ডিমের যাতায়াত বাঙালি বাড়ির হেঁশেলে নিত্যনৈমিত্তিক। সকালের খাওয়া হোক বা চটজলদি খুদের টিফিনে বানিয়ে দেওয়া, ডিমের উপর আস্থা রাখতে হয় কমবেশি সকলকেই। কম দামে যথেষ্ট পুষ্টি, সঙ্গে স্বাদ, দুইয়ে মিলে ডিমের আদর তুঙ্গে।
তবে ডিম মানেই চেনাপরিচিত সেই পোচ, ওমলেট বা কারি, ঝোল নয়। বরং ডিমকে সহজেই বসিয়ে দিতে পারেন যে কোনও কন্টিনেন্টাল পদে। বেকারি থেকে মেলা নানা জিনিসের সঙ্গেও ডিমের সখ্য নতুন নয়। ডিমের প্রতি ভোজনরসিকের দুর্বলতা ও ডিমের সঙ্গে অন্য খাবারদাবারের সহজ ভালবাসার সম্পর্ককেই এ বার কাজে লাগিয়েছে ‘কিউ ৩৩’।
কোয়েস্ট মল-এর এক তলায় ছড়ানোছেটানো পরিসর জুড়ে গত ১৫ জুলাই থেকেই শুরু হয়েছে ডিমের বিশেষ কিছু পদ নিয়ে নয়া এগ ফেস্টিভ্যাল। চলবে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত। সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত সেখানে ঢুঁ মারলেই পাবেন এগ বেনেডিক্ট, ডিম ও আলু-সহযোগে এক দুর্দান্ত স্যালাড, পাওয়ের সঙ্গে টাকনা দিয়ে খাওয়ার জন্য স্ক্র্যাম্বলড ডিমের বাহার, ডিম ও মাশরুম দিয়ে বানানো চিজ বারকোয়েট, স্কচ এগ, এগ সসেজ মাফিন-সহ লোভনীয় নানা পদ। এগ র্যাপের মতো প্রচলিত পদকেও এরা অন্য রকম ভাবে উপস্থাপন
ডিমের এমন মনের মতো পদ ‘কিউ ৩৩’-র হেঁশেল থেকে যদি হাজির করতে পারেন আপনার বাড়ির রান্নাঘরে? তা হলে মন্দ কী? তাই ১৫ অগস্ট পর্যন্ত চলা এই উৎসবে শামিল হন ও নিজের বাড়িতেও বানিয়ে ফেলুন এমনই মজাদার নানা খাবার। ‘কিউ ৩৩’-র বিশেষ মেনু থেকে এগ বয়েল্ড অ্যান্ড পট্যাটো স্যালাড ও এগ মশালা স্ক্র্যাম্বল্ড উইথ মাসকা পাও রইল আপনার জন্য।
উপকরণ:
ডিম: ৪টি
নুন: স্বাদ অনুসার
গোলমরিচ: স্বাদ অনুসার
ক্যাপসিকাম: ১০ গ্রাম
মেয়োনিজ: ৩০ গ্রাম
সর্ষে বাটা: ১০ গ্রাম
ছোট আলু: ১৬০ গ্রাম
বেলপেপার (লাল): ১০ গ্রাম
প্রণালী:
ছোটো আলু এবং ডিমগুলোকে প্রথমে সেদ্ধ করে ছোট ও চৌকো করে কেটে নেবেন। ক্যাপসিকাম ও বেলপেপার গুলিকে টুকরো করে কেটে নেবেন। এ বার চৌকো করা ছোট আলু আর ডিমকে মেয়োনিজের সঙ্গে মাখিয়ে নিয়ে, সর্ষে বাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, নুন, টুকরো করা ক্যাপসিকাম ও বেলপেপার দিয়ে মিশিয়ে পরিবেশন করুন। শিশুর বিকেলের টিফিন বা রাতের খাবারে রাখতেই পারেন এমন স্যালাড।
উপকরণ:
ডিম: ৩টি
নুন: স্বাদ অনুসার
গোলমরিচ: স্বাদ অনুসার
মাখন: ৫০০ গ্রাম
পেঁয়াজ: ৫০ গ্রাম
টমেটো: ৪০ গ্রাম
ধনেপাতা: ২০ গ্রাম
সবুজ লঙ্কা: ৪০ গ্রাম
মাখন: ২০ মিলি
পাও বান: ৪টি
প্রণালী:
একটি ফ্রাইং প্যানে মাখন দিয়ে তাতে কুচোনো পেঁয়াজ, টমেটো, লঙ্কা, ও ফেটানো ডিমগুলো নাড়াচাড়া করে ভাজা ভাজা করুন। এ বার এতে পরিমাণ মতো নুন দিয়ে মিশিয়ে নিন, ও ধনে পাতা দিয়ে কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করে নিন। মাখা মাখা হয়ে এলে নামান। পাও বানগুলিকে মাখন দিয়ে আভেনে শেঁকে নিন। শুধু এটুকু করলেই রান্না শেষ। এ বার গরম মাসকা বান পরিবেশন করুন মশালা স্ক্র্যাম্বল়ড এগের সঙ্গে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন