আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

লাইভস্টক

গরুর দুধে যদি অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়, তাহলে এর মাংস খাওয়া কতোটা নিরাপদ?

সম্প্রতি গরুর দুধের নমুনায় অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব ধরা পড়ায় এখন গরুর মাংসের মান নিয়েও ভোক্তাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে।

যেহেতু গরুর দুধে অ্যান্টিবায়োটিক শনাক্ত হয়েছে, তাহলে গরুর মাংস কতোটা নিরাপদ – এমন প্রশ্ন এখন বেশিরভাগ ভোক্তার।

ঢাকার বাসিন্দা কুলসুমা বেগম সপ্তাহে অন্তত দুইবার গরুর মাংস খেয়ে থাকেন। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি যেন কোন কিছুতেই ভরসা পাচ্ছেন না।

বিবিসি বাংলাকে মিসেস কুলসুমা আক্ষেপ করে বলেন, “যেখানে গরুর দুধের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক পাওয়া যায়, তাহলে ওই গরুর মাংসেও তো অ্যান্টিবায়োটিক থাকবে। ওই শরীরটা থেকেই তো দুধটা আসে।”

“আমরা এই দূষিত মাংস কিভাবে খাব? মাংস তো আর নিষিদ্ধ করা যাবেনা।”

অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া গরুর মাংস কি নিরাপদ?

সম্প্রতি সরকারের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরীক্ষাতে গরুর দুধের পাশাপাশি, এর মাংসেও অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব শনাক্ত হয়।

এ ব্যাপারে পশু চিকিৎসকরা বলছেন, গরু যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এর শরীরে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো ছাড়া আর কোন উপায় থাকেনা।

কিন্তু পশুর অ্যান্টিবায়োটিক সহজলভ্য হওয়ায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এর যথেচ্ছ ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মর্জিনা আক্তার।

“এখানে যেটা সমস্যা হচ্ছে যে, গরু বাছুরকে কোন প্রেসক্রিপশন ছাড়াই না হলে হাতুড়ে ডাক্তারের মাধ্যমে একটা ওষুধ লিখিয়ে পশুগুলোকে খাইয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ালে কোর্স কমপ্লিট করছেনা। এক কথায় নিয়ম নীতির কোন তোয়াক্কা করছে না কেউ।”

গরুকে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হলে, তাহলে সেটার রেসিডিউটা গরুর শরীরে ওষুধ ভেদে ৭ থেকে ১৫ দিন থেকে যায় বলে জানান মিজ আক্তার।

এই সময়কে গরুর রেস্টিং পিরিয়ড বা উইথড্রয়াল পিরিয়ড বলা হয়ে থাকে।

এখন এই রেস্টিং পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর গরুর দুধ বা মাংস খেলে কোন ঝুঁকি থাকে না।

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার রোধে কি করছে সরকার?

অ্যান্টিবায়োটিকের এমন যথেচ্ছ ব্যবহার ও বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে রুল জারি করে হাইকোর্ট।

সেখানে নিবন্ধিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবেনা বলে উল্লেখ করা হয়।

তারই প্রেক্ষিতে প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা জেলা উপজেলার প্রতিটি ওষুধের দোকানে তদারকি শুরু করেছে বলে জানান অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক।

সেইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন খামারে অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহারের বিষয়ে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের সমন্বয়ে গরুর মাংসের মান পরীক্ষার কথা জানান তিনি।

“আমরা আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের খামারগুলোয় নিয়মিত তদারকিতে নিয়োজিত করেছি। যেসব অ্যান্টিবায়োটিক পশু এবং মানুষ উভয়ের শরীরে ব্যবহৃত হয়। সেগুলোকে অ্যাভয়েড করার কথা বলছি।”

“অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শেষ করা আর ওষুধ খাওয়ানো শেষে এটি বিক্রির আগে ৭ থেকে ১৫ দিন রেস্টে থাকার বিষয়টিও প্রচার করছি। এছাড়া ফার্মেসিগুলোয় চেষ্টা করছি মনিটরিং করার।”

তবে জনবলের অভাব থাকায় পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানান মি. ভৌমিক।

“আমার একটা উপজেলাতে পশু ডাক্তার মাত্র একজন। এখন এই একজন ডাক্তার দিয়ে উপজেলার সব প্রাণীকুলের চিকিৎসা দেয়া রীতিমত অসম্ভব ব্যাপার। এই স্বল্পতার কারণেই মানুষ হাতুড়ে ডাক্তারদের কাছে যাচ্ছে।”

তবে নতুন জনবল সৃষ্টির জন্য একটা প্রস্তাবনা এরইমধ্যে সরকারের কাছে জমা দেয়া হয়েছে বলে জানান মি. ভৌমিক।

তাদের সেই প্রস্তাবনা বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন আছে।

সেটা পাস হলে সমস্যাগুলো অনেকাংশেই সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।

অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া গরুর মাংস খাওয়া যাবে কিভাবে?

গরুর মাংসে যে অ্যান্টেবায়োটিক ব্যবহার করা হয় সেটা যদি মানবদেহে প্রবেশ করে তাহলে বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা থাকে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম।

তবে নিয়ম মেনে গরুর মাংস রান্না করলে বা সংরক্ষণ করলে সেই ঝুঁকি থাকেনা।

যেহেতু বাইরে থেকে গরুর মাংসে অ্যান্টিবায়োটিক আছে কিনা সেটা বোঝার উপায় নেই। এমন অবস্থায় ভোক্তাদের সচেতন হওয়াটা সবচেয়ে জরুরি বলে মনে করেন মিজ তাসনিম।

“আমাদের দেশে যেভাবে গরুর মাংস রান্না করা হয়, ওই তাপে অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব মাংসে আর থাকেনা। কিন্তু মাংসটাকে যখন কাটা হচ্ছে, ধোয়া হচ্ছে তখন এটা ছড়াতে পারে।”

এজন্য কাঁচা মাংস নিয়ে কাজ করার সময় হাতে গ্লাভস পরার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়া রান্নার আগে বা ফ্রিজে সংরক্ষণের আগে মাংস খুব ভালভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে, যেন রক্তের কোন চিহ্ন না থাকে।

সতর্কতা:

কেউ যদি আধা কাঁচা মাংস বা স্টেক, মাংসের কিমা অথবা মাংস সেদ্ধ খেতে পছন্দ করেন তাহলে মিট পয়জনিংয়ে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

চিকিৎসকের মতে, দুষিত মাংস খাওয়ার ফলে ভয়াবহ ফুড পয়জনিং এমনকি রক্তের সংক্রামক রোগ সেপ্টিসেমিয়া হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

তাই বলে আতঙ্কিত হয়ে গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দেয়ার কোন কারণ নেই।

শুধুমাত্র সচেতন হলেই এ ধরণের ঝুঁকি শতভাগ কাটিয়ে ওঠা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

লাইভস্টক

জেনে নিন পুকুরে সহজ উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি

জেনে নিন পুকুরে সহজ উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি
জেনে নিন পুকুরে সহজ উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি

গ্রামীণ অর্থনীতিতে হাঁস পালন একটি লাভজনক ব্যবসা | প্রথম দিকে ছোট আকারের খামার করা ভালো। পরবর্তীতে বাণিজ্যিক আকারে খামার করা যেতে পারে। ডিম পাড়ার জন্য লেয়ার হাঁস পালন করতে হয়। এগুলোর মধ্যে খাকি ক্যাম্বল, ইন্ডিয়ান রানার, দেশি পাতি হাঁস উল্লেখযোগ্য। মাংসের জন্য অন্যান্য প্রজাতির হাঁস পালন করতে হয়।

ছোট হাঁসের বাচ্চা দিনে কমপক্ষে এক ঘণ্টা করে দুই বার পানিতে ছাড়তে হবে। হাঁসের প্রাকৃতিক খাদ্যের প্রতি লোভ বেশি থাকায় সব সময় পানিতে থাকতে চায়। বাচ্চা হাঁসকে বেশি সময় পানিতে রাখা যাবে না সে ক্ষেত্রে ঠান্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে। পূর্ণবয়স্ক হাঁস দিনে ৮-১০ ঘণ্টা পানিতে সাতার কাটাতে পারে |

জেনে নিন পুকুরে সহজ উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি
জেনে নিন পুকুরে সহজ উপায়ে হাঁস পালন পদ্ধতি

খাদ্য

খাবার শুকনো অবস্থায় খাওয়ালে অবশ্যই সঙ্গে পানির পাত্র রাখতে হবে। বাচ্চা হাঁস খাবার মুখে পুরেই পানির সাহায্যে গিলে ফেলে। এ সময় বাচ্চা হাঁস সাবলীলভাবে বেড়ে উঠবে। পরবর্তীতে নিজেদের তৈরি করা খাদ্য খাওয়ানো যাবে। তৈরিকৃত খাদ্যে উপাদান সঠিকভাবে থাকায় বাচ্চার বৃদ্ধি ঠিক মতো হয়। নিজেদের তৈরিকৃত হাঁসের খাদ্য তালিকায় যেসব উপাদান থাকা আবশ্যক তা হলো ধান, চাউলের কুড়া, চাউলের খুদ, গম ভাঙা, গমের ভুষি ইত্যাদি।

এসব দ্রব্য ভালোভাবে মিশিয়ে হাঁসকে খেতে দিতে হবে। তাছাড়া শামুক, ঝিনুক ভেঙে খাওয়ানো যায়। ছোট বাচ্চাকে শামুক-ঝিনুক খুবই অল্প পরিমাণে খাওয়ানো যেতে পারে। উন্নত জাতের হাঁসের খাদ্য চাহিদা কম। এরা সাধারণত ১৬০-১৮০ গ্রাম খাদ্য প্রতিদিন খেয়ে থাকে। হাঁসের দিনের খাবার তিন ভাগে ভাগ করে সকাল, দুপুর ও বিকেল বেলা দিতে হবে। গৃহপালিত হাঁসকে নির্দিষ্ট সংকেতে ডাক দিলে তারা খাবার খেতে চলে আসে। আবার প্রত্যেক দিন নির্দিষ্ট সময় খাবার দিলে ঠিক ওই সময় তারা খাবার খেতে চলে আসবে। হাঁসের বাচ্চা পরিপূর্ণ হয়ে গেলে সে ক্ষেত্রে মাছের পোনা ছাড়তে হলে একটু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। ছোট মাছের পোনা হাঁস ধরে ফেলে বা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। এ ক্ষেত্রে ১৫ দিনের মতো পূর্ণবয়স্ক হাঁসকে বদ্ধ অবস্থায় পালন করা যেতে পারে।

হাঁস এর ডিম সংগ্রহ
হাঁস এর ডিম সংগ্রহ

ডিম সংগ্রহ

সব জাতের হাঁসি সাধারণত ২২-২৩ সপ্তাহের মধ্যে ডিম পাড়া আরম্ভ করে। ডিম পাড়া শুরুর পূর্বে হাঁসিকে সঠিকভাবে খাদ্য দিতে হবে। যদিও ডিম পাড়ার ১৫ দিন আগে থেকে তাদের খাদ্য চাহিদা কমে যায়। ডিম পাড়া অবস্থায় তাদের খাদ্য চাহিদা বৃদ্ধি পায়। ডিম পাড়া অবস্থায় হাঁসিকে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারের জোগান দিতে পারলে দীর্ঘদিন ধরে ডিম পাওয়া যায়। হাঁসি সাধারণত খুব সকাল বা সকালের দিকে ডিম পাড়ে। এজন্য হাঁসিকে খুব সকালে ঘর থেকে ছাড়া যাবে না। একটু দেরি করে ছাড়তে হবে নতুবা পানির মধ্যে ডিম পাড়ার প্রবণতা দেখা যাবে।

প্রথম অবস্থায় হাঁসির ডিম একটু ছোট আকারের হলেও পরবর্তীতে তা স্বাভাবিক আকারের হয়ে যায়। হাঁসের ডিম মুরগির ডিমের চেয়ে আকারে বড় ও ওজন বেশি হয়। সকালের ডিম সংগ্রহ করার সময় খাদ্য খেতে দিতে হবে। ডিম সংগ্রহের পর ওই ডিমে বিষ্ঠা লেগে থাকলে তা পানি দ্বারা ধুয়ে ফেলতে হবে। যদি কোন হাঁসি ডিম না পাড়ে সে ক্ষেত্রে ওই হাঁসিটি চিহ্নিত করে ঝাঁক থেকে বাদ দিতে হবে।

এজন্য হাঁসির সংখ্যা ও ডিম উৎপাদন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করতে হবে। হাঁসি ডিম পাড়বে কি পাড়বে না তা হাত দিয়ে ডিমের থলি পরীক্ষা করে বোঝা যায়। শুধু ডিমের জন্য হাঁস পালন করলে ওই হাঁসের সঙ্গে কোন পুরুষ হাঁস রাখার দরকার নেই। কিন্তু ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর প্রয়োজন হলে ৭-৮টি হাঁসির জন্য ১টি হাঁসা (পুরুষ হাঁস) পালন করতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

লাইভস্টক

গরুর দুধ জ্বরের লক্ষণ, করণীয় ও চিকিৎসা

গরুর দুধ জ্বরের লক্ষণ, করণীয় ও চিকিৎসা
গরুর দুধ জ্বরের লক্ষণ, করণীয় ও চিকিৎসা

উন্নত জাতের গাভী এবং উচ্চ দুধ উৎপাদনে সক্ষম গাভী বাচ্চা প্রসব করবে অথবা করেছে। এমন অবস্থায় খামারীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন তার গাভী বাচ্চা প্রসব করার পরে পড়ে গিয়ে আর উঠতে পারছে না। মনে হচ্ছে যেন মারা গেছে, হাত পা ছেড়ে দিয়েছে। তখন দ্রুত অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের স্বরনাপন্ন হয়। পরে চিকিৎসায় গাভী সুস্থ হয়ে উঠে। এই রোগের নাম মিল্ক ফিভার বা দুগ্ধ জ্বর। এটিই কেবল মাত্র একটি রোগ যার নামেই ফিভার (জ্বর) উল্লেখ্য আছে কিন্তু আসলে এই রোগে কোন জ্বর দেখা যায়না। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এই রোগ খুবই পরিচিত। বিশেষত যারা উন্নত জাতের এবং ভালো মানের সংকর জাতের গাভী লালন পালন করেন। প্রতিবার বাচ্চা প্রসবের সময় বা আগে পরে না হলেও প্রায়ই ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়। যার কারণে কিছু মানুষ গাভী পালনে ভয় পায়। এই রোগ একটি মেটাবোলিক রোগ, যা সাধারনত ক্যালসিয়ামের অভাব জনিত কারনেই হয়ে থাকে।

রোগের কারনঃ এটা পুষ্টি উপাদান ঘাটতি জনিত রোগ। শরীরের সঠিক ভাবে কার্য সম্পাদন করতে যে পরিমাণ ক্যালসিয়াম প্রয়োজন তার অভাব হলে এই রোগ হয় । বাচ্চা প্রসবের সময় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হয় অনেক বেশি পরিমাণে। যার কারনে গাভী হঠাৎ পড়ে যায় এবং ঘাড়ের মাথা দিয়ে বসে থাকে।

রোগের কারনঃ
ক) রক্তে ক্যালসিয়াম কমে গেলে এই রোগ হতে পারে। সাধারনত ১০০ সি সি রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমান থাকতে হয় ৯ মিলিগ্রামেরও বেশি। কোন কোন বিশেষ কারণে এই মাত্রা উল্লেখ্যযোগ্য হারে কমে যেতে পারে, এমনকি তা ৩/৪ মিলিগ্রামে নেমে আসে। আর তখনই এই রোগের সৃষ্টি হয়।
খ) বাচ্চা প্রসবের সময় জরায়ুতে যদি ফুল আটকে থাকে বা কোন কারনে যদি জরায়ু বাইরের দিকে চলে আসে, কিংবা জরায়ুর কোন স্থানে যদি বাচ্চা আটকে থাকে ,তাহলেও এই মিল্ক ফিভার হতে পারে।
গ) কিছু হরমোনের বৈরি কার্যক্রমের কারনেও হতে পারে। যেমন এড্রেনালিন গ্রন্থির রস নিঃসরণের তারতম্যের কারণেও এই রোগ হতে পারে।
ঘ) গাভীর দেহে বিভিন্ন খনিজের ঘাটতির ফলে স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া ব্যহত হওয়ার জন্যেও এই রোগ হতে পারে।
ঙ) বাচ্চা প্রসবের পর পালান একবারে খালি করে দুধ দোওয়া হলেও এই রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
গাভী গর্ভকালীন সময়ে নিজের রক্ত থেকে ক্যালসিয়াম বাচ্চার( ফিটাসের ) দেহে পাঠায়। প্রায় প্রতি ঘন্ঠায় ০২৫ বা প্রতিদিন ১০ গ্রাম এবং বাচ্চা প্রসবের ২৪ ঘন্টা মধ্যে প্রতিঘন্ঠায় ১ গ্রাম বা সারাদিনে সর্বোচ্চ ৩০ গ্রাম ক্যালসিয়াম প্রসব কালীন দুধে বের হয়। এই কারণেই গর্ভকালীন এবং প্রসবোত্তর উপযুক্ত পরিমানে ক্যালসিয়ামের সরবরাহ না থাকলেই এই রোগ বেশি হয়।
আরো কিছু কারণে এই ক্যালসিয়াম হ্রাস পায় যথা-

প্রথমত: গাভীর পাকান্ত্র থেকে শোষিত ও অস্থি থেকে বের হয়ে আসা ক্যালসিয়ামের পরিমাণ ফিটাস ও কলোস্ট্রামের চাহিদার পরিমাণ অপেক্ষা অধিক কম হলে এই রোগ হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় এবং কলস্ট্রাম পিরিয়ডে পাকান্ত্রে সুষ্টভাবে ক্যালসিয়াম শোষিত না হলে। আর যেসব কারনে সুষ্ট ভাবে হয় না তা হতে পারে-
খাদ্যে ক্যলসিয়ামের অভাব
ক্ষুদ্রান্তে অদ্রবণীয় ক্যালসিয়াম অক্সালেটের সৃষ্টি
অন্ত্র প্রদাহ
ক্যালসিয়াম ফসফরাসের অনুপাতের তারতম্য
ভিটামিন ডি এর অভাব ইত্যাদি।

এপিডেমিওলজি
এপিডেমিওলজি

এপিডেমিওলজি

ক) প্রি-ডিসপোজিং ফ্যাক্টরস (pre disposing factors)
বয়সঃ সাধারণত বয়স্ক গাভিতে বেশি দেখা যায়। ৪/৫ বাচ্চা প্রসবের পর এর প্রাদুর্ভাব বাড়ে। কারণ বৃদ্ধ বয়সে একদিকে অস্থি থেকে ক্যালসিয়াম মবিলাইজেশন হ্রাস, অন্যদিনে পাকান্ত্রে ক্যালসিয়াম শোষণ হ্রাস পায়। উচ্চ ফসফরাস যুক্ত খাদ্য ভিটামিন ডি কে তার মেটাবলাইটে বাধা প্রদান করে ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ
জাতঃ জার্সি জাতের গাভী এরোগ বেশি আক্রান্ত হয়। আকারে ছোট কিন্তু বেশি দুধ দেয় বলেই এই সমস্যা হতে পারে।
পুষ্টিঃ একটানা ৪৮ ঘন্ঠা অনাহারে বা নিম্ন মানের খাবার পরিবেশন করলে ক্যালসিয়ামের অভাবে হতে পারে।
সময়কালঃ ঘাস খাওয়ানোর চেয়ে ঘরে বেধে খাওয়ালে এই সমস্যা বেশি হতে পারে।
হরমোনঃ প্রসব ও ইস্ট্রাস পিরিয়ডে ইস্ট্রোজেন হরমোন বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ক্যালসিয়াম বেটাবলিজমে বাধা পায়।

প্রাদুর্ভাব ও সংবেদনশীলতা (Occurance & susceotibility)
বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সব দেশেই অধিক দুধ উতপাদনকারী গাভী এবং অনেক সময় ছাগী, ভেড়ী ও মহিষেরও এই রোগ হয়।
দুদ্ধ জ্বর বিক্ষিপ্ত প্রকৃতির রোগ তবে খামার ভুক্ত গাভীর এই সমস্যা ২৫-৩০ ভাগ হওয়ার ইনিহাস রহিয়াছে।
প্রাদুর্ভাবের পর্যায়ঃ সাধারণত তিন পর্যায়ে রোগটির লক্ষন প্রকাশ পায়-১। গর্ভাবস্থার শেষ কয়েকদিন,২। প্রসবকালীন ও ৩। প্রসবোত্তর ( ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত)।

অর্থনৈতিক গুরুত্বঃ
এই রোগের ফলে গাভীর সাময়িক দুধ উৎপাদন হ্রাস পায়। ফলে খামারী অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
দ্রুত চিকিতসা নিলে ভাল হয়ে যায় , তবে যদি বেশি দেরি করা হয় তাহলে যে কোন সমস্যা হতে পারে।
এই রোগে মৃত্যুর হার কম।
রোগের লক্ষণঃ এই রোগের নামে জ্বর থাকলেও আসলে জ্বর হয়না। তবে নিম্নোক্ত সমস্যা পরিলক্ষিত হয়।
গাভীর তাপমাত্রা হ্রাস পায় অনেক সময় স্বাভাবিক থাকে।
দুদ্ধ জ্বরে আক্রান্ত গাভীর উপসর্গ গুলোকে তিন ভাবে ভাগ করা যায়-
প্রথম পর্যায়ঃ
মৃদু উত্তেজনা ও অনৈচ্ছিক পেশী খিঁচুনি।
স্নায়ুবিক দুর্বলতা ,অতিসংবেদনশীলতা, ক্ষুধা মন্দা ও দুর্বলতা।
ভাগীর হাটতে ও খাদ্য গ্রহণে অনিচ্ছা ,পরবর্তীতে পিছনের পা দ্বয় শক্ত হয় এবং টলমল করে হাঁটে।
হ্রদ গতি বৃদ্ধি পায় এবং দেহের তাপমাত্রা সামান্য কিছু বৃদ্ধি পায়।
এসব উপসর্গ সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য থাকে এবং অলক্ষিতভাবে চলে যায়।
এপর্যায়ে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে (৭৫ /) নেমে আসে
দ্বিতীয় পর্যায়ঃ
গাভী মাটিতে সুয়ে পড়ে এবং আর উঠে দ্বাড়াতে পারেনা।
গাভী শুয়ে মাথা ও ঘাড় বাকিয়ে ফ্লাঙ্কের উপর রাখে।
আংশিক পক্ষাঘাত() ও অবসাদ প্রকাশ পায় এবং রক্তে ক্যালসিয়াম অধিক মাত্রায় হ্রাস পায়।
সুক্ষ পেশী কম্পন ও ও গভীর ও দ্রুত হ্রদ গতি থাকে।
গাভীর দেহের প্রান্ত বিশেষ করে কান ও নাক ঠান্ডা থাকে এবং দেহের তাপমাত্রা ৯৬-১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকে।
তৃতীয় পর্যায়ঃ
প্রাণী অবসাদ গ্রস্থ থেকে দেহের এক পাশে মাথা গুজে শুয়ে থাকে। এই বিশেষ ভঙ্গী দুগ্ধ জ্বরের বিশেষ বৈশিষ্ঠ্য।
পেট ফেঁপে যায়।
চিকিৎসা বিহীন ভাগীর মৃত্যু ঘটে।
রক্তে ক্যালসিয়ামের পরিমান সর্বনিম্নে নেমে যায় (১ mg/dl) ।
প্রসব পুর্ব ও প্রসবকালীনঃ
প্রসবের পুর্বে দুদ্ধজ্বর হলে প্রসব আরম্ভ হয়ে বন্ধ হয়ে যায়।
বাচ্চা প্রসবের জন্য কোন কোথ দেয়না।
জরায়ুর নিস্ক্রিয়তার ফলে প্রসবে বিঘ্ন ঘটে।
বাচ্চা প্রসব হলে হাইপোক্যালসেমিয়ায় জরায়ুর নির্গমন ঘটে।
রোগ নির্নয়ঃ সাধারন্ত নিম্নোক্ত বিষয়ের উপর নির্ভর করে রোগ নির্নয় করতে হয়।
ক) রোগের ইতিহাস নিয়ে এবং এর উপর ভিত্তি করে-
১. গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের ইতিহাস , প্রাপ্ত বয়স্ক ভাগী বিশেষ করে ৫-৯ বছর বয়সে এই রোগ বেশি হয়।
২. সাধারণত বাচ্চা প্রসবের ১৫ মিনিট পরে গাভী , ৩০ মিনিট পরে বকনা, এবং প্রসববিঘ্ন যুক্ত গাভী ৪০ মিনিট পর দাঁড়ায় । এই সময়ের মধ্যে বাচ্চা প্রসবের পর না দাঁড়ালে মিল্ক ফিভার রোগ সন্দেহ এবং পরিক্ষা করা প্রয়োজন।
৩. রোগের লক্ষনের সাথে প্রকাশিত উপসর্গ মিলিয়ে রোগ নির্নয় করা হয়।
৪. রক্তের ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম নির্নয় করেও এরোগ নির্নয় করা হয়।
চিকিৎসাঃ
রোগের লক্ষন প্রকাশের সাথে সাথে অভিজ্ঞ ভেটেরিনারিয়ানের পরামর্শ নিন। তাহলে দ্রুতই এই রোগের সমাধান করা যাবে। যেমন চিকিৎসা দেয়া হয়-
১। যত দ্রুত সম্ভব ক্যালসিয়াম বোরো গ্লুকোনেট সলুশন ইনজেকশন দিতে হবে। প্রা ৪৫০ কেজি দৈহিক ওজনের গাভীকে ৫০০ মিলি ক্যালসিয়াম বোরো গ্লুকোনেট যার মধ্যে প্রায় ১০৮ গ্রাম ক্যলসিয়াম থাকে, অর্থেক মাত্রা ত্বকের নিচে এবং বাকী অর্থেক শিরায় ৫-১০ মিনিট ধরে দেয়া হয়।
২। সঠিক ভাবে সঠিক মাত্রায় ক্যালসিয়াম রক্তে গেলেই গাভী দ্রুত সাড়া প্রদান করে সুস্থ্য হয়ে উঠবে। তবে প্রায় ১৫ গাভীকে আলাদা করে চিকিৎসা বা ছাটায়ের জন্য রাখা হয়।
৩। যদি মাত্রা অপর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম সলুশন দিয়ে চিকিৎসা করলে গাভী সুস্থ্য ও হয়না এবং দাড়াতেও পারেনা। অথবা সাময়িক ভাবে পশু সুস্থ্য হলেও পুনরায় একই সমস্যার সম্মুক্ষীন হয়। অপর দিকে ক্যালসিয়াম সলুশন অতিরিক্ত মাত্রায় এবং দ্রুত শিরায় দিলে প্রানীর মৃত্যুর আশংখ্যা থাকে।
বর্তমানে ক্যালসিয়াম , ফসফরাস এবং ম্যাগনোসিয়াম গ্লুকোজ সমন্বয়ে সলুশন বাজারে পাওয়া যায়। দুদ্ধজ্বরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসের মাত্রা হ্রাস পায় কিন্তু ম্যাগনেসিয়াম মাত্রা বৃদ্ধি পায়। তাই দুদ্ধ জ্বরের চিকিৎসার ওষুধ নির্বাচনের জন্য সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ
প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ এ উত্তম। দুই ভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়-
১। খাদ্য সংশোধন(Feed correction)
২। প্রি ডিস্পোজিং ফ্যাক্টরস সংশোধন  ( Predisposing factors correction)
প্রথমতঃ খাদ্য সংশোধন , হতে পারে এমন-
গাভী শুষ্ক অবস্থায় ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য সরবরাহ করা।
তবে শুধু ক্যালসিয়াম দেয়া যাবেনা ঐ সময়- কারণ
দেহকে সম্পর্ণ পাকান্ত্রের ক্যালসিয়াম শোষনের উপর নির্ভরশীল করে তুলে। অতে অস্থির ক্যালসিয়াম মবিলাইজেশন প্রায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে। প্রসব ও কলস্ট্রামের প্রচুর ক্যালসিয়াম প্রয়োজনে অস্থি থেকে দ্রুত ক্যালসিয়াম মবিলাইজেশন হতে পারেনা।
খাদ্যে পরিমাণ মত ফসফরাস সরবরাহ।
গাভীর কনসেন্ট্রেট খাদ্যে শতকরা ১৫ ভাগ মনো সোডিয়াম ফসফেট মিশিয়ে খাও্যালে এই রোগ প্রতিহত হয়।

দ্বিতীয়তঃ প্রি ডিস্পোজিং ফ্যাক্টোরস সংশোধন
বয়সঃ বয়স্ক গাভির প্ররযাপ্ত পরিচর্যা নিতে হবে।
জাতঃ জার্সি জাতের এই রোগ প্রতিরোধের জন্য বিশেষ যতœ ও ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন।
গাভীর শুষ্ক ও প্রসবকালীন এবং প্রসবোত্তর সুষম পুষ্টির ব্যবস্থা করা।
একটু সচেতন হয়ে আমরা গাভীর ব্যবস্থাপনা করলেই এই রোগ হতে সহজেই আমাদের প্রানীকে রক্ষা করতে পারবো। আর রোগ দেখা দিলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিয়ে দ্রুত সুস্থ করা যায়। ফলে আমাদের দুদ্ধ উৎপাদন ও স্বাভাবিক থাকবে আমরা অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতে পারব।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

লাইভস্টক

কোয়েল পাখির জাত

কোয়েল পাখির জাত
কোয়েল পাখির জাত

কোয়েল পোল্ট্রির ক্ষুদ্রতম সদস্য। বিশ্বব্যাপী বহু বুনো প্রজাতি/কোয়েল পাখির জাত রয়েছে, যেমন- ‘রেইন কোয়েল’, ‘ক্যালিফোর্নিয়া কোয়েল’, ‘মাউন্টেন কোয়েল’, ‘মন্টেজুমা কোয়েল’, ‘হারলেকুইন কোয়েল’, ‘রঙিলা কোয়েল’ ইত্যাদি।

তবে এসব কোয়েল পাখির জাতের মধ্যে ‘জাপানি কোয়েল’ ও ‘বব হোয়াইট কোয়েল’ ছাড়া অন্য কোন প্রজাতিকে যেমন গৃহপালিত করা হয়নি, তেমনি বাণিজ্যিকভিত্তিতে পোল্ট্রি হিসেবে এই দু’প্রজাতি ছাড়া অন্য কোন কোয়েল পালন করা হয় না।

জাপানি কোয়েল ডিম মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হলেও বব হোয়াইট কোয়েল মূলত মাংসের জন্যই পোষা হয়।

বাণিজ্যিক জাপানি কোয়েল পাখির জাত বেশ কয়েকটি আছে এবং উপজাতও রয়েছে, যেমন- ‘ফারাও’, ‘ব্রিটিশ রে’, ‘ইংলিশ হোয়াইট’, ‘ম্যানচুরিয়ান গোল্ডেন’, ‘টুক্সেডো’, ‘ফন/ব্রাউন’ কোয়েল ইত্যাদি।

নিম্নে ডিম মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা জাপানি কোয়েল পাখিরফারাওফনউপজাতের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো

কোয়েল পাখির জাত ‘ফারাও’
কোয়েল পাখির জাত ‘ফারাও’

কোয়েল পাখির জাত ‘ফারাও’

উৎপত্তি প্রাপ্তিস্থান 

এই উপজাতের জাপানি কোয়েলটি বিশ্বে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এদের উৎপত্তি জাপান, চীনসহ এশিয়া অন্য কয়েকটি দেশে। জাপানে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে এর ডিম উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোহয়েছে। 

বৈশিষ্ট্য

  • এরা ছোট ও গাট্টাগোট্টা পাখি।
  • পালকের মূল রং বাদামি; এর উপর থাকে গাঢ় চকোলেট বা কালো রঙের ছোঁপ।
  • বুকের উপরের অংশের বাদামি রঙের উপর কালো বা খয়েরি গোলাকার ফোঁটা থাকে।
  • বুকের নিচের অংশ তামাটে।
  • এরা ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিমপাড়া শুরু করে। বার্ষিক ডিম উৎপাদন- ২৭৫-৩০০টি।
  • প্রাপ্তবয়ষ্ক কোয়েলের ওজন- ১৫০- ১৭৫ গ্রাম।
কোয়েল পাখির জাত ‘ফন বা ব্রাউন’
কোয়েল পাখির জাত ‘ফন বা ব্রাউন’

কোয়েল পাখির জাত ‘ফন বা ব্রাউন’

উৎপত্তি প্রাপ্তিস্থান: এদের উৎপত্তি ও প্রাপ্তিস্থান ফারাওয়ের মতোই। 

বৈশিষ্ট্য:

  • এদের পালকের রঙের ধরন ফারাওয়ের মতোই, কিন্তু রং একেবারেই হালকা। কোন কালচে ভাব নেই।
  • বাচ্চাগুলোর দেহের কোমল পালকের রং হলদে; এর উপরের ছোপগুলো বেশ হালকা।
  • এরা অত্যন্ত শান্ত প্রকৃতির। ফারাওয়ের মতো মারামারি বা ঠোঁকরাঠুকরি করে না।
  • বাকি সব বৈশিষ্ট্য ফারাওয়ের মতোই।
  • এরা ৬-৭ সপ্তাহ বয়সে ডিমপাড়া শুরু করে। বার্ষিক ডিম উৎপাদন- ২৭৫-৩০০টি।
  • এদের প্রাপ্তবয়ষ্ক কোয়েলের ওজন- ১৫০-১৭৫ গ্রাম।
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

লাইভস্টক

গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে

গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে
গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে

আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে প্রাণীর অভ্যন্তরীণ বিপাকীয় এবং অভ্যাসগত পরিবর্তন হয়। বাংলাদেশে সংকরায়ণের ফলে তৈরি জাত শীত সহ্য করতে পারে না। গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে।

খাদ্য অভ্যাস : শীতকালে প্রাণী শরীরে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে দুধের উৎপাদন ও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু বাড়তি উৎপাদনের জন্য চাই বাড়তি শক্তি। তাই শীতকালে গরুকে অধিক খাবার দেয়া জরুরি। তবে একই সাথে এটাও মনে রাখতে হবে শীতকালে গরুর শরীরে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের প্রবলতা দেখা যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে থেকে রক্ষা করতে গরুকে অধিক আশযুক্ত খাবার যেমন ঘাস খড় দেয়া আবশ্যক।

পানি : শরীরবৃত্তীয় কাজে কম পানি দরকার হওয়ায় এবং অধিক ঠান্ডা হওয়ায় শীতকালে সকল প্রাণী পানি পানের পরিমান কমিয়ে দেয়। এই সমস্যা উত্তরণের জন্য গরুকে ট্যাংকে সংরক্ষিত বাসি ঠান্ডা পরিবেশন থেকে বিরত থাকতে হবে। গরুর জন্য বিশুদ্ধ ফ্রেশ পানির ব্যবস্থা করতে হবে।

বাসস্থান : শীতকালে ঠান্ডা বাতাস যেন সরাসরি গরুর গায়ে না লাগে এইজন্য ঠান্ডা বাতাস প্রবেশের রাস্তা গুলো চটের বস্তা অথবা পলিথিন বা অন্য কোন উপায়ে বন্ধ করে দিতে হবে। ঠান্ডা বাতাসে গরুর নিউমোনিয়া সহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে। প্রয়োজনে গরুকে পুরান কম্বল বা পাটের বস্তা এই জাতীয় জিনিস দিয়ে রাতে জড়িয়ে রাখতে হবে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা: ঠান্ডায় গরুর শেডে যেন পানি জমে না থাকে অথবা গরুর প্রস্রাব জমে না থাকে এবং ফ্লোর যেন অধিক শুষ্ক থাকে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। দরকার হলে ফ্লোর ম্যাট ব্যবহার করতে হবে।

রোগ ব্যাধি : শীতকালে গরু নিউমোনিয়া, কাশি সহ ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই এই রোগের বিষয়ে বিশেষ সচেতন থাকতে হবে। ঠান্ডা জনিত কোনো সমস্যার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত প্রাথমিক চিকিৎসা করতে হবে। প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাতের কাছে বিশুদ্ধ মধু এবং তুলসী গাছ রাখতে হবে।

বাছুরের যত্ন : ঠান্ডায় সবচে বেশি আক্রান্ত হয় নবজাতক বাছুর। যেহেতু বাছুরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাই ঠাণ্ডাজনিত রোগের শিকার ও সবচে বেশি হয়। তাই শীতকালে অবশ্যই বাছুরকে গরম কাপড় দিয়ে জড়িয়ে রাখতে হবে এবং গরম এবং শুষ্ক জায়গা রাখতে হবে। কোনো প্রকার ঠান্ডা জনিত সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
শীতে আপনার বিশেষ যত্নই আপনার খামারকে শীতকালীন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। আর এজন্য আপনার সচেতনতা সবচে বেশি জরুরি।

গরুর শীতকালীন পরিচর্যা করবেন যেভাবে সংবাদের তথ্য বাংলাদেশ গবাদি পশু ও পাখি খামারি উন্নয়ন সংগঠন নামক কমিউনিটি সংস্থা থেকে নেওয়া হয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

লাইভস্টক

পোলট্রি খামারে শীতকালীন পরিচর্যা

পোলট্রি খামারে শীতকালীন পরিচর্যা
পোলট্রি খামারে শীতকালীন পরিচর্যা

বর্তমানে আমিষের অভাব দূরীকরণে আমাদের দেশে পোল্ট্রি পালনের বিষয়টিকে বেশ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকার দেশের যুব সমাজের জন্য স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ ঋণ দিয়ে পোল্ট্রি পালনে উত্সাহিত করছে।

শীতকালে পোল্ট্রি খামারের বিশেষ যত্ন না নিলে কমে যেতে পারে ব্রয়লারের ওজন বৃদ্ধি, লেয়ার খামারে ডিমের সংখ্যা এবং বেড়ে যেতে পারে মৃত্যু ঝুঁকি। তাই শীতকালে মুরগির বাচ্চার সঠিক তাপমাত্রা সরবরাহ করা একটি প্রধান সমস্যা।

এছাড়াও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খামারিরা মুরগির ঘরে পলিথিন বা মোটা কাপড়ের পর্দা ঝুলিয়ে রাখেন। এ কারণে মুরগির বাচ্চার ঘরে মুক্ত বাতাস বিশেষ করে অক্সিজেন সরবরাহে অপ্রতুলতা, এমোনিয়া গ্যাস বৃদ্ধির কারণে শ্বাসকষ্ট, মুখমণ্ডল ফুলে যাওয়াসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা যায়। ফলে প্রতিদিনই বাচ্চা মারা যায়। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিচের বিষয়গুলো ভালভাবে খেয়াল রাখতে হবে:

১. ঘরে অবশ্যই ছালার বা চটের পর্দা ঝুলাতে হবে।

২. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ডাবল করে চটের পর্দা সেলাই করে তবেই পর্দা ঝুলাতে হবে। অতিরিক্ত শীতে চিক গার্ডের চারদিকে এবং উপরে মশারীর মত করে চটের পর্দা ঝুলানো যেতে পারে।

৩. ব্রুডার বক্সে ২০০ ওয়াটের বাল্ব লাগিয়ে ব্রুডিং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এছাড়াও তাপ দেওয়ার ঘরে অতিরিক্ত কিছু বাল্ব রিফ্লেকটারসহ নিচু করে ঝুলানো যেতে পারে এবং প্রয়োজন অনুসারে এগুলো জ্বালাতে হবে।

৪. লোডশেডিং এবং তীব্র শীতের সময় তাপ দেয়ার ঘরে চিক গার্ডের চারদিকে প্রয়োজনমত কেরোসিনের স্টোভ জ্বালিয়ে ব্রুডিং তাপমাত্রা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। কেরোসিনের স্টোভের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যেগুলো নীলাভ আগুন বের হয় এবং যেগুলো হোটেল রেস্তরাঁয় ব্যবহূত হয়।

৫. ব্রুডিং তাপমাত্রা কম হলে বাচ্চা এক জায়গায় জড়ো হয়ে গাদাগাদি করে থাকে, বিশেষ করে রাতের বেলায় এবং এতে করে নিচে চাপে পড়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে অনেক বাচ্চা মরে যেতে দেখা যায়। এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য ঘরের তাপমাত্রা অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এবং মাঝে মাঝে বাচ্চাগুলোকে নাড়িয়ে দিতে হবে যেন অনেকক্ষণ একসাথে গাদাগাদি করতে না পারে।

সবসময় মনে রাখতে হবে ইলেকট্রিক ব্রুডারের মাধ্যমে তাপ সরবরাহ করার চেয়ে গ্যাস ব্রুডার ব্যবহার করাই সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত। কারণ ইলেকট্রিক ব্রুডার ব্যবহারের মাধ্যমে মুরগির ঘরে আলোর কর্মসূচি সঠিকভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। বিশেষ করে শীতকালে ইলেকট্রিক ব্রুডারের পাশাপাশি গ্যাস ব্রুডার ব্যবহার করলে সঠিকভাবে আলোর কর্মসূচি পালন করা যাবে, সেইসাথে ব্রুডিং তাপমাত্রাও যখন যা প্রয়োজন সেভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। যেমন- ১ম সপ্তাহে ব্রুডিং তাপমাত্রা:৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইড, ২য় সপ্তাহে ব্রুডিং তাপমাত্রা:৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইড, ৩য় সপ্তাহে ব্রুডিং তাপমাত্রা:৮৫ ডিগ্রি ফারেনহাইড, ৪র্থ সপ্তাহে ব্রুডিং তাপমাত্রা:৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইড, ৫ম সপ্তাহে ব্রুডিং তাপমাত্রা: ৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইড রাখতে হবে তবে চিক গার্ড খুলে দিতে হবে। ব্রুডিং -এর সময় প্রথম ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত দৈনিক একবেলা প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম করে Electrolyte খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যাবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ