চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানি শুল্ক কমিয়েছে সরকার। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভারত থেকে চাল আমদানির এমন খবরে কেজিতে ২-৪ টাকা করে দাম কমেছে। সরেজমিন হিলি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানেই চালের ভালো সরবরাহ রয়েছে। তবে ভারত থেকে চাল আমদানির খবরে বাজারে চালের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। সব ধরনের চালের দাম কেজিপ্রতি ২-৪ টাকা করে কমেছে। আটাশ জাতের চালের দাম কমে ৪৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৪৮-৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া মিনিকেট জাতের চালের দাম কমে ৫০-৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আগে ৫৬-৫৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল এ জাতের চাল। হিলি বাজারের চাল বিক্রেতা স্বপন কুমার ও অনুপ বসাক বলেন, দেশে বোরো মৌসুমের ধানের দাম বেশি হওয়ায় চালের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়। ফলে অটোমিল মালিকরা অতিরিক্ত দামে বাজারে চাল সরবরাহ করেন। প্রায় প্রতিদিনই মোকামে বাড়তে থাকে চালের দাম। তবে সম্প্রতি সরকার দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যেই ভারত থেকে হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হবে, এমন খবরে অটোমিল মালিকরা তাদের মজুদকৃত চাল বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন। এতে করে কেজিপ্রতি চালের দাম কমেছে। তবে বাজারে চালের ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রফতানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত আমন মৌসুমে দেশে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বেসরকারি পর্যায়েও চাল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। এতে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। পরে আবারো চালের আমদানি শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় ৩০ এপ্রিল থেকে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি বন্ধ রয়েছে। তবে দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে ও দাম জনসাধারণের নাগালের মধ্যে রাখতে সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে এরই মধ্যেই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। একই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির জন্য দেশের আমদানিকারকদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ২৫ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। হিলি স্থলবন্দরের বেশ কয়েকজন আমদানিকারক আবেদন করেছেন। যেহেতু ভারতে চালের দাম কম, তাই চাল আমদানি শুরু হলে দেশে চালের বাজার স্থিতিশীল হবে।
সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আদা আমদানি অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেড়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাসে মসলাজাতীয় পণ্যটির আমদানি বিদায়ী অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে অন্তত পাঁচ গুণ। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন, দেশীয় বাজারে আদার চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। কিন্তু সে তুলনায় সরবরাহ ছিল কম। এ কারণে সম্প্রতি আদার দাম বেড়ে যায়। বাজারে লাগাম টেনে ধরতে আদার আমদানি বাড়ানো হয়েছে। ভোমরা শুল্কস্টেশনের জ্যেষ্ঠ রাজস্ব কর্মকর্তা আকবার আলী জানান, গত জুলাইয়ে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৫ হাজার ৪১৫ টন আদা আমদানি হয়। আমদানীকৃত এসব আদার মূল্য ৪৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। তিনি আরো জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাইয়ে ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ১ হাজার ৪৩২ দশমিক ২৯ টন আদা আমদানি হয়েছিল। এসব আদার মূল্য ১১ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গত অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে মসলাজাতীয় পণ্যটির আমদানি বেড়েছে প্রায় পাঁচ গুণ। ভোমরা স্থলবন্দরের অন্যতম মসলাজাতীয় পণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান জানান, তার প্রতিষ্ঠান জুলাইয়ে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি আদা আমদানি করেছে। বর্তমানেও আমদানিতে ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত আছে। সপ্তাহে ১৮০ থেকে ২০০ টন পর্যন্ত আদা আমদানি করা হচ্ছে, যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় কমপক্ষে চার গুণ বেশি। আমদানীকৃত এসব আদা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। সাতক্ষীরা জেলা সদরের সুলতানপুর বড় বাজারের মসলা বিপণি আড়ত মামা-ভাগ্না ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী জহুরুল ইসলাম জানান, দুই মাসের ব্যবধানে আদা চাহিদার পাশাপাশি দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দুই মাস আগেও তার আড়তে আদা পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে। তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা কেজি দরে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশীয় বাজারে আদার চাহিদা বেড়েছে ব্যাপক হারে। মূলত এ কারণেই মসলাজাতীয় পণ্যটির দাম বেড়েছে। ভোমরা স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম জানান, সম্প্রতি ঈদুল আজহার কারণে আদার চাহিদা বেড়ে যায়। অন্যদিকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে আদার ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে পণ্যটির উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। তিনি বলেন, একদিকে দেশীয় বাজারে আদার ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা, অন্যদিকে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় সরবরাহ সংকট, দুইয়ে মিলে বাজারে আদার দাম বেড়ে যায়। স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ও বাজার স্থিতিশীল রাখতে পণ্যটির আমদানি বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তিনি। ভোমরা শুল্কস্টেশনের দায়িত্বে থাকা কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, সম্প্রতি ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে আদা আমদানি বেড়েছে। এতে দেশীয় বাজারের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছে সরকারও। বন্দর দিয়ে মসলাজাতীয় পণ্য আমদানিতে সরকারের বড় মাপের রাজস্ব আয় আসে। এর মধ্যে শুধু আদা আমদানিতেই গড়ে ১০ শতাংশ রাজস্ব আসে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি কেজি দেশি কাঁচা মরিচের খুচরা দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর পাইকারিতে দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি।...
বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে আমদানি বেড়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। আর পণ্য আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বেড়েছে সাড়ে ১৯ শতাংশ। সব মিলিয়ে গত অর্থবছরে দেশে...
দেশে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে বেসরকারিভাবে প্রথম দফায় চার লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন সেদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য ৭১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে সরকার। খাদ্য...
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে বেসরকারি আমদানিকে উৎসাহিত করতে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। কমানো শুল্কহারে চাল আমদানির জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে...
চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে শুল্ক কমিয়েছে সরকার। কমানো শুল্ক হারে চাল আমদানির জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে পারবে। বেসরকারিভাবে চাল...
দীর্ঘ আট মাস বন্ধের পর দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি করা হলেও দেশে ঢুকেই বেড়ে যাচ্ছে কাঁচা মরিচের...
চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেসরকারিভাবে চাল আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক কমানো হয়েছে। আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সব ধরনের সেদ্ধ ও আতপ চাল ১০ শতাংশ শুল্কে আমদানি...
এবার ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে কাঁচামরিচ। দেশের বাজারে কাঁচামরিচের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সোমবার (৯ আগস্ট) সরকারের...
সর্বশেষ মন্তব্য