পরিবেশ
কলা, বালি, কক্ষপথের জায়গা এবং আরো তিনটি জিনিস বিশ্ব থেকে যে কারণে দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে
ঘাটতি তৈরি হওয়া বা অভাব বোধ করা এমন একটি অনুভূতি, আমাদের যার সঙ্গে পরিচিত হওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
আপনি হয়তো শুনেছেন যে, পানি, তেল বা মৌমাছির মতো নানা জিনিসের ঘাটতি ক্রমে বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু পৃথিবীর আরো অনেক সম্পদ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে অথবা ঠিকমতো ব্যবহার না হওয়ায় বিলুপ্ত হতে বসেছে। কিন্তু এগুলো আমাদের প্রাত্যহিক জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে।
এখানে সেরকম ছয়টি বিষয়ের বর্ণনা করা হলো।
১. কক্ষপথে জায়গা কমে যাচ্ছে
২০১৯ সাল পর্যন্ত কক্ষপথে প্রায় পাঁচ লাখ বস্তু পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।
এর মধ্যে মাত্র ২০০০ আসলে কার্যক্ষম-স্যাটেলাইট, যা আমরা যোগাযোগ, জিপিএস বা আমাদের প্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোর দেখার কাজে ব্যবহৃত হয়।
বাকি জিনিসগুলো রকেট নিক্ষেপণ এবং কক্ষপথে আগের নানা সংঘর্ষের ফলে তৈরি হওয়া আবর্জনা।
কিন্তু তাতে সমস্যা কোথায়?
এই পাঁচ লাখ বস্তু এখন পর্যন্ত সনাক্ত করা হয়েছে-সেই সঙ্গে প্রতিদিনই কক্ষপথে নতুন নতুন জিনিস নিক্ষেপ করা হচ্ছে।
প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, কক্ষপথে কোন কিছু পাঠানো ততই সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কিন্তু কক্ষপথে কোন ট্রাফিক কন্ট্রোলের ব্যবস্থা নেই এবং কক্ষপথে থাকা এসব অপ্রয়োজনীয় এবং উচ্ছিষ্ট জিনিসপত্র পরিষ্কার করারও এখন পর্যন্ত কোন প্রযুক্তি নেই। ফলে এ ধরণের জিনিসে পৃথিবীর চারদিকের কক্ষপথ ক্রমেই ভরে যাচ্ছে।
এগুলোর সংখ্যা যত বাড়বে, কক্ষপথে ব্যস্ততা যত বেশি হবে, তখন এসব বস্তুর সঙ্গে আমাদের দরকারি উপগ্রহগুলোর, যা আমাদের কাজে, নকশায়, মোবাইল ফোনের যোগাযোগ, আবহাওয়া নজরদারি কাজ করে-সেগুলোর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে ক্ষতির ঝুঁকি বাড়বে।
কিন্তু এখন পর্যন্ত এই সমস্যার কোন সমাধান কারো কাছে নেই।
২. বালি
আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, বালির ঘাটতি তৈরি হওয়া কিভাবে সম্ভব যেখানে আমাদের সৈকত আছে, মরুভূমি ভর্তি বালু আছে?
কিন্তু সত্যিটা হলো, বালি হচ্ছে পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বেশি তুলে নেয়া কঠিন পদার্থ- যার সঙ্গে নুড়িও থাকে। জাতিসংঘ বলছে, প্রাকৃতিকভাবে যে হারে বালু তৈরি হয়, আমরা তার চেয়ে অনেক বেশি হারে এর ব্যবহার করছি।
প্রাত্যহিক নির্মাণ, ভূমি পুনরুদ্ধার, পানি বিশুদ্ধিকরণ, এমনকি কাঁচ ও মোবাইল ফোন তৈরিতে বালি ব্যবহার করা হচ্ছে।
যেহেতু বালি কমে যাওয়ার ফলে ভঙ্গুর ইকো-সিস্টেমকে হুমকিতে ফেলছে, এ কারণে বিশ্বব্যাপী দাবি উঠেছে যে, এই নাজুক পদার্থটির অত্যধিক ব্যবহারের ব্যাপারে নজরদারি ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৩. হিলিয়াম
উৎসব করার সময় যখন বাতাস ভর্তি বেলুন আকাশে ছেড়ে দেন, সেটা নিয়ে খানিকটা অনুশোচনা করার সময় সম্ভবত এসে গেছে।
হিলিয়াম গ্যাস সীমিত একটি সম্পদ, যা মাটির অনেক নীচ থেকে বের করে আনা হয়। আমাদের হাতে আর মাত্র কয়েক দশক সময় রয়েছে, যার মধ্যে এই গ্যাসের মজুদ ফুরিয়ে যাবে।
কোন কোন বিশেষজ্ঞ ধারণা করেন, এই গ্যাসের আর মাত্র ৩০ থেকে ৫০ বছরের মজুদ রয়েছে।
হয়তো মনে হতে পারে, এতে না হয় বাচ্চাদের অনুষ্ঠানের মজা খানিকটা কমে যাবে। কিন্তু এর ক্ষতি আরো বড়।
হিলিয়াম গ্যাস চিকিৎসায় খুব জরুরি একটি অনুসঙ্গ : এমআরআই করতে ব্যবহৃত চুম্বককে এই গ্যাস ঠাণ্ডা রাখে।
এমআরআই হচ্ছে এমন একটি যুগান্তকারী রোগ নির্ণয়কারী ব্যবস্থা, যা ক্যান্সার, মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের আঘাত নির্ণয় করতে পারে।
৪. কলা
বাণিজ্যিক উদ্দেশে যে কলার চাষ করা হয়, তার বেশিরভাগই এখন ‘পানামা ডিজিজ’ নামের একটি ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হচ্ছে।
আমরা যে কলা খাই, তার বেশিরভাগ ক্যাভেন্ডিস জাতের, যা সরাসরি এসেছে একটি মাত্র গাছ থেকে-বাকিগুলো সব ক্লোন হয়ে এসেছে। ফলে কলা গাছের ভেতর পানামা রোগটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে।
অতীতেও এরকমটা ঘটেছে। ১৯৫০ সালে ঠিক একই রকমের একটি রোগে বিশ্বের কলা চাষ বন্ধ হয়ে যায়। তখন চাষিরা গ্রস মাইকেল জাত থেকে সরে এসে ক্যাভেন্ডিস জাতের কলা চাষ করতে শুরু করেন।
বিজ্ঞানীরা এখন কলার নতুন জাত উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যা এই ফাঙ্গাস প্রতিরোধ করতে পারবে, সেই সঙ্গে কলার স্বাদও বজায় থাকবে।
৫. মাটি
যদিও আমাদের পৃথিবীর মাটি হঠাৎ করে পৃথিবী থেকে কোথাও পড়ে যাবে না, তবে অব্যবস্থাপনার কারণে এটি নিয়েও উদ্বেগের কারণ আছে।
মাটির সবচেয়ে উপরের অংশ থেকে গাছপালা বা উদ্ভিদ তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ সংগ্রহ করে।
ডব্লিউডব্লিউএফ নামের একটি এনজিও- যারা বিশ্বের প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করে- ধারণা করছে যে, গত ১৫০ বছরে বিশ্বের মোট ভূমির অর্ধেকের মতো উপরের মাটি হারিয়ে গেছে। কিন্তু এক ইঞ্চি জমি প্রাকৃতিকভাবে তৈরি হতে পাঁচশো বছর লাগে।
নদী বা সাগরের ভাঙ্গন, ব্যাপক মাত্রায় কৃষিকাজ, বনভূমি উজাড় করা এবং বিশ্বের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলেই ওপরের মাটি হারিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়, যার ওপর বিশ্বের খাদ্য উৎপাদনের বড় অংশটি নির্ভর করে।
৬. ফসফরাস
প্রথমে শোনার পর মনে হতে পারে যে, ফসফরাস কীভাবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে জরুরি হতে পারে?
কিন্তু মানব ডিএনএ গঠনের জন্য এটা শুধুমাত্র জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিতেই যে গুরুত্বপূর্ণ তা নয়, বরং এটি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত দরকারি একটি সার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যার কোন বিকল্প এখনো জানা নেই।
মাটি থেকে এসে উদ্ভিদ এবং পশু বর্জ্যের মাধ্যমে এটি আবার এটি মাটিতে ফিরে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন ফসলের সঙ্গে সঙ্গে ফসফরাস শহর এলাকায় চলে আসছে এবং শেষপর্যন্ত সেটি আমাদের পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে সাগরে গিয়ে মিশছে।
যেভাবে এখন চলছে, তাতে ধারণা করা হচ্ছে যে, আমাদের বর্তমান ফসফরাসের খনিগুলো আর ৩৫ থেকে ৪০০ বছর পর্যন্ত যোগান দিতে পারবে। তারপরে হয়তো আমাদের বেশি ক্ষুধার্ত বোধ করতে হবে।
পরিবেশ
সুতার রঙে ‘রঙিন’ মানুষের দুঃখের কাব্য
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার কাঁঠালতলার ফুরিন্দা গ্রামে সুতার রঙে প্রায় রঙিন হয়ে যাওয়া মানুষের দেখা মেলে। তবে জীবনটা সেই অর্থে রঙিন নয়। বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছিল, কিন্তু বেঁচে যাওয়া বা বাতিল হওয়া সুতা নারায়ণগঞ্জের কারখানার মালিকেরা দিয়ে যান মহাজনদের। নতুন করে বিভিন্ন রং করা সুতায় বোনা হয় গামছা, লুঙ্গি বা থ্রিপিস। মহাজনেরা সুতা রং করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকদের কাজে লাগান। থাকা ও খাবারের খরচ মহাজনের। শ্রমিকেরা মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পান।
কারখানার মালিকের চাহিদা অনুযায়ী কেমিক্যাল মিশিয়ে, জ্বাল দিয়ে বিভিন্ন রঙে সুতা রং করেন। রোদে শুকিয়ে পাঠিয়ে দেন সুতার মালিকের কাছে। বছরের পর বছর কাজ করতে করতে শ্রমিকদের হাত-পায়ে রং লেগেই থাকে। খাওয়ার সময় কটু স্বাদ লাগে। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য অসুখ-বিসুখ তো আছেই। করোনার প্রাদুর্ভাবসহ নানা কারণে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সুতায় রং করার কারিগরদের চাহিদাও কমছে। রঙিন এসব মানুষের ছবিগুলো সম্প্রতি তোলা।












দৈনন্দিন
জেনে নিন, যেসব গাছ মশা তাড়াবে

মশার আক্রমণ প্রায় সব ঋতুতেই দেখা যায় কমবেশি। এখন শীতকাল। প্রকৃতি এ সময়ে নিজেকে শীতল চাদরে মুড়িয়ে নিলেও মশার প্রকোপ বেড়ে যায় অনেকটাই। গাছ হতে পারে মশা তাড়ানোর সমাধান। এমন কিছু গাছ আছে, যা পড়ে থাকে অযত্নে, কিন্তু মশার যম। মশা দমন করতে ঘরে কিছু গাছ আনলে উপকার তো হবেই, আবার সবুজের ছোঁয়াও পাবেন একই সঙ্গে।
তুলসী, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার ও গাঁদাজাতীয় গাছে কীট প্রতিরোধক কিছু যৌগ থাকে। সাইপারমেথিরিন ও ম্যালাথিওন জাতীয় সক্রিয় যৌগ মশার ডিম, লাভা ও মশার বৃদ্ধি রোধ ও ধ্বংস করতে কাজ করে। যৌগিক পদার্থের সাধারণত দুই ধরনের প্রোপার্টিজ থাকে। একটি হলো শারীরিক, অন্যটি রাসায়নিক প্রোপার্টিজ। গাছের পাতার বা ফুলের তীব্র গন্ধ এর শারীরিক প্রোপার্টিজের জন্য। গন্ধ থাকার পাশাপাশি কীট প্রতিরোধক যৌগিকের সক্রিয় উপস্থিতি থাকতে হবে অবশ্যই। তবেই এ ধরনের গাছ মশা দূর করতে বা অনেক ক্ষেত্রে মশা ধ্বংস করতে কাজ করবে। এমনটাই জানালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অধ্যাপক নুহু আলম।
মশার মতো কীটপতঙ্গ তাড়াতে পারে এমন কিছু গাছের কথা থাকছে এখানে।

ল্যাভেন্ডার গাছ
বাড়িতে ল্যাভেন্ডার গাছ থাকলে খেয়াল করে দেখবেন, এর পাতার কাছে কোনো পোকাই বসে না। তার কারণ ল্যাভেন্ডারের গন্ধ। এই গাছের পাতায় একধরনের এসেনশিয়াল তেল থাকে। তাই এর সুতীব্র গন্ধে গাছ ও তার আশপাশে আসতে পারে না মশা। তাই অনেকে ল্যাভেন্ডারের গন্ধযুক্ত সুগন্ধিও ব্যবহার করে থাকেন। দেশীয় গাছ না হলেও ল্যাভেন্ডার কিন্তু খুব সহজেই জন্মায় এ দেশে। এই গাছের জন্য পানিনিষ্কাশন ও সূর্যের আলোর ব্যবস্থা থাকলেই হয়।

গাঁদা ফুল
শীতকালের অন্যতম ফুল এটি। বাড়ির চারপাশে বা বারান্দায় সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই হলুদ বা কমলা রঙের এই ফুলের গাছ লাগিয়ে থাকেন। এই ফুলের গন্ধেও অনেকেই বিমোহিত হন। কিন্তু গাছের পাতা বা ফুলের গন্ধ একেবারে সহ্য করতে পারে না মশা। গাঁদা ফুলের পাপড়ি এবং গাছের পাতায় থাকে অ্যান্টিসেপ্টিক। যার কারণে মশা একেবারেই দূরে থাকে এই গাছ থেকে। গাঁদা ফুলের গাছের যত্ন নেওয়াও বেশ সহজ, প্রয়োজনীয় পানি ও আলো পেলেই এই গাছ জন্মায়।

তুলসী গাছ
ঘরের আঙিনায় তুলসী গাছ লাগানোর রীতি বহু পুরোনো। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি তুলসীর একাধিক স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদিক গুণও আছে। তুলসীগাছ পরিবেশকে জীবাণুমুক্ত ও বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর ঝাঁজালো গন্ধ মশা দূর করে। এ ছাড়া তুলসীর রস প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন পানি এবং প্রয়োজনীয় সার ব্যবহারে সহজেই এজাতীয় গাছ বাঁচে।

পুদিনা গাছ
আজকাল অনেকেই শখ করে বারান্দায় ছোট পুদিনাপাতার গাছ লাগান। রান্না বা চায়ের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি মশার হাত থেকেও বাঁচাতে পারে এই গাছ। পেপার মিন্ট বা মেন্থলের সুগন্ধ মশা তাড়ানোর জন্য কার্যকর। এটি মশার প্রাকৃতিক কীটনাশকও বটে।
ঘাস প্রজাতির উদ্ভিদ সাইট্রোনেলা, রোজমারি ও লেমন বাম জাতীয় কিছু গাছও মশা দূরে রাখতে পারে। আগারগাঁও, গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, দোয়েল চত্বর এলাকাসহ যেকোনো নার্সারিতে পেয়ে যাবেন এই গাছের চারা। গাছের চারার বয়স অনুসারে ৭০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন এসব গাছ।
জার্মানি
মাটির নিচে ‘সৌন্দর্যে ঘেরা’ জার্মানি

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জার্মানি। তবে এই সৌন্দর্য শুধু পাহাড়-নদীতেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশটির মাটির নিচেও রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান।
জালফেল্ড ফেয়ারি গ্রোটোস: ১৯৯৩ সালে জার্মানির এই গ্রোটো গুহার নাম ওঠে গিনেস বুক অফ রেকর্ডসের ‘বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর গ্রোটো গুহা’র তালিকায়। অ্যালাম স্লেট খনন করার ফলে ঠ্যুরিঙ্গেন রাজ্যের এই গুহাটি নানা রঙের স্ট্যালাকটাইটে ভরে ওঠে। এই গুহায় দেখা যায় একশরও বেশি ধরনের বাদামি-হলুদ রঙের খেলা।
লাঙ্গেনস্টাইন গুহা ঘর: বেলেপাথরে খোদাই করে তৈরি এই গুহা-ঘরগুলো দেখতে অবিকল রূপকথায় পড়া রাজকন্যার প্রাসাদের মতো। কিন্তু আদতে হারৎজ পর্বতের শ্যাফারবের্গ অঞ্চলের এই গুহা-ঘরগুলো উনিশ শতকে বানিয়েছিলেন স্থানীয় খামারকর্মীরা। বর্তমানে এই গুহাঘরের ভেতরে চিত্রায়িত করা আছে এই গুহার শেষ বাসিন্দা লুডভিগ শ্মিডটের জীবনকাহিনী।
বাড জেগেবার্গের কালকবের্গ গুহা: উত্তর জার্মানির একমাত্র প্রাকৃতিক গুহার ভেতর রয়েছে বাদুড়দের বিশ্বের সবচেয়ে বড় শীতকালীন বাসস্থান। এই গুহার ভেতরের প্রাণীদের শীতঘুমে ব্যাঘাত না ঘটাতে পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ মার্চ থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সীমিত রাখা হয়েছে।

আটেনডর্নের আটা গুহা: জার্মানির সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় গুহা নর্থ-রাইন ভেস্টফালিয়া রাজ্যের গুহা এটি। হঠাৎ করেই ১৯০৭ সালে আবিষ্কৃত হয় এই গুহা। ছয় হাজার মিটার দীর্ঘ এই গুহায় পাওয়া যায় আটা চিজ নামের একটি বিশেষ ধরনের পনীর।
এনেপেটালের ক্লুটার্ট গুহা: বহু হ্রদ, তিনশটি পথ ও ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুহাকে এক সময় জার্মানির সবচেয়ে বড় গুহা ভাবা হতো। এখন নর্থ-রাইন ভেস্টফ্রালেনের এই গুহার ভেতর পর্যটকদের জন্য নানা ধরনের রোমাঞ্চকর সফরের সুবিধা রয়েছে। হাঁপানি রোগীদের জন্যেও ভালো এই গুহার ভেতরের পরিবেশ।
হমবুর্গের শ্লসবের্গ গুহা ও দুর্গ: জারলান্ড রাজ্যের এই গুহা প্রকৃতি নয়, তৈরি করেছে মানুষ। লাল বেলেপাথরের খোঁজে খনন করতে গিয়ে আবিষ্কৃত হয় এই গুহা। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই গুহা সৃষ্টি হতে শুরু করে মধ্য যুগেই। কিন্তু এর পূর্ণ রূপে গড়ে ওঠা শুরু হয় খননের সময় ঘটা বিস্ফোরণের পরেই।
সোফিয়েন গুহা: সোফিয়েন গুহার ভেতর থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৬০ হাজার বছর পুরোনো ভালুকের হাড়। এছাড়া এই গুহার ভেতরে পাওয়া গেছে তুষার যুগের বহু প্রাণীর দেহাবশেষ। এই গুহায় আজকাল বেশ কিছু অনুষ্ঠান বা জলসা দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় দর্শক।

সুইফাল্টেনডর্ফের ড্রিপস্টোন গুহা: জার্মানির সবচেয়ে ছোট এই গুহা মাত্র ৮৮ বর্গফুট বড়। ১৯৮২ সালে একটি সুড়ঙ্গ তৈরির সময় খুঁজে পাওয়া যায় গুহাটি। এই গুহার প্রবেশ পথ একটি হোটেল ও পানশালার ভেতর দিয়ে, যার ফলে হোটেলের খদ্দেরদের কাছে এই গুহাটি একটি বাড়তি আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।
রিজেন্ডিং গুহা: জার্মানির উন্টার্সবের্গে রয়েছে দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ গুহা (তিন হাজার ৭৭০ ফুট লম্বা)। ভেতরে গেলে দেখতে পাবেন নানা আকারের হ্রদ ও একাধিক ঝর্ণা। ২০১৪ সালে একটি দুর্ঘটনার পর থেকে পর্যটকের জন্য বন্ধ রয়েছে গুহাটি। এখন সেখানে কেবল বিজ্ঞানীরাই যেতে পারেন।
শেলেনবের্গ তুষার গুহা: উন্টার্সবের্গেই রয়েছে জার্মানির একমাত্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত তুষার গুহা বা আইসকেভ। ৬০ হাজার ঘনমিটার বরফের আস্তরণ রয়েছে এই গুহায়, যার মধ্যে বেশ কিছু অংশ প্রায় তিন হাজার বছরের পুরোনো। তবে পুরো গুহায় ঘুরতে পারেন না পর্যটকরা। শুধু ৫০০ মিটার অঞ্চলই রয়েছে উন্মুক্ত, এবং সেটাও শুধু হাইকিং করার জন্যেই।
পরিবেশ
পৃথিবীর সবচেয়ে গোলগাল প্রাণী কি এগুলোই?

পৃথিবীতে অনেক প্রাণী রয়েছে, আর তাদের মধ্যে অনেক প্রাণিই গোলগাল।
সেগুলোকে আপনি গোলাকৃতির আদুরে বল মনে করলেও তাদের এই আকৃতি আসলে প্রকৃতিতে তাদের টিকে থাকতে সহায়তা করে।
প্রাণীজগতের সবচেয়ে গোলগাল কয়েকটি প্রাণীর তালিকা দেয়া হলো এখানে।

পাফার ফিশ/ পটকা মাছ
আমাদের তালিকার শুরেুতেই রয়েছে পাফার ফিশ পরিবার (টেট্রাওডোনটিডায়ে), যারা পটকা মাছ নামেও পরিচিত।
এই গোলাকার মাছ আত্মরক্ষার্থে বলের মত বৃত্তাকার আকার ধারণ করতে পারে।
নিজেদের ইলাস্টিকের মত পাকস্থলিতে প্রচুর পরিমাণ পানি প্রবেশ করিয়ে তারা এই আকৃতি ধারণ করতে পারে। এর ফলে তাদেরকে খুবই কম আকর্ষণীয় মনে হয়, সেসময় এই মাছের আকৃতি দেখে মনে হয় যে এটি খেতেও কঠিন।
বল আকৃতির এই মাছগুলো দেখতে ভাল লাগেও এটিকে ছোঁয়া একেবারেই উচিত নয়।
দুইশো’রও বেশি জাতের পটকা মাছের অধিকাংশের মধ্যেই টেট্রোডোটক্সিন নামের এক ধরনের বিষ রয়েছে, যা সায়ানাইডের চেয়ে ১২০০ গুণ বেশি বিষাক্ত।

আরমাডিলো
স্প্যানিশ ভাষায় আরমাডিলো শব্দের অর্থ ‘বর্ম পরিহিত ছোট প্রাণী।’
পৃথিবীতে মোট ২১ ধরণের আরমাডিলো রয়েছে যাদের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্রটির নাম ‘গোলাপী পরী আরমাডিলো’ (ক্ল্যামিফোরাস ট্রাঙ্ক্যাটাস), যার দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১২ সেন্টিমিটারের মধ্যে হয়।
আরমাডিলোরা দিনে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায়। এছাড়া প্রাণী হিসেবে তাদের যথেষ্ট ফ্যাশন সচেতনও বলতে পারেন। লাল, হলুদ, কালো, গোলাপী – এমন নানা রঙয়ের আরমাডিলো হয়ে থাকে।

টওনি আওল/পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচা
যুক্তরাজ্যে পাওয়া যাওয়া সাধারণ প্যাঁচাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির প্যাঁচা হলো টওনি আওল বা পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচা।
এই প্যঁচাগুলোর নরম, গোলাকার মাথা থাকে যেটি তারা ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরাতে পারে।
প্রজননের সময় এই ধরণের পুরুষ প্যাঁচা শুরুতে স্ত্রী প্যাঁচাকে দীর্ঘ ‘হুউউ’ ডাকে ডাক দেয়।
এরপর অপেক্ষাকৃত কম দীর্ঘ ‘হু’ এবং সবশেশে ‘হুহুহোওওওও’ ডাক দিয়ে শেষ করে।
জবাবে স্ত্রী প্যাঁচা ‘কী-উইক’ ডাকে জবাব দেয়।

সিল
সিল সাধারণত একা থাকলেও প্রজননের মৌসুমে একত্রিত হয়।
এই বৃত্তাকার মাছ গড়ে প্রতি ঘন্টায় ১০ কিলোমিটার সাঁতার কাটতে পারে।
তবে কখনো কখনো তারা ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতেও সাঁতারাতে সক্ষম হয়।
এই ধরণের সিল সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

হেজহগ
হেজহগ অনেকটা সজারুর মত দেখতে একটি প্রাণী, নিজেকে শিকারী প্রাণীদের হাত থেকে রক্ষা করতে এর পিঠে অনেকগুলো কাঁটার মত থাকে।
বৃত্তাকার হওয়ায় শরীরের কাঁটামুক্ত অংশগুলো রক্ষা করতে সুবিধা হয় এর জন্য।
ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায় ১৫ ধরণের হেজহগ পাওয়া যায়, যার মধ্যে সবকটিই নিশাচর।
পরিবেশ
ছবিতে গ্রাম বাংলার খালে-বিলে মাছ ধরার মুহূর্তগুলো
শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়। বিবিসি প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানের জন্য আপনাদের কাছে এমন ছবি চাওয়া হয়েছিল। বাছাই করা কিছু ছবি নিয়ে আমাদের এই ফটো গ্যালারি।












অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন