স্বচ্ছর (ছদ্মনাম) বয়স প্রায় ১৪ বছর। কিন্তু এখনো কোনো ছোটখাটো সমস্যার মুখোমুখি হলেই সে হতবিহ্বল হয়ে যায়। এই বয়সে যেসব সাধারণ সমস্যা সমাধান করতে পারার কথা, তার বেশির ভাগই সে করতে পারে না। যেমন হঠাৎ করে সেদিন বাড়িতে তেমন কেউ ছিল না, সে ছিল তার বয়স্ক দাদার সঙ্গে। হঠাৎ দাদার শরীর খারাপ হওয়াতে স্বচ্ছ নিজেই ভয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। বাড়িতে ফোন ছিল, সে ইচ্ছা করলে মা-বাবা বা বড় কাউকে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারত। কিন্তু হঠাৎ এমন অবস্থার মুখোমুখি হয়ে সে বুঝতে পারছিল না কী করতে হবে। এমনিতে কিন্তু পড়ালেখায় সে খুব ভালো। কিন্তু হঠাৎ করে কোনো সমস্যায় পড়লে সে তৎক্ষণাৎ সেটির সমাধানের দিকে যেতে পারে না।
কেন এমন হয়
নানা কারণে শিশু–কিশোরদের মধ্যে সমস্যা সমাধানের অভ্যাস তৈরি হয় না। সামাজিক দক্ষতার মূল দুটি উপাদান হচ্ছে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া আর সামনে আসা সমস্যা সমাধানের জন্য যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে পারা। শৈশব থেকে বাবা-মায়েরা যদি সন্তানকে সিদ্ধান্ত নিতে না শেখান, সন্তানের সব কাজ নিজেরাই করে দিতে ব্যতিব্যস্ত থাকেন, তখন সন্তানেরা সবকিছুর জন্য বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে। ফলে পরিণত বয়সেও তারা নিজেদের সিদ্ধান্তগুলো নিজেরা নিতে পারে না। দৈনন্দিন সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে না।
শৈশবে, কৈশোরে এবং পরিণত বয়সেও কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে আর দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানের কৌশল রপ্ত করতে ছোটবেলা থেকেই শিশুদের সামাজিক দক্ষতা শেখাতে হবে। এই সামাজিক দক্ষতা তার ভবিষ্যৎ জীবনকে চাপমুক্ত রাখবে।
শিশুকে সমস্যা সমাধানের কৌশল শেখাতে যা করতে হবে।
ছোট ছোট সিদ্ধান্ত নেওয়া শেখাতে হবে: সিসি ক্যামেরার মতো সারাক্ষণ সন্তানের ওপর নজরদারি না করে তাকে কিছুটা নিজের মতো করে ভাবতে দিন। তার নিজের কিছু সিদ্ধান্ত তাকেই নিতে দিন।
সৃষ্টিশীল কাজে উৎসাহ দিন: তার সবকিছু নিখুঁত হওয়ার প্রয়োজন নেই। নিঁখুত হওয়ার চেয়ে মৌলিক আর তার সৃষ্টিশীলতার দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।
সামনে কোনো বাধা এলে সমাধানের সুযোগ দিন: সন্তানের সব সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার জন্য উদ্গ্রীব হবেন না। সে কীভাবে সমস্যাটিকে দেখছে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। সমস্যাটির সমাধান করতে তার চেষ্টাকে উৎসাহিত করুন।
বিকল্প চিন্তা করার সুযোগ: সব সময় একমুখী চিন্তা করা থেকে শিশুকে বিরত রাখুন। তার সামনে একাধিক বিকল্প তুলে ধরুন। সেখান থেকে সবচেয়ে যোগ্য সমাধানটি যাতে সে খুঁজে নিতে পারে, সে জন্য তাকে সাহায্য করতে পারেন। তবে প্রভাবিত করবেন না।
সমস্যায় বিচলিত হবেন না: ঘরে–বাইরে ছোটখাটো সমস্যার মুখোমুখি হলে অস্থির হবেন না, বিচলিত হবেন না। এমন আচরণ করবেন না যাতে তারা সমস্যাকে ভয় পেতে শুরু করে। যেকোনো সমস্যাকে সহজভাবে নিতে শেখান আর সমস্যার সমাধান উদ্যাপন করুন। আপনার সন্তান যেন সমস্যার সমাধানে মজা পায়, সেদিকে লক্ষ রাখুন।
উদাহরণ দিন: গল্পের আকারে বিভিন্ন সমস্যায় কী কী সমাধান হতে পারে, সেগুলো শিশুকে শোনান। এমনকি গল্প-উপন্যাস, ফিকশন আর অ্যাডভেঞ্চারের বই পড়তে উৎসাহিত করুন।
পরিবারে চর্চা করুন: যেকোনো সমস্যা সামনে এলে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে সেটির সমাধানের কৌশল নিয়ে আলোচনা করুন। তাদেরকে এমনটা বোঝান যে সে পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।
ব্যথর্তাকে মেনে নিতে শেখান: ব্যর্থতাকে সমালোচনায় জর্জরিত করবেন না, বরং ব্যর্থতাকেও উদ্যাপন করুন। এতে সে সিদ্ধান্ত নিতে সাহসী হবে।
সাহায্য চাইলে বিরক্ত হবেন না: সন্তানেরা আবার কোনো সাহায্য চাইলে বিরক্ত হবেন না। তাদেরকে সাধ্যানুযায়ী গাইড করুন, কিন্তু সবকিছু নির্দেশিত করে দেবেন না।
বাসার ছোটখাটো কাজে তাকে দায়িত্ব দিন: ‘ও ছোট, এটা পারবে না’, ‘ওর এখনো কাজ করার বয়স হয়নি’ এসব বলে শিশুকে পরনির্ভরশীল করে তুলবেন না।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন