গত মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েলের দাম কমেছে প্রায় ২ শতাংশ। বিশ্বের শীর্ষ ভেজিটেবল অয়েল আমদানিকারক ভারতের আমদানি কমায় পাম অয়েলের দামে এ প্রভাব পড়েছে। গতকাল প্রকাশিত এক সরকারি উপাত্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর রয়টার্স। গত সপ্তাহে টনপ্রতি পাম অয়েলের দাম ৬৫ রিঙ্গিত বা ১ দশমিক ৮৬ শতাংশ কমে ৩ হাজার ৪২৫ রিঙ্গিতে বা ৮৪৭ দশমিক ৩৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে গত সোমবার পাম অয়েল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। গত সোমবার কার্গো সার্ভেয়ারস জানায়, জানুয়ারিতে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানি গত ডিসেম্বরের তুলনায় ৩২ থেকে ৩৭ শতাংশ কমেছে। অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি উপাত্তে আশাবাদী হতে পারেন মালয়েশিয়ার পাম অয়েল রফতানিকারকরা। সোমবার ইউরোপীয় কমিশন জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৩৩ লাখ ৮০ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করেছিল ইইউ, তার আগের অর্থবছরে যেখানে আমদানি হয়েছিল ৩২ লাখ ৯০ হাজার টন।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পর্যাপ্ত চাল আমদানি হওয়ায় পণ্যটির দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। কয়েক দিনের ব্যবধানে হিলিতে চালের দাম কমেছে কেজিতে সর্বোচ্চ ৫ টাকা। আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাল আমদানি আরো বাড়লে হিলিতে পণ্যটির দাম বর্তমানের তুলনায় আরো কমে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। হিলি স্থলবন্দর শুল্কস্টেশন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত ধান ও চালের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ও চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছিল সরকার। এতে পড়তা না হওয়ায় একপর্যায়ে চাল আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। এবার আমনের ভরা মৌসুমে কয়েক মাস ধরেই চালের দাম বেড়ে লাগামহীন হয়ে পড়ে। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই মোতাবেক হিলিসহ দেশের বিভিন্ন আমদানিকারককে সাত লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। একই সঙ্গে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে দুই দফায় কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। ফলে দীর্ঘ দেড় বছর পর গত ৯ জানুয়ারি ভারত থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। হিলি বাজারের চাল বিক্রেতা অনুপ কুমার বসাক ও তপন কুমার বলেন, দেড় বছর বন্ধের পর হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানির ফলে চালের দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। আগে যে স্বণা ৫ জাতের চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৮ টাকা, এখন তা থেকে কমে ৪২-৪৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে, ২৮ জাতের চাল ছিল ৪৮-৫০ টাকা, তা থেকে কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৪৬ টাকায়, মিনিকেট চাল যেখানে ৬০ টাকা বিক্রি হয়েছিল এখন তা ৫৪-৫৫ টাকায় নেমেছে। ভারত থেকে চাল আমদানির জন্যই দেশের বাজারে চালের দাম অনেকটা কমেছে। বর্তমানে বন্দর দিয়ে যে হারে চাল আমদানি হচ্ছে এটি যদি বাড়ে তাহলে চালের দাম আরো কমে আসবে। তবে ভারত থেকে চাহিদার তুলনায় কম চাল আসছে। এর প্রধান কারণ হলো ভারতের অভ্যন্তরে তীব্র যানজট। একটি চালের ট্রাক লোডিং থেকে শুরু করে বন্দরে আসতে ২০-২৫ দিন সময় লাগছে। তাছাড়া চাল রফতানির ক্ষেত্রে ভারতীয় রফতানিকারকদের খাদ্য অধিদপ্তর থেকে এনওসি নিতে হচ্ছে, যার কারণেও দেরি হচ্ছে। এছাড়া আমরা ৫০০ টনের এলসি দিতে চাইলেও তারা কম পরিমাণে এলসি নিতে চাইছেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, ধান সংকটের কারণে মিলাররা পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল তৈরি করতে পারছেন না। অন্য প্রদেশ থেকে ধান নিয়ে এসে চাল করতে হচ্ছে। চালের এলসি খোলার ক্ষেত্রে সরকারি কিছু বিধিনিষেধের প্রভাব আমাদের ওপর রয়েছে যা কষ্টসাধ্য। এ রকম কিছু জটিলতার কারণে চাহিদামতো চাল আমদানি করা যাচ্ছে না। এছাড়া চালের আমদানি শুল্ক এমনভাবে আরোপ করা হয়েছে যাতে দেশীয় চালের দাম ও ভারতীয় চালের দাম একই পর্যায়ে এসে পৌঁছচ্ছে। তবে যানজটসহ চাল আমদানির ক্ষেত্রে এসব জটিলতা কেটে চালের আমদানি বাড়লে চালের দাম আরো কমবে বলে। হিলি স্থলবন্দর পরিচালনাকারী পানামা হিলি পোর্ট লিংক লিমিটেডের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর বন্ধের পর সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে গত ৯ জানুয়ারি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি শুরু হয়েছে। বন্দর দিয়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০-৩৫ ট্রাক চাল আমদানি হচ্ছে। গত জানুয়ারিতে বন্দর দিয়ে ২৬৬টি ট্রাকে ১০ হাজার ৭০০ টন চাল আমদানি হয়েছে। বন্দর দিয়ে চাল আমদানির ফলে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষের দৈনন্দিন আয়ও বেড়েছে।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে গমের আটা উৎপাদন ১০ শতাংশ কমে ২ কোটি ১ লাখ ২০ হাজার সিডব্লিউটিএসে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি মন্ত্রণালয়ের (ইউএসডিএ) ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল স্ট্যাটিস্টিকস সার্ভিসের উপাত্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর ফুড বিজনেস নিউজ। ছয় বছর আগে থেকে ইউএসডিএর আটা উৎপাদনের হিসাব শুরুর পর থেকে এটা সর্বনিম্ন উৎপাদন। পাঁচ বছরের মধ্যে চার বছরই আটা উৎপাদন কমেছে এবং এ নিয়ে টানা তিন বছর কমল। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আটা উৎপাদন হয়েছিল ২ কোটি ২৩ লাখ ৫৯ হাজার সিডব্লিউটিএস। যুক্তরাষ্ট্রে ১ সিডব্লিউটিএস সমান ১১২ পাউন্ড। ২০২০ সালে বছরওয়ারি আটা উৎপাদন কমেছে ২১ লাখ ১৯ হাজার সিডব্লিউটিএস। ২০১৯ ও ২০১৮ সালে উৎপাদন কমেছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৪ হাজার ও ১ লাখ ৭৬ হাজার সিডব্লিউটিএস। যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের যে খাদ্য গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে তার বিপরীতে এ উপাত্ত আশাব্যঞ্জক নয়। মোট গৃহীত খাদ্যের অন্তত ৫০ শতাংশ যেন দানাদার শস্য হয় এমন নির্দেশনা ছিল। কিন্তু মার্কিনদের প্রাত্যহিক আহারে তার ছাপ দেখা যাচ্ছে না। গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে আটা উৎপাদন হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫২ হাজার সিডব্লিউটিএস, ২০১৯ সালের একই প্রান্তিকের ৫৯ লাখ ৫৭ হাজার সিডব্লিউটিএস থেকে যা ১৯ শতাংশ কম।
গত অক্টোবর থেকে জানুয়ারির মধ্যে ভারতের চিনি উৎপাদন ২৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার টন। ভারতের চিনি শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসএমএ) গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর ইকোনমিক টাইমস। বিবৃতিতে আইএসএমএ জানায়, গত বছরের শেষ তিন মাসে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ভারতের চিনি উৎপাদন বৃদ্ধির রেকর্ড হয়েছে। আখ মাড়াইয়ের মৌসুমে ২০২০ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারিতে ভারতে মোট ১ কোটি ৪২ লাখ ৭০ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে চলতি ২০২০-২১ মৌসুমে ভারতে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টন চিনি উৎপাদন হতে পারে। সে হিসাবে উৎপাদন প্রায় এক-পঞ্চমাংশ বাড়বে, যা বছর শেষে বাড়বে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে মহারাষ্ট্রের ১৮১টি চিনিকলে সব মিলিয়ে ৫১ লাখ ৬০ হাজার টন চিনি উৎপাদনের তথ্য দিয়েছে আইএসএমএ। আগের মৌসুমের একই সময়ে এ রাজ্যে ২৫ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছিল। সক্রিয় ছিল ১৩৯টি চিনিকল। ভারতের শীর্ষ চিনি উৎপানকারী রাজ্য উত্তর প্রদেশে জানুয়ারি নাগাদ চিনি উৎপাদন হয়েছে ৫৪ লাখ ৪০ হাজার টন। তার আগের বছরের একই সময়ে উৎপাদন হয়েছিল ৫৪ লাখ ৯০ হাজার টন। দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদক রাজ্য মহারাষ্ট্রে উৎপাদন লক্ষণীয় পরিমাণ বেড়ে ৬৩ লাখ ৮০ হাজার টনে দাঁড়িয়েছে। গত বছরের একই সময়ে রাজ্যটিতে চিনি উৎপাদন ছিল ৩৪ লাখ ৬০ হাজার টন। ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম চিনি উৎপাদক রাজ্য কর্ণাটকে জানুয়ারি নাগাদ চিনি উৎপাদন হয়েছে ৩৪ লাখ ৩০ হাজার টন। গত বছরের একই সময়ে উৎপাদন হয়েছিল ২৭ লাখ ৯০ হাজার টন। গুজরাটে চিনি উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৫৫ হাজার টন। তামিলনাড়ু, অন্ধ্র পদেশ ও তেলাঙ্গানায় সম্মিলিতভাবে ৩ লাখ ৫৬ হাজার টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। চলতি আখ মাড়াই মৌসুমে জানুয়ারি নাগাদ বিহার, উত্তরখণ্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান ও ওড়িশায় সম্মিলিতভাবে চিনি উৎপাদন হয়েছে ১৫ লাখ ১০ হাজার টন। চিনি উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে ভারত। আবার রফতানিতে দেশটির অবস্থন তৃতীয়। আইএসএমএ বলছে, জানুয়ারি নাগাদ ভারতের প্রায় ৪৯১টি চিনিকল সক্রিয় ছিল। এর আগের বছরে সক্রিয় ছিল ৪৪৭ টি চিনিকল।
চলতি বছর ভুট্টা আমদানি ৯ শতাংশ কমতে পারে বলে পূর্বাভাস মেক্সিকোর। দেশীয় শস্য ব্যবহার এবং জেনেটিক্যালি মডিফায়েড (জিএম) শস্য ব্যবহার নিরুৎসাহিত করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কারণে ভুট্টা আমদানিতে এ প্রভাব পড়ছে বলে জানিয়েছে দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়। খবর রয়টার্স। গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে মেক্সিকোর কৃষিমন্ত্রী ভিক্টর ভাইলালোবোস এক পূর্বাভাসে জানান, চলতি বছর মোট শস্য আমদানি ১৫ লাখ টন কমতে পারে। এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা সান্তিয়াগো আরগুয়েলোও উপস্থিত ছিলেন। আরগুয়েলো বলেন, ধীরে ধীরে শস্য আমদানি কমিয়ে আনা আমাদের কৃষি পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ২০২৪ সালের মধ্যে মোট আমদানির ৩০ শতাংশ দেশীয় উৎস থেকে পূরণের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নিয়েছে উত্তর আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি। এ উদ্যোগের ফলে দেশটির তিন লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের কৃষক উপকৃত হবেন। মেক্সিকোর ভুট্টা আমদানির সিংহভাগ আসে তাদের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র থেকে। গত বছরের নভেম্বর নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ কোটি ৩০ লাখ টন ভুট্টা আমদানি করেছে মেক্সিকো।
১৬ জুলাই নেপালে নতুন অর্থবছর শুরু হয়। চলে পরের বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত। সেই হিসাবে নেপালে এখন ২০২০-২১ অর্থবছর চলছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (১৬ জুলাই ২০২০ থেকে ১৬ জানুয়ারি ২০২১) দেশটি থেকে ছোট এলাচ রফতানিতে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। মসলাটির রফতানি বেড়ে পৌনে ৪৮ লাখ কেজিতে পৌঁছে গেছে। নেপালের রাষ্ট্রায়ত্ত ট্রেড অ্যান্ড এক্সপোর্ট প্রমোশন সেন্টারের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর কাঠমান্ডু পোস্ট। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে নেপাল থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার কেজি এলাচ রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে দেশটি থেকে মোট ৩১ লাখ ৩০ হাজার কেজি এলাচ রফতানি হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এলাচ রফতানি করে নেপাল সব মিলিয়ে ৩৮১ কোটি রুপি আয় করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এলাচ রফতানি বাবদ নেপালের আয় ছল ২৫১ কোটি রুপি।
বাসমতি চাল উৎপাদন ও রফতানির জন্য পাকিস্তানের খ্যাতি রয়েছে। সম্প্রতি নিজস্ব জাতের বাসমতি চালের জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেটর (জিআই) ট্যাগ পেয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্য দিয়ে দেশটি থেকে খাদ্যপণ্যটির রফতানি আরো গতি পাবে বলে আশা সংশ্লিষ্টদের। খবর এনডিটিভি। বাসমতি চালের অন্যতম রফতানি বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো। ইইউর বাজারে খাদ্যপণ্যটির রফতানিতে ভারত ও পাকিস্তানের তুমুল প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এ পরিস্থিতিতে ইইউর বাজারে বাসমতি চালের জিআই ট্যাগ পেয়েছিল ভারত। প্রতিযোগিতায় এক ধাপ এগিয়ে যায় দিল্লি। এর জের ধরে ইইউতে বাসমতি চালের জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন করে পাকিস্তান। আইনি প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে নিজস্ব বাসমতি চালের জিআই ট্যাগ পেয়েছে দেশটি। পাকিস্তান সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা আবদুল রাজাক দাউদ টুইটার বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জিআই ট্যাগ পাওয়ার মধ্য দিয়ে ইইউর বাজারে ভারতের পাশাপাশি পাকিস্তান থেকেও বাসমতি চাল রফতানিতে আর কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকছে না।
ওটস উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় কানাডার অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। তবে পণ্যটি রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষে রয়েছে দেশটি। গত বছর কানাডা থেকে ওটস রফতানিতে নতুন রেকর্ড হয়েছে। পণ্যটির রফতানি বেড়ে গত এক যুগের সর্বোচ্চ অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে কানাডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১৮ লাখ টন ওটস রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি বেড়েছে দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০০৮ সালের পর কানাডা থেকে এটাই সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানির রেকর্ড। এর আগে ২০১৯ সালে কানাডা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ১৭ লাখ ৯২ হাজার টন ওটস রফতানি হয়েছিল বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ইউএসডিএ, যা আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে দেশটি থেকে ওটস রফতানি বেড়েছে আট হাজার টন। কানাডার ইতিহাসে ২০০৭ সালে সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। ইউএসডিএর তথ্য অনুযায়ী, ওই বছর দেশটি থেকে সব মিলিয়ে ২৩ লাখ ৮৪ হাজার টন ওটস রফতানি হয়েছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ২৫ দশমিক ২১ শতাংশ বেশি। পরের বছর দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানি কমে দাঁড়ায় ১৯ লাখ ৪৬ হাজার টনে। এর পর গত বছর কানাডা থেকে সবচেয়ে বেশি ওটস রফতানি হয়েছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় আর্জেন্টিনা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টা রফতানিতে মন্দা ভাব দেখা গেছে। এ ধারাবাহিকতায় বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৩০ লাখ টন কমে গেছে। মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) ফরেন এগ্রিকালচারাল সার্ভিসের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর এগ্রিমানি ও বিজনেস রেকর্ডার। ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় আর্জেন্টিনার অবস্থান পঞ্চম। তবে কৃষিপণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় দেশটি তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ইউএসডিএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে আর্জেন্টিনা থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৪০ লাখ টন ভুট্টা রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০১৯ সালে আর্জেন্টিনা থেকে মোট ৩ কোটি ৭০ লাখ টন ভুট্টা রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে আর্জেন্টিনা থেকে কৃষিপণ্যটি রফতানি কমেছে ৩০ লাখ টন। এর মধ্য দিয়ে আর্জেন্টিনার ভুট্টা রফতানিতে টানা দুই বছর ধরে মন্দা ভাব বজায় রয়েছে। ২০১৮ সালে আর্জেন্টিনার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ৩ কোটি ৭২ লাখ ৪৪ হাজার টন ভুট্টা রফতানির রেকর্ড হয়েছিল। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, খরা পরিস্থিতির কারণে বিদায়ী বছরে আর্জেন্টিনায় ভুট্টা উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ কমে পাঁচ কোটি টনের নিচে নেমে এসেছে। করোনা মহামারীর পাশাপাশি এর প্রভাব পড়েছে কৃষিপণ্যটি রফতানিতে।
ভিয়েতনামের রফতানি পণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম চাল। নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যে বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে পণ্যটির রফতানিতে মন্দা ভাব দেখা গেছে। এ ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে চলতি বছরের শুরুতেও। জানুয়ারিতে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে চাল রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৯ শতাংশের বেশি কমে পৌনে তিন লাখ টনে নেমে এসেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ভিয়েতনামের জেনারেল স্ট্যাটিস্টিকস অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স। চাল উৎপাদনকারী দেশগুলোর বৈশ্বিক শীর্ষ তালিকায় ভিয়েতনামের অবস্থান পঞ্চম। তবে পণ্যটির রফতানিকারকদের বৈশ্বিক তালিকায় দেশটি তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। ভিয়েতনামের সরকারি প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ২ লাখ ৮০ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে। এক বছরের ব্যবধানে ভিয়েতনাম থেকে পণ্যটির রফতানি কমেছে ২৯ দশমিক ৫ শতাংশ। রফতানির পরিমাণে মন্দা ভাবের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম মাসে চাল রফতানি বাবদ ভিয়েতনামের আয়ও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ কমেছে। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের জানুয়ারিতে চাল রফতানি বাবদ ভিয়েতনামের আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ৪০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২০ দশমিক ৪ শতাংশ কম। উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর ধাক্কা লেগেছে ভিয়েতনামের চাল রফতানিতে। সংকটকালে অভ্যন্তরীণ খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখা ও জনগণের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গত বছর চাল রফতানি সাময়িক বন্ধ রেখেছিল ভিয়েতনাম। এর প্রভাব পড়েছে খাদ্যপণ্যটির সামগ্রিক রফতানিতে। ২০২০ সালে চাল রফতানির লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে দেশটি। ভিয়েতনামের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিদায়ী বছরে দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৬১ লাখ ৪৬ হাজার টন চাল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কম। ২০২০ সালে ভিয়েতনাম থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব মিলিয়ে ৬৭ লাখ টন চাল রফতানির লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। সেই তুলনায় বছরজুড়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টন কম চাল রফতানি করেছে ভিয়েতনাম। বিদায়ী বছরে চাল রফতানি করে ভিয়েতনামিজ রফতানিকারকদের আয় আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩০৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারে উন্নীত হয়েছে। খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারীর মধ্যে চালের রফতানি মূল্য বাড়তি ছিল। এ কারণে গত বছর চাল রফতানির পরিমাণ কমলেও এ বাবদ ভিয়েতনামের আয় বেড়েছে।