আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

আম ক্যালেন্ডার

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে সড়কের পাশের একটি আমবাগান। জিয়া ইসলামের তোলা ফাইল ছবি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে সড়কের পাশের একটি আমবাগান। জিয়া ইসলামের তোলা ফাইল ছবি

কাঁঠাল জাতীয় ফল হলেও জনপ্রিয়তায় আম সবার ওপরে। উৎপাদন ও বাণিজ্যের বিচারে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফল এটি। আমের মৌসুম পাঁচ মাস। এর মধ্যে জুন ও জুলাই মাস আমের বাজার থাকে রমরমা। ১৫ মে থেকে উন্নত জাতের আমের মৌসুম শুরু হয়। চলে সেই প্রায় আগস্ট মাস পর্যন্ত। পুরোটা সময় বাজারে বাহারি আমের দেখা মেলে। দেশের অন্যান্য ফলের সঙ্গে আমের তুলনা হয় না। এর প্রধান কারণ, আম এমন একটি ফল, যা অতিমাত্রায় শৃঙ্খলা মেনে চলে। প্রতিটি জাতের আম প্রায় নিজ নিজ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পরিপক্ব হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে উৎপাদিত উন্নত জাতের আমের মধ্যে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাজারে আসে প্রায় ২৫ জাতের আম। এর মধ্যে অতি উন্নত জাতের আম রয়েছে মাত্র ১০টি। তবে অন্তত ১৫ থেকে ২০ জাতের বাণিজ্যসফল আম দেশের বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যায়। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বাণিজ্যসফল আমের জাত রয়েছে মাত্র ১০টি। মুশকিলের বিষয় হলো বাংলাদেশের মানুষ আমভক্ত ও ভোক্তা হিসেবে বিশ্বে প্রায় শীর্ষ স্থানে থাকলেও সঠিক জাতের আম এখনো বেশির ভাগ ক্রেতা চিনতে ভুল করেন।

বেশির ভাগ মানুষ ভালোভাবে চিনতে পারেন মাত্র দুই থেকে তিন জাতের আম। এগুলো হলো ফজলি, ল্যাংড়া ও আশ্বিনা। এর মধ্যে অনেকেই ফজলি ও আশ্বিনাকে নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করতে হিমশিম খাচ্ছেন। আম–সংস্কৃতির এই হচ্ছে বাংলাদেশের হাল অবস্থা। সত্যের যুগ তো নেই, এখন চলছে ছলচাতুরী ও প্রতারণার যুগ। তাই ফলের বাজারে রাসায়নিকের প্রভাবে চলছে একধরনের নীরব মৃত্যুর হিমেল হাতছানি। এর বড় কারণ, সাধারণ মানুষ নানা রঙের দারুণ স্বাদ ও গন্ধের আম পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কেনার নেশায় ভুল করে বসেন। তাঁরা জানেন না প্রাকৃতিকভাবে কোন আম কখন পাকে এবং পরিপক্ব আম খাওয়ার সঠিক সময় কোনটি।

আমাদের দেশে উৎপাদিত ফলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পচনশীল হচ্ছে আম। এরপরই রয়েছে কলা। স্বাভাবিক কারণে ব্যবসায়ীরা এই দুটি ফল বেশি দিন ধরে রাখায় মনোযোগী না হয়ে বরং আগাম পাকানোর দিকেই বেশি আগ্রহী। শীতের দেশের ফল অনেক দিন পর্যন্ত নিজস্ব গুণাগুণ নিয়ে অটুট থাকে। রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করলে আপেল, আঙুরের মতো ফল রাখা যায় দীর্ঘদিন।

প্রাকৃতিকভাবে পরিপক্ব আমে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মিশিয়ে আপেল কিংবা আঙুরের মতো বেশি দিন রাখা মোটেই সম্ভব নয়। তবে এ কথা ঠিক যে আমে বিভিন্ন রাসায়নিক মেশানো হচ্ছে। রাসায়নিক মেশালেও পরিপক্ব আমের স্থায়িত্ব পাঁচ থেকে ছয় দিন মাত্র। এরপরই পচনক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।

ফজলি আম।
ফজলি আম।

কাজেই বাস্তবতা হচ্ছে, অসাধু আম ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে অপরিপক্ব আম নামিয়ে কারবাইড বা ওই জাতীয় রাসায়নিক প্রয়োগের দিকে বেশি মনোযোগী হয়েছেন অধিক মুনাফার আশায়। এতে আম পেকে সুন্দর রং ধারণ করছে। বিক্রির উদ্দেশ্যে এই আম অন্তত ৮ থেকে ১০ দিন সংরক্ষণ করা যাচ্ছে। আমের ক্ষেত্রে অসাধু ব্যবসায়ীরা এই দ্বিতীয় পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। মৌসুমের প্রথমেই আম ব্যবসায়ীরা অতিমাত্রায় উৎসাহী আম–ভোক্তার হাতে কৌশলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে পাকা আমের নামে অপুষ্ট আম তুলে দিচ্ছেন। এই আম খেতে মোটেও সুস্বাদু নয়। অপরিপক্বতার কারণে সে আম রসাল হয় না, সুগন্ধের ক্ষেত্রেও পূর্ণতা পায় না। প্রতারণার এই দ্বিতীয় ফাঁদ থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ রয়ে গেছে শতভাগ, যদি গ্রাহক একটু সচেতন হন। এ ক্ষেত্রে প্রথম কাজটি হবে সঠিক আমটির সঙ্গে পরিচিত হওয়া। এই কাজ খুব সহজ।

প্রাকৃতিকভাবে পাকা, ভেজালমুক্ত আম খাওয়ার জন্য মাত্র ৮ থেকে ১০ জাতের আম সঠিকভাবে চিনতে হবে, যেগুলো আমরা বেশি বেশি করে কিনি এবং খেয়ে থাকি। এই জাতের আমগুলো হচ্ছে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাতি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা, আম্রপালি, লক্ষ্মণভোগ, রানিপছন্দ, হাঁড়িভাঙা, বারি-৪, বোম্বাই ইত্যাদি। ভেজালমুক্ত থাকার জন্য এই আমগুলো মৌসুমের কোন মাসে, ঠিক কোন সময়ের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে পাকে, তা জানাতে হবে। এই তথ্যগুলো জানলে ক্রেতারা সঠিক সময়ে ভেজালহীন আম কিনতে পারবেন। সব জাতের আম একই সময়ে পরিপক্ব হয় না। কিছু কিছু জাতের ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ দিন সময় কমবেশি হয়ে থাকে। যেমন বান্দরবান এলাকায় উৎপাদিত আম্রপালি আম দেশের অন্যান্য অঞ্চলে উৎপাদিত আম্রপালি আমের চেয়ে অন্তত ১৫ দিন আগে পরিপক্ব হয়ে বাজারে আসে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় উৎপাদিত বারি-৪ রাজশাহী অঞ্চলে উৎপাদিত বারি-৪ আমের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন আগে পুষ্ট হয়। আপাতত অন্য কোনো জাতের আমের ক্ষেত্রে আগাম প্রাকৃতিকভাবে পাকার ঘটনা নজরে আসেনি। অতএব এ কথা প্রায় নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, আমরা যে আমগুলো হরহামেশা বাজার থেকে কিনি, সেগুলো শৃঙ্খলা মেনে বছরের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই পেকে থাকে। এখন ভোক্তাকে শুধু জেনে নিতে হবে তার পছন্দের আমটি মৌসুমের ঠিক কোন সময়ে পাকছে। প্রয়োজনীয় এই তথ্যগুলো জানার পর আম কিনতে মনস্থির করুন।

অনেক কথা হলো। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশের বাণিজ্যসফল প্রধান আমগুলো কেনার সঠিক সময়। সচেতন ভোক্তারা সঠিক সময়ে তাঁদের পছন্দের আমটি কিনতে পারলে রাসায়নিক মেশানো আমের প্রভাব থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের মুক্ত রাখতে সক্ষম হবেন।

আমের নামকেনার সঠিক সময় যে জেলায় জন্মে
গোবিন্দভোগ ১৫ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সাতক্ষীরা
গোপালভোগ ২৫ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা
রানিপছন্দ ১ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী 
ক্ষীরসাপাতি ৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্তচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা
নাক ফজলি৮ থেকে ২৫ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ 
বোগলাগুটি ১২ জুন থেকে ৭ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর 
বারি আম-২ (লক্ষ্মণভোগ) ১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর 
বোম্বাই১২ জুন থেকে ৫ জুলাই মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ল্যাংড়া ১৫ জুন থেকে ১৫ জুলাই চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ ও সাতক্ষীরা 
তোতাপুরি ১৫ জুন থেকে ১০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর
হাঁড়িভাঙা২০ জুন থেকে ৫ আগস্টরংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলা 
আম্রপালি২৮ জুন থেকে ২৫ জুলাইসমগ্র বাংলাদেশ
সূর্যপুরী ১ জুলাই থেকে ২০ জুলাইবালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও
সুরমা ফজলি৩০ জুন থেকে ৩০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর
ফজলি৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, দিনাজপুর ও সাতক্ষীরা
বারি-৪ ৭ জুলাই থেকে ২০ জুলাই : 
(রাজশাহী অঞ্চলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহ)
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী
মল্লিকা ৭জুলাই থেকে ৫ আগস্টরাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
মোহনভোগ৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাইচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর
আশ্বিনা২০ জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ
গৌরমতি২০ আগস্ট থেকে ১০ সেপ্টেম্বরচাঁপাইনবাবগঞ্জ
চৌষা১০ জুলাই থেকে ১০ আগস্টচাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী
আম ক্যালেন্ডার

  • ফজলি আম।

    ফজলি আম।

  • চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে সড়কের পাশের একটি আমবাগান। জিয়া ইসলামের তোলা ফাইল ছবি

    চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে সড়কের পাশের একটি আমবাগান। জিয়া ইসলামের তোলা ফাইল ছবি

  • ফজলি আম।
  • চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে সড়কের পাশের একটি আমবাগান। জিয়া ইসলামের তোলা ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com