আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

পরিবেশ

পুষ্টির চাহিদা মেটাবে জিংক সমৃদ্ধ চাল

দানাদার শস্যে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও অপুষ্টিজনিত অদৃশ্য ক্ষুধায় ভুগছে দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনগোষ্ঠী। সুষম খাবারের ঘাটতি রয়েছে শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি জনসংখ্যার। বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে কৃষি তথ্য সার্ভিসের ড. সুরজিত সাহা রায় জানান, বাংলাদেশ একটি ঘনবসতি দেশ। ছোট এ দেশটির জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে ১৬ কোটি।

২০১৮ সালের জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ২১.৮ শতাংশ এবং হতদরিদ্রের হার ১২.৯ শতাংশ। পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের মধ্যে খর্বতার হার ৩১ শতাংশ (বিডিএইচএস, ২০১৯)। দানাদার শস্যে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও অপুষ্টিজনিত অদৃশ্য ক্ষুধায় বা হিডেন হাঙ্গারে ভুগছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনগোষ্ঠী। শতকরা ৫০ ভাগেরও বেশি জনসংখ্যার সুষম খাবারের ঘাটতি রয়েছে। ভিটামিন ‘এ’, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক এবং আয়রনের অভাব উল্লেখযোগ্য। পাঁচ বছরের কম বয়সি শতকরা ৪১ ভাগ শিশু জিঙ্কের অভাবে ভুগছে, শতকরা প্রায় ৩৬.৪ ভাগ শিশু খর্বকায়। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সি মেয়েদের শতকরা প্রায় ৪৪ ভাগ অপুষ্টির কারণে বেটে বা লম্বায় কম। অপুষ্টির ঘাটতি মেটাতে না পারলে স্থূলতা এবং অসংক্রামক রোগের প্রবণতা বাড়তে পারে। বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট ও লক্ষ্যসমূহের সাথে মিল রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের অবসান, ক্ষুধার অবসান ও উন্নত পুষ্টিঅর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

 ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য। এ দেশের মানুষের ৭৭ শতাংশ ক্যালরি ও ৫০ শতাংশ প্রোটিন আসে ভাত থেকে। প্রতিদিন গড়ে মাথাপিছু ৩৬৭ গ্রাম চালের ভাত আমরা খেয়ে থাকি। ভাত বা দানাদার খাদ্য মোট খাদ্যশক্তির ৬০ শতাংশের বেশি দখল করে আছে। অর্থাৎ, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির অধিকাংশ ক্যালরি, প্রোটিন ও খনিজ উপাদান আসে ভাত থেকে। চালে মোটামুটি ৮০ শতাংশ শর্করা, ৭.১ শতাংশ প্রোটিন, ০.৬৬ শতাংশ চর্বি, ০.১২ শতাংশ চিনি, শতকরা ১.৩ ভাগ আঁশ থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম চালে ১১৫ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১১৫ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৫ মিলিগ্রাম ম্যাগনেসিয়াম, ২৮ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪.৩১ মিলিগ্রাম আয়রন পাওয়া যায় (ইউএসডিএ, ২০১২)।

মানবদেহের জন্য জিঙ্ক খুব প্রয়োজনীয় একটি খনিজ উপাদান। মানবদেহের ৩০০টি এনজাইমের সাথে জিঙ্ক সরাসরি অংশগ্রহণ করে যেগুলো দেহের অনেক বিপাকীয় কাজে অংশ নেয়। জিঙ্কের অভাবে মুখের রুচি নষ্ট হয়, স্বাদ ও গন্ধ নষ্ট হয়, ওজন কমে যায় অথবা মুটিয়ে যায়, চুল পড়ে যায়, হজমে সমস্যা হয়, জটিল ধরনের অবসাদগ্রস্ততা দেখা দেয়, বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়, হরমোনের সমস্যা হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, মনোযোগ ও স্মরণশক্তি কমে যায়, ত্বকের ক্ষত সারতে দেরি হয় এবং স্নায়ুবিক দুর্বলতা দেখা দেয়। মানব শরীর জিঙ্ক সংরক্ষণ করে রাখতে পারে না বিধায় প্রতিদিনই একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের ১১ মিলিগ্রাম এবং নারীদের ৮ মিলিগ্রাম জিঙ্ক গ্রহণ করতে হয়। গর্ভবতী মায়েদের দৈনিক ১১ মিলিগ্রাম, দুগ্ধদানকারী মায়েদের ১২ মিলিগ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন এবং শিশুদের দৈনিক চাহিদা ৩-৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক।

লাল মাংস জিঙ্কের ভালো উৎস। ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ৪.৮ মিলিগ্রাম জিঙ্ক থাকে, যা দৈনিক চাহিদার শতকরা ৪৪ ভাগ মেটায়। ১০০ গ্রাম ছোট চিংড়ি দৈনিক চাহিদার শতকরা ১৪ ভাগ মেটায়। ১০০ গ্রাম রান্না করা ডাল মেটাতে পারে চাহিদার মাত্র ১২শতাংশ। বাদামে প্রচুর জিঙ্ক আছে। ২৮ গ্রাম বাদাম চাহিদার ১৫শতাংশ, পনির ২৮শতাংশ, এক কাপ দুধ ৯ শতাংশ এবং একটি ডিম শতকরা ৫ ভাগ জিঙ্কের চাহিদা মেটাতে পারে। মাংস, ডিম, দুধ, পনির, বাদাম, চিংড়ি দামি খাবার হওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নাগালের বাইরে। লাল মাংস ও চিংড়িতে কোলেস্টেরল বেশি থাকায় বয়স্ক জনগণ সাধারণত ডাক্তারের পরামর্শে এসব খাবার এড়িয়ে চলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার খাদ্যের মাধ্যমে পুষ্টির জোগান শ্লোগানকে সামনে রেখে আমাদের বিজ্ঞানীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। যার ফলে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ৬টি জিঙ্ক সমৃদ্ধ ধানের জাত, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১টি ধানের জাত এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ১টি জিঙ্কসমৃদ্ধ গমের জাত উদ্ভাবন করেছে। উদ্ভাবিত জিঙ্কসমৃদ্ধ জাতগুলোতে প্রতি কেজি চালে ২২ থেকে ২৭ মিলোগ্রাম জিঙ্ক থাকে যেখানে সাধারণ চালে থাকে মাত্র ১৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক। প্রতিদিন ৪০০ গ্রাম জিঙ্কসমৃদ্ধ চালের ভাত খেলে একজন ভোক্তা প্রতিদিন ৯ থেকে ১০ মিলিগ্রাম জিঙ্ক পেতে পারে, যা দৈনিক চাহিদার প্রায় সমান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৩ সালে বিশে^ সর্বপ্রথম জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত ব্রি ধান৬২ উদ্ভাবন করে। এরপর একে একে ব্রি ধান৬৪, ব্রি ধান৭২, ব্রি ধান৭৪, ব্রি ধান৮৪ এবং সর্বশেষ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে উচ্চ জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধান১০০ অবমুক্ত করে। বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট জিঙ্কসমৃদ্ধ বিনাধান-২২ নামের ধানের জাত এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ২০১৭ সনে বারি গম৩৩ উদ্ভাবন করেছে।

আমন মৌসুমে আবাদের জন্য তিনটি জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। ব্রি ধান৬২ জিংক এর পরিমাণ প্রতি কেজি চালে ১৯ মিলিগ্রাম। হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ৩.৫-৪.৫ টন। ব্রি ধান ৭২ জিঙ্কের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ২২.৮ মিলিগ্রাম। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৫.৭ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে এর ফলন হেক্টরপ্রতি ৭.৫ টন হতে পারে। বিনাধান-২২ জিঙ্কের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ২৬ মিলিগ্রাম। গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ৬.১ টন হলেও ৬.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

বোরো মৌসুমে আবাদের জন্য জিঙ্কসমৃদ্ধ চারটি জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। প্রতি কেজিতে ২৪ মিলিগ্রাম জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধান৬৪ হেক্টরপ্রতি ৬.০ থেকে ৬.৫ টন ফলন দিতে পারে। ব্রি ধান৭৪ জাতটির প্রতি কেজিতে জিঙ্কের পরিমাণ ২৪.২ মিলিগ্রাম আছে। গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭.১ টন হলেও উপযুক্ত পরিচর্যায় ৮.৩ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। ব্রি ধান৮৪ জাতটি প্রতি কেজি চালে জিঙ্ক আছে ২৭.৬ মিলিগ্রাম, ১০.১ মিলিগ্রাম আয়রন ও শতকরা ৯.৭ ভাগ প্রোটিন আছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ৬.০-৬.৫ টন হলেও উপযুক্ত পরিবেশে ৮ টন ফলন দিতে সক্ষম। নাজিরশাইল চালের ন্যায় দানাবিশিষ্ট ব্রি ধান ১০০ জাতটির প্রতি কেজি চালে জিঙ্কের পরিমাণ ২৫.৭ মিলিগ্রাম। গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭.৭ টন হলেও উপযুক্ত পরিবেশে ৮.৮ টন ফলন দিতে সক্ষম। বারি গম৩৩ গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৩.৯৫ টন। ধানের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি জিংকসমৃদ্ধ অর্থাৎ, প্রতি কেজি গমে ৫০ থেকে ৫৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক আছে।

বাংলাদেশে গত বছর অর্থাৎ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বোরো মৌসুমে ব্রি ধান৭৪ ও ব্রি ধান৮৪ এর আবাদ হয়েছে যথাক্রমে ৫৭,২৪৫ ও ২,৮২৯ হেক্টর জমিতে। এ বছর এ জাত দুটির আবাদ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহত্তর বরিশাল জেলার লোকেরা মোটা চাল পছন্দ করে বিধায় ওই অঞ্চলে ব্রি ধান৭৪ এর আবাদ বাড়ছে। অন্যান্য জেলায় অধিক ফলন, রোগবালাই কম ও জীবনকাল তুলনামূলক কম হওয়ায় কৃষকদের মাঝে এ জাতটি আবাদে আগ্রহ বাড়ছে। জিঙ্কসমৃদ্ধ হওয়ায় এ জাতের চালের ভাত খাওয়ার ব্যাপারে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন জেলার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। কৃষক তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ধান সিদ্ধ করে ভ্যানচালিত কলে চাল করে নিজেরা খায় এবং অতিরিক্ত চাল স্থানীয় বাজারে চাল বিক্রি করে। কিন্তু বাজারে জিঙ্কসমৃদ্ধ কোন জাতের চাল পাওয়া যায় না।

চালের বাজার মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে চালকলের মালিকরা। চালকল বলতে বুঝানো হচ্ছে অটো রাইস মিলকে। কৃষকের উৎপাদিত ধানকে মোটা ও চিকন দুটো গ্রেড করে তারা চাল করে। শহরের বাজারে যেসব চাল পাওয়া যায় তা মিনিকেট, নাজির, আটাশ মিনিকেট, চিনিগুঁড়া, বাসমতি, জিরা, স্বর্ণা, ইত্যাদি নামে পরিচিত। মিনিকেট ও নাজির চালের বাজারমূল্য বেশি। চিনিগুঁড়া চাল পোলাওয়ের চাল। প্রকৃতপক্ষে, মিনিকেট নামের কোনো ধানের জাত নেই। নাজিরশাইল আমন মৌসুমে খুব সামান্য চাষ হয় এর ফলন কম হওয়ার কারণে ব্রি ধান২৮ বা মাঝারি মোটা জাতের চালকে পলিশ করে তথা ছেঁটে মিনিকেট করা হয়। ব্রি ধান৪৯ জাতের চালকে পলিশ করে নাজির নামে বিক্রি করা হয়। একইভাবে ব্রি ধান৩৪ কে চিনিগুঁড়া এবং ব্রি ধান৫০ কে বাসমতি চাল নামে বাজারে বিক্রি করা হয়।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ পর্যন্ত শতাধিক উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও বেশ কয়েকটি হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)সহ বিভিন্ন বেসরকারি বীজ কোম্পানি বেশ কয়েকটি হাইব্রিড ধানের জাত বাজারজাত করে এবং কিছু হাইব্রিড জাতের বীজ এদেশেই উৎপাদন করে। কৃষকরা বিভিন্ন নামের স্থানীয় জাত এবং ভারত থেকে আসা বিভিন্ন জাত চাষ করে থাকে। সবমিলিয়ে এদেশে কয়েক শত জাতের ধানের আবাদ হয়ে থাকে। একেকটা জাতের একেক রকম স্বাদ, বর্ণ ও বৈশিষ্ট্য। উৎপাদনকারী কৃষক নিজেরা এসব আবাদ করে এবং নিজের পছন্দের জাতের চাল খেতে পারলেও বাজারের সাধারণ ভোক্তারা এ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

যখন ঢেঁকিছাঁটা চাল এবং ছোট ছোট বয়লারের চাল বাজারে আসতো তখন চালের জাতের বৈচিত্র্য ছিল। এখন অটো রাইস মিল হওয়ায় সেটা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ একটা বড় অটো রাইস মিলে প্রতিদিন প্রায় ৯৬ টন ধান প্রয়োজন। চক্র পূরণের জন্য কমপক্ষে ৭০০ টন ধান না হলে মিলারদের পক্ষে সেই জাতের চাল করা সম্ভব না। মিলাররা ফড়িয়া বা সরবরাহকারী ব্যবসায়ীদের থেকে ধান সংগ্রহ করেন। ফড়িয়াদের দ্রুত ধান সংগ্রহ করে মিলারদের সরবরাহ করতে হয় বলে তারা এতো জাত না বেছে সহজভাবে মোটা, মাঝারি মোটা, চিকন, ইত্যাদিতে গ্রেড করে মিলারদের সরবরাহ করে। এরপর এসব জাত পলিশ করা, সাদা করা, সর্টিং করা ইত্যাদি করে মিনিকেট বা নাজির নামে বাজারে বিক্রি করা হয়।

ভোক্তারাও এসব জাতের চাল বেশি দামে কিনে দুইভাবে প্রতারিত হচ্ছেন। প্রথমত বেশি দাম ও দ্বিতীয়ত ভিটামিন ও খনিজহীন শর্করা বিশিষ্ট চাল। চাল ছাটাই ও পলিশ করলে এর ভিটামিন ও খনিজ উপাদান প্রায় সবটাই নষ্ট হয়ে যায়। মিলাররা ছাঁটাইকরা চাল বেশি দামে বিক্রি করতে পারে এবং উপজাত হিসেবে যে কুঁড়া পায় সেটাও মাছের খাদ্য হিসেবে বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। ভোক্তারা না বুঝে বা নিরুপায় হয়ে অধিক দামে এসব চালের নামে আবর্জনা কিনে খাচ্ছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের জাতের চাল বাজারে ভিন্ন নামে বিক্রি হওয়ায় তাদের পরিশ্রমের স্বীকৃতিও পাচ্ছে না। সচেতন ভোক্তারা বাজারে তাদের চাহিদা মতো পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ চাল খেতে পারছে না।

এ সব সমস্যার আশু সমাধান দরকার। মিলার ও ভোক্তা উভয়ের এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। তাই সবার আগে ভোক্তাদের ধানের জাত ও খাদ্যপুষ্টি সম্বন্ধে সচেতন হতে হবে এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। এ ছাড়াও, ভিন্ন নামে চাল বাজারে বিক্রি করাকে প্রতারণার দায়ে দোষী করে অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ফড়িয়াদের সততার সঙ্গে নির্দিষ্ট জাতের ধান ক্রয় করে মিলারদের সরবরাহ করতে হবে। কৃষকদেরও যেসব জাতের ফলন ও বাজারমূল্য বেশি সেসব জাতের আবাদ বাড়াতে হবে অর্থাৎ বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করতে হবে। কৃষি শ্রমিকের খরচ সাশ্রয় ও দ্রুততার সঙ্গে কম সময়ে আবাদ ও কর্তন কাজে কৃষি যন্ত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে। সমকালীন চাষাবাদ ও সমবায়ের মাধ্যমে আবাদ করতে হবে। এর ফলে, ধানের ফলন বাড়ানো, সফলতার সঙ্গে রোগবালাই-পোকামাকড় দমন, কৃষকের প্রযুক্তি জ্ঞান বাড়ানো, বাজারমূল প্রাপ্তিসহ নানা বিষয়ে কৃষক লাভবান হতে পারবে।

যেমন : কোন উপজেলায় ৫০০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান৭৪ এর আবাদ হলে ৩০০০ টন ধান উৎপাদন হবে; ফড়িয়া বা মিলাররা এসব কৃষক থেকে খুব সহজেই ২০০০ টন ব্রি ধান৭৪ ধান সংগ্রহ করতে পারবে এবং সেই চালটা ব্রি ধান৭৪ নামে বাজারে বিক্রি করতে পারবে। সেক্ষেত্রে, ফড়িয়াকে ধানের জাত ও ওই আবাদকারী কৃষককে চিনতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসাররা এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারে। সাধারণ ভোক্তারা জিঙ্কসমৃদ্ধ ধানের চাল খেয়ে জিঙ্কের অপুষ্টি দূর করতে পারবে। বরিশাল বিভাগের জনগণ মোটা চাল খেতে পছন্দ করে, তারা ব্রি ধান৭৪ এর চাল খেতে পারবে এবং যারা চিকন ও লাল চালের ভাত খেতে পছন্দ করে তারা ব্রি ধান৮৪ অথবা ব্রি ধান১০০ জাতের চাল খেয়ে দেহের জিঙ্কের চাহিদা অনেকটাই মেটাতে পারবে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

পরিবেশ

সুতার রঙে ‘রঙিন’ মানুষের দুঃখের কাব্য

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার কাঁঠালতলার ফুরিন্দা গ্রামে সুতার রঙে প্রায় রঙিন হয়ে যাওয়া মানুষের দেখা মেলে। তবে জীবনটা সেই অর্থে রঙিন নয়। বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য কেনা হয়েছিল, কিন্তু বেঁচে যাওয়া বা বাতিল হওয়া সুতা নারায়ণগঞ্জের কারখানার মালিকেরা দিয়ে যান মহাজনদের। নতুন করে বিভিন্ন রং করা সুতায় বোনা হয় গামছা, লুঙ্গি বা থ্রিপিস। মহাজনেরা সুতা রং করার জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা শ্রমিকদের কাজে লাগান। থাকা ও খাবারের খরচ মহাজনের। শ্রমিকেরা মাসে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পান।

কারখানার মালিকের চাহিদা অনুযায়ী কেমিক্যাল মিশিয়ে, জ্বাল দিয়ে বিভিন্ন রঙে সুতা রং করেন। রোদে শুকিয়ে পাঠিয়ে দেন সুতার মালিকের কাছে। বছরের পর বছর কাজ করতে করতে শ্রমিকদের হাত-পায়ে রং লেগেই থাকে। খাওয়ার সময় কটু স্বাদ লাগে। শ্বাসকষ্টসহ অন্যান্য অসুখ-বিসুখ তো আছেই। করোনার প্রাদুর্ভাবসহ নানা কারণে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সুতায় রং করার কারিগরদের চাহিদাও কমছে। রঙিন এসব মানুষের ছবিগুলো সম্প্রতি তোলা।

রোদে শুকানোর পর সুতা ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক।
রোদে শুকানোর পর সুতা ঘরে নিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিক।
কাজে কাজে অনেক বয়স হয়ে গেল।
কাজে কাজে অনেক বয়স হয়ে গেল।
সুতায় চোখমুখ ঢেকে গেছে।
সুতায় চোখমুখ ঢেকে গেছে।
বয়স হলেও কাজে কামাই দেওয়ার উপায় নেই।
বয়স হলেও কাজে কামাই দেওয়ার উপায় নেই।
কেমিক্যাল মেশানোর সময় চোখ জ্বালা করে।
কেমিক্যাল মেশানোর সময় চোখ জ্বালা করে।
এক চুলায় ভাত, আরেক চুলায় রং জ্বাল দেওয়া হচ্ছে। এটাই শ্রমিকদের জীবনের দৈনন্দিন ঘটনা।
এক চুলায় ভাত, আরেক চুলায় রং জ্বাল দেওয়া হচ্ছে। এটাই শ্রমিকদের জীবনের দৈনন্দিন ঘটনা।
এ ধরনের নোংরা পরিবেশেই শ্রমিকেরা বছরের পর বছর কাজ করছেন।
এ ধরনের নোংরা পরিবেশেই শ্রমিকেরা বছরের পর বছর কাজ করছেন।
রং থেকে বাঁচাতে পা বেঁধেছেন পলিথিন দিয়ে।
রং থেকে বাঁচাতে পা বেঁধেছেন পলিথিন দিয়ে।
হাতে রং লেগে থাকে, খাবারের সময়ও এর কটু স্বাদ পান শ্রমিকেরা।
হাতে রং লেগে থাকে, খাবারের সময়ও এর কটু স্বাদ পান শ্রমিকেরা।
রং মেশাচ্ছেন এক শ্রমিক।
রং মেশাচ্ছেন এক শ্রমিক।
মহাসড়কের পাশে সুতা শুকাতে দিয়েছেন শ্রমিকেরা।
মহাসড়কের পাশে সুতা শুকাতে দিয়েছেন শ্রমিকেরা।
রঙিন এসব মানুষের জীবনটাই শুধু রঙিন নয়।
রঙিন এসব মানুষের জীবনটাই শুধু রঙিন নয়।
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

জেনে নিন, যেসব গাছ মশা তাড়াবে

জেনে নিন, যেসব গাছ মশা তাড়াবে
জেনে নিন, যেসব গাছ মশা তাড়াবে

মশার আক্রমণ প্রায় সব ঋতুতেই দেখা যায় কমবেশি। এখন শীতকাল। প্রকৃতি এ সময়ে নিজেকে শীতল চাদরে মুড়িয়ে নিলেও মশার প্রকোপ বেড়ে যায় অনেকটাই। গাছ হতে পারে মশা তাড়ানোর সমাধান। এমন কিছু গাছ আছে, যা পড়ে থাকে অযত্নে, কিন্তু মশার যম। মশা দমন করতে ঘরে কিছু গাছ আনলে উপকার তো হবেই, আবার সবুজের ছোঁয়াও পাবেন একই সঙ্গে।

তুলসী, পুদিনা, ল্যাভেন্ডার ও গাঁদাজাতীয় গাছে কীট প্রতিরোধক কিছু যৌগ থাকে। সাইপারমেথিরিন ও ম্যালাথিওন জাতীয় সক্রিয় যৌগ মশার ডিম, লাভা ও মশার বৃদ্ধি রোধ ও ধ্বংস করতে কাজ করে। যৌগিক পদার্থের সাধারণত দুই ধরনের প্রোপার্টিজ থাকে। একটি হলো শারীরিক, অন্যটি রাসায়নিক প্রোপার্টিজ। গাছের পাতার বা ফুলের তীব্র গন্ধ এর শারীরিক প্রোপার্টিজের জন্য। গন্ধ থাকার পাশাপাশি কীট প্রতিরোধক যৌগিকের সক্রিয় উপস্থিতি থাকতে হবে অবশ্যই। তবেই এ ধরনের গাছ মশা দূর করতে বা অনেক ক্ষেত্রে মশা ধ্বংস করতে কাজ করবে। এমনটাই জানালেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানি বিভাগের অধ্যাপক নুহু আলম।

মশার মতো কীটপতঙ্গ তাড়াতে পারে এমন কিছু গাছের কথা থাকছে এখানে।

ল্যাভেন্ডার গাছ
ল্যাভেন্ডার গাছ

ল্যাভেন্ডার গাছ

বাড়িতে ল্যাভেন্ডার গাছ থাকলে খেয়াল করে দেখবেন, এর পাতার কাছে কোনো পোকাই বসে না। তার কারণ ল্যাভেন্ডারের গন্ধ। এই গাছের পাতায় একধরনের এসেনশিয়াল তেল থাকে। তাই এর সুতীব্র গন্ধে গাছ ও তার আশপাশে আসতে পারে না মশা। তাই অনেকে ল্যাভেন্ডারের গন্ধযুক্ত সুগন্ধিও ব্যবহার করে থাকেন। দেশীয় গাছ না হলেও ল্যাভেন্ডার কিন্তু খুব সহজেই জন্মায় এ দেশে। এই গাছের জন্য পানিনিষ্কাশন ও সূর্যের আলোর ব্যবস্থা থাকলেই হয়।

গাঁদা ফুল
গাঁদা ফুল

গাঁদা ফুল

শীতকালের অন্যতম ফুল এটি। বাড়ির চারপাশে বা বারান্দায় সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকেই হলুদ বা কমলা রঙের এই ফুলের গাছ লাগিয়ে থাকেন। এই ফুলের গন্ধেও অনেকেই বিমোহিত হন। কিন্তু গাছের পাতা বা ফুলের গন্ধ একেবারে সহ্য করতে পারে না মশা। গাঁদা ফুলের পাপড়ি এবং গাছের পাতায় থাকে অ্যান্টিসেপ্টিক। যার কারণে মশা একেবারেই দূরে থাকে এই গাছ থেকে। গাঁদা ফুলের গাছের যত্ন নেওয়াও বেশ সহজ, প্রয়োজনীয় পানি ও আলো পেলেই এই গাছ জন্মায়।

তুলসী গাছ
তুলসী গাছ

তুলসী গাছ

ঘরের আঙিনায় তুলসী গাছ লাগানোর রীতি বহু পুরোনো। পূজা-অর্চনার পাশাপাশি তুলসীর একাধিক স্বাস্থ্য ও আয়ুর্বেদিক গুণও আছে। তুলসীগাছ পরিবেশকে জীবাণুমুক্ত ও বিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু এর ঝাঁজালো গন্ধ মশা দূর করে। এ ছাড়া তুলসীর রস প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। প্রতিদিন পানি এবং প্রয়োজনীয় সার ব্যবহারে সহজেই এজাতীয় গাছ বাঁচে।

পুদিনা গাছ
পুদিনা গাছ

পুদিনা গাছ

আজকাল অনেকেই শখ করে বারান্দায় ছোট পুদিনাপাতার গাছ লাগান। রান্না বা চায়ের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি মশার হাত থেকেও বাঁচাতে পারে এই গাছ। পেপার মিন্ট বা মেন্থলের সুগন্ধ মশা তাড়ানোর জন্য কার্যকর। এটি মশার প্রাকৃতিক কীটনাশকও বটে।

ঘাস প্রজাতির উদ্ভিদ সাইট্রোনেলা, রোজমারি ও লেমন বাম জাতীয় কিছু গাছও মশা দূরে রাখতে পারে। আগারগাঁও, গুলশান, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, দোয়েল চত্বর এলাকাসহ যেকোনো নার্সারিতে পেয়ে যাবেন এই গাছের চারা। গাছের চারার বয়স অনুসারে ৭০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন এসব গাছ।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জার্মানি

মাটির নিচে ‘সৌন্দর্যে ঘেরা’ জার্মানি

মাটির নিচে ‘সৌন্দর্যে ঘেরা’ জার্মানি
মাটির নিচে ‘সৌন্দর্যে ঘেরা’ জার্মানি

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা জার্মানি। তবে এই সৌন্দর্য শুধু পাহাড়-নদীতেই সীমাবদ্ধ নয়। দেশটির মাটির নিচেও রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান।  

জালফেল্ড ফেয়ারি গ্রোটোস: ১৯৯৩ সালে জার্মানির এই গ্রোটো গুহার নাম ওঠে গিনেস বুক অফ রেকর্ডসের ‘বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর গ্রোটো গুহা’র তালিকায়। অ্যালাম স্লেট খনন করার ফলে ঠ্যুরিঙ্গেন রাজ্যের এই গুহাটি নানা রঙের স্ট্যালাকটাইটে ভরে ওঠে। এই গুহায় দেখা যায় একশরও বেশি ধরনের বাদামি-হলুদ রঙের খেলা।

লাঙ্গেনস্টাইন গুহা ঘর: বেলেপাথরে খোদাই করে তৈরি এই গুহা-ঘরগুলো দেখতে অবিকল রূপকথায় পড়া রাজকন্যার প্রাসাদের মতো। কিন্তু আদতে হারৎজ পর্বতের শ্যাফারবের্গ অঞ্চলের এই গুহা-ঘরগুলো উনিশ শতকে বানিয়েছিলেন স্থানীয় খামারকর্মীরা। বর্তমানে এই গুহাঘরের ভেতরে চিত্রায়িত করা আছে এই গুহার শেষ বাসিন্দা লুডভিগ শ্মিডটের জীবনকাহিনী।

বাড জেগেবার্গের কালকবের্গ গুহা: উত্তর জার্মানির একমাত্র প্রাকৃতিক গুহার ভেতর রয়েছে বাদুড়দের বিশ্বের সবচেয়ে বড় শীতকালীন বাসস্থান। এই গুহার ভেতরের প্রাণীদের শীতঘুমে ব্যাঘাত না ঘটাতে পর্যটকদের যাওয়ার সুযোগ মার্চ থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে সীমিত রাখা হয়েছে।

লাঙ্গেনস্টাইন গুহা ঘর
লাঙ্গেনস্টাইন গুহা ঘর

আটেনডর্নের আটা গুহা: জার্মানির সবচেয়ে বড় ও জনপ্রিয় গুহা নর্থ-রাইন ভেস্টফালিয়া রাজ্যের গুহা এটি। হঠাৎ করেই ১৯০৭ সালে আবিষ্কৃত হয় এই গুহা। ছয় হাজার মিটার দীর্ঘ এই গুহায় পাওয়া যায় আটা চিজ নামের একটি বিশেষ ধরনের পনীর।

এনেপেটালের ক্লুটার্ট গুহা: বহু হ্রদ, তিনশটি পথ ও ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুহাকে এক সময় জার্মানির সবচেয়ে বড় গুহা ভাবা হতো। এখন নর্থ-রাইন ভেস্টফ্রালেনের এই গুহার ভেতর পর্যটকদের জন্য নানা ধরনের রোমাঞ্চকর সফরের সুবিধা রয়েছে। হাঁপানি রোগীদের জন্যেও ভালো এই গুহার ভেতরের পরিবেশ।

হমবুর্গের শ্লসবের্গ গুহা ও দুর্গ: জারলান্ড রাজ্যের এই গুহা প্রকৃতি নয়, তৈরি করেছে মানুষ। লাল বেলেপাথরের খোঁজে খনন করতে গিয়ে আবিষ্কৃত হয় এই গুহা। বিজ্ঞানীরা বলেন, এই গুহা সৃষ্টি হতে শুরু করে মধ্য যুগেই। কিন্তু এর পূর্ণ রূপে গড়ে ওঠা শুরু হয় খননের সময় ঘটা বিস্ফোরণের পরেই।

সোফিয়েন গুহা: সোফিয়েন গুহার ভেতর থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৬০ হাজার বছর পুরোনো ভালুকের হাড়। এছাড়া এই গুহার ভেতরে পাওয়া গেছে তুষার যুগের বহু প্রাণীর দেহাবশেষ। এই গুহায় আজকাল বেশ কিছু অনুষ্ঠান বা জলসা দেখতে ভিড় করেন স্থানীয় দর্শক।

সোফিয়েন গুহা
সোফিয়েন গুহা

সুইফাল্টেনডর্ফের ড্রিপস্টোন গুহা: জার্মানির সবচেয়ে ছোট এই গুহা মাত্র ৮৮ বর্গফুট বড়। ১৯৮২ সালে একটি সুড়ঙ্গ তৈরির সময় খুঁজে পাওয়া যায় গুহাটি। এই গুহার প্রবেশ পথ একটি হোটেল ও পানশালার ভেতর দিয়ে, যার ফলে হোটেলের খদ্দেরদের কাছে এই গুহাটি একটি বাড়তি আকর্ষণ হয়ে উঠেছে।

রিজেন্ডিং গুহা: জার্মানির উন্টার্সবের্গে রয়েছে দেশটির সবচেয়ে দীর্ঘ গুহা (তিন হাজার ৭৭০ ফুট লম্বা)। ভেতরে গেলে দেখতে পাবেন নানা আকারের হ্রদ ও একাধিক ঝর্ণা। ২০১৪ সালে একটি দুর্ঘটনার পর থেকে পর্যটকের জন্য বন্ধ রয়েছে গুহাটি। এখন সেখানে কেবল বিজ্ঞানীরাই যেতে পারেন।

শেলেনবের্গ তুষার গুহা: উন্টার্সবের্গেই রয়েছে জার্মানির একমাত্র জনগণের জন্য উন্মুক্ত তুষার গুহা বা আইসকেভ। ৬০ হাজার ঘনমিটার বরফের আস্তরণ রয়েছে এই গুহায়, যার মধ্যে বেশ কিছু অংশ প্রায় তিন হাজার বছরের পুরোনো। তবে পুরো গুহায় ঘুরতে পারেন না পর্যটকরা। শুধু ৫০০ মিটার অঞ্চলই রয়েছে উন্মুক্ত, এবং সেটাও শুধু হাইকিং করার জন্যেই।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

পৃথিবীর সবচেয়ে গোলগাল প্রাণী কি এগুলোই?

এই প্রাণিটি গোলগাল দেখতে হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদে
এই প্রাণিটি গোলগাল দেখতে হয়েছে প্রয়োজনের তাগিদে

পৃথিবীতে অনেক প্রাণী রয়েছে, আর তাদের মধ্যে অনেক প্রাণিই গোলগাল।

সেগুলোকে আপনি গোলাকৃতির আদুরে বল মনে করলেও তাদের এই আকৃতি আসলে প্রকৃতিতে তাদের টিকে থাকতে সহায়তা করে।

প্রাণীজগতের সবচেয়ে গোলগাল কয়েকটি প্রাণীর তালিকা দেয়া হলো এখানে।

রক্ষণাত্মক মনোভাবে একটি পটকা মাছ
রক্ষণাত্মক মনোভাবে একটি পটকা মাছ

পাফার ফিশ/ পটকা মাছ

আমাদের তালিকার শুরেুতেই রয়েছে পাফার ফিশ পরিবার (টেট্রাওডোনটিডায়ে), যারা পটকা মাছ নামেও পরিচিত।

এই গোলাকার মাছ আত্মরক্ষার্থে বলের মত বৃত্তাকার আকার ধারণ করতে পারে।

নিজেদের ইলাস্টিকের মত পাকস্থলিতে প্রচুর পরিমাণ পানি প্রবেশ করিয়ে তারা এই আকৃতি ধারণ করতে পারে। এর ফলে তাদেরকে খুবই কম আকর্ষণীয় মনে হয়, সেসময় এই মাছের আকৃতি দেখে মনে হয় যে এটি খেতেও কঠিন।

বল আকৃতির এই মাছগুলো দেখতে ভাল লাগেও এটিকে ছোঁয়া একেবারেই উচিত নয়।

দুইশো’রও বেশি জাতের পটকা মাছের অধিকাংশের মধ্যেই টেট্রোডোটক্সিন নামের এক ধরনের বিষ রয়েছে, যা সায়ানাইডের চেয়ে ১২০০ গুণ বেশি বিষাক্ত।

আরমাডিলোরা 'আরমার' বা বর্ম তৈরি করতে পারে, তাই তাদের এমন নামকরণ
আরমাডিলোরা ‘আরমার’ বা বর্ম তৈরি করতে পারে, তাই তাদের এমন নামকরণ

আরমাডিলো

স্প্যানিশ ভাষায় আরমাডিলো শব্দের অর্থ ‘বর্ম পরিহিত ছোট প্রাণী।’

পৃথিবীতে মোট ২১ ধরণের আরমাডিলো রয়েছে যাদের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্রটির নাম ‘গোলাপী পরী আরমাডিলো’ (ক্ল্যামিফোরাস ট্রাঙ্ক্যাটাস), যার দৈর্ঘ্য ৯ থেকে ১২ সেন্টিমিটারের মধ্যে হয়।

আরমাডিলোরা দিনে ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায়। এছাড়া প্রাণী হিসেবে তাদের যথেষ্ট ফ্যাশন সচেতনও বলতে পারেন। লাল, হলুদ, কালো, গোলাপী – এমন নানা রঙয়ের আরমাডিলো হয়ে থাকে।

ছবির ক্যাপশান, প্রজননের সময় পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচারা ডাকাডাকির মাধ্যমে দ্বৈত সঙ্গীত তৈরি করে
প্রজননের সময় পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচারা ডাকাডাকির মাধ্যমে দ্বৈত সঙ্গীত তৈরি করে

টওনি আওল/পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচা

যুক্তরাজ্যে পাওয়া যাওয়া সাধারণ প্যাঁচাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় আকৃতির প্যাঁচা হলো টওনি আওল বা পিঙ্গলবর্ণ প্যাঁচা।

এই প্যঁচাগুলোর নরম, গোলাকার মাথা থাকে যেটি তারা ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরাতে পারে।

প্রজননের সময় এই ধরণের পুরুষ প্যাঁচা শুরুতে স্ত্রী প্যাঁচাকে দীর্ঘ ‘হুউউ’ ডাকে ডাক দেয়।

এরপর অপেক্ষাকৃত কম দীর্ঘ ‘হু’ এবং সবশেশে ‘হুহুহোওওওও’ ডাক দিয়ে শেষ করে।

জবাবে স্ত্রী প্যাঁচা ‘কী-উইক’ ডাকে জবাব দেয়।

দেখে মনে না হলেও এই ধরণের সিল ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে সাঁতার কাটতে পারে
দেখে মনে না হলেও এই ধরণের সিল ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে সাঁতার কাটতে পারে

সিল

সিল সাধারণত একা থাকলেও প্রজননের মৌসুমে একত্রিত হয়।

এই বৃত্তাকার মাছ গড়ে প্রতি ঘন্টায় ১০ কিলোমিটার সাঁতার কাটতে পারে।

তবে কখনো কখনো তারা ঘন্টায় ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতেও সাঁতারাতে সক্ষম হয়।

এই ধরণের সিল সাধারণত ২৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত বাঁচতে পারে।

ছবির ক্যাপশান, হেজহগ যখন নিজেকে বলে রুপান্তরিত করে তখন তা দেখতে এরকম হয়
ছবির ক্যাপশান, হেজহগ যখন নিজেকে বলে রুপান্তরিত করে তখন তা দেখতে এরকম হয়

হেজহগ

হেজহগ অনেকটা সজারুর মত দেখতে একটি প্রাণী, নিজেকে শিকারী প্রাণীদের হাত থেকে রক্ষা করতে এর পিঠে অনেকগুলো কাঁটার মত থাকে।

বৃত্তাকার হওয়ায় শরীরের কাঁটামুক্ত অংশগুলো রক্ষা করতে সুবিধা হয় এর জন্য।

ইউরোপ, এশিয়া ও আফ্রিকায় ১৫ ধরণের হেজহগ পাওয়া যায়, যার মধ্যে সবকটিই নিশাচর।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

ছবিতে গ্রাম বাংলার খালে-বিলে মাছ ধরার মুহূর্তগুলো

শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়। বিবিসি প্রবাহ টিভি অনুষ্ঠানের জন্য আপনাদের কাছে এমন ছবি চাওয়া হয়েছিল। বাছাই করা কিছু ছবি নিয়ে আমাদের এই ফটো গ্যালারি।

ছবির ক্যাপশান, শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়।
শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়।
ছবির ক্যাপশান, গ্রামেগঞ্জের মানুষ বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরে থাকেন।
গ্রামেগঞ্জের মানুষ বিভিন্ন উপায়ে মাছ ধরে থাকেন।
ছবির ক্যাপশান, সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা বিবেচনা করে মাছ ধরেন সেখানকার জেলেরা।
সমুদ্রের জোয়ার-ভাটা বিবেচনা করে মাছ ধরেন সেখানকার জেলেরা।
মাছ ধরার কাজে শিশুদের মধ্যে আনন্দ।
মাছ ধরার কাজে শিশুদের মধ্যে আনন্দ।
বিভিন্ন কায়দায় মাছ ধরেন জেলেরা।
বিভিন্ন কায়দায় মাছ ধরেন জেলেরা।
ঘটা করে মাছ ধরার একটি দৃশ্য।
ঘটা করে মাছ ধরার একটি দৃশ্য।
শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়।
শীতকালে খাল-বিলের পানি কমে যাওয়ায় গ্রাম-গঞ্জে বেশ ঘটা করে মাছ ধরতে দেখা যায়।
অনেকে পুকুরেও মাছ ধরে থাকেন।
অনেকে পুকুরেও মাছ ধরে থাকেন।
খাল-বিলে পানি কমে গেলে কাঁদা পানিতেও পাওয়া যায় ছোট ছোট মাছ।
খাল-বিলে পানি কমে গেলে কাঁদা পানিতেও পাওয়া যায় ছোট ছোট মাছ।
জেলেরা নানাভাবে জাল পেতে মাছ ধরে থাকেন।
জেলেরা নানাভাবে জাল পেতে মাছ ধরে থাকেন।
খাল-বিলে পানি কমে গেলে কাঁদা পানিতেও পাওয়া যায় ছোট ছোট মাছ।
খাল-বিলে পানি কমে গেলে কাঁদা পানিতেও পাওয়া যায় ছোট ছোট মাছ।
মাছ ধরতে পেরে আনন্দিত!
মাছ ধরতে পেরে আনন্দিত!
সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ