ফুল
শীতের জনপ্রিয় ফুল কোনগুলো?

ফুলকে ভালোবাসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। শীতকালে ফুলের সমারোহ লক্ষ্য করা যায়। তাই তো দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ফুলের বাগান ও নার্সারি। এ ছাড়া স্থান স্বল্পতার কারণে অনেকেই টবে ফুল চাষ করেন। বাসার বারান্দা, ছাদ বা প্রাঙ্গণের অল্প জায়গায়ও অনায়াসে ফুল চাষ করা সম্ভব।
শীতের ফুল
শীতকালীন ফুলগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে—
১. গাঁদা
২. ডালিয়া
৩. গোলাপ
৪. চন্দ্রমল্লিকা
৫. সূর্যমুখী
৬. কসমস
৭. পপি
৮. গাজানিয়া
৯. স্যালভিয়া
১০. ডায়ান্থাস
১১. ক্যালেন্ডুলা
১২. পিটুনিয়া
১৩. ডেইজি
১৪. ভারবেনা
১৫. হেলিক্রিসাম
১৬. অ্যান্টিরিনাম
১৭. ন্যাস্টারশিয়াম
১৮. লুপিন
১৯. কারনেশন
২০. প্যানজি
২১. অ্যাস্টার
২২. জিনিয়া।
এ ছাড়াও কিছু ফুলের আবার বিভিন্ন ধরনের জাত দেখা যায়।
প্রাপ্তিস্থান
দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা নার্সারিতে বিভিন্ন ধরনের ফুলের চারা বা গাছ পাওয়া যায়। রাজধানীর কার্জন হল, আগারগাঁও, বনানী, শেকৃবি, খিলগাঁও, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, গুদারাঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে নানা রকম ফুলগাছের নার্সারি বা বিক্রয়কেন্দ্র।
চাষ
শীতকালীন ফুলের বীজ বপনের উপযুক্ত সময় অক্টোবর-নভেম্বর মাস। টবসহ চারাও কিনতে পাওয়া যায়। সাধারণত ৮ থেকে ১২ ইঞ্চি মাপের টবই যথেষ্ট। টবের মাটির সঙ্গে জৈব সার বা কম্পোস্ট সার পর্যাপ্ত পরিমাণে মেশাতে হয়।
পরিচর্যা
সাবধানতার সঙ্গে চারা রোপণ করে ঝাঁঝর দিয়ে উপর থেকে বৃষ্টির মতো পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। যাতে গাছ এবং পাতা উভয়ই ভেজে। প্রয়োজনে হেলে পড়া গাছকে লাঠি পুঁতে তার সঙ্গে বেঁধে দাঁড় করিয়ে দিতে হবে। পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে। প্রয়োজনে কৃষিবিদের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
ফুলের সময়
রকমভেদে গাছগুলো মার্চ মাস পর্যন্ত ফুল দেয়। ফুল চাষ করে অনেকেই স্বচ্ছলতার মুখ দেখছেন। বিদেশেও ফুল রপ্তানি হচ্ছে। যা থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়।
তাই এখনই উপযুক্ত সময় ফুলচাষি বা ফুলপ্রেমীদের তৎপর হয়ে ওঠার। শীতের পরিবেশ ভরে উঠুক ফুলে ফুলে।
ফুল
জারবেরা ফুল চাষ পদ্ধতি

পরিচিতি
জারবেরা এ্যাসটারেসী পরিবারভুক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বানিজ্যিক ফুল । জার্র্মান পরিবেশবিদ ট্রগোট জার্বার এর নামানুসারে এ ফুলটির নামকরন করা হয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক ফুল বানিজ্যে কাট ফ্লাওয়ার (Cut flower) হিসেবে উল্লেখযোগ্য ১০টি ফুলের মধ্যে অন্যতম কাট ফ্লাওয়ারের জন্য ও বেশী দিন ফুলদানীতে সতেজ রাখতে জারবেরার জুড়ি নেই।
জাত
জারবেরা গণের আওতায় ৪০টির মত প্রজাতি আছে।এ গুলির মধ্যে জারবেরা জ্যামেসোনি প্রজাতিটি চাষাবাদ হচেছ সংকরায়ন পদ্ধতির মাধ্যমে Gerbera jamesonii এর অনেক জাত উদ্ভাবিত হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট জারবেরা ফুলের বারি জারবেরা-১ ও বারি জারবেরা-২ দুইটি জাত উদ্ভাবন করেছে।
জলবায়ু
জলবায়ু জারবেরা কষ্টসহিষ্ণু গাছ এবং সব ধরনের জলবায়ুতে কমবেশী জন্মায়।গ্রীষ্মমন্ডলীয় (Temperate) অঞ্চলে উন্মুক্ত স্থানে পলিসেডে এবং নাতিশীতোষ্ণ (Tropical) অঞ্চলে এ ফুলটিকে গ্রীনহাউজে চাষাবাদ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

নিয়ন্ত্রিত পরিবেশ (Protective condition)
বাংলাদেশে জারবেরা শীতকালীন সময়ে খোলা মাঠে বা উন্মুক্ত স্থানে চাষ করা হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে পলিসেডে চাষ করা হয়। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে চাষাবাদ করলে যদিও খরচের প্রধান্য অধিক পড়ে তথাপিও ফুলের গুনগতমান ও ফলন বৃদ্ধি এবং রোগপোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষার জন্য নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে জারবেরা চাষ করা জরুরী প্রয়োজন ।উজ্জ্বল সূর্যালোক জারবেরা গাছের বৃদ্ধি ও গুনগতমান সম্পন্ন ফুল উৎপাদনে সহায়ক। কিন্তু গ্রীষ্মকালে উন্নত ফুল উৎপাদনের জন্য হালকা ছায়া (৩০%) প্রদান করতে হয়। জারবেরা চাষে অনুকূল দিবাকালীন তাপমাত্রা ১৬-২০০ সেন্টিগ্রেড এবং রাত্রিকালীন তাপমাত্রা ১০ – ১২০ সেন্টিগ্রেড । উচচ তাপমাত্রায় গাছে ফুল আসে ঠিকই, কিন্তু ফুল ততটা গুনগত মান সম্পন্ন হয় না
মাটি
সুনিষ্কাশিত, উর্বর দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি জারবেরা চাষের জন্য উত্তম। মাটির পি এইচ মান ৫.৫-৭.০ এর মধ্যে থাকা উচিত । জারবেরার জমিতে প্রচুর জৈব সার থাকা দরকার এজন্য পরিমিত পরিমানে গোবর সার, পাতাপচা সার, Cocodust ইত্যাদি প্রয়োগ করতে হবে ।

বংশবৃদ্ধি
(ক) বীজের মাধ্যমে (By seed)
বীজের মাধ্যমে জারবেরার বংশবৃদ্ধি করা যায়। এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত গাছে মাতৃগাছের সকল গুনাবলী বজায় থাকে না, তবে পদ্ধতিটি সহজ। এ পদ্ধতির সুবিধা হলো বীজের মাধ্যমে রোগ-পোকা আক্রমনের সম্ভাবনা কম থাকে ।
(খ) ডিভিশন (Division of clumps)
মাতৃগাছের ক্লাম্প বিভক্ত করে বংশবৃদ্ধি করা যায়। এজন্য মাঠের সুপ্রতিষ্ঠিত ও পরিপূর্ণ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত গাছগুলিকে ছোট ছোট ভাগে ধারালো ছুরি দিয়ে ভাগ করা হয়।
উক্ত সাকার (Sucker) গুলির পাতা ও শিকড় হালকা প্রুনিং (Pruning) করে পরবর্তীতে নতুন বেডে (Bed) লাগানো হয়।
(গ) মাইক্রোপ্রোপাগেশন (Micropropagation)
বানিজ্যিক ভাবে চাষাবাদের ক্ষেত্রে উপরের পদ্ধতি দুটি খুব উপযোগী নয়। অল্প সময়ে প্রচুর সংখ্যায় রোগমুক্ত জারবেরার চারা পাওয়ার জন্য টিসুকালচার পদ্ধতিটি উত্তম। এ জন্য প্রথমে সঠিক জাত নির্বাচন করতে হবে। পরে ঐ গাছের কান্ডের বর্ধিত অগ্রাংশ (growing shoot tips), ফুল কুড়ি (Flower bud), পাতা (Leaf) ইত্যাদিকে এক্সপ্লান্ট (Explants) হিসাবে নিয়ে বার বার সাব-কালচার (Sub-culture) করে অসংখ্য চারা উৎপাদন করা সম্ভব।

চাষাবাদ (Cultivation)
(ক) জমি তৈরী (Land preparation)
জমিতে পরিমানমত জৈব সার দিতে হবে। তারপর ৪০-৪৫ সেঃ মিঃ গভীর করে আড়াআড়ি ও লম্বা ভাবে পরপর কয়েকটি চাষ দিয়ে জমিটি ঝুরঝুরা (fine tilth) করে তৈরী করতে হবে। ফলে সকল জৈব সার মাটির সাথে সুন্দরভাবে মিশে যাবে
(খ) বেড তৈরী (Bed preparation)
জারবেরার জন্য বেডের উচ্চতা ২০ সেঃ মিঃ এবং প্রশস্ততা ১.০-১.২ মিঃ হলে ভাল হয়। জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেজন্য দুই বেডের মধ্যবর্তী ৫০ সেঃ মিঃ পানি নিষ্কাশন নালা থাকতে হবে। সাধারনতঃ একবার লাগিয়ে পর্যায়ক্রমে ২ বৎসর ফুল আহরন করা হয় বলে জমি ও বেড তৈরীর সময় সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়।
(গ) চারা লাগানো (Planting)
বেড (Bed) তৈরী হলে জাত ও এর বৃদ্ধির ধরন বুঝে সাকারগুলি (Sucker) সারি থেকে সারি ৫০ সেমি এবং গাছ থেকে গাছ ৪০ সেমি দূরত্ব রেখে রোপন করতে হবে। চারাগুলি এমনভাবে মাটিতে স্থাপন করতে হবে যেন চারার ক্রাউন (Crown or Central growing point) মাটির (Surface level) উপরে থাকে । ক্রাউন মাটির নীচে গেলে গোড়া পচা (Foot rot) রোগ সংক্রমনের সমূহ সম্ভাবনা থেকে যায়।
(ঘ) লাগানোর সময় (Planting time)
জারবেরা সারা বৎসর লাগানো যায় তবে উন্নত ফুল ও বেশী উৎপাদন পেতে সাধারনতঃ অক্টোবর-নভেম্বর মাসে চারা লাগানো উচিত।
(ঙ) পানি দেয়া (Irrigation)
জারবেরার শিকড় গভীরে প্রবেশ করে বিধায় বার বার হালকা স্প্রিংকলার (Sprinkler) সেচের পরিবর্তে প্লাবন সেচ (Flood Irrigation) দেয়া উত্তম। পানি সেচের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়। কারণ জারবেরা ক্ষেতে জলাবদ্ধতা মাটিবাহিত রোগ সংক্রমণ ত¦রানি¦ত করে। আবার মাটিতে পানির অভাব হলে গাছ ঢলে (Wilting) পড়ে, সেক্ষেত্রে ফুলের পুষ্পদন্ড ছোট হয়ে যায়। বায়ু চলাচলের সুবিধার জন্য প্রতিবার সেচ দেয়ার পর মাটিতে জো আসলে নিড়ানী দিয়ে উপরের শক্ত আস্তরণ (Hard crust) ভেঙ্গে দিতে হবে।
(চ) সারপ্রয়োগ (Fertilization)
জারবেরা দ্রুত বর্ধনশীল একটি ফুল ফসল।
গাছের বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ ও গাছ থেকে সর্বোচ্চ উৎপাদন পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়ে পরিমিত পরিমান সার প্রয়োগ করতে হবে। চারা লাগানোর পর নতুন শিকড় গজানো শুরু হলে সুষম সার প্রয়োগ করতে হবে।
প্রতি হেক্টরে ১০ টন পঁচা গোবর/কম্পোস্ট, ২ টন কোকোডাষ্ট, ৩৫০ কেজি ইউরিয়া, ২৫০ কেজি টিএসপি ও ৩০০ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৬৫ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি বোরিক এসিড ও জিংক অক্সাইড সার প্রয়োগ করতে হবে। সাকার রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে পঁচা গোবর/কম্পোস্ট এবং ইউরিয়া বাদে অন্যান্য সার ৭-১০ দিন পূর্বে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সাকার রোপণের ২৫ দিন পর ইউরিয়া সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক সার সাকার রোপণের ৪৫ দিন পর গাছের গোড়ার চারপাশে একটু দূর দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সেচ দিতে হবে।

রোগ ও পোকা মাকড় ব্যবস্থাপনা
মুল পচা রোগ
মাটি বাহিত এক প্রকার ছত্রাকের আক্রমণে এরোগ হয়। এরোগে আক্রান্ত হলে গাছের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়এবং অবশেষে সম্পূর্ণ গাছটি শুকিয়ে যায়। মাটি জীবাণুমুক্ত করে চারা লাগালে এরোগ কম হয়।
গোড়া পঁচা রোগ
এটি মাটি বাহিত রোগ। এ রোগের ফলে গাছের কেন্দ্রীয় অংশ প্রথমে কালো রং ধারণ করে ও পরে পচে যায়। পরবর্তীতে পাতা ও ফুল মারা যায়।
প্রতিকার
১. রিডোমিল অথবা ডায়থেন এম-৪৫ ছত্রাকনাশক ০.২% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
২. টপসিন ০.০৫% হারে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করেও এরোগ দমন করা যায়।
পাউডারি মিলডিউ
দুই ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এরোগ হয়। এরোগে আক্রান্ত গাছেরর উপরে সাদা পাউডারের আস্তরণ দেয়া হয়েছে বলে মনে হয়।
প্রতিকার
১। বেনোমিল ৫০ডব্লিউপি ০.০১% হারে সেপ্র করলে ভাল ফল পাওয়া যায়।

পোকামাকড়
মাকড়
শুস্ক ও উষ্ণ আবহাওয়ায় মাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়। এর আক্রমণে পাতা ও ফুলকুঁড়ির বৃদ্ধি চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। ফুলের অস্বাভাবিক আকার ও আকৃতির কারণে বাজার মুল্য থাকেনা।
প্রতিকার
১. আক্রমনের প্রথম দিকে আক্রান্ত পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
২. যে কোন মাকড় নাশক যেমন ভারটিম্যাক বা ওমাইট ৫৭ইসি ১.৫ মিঃলিঃ প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে গাছে স্প্রে করতে
হবে।
সাদা মাছি পোকা
সাদা মাছি গাছের বিভিন্ন অংশের রস চুষে মারাত্মক ক্ষতি করে। এ পোকা ভাইরাস রোগ ছড়ায়।
দমন
১. আঁঠালো হলুদ রংয়ের ফাঁদ ব্যবহার করা ।
২. ৫০ গ্রাম আধা ভাঙা নিমবীজ ১ লিটার পানিতে ১২ ঘন্টা ভিজিয়ে রেখে উক্ত পানি ছেকে ৭-১০ দিন পর পর ২-৩ বার পাতার নীচের দিকে স্প্রে করা।
৩. চারা রোপনের ১০-১৫ দিন পর থেকে এসাটাপ ৭৫ (এসপি) ও কুমুলাস ডিএফ এক সঙ্গে ২ গ্রাম করে প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন পর পর স্প্রে করতে হবে।

ফুল তোলা (Harvesting)
পূর্ন বিকশিত জারবেরা ফুলের বাহিরের দু’সারি ডিস্ক ফ্লোরেট (Disc floret) পুষ্প দন্ডের সাথে সমকৌনিক অবস্থানে আসলে ফুল তোলা হয়। কর্তনের সময় পুষ্পদন্ড যথাসম্ভব লম্বা রেখে ফুল সংগ্রহ করা হয়। ধারালো চাকু দ্বারা তেরছা ভাবে খুব সকালে বা বিকালে ফুল তোলা উত্তম। ফুল কাটার পর পুষ্পদন্ড এক ইঞ্চি পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পানির সাথে অল্প চিনি এবং কয়েক ফোটা লেবুর রস মিশিয়ে দিলে ফুল সতেজ থাকে।
ফলন (Yield)
জাত ভেদে ফলন কম বেশি হয়। তবে প্রতি গাছে ২০-২৫ টি ফুল বছরে সংগ্রহ করা যায়।
ফুল
গাঁদা ফুল চাষ পদ্ধতি

শীতে গাঁদা ফুলের চাষ
শীতকালের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। বিবাহ, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, গৃহসজ্জা, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও শহীদ দিবসসহ সব অনুষ্ঠানেই গাঁদা ফুলের বিকল্প নেই। কেটে যাওয়া ত্বকের রক্ত পড়া বন্ধ করতে, কাটা ঘা শুকাতে ও জীবাণুনাশক হিসাবে গাঁদা পাতার রস খুব উপকারী।
জাত
চাইনিজ , রাজগাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদা আমাদের দেশে বেশি চাষ হয়। রঙ ভেদে গাঁদার জাত হচ্ছে হলুদ, লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল হলুদের মিশ্রণ ইত্যাদি। আফ্রিকান জাতের গাছ সোজা ও লম্বা, ৩০-১০০ সেমি লম্বা হয়। ফুল কমলা, হলুদ ও গাঢ় খয়েরি রঙের ছিটা দাগযুক্ত হয়। ফরাসি গাঁদার গাছ খাট ও ঝোপালো, ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। ফুল আকারে ছোট, প্রচুর ধরে ও রঙ লাল। কমলা সুন্দরীর গাছ খুব শক্ত। ফুল গাঢ় কমলা। শাখা প্রশাখা বেশি হওয়ায় ফুল বেশি ধরে। ফুলের আকার ৪.৫ থেকে ৫ সেমি। অনেক দিন পর্যন্ত ফুল ধরে। প্রতি গাছে ৫৫-৬০ টি ফুল পাওয়া যায়। রোগ সহনশীল।

চারা তৈরি
শাখা কলম ও বীজের মাধ্যমে গাঁদা ফুলের চারা তৈরি করা যায়। নভেম্বরে বীজতলায় বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করতে হয়। সারা বছর চাষ করা গেলেও শীতকালে ফলন ভাল হয়। শাখা দিয়ে কলম করার জন্য গাঁদা গাছের শাখা ৮-১০ সেমি লম্বা করে কাটতে হবে। বীজতলায় শাখা ডালের টুকরাগুলো দু একটি পর্বসহ রোপন করতে হবে। উপযুক্ত সময় হচ্ছে মার্চ মাস। নিয়মিত সেচ দিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২০-২৫ দিনের মধ্যে পাতা গজায়।
জমি নির্বাচন ও তৈরি
উঁচু, সুনিষ্কাশিত দো আঁশ ও উর্বর মাটি গাঁদা চাষের উপযোগী। চার পাঁচবার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হবে। টবে বা পাত্রে চাষ করলে তিন ভাগ দো আঁশ এঁটেল বা দো আঁশ মাটির সাথে একভাগ গোবর মিশিয়ে সার মাটির মিশ্রন তৈরি করতে হবে। এই সার মাটি টবে বা পাত্রে বা পলিব্যাগে ভরতে হবে।
সার প্রয়োগ
প্রতি শতক জমিতে পঁচা গোবর, ৪০ কেজি ইউরিয়া ২ কেজি, টিএসপি ৩ কেজি এবং এমওপি ২ কেজি সার প্রয়োজন । এ সারগুলো মাটির সাথে মিশাতে হবে।

চারা রোপন
বীজ থেকে অথবা শাখা থেকে তৈরি একমাস বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ডিসেম্বর মাসে চারা রোপন করতে হয় । সারি থেকে সারির দূরত্ব ৪০-৫০ সেমি এবং চারা থেকে চারার দূরত ৩০-৪০ সেমি হওয়া উচিত। চারা উৎপাদন না করে সরাসরি বীজ থেকেও গাঁদা চাষ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি শতকে ৫-৬ গ্রাম বীজ জমিতে বপন করতে হবে।

পরিচর্যা
মাটি শুকনোর আগেই সেচ দিতে হয়। গাছের গোড়াই পানি জমলে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগাছা জন্মালেই নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। গাঁদা ফুলে রোগ বালাই তেমন হয়না। তবে জাব পোকা আক্রমণ করলে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। গাছ বড় হলে খুটির সাথে বেধে দিলে গাছ সোজা থাকে। এতে ফুলের গুনগত মান ভাল হয়। গাছে ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য ফুল আসার একমাস আগে গাছের ডগা ভেঙে দিতে হবে। একটি শাখায় ঘন হয়ে অনেকগুলো ফুল বা কুঁড়ি ধরলে উপরের একটি বা দুইটি রেখে বাকিগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে ফুল বড় হয়। চারা রোপনের ১৫ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করা যেতে পারে। চারা মারা গেলে সেখানে চারা রোপন করা উচিত। চারা ঘন হলেও পাতলা করতে হবে।

ফুল সংগ্রহ ও ফলন
ফুল কাঁচি বা ব্লেড দিয়ে বোটাসহ কেটে সংগ্রহ করতে হবে। খুব ভোরে ফুল তুলতে হয়। চারা রোপনের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গড়ে একটি গাছে জাত ভেদে ১৫-৪০ টি ফুল ধরে।
ফুল
সুর্যমুখী

ফসলের নাম :সূর্যমুখী(Sunflower)
উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Hellianthus annus.
১. পুষ্টিমূল্য/উপাদান : বীজে লিনোলিক এসিড বিদ্যমান। উন্নতমানের তৈল থাকে।
২. ভেষজগুণ : হৃদরোগীদের জন্য সূর্যমুখীর তেল খুবই উপকারী।
৩. ব্যবহার :সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথাগুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
৪. উপযুক্ত জমি ও মাটি : সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী।

৫. জাত পরিচিতি : এ পর্যন্ত বারি কর্তৃক ২টি জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। যথা (১) কিরণী (ডিএস-১) এবং বারি সুর্যমুখী-২।
কিরণী:১৯৯২ সালে জাতটির অনুমোদন দেয়া হয়। বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতটি উদ্ভাবন করা হয়। জাতটির কান্ডের ব্যাস ১.৫-২.০ সে.মি.। পরিপক্ক পুষ্পমঞ্জুরী বা শাখার ব্যাস ১২-১৫ সে.মি.। প্রতি মাথায় বীজের সংখ্যা ৪০০-৬০০। বীজের রং কালো। ১০০০ বীজের ওজন ৬৮-৭২ গ্রাম। বীজে তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৪ ভাগ। জাতটি মোটামুটি অলটারনারিয়া বৱাইট রোগ সহনশীল। জীবনকাল ৯০-১১০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ১.৬ হতে ১.৮ টন।
বারি সূর্যমুখী-২ : গাছের কান্ডের ব্যাস ২.০-২.৪ সে.মি.। পরিপক্ক পুষ্পমঞ্জুরী বা শাখার ব্যাস ১৫-১৮ সে.মি.। বীজের রং কালো। ১০০০ বীজের ওজন ৬৫-৭০ গ্রাম। প্রতি মাথায় বীজের সংখ্যা ৪৫০-৬৫০। তেলের পরিমাণ শতকরা ৪২-৪৪ ভাগ। জীবনকাল রবি মৌসুমে ৯৫-১০০ দিন এবং খরিফ মৌসুমে ৯০-৯৫ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন রবি মৌসুমে ২.০ হতে ২.৩ টন এবং খরিপ মৌসুমে ১.৫ হতে ১.৮ টন।

৬. বীজের হার : ৮-১০ কেজি/হেক্টর।
৭. বপন সময় ও বপন পদ্ধতি : সূর্যমুখী সারা বছর চাষ করা যায়। তবে অগ্রহায়ন মাসে (মধ্য থেকে চাষ করলে এর ভালো ফলন পাওয়া যায়। খরিপ-১ মৌসুমে অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠে (মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য মে) মাসেও এর চাষ করা যায়। সূর্যমুখী বীজ সারিতে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব ৫০ সে.মি. এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ২৫ সে.মি.।
৮. সার ব্যবস্থাপনা :ভালো ফলনের জন্য সূর্যমুখীতে নিম্নরূপ সার ব্যবহার করতে হবে।
সারের নাম | সারের পরিমাণ/হেক্টর |
ইউরিয়া | ১৮০-২০০ কেজি |
টিএসপি | ১৫০-২০০ কেজি |
এমওপি | ১২০-১৫০ কেজি |
জিপসাম | ১২০-১৭০ কেজি |
জিংক সালফেট | ৮-১০ কেজি |
বরিক এসিড | ১০-১২ কেজি |
ম্যাগনেসিয়াম সালফেট | ৮০-১০০ কেজি |

সার প্রয়োগ পদ্ধতি :অর্ধেক ইউরিয়া এবং বাকি সব সার শেষ চাষের সময় জমিতে ছিটিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। বাকি অর্ধেক ইউরিয়া ২ ভাগ করে প্রথম ভাগ চারা গজানোর ২০-২৫ দিন এবং দ্বিতীয় ভাগ ৪০-৪৫ দিন পর (ফুল ফোটার পূর্বে) প্রয়োগ করতে হবে।
৯. সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা :সূর্যমুখী ফসলের ফলন বেশী পেতে হলে কয়েকবার সেচ দেয়া প্রয়োজন। প্রথম সেচ বীজ বপনের ৩০ দিন পর (গাছে ফুল আসার আগে), দ্বিতীয় সেচ বীজ বপনের ৫০ দিন পর (পুষ্পস্তবক তৈরির সময়) এবং তৃতীয় সেচ বীজ বপনের ৭০ দিন পর (বীজ পুষ্ট হবার আগে) সেচ দেয়া দরকার।সূর্যমুখীর জমি সর্বদা আগাছামুক্ত রাখতে হবে। জমিতে আগাছা দেখা দিলে উহা তুলে ফেলতে হবে।

১০. পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা :
পোকার নাম : বিছা পোকা
ভূমিকা : ছোট অবস্থায় এরা দলবদ্ধভাবে থাকে।
পোকা চেনার উপায় : কীড়া বা বিছা হলুদ রংয়ের এবং গায়ে কাঁটা থাকে।
ক্ষতির নমুনা : এরা সাধারণত গাছের পাতায় আক্রমণ করে। এ পোকার কীড়া দলবদ্ধভাবে থেকে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে পাতাকে পাতলা সাদা পর্দার মতো করে ফেলে।
অনুকূল পরিবেশ :উষ্ণ আবহাওয়া।

ব্যবস্থাপনা : পোকা দেখার সংগে সংগে গাছ থেকে পোকাসহ পাতা সংগ্রহ করে পোকা মেরে ফেলতে হবে। সেচ নালায় কেরোসিন মিশ্রিত পানি থাকলে কীড়া পানিতে পড়ে মারা যায়।
প্রতি লিটার পানিতে ডায়াজিনন-৬০ ইসি ২ মিলি হারে মিশিয়ে বিকালে জমিতে স্প্রে করতে হবে।

১. রোগ ব্যবস্থাপনা :
রোগের নাম :পাতা ঝলসানো রোগ
ক্ষতির নমুনা : অলটারনেরিয়াহেলিয়ানথী নামক ছত্রাকের সাহায্যে এ রোগ ছড়ায়। আক্রমণের শুরুতে পাতায় ধুসর বা গাঢ় বাদামী বর্ণের অসম আকৃতির দাগ পড়ে। এ দাগগুলো একত্রে মিলিত হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করে এবং অবশেষে পুরো পাতা ঝলসে যায়।
বিস্তার : বীজ এবং বায়ুর সাহায্যে বিস্তার লাভ করে।

ব্যবস্থাপনা : কিরণী জাতের চাষ করা
প্রতি লিটার পানির সাথে ২ গ্রাম রোভরাল-৫০ ডব্লিউ পি মিশিয়ে ১০ দিন পর পর ৩ বার সেপ্র করা বা ফসল কাটার পর পরিত্যক্ত কান্ড, মূল ও পাতা পুড়িয়ে ফেলা।
১২. ফসল তোলা : ৯০-১১০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়।
ফুল
শীতে টবের গাছের যত্ন নেবেন যেভাবে

শীতে প্রকৃতির প্রভাব সব কিছুর উপর পড়ে। বাসা-বাড়ির টবের পানিও শুকিয়ে যায়। ঘরের ভেতর, বাসার ছাদে বা বারান্দার টবে রাখা গাছগুলো এ সময় জীর্ণ হতে পারে। তাই নিয়মিত যত্ন নিতে হবে।
এই শীতে টবের গাছের যত্ন নেবেন যেভাবে, তা জেনে নিন—
১. শীত মানেই গাছ ঠান্ডা থাকবে এমন নয়। এ সময় গাছেরও সূর্যের আলোর প্রয়োজন আছে।
২. গাছের গায়ে সকালের রোদ লাগতে দিন। এতে শীতেও ভালো থাকবে গাছ।
৩. শীত যদি খুব বেশি হয়, ছোট টবগুলো ঘরের ভেতরেই রাখুন। পরদিন সকালে বারান্দায় রোদে দিন।
৪. শীতে গাছে অতিরিক্ত পানি দেবেন না। মাটি সহজে শুকায় না বলে শিকড় পচে যেতে পারে। মাটি পরীক্ষা করে পানি দিন।
৫. শীতের সময় গাছের গায়ে বাড়তি ধুলো জমতে পারে। পরিষ্কার নরম কাপড় দিয়ে সেগুলো ঝেড়ে ফেলুন।
৬. ঘরের টবে পানি দেওয়ার জন্য স্প্রে ব্যবহার করুন। এতে বাড়তি পানি নষ্ট হবে না।
৭. শীত বেশি হলে অনেক গাছ মরে যেতে পারে। এমন হলে গাছ খানিকটা ছেঁটে দিতে পারেন।
৮. শীত কমে গেলে নতুন পাতা গজিয়ে সতেজ হয়ে উঠবে আপনার শখের গাছটি।
৯. ফেলে দেওয়া চা-পাতা, শাক-সবজির ছিলকা, ডিমের খোসা মিলিয়ে বানিয়ে ফেলুন ঘরে বানানো সার। এ সার বেশ উপকারী।
১০. পাতার রং যদি হালকা হয়ে যায়, তবে পানি না দিয়ে মাটি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। সূর্যের আলোতে গাছ রাখুন।
ফুল
টবে গোলাপ চাষের নিয়ম

শহরে কিংবা গ্রামে বাড়ির ছাদে বা আশেপাশে শখ করে অনেকেই টবে ফুল চাষ করেন। সেই ক্ষেত্রে বেশির ভাগেরই পছন্দ গোলাপ। আপনি যদি টবে গোলাপ চাষ করতে চান তাহলে আপনাকে গোলাপ চাষ সম্পর্কে কিছু বিষয় জেনে নিতে হবে।
চারা রোপণ
নতুন চারা না লাগিয়ে একবছরের পুরনো চারা লাগাতে পারেন। চারাটি সোজাভাবে গর্তের মধ্যে লাগাতে হবে। চারার শেকড় ভালোভাবে মাটি দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে দিতে হবে। জোড় কলমের মাধ্যমে উৎপাদিত চারার জোড়ের স্থানটি মাটি থেকে অন্তত ৩-৪ সেন্টিমিটার উপরের দিকে রাখতে হবে।
গাছ ছাঁটাই
নতুন শাখা ভালোভাবে বিস্তৃত করার জন্য পুরনো ডাল, ক্ষত ও রোগাক্রান্ত ডাল কেটে বাদ দিতে হয়। বড় গোলাপ পেতে হলে গাছ নিয়মিত ছাঁটাই করতে হয়। আশ্বিন মাসকে গাছ ছাঁটাইয়ের উপযুক্ত সময় ধরা হয়।
সার প্রয়োগ
গাছ ছাঁটাইয়ের ১০-১২ দিন আগে সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছ প্রতি ২-৩ কেজি পঁচা শুকনো গোবরের সঙ্গে ৫০ গ্রাম টিএসপি ও ৫০ গ্রাম পটাশ দিতে হবে। টবের উপর থেকে ১০ সেন্টিমিটার মাটি সরিয়ে নিচের মাটি কিছুটা আলগা করে সারগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এসময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে শিকড়ের কোন ক্ষতি না হয়। হাঁস-মুরগি বা কবুতরের বিষ্ঠা সার হিসেবে গোলাপ গাছে দেওয়া যেতে পারে।
পানি
• চারা লাগানোর পরে চারার গোড়ায় প্রথম দিকে ঘন ঘন পানি দিতে হবে।
• টবের মাটিতে ভালোভাবে চারা গজালে এবং নতুন ডালপালা ছাড়ার পরে খরা মৌসুমে প্রতি ১০ দিন পর পর একবার করে সেচের মতো পানি দিতে হবে।
• প্রত্যেকবার পানি সেচের পরে গাছের গোড়ার মাটি ঝরঝরে করে দিতে হবে।
রোগ প্রতিরোধ
টবে চাষ করার সময় পোকা আক্রমণ করলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন।
পরিচর্যা
১. চারার জোড়া জায়গাটির নিচে কোন প্রকার ডালপালা বের হলে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে দিন।
২. বড় আকারে ফুল পেতে হলে প্রথম দিকে বের হওয়া পুষ্পকুড়ি ভেঙে দিন।
৩. মার্চ-এপ্রিল মাসে পঁচা গোবর এবং কম্পোস্টের মালচ গাছের গোড়ায় দিন।
৪. পুরান ডালে ফুল ভালো হয় না। তাই ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে।
৫. ছাঁটাইকৃত ডালের সামনে ছত্রাকনাশক ঘন করে গুলে লাগিয়ে দিন।
৬. গাছের গোড়া থেকে ২০ সেন্টিমিটার দূরে গোল করে মাটি খুঁড়ে শেকড় বের করে দিন।
৭. ক্ষতিকর পোকামাকড় ধ্বংস করতে এভাবে মাটি খুঁড়ে ৮-১০ দিন রাখতে পারেন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন