আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফসল

ছোলার উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি: পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি অর্থকরী ফসল

ছোলার উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি
ছোলার উপকারিতা ও চাষ পদ্ধতি

ছোলা বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি ডালশস্য। এটি শুধু স্বাদে নয়, বরং পুষ্টিগুণেও অনন্য। গ্রামীণ ও শহুরে উভয় অঞ্চলে ছোলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ছোলার চাষ কৃষকদের জন্য লাভজনক হওয়ার পাশাপাশি এটি স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের কাছেও অত্যন্ত প্রিয়। আসুন, ছোলার পুষ্টিগুণ, উপকারিতা, এবং এর চাষাবাদের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।

ছোলার পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

ছোলা প্রোটিন, ফাইবার, এবং মিনারেলের চমৎকার উৎস। এটি মানবদেহে বিভিন্নভাবে উপকার করে।

ছোলার পুষ্টিগুণ

  • প্রোটিন সমৃদ্ধ: ছোলা শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে।
  • ফাইবার: হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।
  • ভিটামিন ও মিনারেলস: এতে আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, এবং ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স থাকে।
  • লো ক্যালরি: ছোলা কম ক্যালরিযুক্ত, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

ছোলার ব্যবহার: ডাল হিসেবে এবং পবিত্র রমজান মাস সহ অন্যান্য সময়ে মুখরোচক খাদ্য হিসেবে।

ছোলার উপকারিতা

  • হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক: ছোলায় থাকা ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্ট সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ: ছোলার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।
  • হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি: ছোলার ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম হাড়কে শক্তিশালী করে।
  • ওজন কমাতে সহায়ক: ছোলার ফাইবার দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, যা অতিরিক্ত খাওয়া কমায়।
  • ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি: ছোলার ভিটামিন ই ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ছোলার উপযুক্ত জমি ও মাটি

দো-আঁশ ও এটেল দো-আঁশ মাটিতে ছোলা ভালো জন্মে।

ছোলার  জাত পরিচিতি
ছোলার জাত পরিচিতি

ছোলার চাষাবাদ পদ্ধতি

ছোলার চাষ তুলনামূলক সহজ এবং এটি কম খরচে ভালো উৎপাদন দেয়।

মাটির ধরন ও আবহাওয়া:

  • ছোলার জন্য দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি উপযুক্ত।
  • এটি শীতকালীন ফসল, সাধারণত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে চাষ শুরু হয়।

বীজ নির্বাচন:

  • উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ব্যবহার করুন।
  • বীজ রোপণের আগে ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করুন।

মাটি প্রস্তুত:

  • জমি ভালোভাবে চাষ করে ঝরঝরে করতে হবে।
  • জৈব সার এবং প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার প্রয়োগ করুন।

বীজ রোপণ:

  • ৪০-৪৫ সেন্টিমিটার দূরত্বে সারি করে বীজ বপন করুন।
  • প্রতি হেক্টরে ৫০-৬০ কেজি বীজ ব্যবহার করা হয়।

সেচ ব্যবস্থা:

  • ছোলার চাষে সেচ খুব বেশি প্রয়োজন হয় না। তবে খরার সময় হালকা সেচ দিন।

আগাছা দমন:

  • নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হবে।

পোকামাকড় ও রোগ প্রতিরোধ:

  • ছোলার ফসলে ব্লাইট, উইল্ট এবং কাটওয়ার্মের আক্রমণ হয়। সময়মতো কীটনাশক প্রয়োগ করুন।

জাত পরিচিতি

বারি ছোলা-২ (বড়াল)

গাছের রং সবুজ। বীজ স্থানীয় জাতের চেয়ে বড়। হাজার বীজের ওজন ১৪০-১৫০ গ্রাম। বীজের রং হালকা বাদামি। বীজের আকার বড় হওয়ায় এ জাতের ছোলা কৃষক ও ক্রেতার কাছে অধিক গ্রহণযোগ্য। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩০-৩৫ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৩-২৭%। বারি ছোলা-২ এর জীবনকাল ১২০-১৩০ দিন। হেক্টরপ্রতি ফলন ১.৩-১.৬ টন। এ জাত নুয়ে পড়া বা উইল্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন।

বারি ছোলা-৩ (বরেন্দ্র)

এ জাতের গাছ খাড়া প্রকৃতির। রং হালকা সবুজ, পত্রফলক বেশ বড় এবং ডগা সতেজ। বীজের আকার বেশ বড়। হাজার বীজের ওজন ১৮৫-১৯৫ গ্রাম। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৪০-৪৪ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২৩-২৬%। সঠিক সময়ে বুনলে পাকতে সময় লাগে ১১৫-১২৫ দিন। এ জাতটি রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে আবাদের জন্য বেশি উপযোগী। ফলন হেক্টরপ্রতি ১.৮-২.০ টন পাওয়া যায়।

বারি ছোলা-৪ (জোড়াফুল)

গাছ মাঝারি খাড়া এবং পাতা গাঢ় সবুজ। কান্ডে খয়েরি রংয়ের ছাপ দেখা যায়। বীজের পার্শ্ব দিক সামান্য চেপ্টা, ত্বক মসৃণ। বীজের রং হালকা বাদামি। হাজার বীজের ওজন ১৩২-১৩৮ গ্রাম। গাছের উচ্চতা ৫০-৬০ সেমি। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩২-৩৮ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ১৮-২১%। জীবনকাল ১২০-১২৫ দিন। ফলন হেক্টরপ্রতি ১.৯-২.০ টন। এ জাতটি ফিউজেরিয়াম উইল্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
সম্পন্ন।

বারি ছোলা-৫ (পাবনাই)

বীজ আকারে ছোট, রং ধূসর বাদামি এবং হিলাম খুব স্পষ্ট। বীজের পার্শ্ব কিছুটা চেপ্টা এবং ত্বক মসৃণ। হাজার বীজের ওজন ১১০-১২০ গ্রাম। ডাল রান্না হওয়ার সময়কাল ৩৫-৪০ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ২০-২২%। এ জাত ১২৫-১৩০ দিনে পাকে। ফলন হেক্টরপ্রতি ১.৮-২.০ টন।

বারি ছোলা-৬ (নাভারুন)

বীজের আকার কিছুটা গোলাকৃতি, ত্বক মসৃণ এবং রং উজ্জ্বল বাদামি হলদে। বীজ আকারে দেশী জাতের চেয়ে বড়। হাজার বীজের ওজন ১৫৫-১৬৫ গ্রাম। এ জাতের ডাল রান্নার সময়কাল ৩২-৩৭ মিনিট। আমিষের পরিমাণ ১৯-২১%। জীবনকাল ১২৫-১৩০ দিন। ফলন হেক্টরপ্রতি ১.৮-২.০ টন। জাতটি নাবীতে বপন করেও অন্যান্য জাতের চেয়ে অধিক ফলন পাওয়া যায়।

বীজ বপন

ছিটিয়ে ও লাইন করে বীজ বপন করা যায়। লাইনে বপনের ক্ষেত্রে লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব ৪০ সেমি রাখতে হবে। বীজের হার ৪৫-৫০ কেজি/হেক্টর, ছিটিয়ে বপনের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ কিছু বেশি অর্থাৎ ৫০-৬০ কেজি/হেক্টর দিতে হবে। অগ্রহায়ণ মাসের ৫ থেকে ২৫ (২০ নভেম্বর-১০ ডিসেম্বর)। তবে বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য কার্তিক মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ) সময়ে বীজ বপন করতে হবে।

সারের পরিমাণ

জমিতে শেষ চাষের সময় হেক্টরপ্রতি নিম্নরুপ সার প্রয়োগ করতে হবে।

সারের নামসারের পরিমাণ (কেজি/হেক্টর)
ইউরিয়া৪০-৫০
টিএসপি৮০-৯০
এমওপি৩০-৪০
বোরিক এসিড (বোরাক্স)১০-১২
অণুজীব সার৫-৬

চাষের সময় সমুদয় সার প্রয়োগ করতে হয়। অপ্রচলিত এলাকায় আবাদের জন্য সুপারিশ মত নির্দিষ্ট অণুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে। প্রতি কেজি বীজের জন্য ৮০ গ্রাম হারে অণুজীব সার প্রয়োগ করতে হয়। ইনোকুলাম সার ব্যবহার করলে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হয় না।

ছোলার পোকামাকড়, সেচ ও আগাছা ব্যবষপনা
ছোলার পোকামাকড়, সেচ ও আগাছা ব্যবষপনা

সেচ ও আগাছা ব্যবষপনা

বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে একবার আগাছা দমন করা প্রয়োজন। অতি বৃষ্টির ফলে যাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে। জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকলে বপনের পর হালকা সেচ দিতে হবে।

পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা

পোকার নাম: পড বোরার

ক্ষতির নমুনা: পোকার কীড়া (শুককীট) কটি পাতা, ফুল ও ডগা খায়। ফল বড় হওয়ার সময় ছিদ্র করে ভিতরের নরম অংশ খায়। একটি কীড়া পূর্ণাঙ্গ হওয়ার পূর্বে ৩০-৪০ টি ফল খেয়ে ফেলতে পারে। এ রোগে ছোলার উৎপাদন অনেক হ্রাস পায়।

ব্যবস্থাপনা: কীড়া ছোট অবস্থায় দাত দিয়ে সংগ্রহ করে মেরে ফেলতে হবে। আক্রমণ বেশি হলে ডেসিস ২.৫ ইসি বা রিপকর্ড ১০ ইসি বা সিমবুস ১০ ইসি বা ফেসম ১০ ইসি ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ১-২ বার সেপ্র করতে হবে।

রোগ ব্যবস্থাপনা

রোগের নাম: ছোলার উইল্ট বা নুইয়ে পড়া রোগ

ক্ষতির নমুনা: চারা অবস্থায় এ রোগে আক্রান্ত গাছ মারা যায় এবং পাতায় রংয়ের কোন পরিবর্তন হয় না। পরিপূর্ণ বয়সে গাছ আক্রান্ত হলে পাতা ক্রমান্বয়ে হলদে রং ধারণ করে। আক্রান্ত গাছ ঢলে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। লম্বালম্বিভাবে কাটলে কান্ডের মাঝখানের অংশ কালো দেখা যায়।

ব্যবস্থাপনা: জাত যেমন বারি ছোলা- এবং বারি ছোলা-৪ এর চাষ করতে হবে। ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।

রোগের নাম: ছোলার গোড়া পচা রোগ

ক্ষতির নমুনা: চারা গাছে এ রোগ বেশি দেখা যায়। আক্রান্ত গাছ হলদে হয়ে যায় এবং শিকড় ও কান্ডের সংযোগ স্থলে কালো দাগ পড়ে। গাছ টান দিলে সহজেই উঠে আসে। আক্রান্ত স্থানে গাছের গোড়ায় ছত্রাকের জালিকা ও সরিষার দানার মত স্কেলেরোসিয়া গুটি দেখা যায়।

ব্যবস্থাপনা: ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। সুষম হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। ভিটাভেক্স-২০০ প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।

রোগের নাম: ছোলার বট্রাইটিস গ্রে মোল্ড রোগ

ক্ষতির নমুনা: ছোলার বৃদ্ধি ব্যবস্থাপনা কিংবা ফল আসার শুরুতেই এর রোগের আক্রমণ লক্ষ করা যায়। এ রোগের লক্ষণ কান্ড, পাতা, ফুল ও ফলে প্রকাশ পায়। আক্রান্ত স্থানে ধূসর রংয়ের ছত্রাকের উপস্থিতি দেখা যায়।

অনুকুল পরিবেশ: জমিতে গাছ বেশি ঘন থাকলে এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেশি থাকলে এ রোগ ব্যাপকতা লাভ করে।

ব্যবস্থাপনা: ফসলের পরিত্যক্ত অংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। বাভিস্টিন অথবা থিরাম প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে। বাভিস্টিন ০.২% হারে ১০-১২ দিন পরপর ২-৩ বার সেপ্র করতে হবে।

গুদামজাত ডালের পোকা ব্যবস্থাপনা

ভূমিকা: পূর্ণবয়স্ক পোকা ও কীড়া উভয়ই গুদামজাত ডালের ক্ষতি করে থাকে।

ক্ষতির নমুনা: এ পোকা ডালের খোসা ছিদ্র করে ভিতরে ঢুকে শাঁস খেতে থাকে। ফলে দানা হাল্কা হয়ে যায়। এর ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায় এবং খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে।

ব্যবস্থাপনা: গুদামজাত করার আগে দানা ভালভাবে পরিষ্কার করতে হয়। ডালের দানা শুকিয়ে পানির পরিমান ১২% এর নিচে আনতে হবে। বীজের জন্য টন প্রতি ৩০০ গ্রাম ম্যালাথিয়ন বা সেভিন ১০% গুড়া মিশিয়ে পোকার আক্রমণ প্রতিরোদ করা যায়। ফসটক্সিন ট্যাবলেট ২টি বড়ি প্রতি ১০০ কেজি গুদামজাত ডালে ব্যবহার করতে হয়। এ বড়ি আবদ্ধ পরিবেশে ব্রবহার করতে হয়।

ফসল তোলা
ছোলার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

ফসল তোলা

চৈত্রের প্রথম সপ্তাহ থেকে মধ্য-চৈত্র (মধ্য-মার্চের শেষ) সময়ে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

  • বপনের ৯০-১২০ দিনের মধ্যে ছোলা সংগ্রহ করা যায়।
  • ফসল শুকিয়ে সংরক্ষণ করুন।

ছোলার অর্থনৈতিক গুরুত্ব

  • বাজার চাহিদা: ছোলা সারা বছর বাজারে চাহিদা রয়েছে।
  • রপ্তানি: বাংলাদেশের ছোলা আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি হয়।
  • কৃষকদের আয় বৃদ্ধি: সঠিক পরিচর্যায় ছোলার উৎপাদন খরচ কম এবং লাভ বেশি।

ছোলা শুধুমাত্র একটি পুষ্টিকর খাদ্য নয়, এটি কৃষকদের জন্য একটি অর্থকরী ফসল। সঠিক চাষ পদ্ধতি এবং যত্নে ছোলা চাষ করে আপনি ভালো আয় করতে পারেন। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষের জন্য ছোলা একটি উৎকৃষ্ট খাবার। তাই, ছোলা চাষে আগ্রহী হলে আজই শুরু করুন এবং এই পুষ্টিগুণে ভরপুর ফসল থেকে আয় ও স্বাস্থ্য লাভ করুন।

অন্যান্য

মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ
মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

মার্চ মাস কৃষি ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। শীতকালীন ফসলের শেষ পরিচর্যা এবং গ্রীষ্মকালীন ফসলের প্রস্তুতি এ সময়ে শুরু হয়। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এ সময়ে কৃষির উৎপাদনশীলতা বাড়ানো সম্ভব। এখানে মার্চ মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ধান চাষ
ধান চাষ

ধান চাষ

বোরো ধানের পরিচর্যা

  • ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি নিশ্চিত করুন।
  • পোকামাকড় যেমন ব্রাউন প্ল্যান্ট হপার (Brown Plant Hopper) এবং ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্থা নিন।
  • ইউরিয়া এবং পটাশ সারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী প্রয়োগ করুন।

গ্রীষ্মকালীন ধান চাষ

  • গ্রীষ্মকালীন ধানের বীজতলা প্রস্তুত করুন।
  • উচ্চ ফলনশীল জাত নির্বাচন করুন।
গম চাষ
গম চাষ

গম চাষ

  • গম ফসল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।
  • ফসল কাটার পর জমি পরিষ্কার করুন এবং পরবর্তী ফসলের জন্য প্রস্তুত রাখুন।
ডালশস্য
ডালশস্য

ডালশস্য

  • মুগ, মাসকলাই, এবং ছোলার বীজ বপন করুন।
  • আগাছা পরিষ্কার রাখুন এবং সঠিক সময়ে সেচ দিন।

তৈলবীজ চাষ

সূর্যমুখী এবং সয়াবিন

  • বীজ বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করুন।
  • সঠিক সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন এবং আগাছা নিয়ন্ত্রণ করুন।
সবজি চাষ
সবজি চাষ

সবজি চাষ

গ্রীষ্মকালীন সবজি বপন

  • লাউ, কুমড়ো, করলা, এবং ঢেঁড়স বীজ বপন করুন।
  • আগাছা নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক সেচ প্রদান করুন।

শীতকালীন সবজি সংগ্রহ

  • বাঁধাকপি, ফুলকপি, এবং মূলা সংগ্রহ করে বাজারজাত করুন।

ফল চাষ

  • আম, লিচু, এবং কাঁঠাল গাছের মুকুল রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
  • নতুন ফলের চারা রোপণের উপযুক্ত সময়।
মৎস্য চাষ
মৎস্য চাষ

মৎস্য চাষ

  • পুকুর পরিষ্কার করুন এবং পানি পরিবর্তন করুন।
  • মাছের খাবারের পরিমাণ এবং পুষ্টি বাড়িয়ে দিন।
  • পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য জৈব সার প্রয়োগ করুন।
গবাদি পশু পালন
গবাদি পশু পালন

গবাদি পশু পালন

  • গরু এবং ছাগলের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার যোগ করুন।
  • গবাদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধে টিকা নিশ্চিত করুন।

মার্চ মাসে কৃষি কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করলে ফসলের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকদের আয় বাড়ে। সময়মতো এবং সঠিক পদ্ধতিতে করণীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার মাধ্যমে সফল কৃষিকাজ নিশ্চিত করা সম্ভব।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

মসুর ডাল চাষের আধুনিক কৌশল

মসুর ডাল চাষের আধুনিক কৌশল
মসুর ডাল চাষের আধুনিক কৌশল

মসুর ডালের জুড়ি মেলা ভার। মাছে ভাতে বাঙালী এখন ডালে ভাতে বাঙালী । আর মসুর ডাল হচ্ছে সকলের প্রিয় ডাল। মসুর ডালে প্রচুর পরিমানে খাদ্যশক্তি ও প্রোটিন রয়েছে।

উপযুক্ত মাটি: সুনিষ্কাশিত বেলে দো-আঁশ মাটি মসুর চাষের জন্য বেশি উপযুক্ত।

জমি তৈরি: জমি ৩-৪টি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ভালভাবে সমান করে তৈরি করতে হবে।

মসুর ডাল চাষের উপযুক্ত মাটি ও জমি তৈরি
মসুর ডাল চাষের উপযুক্ত মাটি ও জমি তৈরি

বীজ বপন পদ্ধতি: আমাদের দেশে বেশির ভাগ স্থানে ছিটিয়ে বীজ বপন করে থাকে। তবে সারি করে বীজ বপন করলে ভাল হয়। সারিতে বপন করলে আগাছা দমন, পানি সেচ ও নিষ্কাশণ ব্যবস্থাপনা ও বিভিন্ন পরিচর্যা করতে সহজ হয়। সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারি থেকে সারির দুরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার রাখলে ভাল হয়। প্রতি হেক্টরে ৩০-৩৫ কেজি বীজের দরকার। ছিটিয়ে বীজ বপন করলে বীজের পরিমাণ সামান্য বেশি দিতে হয়।

বীজ বপনের সময়: কার্তিক মাসের দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় সপ্তাহ (অক্টোবর মাসের শেষ থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ) পর্যন্ত মসুর বীজ বপন করার উত্তম সময়।

সার ব্যবস্থাপনা: জমিতে হেক্টর প্রতি সারের পরিমাণ ।
সারের নাম হেক্টর প্রতি
১. ইউরিয়া ৪০-৫০ কেজি
২. টিএসপি ৮০-৯০ কেজি
৩. এমপি/পটাশ ৩০-৪০ কেজি
৪. অনুজীব সুপারিশমত।

মসুর ডাল চাষের বীজ বপন পদ্ধতি ও সার ব্যবস্থাপনা
মসুর ডাল চাষের বীজ বপন পদ্ধতি ও সার ব্যবস্থাপনা

সার প্রয়োগ পদ্ধতি: সম্পূর্ণ সার জমি শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। যে জমিতে পূর্বে মসুর চাষ করা হয় নাই প্রতি কেজি বীজের জন্য ৯০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অনুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

পরিচর্যা: বীজ বপনের ৩০-৩৫ দিনের মধ্যে নিড়ানী দ্বারা আগাছা দমন করা যেতে পারে। অতিবৃষ্টি হলে জমিতে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য পানি বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

মসুর ডাল চাষের পোকা-মাকড়, রোগ বালাই ও ফসল সংগ্রহ
মসুর ডাল চাষের পোকা-মাকড়, রোগ বালাই ও ফসল সংগ্রহ

পোকা-মাকড় ও রোগ বালাই: মসুরের গোড়া পচাঁ রোগ হলে ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া ভিটাভেক্স-২০০ প্রতি কেজি বীজে ২.৫-৩.০ গ্রাম (০.২৫%) মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।
মসুরের মরিচা রোগ হলে অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। রোগ প্রতিরোধী বারি মসুর-৩, বারি মসুর-৪ জাতের চাষ করতে হবে। এছাড়া টিল্ট-২৫০ ইসি (০.০৪%) ১২-১৫ দিন পরপর ২-৩ বার ¯েপ্র করতে হবে।
মসুরের স্টেমফাইলাম ব্লাইটরোগ হলে অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া রোভরাল ডব্লিউপি নামক ছত্রাক নাশক (০.২%) ১০দিন পরপর ২-৩ বার ¯েপ্র করতে হবে।
ফসল সংগ্রহঃ– মধ্য ফাল্গুন থেকে মধ্য চৈত্র (মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করা যায়।

বীজ সংরক্ষণ: বীজ ভালভাবে রোদে শুকিয়ে আর্দ্রতার পরিমাণ আনুমানিক ১০%এর নিচে রাখতে হবে। তারপর টিনের পাত্র ও পলিথিনের ব্যাগ বা চটের ব্যাগ অথবা আলকাতরার প্রলেফ দেওয়া মাটির পাত্রে বীজ সংরক্ষণ করতে হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

অন্যান্য

ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ
ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ

ফেব্রুয়ারি মাস কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। শীতের শেষ এবং গ্রীষ্মের শুরুতে ফসলের যত্ন, বপন এবং রোপণ কার্যক্রম চালানো হয়। সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যক্রমের মাধ্যমে ভালো ফলন নিশ্চিত করা সম্ভব। এখানে ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিতে করণীয় কাজসমূহ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ধান চাষ
ধান চাষ

ধান চাষ

বোরো ধানের পরিচর্যা

  • জমিতে পানি সঠিকভাবে ধরে রাখুন।
  • ধানের চারাগাছের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত সেচ নিশ্চিত করুন।
  • পোকামাকড় যেমন স্টেম বোরার (Stem Borer) এবং পাতামোড়া পোকার (Leaf Roller) আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করুন।
  • ধানের জমিতে প্রয়োজনীয় সার যেমন ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ প্রয়োগ করুন।
গম চাষ
গম চাষ

গম চাষ

  • জমি আগাছামুক্ত রাখুন এবং সঠিক পরিমাণে সেচ দিন।
  • পাউডারি মিলডিউ (Powdery Mildew) এবং ব্রাউন রাস্ট (Brown Rust) রোগের লক্ষণ দেখা দিলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিন।
ডালশস্য
ডালশস্য

ডালশস্য

  • মসুর, মুগ, এবং ছোলার ফসল সংগ্রহের উপযুক্ত সময়।
  • ফসল কাটার পরে জমি পরিষ্কার করে পরবর্তী চাষের জন্য প্রস্তুত করুন।

তৈলবীজ চাষ

সরিষা ফসল সংগ্রহ

  • সরিষার শুঁটি শুকিয়ে যাওয়ার আগেই ফসল সংগ্রহ করুন।
  • জমি পরবর্তী ফসলের জন্য প্রস্তুত রাখুন।

সূর্যমুখী এবং সয়াবিন

  • বপনের জন্য জমি প্রস্তুত করুন।
  • সঠিক সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন।
সবজি চাষ
সবজি চাষ

সবজি চাষ

শীতকালীন সবজি সংগ্রহ

  • বাঁধাকপি, ফুলকপি, গাজর, এবং মূলা সংগ্রহ করুন।

গ্রীষ্মকালীন সবজি বপন

  • লাউ, কুমড়ো, ঢেঁড়স, এবং করলার বীজ বপন করুন।
  • আগাছা পরিষ্কার এবং সেচের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন।

ফল চাষ

  • আম, কাঁঠাল, এবং লিচু গাছের মুকুল রক্ষায় কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ব্যবহার করুন।
  • নতুন ফলের চারা রোপণ করুন।

মৎস্য চাষ

  • পুকুরে নিয়মিত পানি পরিবর্তন এবং মাছের খাবার সরবরাহ করুন।
  • পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের জন্য জৈব সার প্রয়োগ করুন।
মাছ ও গবাদি পশুর যত্ন
মাছ ও গবাদি পশুর যত্ন

গবাদি পশু পালন

  • গরু এবং ছাগলের খাদ্য তালিকায় শুষ্ক খড় এবং কাঁচা ঘাস যোগ করুন।
  • রোগ প্রতিরোধে টিকা প্রয়োগ এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিত করুন।

ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিকাজ সঠিকভাবে পরিচালনা করলে ফসলের ফলন বৃদ্ধি পায় এবং কৃষকের আয় বাড়ে। প্রতিটি কাজ সময়মতো এবং সঠিক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করার মাধ্যমে কৃষি কার্যক্রমকে আরও সফল করে তোলা সম্ভব।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

বোরো ধান চাষের গুরুত্ব

বোরো ধান চাষের গুরুত্ব
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব

বোরো ধানের চাষ বাংলাদেশের কৃষি ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি কৃষকের আয় বৃদ্ধি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

বোরো ধান চাষের গুরুত্ব নিচে তুলে ধরা হলো:

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ

  • বোরো ধান দেশের মোট চাল উৎপাদনের একটি বড় অংশ যোগান দেয়।
  • এটি খাদ্য চাহিদা পূরণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

বছরব্যাপী ধান উৎপাদন সম্ভব

  • বোরো ধান শীতকালীন মৌসুমে চাষ করা হয় এবং গ্রীষ্মের শুরুতে কাটা হয়।
  • এর ফলে পুরো বছর ধান উৎপাদনের একটি ধারাবাহিকতা বজায় থাকে।
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব

সেচনির্ভর ধান চাষ

  • বোরো ধান চাষ সেচনির্ভর হওয়ায় খরার প্রভাব কম পড়ে।
  • সেচ ব্যবস্থার উন্নতির কারণে এটি সারা দেশে চাষযোগ্য।

উচ্চ ফলনশীল ধান

  • বোরো ধান উচ্চ ফলনশীল জাত হওয়ায় এর চাষ থেকে বেশি পরিমাণ চাল পাওয়া যায়।
  • প্রতি হেক্টরে ৫-৮ টন ধান উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়ন

  • বোরো ধানের উৎপাদন কৃষকের আয় বৃদ্ধি করে।
  • চাল রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সুযোগ তৈরি হয়।
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব

শ্রমজীবী মানুষের কর্মসংস্থান

  • বোরো ধানের চাষ, পরিচর্যা, সেচ এবং ফসল কাটার সময় বিপুল পরিমাণ শ্রমিকের প্রয়োজন হয়।
  • এর ফলে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত হয়।

জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল জাত

  • বোরো ধানের উন্নত জাতগুলো খরা, লবণাক্ততা এবং রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।
  • এটি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়ক।

প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের প্রয়োগ

  • বোরো ধান চাষে উন্নত প্রযুক্তি যেমন সেচ যন্ত্র, উচ্চফলনশীল বীজ এবং বালাইনাশক ব্যবহৃত হয়।
  • এটি চাষাবাদের আধুনিকীকরণে সহায়ক।

রপ্তানি সম্ভাবনা

  • উচ্চমানের বোরো ধান থেকে প্রাপ্ত চাল আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা সম্ভব।
  • এটি দেশের অর্থনীতিতে বৈদেশিক মুদ্রার অবদান বাড়ায়।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা

  • বোরো ধানের উৎপাদন খাদ্যের সহজলভ্যতা বাড়িয়ে সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে।
  • খাদ্য মজুত থাকায় দেশের দুর্যোগকালীন সময় খাদ্য সংকট কম হয়।
বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য
বোরো ধান চাষের গুরুত্ব

বোরো ধানের চাষ বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং কৃষি উৎপাদনে একটি অনন্য স্থান দখল করে আছে। সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বোরো ধানের উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব, যা দেশের সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক হবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফসল

বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য

বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য
বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য

বোরো ধান বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শস্য, যা শীতকালীন মৌসুমে (রবি মৌসুম) চাষ করা হয়। সাধারণত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে বোরো ধানের চাষ শুরু হয় এবং এপ্রিলে ফসল সংগ্রহ করা হয়। এটি সেচনির্ভর ধান, যা সঠিক জল সরবরাহ ও পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো উৎপাদন দেয়।

বোরো ধান বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ফসল, যা শীতকালীন মৌসুমে রবি ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। এটি মূলত সেচনির্ভর এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য
বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য

বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য

বোরো ধান বাংলাদেশের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেচনির্ভর শস্য। এটি বিশেষত শীতকালীন মৌসুমে (রবি মৌসুম) চাষ করা হয়। এর কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:

সেচনির্ভর চাষাবাদ

  • বোরো ধানের চাষ সম্পূর্ণরূপে সেচের ওপর নির্ভরশীল।
  • সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনা ফসলের উচ্চ ফলন নিশ্চিত করে।

উচ্চ ফলনশীলতা

  • বোরো ধান সাধারণত উচ্চ ফলনশীল জাত, যা থেকে প্রতি হেক্টরে ৫-৮ টন পর্যন্ত ধান পাওয়া যায়।
  • ব্রি ধান-২৮, ব্রি ধান-২৯ এবং হাইব্রিড জাতগুলোর ফলন ক্ষমতা বেশি।

শীতকালীন চাষের উপযোগিতা

  • বোরো ধানের চাষ শীতকালীন (নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি) ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় শুরু হয় এবং গরম আবহাওয়ায় (এপ্রিল-মে) ধান কাটা হয়।
  • এটি ঠাণ্ডা ও কম বৃষ্টিপাতের আবহাওয়ায় ভালোভাবে বৃদ্ধি পায়।

উন্নত জাতের ব্যবহার

  • বোরো মৌসুমে উচ্চফলনশীল এবং লবণাক্ততা সহনশীল জাত যেমন ব্রি ধান-৬৭, ব্রি ধান-৭৫, এবং ব্রি ধান-৮৮ চাষ করা হয়।
  • কিছু জাত খরা বা জলাবদ্ধতাও সহ্য করতে পারে।

দীর্ঘ জীবনকাল

  • বোরো ধানের জীবনকাল সাধারণত ১৪০-১৫০ দিন।
  • এই দীর্ঘ সময়ে ধানের গুণগত মান ভালো থাকে।

পানির প্রয়োজনীয়তা

  • বোরো ধানের জন্য প্রায় ৩০০০-৫০০০ লিটার পানি প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে প্রয়োজন হয়।
  • পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ নিশ্চিত না হলে ফলন কমে যায়।
বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য
বোরো ধানের বৈশিষ্ট্য

রোগ ও পোকামাকড় প্রতিরোধ ক্ষমতা

  • বোরো ধানের কিছু উন্নত জাত ব্লাস্ট রোগ ও পাতামোড়ানো পোকা প্রতিরোধ করতে পারে।
  • রোগ-বালাই কমানোর জন্য নিয়মিত পরিচর্যা এবং সঠিক বালাইনাশক প্রয়োগ প্রয়োজন।

দানার গুণগত মান

  • বোরো ধানের দানার মান তুলনামূলক ভালো এবং এটি খাদ্যের জন্য উৎকৃষ্ট।
  • দানাগুলো মাঝারি আকৃতির এবং মসৃণ হয়।

খাদ্য নিরাপত্তায় অবদান

  • বোরো ধান দেশের মোট চাল উৎপাদনের একটি বড় অংশ সরবরাহ করে।
  • এটি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চাষের জন্য উপযোগী জমি

  • উঁচু এবং মাঝারি নিচু জমি বোরো ধানের চাষের জন্য আদর্শ।
  • জলাবদ্ধ জমিতে চাষ না করাই ভালো।
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ