রেঁস্তরায় খাওয়াদাওয়ার পর্ব যেমন প্রায় সারা বছরই বাঙালির অন্যতম প্রিয় শখ, তেমনই বাড়িতেও পাল্লা দিয়ে চলে রকমারি রান্নাবান্না । রেঁস্তরার মতো পদ তৈরি হয় বাড়ির হেঁশেলেও। বাড়িতে বানানো যায় এমন স্ন্যাক্স বা স্টাটার হিসাবে পনির টিক্কা খুবই জনপ্রিয় এক পদ। রকমারি মশলার সমন্বয়ে তৈরি এই পদ খেতে যেমন সুস্বাদু , বানিয়ে ফেলাও খুব সহজ।
ঘরে কিছু উপকরণ মজুত থাকলেই আপনিও বানিয়ে ফেলতে পারেন এই পদ। অনেকেরই ধারণা, মাইক্রোওয়েভ আভেন ছাড়া টিক্কা বা তন্দুরি পদ বোধ হয় বানানো যায় না। কিন্তু বাড়িতে নন স্টিক প্যান বা লোহার চাটু থাকলেও তৈরি করা যায় এমন পনির টিক্কা।
মাইক্রাওয়েভ আভেন ছাড়া টিক্কার এমন জনপ্রিয় পদ কী ভাবে বানাবেন, রইল তারই হদিশ। এই রেসিপির জেরেই নিরামিষ ভালবাসা অতিথির পাতে তুলে দিতে পারেন এমন স্বাদু খাবার।
পনির টিক্কা
উপকরণ
পনির : ৩০০ গ্রাম
ক্যাপসিকাম : একটি
টম্যাটো : একটি
পেঁয়াজ : একটি
ম্যারিনেশনের উপকরণ
টক দই : ২৫০ গ্রাম (জল ঝরানো)
বেসন : ৪ চা চামচ
হলুদ : হাফ চা চামচ
গোল মরিচ গুঁড়ো : হাফ চা চামচ
জোয়ান : হাফ চা চামচ
সাজিরা : হাফ চা চামচ
কস্তুরী মেথি : ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়ো : ১ চা চামচ
জিরে গুঁড়ো : ১ চা চামচ
চাট মশলা : ১ চা চামচ
তন্দুরী মশলা গুঁড়ো : ১ চা চামচ
আনচুর পাউডার : ১ চা চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো : ২ চা চামচ
পাতি লেবুর রস : ১/২ চা চামচ
সাদা তেল : ৩-৪ টেবিল চামচ
নুন : স্বাদ মতো
প্রণালী
প্রথমে পনিরকে চৌকো আকারে টুকরো টুকরো করে কেটে নিন। এ বার পেঁয়াজ চৌকো করে কেটে তার লেয়ার গুলো আলাদা করুন। ক্যাপসিকাম ও টম্যাটো একই ভাবে পনিরের আকারে কেটে নিন। চাইলে মাশরুম বা বেবি কর্নও দিতে পারেন।
এ বার একটি পাত্রে জল ঝরানো টক দই নিয়ে তা ভাল ভাবে ফেটিয়ে নিন। এর পর একে একে সমস্ত মশলা, বেসন এবং স্বাদ মতো নুন-দইয়ে দিয়ে মিশিয়ে নিন। কেটে রাখা পনির এবং সব্জি-দইয়ের মিশ্রণে দিন। হাতের সাহায্যে মিশ্রণটি ভাল করে পনির ও সব্জির গায়ে মাখিয়ে নিন। এ বার মশলা মাখানো পনির ও সব্জির পাত্র ঢাকা দিয়ে কমপক্ষে ৪৫ মিনিটের জন্য ফ্রিজে রাখুন। রাখতে পারেন সারা রাতও।
ম্যারিনেট করা পনির এবং সব্জি ফ্রিজ থেকে বার করে পনির, ক্যাপসিকাম ও টম্যাটো একে একে স্কিউয়ারে গেঁথে নিন। গ্যাসে ননস্টিক প্যান বা লোহার চাটু বসান। তাতে এক টেবিল চামচ তেল দিয়ে গরম হতে দিন। তাওয়া গরম হয়ে গেলে স্কিউয়ারগুলো এর উপর রাখুন। প্রতি বার তিনটের বেশি স্কিউয়ার তাওয়ায় দেবেন না। এতে রান্না করতে সুবিধা হবে। একটা দিক বাদামি হয়ে গেলে স্কিউয়ারগুলো ঘুরিয়ে নিন। পনির ও সব্জি পুরোপুরি বাদামি হয়ে গেলে তা নামিয়ে ফেলুন। এ বার পছন্দ মতো পাত্রে পনির টিক্কা সাজিয়ে তাতে লেবুর রস ও চাট মশলা ছড়িয়ে দিন। আচার অথবা ভিনিগারে ভেজানো পেঁয়াজ সহযোগে পরিবেশন করুন পনির টিক্কা।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন