আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

মৎস্য

ফরমালিনের বিকল্প চিংড়ির খোসা

বাজারে আম সহ মাছ, ফল, সবজিসহ বিভিন্ন খাদ্য সংরক্ষণে যখন হরহামেশাই ব্যবহার হচ্ছে মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান ফরমালিন, ঠিক তখনই এর বিকল্প আবিষ্কার করেছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহম্মদ খান।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান এই বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তার দীর্ঘ গবেষণায় আবিষ্কার করেছেন, খাদ্য সংরক্ষণে ফরমালিনের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যাবে কাইটোসেন। চিংড়ির ফেলে দেওয়া খোসা থেকে প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয় এ কাইটোসেন। এটি ব্যয়সাশ্রয়ী এবং মানবদেহের জন্য ক্ষতিকরও নয়। ড. মোবারক এরই মধ্যে বিভিন্ন রকম ফল ও সবজি সংরক্ষণে চিংড়ির খোসা থেকে তৈরি কাইটোসেন ব্যবহার করে সফল হয়েছেন। এখন তার এ গবেষণা প্রয়োগ করা হবে মাছের ওপর। তার পর শুরু হবে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার। তিন বছর ধরে গবেষণার পর তিনি কাইটোসেন ব্যবহার করে আম দুই থেকে তিন সপ্তাহ, লিচু ১২ থেকে ১৩ দিন, আনারস ১০ থেকে ১২ দিন, করলা হিমায়িতভাবে প্রায় ১৮ দিন এবং টমেটো ২১ দিন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন।

এতে খাদ্যের গুণগত মান, আকৃতি, রঙ ও স্বাদে পরিবর্তন হবে না।

গত চার বছরে এক হাজার কেজির বেশি ফরমালিন আমদানিতে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়েছে উল্লেখ করে ড. মোবারক বলেন, দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার করেই চাহিদা অনুযায়ী কাইটোসেন উৎপাদন সম্ভব। বাণিজ্যিকভাবে প্রতি কেজি আমে এক টাকার কাইটোসেন যথেষ্ট। সবজি সংরক্ষণে খরচ পড়বে ৪০ পয়সা। প্রতি কেজি চিংড়ি থেকে ৬০ গ্রাম খোসা পাওয়া যায়। সে হিসাবে ছয় কেজি চিংড়ির খোসা থেকে এক কেজি কাইটোসেন তৈরি হবে, যা তৈরিতে খরচ হবে ২০ হাজার টাকা। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে রাসায়নিকভাবে কাইটোসেন তৈরিতে এক লাখ টাকা খরচ হয়। এটি তৈরিতে চিংড়ির খোসা ধোয়ার জন্য ৩ শতাংশ হারে সোডিয়াম হাইড্রো-অক্সাইড (কস্টিক সোডা) ব্যবহার করা হয়। খোসা ধুয়ে পরিষ্কারের পর তৈরি করা হয় কাইটিন। গবেষণায় তিনি গামা রশ্মির রেডিয়েশনের মাধ্যমে কাইটিন থেকে কাইটোসেন তৈরি করেন। খাদ্য সংরক্ষণে রেডিয়েশন প্রযুক্তি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবি্লউএইচও) ও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইউএসএফডিএ) অনুমোদিত একটি নিরাপদ প্রক্রিয়া। অন্য রাসায়নিক ব্যবহার হয় না বলে এতে পরিবেশ দূষণ হয় না।ড. মোবারক আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সম্প্রতি এক বৈঠকে তার আবিষ্কারের বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে। পরে এটি বাস্তবায়নে তিনিসহ এ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, দপ্তরের মহাপরিচালক, বুয়েটের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির বৈঠকে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে খতিয়ে দেখতে অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মাছের ওপর কাজ শুরু করার জন্যও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বাংলাদেশে বছরে গড়ে আড়াই টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়। এ থেকে খোসা হয় ১৫ হাজার টন। এ থেকে কাইটোসেন উৎপাদন হবে ২৫০ টন। খাদ্য সংরক্ষণের জন্য ওই পরিমাণকে যথেষ্ট মনে করেন বিজ্ঞানীরা।বাংলাদেশে কাইটোসেন তৈরি প্রক্রিয়া পেটেন্ট করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন বলেও জানান ড. মোবারক আহম্মদ খান।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

মৎস্য

খাঁচায় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ

খাঁচায় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ
খাঁচায় বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় প্রজাতির মাছ চাষ

মৎস্য উৎপাদনের বিবেচনায় বাংলাদেশের জলজ সম্পদ একটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় উৎস হলেও এখনও পর্যন্ত এই জলজ সম্পদকে যথোপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমে সুষম উৎপাদনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভবপর হয়নি। উন্মুক্ত জলাশয় প্রধানত ব্যবস্থাপনা নির্ভর সম্পদ হওয়ায় বদ্ধ জলাশয়ের চেয়ে এক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত চাষাবাদের বিষয়টিকে পূর্বে সেরূপ গুরুত্ব দেয়া হয়নি।

ইতোমধ্যে দেশের বদ্ধ জলাশয়সমূহ থেকে চাষাবাদের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও তা দ্রুত বর্ধনশীল জনগোষ্ঠীর মৎস্য চাহিদা মেটানোর জন্য পর্যাপ্ত নয় । এরূপ অবস্থায় সম্ভবনাময় আরও ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করে ব্যবহারের আওতায় সহনশীল উৎপাদন প্রক্রিয়ার অন্তর্ভুক্ত না করা হলে চাহিদা ও সরবরাহের এই ব্যবধান দিন দিন বেড়েই চলবে ।

মুক্ত জলাশয় ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি তাই উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মৎস্য উৎপাদনে গুরুত্বারোপ করা হলে খাদ্য সরবরাহন ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে । এরূপ বিবেচনায় নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ একটি উৎসাহজনক প্রযুক্তি।

অতি সনাতন কাল থেকে বাঁশ বা জালের তৈরি খাঁচায় মাছ লালন পালনের ইতিহাস থাকলেও সে সময়ে এময়ে এসবের লাভ লোকসানের হিসাব এতটা বিবেচ্য ছিল না । তবে চীন সাগরে ও ভারতে মহাসাগরে প্রায় ৩ যুগ পূর্ব থেকেই বাণিজ্যিক বিবেচনায় খাঁচায় মাছ চাষের প্রচলন শুরু হয়েছিল ।

বিগত কয়েক বছর ধরে আমাদের দেশেও বিভিন্ন নদ নদীতে খাঁচায় তেলাপিয়া চাষ হচ্ছে । কিন্তু দেশীয় প্রজাতির মাছ যেমন-পাবদা, গুলশা, মাগুর, শিং, ইত্যাদি খাঁচায় চাষের সম্ভাবত্য যাচাইয়েই লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিটিউট, স্বাদুপানি কেন্দ্র , ময়মনসিংহ গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করে ।

বিগত কয়েক বছর ধারাবাহিক গবেষণার পর খাঁচায় বিলুপ্তপ্রায় গুলশা মাছ চাষের লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনে সক্ষম হয়েছে । সহনশীল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভাসমান খাঁচায় সুস্বাদু উচ্চমূল্যের বিলুপ্তপ্রায় গুলশা মাছ চাষ করা হলে তা মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও পুষ্টির অভাব পূরণে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে বলে আশা করা যায় ।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ

 নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ
নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ

পাবদা মাছ বাংলাদেশের ছোট মাছের মধ্যে অন্যতম। মিঠাপানির এ মাছ নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়ে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। পাবদা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সুস্বাদু মাছ। বর্তমানে পাবদা মাছ আমাদের দেশে প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পাবদা মাছ রক্ষা করা সম্ভব। তাই নিজেই চাষ করুন পাবদা মাছ।

পুকুর নির্বাচন

এ মাছ চাষের জন্য ৭-৮ মাস পানি থাকে এমন ১৫-২০ শতাংশের পুকুর বা জলাশয় নির্বাচন করুন। তবে পুকুরটি বন্যামুক্ত হতে হবে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

মাছ বাছাই

পাবদা মাছের পুরুষ ব্রুড বাছাইয়ের ক্ষেত্রে পুরুষ মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে স্ত্রী মাছের চেয়ে ছোট। পুরুষ মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট চাপা থাকে এবং পুরুষ মাছের বুকপাখনা খাঁজকাটা থাকে। স্ত্রী ব্রুড বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্ত্রী মাছটি আকারে তুলনামূলকভাবে পুরুষ মাছ থেকে বড় হয়। স্ত্রী মাছের প্রজনন ঋতুতে পেট ফোলা ও নরম থাকে এবং স্ত্রী মাছের বুকপাখনা তেমন খাঁজকাটা থাকে না।

পুকুর প্রস্তুত

শুকনো মৌসুমে পুকুর থেকে জলজ আগাছা পরিষ্কার ও পাড় মেরামত করুন। তবে ছোট মাছ চাষের ক্ষেত্রে পুকুর শুকানো উচিত নয়। তাই বারবার ঘন ফাঁসের জাল টেনে রাক্ষুসে মাছ ও ক্ষতিকর প্রাণী অপসারণ করে নিন। এরপর প্রতিশতকে ১-২ কেজি পাথুরে চুন প্রয়োগ করুন। মাটির গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে চুনের মাত্রা কম-বেশি হতে পারে। পোনা ছাড়ার আগে সার প্রয়োগ করুন, যাতে পুকুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য জন্মাতে পারে। এছাড়া প্রতিশতকে ৪-৬ কেজি গোবর, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ১০০ গ্রাম টিএসপি প্রয়োগ করতে পারলে ভালো হয়। মনে রাখবেন, পানির রং সবুজ বা বাদামি-সবুজ হলে পোনা ছাড়ার উপযুক্ত সময়।

পোনা মজুদ

ভালো জাতের সুস্থ, সবল ও সঠিক পোনা সঠিক সংখ্যায় মজুদ করতে হবে। পুকুরে পোনা ছাড়ার আগে পরিবহনকৃত পোনা পুকুরের পানির তাপমাত্রার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এর জন্য ১০ লিটার পানি ও ১ চামচ পটাসিয়াম পারম্যাংগানেট অথবা ১০০ গ্রাম লবণ মিশিয়ে দ্রবণ তৈরি করতে হবে। এরপর তাতে ১-২ মিনিট গোসল করিয়ে পোনা জীবাণুমুক্ত করতে হবে। শতাংশ প্রতি ৩-৪ গ্রাম ওজনের সুস্থ্য-সবল ২০০-২৫০টি পোনা মজুদ করা যেতে পারে।

খাদ্য ও সার

চুন প্রয়োগের ৩ দিন পর প্রতিশতাংশে ৭-৮ কেজি গোবর প্রয়োগ করতে হবে। সম্পূরক খাদ্য হিসেবে দেহ ওজনের ৫-১০ ভাগ হারে ২৫-৩০% আমিষ সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিন ২ বার প্রয়োগ করতে হবে। প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনের জন্য ১৫ দিন অন্তর ৪ কেজি গোবর সার প্রয়োগ করতে হবে।

মাছ আহরণ

পুকুরের মাছ ৭-৮ মাসের মধ্যে ৩০-৩৫ গ্রাম ওজনের হলে আহরণ করা যাবে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে

শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে
শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে

শোল মাছকে আমরা ‘রাক্ষুসে মাছ’ বলে থাকি। শোল মাছ বাজারের দামি মাছ। এই মাছ দামি হলেও চাষে খরচ খুবই কম। শোল মাছ সব ধরনের দুর্যোগ বা প্রতিকূল পরিস্থিতি সহ্য করতে পারে। মা শোল মাছই নিজেদের মতো করে ডিম নার্সিং ও পোনা লালন করে।

পোনা মজুত
বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে শোল মাছ চাষ না হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে সংগ্রহের ওপর জোর দিতে হবে। বৈশাখ মাস শোল মাছের প্রজনন মৌসুম। বৈশাখ মাসের প্রথম থেকে শোল মাছ বাচ্চা দিতে শুরু করে। বাচ্চাগুলো এক ঝাঁকে থাকে। সেই সময় হাওর-বাঁওড়, পুকুর থেকে সপ্তাহখানেক বয়সের বাচ্চা সংগ্রহ করতে হবে। পোনা পাওয়া না গেলে বড় শোল মাছ সংগ্রহ করে পুকুরে ছেড়ে দিতে হবে। এককভাবে প্রতি শতাংশে ১০টি দেয়া যেতে পারে। মিশ্র পদ্ধতিতে চাষের জন্য প্রতি শতাংশে ৪টি। একটি প্রাপ্তবয়স্ক শোল মাছ লম্বায় ২.৫-৩ ফুট হতে পারে।

 শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে
শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে

পুকুর প্রস্তুতি
যেকোনো পুকুরেই শোল মাছ চাষ করা যায়। তবে তাকে উপযুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। যে পুকুরে শোল চাষ হবে সে পুকুরে কচুরিপানা অথবা কলমিলতা থাকলে ভালো হয়। কারণ শোল মাছ আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। তবে কচুরিপানায় যেন পুকুর ভরে না যায়। পুকুরের চারদিকে কমপক্ষে ৫ ফুট উচ্চতায় জাল দিয়ে বেড়া দিতে হবে। তা না হলে বর্ষাকালে শোল মাছ লাফিয়ে চলে যাবে।

 শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে
শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে

খাদ্য
শোল মাছ সাধারণত খৈল বা কুড়া দিয়ে বানানো খাবার খায় না। ছোট মাছই এর প্রধান খাদ্য। পোনা মাছের প্রিয় খাদ্য শুঁটকির গুঁড়া। সেজন্য পোনা মাছকে খাবার হিসেবে চিংড়ি শুঁটকির গুঁড়া ভালোভাবে পিষে দিতে হবে। এভাবে ১৫ দিন খাওয়ানোর পর পোনাগুলো প্রায় ২/৩ ইঞ্চি হবে। ২/৩ ইঞ্চি পোনা মজুদের পর খাদ্য হিসেবে কার্পজাতীয় মাছের ধানীপোনা দেয়া যেতে পারে; সঙ্গে ছোট ছোট ব্যাঙ বা ব্যাঙাচি দেয়া যেতে পারে। আর বড় মাছের জন্য ছোট ছোট মাছ, তবে মরা টাটকা মাছ খেতে দিলে এরা খুব খায়।

মিশ্র চাষ
আমাদের দেশে শোল মাছের একক চাষের সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ এত কাঁচা মাছ, শুঁটকি, ব্যাঙ বা ব্যাঙাচি জোগান দেয়া সম্ভব নয়। তাই মিশ্র মাছের সঙ্গে শোল মাছের চাষ করা যেতে পারে। ৬ মাসে একেকটি শোল মাছের ওজন ৭০০-১০০০ গ্রাম হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

 শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে
শোল মাছ চাষ করবেন যেভাবে

রোগ
শীতকালে শোল মাছে ক্ষত রোগ দেখা দেয়। তাই ওই সময় মৎস্য কর্মকর্তার পরামর্শ নিতে পারেন।

মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি বা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। না হলে আগামী কয়েক বছর দেশীয় মাছের চিহ্ন খুঁজে পাবে না জনগণ।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

আমাদের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছটি

আমাদের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছটি
আমাদের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছটি

যেন জাদুমন্ত্র জানে আমাদের ধানখেতের আলে, খালেবিলে, পুকুরে, নদীতে থাকা ম্যাজিশিয়ান এই মাছটি। অনেকে চিনেন আবার অনেকে নামও জানেন না মাছটির। এই মাছটির নাম জেব্রা ফিশ। এর শক্তি সম্পর্কে জানলে আপনি রীতিমতো অবাক হবেন। মূলত গ্রাম বাংলা আর উত্তর-পূর্ব ভারতের নদী, পুকুর, খালবিলে এই জেব্রা ফিশটি পাওয়া যায়।

হাতের আঙুলের আকারের ও গায়ে ডোরাকাটা দাগের এই মাছটি ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পরেও মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, মেরুদণ্ডসহ তার শরীরের প্রায় সবকটি অঙ্গকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে। যা মানুষ কিংবা কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীও পারে না।

ভারতের পুনের আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের বিজ্ঞানী চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে আমাদের দুর্বল হয়ে পড়া হৃদযন্ত্রকে ফের জাগিয়ে তোলার এই সঞ্জীবনী মন্ত্রটি খুঁজে বের করেছেন দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও তার সহযোগীরা। দেবাঞ্জন এখন ফ্রাঙ্কফুর্টে গোথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার রিজেনারেশনের গবেষক।

চিন্ময় ও দেবাঞ্জনসহ ১০ জনের গবেষকদল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্বে এই প্রথম দেখালেন, একটি বিশেষ জিন কীভাবে জেব্রা ফিশের ক্ষতবিক্ষত হৃদযন্ত্রকে (‘মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরি’) পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে সাহায্য করে। জিনটির নাম- ‘কানেকটিভ টিস্যু গ্রোথ ফ্যাক্টর (সিটিজিএফ)’। আরও একটি নাম রয়েছে জিনটির, তাহলো ‘সেলুলার কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফ্যাক্টর ২-এ’।

এই গবেষণাতেই প্রথম বোঝা গেল কেন হার্ট অ্যাটাকের পর আমরা আর হৃদযন্ত্রকে আগের অবস্থায় ফিরে পাই না এবং তৃতীয়বার হার্ট অ্যাটাকের পর অনিবার্যই হয়ে ওঠে আমাদের মৃত্যু। আর কেনই বা জেব্রা ফিশের হৃদযন্ত্র বার বার ক্ষতবিক্ষত হয়েও পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে প্রায় নতুন হৃদযন্ত্রের মতোই?

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ডেভেলপমেন্ট’-এ। মূল গবেষক দেবাঞ্জন কাজ করেছেন পুনের ‘আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এআরআই)’-এর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে। সহযোগিতা করেছে জার্মানির ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর হার্ট অ্যান্ড লাং রিসার্চ’ এবং আমেরিকার ডারহ্যামের ‘ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর মেডিক্যাল সেন্টারও।

গবেষণায় কেন বেছে নেওয়া হলো জেব্রা ফিশ?
গবেষণায় কেন বেছে নেওয়া হলো জেব্রা ফিশ?

গবেষণায় কেন বেছে নেওয়া হলো জেব্রা ফিশ?

সাধারণত ২ থেকে ৩ বছর জেব্রা ফিশ বেঁচে থাকে। তাই ৩ মাস বয়স হয়ে গেলেই এই মাছ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। গবেষকরা কাজটা করেছেন অন্তত ৬ মাস বয়সি জেব্রা ফিশ নিয়ে। সেগুলো ছিল প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ। হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ও আশঙ্কা যেহেতু শিশুদের চেয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি, প্রবীণদের ক্ষেত্রে আরও বেশি, গবেষকরা তাই কাজটা করেছেন প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ নিয়ে।

জেব্রা ফিশ নিয়ে কাজ করার একটা সুবিধা হলো, জন্মের পর ১০-১৫ দিন পর্যন্ত বাইরে থেকেই তাদের হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়সহ শরীরের সবকটি অঙ্গের বিকশিত হয়ে ওঠা আর তাদের কাজকর্ম চাক্ষুষ করা যায়। কীভাবে হৃদযন্ত্রের ভাল্ব তৈরি হচ্ছে, তা-ও দেখা যায়, একেবারে কোষের স্তরে গিয়েও। আর একটা সুবিধা হলো জেব্রা ফিশের বেশির ভাগ কার্যকরী জিনের (প্রাণী বা উদ্ভিদের অনেক জিনই কার্যকরী থাকে না) সঙ্গেই মানুষ ও ইঁদুরের কার্যকরী জিনগুলোর খুব সাদৃশ্য রয়েছে। গত শতাব্দীর ৬-এর দশক থেকেই গ্রাম বাংলার এই ‘ম্যাজিশিয়ান’ মাছটি নিয়ে বিদেশে শুরু হয় গবেষণা। এখন বিশ্বের প্রায় ১ হাজারটি গবেষণাগারে জেব্রা ফিশ নিয়ে গবেষণা চলছে। 

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

মৎস্য

জানুন চৌবাচ্চায় বাগদা চিংড়ি মাছ চাষের কৌশল

জানুন চৌবাচ্চায় বাগদা চিংড়ি মাছ চাষের কৌশল
জানুন চৌবাচ্চায় বাগদা চিংড়ি মাছ চাষের কৌশল

বাগদা চিংড়ি (Prawn) দশপদবিশিষ্ট চিংড়ি গোত্রীয় প্রাণী। পৃথিবীতে ৭ ধরনের পরিবারের ৫৪০ প্রজাতির বাগদা চিংড়ি রয়েছে। এ ধরনের চিংড়ি সর্বোচ্চ ৩৩০ মিলিমিটার বা ১৩ ইঞ্চি এবং ওজনে ৪৫০ গ্রাম বা ১ পাউন্ড হয়ে থাকে। আদর্শ রন্ধনপ্রণালী অনুসরণ করে মনুষ্য খাবার উপযোগী দামী অর্থকরী প্রাণী হিসেবে এর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। চিংড়ি তার আবাসস্থলরূপে উন্মুক্ত মৎস্যক্ষেত্রে বিচরণ করে। তবে বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের জন্য এ চিংড়ি খামারেও উৎপাদন করা হয়।

বাগদা চিংড়ি আমাদের দেশে একটি পরিচিত মাছ । এটি খেতে যেমন সুস্বাদু এবং এটি দেখতেও সুন্দর । বর্তমানে  চিংড়ি রপ্তানী করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে ।  বাগদা চিংড়ি দশপদ বিশিষ্ট চিংড়ি গোত্রীয় প্রাণী । আমাদের দেশে ছোট বড় প্রায় সকলেরই প্রিয় এই মাছ । আপনি ইচ্ছা করলে চৌবাচ্চায় এই বাগদা চিংড়ির চাষ করতে পারেন ।

আসুন জেনে নেই কিভাবে বাড়িতে বাগদা চিংড়ি (Shrimp farming) চাষ করতে হবে । 

চৌবাচ্চা বাছাই
চৌবাচ্চা বাছাই

চৌবাচ্চা বাছাই

ক) বাড়িতে বাগদা চিংড়ি চাষ করার জন্য আপনি মাঝারি সাইজের চৌবাচ্চা ব্যবহার করতে পারেন । 

খ) তবে খেয়াল রাখবেন যেন চৌবাচ্চাটি গভীর হয় । 

সঠিক সময় ও মৌসুম

ক) বছররের যেকোন সময়েই আপনি বাগদা চিংড়ি চাষ করতে পারেন । 

খ) তবে খেয়াল রাখবেন যে বাগদা চিংড়ি পোনা ছাড়ার ক্ষেত্রে আপনাকে সকাল অথবা সন্ধ্যা এই দুই সময়ের যেকোন একটি নির্বাচন করতে হবে । 

গ) কারণ এসময় তাপমাত্রা সহনীয় অবস্থায় থাকে । তা না হলে মাছ মরে যেতে পারে ।

 পোনা ছাড়া ও তার পরিচর্যা-

ক) বাগদা চিংড়ি চাষ করার জন্য আপনাকে প্রথমে পোনা সংগ্রহ করতে হবে । 

খ) এই ক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ যেকোন নার্সারী হতে পোনা আহরন করতে পারেন । 

গ) এছাড়াও আপনি প্রাকৃতিক ভাবে নদী থেকে বাগদা চিংড়ি পোনা আহরণ করতে পারেন । 

চাষাবাদ পদ্ধতি ও কৌশল
চাষাবাদ পদ্ধতি ও কৌশল

চাষাবাদ পদ্ধতি ও কৌশল

ক) বাগদা চিংড়ি চাষ করার জন্য আপনাকে সঠিক নিয়ম অবলম্বন করতে হবে । 

খ) বাড়িতে চৌবাচ্চায় বাগদা চিংড়ি চাষ করার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমে বাগদা চিংড়ির পোনাকে পলিব্যাগ সহ কিছুক্ষণ চৌবাচ্চার পানিতে চুবিয়ে রাখতে হবে । 

গ) এরপর ব্যাগের পানি ও পাত্রের পানির তাপমাত্রা একই মাত্রায় আনতে হবে । তারপর ব্যাগের মুখ খুলে পাত্রের পানি অল্প অল্প করে ব্যাগে দিতে হবে এবং ব্যাগের পানি অল্প অল্প করে পাত্রে ফেলতে হবে । 

ঘ) ৪০-৫০ মিনিট সময় ধরে এরূপভাবে পোনাকে পাত্রের পানির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হবে ।

খাবারের পরিমাণ ও  খাবার প্রয়োগ

ক) বাগদা চিংড়ি চাষে আপনাকে নিয়মিত উপযুক্ত খাবার প্রয়োগ করতে হবে। উপযুক্ত সুযোগ বা পরিবেশে খাদ্য ব্যবহার না হলে তা বাগদা চিংড়ির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। 

খ) মাছ স্বাভাবিকভাবে প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে শেওলা খেয়ে থাকে। তবে আপনি শামুক, ঝিনুক, কেঁচো, স্কুইড, কাঁকড়া,  মাংস, ইত্যাদি দিতে পারেন। 

ঘ) এছাড়াও চাল, ডাল, গম, ভূট্টা ইত্যাদি দানাদার উদ্ভিজ্জ খাদ্য চিংড়িকে দেওয়া যায়। 

রোগ বালাই ও তার প্রতিকার
রোগ বালাই ও তার প্রতিকার

রোগ বালাই ও তার প্রতিকার

ক) বাগদা চিংড়ির বেশকিছু রোগ বালাই হয়ে থাকে। মনে রাখবেন চিংড়ির জীবন চক্রে এক বা একাধিক অস্বাভাবিক অবস্থা যা চিংড়ির স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে বা অবস্থাভেদে চিংড়ি মারা যায়। 

খ) এছাড়াও চিংড়ি চাষে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক, পরজীবী, ইত্যাদি দ্বারা আক্রমণ হতে পারে। তাই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।

বাগদা চিংড়ির চাষে সার প্রয়োগ –

ক) বাগদা চিংড়ি চাষ করার জন্য আপনাকে সঠিক নিয়মে সার দিতে হবে। 

খ) তা নাহলে বাগদা চিংড়ির বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়ে থাকে। তাই মাঝেমধ্যে সার দিতে হবে। 

পরিচর্যা

ক) বাড়িতে চৌবাচ্চায় বাগদা চিংড়ি চাষ করতে হলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে চৌবাচ্চাটির তলদেশ সার্বক্ষণিক পরিস্কার রাখতে হবে। 

খ) অন্যান্য জলজ প্রাণী নিয়ন্ত্রিত হতে হবে। অসুস্থ চিংড়ি খাদ্য গ্রহন করে না। তাই অসুস্থ চিংড়িকে আলাদা করতে হবে। 

গ) নিয়মিত পানিতে তাপমাত্রা ঠিক রাখতে হবে। প্রয়োজনে পানি বদল করে দিতে হবে।  

বাগদা চিংড়ির খাদ্য গুণাগুণ-

মাছ সংগ্রহ
মাছ সংগ্রহ

ক) বাগদা চিংড়ির মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও পুষ্টিগুন বিদ্যমান। 

খ) এছাড়াও চিংড়িতে অনেক ধরণের খাদ্য গুন রয়েছে। এটি খেতে অনাক সুস্বাদু। 

কখন বাগদা চিংড়ি মাছ সংগ্রহ করবেন

বাগদা চিংড়ি মাছ যখন উপযুক্ত বয়স হবে এবং বড় হবে তখন চিংড়ি মাছ সংগ্রহ করতে হবে।

মাছ সংগ্রহ

বাড়িতে চৌবাচ্চায় আপনি সঠিক নিয়মে চাষাবাদ করলে বেশকিছু বাগদা চিংড়ি পেতে পারেন যা আপনার পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে আপনি বাজারে বিক্রিও করতে পারেন। 

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ