নাইট্রেইট’ সমৃদ্ধ সবজি উচ্চ রক্ত চাপের ঝুঁকিও কমায়। আর এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ‘এডিথ ক্রাউন ইউনিভার্সিটি (ইসিইউ)’র করা এক গবেষণায়।
এই পর্যবেক্ষণ-মূলক গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয় ডেনমার্কের ৫০ হাজার অধিবাসীর ওপর প্রায় ২৩ বছর ধরে করা ‘ড্যানিশ ডায়েট, ক্যান্সার অ্যান্ড হেল্থ স্টাডি’র তথ্য ও উপাত্ত।
প্রাপ্ত ফলাফল থেকে ইসিইউ-এর অধীনে ‘ইনিস্টিটিউট ফর নিউট্রিশন রিসার্চ’-এর প্রধান গবেষক ডা. ক্যাথেরিন বন্ডনো বলেন, “আমার দেখেছি, যারা বেশিরভাগ সময় ‘নাইট্রেইট’ সমৃদ্ধ সবজি গ্রহণ করেছেন তাদের রক্ত চাপের সমস্যা যেমন কমেছে তেমনি হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে ১২ থেকে ২৬ শতাংশ।”
এই ফলাফলের সূত্র ধরে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ভেষজ ভিত্তিক নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ এবং ‘প্ল্যান্ট-বেইজড ইট-এর কর্ণধার অ্যামি গোরিন বলেন, “দিনে এক কাপ সবজি জটিল কোনো বিষয় নয়। হৃদযন্ত্রের সুস্থতার কথা চিন্তা করে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পত্রল সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়া খুবই সহজ।”
“ধরা যাক এক কাপ কপি। এই পরিমাণ সবজি থেকে ভিটামিন-সি এর দৈনিক চাহিদার ৩২ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। পাশাপাশি মিলবে আঁশ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। আবার পালংশাকে রয়েছে খনিজ উপাদান লৌহ, যা দেহজুড়ে অক্সিজেনের প্রবাহ সঠিক রাখতে জরুরি।”
এই পুষ্টিবিদ পরামর্শ দিতে গিয়ে আরও বলেন, “ভিটামিন সি শরীরে লৌহ শোষণে প্রয়োজন পড়ে। তাই পালংশাকে লেবুর রস মেখে খেলে উপকার মিলবে বেশি।”
দৈনিক খাদ্যতালিকায় পালংশাক, কপি, লেটুস ও রঙিন সবজি যোগ করার কয়েকটি পন্থাও তিনি উল্লেখ করেন প্রতিবেদনে।
অল্প ভাজা পত্রলসবজি
“অল্প লবণে হালকা-ভাবে ভাজা পত্রলসবজি আমার খুবই পছন্দ।” বলেন গোরিন।
তার কথায়, “এটা খেতে সহজ, পরিমাণেও বাড়ানো যায় আর স্বাদও দারুণ।”
তাই ‘সাইড ডিশ’ হিসেবে এক কাপ শাক রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
সালাদে পত্রলসবজি
সবুজ উদ্ভিজ্জ খাবার গ্রহণের সহজ পন্থা হল সালাদে পাতাযুক্ত সবজির ব্যবহার। অলিভ অয়েল সহযোগে ‘সি ফুড’, হালকা মসলা ও বীজ এবং শুঁটি ধরনের খাবারের সঙ্গে সহজেই মেশানো যায় লেটুস ও অল্প সেদ্ধ পালংশাকের পাতা। সঙ্গে দেওয়া যায় বাদামের গুঁড়া।
পিৎজাতে শাক-সবজি
মুখোরোচক খাবারের জন্য মন আনচান করছে? তবে নিজের তৈরি পিৎজাতে ছড়িয়ে দিতে পারেন এক কাপ নানান রকম সবজি, সেদ্ধ মটরশুঁটি বা ছোলা। এছাড়া টাটকা ‘রকেট লেটুস’ পাওয়া গেলে সেটাও দিতে পারেন; কিংবা দিতে পারেন ধনিয়া ও পুদিনা পাতা। এদের ঝাঁঝ-যুক্ত স্বাদ পিৎজার পনিরের সঙ্গে বেশ লাগে খেতে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন