বাঙালির সবচেয়ে বড় উৎসব আসবে আর তাকে মিষ্টি খেয়ে বরণ করা হবে না, তাই হয় নাকি! মোটেই না। করোনা পরিস্থিতিতে পহেলা বৈশাখে যদি ঘরেও থাকি।উৎসব আমেজ তো একটু আনতেই হবে।
জেনে নিন পহেলা বৈশাখে তৈরি করতে পারেন এমন সহজ কিছু মিষ্টি খাবারের রেসিপি:
মুরালি উপকরণ: ময়দা, চিনি, তেল, লবণ সামান্য। ময়দা ১ কাপ, চিনি ১০০ গ্রাম, পানি পরিমাণমতো।
প্রণালী: প্রথমে ময়দা একটু গরম তেল দিয়ে মেখে নিন। এবার ঠাণ্ডা পানি দিয়ে শুকনো করে মেখে বড় একটা গোল রুটি বানিয়ে ছুরি দিয়ে কেটে তেলে ভেজে তুলুন।
আধা কাপ পানিতে চিনি দিয়ে ঘন সিরা তৈরি করুন। এবার ভাজা মুরালি দিয়ে একবারে শুকনো করে নামাতে হবে। ঠাণ্ডা হলে বক্সে ভরে রাখুন।
আপেল সন্দেশ উপকরণ: গুঁড়া দুধ ১ কাপ, পাউডার সুগার আধা কাপ, কনডেন্সড মিল্ক ২ টেবিল চামচ, ঘি ১ টেবিল চামচ, এলাচ গুঁড়া ১ চিমটি, ফুড কালার প্রয়োজনমতো (লাল ও হলুদ), লবঙ্গ কয়েকটি
পদ্ধতি প্রথমে প্যানে গুঁড়া দুধ, পাউডার সুগার, কনডেন্স মিল্ক দিয়ে মাঝারি আচেঁ নাড়তে থাকুন। কিছুক্ষণ নাড়ার পরে যখন সব উপকরণ একসঙ্গে মিশে যাবে; তখন প্রয়োজনমতো ফুড কালার (হলুদ) মিশিয়ে দিন।
এবার এলাচ গুঁড়া দিয়ে নেড়ে দিন মিশ্রণটি। এভাবেই কিছুক্ষণ নাড়তে থাকুন। যখন মিশ্রণ প্যানের গা ছেড়ে উঠে আসবে তখন নামিয়ে নিন।
একটি পাত্রে মিশ্রণ ঢেলে হালকা ঠাণ্ডা করে নিন। এরপর হাতে ঘি মেখে আপেলের মতো গোল করে নিন। বেশি ঘি মাখবেন না হাতে, সন্দেশ আপেলের আকারে তৈরি করতে পারবেন না। বারবার ভেঙে যাবে।
যখন সবগুলো সন্দেশ আপেল আকৃতির করে তৈরি করা হয়ে যাবে; তখন আপেলের গায়ে ব্রাশ দিয়ে লাল ফুড কালার ব্যবহার করুন। আপেলের মুখে একটি লবঙ্গ বসিয়ে দিলেই মনে হবে আসল আপেল।
তৈরি হয়ে গেলে আপেল সন্দেশ। ফ্রিজে একটি এয়ারটাইট বক্সে রেখে সন্দেশগুলো সংরক্ষণ করতে পারবেন বেশ কয়েকদিন।
লবঙ্গ লতিকা
উপকরণ: খামির-ময়দা বড় ২ কাপ, তেল ২ টেবিল চামচ, লবণ সামান্য, লবঙ্গ ১৫-২০টি, তেল ভাজার জন্য, পানি প্রয়োজনমতো। ময়দা, তেল ও লবণ দিয়ে শক্ত খামির তৈরি করুন।
পুর-২ কাপ নারকেল কুরানো, গুড়/চিনি ১ কাপ, একসেঙ্গ জ্বাল দিয়ে পুর তৈরি করুন।
সিরা-চিনি ৪০০ গ্রাম, পানি ১ কাপ জ্বাল দিয়ে সিরা তৈরি করে নিন।
প্রণালী: এবার খামির নিয়ে পাতলা রুটি বেলে তার মাঝখানে পুর দিয়ে চারকোণা পরোটার মতো ভাঁজ করে মাঝখানে একটি করে লবঙ্গ দিয়ে পিঠার মুখ আটকে দিন। এবার ডুবো তেলে ভেজে চিনির সিরায় কিছুক্ষণ রেখে তুলে নিন। ঠাণ্ডা হলে সাজিয়ে পরিবেশন করুন দারুণ মজার লবঙ্গ লতিকা।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন