ইসলাম
সত্য কথা বলার গুরুত্ব ও ফজিলত
লেখক
জাগোনিউজ২৪.কমদুনিয়ার সব কাজ, বিচার-ফয়সালা সত্য কথা বা সত্যবাদিতার ওপর নির্ভরশীল। আসামি কিংবা বিচারপ্রার্থী উভয়ই বিচারকের সামনে এ মর্মে হলফ করেন যে, ‘যা বলিব সত্য বলিব; সত্য বৈ মিথ্যা বলিব না’। এ সত্যবাদিতায় রয়েছে জীবনের পরম সুখ-শান্তি; সত্যবাদিতার মর্যাদা ও উপকারিতাও রয়েছে অনেকটা। কোরআন-সুন্নায় সত্যবাদিতার এসব গুরুত্ব ও ফজিলত বর্ণনায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। তাহলো-
সত্যবাদিতায় কোরআনের নির্দেশ
সত্যবাদীরাই আল্লাহকে ভয় করে। আল্লাহকে ভয় করা, সঠিক পথে চলা সত্যবাদীদের অন্যতম গুণ। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে ঈমানদারদের লক্ষ্য করে আল্লাহকে ভয় করার কথা বলেছেন আবার সত্যবাদীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার কথা বলেছেন। কোরআনের একাধিক আয়াতে সত্যবাদিতার উপকারিতা ও মর্যাদার কথা তুলে ধরেছেন এভাবে-
১. يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَكُونُواْ مَعَ ٱلصَّٰدِقِينَ
‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।’ (সুরা তওবা : আয়াত ১১৯)
২. وَٱلصَّٰدِقِينَ وَٱلصَّٰدِقَٰتِ
‘সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদিনী নারী’; এদের জন্য মহান আল্লাহ ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান রেখেছেন।’(সুরা আহযাব : ৩৫)
৩. فَلَوۡ صَدَقُواْ ٱللَّهَ لَكَانَ خَيۡرٗا لَّهُمۡ
‘সুতরাং যদি তারা আল্লাহর সঙ্গে সত্য বলতো, তাহলে তাদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হতো।’ (সুরা মুহাম্মাদ : আয়াত ২১)
হাদিসে সত্যবাদিতার মর্যাদা ও উপকারিতা
হাদিসে পাকে প্রিয়নবি মানুষকে সত্য কথা বলার নির্দেশ দিয়েছেন। সত্যবাদিতার অনেক গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। মানুষকে সত্যবাদী হতে অনেক মর্যাদা ও উপকারিতার কথা তুলে ধরেছেন। হাদিসের বর্ণনায় সত্যবাদিতার যেসব উপকারিতা উঠে এসেছে; তাহলো-
১. সত্যবাদিতা জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়
হজরত ইবনু মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই সত্য (মানুষকে) পুণ্যের পথ দেখায় আর পুণ্য জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (অবিরত) সত্য বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তাকে খুব সত্যবাদী বলে লেখা হয়। পক্ষান্তরে মিথ্যা পাপের পথ দেখায় এবং পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (সর্বদা) মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ অবধি আল্লাহর কাছে তাকে মহা মিথ্যাবাদী বলে লেখা হয়।‘ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ, মুসনাদে আহমাদ, মুওয়াত্তা মালিক, দারেমি)
২. সত্যবাদিতা প্রশান্তির কারণ
হজরত আবু মুহাম্মাদ হাসান ইবনু আলি ইবনু আবি ত্বালেব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এই শব্দগুলো স্মরণ রেখেছি যে, ‘তুমি ঐ জিনিস পরিত্যাগ কর, যে জিনিস তোমাকে সন্দেহে ফেলে এবং তা গ্রহণ কর যাতে তোমার সন্দেহ নেই। কেননা, সত্য প্রশান্তির কারণ এবং মিথ্যা সন্দেহের কারণ।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, মুসনাদে আহমাদ, দারেমি)
৩. সত্যবাদিতা নবুয়তি গুণ
হজরত আবু সুফিয়ান সাখর ইবনু হারব রাদিয়াল্লাহু আনহু একটি দীর্ঘ হাদিস বর্ণনা করেন যাতে (রোমের বাদশাহ) হিরাক্লিয়াসের ঘটনা উঠে এসেছে। হিরাক্লিয়াস আবূ সুফিয়ানকে জিজ্ঞাসা করলেন (তখনও তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি) ‘তিনি… অর্থাৎ নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম…তোমাদেরকে কোন কাজের আদেশ করছেন?’
আবু সুফিয়ান বললো, ‘তিনি বলছেন যে, ‘তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপাসনা কর, তাঁর সাথে কাউকে শরিক করো না এবং ঐসব কথা পরিহার কর, যা তোমাদের বাপ-দাদারা বলত (এবং করত)।’ আর তিনি আমাদেরকে-
> নামাজ পড়ার আদেশ দেন;
> সত্য কথা বলার আদেশ দেন;
> চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষার আদেশ দেন এবং
> আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার আদেশ দেন।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)
৪. শাহাদাতের মর্যাদা পায় সত্যবাদী
হজরত আবু সাবেত মতান্তরে আবু সাঈদ বা আবুল অলিদ সাহল ইবনু হুনাইফ রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সত্য অন্তর নিয়ে আল্লাহর কাছে শাহাদত প্রার্থনা করবে, তাকে আল্লাহ তাআলা শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছাবেন; যদিও তার মৃত্যু নিজ বিছানায় হয়।’ (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, দারেমি)
৫. সত্যবাদিতায় বরকত হয়
হজরত আবু খালেদ হাকিম ইবনু হিজাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত (চুক্তি পাকা বা বাতিল করার) স্বাধীনতা রয়েছে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা পৃথক (স্থানান্তরিত) না হবে। আর যদি তারা সত্য কথা বলে এবং (পণ্যদ্রব্যের প্রকৃতি) খুলে বলে, (দোষ-ত্রুটি গোপন না রাখে,) তাহলে তাদের কেনা-বেচার মধ্যে বরকত দেওয়া হয়। আর তারা যদি (দোষ-ত্রুটি) গোপন রাখে এবং মিথ্যা বলে, তাহলে তাদের দু’জনের কেনা-বেচার বরকত কমে যায়।’ (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
এ কারণেই কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে সত্য আসলে অন্ধকার থাকবে না। সত্য অন্ধকারকে আলোকিত করে দেয়। আল্লাহর ঘোষণা-
وَ قُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَ زَهَقَ الۡبَاطِلُ ؕ اِنَّ الۡبَاطِلَ کَانَ زَهُوۡقًا
‘আর (হে রাসুল আপনি) বলুন! ‘সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলীন হয়েছে; নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলীন হওয়ারই ছিল।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮১)
সুতরাং মানুষের উচিত, সব সময় সত্য কথা বলা। সত্যবাদিতার আদলে নিজেদের তৈরি করা। সত্যবাদিতার মর্যাদা ও উপকারিতা পাওয়ার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সত্য কথা বলার; সত্যবাদিতার গুণে নিজেদের তৈরি করার তাওফিক দান করুন। সত্যবাদিতার মর্যাদা ও উপকারিতাগুলো পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার জন্য নির্বাচিত সংবাদ
-
শরীরের ব্যথা থেকে মুক্তি লাভের দোয়া
-
কেয়ামতের দিনের মুক্তিতে মুমিনের করণীয় কী?
-
ঈমান নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে করণীয়
-
হিজরতের কঠিন বিপদে যে দোয়া নাজিল হয়েছি
-
আজান শোনার পর প্রিয় নবি (সা.)-এর সুন্নাত কী?
-
নামাজের রাকাত সংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন?
-
সিরিয়ার বিখ্যাত যে মসজিদে ঈসা (আ.)-এর আগমন ঘটবে
-
ফুল চাষে যেসব বিষয় খেয়াল রাখতে হবে
-
আলু থেকে জন্ম নেবে গোলাপ গাছ
-
সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা
মানুষের শরীরে ব্যথা হতেই পারে। ব্যথা হওয়ার নানা কারণ রয়েছে। ব্যথা হলে দুশ্চিন্তিত না করে, ব্যবস্থা নিলে আল্লাহ তাআলা সুস্থ করে দেবেন। চিকিৎসা কিংবা শরীরচর্চা-ব্যায়াম বা কোনো ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি দোয়াও করা চাই। এতে আল্লাহ তাআলা দ্রুত ব্যথা দূর করে দেবেন।
উসমান বিন আবুল আস আস-সাকাফি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-এর কাছে মারাত্মক ব্যথা নিয়ে উপস্থিত হলাম, যা আমাকে প্রায় অকেজো করে দিয়েছিল। রাসুল (সা.) আমাকে বলেন, ‘তুমি তোমার ডান হাত ব্যথার স্থানে রেখে সাতবার এই দোয়া বলো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৫২২)
দোয়াটি হলো
উচ্চারণ : আউজু বি-ইজ্জাতিল্লহি ওয়া কুদরাতিহি মিন শাররি মা আজিদু ওয়া উহাজিরু।
অর্থ : আল্লাহর নামে- আমি আল্লাহর অসীম সম্মান ও তার বিশাল ক্ষমতার অসিলায় আমার অনুভূত এই ব্যথার ক্ষতি থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।
শিরকমুক্ত ঈমান এবং নেক আমল ছাড়া কেয়ামতের দিন মুক্তির বিকল্প নেই। কেয়ামতের ময়দানে সব মানুষ আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবে। এমনকি নবি-রাসুলগণও আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবেন। কারণ কেউ জানেন না আল্লাহ তাআলা সে দিন কার সঙ্গে কীরূপ ব্যবহার করবেন।
হাদিসের বর্ণনায় যদিও কেয়ামতের দিনের ভয়বাহতার বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি সেদিন সেজদায় থাকবেন। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাকে সেজদা থেকে উঠতে বলবেন। তিনি সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে বিচার কাজ শুরু করার জন্য সুপারিশ করবেন। তারপরই শুরু হবে পরকালের বিচারকার্য।
সেদিন যার আমলনামা ভালো হবে সে সফল হবে। শুধু মানুষ নয়, সেদিন নবি-রাসুলরা কতটা ভয়াবহ সময় কাটাবেন তা হাদিসের একটি বর্ণনা থেকেই সুস্পষ্ট-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাজিল হয়-
وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ
(হে রাসুল!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৪)
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন-
> হে কুরাইশ দল! (তোমরা আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতের ধারায়) নিজেদের আত্মাকে প্রস্তুত কর। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো কাজে আসতে পারব না।
> হে বনি আবদে মানাফ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস! আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে রাসুলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আল্লাহর কাছে আপনার কোনো কাজে আসব না।
> হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাতেমা! তুমি আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো কাজে আসব না।’ (বুখারি)
সুতরাং মুমিন মুসলমানের করণীয়-
এ সতর্কবার্তা ঘোষণার পরপরই মহান আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে প্রিয়নবিকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার যে ঘোষণাগুলো দিয়েছেন, সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আর তাহলো-
‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তোমার বাহুকে অবনত কর। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালু (আল্লাহর) উপর তাওয়াক্কুল কর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাজে) দণ্ডায়মান হও এবং সেজদাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৫-২২০)
আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতে যদি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজ বংশধর, চাচা, ফুফু ও কন্যার ব্যাপারে এমন ঘোষণা দেন তবে অন্যান্য মুসলমান কিভাবে আল্লাহর নাফরমানি করে প্রিয়নবির শাফায়াত লাভের আশা করতে পারে!
কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা থেকে এ কথা প্রমাণিত যে, শিরক মুক্ত ঈমান ও নেক আমল ছাড়া কোনো আদম সন্তানই পরকালে মুক্তি পাবে না। যারাই প্রিয় নবির অনুসরণ ও অনুকরণ করবে তাদের মুক্তি হবে নিরাপদ ও সহজ।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকমুক্ত ঈমান ও নেক আমলে নিজেদের জীবন সাজানো। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমান লাভ ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে হাদিসে ঘোষিত সব ধরনের শাফায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
মহান আল্লাহর প্রতি একচ্ছত্র বিশ্বাসই মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ। তারপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবি ও রাসুল হিসেবে বিশ্বাস করার নামই ঈমান।
হজরত আবু যুমাইল রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, একদিন আমি হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললাম, আমি আমার অন্তরে যেসব বিষয় অনুভব করি এগুলো কি? তিনি বললেন, তা কি? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি সে বিষয়ে মুখ খুলবো না।
বর্ণনাকারী বলেন, তিনি আমাকে বললেন, সন্দেহমূলক কিছু?
বর্ণনাকারী বলেন, এরপর তিনি হাসলেন এবং বললেন, এর থেকে কেউই রেহাই পায়নি। এমনকি মহান আল্লাহ নাযিল করেন-
এরপর (হে নবি!) আমি যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যদি আপনি সে (গ্রন্থ) সম্পর্কে সন্দিহান হন, তাহলে আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করে দেখুন; যারা আপনার আগের (আসমানি) গ্রন্থ পাঠ করে। নিঃসন্দেহে আপনার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আপনার কাছে সত্য এসেছে। সুতরাং আপনি কখনই সংশয়ীদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।’ (সুরা ইউনুস : আয়াত ৯৪)।
বর্ণনাকারী বলেন, ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু আমাকে বললেন, যখন তুমি মনের মধ্যে এ ধরনের (সন্দেহের) কিছু উদ্রেক হতে দেখবে, তখন তুমি পাঠ করবে-
هُوَ الۡاَوَّلُ وَ الۡاٰخِرُ وَ الظَّاهِرُ وَ الۡبَاطِنُ ۚ وَ هُوَ بِکُلِّ شَیۡءٍ عَلِیۡمٌ
‘তিনিই প্রথম, তিনিই শেষ, তিনিই প্রকাশ্য, তিনি গোপন এবং তিনি সব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জানেন (সুরা হাদিদ : আয়াত ৩)।’ (আবু দাউদ)
সন্দেহের সৃষ্টি হলে করণীয়
হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, কোন সময় তোমার অন্তরে আল্লাহ তাআলা ও ইসলাম সম্পর্কে শয়তানের কুমন্ত্রণা দেখা দিলে-
উচ্চারণ : ‘হুয়াল আউয়ালু ওয়াল আখিরু ওয়াজ জ্বাহিরু ওয়াল বাতিনু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদির।’
অর্থাৎ ‘তিনিই প্রথম এবং তিনিই শেষ আর তিনিই প্রকাশ্য এবং তিনিই গোপন; আর তিনি সব বিষয়ে সবচেয়ে বেশি অবগত’- আয়াতখানি আস্তে পাঠ করে নাও।’ (আবু দাউদ)
আয়াতটির ব্যাখ্যা
এই আয়াতে ‘আউয়াল’, ‘আখের’, ‘জাহের’ ও ‘বাতেন’- এ শব্দ চারটির অর্থ ও ব্যাখ্যায় সম্পর্কে তফসীরবিদগণের বহু উক্তি বৰ্ণিত আছে। এরমধ্যে ‘আউয়াল’ শব্দের অর্থ তো প্ৰায় সুনির্দিষ্ট; অর্থাৎ অস্তিত্বের দিক দিয়ে সব সৃষ্টজগতের আগে তিনি। কারণ, তিনি ব্যতিত সবকিছু তারই সৃষ্টি। তাই তিনি সবার আদি।
‘আখের’ এর অর্থ কারও কারও মতে এই যে, সবকিছু বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও তিনি বিদ্যমান থাকবেন। যেমন- كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّا وَجْهَهُ অর্থাৎ তাঁর চেহারা (সত্ত্বা)* ছাড়া সব কিছুই ধ্বংসশীল। (সুরা আল-কাসাস : আয়াত ৮৮)
ইমাম বুখারি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘জাহের’ অর্থ জ্ঞান-গরিমায় তিনি সবকিছুর উপর। আবার তিনি ‘বাতেন’ জ্ঞানের দিক থেকে তিনি সবকিছুর সন্নিকটে।
এ আয়াতের সুন্নাতি আমল
কোরআনুল কারিমের এ আয়াতের ব্যাখ্যায় এক হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে ঘুমানোর সময় বলতেন-
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা রাব্বাস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বাল আরশিল আজিমি; রাব্বানা ওয়া রাব্বা কুল্লা শাইয়িন; মুনযালাত তাওরাতি ওয়াল ইনঝিলি ওয়াল ফুরক্বান; ফালিক্বালহাব্বি ওয়াননাওয়া; আউজুবিকা মিন সাররি কুল্লি শাইয়িন আনতা আখিজা বিনাসিয়াতিহি; আন্তাল আউয়ালু ফালাইসা ক্বাবলাকা শাইয়ুন; ওয়া আনতাল আখিরু ফালাইসা বাদাকা শাইয়ুন; ওয়া আনতাজ জাহিরু ফালাইসা ফাউক্বাকা শাইয়ুন; ওয়া আনতাল বাত্বিনু ফালাইসা দুনাকা শাইয়ুন; আক্বদা আন্নিদদিনা ওয়া আগনিনা মিনাল ফাক্বরি।’
‘হে আল্লাহ! সাত আসমানের রব, মহান আরশের রব, আমাদের রব এবং সবকিছুর রব, তাওরাত, ইঞ্জিল ও ফুরকান নাযিলকারী, দানা ও আঁটি চিরে বৃক্ষের উদ্ভাবকারী, আপনি ব্যতিত কোনো সত্য মাবুদ নেই; যাদের কপাল আপনার নিয়ন্ত্রণে এমন প্ৰত্যেক বস্তুর অনিষ্ট থেকে আমি আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করি, আপনি অনাদি, আপনার আগে কিছু নেই, আপনি অনন্ত আপনার পরে কিছুই থাকবে না। আপনি সবকিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই, আপনি নিকটবর্তী, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কেউ নেই, আমার পক্ষ থেকে আপনি আমার ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাকে দারিদ্রতা থেকে মুক্তি দিন।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)
মানসিক চাপ, বিষন্নতা ও জীবনের নানা কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের ঝুঁকির মুহূর্তে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় চরম বিপদের মুহূর্তে প্রশান্তি স্বরূপ এ আয়াতটি নাজিল হয়। যা সত্যিই প্রশান্তির। এ আয়াতটি পড়লে এমনিতেই কঠিন বিপদে মিলে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা। তাহলো-
رَّبِّ اَدۡخِلۡنِیۡ مُدۡخَلَ صِدۡقٍ وَّ اَخۡرِجۡنِیۡ مُخۡرَجَ صِدۡقٍ وَّ اجۡعَلۡ لِّیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ سُلۡطٰنًا نَّصِیۡرًا
উচ্চারণ : রাব্বি আদ্খিলনি মুদ্খালা সিদ্ক্বিও ওয়া আখরিঝ্নি মুখরাঝা সিদ্ক্বিও ওয়াঝ্আললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাছিরা।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে কল্যাণসহ প্রবেশ করাও এবং কল্যাণসহ বের কর। আর তোমার কাছ থেকে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)
উল্লেখ্য, এ আয়াতটি প্রিয় নবির হিজরতের সময় নাজিল হয়েছিল। যখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে বের হওয়ার এবং মদিনাতে প্রবেশ করার সময় উপস্থিত হয়েছিল।
কেউ কেউ বলেন, এ প্রার্থনামূলক আয়াতের মর্মার্থ হলো- সত্যের উপর আমার মৃত্যু দিও এবং সত্যের উপর আমাকে কেয়ামতের দিন উত্থিত করো।
আবার কেউ কেউ বলেন, সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবরে প্রবিষ্ট করো এবং কেয়ামতের দিন সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবর থেকে বের করো ইত্যাদি।
ইমাম শাওকানি বলেন, এ আয়াতটি যেহেতু দোয়া; বিধায় এর ব্যাপকতায় উল্লিখিত সব কথাই এসে যায়।
কেউ কেউ বলেন, যারা বিভিন্ন কষ্ট ভোগ করেন, তারাও এ দোয়াটি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর পড়তে পারেন। আশা করা যায়, এতে তার উল্লেখিত রোগ ও সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, যদি কারো ডায়বেটিস রোগ হয়; তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্ক্ষলাবদ্ধ জীবনের পাশাপাশি এ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে এটিকে কোরআনি আমল মনে করা হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন রোগ মুক্তিতে কোরআনের এ আয়াতের আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার ও পরকালের সব বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
প্রিয় নবির ঘর সুমহান আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু। এ ঘর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তম আদর্শ, পরিপূর্ণ আদব, অতুলনীয় শিষ্টাচার ও স্বাধীন সমাজ ব্যবস্থা। নবিজীর যুগে এমন সমাজ ব্যবস্থা প্রবতির্তত হয়েছিল যে, পরিবারের সবাই সমভাবে কাজ করতেন। পুরুষরা স্ত্রীদের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন। আর একটি সময় হলেই সবাই একত্রিত হতেন। তা ছিল নামাজের আজান। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুহূর্তের মধ্যে সবাই কাজ রেখে নামাজ পড়তে মসজিদে একত্রিত হতেন।
স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবারিক কাজে সময় দিতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করতেন। নামাজের আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ ছেড়ে দিতেন। হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনা থেকে প্রমাণিত যে-
১. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কী কাজ করতেন? তিনি উত্তর দেন-
كان بشرًا من البشر: يفلي ثوبه ويحلب شاته، ويخدم نفسه
‘তিনি একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তাঁর কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই করতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)
তিনি কি শুধু সাধারণ মানুষের মতো মানুষ ছিলেন? না তিনি ছিলেন চারিত্রিক মাদুর্য ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কোনো গুণেই কেউ তার সমকক্ষ ছিল না। তিনি যেমন বিনয়ী ছিলেন, তেমনি ছিলেন অহংকারমুক্ত মানুষ।
প্রিয় নবি কেমন মানুষ ছিলেন? তিনি কোনো দিন কাউকে কষ্ট দেননি। তিনি ছিলেন প্রতিটি কাজে অংশগ্রহণকারী সেরা মানুষ। অন্যকে সেরা সাহায্যকারী ও শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর হুকুম পালনে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর প্রতি নাজিল হয়েছে এ আয়াত-
لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا
‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)
আজান শোনার পর প্রিয় নবির সুন্নাত
কোরআনের ঘোষণার পরও তিনি আল্লাহর ইবাদাত ও তার অনুসরণ থেকে কখনো বিরত হতেন না। বরং মসজিদে আজান হওয়ার ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাতে সাড়া দিয়ে সব কাজ রেখে মসজিদে ছুটে যেতেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-
হজরত আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে কি কি ধরনের কাজ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন-
كان يكون في مهن أهله، فإذا سمع بالأذان خرج
‘তিনি তার পরিবারের সব কাজে নিয়োজিত থাকতেন, তবে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)
ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার গুরুত্ব
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, তিনি বাড়িতে ফরজ নামাজ পড়েছেন। তবে তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্তে যখন প্রচণ্ড রোগাক্রান্ত; শোয়া থেকে উঠতে পারছিলেন না; যখন মসজিদে যেতে অপরাগ ছিলেন তখন বাড়িতে নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু তিনি দরজা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ার দৃশ্য অস্রুসিক্ত নয়নে অবলোকন করতেন।
প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের প্রতি খুবই দয়াশীল ছিলেন। কিন্তু নামাজের জামাতের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাঁর মতো এতো কঠোর দ্বিতীয় আর কেউ ছিল না। তিনি জামাতে অনুপস্থিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে এভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে-
لقد هممت أن آمر بالصلاة فتقام ثم آمر رجلاً أن يصلي بالناس ثم أنطلق معي برجال معهم حزم من حطب إلى قوم لا يشهدون الصلاة فأحرق عليهم بيوتهم
‘আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কাউকে নামাজের ইমামতি করার আদেশ দেই আর আমি কাঠসহ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে ঐ সব লোকদের বাড়িতে যাই; যারা জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত হয়নি। এরপর তারাসহ তাদের বাড়ি-ঘরকে জালিয়ে দেই।’ (বুখারি ও মুসলিম)
মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে না!
মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ার প্রতি ছিল নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ গুরুত্ব। শরিয়তের ওজর ছাড়া আজান শোনার পর মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে মর্মেও প্রিয় নবি ঘোষণা করেছেন-
من سمع النداء فلم يجب فلا صلاة له إلا من عذر، والعذر خوف أو مرض
‘শরিয়তের ওজর ব্যতিত যে ব্যক্তি আজান শোনার পর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলো না, তার নামাজ কবুল হবে না।’ (তিরমিজি) আর ওজর বলতে: শত্রুর ভয় অথবা রোগকে বুঝানো হয়েছে।
প্রিয় নবির যুগের সে দৃশ্য আজ কোথায়? কোথায় সেই নামাজি? মসজিদে আজান হয় ঠিকই কিন্তু মসজিদের কাতারপূর্ণ হয় না। অথচ বর্তমান সময়ে মসজিদে নামাজ পড়তে না যাওয়ার পেছনে নেই কোনো শরিয়তের ওজর। না কোনো শত্রুর ভয় কিংবা বিপদের ভয়।
মুমিন মুসলমান মাত্রই উচিত, আজান হলে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালী যুগের মতো কাজ রেখে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। একত্রে নামাজ আদায় করা। প্রিয় নবির প্রিয় সুন্নাতকে জাগ্রত করা।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন