অনেকেই না বুঝে সকালের খাবারে তেমন গুরুত্ব দেন না। কোনোরকম একটা কিছু মুখে দিয়েই ছোটেন নিজ নিজ কাজে। অনেকে আবার মনে করেন, সকালে বেশি খেলে বুঝি ওজন বেড়ে যাবে হু হু করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা ইচ্ছে করেই কম খেয়ে থাকেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, সকালের খাবার এড়িয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সারারাত খালি থাকার পরে সকালে আপনার পেট তৈরি থাকে খাবারের জন্য। এসময় যা-ই খাবেন, হজম হবে দ্রুত। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই প্রক্রিয়ার শক্তি কমতে থাকে। তাই সকালের খাবারটিই হওয়া চাই সবচেয়ে ভারী।
আপনি যদি সকালের খাবারের দিকে মনোযোগ না দেন তবে তা আপনার ত্বকের জন্যও ক্ষতির কারণ হতে পারে। সকালের খাবার খাওয়া নিয়ে আপনার ভুলভাল ধারণা শরীরের মেটাবলিজম, ত্বক, হজম প্রক্রিয়া সবকিছুকেই ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সকালের খাবারে কী খেলে তা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী হবে জানেন কি? অনেকেরই এমন একটি ধারণা আছে যে, স্বাস্থ্যকর খাবার সুস্বাদু হয় না। কিন্তু এটি সত্যি নয়। একটু কৌশল জানলেই যেকোনো খাবারকে সুস্বাদু করা সম্ভব স্বাস্থ্যকর উপায়েই। সেজন্য খাবারের প্লেটে আনতে হবে বৈচিত্র। দিনের পর দিন একই ধরনের খাবার খেলে তা একঘেয়ে লাগবেই। তাতে যত সুস্বাদু খাবারই হোক।
ডিম সকালের খাবার সহজ একটি পদ হলো ডিম। আর এই ডিম ত্বকের কোলাজেন উৎপাদনে বিশেষ সহায়ক, এর ফলে ত্বক কোমল ও টানটান থাকে। প্রোটিনের সবচাইতে সহজ উৎস হলো ডিম। এছাড়াও এতে আছে প্রচুর ভিটামিন এবং মিনারেলস। সকালের খাবারে বিভিন্নভাবে ডিম রাখতে পারেন। যেমন বয়েল্ড এগ, সুগার ফ্রী এগ পুডিং, এগ স্যান্ডউইচ, সুইটলেস কাপ কেক, ডিম পোঁচ এমন আরও অনেককিছু! তবে চিকিৎসকের নিষেধ থাকলে কুসুম বাদ দিয়ে খাবেন।
সবজি খিচুড়ি খিচুড়ির নাম শুনলে জিভে তো পানি আসবেই। আর এটি ভীষণ পুষ্টিকর খাবারও। চাল, ডাল, মশলা, সবজি মিলে সুস্বাদু এক খাবার তৈরি হয়। পালং শাক, মিষ্টি কুমড়া, গাজর, কাঁচা পেঁপে, মিষ্টি আলু এগুলো অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খুব ভালো উৎস। ত্বক ভালো রাখতে এই সবজিগুলো দিয়ে খিচুড়ি রাঁধুন।
ফলের সালাদ সব ধরনের ফলই পুষ্টিকর। আপনার পছন্দের যেকোনো ফলই বেছে নিতে পারেন সকালের খাবারে। তবে খালি পেটে টক জাতীয় ফল যেমন- লেবু, মাল্টা খালি পেটে খেলে অ্যাসিডিটি হতে পারে। গ্রিন আপেল, কালো আঙ্গুর, পাকা পেঁপে, কিউয়ি, বেরিজাতীয় ফল, কলা, বেদানা এগুলো খেতে পারেন। পাকা পেঁপে হজমশক্তি ভালো রাখার পাশাপাশি ত্বকও উজ্জ্বল করে। আপেল, বেদানা, স্ট্রবেরি, ব্ল্যাকবেরিতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট যা ত্বককে ফ্রি র্যাডিকেলসের হাত থেকে বাঁচায়। অল্প মধু, টকদই আর ফল মিলিয়ে সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন।
পাস্তা পাস্তাও হতে পারে সকালের নাস্তায় স্বাস্থ্যকর একটি খাবার। হোল গ্রেইন পাস্তায় ক্যালরি মোটামুটি পরিমাণ থাকে, সাথে নিউট্রিয়েন্ট ও ফাইবার পর্যাপ্ত থাকে। এতে ডিম, সবজি, প্রন অথবা চিকেন মিলিয়ে তৈরি করতে পারেন। ব্রকলি, টমেটো এগুলো ত্বকের জন্য খুবই ভালো। পাস্তায় এই ধরণের ভেজিটেবল মিলিয়ে নিন। পেটও ভরবে, সাথে ত্বকের জন্য উপকারীও হবে।
আটার রুটি সকালের নাস্তায় যে সাধারণ আটার রুটি খান, তাও কিন্তু আপনার ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে। অনেকেই সকালের নাস্তায় এটি খেয়ে থাকেন। আপনিও শুরু করতে পারেন সকালের নাস্তায় আটার রুটি খাওয়া। গবেষণায় দেখা গেছে, হোল গ্রেইন আটা খেলে ত্বক ভালো হয় এবং ফাইবারের কারণে পরিপাকক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে। রুটির সাথে পছন্দের সবজি খেতে পারেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন