অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরলেও আরো বড় আগুনের আশঙ্কা থাকার কথা বলছে কর্তৃপক্ষ
অবশেষে অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি নেমেছে আর তাপমাত্রাও কমেছে-কিন্তু কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে, দেশটিতে বুশফায়ার বলে পরিচিত যে দাবানল জ্বলছে তা আবারো বেগবান হবে।
সিডনি থেকে মেলবোর্ন পর্যন্ত পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় মাঝারি ধরণের বৃষ্টি হয়েছে। তবে নিউ সাউথ ওয়েলসের কিছু কিছু এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু রবিবার রাতে কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে বলেছে যে, বৃহস্পতিবার নাগাদ তাপমাত্রা আবারো বেড়ে যাবে।
তারা আরো বলছে, ভিক্টোরিয়া এবং নিউ সাউথ ওয়েলসে যে ব্যাপক আগুন জ্বলছে তা মিলে গেলে একটি মেগা ফায়ার বা বিশালাকার আগুন তৈরি হতে পারে।
“স্বস্তির কোন সুযোগ নেই,” সোমবার সকালে সতর্ক করে একথা বলেছেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের প্রধান গ্ল্যাডসি বেরেজিকলিয়ান।
আগুনের কারণে যারা গৃহহীন হয়ে পড়েছেন সেসব হাজারো মানুষকে সহায়তা দেয়া অব্যাহত রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
“এখন উদ্ধার তৎপরতা চালানোর সময়, যারা ঘর হারিয়েছে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে,” মিস বেরেজিকলিয়ান বলেন।
বৃষ্টির কারণে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও বাতাস এখনো মারাত্মকভাবে দূষিত।
ক্যানবেরায় অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল গ্যালারি সোমবার বন্ধ রাখা হয়েছিল “দর্শনার্থী, কর্মকর্তা এবং শিল্পকর্মের ক্ষতি হওয়ার শঙ্কা কমিয়ে আনতে”।
রাজধানীর অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিও বন্ধ ছিল।
ভিক্টোরিয়ার ভূ-তাত্ত্বিক ব্যুরো সতর্ক করে বলেছে, মেলবোর্ন শহরের বিভিন্ন এলাকা ও এর আশেপাশের অনেক অঞ্চলে দৃষ্টিসীমা এক কিলোমিটারের কম।
এই ছুটিতে, দাবানলের সবচেয়ে খারাপ কিছু দিন পার হয়েছে, যখন শত শত বাড়ি-ঘর, স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। স্থানীয় ছোট ছোট শহর এবং বড় শহরগুলোতেও ছিল লাল আকাশ, ছাই আর ধোঁয়ার ছড়াছড়ি যা বাতাসকে ভারী করে তুলেছে।
কিন্তু সোমবার, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে দাবানলের শিকার রাজ্যগুলোতে কোন জরুরী অবস্থা ছিল না।
ভিক্টোরিয়া রাজ্যে ২৫টি স্থানে সতর্কতামূলক “ওয়াচ এন্ড অ্যাক্ট” অ্যালার্ট এবং সাউথ অস্ট্রেলিয়ায় একটি এ ধরণের অ্যালার্ট জারি ছিল।
এনএসডাব্লিউ-তে, সব ধরণের আগুন কমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এমন অর্থাৎ সর্বনিম্ন সতর্কতা মাত্রায় এসেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের কমিশনার শেন ফিৎজসিমন্স।
যাই হোক ভিক্টোরিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কমিশনার অ্যান্ড্রু ক্রিস্প সতর্ক করে বলেছেন, “পরিবেশ আবারো উষ্ণ হবে” এবং আগুন “আবারো বেগবান হবে।”
সোমবার সকালে, ভিক্টোরিয়ার করিয়ং এলাকার দাবানল এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের কোসিউজকো ন্যাশনাল পার্কের দুটি দাবানলের মাঝে মাত্র ১০ কিলোমিটারের ব্যবধান ছিল।
“এটা পরিবর্তিত এবং গতিশীল অবস্থা ধারণ করবে,” উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করেন, এই দুটি দাবানল সীমান্ত এলাকায় এক হয়ে যাবে যা কিছুতেই থামানো “সম্ভব নয়”।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৬৯ হাজার মার্কিন ডলার ত্রাণ সহায়তার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়া আরো ২ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার আগামি দুই বছরে পুনর্বাসন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য বরাদ্দ করা হবে।
কমলা থেকে ধূসর হচ্ছে
নিউ সাউথ ওয়েলসে বিবিসির সংবাদদাতা সাইমন অ্যাটকিনসন বলেন, ঝিরিঝিরি বৃষ্টি আর ধূসর দিগন্তের কারণে ইডেনের জেটিটিকে অনেকটা ইংলিশ উপকূলীয় শহরের মতো মনে হচ্ছে।
তবে শনিবার রাতেই এটি কল্পনা করা কঠিন ছিল যখন আগুনের হুমকি এবং কমলা রঙের আকাশের কারণে- নিরাপত্তার জন্য শত শত মানুষ এখানে পানির কাছে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিল।
বেশিরভাগই এখন চলে গেছে। আগুনের হুমকি কমে যাওয়ায় অনেকে বাড়িতে ফিরে গেছে। জেটি আসল তেমন নিরাপদ নয়- কর্তৃপক্ষের এমন সতর্কতার পর অনেকে আবার বড় শহরে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে চলে গেছে।
বৃষ্টি আসলেই অবাক করা এবং আকাঙ্ক্ষিত ছিল, এবং এটি ধোঁয়া ও বাতাস থেকে কিছুটা স্বস্তিও দিয়েছে।
তবে চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে যে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে, তাতে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো ইডেনের মানুষেরও অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা হয়েছে।
এছাড়া উপকূলের কাছাকাছি নৌবাহিনীর যে জাহাজগুলো এখনো উদ্ধার কাজে সহায়তা করছে তা এটিই ইঙ্গিত দেয় যে, দুর্যোগ এখনো শেষ হয়নি।
অস্ট্রেলিয়া অন্যতম ভয়ঙ্কর দাবানলের মৌসুমগুলোর একটি পার করছে। যার পেছনে কাজ করেছে রেকর্ড পার করা তাপমাত্রা এবং মাসের পর মাস ধরে চলা খরা।
প্রতিবছরই দেশটিতে দাবানল হয় তবে এ বছর স্বাভাবিকের তুলনায় এটি অনেক ভয়াবহ ছিল।
এই ছুটিতে, মিস্টার মরিসন সতর্ক করে বলেছিলেন যে, এই সংকট কয়েক মাস ধরে চলবে।
গত সেপ্টেম্বরে আগুন শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ২৪ জন মারা গেছে। রাজধানী ক্যানবেরার বাতাসের মান সম্প্রতি বিশ্বে সবচেয়ে খারাপ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগুনে যারা ঘর-বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়েছে তাদের সহায়তায় একটি সংস্থা চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন মিস্টার মরিসন।
দাবানলে তার প্রতিক্রিয়ার জন্য কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি- এই সংকটের মধ্যেও হাওয়াইয়ে ছুটি কাটাতে যাওয়ার কারণেও সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাকে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ এবং মিস্টার মরিসনের লিবারেল পার্টির সহকর্মী বলেন, তিনি ভাবতেন যে, প্রধানমন্ত্রী হয়তো “তার সর্বোচ্চ চেষ্টা” করছেন, কিন্তু বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ক্যানবেরার নেতৃত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এই দেশে আমাদের জাতীয় জ্বালানি নীতিমালা নেই এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়েও কোন জাতীয় উদ্যোগ নেই।”
“যদি অস্ট্রেলিয়ার মতো একটি দেশ নেতৃত্ব দিতে না পারে তাহলে এ বিষয়ে অন্য কোন দেশ কেন নেতৃত্ব দিলো না সে বিষয়েও আমরা তাদেরকে দোষারোপ করতে পারবো না।”
বীজ পরিচর্যা করবেন কিভাবে: বীজ পরিচর্যার গুরুত্ব ও উন্নত ফলনের জন্য সঠিক পদ্ধতি – দা এগ্রো নিউজ
মাছ চাষে স্মার্ট প্রযুক্তির উদ্ভাবন বাংলাদেশি তরুণের – দা এগ্রো নিউজ
স্মার্ট এরিয়েটর এর সাথে অটো ফিডিং সিস্টেম – লাভজনক মাছ চাষ করার প্রযুক্তি – দা এগ্রো নিউজ
ফাতেমা ধান’ চাষে বাম্পার ফলন – দা এগ্রো নিউজ
ফল বাগানে সঠিক স্প্রে যন্ত্রের ব্যবহার – দা এগ্রো নিউজ
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন