত্তম।
বৈশিষ্ট্য:
- সুমাত্রা, জাভা, এবং বালির কফি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত।
- বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি “কোপি লুয়াক” কফি তাদের পরিচিতি বাড়িয়েছে।
বিশেষত্ব: রোবাস্টা জাতের কফি উৎপাদনে দক্ষ।
ইথিওপিয়া
বিশেষত্ব: কফির জন্মভূমি।
বৈশিষ্ট্য:
- অ্যারাবিকা কফির জন্য বিশ্বখ্যাত।
- হারার, সিদামো, এবং ইয়ারগেচেফ অঞ্চলের কফি সুগন্ধি এবং প্রাকৃতিক স্বাদের জন্য বিশেষভাবে সমাদৃত।
গুয়াতেমালা
বৈশিষ্ট্য:
- উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে অ্যারাবিকা কফি চাষ হয়।
- আগ্নেয়গিরির মাটি কফির মান উন্নত করে।
বিশেষত্ব: অনন্য স্বাদ এবং গভীর সুগন্ধির জন্য বিখ্যাত।
ভারত
বৈশিষ্ট্য:
- দক্ষিণ ভারতের কর্ণাটক, কেরালা এবং তামিলনাড়ু রাজ্যে কফি চাষ হয়।
- “মনসুনড মালাবার” নামে পরিচিত বিশেষ প্রক্রিয়াজাত কফি।
বিশেষত্ব: রোবাস্টা এবং অ্যারাবিকা উভয় কফি উৎপাদনে পারদর্শী।
কেনিয়া
বৈশিষ্ট্য:
- উজ্জ্বল অম্লীয়তা এবং ফলমূলের স্বাদযুক্ত কফি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।
বিশেষত্ব: আফ্রিকার অন্যতম স্বাদযুক্ত কফি।
কোস্টা রিকা
বৈশিষ্ট্য:
- পরিবেশবান্ধব উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত।
বিশেষত্ব: উচ্চমানের অ্যারাবিকা কফি।
মেক্সিকো
বৈশিষ্ট্য:
- অ্যারাবিকা কফি উৎপাদনে বিশেষজ্ঞ।
- যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা
বাংলাদেশে কফি চাষ এখনও নবযাত্রায় থাকলেও এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত। পাহাড়ি অঞ্চল যেমন বান্দরবান, রাঙামাটি, এবং খাগড়াছড়িতে কফি চাষ শুরু হয়েছে। দেশের উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ু এবং পাহাড়ি মাটির গুণগত মান কফি চাষের জন্য আদর্শ।
উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপায়:
- উন্নত জাতের বীজ ব্যবহার।
- আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ।
- স্থানীয় কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা:
- স্থানীয় চাহিদা পূরণ।
- আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির সুযোগ।
বিশ্বজুড়ে কফি চাষের বৈচিত্র্য এবং এর গুণগত মান নির্ভর করে স্থানীয় আবহাওয়া, মাটি এবং চাষ পদ্ধতির ওপর। বাংলাদেশে কফি চাষ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হতে পারে।
কফি চাষের উপকারিতা
- কফি একটি উচ্চমূল্যের অর্থকরী ফসল।
- দেশে-বিদেশে এর চাহিদা অনেক বেশি।
- পাহাড়ি এলাকায় কফি চাষ মাটির ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।
- অন্যান্য ফসলের তুলনায় কফি চাষে দীর্ঘমেয়াদি আয় হয়।
কফি চাষ একটি লাভজনক কৃষি উদ্যোগ, বিশেষত পাহাড়ি অঞ্চলে। সঠিক পরিকল্পনা, যত্ন, এবং আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করলে কৃষকরা সহজেই ভালো ফলন ও আয় নিশ্চিত করতে পারেন।
কফি চাষে আগ্রহী? এখনই উদ্যোগ নিন এবং এই লাভজনক খাতের অংশ হয়ে যান!
বাংলাদেশ
ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
আমাদের দেশের অধিকাংশ ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। কিছু টিকে আছে আমাদের মাছ চাষিদের কল্যাণে। আসুন ছবির মাধ্যমে আজ আমরা কিছু ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ দেখে নেই।
ফসল
ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ
বাগেরহাটের প্রত্যন্ত অঞ্চলের এক নারীর চাষ করা ধান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। একটি শীষে ধান পাওয়া গেছে এক হাজার এক শর বেশি। দেশে বর্তমান যেসব জাতের ধান চাষ হয় সেসবের চেয়ে এই ধানের ফলন দ্বিগুণ। ফাতেমা বেগমের জমিতে এই ধানের চাষ হওয়ায় এরই মধ্যে তা ‘ফাতেমা ধান’ নামে পরিচিতি পেয়েছে এলাকায়।
ফাতেমা ধানের গাছ, ফলন, পাতা, শীষ সবকিছু অন্য যে কোনো জাতের ধানের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতি গোছে একটি চারা রোপণ করা হয়, যা বেড়ে ৮-১২টি হয়। প্রতিটি ধান গাছ ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার লম্বা। একেকটি ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬-৪০ সেন্টিমিটার। প্রতি ছড়ায় দানার সংখ্যা এক হাজার থেকে ১২০০টি। যার ওজন ৩০-৩৫ গ্রাম। ধানগাছের পাতা লম্বা ৮৮ সেন্টিমিটার, ফ্লাগলিপ (ছড়ার সঙ্গের পাতা) ৪৪ সেন্টিমিটার। ধানগাছের পাতা চওড়ায় দেড় ইঞ্চি। এই জাতের গাছের কাণ্ড ও পাতা দেখতে অনেকটা আখ গাছের মতো এবং অনেক বেশি শক্ত। তাই এই ধান ঝড়-বৃষ্টিতে হেলে পড়ার কোন আশঙ্কা নেই। ফাতেমা ধান একরপ্রতি ফলন হয় প্রায় ১৩০ মণ। তাই অন্য যে কোনো জাতের তুলনায় এই জাতের ধান অনেক ব্যতিক্রম।
গতকাল শুক্রবার চাকুলিয়া গ্রামে ফাতেমা বেগমের বাড়িতে গিয়ে বেশ কিছু মানুষের ভিড় দেখা যায়। দূর-দূরান্ত থেকে তারা ফাতেমার ধানের বীজ কিনতে এসেছে। কেউ কেউ যে জমিতে ওই ধান ফলেছে, তা ঘুরে দেখে। তবে কয়েক দিন আগেই ওই ধানের বীজ শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্রেতাদের খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।
ফাতেমা বেগম জানান, ২০১৬ সালে বোরো মৌসুমে তাঁর বাড়ির পাশে জমিতে হাইব্রিড আফতাব-৫ জাতের ধান কাটার সময় তিনটি ভিন্ন জাতের ধানের শীষ দেখতে পান তিনি। ওই তিনটি শীষ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বড় এবং শীষে ধানের দানার পরিমাণও অনেক বেশি ছিল। এরপর ওই ধানের শীষ তিনটি বাড়িতে এনে শুকিয়ে প্রক্রিয়া করে বীজ হিসেবে রেখে দেন। পরের বছর ছেলে লেবুয়াতকে ধান চাষ চাষ করতে বলেন। সে বছর আড়াই কেজি ধান পাওয়া যায়। এবার আরো বেশি জমিতে চাষ করার পর ধানে ধানে সয়লাব হয়ে গেছে। সাড়া ফেলেছে তা এলাকার বাইরেও। ওই ধান দেখতে ব্রি-২৮ ধানের মতো। লেবুয়াত শেখ জানান, বাড়ির পাশে দেড় বিঘার মৎস্যঘেরের মধ্যে প্রায় ৪২ শতক জমিতে আলাদাভাবে এ বছর ওই ধানের চাষ করেন তাঁরা। অন্য ধানের মতোই সাধারণ পরিচর্চা করেন। জমিতে দুই দফায় ২০ কেজি ইউরিয়া এবং ৩০ কেজি পটাশ সার ব্যবহার করা হয়েছে। পোকামাকড় তাড়াতে দুই দফায় কীটনাশক ছিটানো হয়েছে। অন্য জাতের ধানগাছের চেয়ে এই ধানগাছ অনেক লম্বা। ধানের শীষও অনেক বড়। প্রতিটি শীষে এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ দানা হয়। ওই জমিতে প্রায় দুই হাজার ৬০০ কেজি ধান ফলেছে। নিজেদের জন্য কিছু পরিমাণ বীজ ধান রাখার পর ৪০০ টাকা কেজিদরে ওই ধান বিক্রি করে দিয়েছেন। তাতে আয় হয়েছে সাত লাখ ২০ হাজার টাকা। সিলেট, রাজশাহী, সাতক্ষীরা, খুলনাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ এসে ওই ধান ক্রয় করেছে। ফকিরহাটের মাসকাটা ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সোলায়মান আলী জানান, ওই ধান রোপণ করার পর তাঁরা তত্ত্বাবধান করেন। চাষি তাঁদের পরামর্শ অনুযায়ী ধান চাষ করেছেন।
কৃষক রিয়াজুল ইসলাম জানান, ইউটিউবের মাধ্যমে ফাতেমা ধানের বিষয়ে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ৬ মাস অপেক্ষা করার পর বাগেরহাটের কৃষক লেবুয়াতের মায়ের নিকট থেকে বীজ সংগ্রহ করি। এরপর প্রাথমিকভাবে আমার ৭৫ শতাংশ জমিতে এ ধানের চাষ করি। এতে সবকিছু মিলে মাত্র ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশাবাদী এ জমিতে প্রায় ৯৫-১০০ মণ ধান হবে। এই ধান উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার বলেও তিনি মনে করেন। তিনি আরও জানান, এই ধান চাষ করে লাভবান হতে পারব বলে আশা করছি। নিজেও স্বাবলম্বী হতে পারব। এ বছর আরও জমিতে আবাদ করব এই ধান।
আলফাডাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রিপন প্রসাদ সাহা জানান, বাগেরহাটের কৃষক কর্তৃক উদ্ভাবিত ফাতেমা জাতের ধানের রয়েছে নানা বৈশিষ্ট্য। এ ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। যা দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা যেতে পারে। তিনি আরও জানান, উপজেলাতে এ ধানের আবাদ বৃদ্ধিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ
ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ
কৃত্রিম মাংসের বার্গার, যা থেকে ‘রক্ত’ও ঝরে – আর বেশি দূরে নয় – দা এগ্রো নিউজ
ঐতিহ্যবাহী দেশীয় মাছ – দা এগ্রো নিউজ
দেশি সুস্বাদু ও লাভজনক শিং মাছের চাষ পদ্ধতি: সঠিক পদ্ধতিতে অধিক লাভ করুন – দা এগ্রো নিউজ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন