আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

এগ্রোবিজ

হিমাগারের ২৪ লাখ টন আলুর কী হবে

দেশের বিভিন্ন এলাকায় হিমাগারগুলোতে শেডভর্তি আলু পড়ে আছে। এতে সংরক্ষিত ২৪ লাখ টন আলু দুই মাসের মধ্যে বাজারজাত করতে না পারলে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লোকসান হতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্নিষ্ট কৃষক, ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকদের। এ অবস্থায় ত্রাণ হিসেবে আলুর ব্যবহার বাড়াতে বিভিন্ন দপ্তরে কৃষি মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরও মিলছে না সুফল।

লোকসান কমাতে আলুর ব্যবহার বাড়ানো ও রপ্তানিতে গুরুত্ব দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। শিল্পে এর ব্যবহার ও রপ্তানিযোগ্য আলু চাষে চার বছর মেয়াদি রোডম্যাপও চূড়ান্ত করতে যাচ্ছে এ মন্ত্রণালয়। সংশ্নিষ্টরা বলছেন, দেশে আলুর চাহিদা ৯০ লাখ টন, কিন্তু গত মৌসুমে পরিবেশ অনুকূলে থাকায় উৎপাদন হয়েছে এক কোটি ১৪ লাখ টন। সে হিসাবে আলু উদ্বৃত্ত থাকছে ২৪ লাখ টন। উৎপাদিত আলু থেকে দেশের ৪০০ হিমাগারে ৪০ লাখ টন আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল। করোনায় হোটেলসহ সব কিছু বন্ধ থাকায় ৬৫ শতাংশ আলুই বিক্রি হয়নি। এখন খরচের তুলনায় বাজারে দাম কম থাকায় অনেক কৃষক ও ব্যবসায়ী হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না। অথচ আলুর নতুন মৌসুম শুরু হতে বাকি আর মাত্র দুই মাস। ফলে বিক্রি শেষ না হলে লোকসানের সঙ্গে নতুন আলু সংরক্ষণ নিয়েও জটিলতা তৈরি হবে।

কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবছর দেশে আলু উৎপাদন ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বাড়লেও এর বহুমুখী ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ ছাড়া কিছু দেশে আলু রপ্তানি করা হলেও আলুর জাত ও গুণগত মানের কারণে সেই বাজারও ধরে রাখা যায়নি।

বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোশারফ হোসেন জানান, চলতি মৌসুমের আলু বাজারজাতকরণের আর মাত্র দুই মাস বাকি। এর মধ্যে সংরক্ষিত আলু বাজারজাত না হলে বিপুল পরিমাণ অবিক্রীত থাকবে। সেগুলো ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

তিনি বলেন, টিসিবির ডিলার ও ওএমএস কার্যক্রমে আলু বিক্রি জোরদার করা হোক। আলু রপ্তানিতে পাঁচ হাজার টন ধারণ ক্ষমতার একটি রেফার ভেসেল (পচনশীল দ্রব্য পরিবহনের উপযোগী শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জাহাজ) সরকারিভাবে কেনার দাবি জানান তিনি। এ ধরনের জাহাজ কেনা হলে আলু দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখা যাবে। এ ছাড়া রপ্তানি উপযোগী আলু উৎপাদনে উন্নত বীজ, মাটিজাত রোগবালাই দূরীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা নিতেও বলেন তিনি। আলু থেকে তৈরি নতুন নতুন সুস্বাদু খাবার জনপ্রিয় করার জন্য উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মেলা আয়োজনের দাবি জানান মোশারফ হোসেন।

আলু সংরক্ষণের হিমাগারের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বিদ্যুৎ বিল স্থগিত রেখে তা পরে সারচার্জ ছাড়া পরিশোধের সুযোগ চান ব্যবসায়ীরা। চালের ওপর চাপ কমাতে আইনশৃঙ্খলা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর আবাসিক হলে আলু খাওয়ানো বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাবও দেন তারা।

সরকার আলু উৎপাদনে ৮০০ কোটি টাকা সারের ওপর ভর্তুকি দিয়ে থাকে। সেই সারে আলুর বাম্পার ফলন হচ্ছে। কিন্তু আলুর বাজার তৈরি না হওয়ায় বছর বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষককে। কৃষক ও হিমাগারের মালিকরা জানান, উৎপাদন ও হিমাগারের ভাড়াসহ প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আলুর জন্য চাষির খরচ হয় ৮৫০ টাকা। বর্তমানে পাইকারি বাজারে সে আলুর দাম ৪০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কেজি আলুর দাম মাত্র ৮ টাকা। গত এক সপ্তাহে রাজধানীর খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে।

আলু তোলার মৌসুমের সময় প্রতি কেজির দাম ছিল ১৩ থেকে ১৪ টাকা। অনেকেই বেশি দামের আশায় তখন বিক্রি না করে আলু হিমাগারে সংরক্ষণ করেন। গত বছর এই সময়ে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আলু এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন চাষিরা।

এদিকে, অনেক চাষিই আলু রেখে হিমাগার মালিকদের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিলেন। আলু নিতে চাইলে এখন সে ঋণও শোধ করতে হবে। রংপুরের তারাগঞ্জের এন এন হিমাগারের ব্যবস্থাপক ডালিম মিয়া বলেন, তার হিমাগারে এখনও পড়ে আছে এক লাখ ৪৬ হাজার বস্তা আলু। প্রতি বস্তার বিপরীতে চাষিদের ঋণ দেওয়া হয় ২৫০ টাকা করে।

হিমাগার থেকে আলু বের করতে এখন অনীহা দেখাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, গত ১০ বছরের মধ্যে ছয় বছরই তারা আলুতে লোকসান দিয়েছেন। একই অবস্থা কুড়িগ্রাম, বগুড়া, জয়পুরহাট, খুলনা, মুন্সীগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার।

সরকারের উদ্যোগ: উদ্বৃত্ত আলু সুষ্ঠু ব্যবহারের জন্য গত মে মাস থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, টিসিবি, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরসহ সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ দফায় দফায় বৈঠক করে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর আলুর বাজার স্থিতিশীল এবং এর সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে মতামত পাঠায়। এ অবস্থায় ত্রাণ কার্যক্রমে আলুর ব্যবহার বাড়াতে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।

সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয় রপ্তানি উপযোগী ১৮টি আলুর উন্নতজাতের নিবন্ধন দিয়েছে। এ ছাড়া সংকট দূর করতে ২০২৫ সাল নাগাদ আড়াই লাখ টন আলু রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে খসড়া রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। রোডম্যাপে বাংলাদেশের আলু রপ্তানি পরিস্থিতি তুলে ধরে বলা হয়, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এক লাখ দুই হাজার টন আলু রপ্তানি হয়। সেটি কমতে কমতে সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে মাত্র ৫৬ হাজার টনে নেমেছে। আলু রপ্তানির চ্যালেঞ্জ হিসেবে বলা হয়, দেশে রপ্তানি উপযোগী, শিল্পে ব্যবহার এবং রোগমুক্ত জাতের বীজের অভাব রয়েছে। নিম্নমানের আলু রপ্তানির ফলে রপ্তানি কমে গেছে। এ ছাড়া যথোপযুক্ত প্রত্যয়ন ও অ্যাক্রিডিটেড ল্যাবের অভাব, পরিবহন সমস্যা, আলু রপ্তানিতে উচ্চহারে ভ্যাট ও ট্যাক্স আদায় এবং কুলিং চেম্বার, কোল্ড স্টোরেজ, কুলিং ভ্যানের অপ্রতুলতা রয়েছে।

রপ্তানি কর্মকাণ্ড সমন্বয় ও গতিশীল করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথা বলা হয়েছে রোডম্যাপে। এ ছাড়া রপ্তানি বাজার অনুসন্ধান, জাত ছাড়করণ, বীজ উৎপাদন, রপ্তানিযোগ্য আলু উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও প্রেরণ, প্রত্যয়ন এবং পরিবহন ও জাহাজীকরণে উপকমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে রোডম্যাপের খসড়ায়।

এসব সমস্যার সমাধান হলে ২০২২ সালে ৮০ হাজার টন, ২০২৩ সালে এক লাখ ২০ হাজার টন, ২০২৪ সালে এক লাখ ৮০ হাজার এবং ২০২৫ সালে দুই লাখ ৫০ হাজার টন আলু রপ্তানি করা সম্ভব বলে রোডম্যাপে উল্লেখ করা হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আলুর সুষ্ঠু বাজারজাতে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি রপ্তানি বাড়াতে হবে। এ নিয়ে প্রচেষ্টা চলছে। আগামীতে আলুর রপ্তানি অনেক বাড়বে। ভালো জাতের অভাবে এতদিন আলু রপ্তানি ও প্রক্রিয়াজাতকরণে সমস্যা হতো। ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে অনেকগুলো উন্নত জাত আনা হয়েছে। জাত নিয়ে আর সমস্যা থাকবে না।

এগ্রোবিজ

খাগড়াছড়িতে জার্বেরা ফুল চাষের সম্ভাবনা ভালো

জার্বেরা এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়। বিদেশি ফুল হলেও বাংলাদেশের পাহাড়ে এই ফুল চাষের সম্ভাবনা বাড়ছে। সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠানে দেখা মেলে লাল, কমলা, গোলাপি, হলুদ, সাদা, বেগুনিসহ নানা রঙের জার্বেরার। খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ বলেন, গত দুই বছর ধরে এখানে জার্বেরা ফুলের চাষ হচ্ছে। ৭৫টি গাছে ২০০ থেকে ৩০০টির বেশি ফুল আসছে, ভালো ফুল ফুটছে। খাগড়াছড়িতে যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে এই ফুল চাষের। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ বাড়ালে কৃষক লাভবান হবেন।

বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুলের পরিচর্যা করছেন এক মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
বাগানে ফুটে থাকা ফুল দেখাচ্ছেন মালি
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
রঙিন জার্বেরা মুগ্ধ করে সবাইকে
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
পাহাড়ে বিদেশি ফুল জার্বেরার বাণিজ্যিক চাষের সাফল্য বেশ উজ্জ্বল
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
নানা অনুষ্ঠানে জার্বেরা ফুলের আবেদন বাড়ছে
ফুটন্ত জার্বেরা
ফুটন্ত জার্বেরা
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলের কলি
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
জার্বেরা ফুলে প্লাস্টিকের কাগজ মুড়িয়ে দোকানে রাখা হচ্ছে বিক্রির জন্য
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি

বীজ হলো কৃষির প্রাণ। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে এবং ফসলের ফলন নিশ্চিত হয়। তাই উন্নত ফসল উৎপাদনের জন্য বীজের যত্ন ও পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পদ্ধতিতে বীজ সংরক্ষণ ও পরিচর্যা করলে ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং উৎপাদন খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার ধাপসমূহ

ভালো বীজ নির্বাচন করুন

  • বীজ নির্বাচন ফসল উৎপাদনের প্রথম ধাপ।
  • রোগমুক্ত, ভালো মানের, এবং আকারে সমান বীজ নির্বাচন করুন।
  • প্রত্যয়িত বা পরীক্ষিত বীজ ব্যবহার করুন।

বীজ শোধন প্রক্রিয়া

  • শোধন কী? বীজ শোধন হলো বীজ থেকে রোগজীবাণু ও পোকামাকড় দূর করার পদ্ধতি।
  • পদ্ধতি: ছত্রাকনাশক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: প্রতি কেজি বীজে ২-৩ গ্রাম ছত্রাকনাশক মিশিয়ে শোধন করুন।
  • জৈব শোধন: জৈব উপাদান যেমন নিম পাতার রস ব্যবহার করতে পারেন।

বীজের সঠিক সঞ্চয়ন

  • শুষ্ক ও ঠাণ্ডা স্থানে রাখুন: বীজ এমন জায়গায় সংরক্ষণ করুন যেখানে আর্দ্রতা কম এবং বাতাস চলাচল করে।
  • আলো ও তাপ থেকে দূরে রাখুন: সরাসরি সূর্যের আলো বা তাপ থেকে বীজকে দূরে রাখুন।
  • বায়ুরোধী পাত্র ব্যবহার করুন: বীজ রাখার জন্য বায়ুরোধী পাত্র বা প্যাকেট ব্যবহার করুন।

অঙ্কুরোদগম পরীক্ষা করুন

  • বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা পরীক্ষা করুন।
  • পদ্ধতি: ১. ১০০টি বীজ একটি ভেজা কাপড়ে মোড়ান। ২. কয়েকদিন পর দেখুন কতগুলো বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে। ৩. ৮০% বা তার বেশি অঙ্কুরোদগম হলে সেই বীজ চাষের জন্য উপযুক্ত।

বীজ প্রাক-চাষ পরিচর্যা

  • ভিজিয়ে রাখা: বীজ চাষের আগে ১২-২৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটি অঙ্কুরোদগম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
  • উপযুক্ত তাপমাত্রা বজায় রাখা: চাষের আগে বীজের জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা নিশ্চিত করুন।

বীজ এর পরিচর্যা করার সুবিধাসমূহ

  • মাটি ও বীজজাত জীবাণু ও পোকামাকড় থেকে অঙ্কুরিত বীজ ও চারাগাছ রক্ষা
  • বীজের অঙ্কুরোদ্গম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি
  • দ্রুত এবং সুসংবদ্ধ বৃদ্ধি
  • শুঁটি জাতীয় শস্যের দ্রুত শুঁটি বেরোনো
  • মাটি ও পাতায় নজর দেওয়ার চেয়ে বীজে বেশি নজর দেওয়া সুবিধাজনক
  • খারাপ পরিস্থিতিতেও (অতিরিক্ত বা কম আর্দ্রতায়) শস্যের উৎপাদনে সমতা

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ পরিচর্যা এমন একটা শব্দ, যা একই সঙ্গে পণ্য এবং প্রক্রিয়া দুই-ই বোঝায়। নীচে বর্ণিত যে কোনও একটি পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করা যেতে পারে।

বীজ ড্রেসিং

এটা বীজ পরিচর্যার সবচেয়ে চালু পদ্ধতি। বীজকে শুকনো বা তরল মিশ্রণে অথবা থকথকে কাদার মধ্যে রাখা হয়। বীজের সঙ্গে কীটনাশক মেশানোর জন্য সস্তা মাটির পাত্র ব্যবহার করা যায়। পলিথিন চাদরের উপর বীজ ছড়িয়ে তার উপর উপযুক্ত পরিমাণে কেমিক্যাল ছিটিয়ে দেওয়া যেতে পারে। চাষিরা যান্ত্রিক পদ্ধতিতেও এই কাজ করতে পারেন। খামার এবং শিল্পক্ষেত্র, দু’জায়গাতেই বীজ ড্রেসিং করা হয়ে থাকে।

বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি
বীজ এর পরিচর্যা করার পদ্ধতি

বীজ আচ্ছাদন

বীজের ক্ষমতা বাড়াতে একটি বিশেষ দ্রব্য দিয়ে তাকে আচ্ছাদিত করে রাখা হয়। এই আচ্ছাদনের জন্য উন্নত বীজ পরিচর্যা প্রযুক্তির প্রয়োজন। এই পদ্ধতি সাধারণত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।

বীজের বড়ি দেওয়া
বীজের বড়ি দেওয়া

বীজের বড়ি দেওয়া

এটা সবচেয়ে উন্নত বীজ পরিচর্যা পদ্ধতি। এতে বীজের আকার পাল্টে যায়, স্বাদ বাড়ে এবং বীজ ব্যবহার করাও সুবিধাজনক হয়। এর জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি দরকার এবং এটা অত্যন্ত ব্যয়সাপেক্ষ পদ্ধতি।

বীজ এর পরিচর্যা করার পরামর্শ সমূহ

শস্যকীট/রোগবীজ পরিচর্যা
আখশিকড়ে পচন, ধসা রোগকার্বেন্ডাজিম(০.১%)
২ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
৪-৬ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ধানশিকড়ে পচনট্রাইকোডার্মা ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে (রোপণের আগে)
অন্যান্য পোকামাকড়ক্লোরোপাইরিফস ৫-১০ গ্রাম প্রতি কিলো বীজে
ব্যাকটেরিয়া আক্রমণে শুকিয়ে যাওয়াসিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ০.৫% ডবলিউ পি ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে
শিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে ৬ ঘণ্টা বীজ ভিজিয়ে রাখুন
অগ্রভাগে রোগ নেমাটোড০.২% মোনোক্রোটোফসে বীজ ভিজিয়ে রাখুন
লঙ্কাস্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া, অ্যানথ্রাকনোস এসপিপিপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে, প্রতি ১০০ গ্রাম বীজে ১ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম
মাটিবাহিত ছত্রাকজাতীয় সংক্রমণপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে এবং সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স ১০ গ্রাম, প্রতি কিলো বীজে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউ এস, এক লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো
জাসিদ, আফিদ, থ্রিপসইমিডাক্লোপ্রিড ৭০ ডব্লিউএস, প্রতি কিলো বীজে ১০-১৫ গ্রাম এআই
অড়হরধসা, শিকড়ে পচন, শুকিয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা এসপিপি
মটরশিকড়ে পচনব্যাসিলাস সাবটিলিস বা সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স দিয়ে বীজের পরিচর্যা,
১০০ গ্রাম এফওয়াইএম-এ আড়াই থেকে ৫ গ্রাম মাটিতে প্রয়োগ অথবা প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান প্রয়োগ
সাদা পচনপ্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম থিরাম+কার্বেন্ডাজিম
প্রতি কিলো বীজে ২ গ্রাম কার্বেন্ডাজিম বা কাপ্তান
ঢ্যাঁড়শশিকড়ের গ্রন্থিতে রোগবীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম প্যাসিলোমিসেস লিলাসিনাস এবং সিউডোমিনাস ফ্লুরোসেন্স
টম্যাটোমাটি বাহিত ছত্রাক জাতীয় রোগ বা স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়া, ধসা রোগ, শুকিয়ে যাওয়া১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে, কাপ্তান ৭৫ ডব্লিউএস প্রতি লিটার জলে দেড় থেকে ২ গ্রাম এআই মিশিয়ে মাটি ভেজানো,
বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ভি ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ধনেধসাপ্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে
বেগুনব্যাকটেরিয়াজনিত ধসাপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স
শুঁটিজাতীয় শস্যমাটি বাহিত সংক্রমণ১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
নেমাটোডকাবোর্ফুরান অথবা কার্বোসালফান ৩%(ডব্লিউ/ডব্লিউ)
সূর্যমুখীবীজের পচনপ্রতি কিলো বীজে ৬ গ্রাম ট্রাইকোডার্মা ভিরিডে
জাসিডস, হোয়াইট ফ্লাইপ্রতি কিলো বীজে ৫-৯ গ্রাম এআই মিডাক্লোরোপিড ৪৮ এফএস,
প্রতি কিলো বীজে ৭ গ্রাম এআই ইমিডাক্লোরোপিড ৭০ ডব্লিউএস
গমউইরোপণের আগে প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোপাইরিফস বা ৭ এমএল এনডোসালফান দিয়ে পরিচর্যা করতে হবে
শিষে কালো হয়ে যাওয়াথিরাম ৭৫ % ডব্লিউপি,
কার্বক্সিন ৭৫ % ডব্লিউপি,
টেবুকোনাজল ২ ডিএস প্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই,
প্রতি কিলো বীজে ৪ গ্রাম টি ভিরিডে ১.১৫ % ডব্লিউপি
ফুলকপি,
বাঁধাকপি,
ব্রকলি,
মুলো
মাটি বা বীজ বাহিত রোগ (স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়া)১০০ গ্রাম বীজে ২ গ্রাম টি ভিরিডে দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
১ লিটার জলে দেড় থেকে আড়াই গ্রাম এআই কাপ্তান ৭৫% ডব্লিউএস দিয়ে মাটি ভেজানো
শিকড়ের গ্রন্থিতে রোগ(নেমাটোড)বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স বা ভার্লিসিলিআম ক্ল্যামিডোস্পোরিয়াম
ছোলাধসা রোগ ও স্যাঁতস্যাতে হয়ে যাওয়াপ্রতি কিলো বীজে ৯ গ্রাম টি ভিরিডে ১% ডব্লিউপি দিয়ে বীজ পরিচর্যা,
কার্বেন্ডাজিম ও কাবোর্সালফিন ২% মিশিয়ে বা
কার্বেন্ডাজিম, থিরাম ও কাবোর্সালফিন ২ % মিশ্রণ প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ১৫-৩০ এমএল এআই ক্লোরোফাইরোফস ২০ ইসি দিয়ে বীজ পরিচর্যা
আলুমাটি ও স্ফীতমূল বাহিত রোগএমইএমসি ৩% ডব্লিউএস ০.২৫ % বা বোরিক অ্যাসিড ৩ % দিয়ে সংরক্ষণ করার ২০ মিনিট আগে পরিচর্যা
বার্লিকালো হয়ে যাওয়া, উইপ্রতি কিলো বীজে ১.৫ থকে ১.৮৭ গ্রাম এআই, কার্বক্সিন ৭৫% ডব্লিউপি, থিরাম ৭৫% ডব্লিউপি প্রয়োগ,
প্রতি কিলো বীজে ৪ এমএল ক্লোরোফাইফস দিয়ে বীজ পরিচর্যা
ক্যাপসিকামশিকড়ের গ্রন্থিতে নেমাটোডপ্রতি কিলো বীজে ১০ গ্রাম সিউডোনোমাস ফ্লুরোসেন্স ১ %, ডব্লিউপি প্যাসিলোমিসেস লিলাকিরাস ও ভার্টিসিলাম ক্ল্যামিডেস্পোরিয়াম ১ % ডব্লিউপি বীজ ড্রেসার হিসেবে প্রয়োগ

বীজ ড্রেসিং-এর জন্য ধাতব বীজ ড্রেসার /মাটির পাত্র অথবা পলিথিন ব্যাগ ব্যবহার করা হয়

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা
বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

বীজ পরিচর্যার উপকারিতা

১. উচ্চ অঙ্কুরোদগম হার: পরিচর্যার ফলে বীজ দ্রুত অঙ্কুরিত হয়।

২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি: বীজ শোধনের ফলে রোগ ও কীটপতঙ্গ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়।

৩. উন্নত ফলন: পরিচর্যায় বীজের গুণগত মান বজায় থাকে, যা ফলন বৃদ্ধি করে।

৪. খরচ সাশ্রয়: বীজের সঠিক ব্যবস্থাপনার ফলে কৃষি খরচ কমে।

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস
বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

বীজ পরিচর্যার কিছু টিপস

  • সংরক্ষণের আগে বীজ পুরোপুরি শুকিয়ে নিন।
  • পোকামাকড় প্রতিরোধে নিমতেল বা জৈব কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • পুরনো বীজের পরিবর্তে প্রতি মৌসুমে নতুন বীজ ব্যবহার করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় জাতের বীজের মিশ্রণ ব্যবহার করুন।

সঠিক পদ্ধতিতে বীজ পরিচর্যা করলে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। এটি কৃষকের জন্য একটি সহজ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। তাই, উন্নত ফলনের জন্য বীজ পরিচর্যার সঠিক ধাপগুলো অনুসরণ করুন এবং কৃষি কাজে সফলতা অর্জন করুন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার গ্রামে এবার হচ্ছে মাঠজুড়ে চায়না জাতের তরমুজের চাষ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম শাহিন এবং কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক বিনধারা মাঠে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ব্লাকবেবী তরমুজের চাষ করছেন।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

আকারে ছোট খেতে সুস্বাধু এ জাতের তরমুজের গায়ের রং কালো হওয়ায় ”ব্লাকবেবী” হিসাবেই পরিচিত। ব্লাকবেবী চাষ অন্য ফসলের তুলনায় বহুগুনে লাভজনক।

মাচা পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ বিবেচিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি পণ্য হিসাবে। এই তরমুজের জীবনকাল মাত্র ৬০ দিনের। ১ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজন ৫০ গ্রাম বীজ। যার দাম ৩ হাজার ৮’শ টাকা। বিঘাপ্রতি সেড তৈরীর মালসিং পেপার ৭ হাজার ৫’শ,  মাচা পদ্ধতিতে শেড তৈরীর বাঁশ আর মজুরী খরচ ১০ হাজার, সার মাটি আর বালাই নাশক স্প্রে বাবদ ৭ হাজার ৫’শ, পরিচর্য্যা মজুরী ৬ হাজার, পরিবহন খরচ ২ হাজার সর্বমোট বিঘা প্রতি তরমুজ  চাষে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

এক বিঘা জমিতে ৬০ দিনে তরমুজ উৎপাদন হয় প্রায় ১২ ’শ থেকে ১৫’শ পিস তরমুজ যার ওজন প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ মেট্রিক টন। প্রতিটি তরমুজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যার বিক্রি মূল্য হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় নীট লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের চাইতে অনেক লাভজনক। একটি সেড তৈরী হলে  সেই শেডে নুন্যতম তিনটি তরমুজের আবাদ করা যায়। ফলে স্থায়ী এই খরচটি পরের দু’বার হয় না। ফলে পরের দু’বারে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের ভাগ আরো বেশী হয়।আবার বারোমাসই এই তরমুজ পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা বেশী। তাইওয়ানের  জেসমিন-১,  জেসমিন-২ ও ব্লাক প্রিন্স জাতের তরমুজে পোকামাকড়ের আক্রমণ তুলনা মূলক বলে ফসলে মার খাওয়ার ঝুঁকিও কম। গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা ছাড়া এই জাতের উৎপাদন ব্যাহত হবার আর কোন কারন নেই। এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সবচেয়ে বড় আশা জাগানিয়া কথা হচ্ছে বোরো ধান কাটার পর প্রায় দু’ আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। দু’টি ধান চাষের মাঝে অনায়াসে একার তরমুজের ফলন সম্ভব। ফলে জমির সঠিক ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে আয়। এ সব কারনে তরমুজ চাষে বাড়ছে কৃষকের সংখ্যা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

সরেজমিনে দেখাযায়, পলিথিন দিয়ে তরমুজের বীজ বোপনের জন্য বরাবর বেড তৈরী করা হয়েছে। বাশ ও জিআই তারে তৈরী ঝাংলায় তরমুজ গাছের সবুজ পাতাগুলো শোভা বর্ধন করছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিচিত এক বন্ধুর এ জাতের তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছে এবং তার কথা শুনেই তিনিও শুরু করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হলেও এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি। চায়না তরমুজ ছাড়াও তিনি টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজিও চাষ করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

সুদূর যুক্তরাজ্য থেকে ‘পোকা’ এনে সিলেটের বিশ্বনাথে খামার গড়ে তুলেছেন খলিলুর রহমান নামের এক প্রবাসী যুবক। উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের নিজ বাড়ির পাশে ‘হাজি বায়োসাইকেল কোম্পানি’ নামে প্যারেট পোকার (ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) এই খামারটি গড়ে তুলেছেন তিনি। এ ধরনের পোকার খামার সিলেট বিভাগে এই প্রথম বলে জানা গেছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

রোববার সকালে সরেজমিনে খামারটিতে গিয়ে দেখা যায়, একটি টিনসেড ঘরের ভেতরে ৫টি বড় মশারি দিয়ে সুন্দর করে তৈরি করা হয়েছে ৫টি খাঁচা। খাঁচার ভেতরে রয়েছে পোকা। আর এই পোকার খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে পরিত্যক্ত বিভিন্ন খাবার (ওয়েস্ট ফুড)।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

যুক্তরাজ্য প্রবাসী খলিলুর রহমান জানান, মাতৃভূমিতে কিছু একটা করার ইচ্ছে ছিল দীর্ঘদিন থেকে। তাই জন্মভূমি বিশ্বনাথে একটি কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খামার করি। কিন্তু কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ায় চিন্তা করি কীভাবে কম মূল্যে খাবার সংগ্রহ করা যায়। এরপর সিদ্ধান্ত নেই একটি প্যারেট পোকার খামার করার। যাতে কম মূল্যে খামারের কোয়েল পাখি ও লেয়ার মুরগির পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহ সম্ভব হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যর একটি ফার্ম থেকে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা সংগ্রহ করে দেশে নিয়ে আসি। এরপর গত ২৬ জুন থেকে বাড়ির পাশে খামার তৈরি করে থেকে পোকার চাষ শুরু করি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

তিনি আরও জানান, পাখি ও মুরগির পুষ্টিকর খাবার ‘প্যারেট পোকা’। এই পোকায় রয়েছে ৪০ শতাংশ প্রোটিন ও ২০ শতাংশ ফ্যাট। একটি স্ত্রী পোকা ৫০০ থেকে ৬০০টি ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা (লার্ভা) জন্ম নেয়। এরপর ২১দিনে পোকা পরিপূর্ণ হলে তা পাখি ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ১৫ দিনে একটি পোকা ডিম দেয়ার উপযুক্ত হয় এবং ডিম দেয়ার পরই ওই পোকা মারা যায়। মরা এই পোকাই কোয়েল ও মুরগির প্রিয় খাবার।

পোকার খাদ্য হিসেবে উচ্ছিষ্ট ও পঁচা খাবার ব্যবহৃত হয়। চাষের জন্য প্রতি কেজি পোকা ১২ হাজার টাকা এবং পাখি ও মুরগির খাবারের জন্য ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। এটি একটি লাভজনক খামার। খামারে তিন ধরনের (ভিটল, কিক্রেটস ও ব্ল্যাক সোল্ডার ফ্লাই) পোকা চাষ করা হচ্ছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

খলিলুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ‘বায়োকনর্ভাশন ইনোভেটিভ’ সেন্টার শুরু করার লক্ষ্যে ১৫০ গ্রাম (প্রায় ১৫০টি) পোকা ২৫০ টাকায় ক্রয় করি। বর্তমানে আমার খামারে প্রায় ৩৫-৪০ হাজার পোকা রয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামারটি আরও বড় করার পরিকল্পনা আছে।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার

এদিকে পোকার এই ব্যতিক্রমী খামার দেখতে উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বয়সের লোকজন প্রতিদিন খলিলুর রহমানের খামারে ভিড় করছেন। মানুষের এই আগ্রহ ও কৌতুহল তাকে আরও বেশি খামারের প্রতি মনোযোগী করে তুলছে বলে জানান তিনি।

প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
প্রবাসী খলিলুরের ব্যতিক্রমী ‘পোকা’র খামার
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কুড়িয়ে পাওয়া শাক-সবজিই দুর্গাপুরের আদিবাসী নারীদের জীবিকার উৎস

 দূর্গাপুর উপজেলার পাহাড়ী প্রত্যান্ত অঞ্চলের গারো হাজং আদিবাসী সম্প্রদায়ের নারীরা  তেলাকচুাঁ, কচুশাক, ঢেঁকি শাক বিক্রি করছেন।

[৩] কুড়িয়ে পাওয়া নানা প্রজাতির শাক-সবজি সংগ্রহ করতে নারী আদিবাসীদের পাশাপাশি এখন বাঙ্গালীরাও যোগ দিয়েছেন।

[৪] উত্তর গোপালপুর গ্রামের আদিবাসী মহিলা নিয়তি দ্রুং দাহা পাড়ার শুকরিতি গাখড়া বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পাহাড়ে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন রকমের সব্জি সংগ্রহ করে বিক্রি করি। গারো জাতি পাহাড় টিলার ওপর-ই নির্ভরশীল সেই আদি থেকেই। প্রকৃতির এবং বিষমুক্ত শাক-সবজি খেয়ে থাকি। প্রকৃতিই আমাদের অন্নদাতা অন্নপূর্ণা।

[৫] উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সার ও কীটনাশক দিয়ে চাষ করা শাক, সবজির চেয়ে তাদের সংগ্রহ করা সবজিতে অনেকি বেশি পুষ্টিগুন। এই সব সবজির দামও একটু বেশি। তবে চাহিদাও রয়েছে অনেক। এনিয়ে কৃষি বিভাগ থেকে আলাদা একটা প্রকল্প করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সরকারি কোন বরাদ্দ পেলেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ