পিরিয়ডের দিনগুলোতে কমবেশি ব্যথায় ভুগে থাকেন নানা বয়সী নারী। চিকিৎসায় গড়িমসির পাশাপাশি শারীরিক যন্ত্রণা থেকে স্বস্তি পেতে এ সময় চট করে ওষুধ সেবন অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন অনেকেই।
এতে সাময়িক উপশম ঘটলেও দীর্ঘদিন ধরে এভাবে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন নারীর স্বাস্থ্য জটিলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে বলে সতর্ক করেছেন চিকিৎসকরা।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, নাপা ও প্যারাসিট্যামলের মতো ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করে পিরিয়ডের ব্যথা থেকে উপশম পেতে চেষ্টা করেন তারা।
আবার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলেও ব্যথা কমাতে সুফল পাননি, এমন কথাও বলেছেন কেউ কেউ।
গর্ভধারণে সমস্যার পাশাপাশি আরও নানা স্বাস্থ্য সমস্যার কথা বিভিন্ন বয়সী ও পেশার নারীরাও জানিয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।
প্রথম মাসিক শুরুর পর থেকেই পেটে ব্যথা হয়ে আসছে বলে জানালেন বেসরকারি চাকরিজীবী নাইমা ইসলাম। ব্যথা অসহনীয় মনে হলে এই দিনগুলো পার করেছেন প্যারাসিটামল বা এ ধরনের ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করেই।
ঢাকার বাসিন্দা বিবাহিত নাইমা এখনও পিরিয়ডের দিনে ব্যথায় কাতরাতে থাকেন।
৩৫ বছর বয়সী এই নারী বলেন,“এমনও হয়েছে যে, প্রচণ্ড ব্যথা সামলাতে ওষুধ খেয়ে প্রায় অবচেতন হয়ে থাকতে হয়েছে। আমি ঘুমিয়ে থাকছি, কোনো সেন্সই থাকছে না।”
পেটে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে বিয়ের পর চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলে চিকিৎসা চলাকালে জরায়ুতে সিস্ট ধরা পড়ে তার।
নাইমা বলেন, বিয়ের আগে পিরিয়ডের দিনে পেটে তীব্র ব্যথা অনুভূত হলেও সেসময় কোনো চিকিৎসা করানো হয়নি।
“বিয়ের পর গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে জানলাম জরায়ুতে সিস্ট রয়েছে। সেটার চিকিৎসাও হল।”
সিস্টের চিকিৎসা করালেও পিরিয়ডে ব্যথা থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি তার। আর এই সমস্যার কারণে গর্ভধারণও হচ্ছে না বলে জানালেন নাইমা।
দেশে চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি বিদেশেও গিয়েছেন নাইমা এই স্বাস্থ্য সমস্যার উপশমে।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কনসিভ করতে পারছি না। ইন্ডিয়াতে গিয়ে ডাক্তার দেখালাম, কিন্তু কোনো সুফল পাইনি।
“দেশে-বিদেশে কম চিকিৎসা তো করলাম না। কিন্তু পিরিয়ডে পেটে ব্যথাও কমেনি। আর বাচ্চার আশা তো ছেড়েই দিয়েছি। মা হওয়ার সৌভাগ্য হয়ত আমার নেই।”
প্রথম পিরিয়ড শুরু হওয়ার দেড় বছর পর থেকে প্রতি মাসেই তলপেটের ব্যথাতে ভুগছেন কলেজ শিক্ষার্থী শাহিনুর সুলতানা।
মাসিকের তারিখের তিন থেকে চার দিন আগে থেকেই শরীরে ব্যথা শুরু হয় জানিয়ে তিনি বলেন, “তীব্র ব্যথা হয়। তখনই আমি বুঝি পিরিয়ড হবে। যেদিন পিরিয়ড হয়, সেদিন সারাদিন ব্যথা থাকে। পরদিন থেকে ঠিক হয়ে যায়।”
কিছুদিন হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে ‘বেশ ভালো ছিলেন’ ১৭ বছরের শাহিনুর।
চিকিৎসকের পরামর্শে ব্যথানাশক ওষুধ ‘নো স্পা’ সেবন করেছেন তিনি। তবে এতে তেমন সুফল মেলেনি বলে জানালেন শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহিনুর।
“ডাক্তার আমাকে বলে দিয়েছিল, খুব বেশি খারাপ অবস্থা হলে এটা খেতে। আর যদি ব্যথা সহ্য করতে পারি, তাহলে যেন না খাই। পেইনকিলার সব সময় খেতে হয় না বলেছিল।”
নাম প্রকাশ না করে ইডেন কলেজের এক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাসিকের সময় শরীরের নিচের অংশে ব্যথার পাশাপাশি বমি, পাতলা পায়খানার সমস্যাতে ভুগতে হয় তাকে।
তিনি বলেন, “মাসিকের তিন দিন খুব ব্যথা হত। এই তিনদিন কলেজে যেতে পারতাম না। সমস্যাটা শুরুর প্রায় দুই বছর পর গাইনি চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম।
“এরপর ব্যথা হলে দিনে তিনটা করে ওষুধ খেতে দেন তিনি। কিন্তু ওষুধের রিঅ্যাকশন চলে গেলেই আবার ব্যথা শুরু হয়ে যায়।”
পরে ভেষজ ওষুধ খেয়ে বমি আর পাতলা পায়খানা কমেছে বলে জানালেন তিনি।
“আগে তিনদিন প্রচণ্ড ব্যথা হত, ভেষজ চিকিৎসার পর এখন মাসিক শুরু পর চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা ব্যথা খুব বেশি হয়। পরে কমে যায়। বমি মাঝে মাঝে হয়।”
এসময় মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় জানিয়ে ২৪ বছর বয়সী এই নারী বলেন, “পিরিয়ডের সাতদিন আগে থেকেই শরীর ব্যথা করে, তখন কিছুই ভালো লাগে না।”
রেবেকা আক্তার এক সময় মাসিকের ব্যথা সহ্য করতে না পেরে স্কুল থেকে বাসায় চলে আসতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ওঠার পর থেকে ব্যথা কিছুটা কমতে থাকে।
ব্যথা কমাতে নাপা বা নাপা এক্সট্রা ওষুধ সেবন করেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন এই নারী।
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা রেবেকা বলেন, বিয়ে ও সন্তান হওয়ার পর মাসিকের ব্যথায় আর ভুগতে হচ্ছে না তাকে।
পিরিয়ডে যন্ত্রণা হওয়ার দিনগুলো নিয়ে ৩২ বছরের এই নারী বলেন, “ব্যথা দিনকে দিন বাড়ছিল। ক্লাস নাইন থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত প্রচণ্ড ব্যথা থাকত।
“নাপা বা প্যারাসিটামলেও ব্যথা না কমায় তিন থেকে চারবার সাপোজিটরি নিতে হয়েছে। বিয়ের পরে অবশ্য ব্যাথা কমে গেছে অনেকটাই। আর বাচ্চা হওয়ার পরে এখন তেমন ব্যথা হয় না।”
ব্যথানাশক ওষুধে ‘না’, প্রয়োজন চিকিৎসা
মাসিকের সময়ের তলপেট ও আশেপাশে ব্যথা অনুভূত হওয়াকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ডিসমেনোরিয়া বলে।
ডিসমেনোরিয়া বা এই মাসিকের ব্যথা দুই ধরনের হয়ে থাকে; প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া এবং সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. নূর সাঈদা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সব কিশোরী মেয়েদেরই যে ব্যথাটা হয়, সেটা স্বাভাবিক। এটা ফিজিওলজিক্যাল বা শারীরিক ব্যথা। এটাকে আমরা প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া বলে থাকি।”
পিরিয়ডের প্রথম দুই দিনের মধ্যেই সাধারণত এ ধরনের ব্যথা ঠিক হয়ে যায়। অধিকাংশ মেয়েদের বেলায় বিয়ের পরে প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়া থাকে না বলে জানান এই চিকিৎসক।
সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া হলে যে কয়েকদিন মাসিকের রক্তক্ষরণ চলে সে কয়দিনই প্রচণ্ড ব্যথা হয়। জরায়ুর প্রদাহসহ অন্যান্য সমস্যার কারণেও এই অসহনীয় যন্ত্রণা হতে পারে নারীর।
নূর সাঈদা বলেন, “সেকেন্ডারি ডিসমেনোরিয়া প্যাথোলজিক্যাল। কোনো রোগ থাকলে তখন এটা হয়।
“বিভিন্ন ধরনের জরায়ুর রোগ থাকতে পারে। ওভারির কোনো সমস্যা থাকলে এটা হয়। আমাদের কাছে রোগী আসলে আমরা আগে দেখি এটা ফিজিওলজিক্যাল না কি প্যাথোলজিক্যাল। সেইভাবে চিকিৎসা করি আমরা।”
প্রথম মাসিক হওয়ার পর শরীরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া পর্যন্ত অনেকেরই ব্যথা অনুভূত হয় বলে জানান গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হালিমা আক্তার হ্যাপী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নতুন একটা বিষয় শরীরে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটা হয়। খাপ খাইয়ে নেওয়া গেলে এটা ঠিক হয়ে যায়।
“কিন্তু ব্যথাটা তীব্র হলে আমরা সেটার কারণটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় কোনো কারণ থাকে না; বয়সের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যায়।”
বিবাহিত নারীর মাসিকের সময় প্রচণ্ড ব্যথা হলে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি জানিয়ে এই চিকিৎসক বলেন, “বিবাহিত জীবনে কোনো নারীর পিরিয়ডের ব্যথা হলে আমরা প্যাথোলজির চিন্তা করি। মানে নিশ্চয়ই তার কোনো সমস্যা আছে। তার পিরিয়ডটা তখন শরীরের সাথে অ্যাডজাস্ট হয়ে গেছে। সে কনজুগাল লাইফ লিড করছে, এতে তার ব্যথাটা কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু না কমলে তাকে আমরা আলট্রাসনোগ্রাম করতে বলি।”
হালিমা আক্তার হ্যাপী বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যদি টিউমার জাতীয় কিছু থেকে থাকে সে কারণে পেইন হয়ে থাকে। চকলেট সিস্ট, এন্ডোমেট্রিওসিস, এডিনোমায়োসিস হলেও পেইন হয়ে থাকে। এগুলো সাধারণত ২৫ বছরের পরেই হয়। ওইসব ক্ষেত্রে অনেক তীব্র ব্যাথা হয়।”
আর তাই চিকিৎসা না করিয়ে পিরিয়ডে ব্যথা উপশমে ওষুধ সেবন ‘খুবই ক্ষতিকর’ বলে মন্তব্য করেন এই চিকিৎসক।
তিনি বলেন, “তখন যদি সমস্যাটা চিহ্নিত না করে তাকে ওষুধ দেওয়া হয়, সেটা অবশ্যই খারাপ। তাহলে তার রোগটাই তো জানা হল না। তখন বাচ্চা কনসিভ হতেও সমস্যা হয়।”
ঋতুবতী মেয়েদের তাই ‘না জেনে ওষুধ সেবন না করতে’ পরামর্শ দিলেন হালিমা আক্তার হ্যাপী।
কিশোরী বয়সী মেয়েদের ওষুধ না নিয়ে বরং ওষুধের বিকল্প হিসেবে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, ঘরের কাজ করা, ব্যায়াম, ইয়োগা করার ওপর জোর দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গাইনি ও প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞ হালিমা আক্তার হ্যাপীর পরামর্শ, “এই সময়ে যেহেতু হরমোন নিঃসরণ হয়, তাই ইয়োগা বা ব্যায়াম করার ফলে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি আসে। হরমোন নিঃসরণে যখন বাধা পাবে না তখনই ব্যথাটা হবে না।”
“তেলজাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না। ওজন বেশি থাকলে কমাতে হবে।”
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস বলেন, “মাসিকের ব্যথা বা ডিসমেনোরিয়া বেশিক্ষণ না থাকলে কিছুটা সহ্য করে স্বাভাবিক কাজকর্ম করা, বেশি করে পানি পান করা, পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, হাইজিন মেইনটেইন করার কথা বলি আমরা।”
সতর্ক করে এই চিকিৎসক বলেন, “ওষুধ খাওয়ার অভ্যস্ততা তৈরি হলে তখন রোগী ওষুধ খাবেই। কিন্তু ডিসমেনোরিয়া বড় কোনো রোগ নয়।”
ব্যথানাশক ওষুধ ‘সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ’ জানিয়ে শর্মিষ্ঠা বিশ্বাস বলেন, “আমরা মাসিকের সময় প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেতে বলি।
“তবে যে কোনো ব্যথার জন্য পেইনকিলার নিয়মিত খাওয়াটাকে আমরা নিরুৎসাহিত করি। দীর্ঘদিন পেইনকিলার খাওয়ার ফলে কিডনিসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।”
পিরিয়ডের ব্যথায় ওষুধ সেবন এড়াতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. নূর সাঈদা বলেন, ”প্রাইমারি ডিসমেনোরিয়ায় মাসে দুই-একদিন ব্যাথা হয়। ব্যথাটা সহ্য করার মতো হলে ওষুধ খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
“যদি প্রাইমারি ডিসম্যানোরিয়ার ব্যাথায় মেয়েটা কষ্ট পায়, সেক্ষেত্রে আমরা প্যারাসিটামল বা ন্যাপ্রোসিন জাতীয় ওষুধ দেই।”
পিরিয়ডের ব্যথায় না বুঝে ওষুধ খাওয়ার স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে তিনি বলেন, “যেগুলো ফিজিওলজিক্যাল প্রবলেম, সেক্ষেত্রে ব্যথার ওষুধ খেলে হবে না। চিকিৎসা করতে হবে।
“প্যাথোলজিক্যাল সমস্যা হল এবং সে পেইনকিলার মাসে পাঁচ থেকে ছয়দিন খেয়েই গেল, সেক্ষেত্রে কিডনির সমস্যাও হতে পারে।”
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন