সন্ধ্যায় নাস্তায় ছোলা মুড়ি মাখা খান অনেকেই। তবে রোজায় এই চিত্র একেবারেই ভিন্ন। ইফতারিতে ছোলা ছাড়া চিন্তাই করা যায়না। মুখরোচক খাবার ছাড়াও ছোলার পুষ্টিগুণও অনেক। শক্তিবর্ধক হিসেবে ছোলার সুনামও রয়েছে যা রমজানের সময় খুবই উপকারী।
বাঙালি ঘরে ইফতারিতে প্রায় সবাই ছোলা রান্না করেন বিভিন্ন রেসিপিতে। আজ আপনাদের জন্য থাকছে সবচেয়ে সহজ রেসিপিটি। সেই সঙ্গে সংরক্ষণ পদ্ধতিও জেনে নিন-
উপকরণ: ছোলা ১ কাপ, আলু বড় একটি, পেঁয়াজ কুঁচি এক কাপ, দারুচিনি এক টুকরা, এলাচ একটি, তেজপাতা একটি, শুকনা মরিচ ২ টি, কাঁচা মরিচ ফালি ২ টি, আদা বাটা দেড় চা চামচ, রসুন বাটা দেড় চা চামচ, লবণ পরিমাণ মতো, মরিচ গুঁড়া আধা চা চামচ, হলুদ গুঁড়া আধা চা চামচ, জিরা গুঁড়া এক চা চামচ, পানি এক কাপ, ধনিয়া পাতা ১/৪ কাপ, তেল ১/৪ কাপ।
প্রণালী: ছোলা সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিন। এরপর ভালোভাবে ধুয়ে পরিমাণ মতো পানি দিয়ে সিদ্ধ করে নিন। ছোলা সিদ্ধ করার মাঝামাঝি সময়ে আলুও সিদ্ধ করে নিন। ছোলা সিদ্ধ হয়ে গেলে ছোলার পানি ছেঁকে ছোলা ধুয়ে নিন। আলু ছিলে নিন।
এখন পাত্রে তেল গরম দিন। গরম তেলে পেঁয়াজ, শুকনা ও কাঁচা মরিচ এবং গরম মশলাগুলো দিন। পেঁয়াজ ভাঁজা ভাঁজা হয়ে গেলে সামান্য পানি দিয়ে আদা, রসুন, হলুদ, মরিচ, লবণ এবং জিরা দিয়ে দিন। মশলা অল্প অল্প পানি দিয়ে বেশ সময় নিয়ে কষিয়ে নিন। পানি শুকিয়ে মশলার উপর তেল উঠে এলে এর মধ্যে সিদ্ধ আলু হাতে ভেঙে দিয়ে দিন। ভালোকরে নেড়ে আলু একটু কষিয়ে নিয়ে এর মধ্যে সিদ্ধ ছোলাগুলো দিয়ে দিন।
সংরক্ষণ পদ্ধতি: ছোলা ভুনা রান্না হয়ে গেলে একটি এয়ার টাইট বক্সে আলাদা করে রাখুন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বক্সের ঢাকনা লাগিয়ে ফ্রিজে রাখুন। এক সপ্তাহের জন্য সংরক্ষণ করতে চাইলে ডিপে রাখুন। আর যদি পরদিন খান তাহলে ফ্রিজের নরমাল চেম্বারেই রেখে দিন। একসঙ্গে একদিন একটু বেশি করে রান্না করে আলাদা আলাদা বক্সে সপ্তাহ দুইয়ের জন্য নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।
ছোলায় সামান্য পানি দিয়ে সব নেড়ে ছোলা কিছুক্ষণের জন্য ঢেকে দিয়ে রান্না করুন। ছোলার পানি কমে আসা শুরু হলে ঘন ঘন নেড়ে দিন। পানি টেনে ছোলা মাখা মাখা হয়ে এলে উপরে ধনিয়া পাতা ছড়িয়ে দিয়ে চুলা বন্ধ করে দিন। ব্যস, তৈরি মজাদার ছোলা ভুনা।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন