আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

শাকসবজি

বিষমুক্ত সবজিতে দিন বদল

উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পরই বাবার মৃত্যুতে সাত সদস্যের পরিবারের দায়িত্ব এসে পড়ে আশরাফুল ইসলামের ওপর। সংসার সামলাতে কৃষক বাবার ছেলে আশরাফুলও শুরু করের কৃষিকাজ। প্রথাগত ধান চাষ করতে গিয়ে অকালবন্যায় পরপর তিনবার ফসল নষ্ট হয়। ২ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়েও থেমে যাননি আশরাফুল। ঘুরে দাঁড়াতে তিনি শরণাপন্ন হন উপজেলা কৃষি অফিসে। তাদের পরামর্শেই শুরু করেন বিষমুক্ত সবজি চাষ।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের আশরাফুলের সফলতা পেতে সময় লাগেনি। প্রথম বছরেই পেয়ে যান লাভের দেখা। বিষমুক্ত সবজি চাষ করে আশরাফুল এখন সফল কৃষক। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় বলছে, এই উপজেলায় আশরাফুল বিষমুক্ত সবজি চাষের প্রবর্তক। ২০১৯ সালে উপজেলা বৃক্ষমেলায় সফল কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে পুরস্কারও পান তিনি।

সম্প্রতি বালিকান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আশরাফুল নিজের সবজির বাগানে কাজে ব্যস্ত। হাতের কাজ শেষ করে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান তাঁর জীবনের গল্প। ২০০৫ সালে তাঁর বাবা আবদুল বাতির মারা যান। এরপর মা, তিন ভাই, দুই বোন, স্ত্রী মিলে সাত সদস্যের পরিবারের হাল ধরতে হয় তাঁকে। পরপর তিনবার অকালবন্যায় বোরো ফসল হারিয়ে তিনি যখন দিশেহারা, তখন চাচাতো ভাইদের বলে তাঁদের জায়গায় সবজি চাষ শুরু করেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে বিষমুক্ত সবজি চাষ করে লাভের দেখা পান। এভাবে বাড়তে থাকে সবজি চাষের পরিধি। ২০১০ সালে তিনি ছোট পরিসরে এই সবজি চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে তিনি ব্যাপকভাবে সবজি চাষ শুরু করেন। বাবা রেখে গিয়েছিলেন ৪ কেদার (৩০ শতকে ১ কেদার) জমি। এবার তিনি ১২ কেদার জমিতে সবজি চাষ করেছেন। তার মধ্যে ৬ কেদার জমিতে লাউ চাষ করেছেন। ৩ কেদার জমিতে ফুলকপি আর ৩ কেদার জমিতে ব্রুকলি চাষ করেন।

আশরাফুল বলেন, ঘুম থেকে উঠেই তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন সবজির খেতে। কাজ বেশি হলে গ্রামের আরও দুই-তিনজন যুবককে বেতন দিয়ে সহযোগী হিসেবে কাজে নেন। এবার সবজি চাষে তাঁর ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে ২ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। আরও ৮-১০ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

আশরাফুলের দেখানো পথ অনুসরণ করে অনেকেই এই পথে হাঁটছেন। তাঁদের মধ্যে একজন গৌস মিয়া জানান, আশরাফুলের কাছ থেকে সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি এবার ৭ কেদার জমিতে সবজি চাষ করেছেন। আশরাফুলের সহযোগিতায় তিনি লাভবান হয়েছেন।

সৌদি থেকে দেশে আসা আশরাফুলের বন্ধু ছইদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রবাসে গিয়েও কষ্ট করে যা করতে পারিনি গত পাঁচ বছরে বিষমুক্ত সবজি চাষে আশরাফুল তা করতে পেরেছে। আশরাফুল নিজে বেশি পড়ালেখা করতে না পারলেও ছোট ভাইদের পড়ালেখা শিখিয়েছে। গত বছর একজন সরকারি চাকরিও পেয়েছেন।’

আশরাফুলের ভাই আমির হোসেন বলেন, বাবার মৃত্যুর পর আশরাফুল অনেক কষ্টে সবজি চাষ করে ভাইবোনদের পড়ালেখা ও সংসার খরচ চালিয়েছেন। এখন ১০ কেদার জমি কিনেছেন। গরু কিনেছেন আরও ১২টি। গরুর গোবর থেকে জৈবসার তৈরি করে সবজি খেতে ব্যবহার করেন। ক্ষতিকারক পোকা দমনের জন্য জাদুর ফাঁদ, সেক্স ফেরমোন পদ্ধতি ব্যবহার করেন।

কলকলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল হাশিম বলেন, আশরাফুল এলাকার জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। তিনি নিজে সবজি চাষে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি প্রতিবেশীদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন। এখন তাঁর কল‍্যাণে গ্রামের মানুষকে সবজি কিনতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আশরাফুল এই উপজেলার বিষমুক্ত সবজি চাষের প্রবর্তক। একজন সফল সবজি চাষি হিসেবে আমরা তাঁকে পুরস্কৃত করেছি। যেকোনো প্রয়োজনে আমরা তাঁকে সহযোগিতা করে থাকি।’

শাকসবজি

মিষ্টি আলুর চাষ করবেন যেভাবে

মিষ্টি আলুর চাষ করবেন যেভাবে
মিষ্টি আলুর চাষ করবেন যেভাবে

মিষ্টি আলু বাংলাদেশের একটি অবহেলিত ফসল হলেও গণচীন, পাপুয়া নিউগিনি এবং আফ্রিকার কয়েকটি দেশে এটি মানুষের প্রধান খাদ্য। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশে এটি আলুর চেয়ে বেশি দামে বিক্রয় হয়। মিষ্টি আলুর পুষ্টিগুণ/খাদ্যমান, বাজারদর, সবজি এবং গোখাদ্য হিসেবে এর গুরুত্ব অনেক বেশি। এফএও’র হিসাব অনুযায়ী সারা বিশে-এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল।

মিষ্টি আলুর গাছ একটি লতানো বিরুৎ। বৈজ্ঞানিক নাম Ipomeoa batatas. ইহা Convolvulaceac পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। ইংরেজিতে একে Sweet Potato বলে। গ্রীষ্ম প্রধান জলবায়ুতে এটি দীর্ঘজীবী, একবার লাগালে বছরের পর বছর বেঁচে থাকে। রবি মৌসুমে মিষ্টি আলু চাষ লাভজনক। খরিফ মৌসুমে সবজি/শাক/গোখাদ্য হিসেবে চাষ করা লাভজনক।

জাত: বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নানা জাতের মিষ্টি আলুর চাষ হয়। স্থানীয় জাতের চেয়ে উন্নত জাতের ফলন অনেক বেশি। তৃপ্তি ও কমলা সুন্দরী জাত দুইটি উচ্চফলনশীল। যার ফলন হেক্টরপ্রতি ৩০-৪০ টন। জাতের কা- বেগুনি, পাতা গাঢ় সবুজ, ফল মূল সাদা, শাঁস হালকা হলুদ। এতে সামান্য পরিমাণ ক্যারোটিন আছে।

লতা/কাটিং প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশে কৃষি গবেষণা ও কৃষি গবেষণা উপকেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব খামার, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের বিভিন্ন নার্সারিতে যোগাযোগ করতে পারেন।

মিষ্টি আলুর চাষ করবেন যেভাবে
মিষ্টি আলুর চাষ করবেন যেভাবে

চাষ পদ্ধতি

স্থান ও মাটি: সারা দিন সূর্যের আলো পড়ে এরকম দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটি মিষ্টি আলু চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। নদীর তীরের পলি মাটিতে এ আলু সবচেয়ে ভালো হয়।

কাটিং/লতা লাগানোর সময়: মধ্য অক্টোবর হতে মধ্য নভেম্বর পর্যন্ত লাগানোর উপর্যুক্ত সময়।
জমি তৈরি: জমি গভীর করে কর্ষণ করা উচিত। এজন্য বার বার চাষ দিয়ে মাটি ঝুরঝুর করে বড় ঢেলা ভেঙে দিতে হয়। এতে মিষ্টি আলুর বাড় বাড়তি ভালো হয়।

চারা কাটিং/লতা লাগানো: প্রতি খণ্ড ২৫-৩০ সেমি. লম্বা হওয়া উচিত। আগার খণ্ড (অগ্রীয় কুঁড়িসহ) সবচেয়ে বেশি ফলন দেয়। আগার খণ্ড পাাওয়া গেলে মাঝখানের খণ্ড না লাগানোই উচিত। বেশি বয়স্ক খণ্ড বীজ/কাটিং হিসেবে ব্যবহার বর্জনীয়। মাঝখানের খণ্ড লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে গোড়ার দিক মাটিতে পোঁতা হয়।

সারি থেকে সারি ৬০ সেমি., কাটিং থেকে কাটিং ৩০ সেমি. (উন্নত জাতের বেলায়) দূরত্বে লতা রোপণের জন্য প্রতি হেক্টরে কাটিং লাগে- ৫৫,৫৫৫টি, বিঘায় লাগে ৭,৭০৫টি। কাটিংয়ের ২/৩টি আক বা গিঁট মাটির নিচে থাকতে হবে ৩-৪ সেমি. গভীরে সমান্তরালভাবে শুইয়ে দিয়ে উপরের অংশ বাঁকিয়ে খাঁড়া করে দিতে হবে। রোপণের সময় আবহাওয়া শুকনো হলে কয়েকটি পাতা ছাঁটাই করে দিতে হবে। রস না থাকলে কাটিং/চারার গোড়ায় পানি দিতে হবে।

সার প্রয়োগ: আমাদের দেশের অধিকাংশ কৃষকই মিষ্টি আলু চাষে কম পরিমাণ সার প্রয়োগ করেন। কাক্সিক্ষত ফলন পেতে হলে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। সারের মাত্রা হেক্টরপ্রতি গোবর ১০ টন, ইউরিয়া ১৪০ কেজি, টিএসপি ১০০ কেজি ও পটাশ ১৫০ কেজি।
কোন জমিতে সালফার ও দস্তার অভাব থাকলে প্রয়োজনীয় সার ব্যবহার করতে হবে।

মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতি
মিষ্টি আলুর চাষ পদ্ধতি

পানি সেচ: মিষ্টি আলু হচ্ছে খরা প্রতিরোধ সম্পন্ন ফসল। তাই সাধারণত সেচের কম। প্রয়োজনে সেচ দেয়া যেতে পারে।
পরিচর্যা : মিষ্টি আলুর ক্ষেত লতা দিয়ে পরিপূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত আগাছামুক্ত রাখতে হবে।

ফসল: ১৫০ দিনের মাথায় ফসল সংগ্রহ করা হয়। তবে মার্চ মাসের মধ্য ফসল সংগ্রহ করা উচিত। হেচ্কা টান দিয়ে কন্দমূল লতা থেকে লতা আলাদা না করে ধারালো চাকু দিয়ে কেটে সংরক্ষণ করলে রোগাক্রান্ত হবে না।

হেক্টরপ্রতি ফলন: সাধারণ ২০-৫০ টন। তৃপ্তি স্থানভেদে ৮০ টন ফলন হয়। ইহা নির্ভর করে জাত বা চাষ পদ্ধতি, মাটির অবস্থা ও আবহাওয়ার ওপর।

পোকামাকড় ও রোগ: এ আলুর রোগবালাই খুবই কম, উইভিল নামক একটিমাত্র পোকা ছাড়া অন্যান্য পোকা ও রোগ গৌণ। এদের ক্ষতি তেমন উল্লেখযোগ্য নয়।

কাণ্ড ও কন্দমূলের শাঁস খেতে খেতে সুরঙ্গ/গর্ত করে পোকা থেকে ডিম ও বিষাক্ত পদার্থ বের হয়। যার ফলে আক্রান্ত কন্দমূল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। যেখানে বর্ষাকালে প্লাবিত হয় সেখানে এ পোকার উপদ্রব কম। শস্য পর্যায়ে অবলম্বনসহ হেক্টরপ্রতি ৫ কেজি হেপ্টাক্লোর অথবা ১৫ কেজি ফুরাডান প্রয়োগ করলে ভালো ফলনও পাওয়া যায়।

মিষ্টি আলু সংরক্ষণ
মিষ্টি আলু সংরক্ষণ

মিষ্টি আলু সংরক্ষণ: এ আলু সংরক্ষণ প্রক্রিয়া অনেকটা গোল আলুর স্থানীয় পদ্ধতির মতোই। ফ্রেস/ক্ষত/কাটাহীন আলু সংরক্ষণ করতে হবে। গুদামে রাখার আগে কন্দমূল ছায়ায় বিছিয়ে লতাপাতা দিয়ে কয়েক দিন ঢেকে রাখলে ভালো হয়।

পুষ্টি মূল্য: ইহা একটি স্টার্চ প্রধান খাদ্য, এজন্য প্রধান খাদ্য চালও গমের বিকল্প হিসেবে খাওয়া চলে। মিষ্টি আলুর পাতা একটি পুষ্টিকর শাক। যা সারা বছর পাওয়া যায়। তাছাড়া মিষ্টি আলু/লতা একটি উৎকৃষ্ট গোখাদ্য। (পুষ্টি উপাদান নিচের ছকে দেখুন)।

ব্যবহার: সিদ্ধ ও পুড়িয়ে খাওয়া যায়। সবজি হিসেবে কন্দমূল, পাতা শাক হিসেবে খাওয়া হয়। পাতলা স্লাইসে সিদ্ধ করে রৌদ্রে শুকিয়ে পরে তেলে ভেজে ক্র্যাকার্স হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বরিশাল এলাকায় চিংড়ি ও ইলিশ মাছ সহযোগে এ তরকারি খুবই জনপ্রিয়। ভর্তা করেও খাওয়া যায়।

আমাদের করণীয়: আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা খাবার খাই দেহ রক্ষার জন্য। রসনা তৃপ্তির জন্য নয়। সুতরাং কৃষক ভাইসহ সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের অবহেলিত ফসলটি চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে নিজ দায়িত্ববোধ থেকে আরও এগিয়ে আসতে হবে যাতে আমাদের কৃষক ভাইরা অল্প পুঁজি ও কম ঝুঁকিপূর্ণ মিষ্টি আলু চাষের মাধ্যমে স্থায়ী কৃষিসহ আত্মসামাজিক উন্নয়নে একটি ইতিবাচক ফলাফল রাখতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

ধনেপাতা চাষ করুন টবে

শীতে ধনেপাতা চাষ করুন টবে
শীতে ধনেপাতা চাষ করুন টবে

সালাদের জন্য ধনেপাতা অন্যতম। খাবার সুস্বাদু করতে ধনেপাতার জুড়ি নেই। তাই যারা শহরে থাকেন তারা টবে করে বাসার ছাদে অথবা বারান্দায় ধনেপাতা চাষ করতে পারেন।

গুণাবলি 
ধনেপাতায় ক্যালসিয়াম, লৌহ ও ক্যারোটিন পাওয়া যায়। টবে ধনেপাতার চাষ করার সুবিধা হচ্ছে- প্রায় বারো মাসই চাষ করা যায়।

সময় 
তবে আশ্বিন থেকে পৌষ অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাষ করা যায়।

শীতে ধনেপাতার গুণাবলি, সময়, মাটি, বীজ বপণ, সার
শীতে ধনেপাতার গুণাবলি, সময়, মাটি, বীজ বপণ, সার

মাটি 
সব রকমের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে বেলে দোঁ-আশ থেকে এঁটেল দোঁ-আশ মাটি ধনেপাতা চাষের জন্য উপযোগী। ধনেপাতা আবাদের জন্য পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকতে হবে।

বীজ বপণ 
বীজ ২৪ ঘণ্টা ন্যাকড়ায় জড়িয়ে ভিজিয়ে রাখলে তাড়াতাড়ি গজাবে। ধনেপাতার জন্য চওড়া মুখ বিশিষ্ট টব নির্বাচন করতে হবে। ৩-৪ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বুনে আবার মাটি দিয়ে ঢেকে সেচ দিতে হবে। মাটি ভেজা থাকলে পানি দেওয়ার দরকার নেই।

সার
পরিমাণমতো ইউরিয়া, টিএসপি, এমপি এবং গোবর সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

শীতে ধনেপাতার পরিচর্যা, পাতা তোলা
শীতে ধনেপাতার পরিচর্যা, পাতা তোলা

পরিচর্যা 
মাটিতে রস না থাকলে ২-১ দিন পরপর পানি সেচ দিতে হবে। পাখি যাতে পাতা না খায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বীজ বোনার পর পিঁপড়া যাতে খেয়ে ফেলতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। পিঁপড়া এলে কীটনাশক ছিটিয়ে পিঁপড়া দমন করতে হবে।

পাতা তোলা 
গাছ খুব ঘন হলে তা তুলে পাতলা করে দিতে হবে। গাছ বেশি বড় হওয়ার আগে তুলে খেতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শাকসবজি

শীতে টবে যেসব শাক-সবজি চাষ করবেন

শীতে টবে যেসব শাক-সবজি চাষ করবেন
শীতে টবে যেসব শাক-সবজি চাষ করবেন

শহর জীবনেও শীতের স্বাদ উপভোগ করতে পারেন। তার জন্য একটু কাজ তো করতেই হবে। সেজন্য কম পরিশ্রমে বাড়ির ছাদ, বারান্দা, কার্ণিশে বিভিন্ন আকারের টবে শাক-সবজির চাষ করতে পারেন। তাহলে জেনে নিন টবে সবজি চাষের নিয়ম-কানুন-

যা চাষ করবেন: টমেটো, বেগুন, মরিচ, শসা, ঝিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, মটরশুটি, কলমি শুটি, কলমি শাক, লাউ, পুঁই শাক, পেঁপে, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, থানকুনি, লেটুস, ব্রোকলি প্রভৃতি।

টবের মাটি: মাটি হতে হবে ঝরঝরে, হালকা এবং পানি ধরে রাখার ক্ষমতাসম্পন্ন। মাটি চালনি দিয়ে চেলে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। দুই ভাগ বেলে দো-আঁশ মাটির সঙ্গে দুই ভাগ জৈব সার মিলিয়ে বীজতলার মাটি তৈরি করতে হয়। মাটি এঁটেল হলে একভাগ বালি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হয়। মাটিকে জীবাণুমুক্ত করে চারাকে রোগবালাই থেকে রক্ষা করতে হয়। সাধারণত ১ লিটার ফরমালডিহাইড শতকরা ৪০ ভাগ ৪০ লিটার পানিতে মিশিয়ে এই দ্রবণের ২৫ লিটার প্রতি ঘন মিটার মাটিতে কয়েক কিস্তিতে ভিজিয়ে দিতে হয়। এরপর দু’দিন চটের কাপড় দিয়ে মাটি ঢেকে রেখে পরে চট উঠিয়ে দিলে মাটি জীবাণুমুক্ত হয়।

বীজ বপন: মাটি হালকা ঝরঝরে করে টবের উপরের ভাগ সমতল করতে হবে। হালকাভাবে বীজ ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর জৈব সার দিয়ে বীজগুলোকে ঢেকে দিতে হবে।

টবের মাটি, বীজ বপন
টবের মাটি, বীজ বপন

সেচ: নিয়মিত ছোট ছোট ছিদ্রযুক্ত ঝাজরি দিয়ে পানি দিতে হবে। পানির ঝাপটায় যাতে বীজের উপর জৈব সারের আবরণ সরে না যায়। আকারে ছোট বীজগুলোর উপর দিয়ে পানি দিলে পানির ধাক্কায় একস্থানে অঙ্কুরোদগমে ব্যঘাত ঘটতে পারে। তাই সব টবের উপর দিয়ে পানি না দিয়ে তলা দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করা উচিত।

পরিচর্যা: হেপ্টোক্লোর ৪০ পরিমাণ মত দিয়ে পিঁপড়া ও মাকড়সার আক্রমণ থেকে রক্ষা করা যায়। পাখির হাত থেকে ফসল বাঁচাতে হলে টবের উপর তারের বা নাইলনের জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। টবের মাটিতে বীজ বপনের আগে বিভিন্ন প্রকার আগাছা জন্মাতে পারে। তাই নিড়ানি দিয়ে খুঁচিয়ে তুলে ফেলতে হবে। চারার গোড়ায় যেন আঘাত না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। টবগুলো অবশ্যই আলো-বাতাসযুক্ত জায়গায় রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঝড়-বৃষ্টি-রোদ-তাপ থেকে রক্ষার জন্য সাময়িকভাবে টব নিরাপদ স্থানে সরানো যেতে পারে।

সেচ, পরিচর্যা ও সবজি সংগ্রহ
সেচ, পরিচর্যা ও সবজি সংগ্রহ

যোগাযোগ: এ ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করতে ফিস এক্সপার্ট লিমিটেড এর ০১৭১২৭৪২২১৭ নম্বরে।

সবজি সংগ্রহ: সবজি বেশিদিন গাছে না রেখে নরম থাকতেই তুলে খাওয়া ভালো। সবজি গাছ থেকে ছিঁড়ে সংগ্রহ করা যাবে না। আস্তে করে কেটে সংগ্রহ করতে হবে। তাহলে সবজি গাছের কোন ক্ষতি হবে না।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

শাকসবজি

সহজ উপায়ে টবে লঙ্কা চাষ

সহজ উপায়ে টবে লঙ্কা চাষ
সহজ উপায়ে টবে লঙ্কা চাষ

রান্নাতে লঙ্কা না হলে, খাবার যেন ঠিক জমে না। খাদ্যে স্বাদ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ তৈরীতে এবং মসলা হিসাবেও লঙ্কা দেশ তথা গোটা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন দেশে নানাবিধ লঙ্কার চাষ হয়ে থাকে। সৌখিন মানুষ যারা বাড়িতেও বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ টবে করে থাকেন, তারাও এই বিশেষ ধরনের সবজি অর্থাৎ লঙ্কার চাষ করতে ভীষণই পছন্দ করেন।

 টবে লঙ্কা চাষ মাটি তৈরি
টবে লঙ্কা চাষ মাটি তৈরি

মাটি (Soil)

গোটা বছর ধরেই লঙ্কার চাষ করা যায়। শীতকাল নাগাদ এই চাষ করলে ফলন বেশি ভালো হয়। বাড়ির বাগান, ছাদে লঙ্কার চাষ অত্যন্ত সহজেই করা যায়। দো-আঁশ মৃত্তিকা লঙ্কা চাষের জন্য আদর্শ। গোবর সার, ইউরিয়া সার লঙ্কা গাছ টবে চাষ করার জন্য জৈব সার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

নার্সারির থেকে প্রথমে ভালো মানের লঙ্কা চারা কিনে আনতে হবে। মাটি ভালো করে তৈরী করে চারাগাছে বা বীজ বপন করতে হবে। শুকনো লঙ্কার বীজ ৬ ঘন্টার মতন ভিজিয়ে নিয়ে ভালো করে শুকিয়েও টবের মাটিতে পোঁতা যেতে পারে। অঙ্কুরোদ্গম এর ফলে ভালো হবে গাছে যাতে জল না জমে তার জন্য টবের নিচে ছোট ছিদ্র করে দেওয়া উচিত। যেই স্থানে আলো বাতাস পর্যাপ্ত পরিমানে থাকে সেখানে লঙ্কার গাছ করা উচিত

টবে লঙ্কা চাষ সার প্রয়োগ
টবে লঙ্কা চাষ সার প্রয়োগ

সার প্রয়োগ (Fertilizer)

লঙ্কা গাছ বাড়ির টবে করতে গেলে সবসময় জৈব উপায়ে করাই ভালো। রাসায়নিক সার না দিয়ে ঘরের উচ্ছিষ্ট সবজি খোসা পচাও জৈব সার হিসাবে লঙ্কা গাছে প্রয়োগ করা যায়। গাছের পরিচর্যা অবশ্যই ভালোবেসে করতে হবে। সময় করে জল দেওয়া থেকে শুরু করে, গাছের আগাছা দূর করা সব নিজের হাতেই করা উচিত। লক্ষ্য রাখতে হবে, জল দেওয়ার পর টবে যেন কখনোই জল না জমে।

কীটপতঙ্গ প্রতিকার
কীটপতঙ্গ প্রতিকার

কীটপতঙ্গ প্রতিকার (Pest Control)

ঠিকঠাক ভাবে যত্ন করলে একটি লঙ্কা গাছ দু’ দফায় কম করে ৫০ থেকে ৮০ টি লঙ্কা উৎপাদন করতে পারে। কৃষিক্ষেত্রে বেশি পরিমানে লঙ্কা চাষ করা হলে, মূল পচা, পাতা পচা, পাতা কুঁকড়ে যাওয়া, ব্যাকটেরিয়াজনিত বিভিন্ন রকমের রোগ দেখা যায়। স্বল্প পরিসর অর্থাৎ টবে চাষ করলে এই রোগগুলির তেমন প্রাদুর্ভাব ঘটে না। অনেক সময় টবের লঙ্কা চাষে, পিঁপড়েরা আক্রমণ করে থাকে। এই বিপদ থেকে গাছকে বাঁচাতে সাবান গুঁড়োর ব্যবহার করা যেতে পারে। অল্প পরিমানে সাবানের গুঁড়ো গাছে ছিটিয়ে দিলে পিঁপড়ে হানার থেকে গাছকে রক্ষা করা যায়।

এই পদ্ধতিতে লঙ্কা চাষ করলে, লঙ্কার উৎপাদনও ভালো হবে, সঙ্গে খাবার পাতে ঝালের অভাবও হবে না।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

অন্যান্য

মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ
মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

মার্চ মাস কৃষি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। শীতকালীন ফসলের শেষ পরিচর্যা এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের প্রস্তুতি এ সময়ে শুরু হয়। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ সময়ে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব। এখানে মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ধান চাষ
ধান চাষ

ধান চাষ

বোরো ধানের পরিচর্যা

  • ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি নিশ্চিত করুন।
  • পোকামাকড় যেমন ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার (Brown Plant Hopper) এবং ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্থা নিন।
  • ইউরিয়া এবং পটাশ সারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রয়োগ করুন।

গ্রীষ্মকালীন ধান চাষ

  • গ্রীষ্মকালীন ধানের বীজতলা প্রস্তুত করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল জাত নির্বাচন করুন।
গম চাষ
গম চাষ

গম চাষ

  • গম ফসল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।
  • ফসল কাটার পর জমি পরিষ্কার করুন এবং পরবর্তী ফসলের জন্য প্রস্তুত রাখুন।
ডালশস্য
ডালশস্য

ডালশস্য

  • মুগ, মাসকলাই, এবং ছোলার বীজ বপন করুন।
  • আগাছা পরিষ্কার রাখুন এবং সঠিক সময়ে সেচ দিন।

তৈলবীজ চাষ

সূর্যমুখী এবং সয়াবিন

  • বীজ বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করুন।
  • সঠিক সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন এবং আগাছা নিয়ন্ত্রণ করুন।
সবজি চাষ
সবজি চাষ

সবজি চাষ

গ্রীষ্মকালীন সবজি বপন

  • লাউ, কুমড়ো, করলা, এবং ঢেঁড়স বীজ বপন করুন।
  • আগাছা নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক সেচ প্রদান করুন।

শীতকালীন সবজি সংগ্রহ

  • বাঁধাকপি, ফুলকপি, এবং মূলা সংগ্রহ করে বাজারজাত করুন।

ফল চাষ

  • আম, লিচু, এবং কাঁঠাল গাছের মুকুল রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
  • নতুন ফলের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।
মৎস্য চাষ
মৎস্য চাষ

মৎস্য চাষ

  • পুকুর পরিষ্কার করুন এবং পানি পরিবর্তন করুন।
  • মাছের খাবারের পরিমাণ এবং পুষ্টি বাড়িয়ে দিন।
  • পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য জৈব সার প্রয়োগ করুন।
গবাদি পশু পালন
গবাদি পশু পালন

গবাদি পশু পালন

  • গরু এবং ছাগলের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন।
  • গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে টিকা নিশ্চিত করুন।

মার্চ মাসে কৃষি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকদের আয় বাড়ে। সময়মতো এবং সঠিক পদ্ধতিতে করণীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে সফল কৃষিকাজ নিশ্চিত করা সম্ভব।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ