এগ্রোবিজ
কবে থেকে ফের পেঁয়াজ রফতানি শুরু করবে ভারত? – দা এগ্রো নিউজ
পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাংলাদেশ নতুন করে ভারতের কাছে অনুরোধ জানানোর পরও দিল্লি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে এখনও দ্বিধায় ভুগছে।
তবে সে দেশের পেঁয়াজ রফতানিকারকদের অনেকেই বিবিসিকে জানিয়েছেন, বাজারে এখন নতুন ফসল এসে গেছে এবং দামও অনেকটাই কমেছে – কাজেই এখন আবার রফতানি শুরু করা হলে অসুবিধার কিছু নেই।
তা ছাড়া ভারতের যে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে সরকার দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম নাগালে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল, সেই ভোটপর্বও মিটে গেছে দুদিন আগে।
এই পটভূমিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি আবার কবে নাগাদ শুরু হতে পারে?
আসামের রাজধানী গৌহাটিতে মঙ্গলবারও এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ভারত তাদের দেশে আচমকা না-বলে কয়ে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় তাদের খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়েছে।
সেই নিষেধাজ্ঞা যেন অবিলম্বে তুলে নেওয়া হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছিলেন তিনি।
ওই অনুষ্ঠানে ভারতের একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আসাম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও হাজির ছিলেন।
তাদের সামনেই মি. মুনশি আরও জানান, ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও নাকি তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের নির্বাচন মিটে গেলেই বাংলাদেশে আবার পেঁয়াজ যাওয়া শুরু হবে।
এদিকে ভারতের শীর্ষ রফতানিকারকরাও কিন্তু মনে করছেন এখন আবার বিদেশে পেঁয়াজ পাঠাতে কোনও বাধা নেই।
ভারতের ‘পেঁয়াজ রাজধানী’ বলে পরিচিত নাসিক থেকে গ্রিবল এগ্রো এক্সপোর্টের রাহুল চৌধুরী বলছিলেন, “এখন আবার রফতানি শুরু করা যেতেই পারে – আমাদের ক্রেতারা নেপাল-বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কায় অপেক্ষা করছেন।”
“প্রয়োজনে একটা এমইপি, অর্থাৎ ন্যূনতম রফতানি মূল্য চালু রাখা হোক, তাতে ক্ষতি নেই।”
“কিন্তু বাজারে নতুন ফলন এসে গেছে, চাষীদের কাছে এখন মজুতও বিশাল।”
তামিলনাডুর এস এস এক্সপোর্টসের প্রধান ষান্মুগাভেল আবার বলছিলেন, “বাজার এখন অনেকটাই পড়ে গেছে – আর তা ছাড়া ২১শে অক্টোবর মহারাষ্ট্রে ভোট হয়ে যাওয়ার পর আমি তো আশা করেছিলাম নিষেধাজ্ঞা এদিনই উঠে যাবে।”
“বৃষ্টিতে নাসিকের পেঁয়াজ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কর্নাটকের পেঁয়াজ কিন্তু বাজারে চলে এসেছে।”
“কিন্তু সারাদিন অপেক্ষা করার পরও কোয়েম্বাটোরের ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড থেকে আজও কোনও ঘোষণা এল না,” বেশ হতাশার সুরেই বলছিলেন তিনি।
বস্তুত গত মাসে একটা সময় ভারতে পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে ৫১ রুপি পৌঁছেছিল – যেটা এখন নেমে এসেছে ৩০-৩২ রুপিতে।
কিন্তু ভাবনগরের মোদী এক্সপোর্টসের সন্দীপ মোদী আবার মনে করছেন, অসময়ের বৃষ্টিতে পেঁয়াজের বাজারে আবার আগুন লাগতে পারে।
তিনি বিবিসিকে বলেন, “মহারাষ্ট্রে এখন লেট মনসুনের কারণে পেঁয়াজের মান খারাপ হয়ে যেতে পারে, নতুন ফসল উঠতেও দেরি হতে পারে।”
“খেয়াল করবেন, গত সপ্তাহেই হোলসেলে যে পেঁয়াজ ছিল ২৮ রুপি কেজি, সেটাই কিন্তু আজ ৩৭ রুপিতে পৌঁছে গেছে।”
বস্তুত বাজারে এই ওঠাপড়ার কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার রফতানি নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি তুলে নেওয়া নিয়ে সংশয়ে ভুগছে।
তিন সপ্তাহ আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিল্লি সফরের সময় কিছুটা অনুযোগের সুরেই বলেছিলেন, ভারত দুম করে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় তার হেঁশেলেও এখন পেঁয়াজ ছাড়াই রান্না করতে হচ্ছে।
তখন দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, “পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মন্তব্য ভারতের নজরে পড়েছে – এবং এই উদ্বেগ কীভাবে প্রশমিত করা যায় সেটাও দেখা হচ্ছে।”
কিন্তু তার পর থেকে ভারত শুধুমাত্র ২৯শে সেপ্টেম্বরের আগে খোলা পেঁয়াজ রফতানির এলসি-গুলোই অনার করেছে – আগে সেটাও তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
তবে সরকারের সেই বক্তব্য সামনে আসার পর তিন সপ্তাহ কেটে গেলেও ভারত এখনও নতুন করে পেঁয়াজ রফতানি চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
এ বিষয়ে সরকারের সংশিষ্ট মহলগুলো শুধু বলছে, পরবর্তী চব্বিশ ঘন্টাতেই এই সিদ্ধান্ত চলে আসতে পারে – আবার চব্বিশ দিন লেগে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।
এগ্রোবিজ
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ
বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।
বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ
ভালো বীজ নির্বাচন করুন
- বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
- রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
- প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।
বীজ শোধন প্রক্রিয়া
- শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
- পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
- জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।
বীজের সঠিক সঞ্চয়ন
- শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
- আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
- বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।
অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন
- বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
- পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।
বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা
- ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
- উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।
বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ
- মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
- বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
- দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
- শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
- মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
- খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।
বীজ ড্রেসিং
এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।
বীজ আচ্ছাদন
বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
বীজের বড়ি দেওয়া
এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।
বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ
শস্য | কীট/রোগ | বীজ পরিচর্যা |
আখ | শিকড়ে পচন, ধসা রোগ | কার্বেন্ডাজিম(০.১%) ২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে ট্রাইকোডার্মা এসপিপি ৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে |
ধান | শিকড়ে পচন | ট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে) |
অন্যান্য পোকামাকড় | ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে | |
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়া | সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে | |
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড | ০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন | |
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড | ০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন | |
লঙ্কা | স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপি | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম |
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণ | প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো | |
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপস | ইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই | |
অড়হর | ধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়া | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি |
মটর | শিকড়ে পচন | ব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা, ১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ |
সাদা পচন | প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান | |
ঢ্যাঁড়শ | শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ | বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স |
টম্যাটো | মাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো, বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম |
ধনে | ধসা | প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে |
বেগুন | ব্যাকটেরিয়াজনিত ধসা | প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স |
শুঁটিজাতীয় শস্য | মাটি বাহিত সংক্রমণ | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে |
নেমাটোড | কাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ) | |
সূর্যমুখী | বীজের পচন | প্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে |
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাই | প্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস, প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস | |
গম | উই | রোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে |
শিষে কালো হয়ে যাওয়া | থিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি, কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি, টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি | |
ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, মুলো | মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া) | ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা, ১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো |
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড) | বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম | |
ছোলা | ধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া | প্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা, কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ, প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা |
আলু | মাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগ | এমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা |
বার্লি | কালো হয়ে যাওয়া, উই | প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ, প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা |
ক্যাপসিকাম | শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড | প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ |
বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়
বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।
৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।
৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।
বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
- সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
- পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
- পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
- উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।
সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।
এগ্রোবিজ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ – দা এগ্রো নিউজ
জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার গ্রামে এবার হচ্ছে মাঠজুড়ে চায়না জাতের তরমুজের চাষ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম শাহিন এবং কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক বিনধারা মাঠে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ব্লাকবেবী তরমুজের চাষ করছেন।
আকারে ছোট খেতে সুস্বাধু এ জাতের তরমুজের গায়ের রং কালো হওয়ায় ”ব্লাকবেবী” হিসাবেই পরিচিত। ব্লাকবেবী চাষ অন্য ফসলের তুলনায় বহুগুনে লাভজনক।
মাচা পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ বিবেচিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি পণ্য হিসাবে। এই তরমুজের জীবনকাল মাত্র ৬০ দিনের। ১ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজন ৫০ গ্রাম বীজ। যার দাম ৩ হাজার ৮’শ টাকা। বিঘাপ্রতি সেড তৈরীর মালসিং পেপার ৭ হাজার ৫’শ, মাচা পদ্ধতিতে শেড তৈরীর বাঁশ আর মজুরী খরচ ১০ হাজার, সার মাটি আর বালাই নাশক স্প্রে বাবদ ৭ হাজার ৫’শ, পরিচর্য্যা মজুরী ৬ হাজার, পরিবহন খরচ ২ হাজার সর্বমোট বিঘা প্রতি তরমুজ চাষে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।
এক বিঘা জমিতে ৬০ দিনে তরমুজ উৎপাদন হয় প্রায় ১২ ’শ থেকে ১৫’শ পিস তরমুজ যার ওজন প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ মেট্রিক টন। প্রতিটি তরমুজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যার বিক্রি মূল্য হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় নীট লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের চাইতে অনেক লাভজনক। একটি সেড তৈরী হলে সেই শেডে নুন্যতম তিনটি তরমুজের আবাদ করা যায়। ফলে স্থায়ী এই খরচটি পরের দু’বার হয় না। ফলে পরের দু’বারে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের ভাগ আরো বেশী হয়।আবার বারোমাসই এই তরমুজ পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা বেশী। তাইওয়ানের জেসমিন-১, জেসমিন-২ ও ব্লাক প্রিন্স জাতের তরমুজে পোকামাকড়ের আক্রমণ তুলনা মূলক বলে ফসলে মার খাওয়ার ঝুঁকিও কম। গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা ছাড়া এই জাতের উৎপাদন ব্যাহত হবার আর কোন কারন নেই। এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সবচেয়ে বড় আশা জাগানিয়া কথা হচ্ছে বোরো ধান কাটার পর প্রায় দু’ আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। দু’টি ধান চাষের মাঝে অনায়াসে একার তরমুজের ফলন সম্ভব। ফলে জমির সঠিক ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে আয়। এ সব কারনে তরমুজ চাষে বাড়ছে কৃষকের সংখ্যা।
সরেজমিনে দেখাযায়, পলিথিন দিয়ে তরমুজের বীজ বোপনের জন্য বরাবর বেড তৈরী করা হয়েছে। বাশ ও জিআই তারে তৈরী ঝাংলায় তরমুজ গাছের সবুজ পাতাগুলো শোভা বর্ধন করছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিচিত এক বন্ধুর এ জাতের তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছে এবং তার কথা শুনেই তিনিও শুরু করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হলেও এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি। চায়না তরমুজ ছাড়াও তিনি টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজিও চাষ করেছেন।
এগ্রোবিজ
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার – দা এগ্রো নিউজ
সুদূর যুক্তরাজ্য থেকে ‘পোকা’ এনে সিলেটের বিশ্বনাথে খামার গড়ে তুলেছেন খলিলুর রহমান নামের এক প্রবাসী যুবক। উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের নিজ বাড়ির পাশে ‘হাজি বায়োসাইকেল কোম্পানি’ নামে প্যারেট পোকার (ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) এই খামারটি গড়ে তুলেছেন তিনি। এ ধরনের পোকার খামার সিলেট বিভাগে এই প্রথম বলে জানা গেছে।
রোববার সকালে সরেজমিনে খামারটিতে গিয়ে দেখা যায়, একটি টিনসেড ঘরের ভেতরে ৫টি বড় মশারি দিয়ে সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে ৫টি খাঁচা। খাঁচার ভেতরে রয়েছে পোকা। আর এই পোকার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিত্যক্ত বিভিন্ন খাবার (ওয়েস্ট ফুড)।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী খলিলুর রহমান জানান, মাতৃভূমিতে কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল দীর্ঘদিন থেকে। তাই জন্মভূমি বিশ্বনাথে একটি কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খামার করি। কিন্তু কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় চিন্তা করি কীভাবে কম মূল্যে খাবার সংগ্রহ করা যায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেই একটি প্যারেট পোকার খামার করার। যাতে কম মূল্যে খামারের কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহ সম্ভব হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যর একটি ফার্ম থেকে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসি। এরপর গত ২৬ জুন থেকে বাড়ির পাশে খামার তৈরি করে থেকে পোকার চাষ শুরু করি।
তিনি আরও জানান, পাখি ও মুরগির পুষ্টিকর খাবার ‘প্যারেট পোকা’। এই পোকায় রয়েছে ৪০ শতাংশ প্রোটিন ও ২০ শতাংশ ফ্যাট। একটি স্ত্রী পোকা ৫০০ থেকে ৬০০টি ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা (লার্ভা) জন্ম নেয়। এরপর ২১দিনে পোকা পরিপূর্ণ হলে তা পাখি ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৫ দিনে একটি পোকা ডিম দেয়ার উপযুক্ত হয় এবং ডিম দেয়ার পরই ওই পোকা মারা যায়। মরা এই পোকাই কোয়েল ও মুরগির প্রিয় খাবার।
পোকার খাদ্য হিসেবে উচ্ছিষ্ট ও পঁচা খাবার ব্যবহৃত হয়। চাষের জন্য প্রতি কেজি পোকা ১২ হাজার টাকা এবং পাখি ও মুরগির খাবারের জন্য ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। এটি একটি লাভজনক খামার। খামারে তিন ধরনের (ভিটল, কিক্রেটস ও ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) পোকা চাষ করা হচ্ছে।
খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ‘বায়োকনর্ভাশন ইনোভেটিভ’ সেন্টার শুরু করার লক্ষ্যে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা ২৫০ টাকায় ক্রয় করি। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার পোকা রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে।
এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।
এগ্রোবিজ
পেঁয়াজ: বাংলাদেশ কি পারবে ভারতের উপর নির্ভরতা কাটাতে? – দা এগ্রো নিউজ
যেসব ভোগ্যপণ্যের জন্য বাংলাদেশের ভোক্তারা ভারতের উপর অনেক নির্ভরশীল তার মধ্যে পেঁয়াজ অন্যতম। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেবার পর বাংলাদেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম এখন আকাশচুম্বী।
ভারতে নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতাসীন হাবার পরে সেদেশ থেকে বাংলাদেশে গরু আসা বন্ধ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে।
গরুর মাংসের দাম এক লাফে কেজি প্রতি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
তীব্র সংকট তৈরি হয় কোরবানির পশু সংগ্রহের ক্ষেত্রে। প্রথম দু’বছর এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে কোরবানির জন্য গরু খুঁজে পাওয়া মুশকিল হয়েছিল অনেকের জন্য।
এই সংকটের কারণে গত কয়েক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশে অনেক গরুর খামার গড়ে উঠে। গত দুই বছর ধরে বাংলাদেশের কোরবানির পশুর বাজার ভারতের উপর নির্ভরশীল নয়।
পেঁয়াজের এই নজিরবিহীন মূল্য বৃদ্ধি যে প্রশ্নে জন্ম দিয়েছে সেটি হচ্ছে, ভারতের উপর যে নির্ভরশীলতা তৈরি হয়েছে সেখান থেকে বাংলাদেশ কি বেরিয়ে আসতে পারবে?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়র অর্থনীতির অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা বলেন, “আমাদের কখনোই উচিত হবে না একটি বাজারের উপর নির্ভরশীল হওয়া।”
তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে শুধু ভারতের উপর নির্ভরশীল না থেকে বিকল্প বাজারও খুঁজতে হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের ভেতরেও পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর কোন বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক বিদিশার মতে, পেঁয়াজের জন্য ভারতের উপর বাংলাদেশের নির্ভরশীলতা তৈরি হওয়ার একটি দুটো কারণ রয়েছে।
প্রথমত, ঐতিহাসিকভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ভারতের পেঁয়াজের গুণগত মান এবং দাম বিবেচনা করলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক বিদিশা।
বাংলাদেশ কি ভারত–নির্ভরতা কাটাতে পারবে?
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: নাসিরুজ্জামান মনে করেন, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হয়ে যাবার পর বাংলাদেশের গরুর খামারিরা যে সফলতা দেখিয়েছে, সেটি পেঁয়াজ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও সম্ভব।
“প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে পেঁয়াজ যে পরিমাণ উৎপাদন হয়, ভারত থেকে যদি পেঁয়াজ না আসতো তাহলে হয়তো বাংলাদেশের কৃষক উৎপাদিত পেঁয়াজের ভালো দাম পেতো”
কৃষি সচিব বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ক্ষেত্রে কেজি প্রতি ১০-১২ টাকা পায়। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে বাংলাদেশের কৃষকরা প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৩০-৩২ টাকা পেতো।
সরকারি হিসেবে বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কিন্তু পেঁয়াজ ঘরে তোলার সময় প্রায় পাঁচ লাখ টন নষ্ট হয়ে যায়। অর্থাৎ ১৯ লাখ টন পেঁয়াজ বাজারে থাকে।
অন্যদিকে বিদেশ থেকে আমদানি হয় ১১ লাখ টন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ প্রয়োজন।
“আমাদের চাষীদের যে সক্ষমতা আছে, সেক্ষেত্রে তারা খুব সহজেই ৩০ লাখ মেট্রিকটন পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলেছি যখন চাষীরা পেঁয়াজ উৎপাদন করে বাজারে নিয়ে আসবে, তখন যেন ভারত থেকে আপাতত পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রাখে,” বলছিলেন কৃষি সচিব।
তিনি বলেন, কৃষকরা যদি পেঁয়াজের দাম পায়, তাহলে পরবর্তী বছর আরো বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন করবে।
বাংলাদেশের যদি পেঁয়াজ উৎপাদনের মাধ্যমে চাহিদা পূরণের সক্ষমতা থাকে, তাহলে এতদিন সেটি না করে ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকলো কেন?
কৃষি সচিব বলছেন, বিষয়টি নিয়ে অতীতে ভিন্ন চিন্তা করা হয়নি।
“কৃষক যখন উৎপাদন করে তখন বিদেশ থেকে আমদানি করলে দাম অনেক নেমে যায়। এটা যাতে না হয়। এটা হলে পরবর্তী বছর কৃষক উৎপাদন করতে আগ্রহী হয় না।”
“ভারত থেকে বা দেশের বাইরে থেকে যে পেঁয়াজ আসবে, সেটা যদি না আসে তাহলে সারা বছর হয়তো আমাদের দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের দাম একটু বেশি থাকবে। হয়তো কেজি প্রতি ৪০-৪৫ টাকা থাকবে, কিন্তু কখনো আড়াইশ টাকায় উঠবে না,” বলছিলেন কৃষি সচিব।
এগ্রোটেক
কৃষকের অ্যাপ: ধান ক্রয়ে দুর্নীতি অনিয়ম ঠেকাতে কাজ করবে কীভাবে – দা এগ্রো নিউজ
বাংলাদেশে ধান সংগ্রহ অভিযান নিয়ে অনিয়ম রোধে এবার বেশ কিছু জেলায় অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চালানোর পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশের খাদ্য বিভাগ।
চলতি বছরের আমন ধান সংগ্রহ অভিযান ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছ গত ২০শে নভেম্বর থেকে, যা শেষ হবে আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি।
এবারে ২৬ টাকা কেজি দরে ছয় লাখ টন ধান কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করবে সরকার।
এছাড়া মিল থেকে সাড়ে তিন লাখ টন চাল কিনবে কেজি প্রতি ৩৬ টাকা দরে।
সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী এ বছর কোন জেলা থেকে কত পরিমাণ ধান কেনা হবে তার একটি তালিকা করেছে কৃষি বিভাগ।
যদিও খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বিবিসিকে বলছেন, এখন মূলত কৃষকদের নাম নিবন্ধনের কার্যক্রম চলছে।
নিবন্ধন শেষ হওয়ার পর অ্যাপের মাধ্যমে ধান বিক্রির আবেদনের সুযোগ পাবেন কৃষকরা, বলছেন তিনি।
অ্যাপ কিভাবে কাজ করবে
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলছেন ‘কৃষকের অ্যাপ’ নামে এই অ্যাপটি তৈরি করেছে কম্পিউটার কাউন্সিল।
এখন অ্যাপে ৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত নিজেদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর দিয়ে নিবন্ধনের সুযোগ পাবেন কৃষকরা।
এরপর যাদের নাম অ্যাপে চলে আসবে তারা ই ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় পাবেন আবেদনের।
অর্থাৎ কৃষক তখন তার আবেদনে জানাবেন যে তিনি কোন জাতের ধান উৎপাদন করেছেন এবং কি পরিমাণ ধান তিনি বিক্রি করতে চান।
এসব তথ্য বিশ্লেষণের পর সফটওয়্যারের মাধ্যমে লটারি করে চূড়ান্ত করা হবে যে কাদের কাছ থেকে ধান কেনা হবে।
একই সাথে ডিজিটালি জানিয়ে দেয়া হবে যে তিনি কোথায় ধান বিক্রি করবেন এবং সেখানেই তাকে মূল্য পরিশোধে একটি চেকের প্রিন্ট কপি দেয়া হবে যা তিনি ব্যাংকে দেখিয়ে টাকা তুলতে পারবেন।
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলছেন, “ফলে ধান ক্রয়ের সময় মধ্যসত্ত্বভোগী দালাল কিংবা কর্মকর্তাদের মধ্যেও যদি কোনো অসাধু ব্যক্তি থাকে তারা আর অনিয়মের সুযোগ পাবেনা”।
কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ফোন না থাকলে অ্যাপ কৃষকেরা পাবেন কোথায়?
খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলছেন, তারা যে ১৬জেলায় অ্যাপটি এবার ব্যবহারের পরিকল্পনা নিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তা ও কৃষকদের বিষয়টি নিয়ে সচেতন করতে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।
খাদ্য বিভাগের জেলা ও থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেবাকেন্দ্রগুলো সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে অ্যাপটি ব্যবহার সম্পর্কে।
মহাপরিচালক বলেন, “কারও কাছে ফোন না থাকলেও বেশ কয়েকটি জায়গায় গিয়ে তারা নাম নিবন্ধন ও আবেদন করতে পারবেন। আর নিবন্ধন একজনের জন্য একবারই চূড়ান্ত। ওই নিবন্ধন নাম্বার দিয়েই তিনি প্রতিবছর ধান বিক্রয়সহ বেশ কিছু কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন”।
অ্যাপের বৈশিষ্ট্য:
১.গুগল প্লে স্টোর থেকে এই অ্যাপটি যে কেউ ডাউনলোড করতে পারবেন।
২. এরপর এটি ব্যবহার করে কোনো ঝামেলা ছাড়াই কৃষক তার উৎপাদিত ধান ও চাল সরকারের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
৩. মিল মালিক ও কৃষক মোবাইলে ধান চালের চাহিদা, সরবরাহের তারিখ বার্তার মাধ্যমে জেনে যাবেন
৪. ধান বিক্রয়ের আবেদন ও আবেদনের অবস্থা দেখা যাবে
৫. কেউ হয়রানির শিকার হলে অভিযোগ করতে পারবেন
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের – দা এগ্রো নিউজ
স্মার্ট এরিয়েটর এর সাথে অটো ফিডিং সিস্টেম – লাভজনক মাছ চাষ করার প্রযুক্তি – দা এগ্রো নিউজ
ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ
ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার – দা এগ্রো নিউজ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন