আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

লক্ষ্মণভোগ যেন এবার লক্ষ্মীছাড়া

আম ভাঙার কাজে এসে বাগানে খেতে বসেছেন চার শ্রমিক। খেতে খেতে গল্প করছেন। আম নিয়েই সে গল্প। শ্রমিক শাহাবুল বলছেন, ‘আজ ভাঙছি গরিবের আম। আবার কাল ভাঙতে হবে বড় লোকের আম।’ মাসুম বললেন, ‘যে আমই ভাঙি মজুরি সাড়ে তিন শ টাকার কম হলে হবে না।’ তাঁর কথায় সায় দিয়ে শাহাবুদ্দিন ও রাশেদ মাথা নাড়লেন। শুনতে শুনতে তাঁদের গল্পের সঙ্গে যুক্ত হই।

জানতে চাই, আমের কি ধনি-গরিব আছে ভাই? এ কথা শুনে চারজন শ্রমিকই হেসে উঠলেন, কিন্তু পাশে দাঁড়ানো বাগানের মালিক আবদুর রশিদ হাসলেন না। তিনি খানিকটা আনমনা হয়ে গেলেন। তাঁর পাশে গিয়ে দাঁড়াই। সুধাই, ওরা কী বলছে ভাই। বাগানমালিক বলছেন, ওরা ঠিকই বলছে, আজ গরিবের আম ভাঙছি। যাঁরা গরিব বা নিম্ন আয়ের মানুষ, তাঁরা বেশির ভাগই কম দামের লক্ষ্মণভোগ আম কেনেন। যাঁদের হাতে পয়সা আছে, তাঁরা বেশি দামের আম গোপালভোগ, হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রপলি—এসব আম কেনেন। এই আম মিষ্টি বেশি, আঁশ কম। খেতে সুস্বাদু। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এসব আমের দাম চড়া। আর লক্ষ্মণভোগ আমের চাষ বেশি হলেও দাম ক্রমশ কমছে। কারণ, এবার এই আমের ক্রেতাদের হাতে পয়সা নেই।

বাগানমালিক রশিদ বললেন, খুলনার আড়তে পাঠাতে সাত দিন আগে আম ভাঙতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আড়তদার ফোন করে মানা করেছিলেন। এখন মৌসুম শেষের দিকে। যে দামেই হোক আম তো বিক্রি করতে হবে। লক্ষ্মণভোগ জাতের তাঁর প্রায় চার শ মণ আম অবিক্রীত রয়ে গেছে।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা মিয়াপাড়া গ্রামের একটি বাগানে গত মঙ্গলবার (১৬ জুন) তাঁদের সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের কথাবার্তায় একটি নতুন হিসাব মাথায় আসে। রাজশাহীর গোটা জেলায় যে পরিমাণ আম চাষ হয়, তার অর্ধেক হয় বাঘা উপজেলায়। বাঘার কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বললেন, উপজেলার প্রায় ৭০ শতাংশ আমবাগান লক্ষ্মণভোগের।

আবদুর রশিদ আরও তথ্য দিলেন, নতুন জাতের আম আসার কারণে চাষিরা এখন লক্ষ্মণভোগ আমের বাগান বদলে ফেলছেন। এই বাগানের গাছের ফাঁকে ফাঁকে আম্রপলি জাতের গাছ লাগিয়ে দিচ্ছেন। দিঘা গ্রামের আবদুল মান্নান তাঁর তিন বিঘা জমির লক্ষ্মণভোগ আমের বাগানের ফাঁকে ফাঁকে নতুন করে আম্রপলি ও হিমসাগর আমের গাছ লাগিয়ে দিয়েছেন। দিঘা বাজারের মেঘলা কফি হাউসে গিয়ে পাওয়া যায় আবদুল মান্নানকে। তিনি বললেন, গরিবের বাগানের মালিক হয়ে শুধু শুধু গরিব হয়ে থাকার কোনো মানে হয় না। তাঁর তিন বিঘা বাগান যদি হিমসাগরের হতো, তাহলে এখন চার গুণ বেশি দামে আম বিক্রি করতে পারতেন। তাই বাগানের গাছ বদলে দিচ্ছেন। তাঁর মতো অনেকেই এখন গাছ বদলে ফেলছেন।

এদিকে রাজশাহীতে আমের হাটের চিরাচরিত ম–ম গন্ধ ও আমের রঙের বাহার এবার একটু কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আম পরিপুষ্ট হওয়ার জন্য লম্বা একটা শুষ্ক ও গরম আবহাওয়ার দরকার হয়। এবার আমের মৌসুমে বাড়তি বৃষ্টির কারণে কাঙ্ক্ষিত সেই হাওয়া মেলেনি। এই প্রভাব সব আমের ওপরই পড়েছে। তারপরও ঝড়ে আম পড়ে যাওয়ায় আমের সরবরাহ কম। এ জন্য অন্য আমের চাহিদা বেশি, দামও বেশি। লক্ষ্মণভোগের কপাল খোলেনি।

প্রচুর ফলন হওয়ায় একসময় লক্ষ্মণভোগ আমের বাগান করার হিড়িক পড়ে যায়। এই আম খেতে একটু কম মিষ্টি হয় কিন্তু রং খুব উজ্জ্বল, দেখতে খুব সুন্দর। এবার এই আমের রংও অতটা ভালো হয়নি। মিষ্টিও কম। একটু টকও লাগছে। এমনটিই বললেন বাঘা উপজেলার দিঘা বাজারের মেসার্স আকরাম ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আকরাম হোসেন। তাঁর আড়তে লক্ষ্মণভোগ আম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে কেনা হচ্ছে।

দিঘা গ্রামে আমচাষি আবদুল বারি তাঁর নিজ বাগানের লক্ষ্মণভোগ আম ভাঙছিলেন। কী দামে বিক্রি করলেন, জানতে চাইলে বলেন, ৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করলেন। মোট ২২ মণ ২৯ কেজি লক্ষ্মণভোগ আম হলো। সবই ওই দামে দিতে হলো। তাঁর আক্ষেপ, এর মধ্যে আবার কর্মচারীদের খরচ বাদ দিতে হচ্ছে। যে কর্মচারী আম ভেঙে নিজের ভ্যানে করে আড়তে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁকে ৫০০ টাকা দিতে হচ্ছে। যে কর্মচারী শুধু আম ভাঙছেন তাঁকে তিন–সাড়ে তিন শ টাকা দিতে হচ্ছে। তাঁর বাগানের আম ভ্যানে করে টানছিলেন কর্মচারী সেলিম। তিনি বললেন, আমের দাম যা-ই হোক। তাঁর পারিশ্রমিক ৫০০ টাকা।

লক্ষ্মণভোগের ক্রেতা কম কেন

লক্ষ্মণভোগ আমের এ অবস্থা কেন, জানতে চাইলে রাজশাহীর বড় আমচাষি ও ব্যবসায়ী আসাফুদ্দৌলা বললেন, সাধারণত তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরাই লক্ষ্মণভোগের প্রধান ক্রেতা। এবার তাঁদের হাতে পয়সা না থাকায় এ আম বেচাকেনা কমে গেছে। আর যাঁরা সমাজের বিত্তবান তাঁরা হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া কিনছেন। সেই আমের দাম আবার গত বছরের চেয়ে বেশি।

১৬ জুন দুপুরে উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের বাগানে গিয়ে দেখা যায়, কর্মচারীরা আমে ব্যাগ পরানোর কাজ করছেন। আনোয়ার হোসেন বলেন, বৃষ্টির কারণে আমের গায়ে একটা কালচে দাগ পড়েছে। ‘মেডিসিন স্প্রে’ করলে এই দাগটা উঠে গিয়ে আম উজ্জ্বল হবে। কিন্তু তিনি মেডিসিন না দিয়ে ‘ব্যাগিং’ করছেন। গাছের প্রত্যেকটি আমকে একটি বিশেষ কাগজের মোড়ক দিয়ে মুড়ে দেয়াকে ব্যাগিং বলা হয়। ব্যাগের ভেতরে আম থাকলে আমের রং উজ্জ্বল হবে। কোনো দাগ থাকবে না। দামও ভালো পাওয়া যাবে। তিনি এখন তাঁর ফজলি ও আশ্বিনা আমের গায়ে ব্যাগ পরাচ্ছেন। তবে হিমসাগর এখন যাঁদের গাছে রয়েছে সেগুলোর গুণগত মান ঠিক আছে। দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি মণ ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম উঠেছে আড়াই হাজার টাকা। এই আম ঢাকার অভিজাত বিপণিবিতানে চড়া দামে বিক্রি হবে। এটা বড়লোকের আম। নিম্ন আয়ের মানুষ এই আম কিনতে পারবেন না। তিনিও লক্ষ্মণভোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। স্থানীয় বাজারে এই আম তিনি ৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে জানান।

বাগানে কাজ করছেন ছাত্ররা

আনোয়ার হোসেনের বাগানে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের বেশির ভাগই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে হাত খরচের পয়সা জোগাড় করতে নেমে পড়েছেন তাঁরা। অবশ্য শিক্ষার্থীদের অনেকে প্রতি মৌসুমেই এ কাজে যুক্ত হন। শিক্ষার্থীদের একজন মুন্না আজিজ। তাঁর বাড়িও এই আড়পাড়া গ্রামেই। তিনি ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে সম্মান শ্রেণিতে পড়ছেন। তিনি বলেন, প্রতিবছরই তিনি আমের মৌসুমে বাগানে কাজ করে আয় করেন। আমের কালচে রং দূর করতে অন্য বাগানে ওষুধ দেওয়ারও কাজ করেছেন তিনি। এখন আনোয়ার হোসেনের বাগানে ব্যাগিংয়ের কাজ করছেন। এই মৌসুমে আমবাগানে কাজ করে তিনি প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করেছেন। তাঁরা আটজন ছাত্র একসঙ্গে বিভিন্ন বাগানে কাজ করেন।

বাঘা উপজেলার মনিগ্রাম বিএম কলেজের শিক্ষার্থী সানারুল ইসলাম ও মাস্টার্সের ছাত্র সাইদুর ইসলামকে পাওয়া যায় সেখানে। তাঁরাও প্রতি আমের মৌসুমে এভাবে কাজ করে আয় করেন। তাঁরা বললেন, প্রতিদিন তাঁদের খাওয়া বাবদ ১০০ টাকা এবং পারিশ্রমিক হিসেবে ৩৫০ টাকা দেওয়া হয়।

এবার আম যাচ্ছে না বিদেশে

কয়েক বছর ধরে বাঘা থেকে সরাসরি ইউরোপের বাজারে আম পাঠায় ‘সাদী এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গত বছর তারা ৩৬ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করেছিল। আর ঢাকার অভিজাত বিপণাবিতানগুলোকে ১৮ মেট্রিক টন আম দিয়েছিল। গত বছর তারা নিজের বাগানের ও কেনা মিলিয়ে প্রায় ২ হাজার টন আম বিক্রি করেছে। সাদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম ওরফে ছানা জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার প্রস্তুতি নেওয়ার পরও বিদেশে আম গেল না। এতে তাঁরা ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

আম পাঠিয়ে বিব্রত

ওই দিনই দেখা হয় দিঘার কলেজশিক্ষক গোলাম তোফাজ্জলের সঙ্গে। তিনি প্রতিবছর ঢাকায় তাঁর মামার বাসায় ১৫ থেকে ২০ মণ আম পাঠান। মামা সেই আম তাঁর বন্ধুবান্ধবদের দিয়ে থাকেন। কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয়নি। এমন বাগান থেকে সরাসারি তিনি আম পাঠিয়ে থাকেন। এবার তিনি প্রথমে এক মণ গোপালভোগ আম পাঠানোর পর তাঁর মামা জানিয়েছেন, আম ভালো না। মিষ্টি কম, টক। আমের গায়েও দাগ। এবার আর আম পাঠানোর দরকার নেই। এই কলেজশিক্ষক বলেন, তিনি নিজে বাগানে দাঁড়িয়ে থেকে আম ভেঙে দিয়েছেন। শুধু আবহাওয়ার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় আরও দুই আত্মীয়ের কাছে তিনি এক মণ আম পাঠিয়েছেন। তাঁরাও বলছেন, আম ভালো না।

ভ্রাম্যমাণ আম বিক্রেতারা যা বলেন

রাজশাহী শহরের ভ্যানে করে গুটি জাতের কাঁচা–পাকা ল্যাংড়া আম বিক্রি করেন জিয়ারুল ইসলাম। নগরের ঘোড়ামারা এলাকায় বুধবার সকালে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়। তাঁর ভ্যানভর্তি আমের একই অবস্থা। আমে একটু কালচে দাগ পড়েছে। পাকা আমের গন্ধও ভেসে আসছে না। এই অভিযোগের সহজ উত্তর দিলেন জিয়ারুল, এবার লাগাতার বৃষ্টির কারণে রং এমন হয়েছে। তবে আমের স্বাদ ভালো আছে। প্রথমে দাম হাঁকলেন, ৫০ টাকা কেজি। আমের গুণাগুণ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই দাম ৪০ টাকায় নেমে এল।

বানেশ্বর বাজারে আম শোধন

রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়ার বানেশ্বর বাজার। বুধবার সেখানে গিয়ে আমের বাজারের সেই আগের আমেজ অনেকটাই কম দেখা গেল। পাকা আমের ঘ্রাণও পাওয়া যাচ্ছে না। চাষিরাও বলছেন, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই এ অবস্থা। এই বাজারেও লক্ষ্মণভোগের দাম কম।

পুঠিয়ার বালিয়াঘাটা গ্রামের আমচাষি শাহজামাল তাঁর বাগানের আম নিয়ে এসেছিলেন। বললেন, এবার আমের রংটা ভালো হয়নি। আবার বোঁটার কাছ থেকে আগেই পচন হচ্ছে।

তবে আম পাকা পাঁচ থেকে সাত দিন বিলম্বিত করার জন্য বানেশ্বর বাজারে গরম পানিতে আম শোধন করার প্লান্ট বসানো হয়েছে। রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দীন গত সোমবার বলেন, বানেশ্বরে তাঁরা ‘হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ বসিয়েছেন। এই প্লান্টে আম পরিষ্কার করে নিলে আম পাকা পাঁচ থেকে সাত দিন বিলম্বিত হবে। বোঁটার কাছ থেকে আম পচবে না। বাইরে পাঠানো হলে পথে আম পচার হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আমের রংটাও একটু উজ্জ্বল হবে। এই প্লান্টে প্রতি কেজি আম পরিষ্কার করতে খরচ পড়বে ৮৭ পয়সা। মুজিববর্ষ উপলক্ষে এবার ব্যবসায়ীদের বিনা মূল্যে এই সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্লান্টে ঘণ্টায় ৫০০ কেজি আম পরিষ্কার করা যাবে। বুধবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, যাঁরা বাইরে আম পাঠাচ্ছেন তাঁরা এই শোধনাগারে আম শোধন করে নিচ্ছেন। বানেশ্বরের আমজাদ হোসেন নামের এক যুবক এক মণ আম পরিশোধন করে নিলেন। তিনি বললেন, আম পচে নষ্ট হবে না, রংটাও একটু ভালো হবে এ কথা শুনে তিনি আম পরিশোধন করে নিলেন। এ জন্য কোনো পয়সা দিতে হয়নি।

আম পরিবহনব্যবস্থা

রাজশাহী থেকে এবার বাইরে আম পরিবহনের বিশেষ ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। ডাক বিভাগের একটি ট্রাকে চাষি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ৫ টন করে আম বিনা মূল্যে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া আম পরিবহনের জন্য ‘ম্যাংগো ট্রেন’–এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও কুরিয়ার সার্ভিসে আম পাঠানোর সেই ভিড় এবারও রয়েছে।

নতুন সম্ভাবনা

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল হকের তথ্য, রাজশাহীতে ৮৬ হাজারের বেশি আমচাষি রয়েছেন। আম ভাঙা ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত আছেন আরও অন্তত ৫০ হাজার মানুষ। যুক্ত আছেন প্রায় ৬০০ ব্যবসায়ী ও আড়তদার। লেনদেন হয় প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। প্রচলিত ছয় জাতের আমের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসছে বারি-৪ জাতের আম। মৌসুমের শেষে আশ্বিনা আমের সঙ্গে এই আম পাকবে। খেতে সুস্বাদু এই জাতের আমের ভালো দামও পাবেন চাষিরা।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

আঙিনা কৃষি

ছাদে আমের কলমের চারা বাগান

🥭ছাদে আমের কলমের চারা বাগান🌳
🥭ছাদে আমের কলমের চারা বাগান🌳

আম বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় একটি ফলের নাম । আমকে ফলের রাজা বলা হয় । সারা দেশেই এর চাষ হলেও বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী ফসল হল এই আম । বাংলাদেশে অনেক জাতের আমের চাষ হয়ে থাকে । তবে এর মধ্যে ভাল জাতের আমের চাষ রাজশাহী অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ । শহরের বাসিন্দারা ছাদে দুচারটা আম গাছ লাগিয়ে শখ মিটাতে পারেন ।

ছাদের উপযোগী জাতঃ সব জাতের আমই ছাদে চাষ করা সম্ভব ।

তবে ফলন বেশী হয় ছাদের জন্য এমন কিছু জাত নির্বাচন করা উচিৎ । এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল হয় বারি আম -৩ জাতটি । গাছ ছোট আকৃতি, ফল মাঝারি এবং খেতে বেশ সুস্বাদু । যার আরেক নাম আম্রপালি । মোটামুটি প্রতিবছরই ফল দেয় বিধায় ছাদে লাগানোর ক্ষেত্রে আম্রপালিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিৎ । তাছাড়াও বাউ আম – ১, ২, ৩, ৬, ৭, লতা বোম্বাই ইত্যাদি বামন জাতের আম ছাদের জন্য বেশ উপযোগী । চাষ পদ্ধতিঃ ছাদে আমের কলমের চারা লাগানোর জন্য ২০ ইঞ্চি কালার ড্রাম বা টব সংগ্রহ করতে হবে । ড্রামের তলায় ৩-৫ টি ছিদ্র করে নিতে হবে । যাতে গাছের গোড়ায় পানি জমে না থাকে । টব বা ড্রামের তলার ছিদ্রগুলো ইটের ছোট ছোট টুকরা দিয়ে বন্ধ করে দিতে হবে । এবার ২ ভাগ দোআঁশ মাটি, ১ ভাগ গোবর, ৪০-৫০ গ্রাম টি,এস,পি সার, ৪০-৫০ গ্রাম পটাশ সার, ১ কেজি কাঠের ছাই, ১কেজি হাড়ের গোড়া ও হাফ কেজি সরিষার খৈল একত্রে মিশিয়ে ড্রাম বা টব ভরে পানিতে ভিজিয়ে রেখে দিতে হবে ১৫ দিন ।

🥭ছাদে আমের কলমের চারা বাগান🌳
🥭ছাদে আমের কলমের চারা বাগান🌳

অতঃপর মাটি কিছুটা খুচিয়ে দিয়ে আবার ৪-৫ দিন এভাবেই রেখে দিতে হবে । যখন মাটি কিছুটা ঝুরঝুরে হবে তখন একটি  সুস্থ সবল কলমের চারা উক্ত টবে রোপন করতে হবে ।  চারা গাছটিকে সোজা করে লাগাতে হবে । সেই সাথে গাছের গোড়ায় মাটি কিছুটা উচু করে দিতে হবে এবং মাটি হাত দিয়ে চেপে চেপে দিতে হবে । যাতে গাছের গোড়া দিয়ে বেশী পানি না ঢুকতে পারে । একটি সোজা কাঠি দিয়ে গাছটিকে বেধে দিতে হবে । চারা লাগানোর পর প্রথমদিকে পানি কম দিতে হবে । আস্তে আস্তে পানি বাড়াতে হবে । টবের গাছটিকে এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে প্রায় সারাদিন রোদ লাগে ।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

রাঙ্গুনিয়ায় ছাদে সাকিবের বাগানে থোকায় থোকায় পাকা আম

রাঙ্গুনিয়ায় ছাদে সাকিবের বাগানে থোকায় থোকায় পাকা আম
রাঙ্গুনিয়ায় ছাদে সাকিবের বাগানে থোকায় থোকায় পাকা আম

রাঙ্গুনিয়ায় সাকিবের ছাদে গড়ে তোলা আম বাগানে সুস্বাদু আমের ঘ্রানে চারদিক মৌ মৌ করছে। আম বাগানে উঁকি দিচ্ছে এলাকার লোকজন। পাকা আমে জানান দিচ্ছে মধুমাস সমাগত। উপজেলার রাঙ্গুনিয়া থানার পার্শ¦স্থ সৈয়দ বাড়ী এলাকায় কলেজ পড়–য়া মো. সাকিব ঘরের ছাদে টবে লাগিয়েছে সারি সারি আম গাছ। আমের মুকুল আসার পাশাপাশি কয়েকটি গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে আম। পাকা আমের মৌ মৌ সুঘ্রানে ছুটে যাচ্ছে এলাকার মানুষ। সবার মাঝে কৌতুহল জাগছে মৌসুম ছাড়া আম গাছে আম ধরার বিষয়টি। সাকিবের আম বাগান দেখে এলাকার অধিকাংশ যুবক ছাদের টবে আম বাগান করার প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। দীর্ঘদিন আগে থেকে সাকিব আম গাছের পরিচর্যা করে আসছিল। কয়েকটি গাছে আম পাকতেও শুরু করেছে। সে আম গাছের পাশাপাশি লেবু আনারসহ বিভিন্ন ফলজ গাছের চারা লাগিয়েছে ফলও ধরেছে আশানরুপ।

অপরদিকে মৌসুম বিহীন আম বাগানে আম আসার বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, নির্ধারিত সময়ের আগে উন্নত মানের চারা ও সঠিক পরিচর্যা হওয়ায় ছাদে আম ধরার বিষয়টি অস্বাভাবিক কিছু না। ছাদে কেউ বানিজ্যিকভাবে আম বাগান করার উদ্যোগ নিলে সাকিবের মতো আম বাগান করে সফলতা আসবে।

রাঙ্গুনিয়ায় ছাদে সাকিবের বাগানে থোকায় থোকায় পাকা আম
রাঙ্গুনিয়ায় ছাদে সাকিবের বাগানে থোকায় থোকায় পাকা আম

বিশেষ করে ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাতি, আশ্বিনা জাতের বেশি। সেই সঙ্গে গবেষণাকৃত বারি-৩, বারি-৪ জাতের বাগান তৈরির ক্ষেত্রেও আগ্রহী হয়ে উঠছেন অনেকে।

ছাদে আম বাগান করার বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্র সাকিব জানায়, ঘরের ছাদে অল্প জায়গায় উন্নত মানের আমের চারা লাগানো হয়। কৃষি কর্মকর্র্তার পরামর্শে আম বাগানের পরিচর্যা করি। আমের ফলনও ভাল হয়েছে। দুয়েকটি গাছে আম পাকতে শুরু করেছে। ঘরের ছাদে অল্প পরিসরে টবে আম বাগান করলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করা যাবে ও পরিবারের পুষ্টির যোগান দেওয়া যাবে। আগামী বছরে ব্যাপক ভাবে আম বাগান করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছি। আমার দেখাদেখিতে অনেকেই ছাদের টবে আম বাগান করার উদ্যোগ নিচ্ছে।

এ বিষয়ে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ফরমালিনমুক্ত আম খাওয়ার জন্য ও পরিবারের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ঘরের ছাদে যে কেউ আম বাগান অনায়সে করতে পারে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

জয়পুরহাটে পাঁচবিবি উপজেলার বিনধারার গ্রামে এবার হচ্ছে মাঠজুড়ে চায়না জাতের তরমুজের চাষ। উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের রফিকুল ইসলাম শাহিন এবং কয়েকজন প্রান্তিক কৃষক বিনধারা মাঠে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে চায়না জাতের ব্লাকবেবী তরমুজের চাষ করছেন।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

আকারে ছোট খেতে সুস্বাধু এ জাতের তরমুজের গায়ের রং কালো হওয়ায় ”ব্লাকবেবী” হিসাবেই পরিচিত। ব্লাকবেবী চাষ অন্য ফসলের তুলনায় বহুগুনে লাভজনক।

মাচা পদ্ধতিতে বারোমাসি তরমুজ চাষ বিবেচিত হচ্ছে সম্ভাবনাময় একটি কৃষি পণ্য হিসাবে। এই তরমুজের জীবনকাল মাত্র ৬০ দিনের। ১ বিঘা জমির জন্য প্রয়োজন ৫০ গ্রাম বীজ। যার দাম ৩ হাজার ৮’শ টাকা। বিঘাপ্রতি সেড তৈরীর মালসিং পেপার ৭ হাজার ৫’শ,  মাচা পদ্ধতিতে শেড তৈরীর বাঁশ আর মজুরী খরচ ১০ হাজার, সার মাটি আর বালাই নাশক স্প্রে বাবদ ৭ হাজার ৫’শ, পরিচর্য্যা মজুরী ৬ হাজার, পরিবহন খরচ ২ হাজার সর্বমোট বিঘা প্রতি তরমুজ  চাষে খরচ হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

এক বিঘা জমিতে ৬০ দিনে তরমুজ উৎপাদন হয় প্রায় ১২ ’শ থেকে ১৫’শ পিস তরমুজ যার ওজন প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ মেট্রিক টন। প্রতিটি তরমুজ ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলে যার বিক্রি মূল্য হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় নীট লাভ থাকে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। যা তুলনামূলক অন্যান্য ফসলের চাইতে অনেক লাভজনক। একটি সেড তৈরী হলে  সেই শেডে নুন্যতম তিনটি তরমুজের আবাদ করা যায়। ফলে স্থায়ী এই খরচটি পরের দু’বার হয় না। ফলে পরের দু’বারে উৎপাদন খরচ কমে গিয়ে লাভের ভাগ আরো বেশী হয়।আবার বারোমাসই এই তরমুজ পাওয়া যায় বলে এর চাহিদা বেশী। তাইওয়ানের  জেসমিন-১,  জেসমিন-২ ও ব্লাক প্রিন্স জাতের তরমুজে পোকামাকড়ের আক্রমণ তুলনা মূলক বলে ফসলে মার খাওয়ার ঝুঁকিও কম। গাছের গোড়ায় জলাবদ্ধতা ছাড়া এই জাতের উৎপাদন ব্যাহত হবার আর কোন কারন নেই। এই তরমুজ অনেক সুস্বাদু, পুষ্টিকর। সবচেয়ে বড় আশা জাগানিয়া কথা হচ্ছে বোরো ধান কাটার পর প্রায় দু’ আড়াই মাস জমি পতিত থাকে। দু’টি ধান চাষের মাঝে অনায়াসে একার তরমুজের ফলন সম্ভব। ফলে জমির সঠিক ব্যবহার যেমন নিশ্চিত হচ্ছে তেমনি বাড়ছে আয়। এ সব কারনে তরমুজ চাষে বাড়ছে কৃষকের সংখ্যা।

জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ
জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে লাভজনক চায়না তরমুজের চাষ

সরেজমিনে দেখাযায়, পলিথিন দিয়ে তরমুজের বীজ বোপনের জন্য বরাবর বেড তৈরী করা হয়েছে। বাশ ও জিআই তারে তৈরী ঝাংলায় তরমুজ গাছের সবুজ পাতাগুলো শোভা বর্ধন করছে। কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, পরিচিত এক বন্ধুর এ জাতের তরমুজ চাষে লাভবান হয়েছে এবং তার কথা শুনেই তিনিও শুরু করেছেন। প্রায় ৪০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি খরচ হলেও এক থেকে দেড় লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রয় হবে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি। চায়না তরমুজ ছাড়াও তিনি টমেটোসহ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী সবজিও চাষ করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি
পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com