প্রথম আলো: ইলিশের ব্যবসা কেমন হচ্ছে? জয়নাল আবেদীন: সাগরের কোথাও ইলিশের নাগাল পাচ্ছেন না জেলেরা। ব্যবসাও খারাপ যাচ্ছে। ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সরকার ভারতে ইলিশ রপ্তানির সুযোগ...
ট্রলারের ওপর বসে জেলেরা মাছ ধরার জাল গুছিয়ে নিচ্ছেন। কেউ মাছ সংরক্ষণের জন্য ট্রলারে বরফ ভরছেন। চাল, তেল, তরকারি, জ্বালানিসহ কয়েক দিনের খাদ্যসামগ্রীও মজুত করছেন কেউ...
রহস্য ভরা পৃথিবীতে এখনও অনেক কিছুই রয়েছে যা আমাদের অবাক করে দেয়। এমন অনেক রহস্যও আছে যা উন্মোচন করা এখনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি মানুষের পক্ষে। এরকমই...
দীর্ঘদিন পর দেখা মিলছে রূপালী ইলিশের। সাগর-নদীতে ধরা পড়ছে ঝাঁকে-ঝাঁকে মাছ। সকাল হলেই আড়তে বিপুল পরিমাণ ইলিশ নিয়ে হাজির হচ্ছেন জেলেরা। মাছের স্তুপ আর ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাকে...
বঙ্গোপসাগর থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও প্রাণীর সাগর মোহনায় ছুটে আসার প্রবণতা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। এসব মাছ ও প্রাণী জেলেদের জালে আটকাও পড়ছে। এগুলোর মধ্যে আছে...
বঙ্গোপসাগরে মহাসমারোহে চলছে মাছ ধরা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর জেলেদের জালে ধরা পড়ছে কাক্সিক্ষত রুপালি ইলিশ। ফিশিং ট্রলার ভর্তি ইলিশ নিয়ে কূলে ফিরছেন জেলেরা। ইলিশের পাশাপাশি ধরা...
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে একই এলাকায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় সমুদ্র বন্দরগুলোতে তিন নম্বর সংকেত...
বঙ্গোপসাগরে মৌসুমি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সৃষ্ট এ লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। এতে করে বাড়তে পারে বৃষ্টিপাত। শুক্রবার রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ...
বঙ্গোপসাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে ২৮ কেজি ওজনের একটি ভোলা মাছ। প্রতি মণ ৬ লাখ ৬১ হাজার টাকা হিসেবে ২৮ কেজি ভোলা মাছ ৪ লাখ ৬২...
ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। একদিকে নদীর অধিকাংশ স্থানে জেগে উঠেছে ডুবোচর, অন্যদিকে মাইলের পর মাইল খুঁটি গেড়ে ব্যারিকেডের মাধ্যমে নদীতে ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ জাল। ফলে নাব্য সংকট ও খুঁটিজালের কারণে সাগর থেকে ইলিশ নদীতে আসতে বাধার মুখে পড়ছে। মৎস্য কর্মকর্তাদের মতে, এভাবে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় পরিবর্তিত হচ্ছে ইলিশের গতিপথ। তাই ভরা মৌসুমেও ভোলার মেঘনায় ও তেঁতুলিয়া নদীতে চলছে ইলিশের আকাল। মৌসুমের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন এ অঞ্চলের জেলেরা। স্থানীয় সূত্র জানায়, নদীবেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলার পূর্বে মেঘনা এবং পশ্চিমে রয়েছে তেঁতুলিয়া নদী। এই দুটি নদী ও দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ওপরই নির্ভর করে চলে এ জেলার প্রায় দুই লাখ জেলের জীবিকা নির্বাহ। অথচ মাইলের পর মাইল এ নদীগুলোর বিভিন্ন স্থানে সারি সারি খুঁটি গেড়ে ব্যারিকেড তৈরি করে প্রভাবশালীরা ব্যবহার করছে বাঁধা জাল, বেহুন্দী জাল, মশারি জাল, চরঘেরা জালসহ বিভিন্ন ধরনের নিষিদ্ধ জাল। যা দিয়ে নদীতে ধ্বংস করছে ইলিশের পোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের রেণু। ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায় নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের মাধ্যমে নদী দখলের চিত্র। বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মাইনকা ইউনিয়নের মেঘনা নদীর সেন্টারখাল নামক এলাকার প্রায় আড়াই-তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সারি সারি খুঁটি গাড়ার মাধ্যমে প্রভাবশালীরা দখল করে রেখেছে নদীর একটি অংশ। সেখানে মশারির মতো কয়েক ধরনের নিষিদ্ধ জাল ব্যবহারের মাধ্যমে নদী থেকে আহরণ করা হচ্ছে ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও মাছের পোনা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেখানকার কর্মরত কয়েকজন জেলে জানান, এ জালগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ হলেও এ জালের মালিক কালাম, মনুমাঝি, লিটন, মনতাজ এ পাঁচজন। আমরা শুধু পেটের দায়ে তাদের হয়ে নদীতে মাছ ধরার কাজ করছি। তাছাড়া আমরাই যে এ জাল ব্যবহার করি তা কিন্তু নয়, ভোলা সদর থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত শতাধিক স্থানে পাতা রয়েছে এ ধরনের নিষিদ্ধ জাল। এ জালের মালিক পক্ষের একজন মনুমাঝির সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, আসলে নদীতে ইলিশ কম থাকায় এ ধরনের জাল আমরা ব্যবহার করছি। কেননা এ জালে ছোট-বড় মিলিয়ে সব ধরনেরই মাছ ধরা পড়ছে, যা দিয়ে আমরা কোনোভাবে চলতে পারি। একই চিত্র চোখে পড়ে উপজেলার মির্জাকালু এলাকার মেঘনা নদীতে। সেখানেও নদীর অর্ধেকটা জুড়ে দখল করে স্থানীয় জাহাঙ্গীর মেম্বার নামে এক মৎস্য ব্যবসায়ী ব্যবহার করছেন এ ধরনের নিষিদ্ধ জাল। পাশেই রয়েছে হাকিমউদ্দিন মৎস্য ঘাট। সেখানেও রাস্তার মাথা নামক এলাকার বাসিন্দা প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ী কবির মিয়া ও বাবুল প্রফেসরের খুঁটিজাল নদীর বিশাল একটি অংশ দখল করে আছে। এসব জাল অপসারণের বিষয়ে মৎস্য বিভাগের কিংবা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই বলে জানান হাকিমউদ্দিন মাছ ঘাটের ব্যবসায়ী উজ্জ্বল হাওলাদার। তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতেও রয়েছে প্রায় ১০টির মতো এ ধরনের নিষিদ্ধ খুুঁটি জাল। শশীগঞ্জের মাছ ঘাট এলাকার বাসিন্দা প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মিয়া, কবির মিয়া, কামাল দালাল, জুলফিকার ও নিশু হাওলাদারদের মতো ব্যবসায়ীরা প্রকাশ্যে তাদের পাঁচটি জাল ব্যবহার করছেন বলে জানান ওই অঞ্চলের জেলেরা। দৌলতখান উপজেলার মেঘনায়ও ১০-১২ জন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর এ ধরনের নিষিদ্ধ খুঁটি জাল ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। দৌলতখানের পাতারখাল এলাকার মাঝি মাইনুদ্দিন মিয়া বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। নদীতে জাল ফেললেই প্রচুর পরিমাণ ইলিশ পাওয়ার কথা। অথচ জালে ইলিশের দেখা নেই বললেই চলে। যে মাছ পাই তা দিয়ে তেলের খরচই ওঠে না। সিরাজ মাঝি বলেন, বর্তমানে নদীর অধিকাংশ স্থানেই ডুবোচর জেগে ওঠায় আগের মতো গভীরতা নেই। এর মধ্যে আবার বিভিন্ন স্থানে খুুঁটি গেড়ে রাখায় সাগর থেকে নদীতে ইলিশ আসতে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। তবে নদী থেকে নিষিদ্ধ জাল উত্খাত করতে পারলে হয়তোবা সামনের দিনগুলোতে কিছুটা হলেও আমাদের জালে ইলিশের দেখা মিলবে। দৌলতখান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, কয়েক দফায় মেঘনা থেকে এ ধরনের নিষিদ্ধ জালের খুঁটি অপসারণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, কয়েক মাস আগেও ট্রলার নিয়ে গাছ কাটার হাত মেশিন দিয়ে নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে এসব নিষিদ্ধ জালের খুঁটিগুলো কেটে নিয়ে এসেছি। পরে আবার কেউ হয়তো নতুন করে খুঁটি গেড়ে এ জাল ব্যবহার করা শুরু করেছে। আমরা প্রয়োজনে আবার অভিযান চালাব। শুধু দৌলতখান, বোরহানউদ্দিন ও তজুমদ্দিন উপজেলাই নয়, ভোলা সদর উপজেলা, লালমোহন, চরফ্যাশনসহ জেলার প্রতিটি উপজেলারই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা যায় এ ধরনের জাল দিয়ে নিষিদ্ধ উপায়ে নদী দখল করে মাছ আহরণের চিত্র। এসব স্থানে কোস্টগার্ড সদস্যদের চলাচল থাকলেও এসব জাল উত্খাতে তাদের তত্পরতাও চোখে পড়ে না বলে জানান স্থানীয়রা। তবে নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে বরাবরের মতোই অভিযান অব্যাহত রয়েছে দাবি করে কোস্টগার্ড দক্ষিণ জোনের গোয়েন্দা শাখার অপারেশন অফিসার লে. তাহসিন রহমান বলেন, প্রতিদিনই আমাদের টিম নদীতে নেমে নিষিদ্ধ জালের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। মৌসুমের প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ কম পাওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবকেই অনেকটাই দুষলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, একদিকে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার ফলে উজানের পানির চাপ কমে গেছে। অন্যদিকে নদীর অধিকাংশ স্থানেই জেগে উঠেছে ডুবোচর। এর সঙ্গে আবার নদীতে খুঁটি গেড়ে রাখার কারণে সাগর থেকে নদীতে ইলিশ আসতে সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা। আশা করছি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরো বেড়ে গেলেই বৃদ্ধি পাবে নদীর পানি। তখন সাগর থেকে নদীতে ইলিশ আসতে আর বাধা থাকবে না। জেলেরাও পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ আহরণ করতে পারবে বলে আমরা মনে করছি।
সর্বশেষ মন্তব্য