আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

পরিবেশ

শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানে বন বিভাগের বাগান

সাংসারেকদের শত বছরের পুরোনো শ্মশানে গড়ে তোলা হচ্ছে বন বিভাগের গাছপালার সংগ্রহশালা, যা আরবোরেটাম নামে পরিচিত। পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন পাতাঝরা এই বনে কৃত্রিম বনায়নের নিদর্শন নতুন নয় এবং সেখানকার আদিবাসীরা বনবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডে সব সময় ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছে। কিন্তু এবার শ্মশান ধ্বংসের উদ্যোগ সেই ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দেওয়ার মতো। বন বিভাগ অবশ্য বলছে, এখানে যে শ্মশান সেটা তাদের আগে জানানো হয়নি। এ শ্মশান বহুকাল ধরে পরিত্যক্ত হয়ে আছে।

অনুসারীদের কাছে সাংসারেক ধর্মের খামাল (পুরোহিত) জনিক নকরেক নিজস্ব ধর্মীয় রীতিতেই তার মৃতদেহ সৎকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার চুনিয়া গ্রামে জন্ম জনিক নকরেকের। সাংসারেক ধর্মের সবচেয়ে প্রবীণ শতবর্ষ পেরোনো এই মানুষটি। গারোদের আদি ধর্মের নাম সাংসারেক। সর্বত্র গারো বলে পরিচিত হলেও তারা নিজেদের মান্দি বলে পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে; কথা বলে আচিক ভাষায়। সাংসারেকদের সংখ্যাও এখন হাতেগোনা। তবে সাংসারেক ধর্মাবলম্বী জনিক নকরেক একা নন, বর্তমানে জন্মগতভাবে সাংসারেক নয়, এমন গারোরাও চায় পূর্বপুরুষের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করা হোক। অথচ এখানে বাদ সেধে বসেছে বন বিভাগ। তাদের প্রকল্পে থাকা আরবোরেটাম (গাছপালার সংগ্রহশালা) বাগানের জায়গার মধ্যে পড়েছে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের টেলকী গ্রামে মান্দিদের দেড়শ বছরের পুরোনো শ্মশান। মান্দিরা এই শ্মশানকে বলে ‘মাংরুদাম’। তাদের কাছে এটি খুবই পবিত্র স্থান। অথচ কয়েকজন মান্দি নেতার যোগসাজশে বাগানের সীমানাপ্রাচীর দ্রুত নির্মাণ করতে তৎপর বন বিভাগ। এই যখন পরিস্থিতি, তখন মাংরুদামকে ঘিরে বন বিভাগের কর্মকাণ্ডে মধুপুর অঞ্চলের মান্দিদের ১৩টি গ্রামের মানুষের মধ্যে তুমুল অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। তারা পূর্বপুরুষদের স্মৃতিচিহ্ন মেশা এই মাটির একটি কণাও ছাড়তে নারাজ।

বর্তমানে গারোদের লক্ষাধিক জনসংখ্যার বেশিরভাগ খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হয়েছে। তবে জনিক নকরেকের মতো শখানেক মান্দি এখনও টিকিয়ে রেখেছেন ‘সাংসারেক’ ধর্মকে। ২০০৫ সালে পরিচালিত এক গবেষণায় সারাদেশে দেড়শর মতো এই ধর্মানুসারী আছেন বলে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য ধর্মান্তরিত হলেও মান্দিদের বেশিরভাগই ভেতরে লালন করে পুরোনো ধর্মের বিভিন্ন আচার। সাংসারেক ধর্ম অনুযায়ী মৃতদেহকে মাংরুদামে দাহ করা হতো। মধুপুরের চুনিয়াসহ আশপাশের ১৩টি গ্রামের টেলকীতেই রয়েছে একমাত্র মাংরুদাম। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেল, সেখানে আরও রয়েছে মৃত মান্দিদের স্মরণে বানানো স্মৃতিস্তম্ভ, যা ‘খিম্মা’ বলে পরিচিত। এসব খিম্মায় পূর্বসূরিদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আদিবাসী মান্দিরা।

জনিক নকরেকের সঙ্গে কথা হচ্ছিল চুনিয়ায় তার বাড়ির আঙিনায়। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মানুষটির স্মৃতি এখনও টনটনে। তিনি বলেন, আমার অনেক আত্মীয়স্বজনকে এই মাংরুদামেই পোড়ানো হয়েছিল। বন বিভাগ বনের অনেক ক্ষতি করেছে। এখন এই শ্মশানটি ধ্বংস করতে চাচ্ছে। টেলকীতে মাংরুদামটি নষ্ট করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। বন বিভাগের এমন কাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বর্তমান প্রজন্মকে এটা প্রতিরোধ করতে আহ্বান জানান।

মান্দিদের ঐতিহ্যবাহী এই স্থান সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব উল্লেখ করে বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংসদ (বাগাছাস) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জন জেত্রা বলেন, ‘পর্যটন আর উন্নয়নের নামে মান্দিদের প্রাচীন মাংরুদাম দখল করে স্থাপনা নির্মাণ দ্রুত বন্ধ করতে হবে। আমি খ্রিষ্টান হলেও নিজের ভেতরে সাংসারেক ধর্মটি লালন করি।’

বন বিভাগের মধুপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাবিব উল্লাহ জানান, আরেবোরেটাম বাগানের সীমানা প্রাচীর ও নিরাপত্তারক্ষীদের জন্য একটি ভবন করা হবে সেখানে। তার দাবি, ‘এর ভেতরে কোনো শ্মশান নেই।’ সীমানাপ্রাচীর হলে গারোরা ওই জমি দখল করে খেতে পারবে না, এই ভেবে প্রতিবাদ করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

তবে আরবোরেটামের ভেতরে শ্মশান আছে- বিষয়টি তখন কেউ জানায়নি উল্লেখ করে টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ জহিরুল হক বলেন, ‘গারো নেতারা অনাপত্তি জানানোর পর আমরা কাজ শুরু করেছি। এখন সীমানাপ্রাচীর করতে যাওয়ায় আপত্তি উঠেছে।’

প্রাকৃতিক বনের কোথায় কী রয়েছে তা আদিবাসীরা যেমনটা জানে; বন বিভাগের তেমনটা জানার কথা নয় বলে প্রাণ-প্রকৃতি বিষয়ক গবেষক পাভেল পার্থ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতি পূজারি আদিবাসীরা গভীর জঙ্গলের ভেতর পূজা করত। সে স্থানগুলোকে বলা হতো পবিত্র অঞ্চল (মিদ্দি আসং)। বনের মানুষ জানে সেগুলো কীভাবে রক্ষা করতে হয়। প্রাকৃতিক বনের বাস্তুসংস্থান ঠিক রাখতে হবে। বন বিভাগের এ ধরনের প্রকল্প আদিবাসীদের সঙ্গে বন বিভাগের দূরত্বই শুধু বাড়াবে।’

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক ফারহা তানজীম তিতিল বলেন, ‘বনের একাংশে সরকারের বন বিভাগ নামক বিভাগটির জন্মের বহু আগে সাংসারেকদের যে মাংরুদামটি গড়ে উঠেছিল, সেটি রক্ষায় সবাইকে জোর গলায় প্রতিবাদ করতে হবে। এটি শুধু সাংসারেকদের নয়, শুধু মান্দিদের নয়; আমাদের সবার দায়। ধরে নিলাম, বাংলাদেশে বসবাসকারী সাংসারেক ধর্মের মান্দিরা নেই হয়ে গেল। তাই বলে তাদের শ্মশানটিও ধ্বংস করে ফেলতে হবে! এই শ্মশান তো স্মৃতিচিহ্ন হয়ে সাক্ষী দেবে- একদা বাংলাদেশে সাংসারেক নামে একটি ধর্ম ছিল।’

পাকিস্তান সরকার ১৯৬২ সালে মধুপুরের শালবনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে। তখনই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বসবাসরত আদিবাসীরা। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে জন্ম হয় জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের। ২০০০ সালে বন বিভাগ মধুপুরে ইকোপার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিলে আন্দোলনে নামে আদিবাসীরা। ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি আন্দোলন চলাকালে বনরক্ষী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে পীরেন স্নালের মৃত্যু হয়। আহত হয় অর্ধশত আদিবাসী। এ বছরের মার্চে বন বিভাগ সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করতে গেলে ফের প্রতিবাদে নামে আদিবাসীরা। বন্ধ করে দেয় নির্মাণকাজ।

বন বিভাগ জানায়, ২০১৮ সালে মধুপুর জাতীয় উদ্যানের ‘স্থানীয় নৃগোষ্ঠী জনগণের সহায়তায় ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন ও টেকসই ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি প্রকল্প শুরু হয়। এ বছরের জুনে শেষ হবে প্রকল্পের মেয়াদ। প্রকল্পের আওতায় ‘কমিউনিটি ফরেস্ট ওয়ার্কার’ হিসেবে ৭০০ জন গারোকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কিছু স্থাপনা ও আরবোরেটাম বাগানও রয়েছে প্রকল্পের আওতায়।

বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অলিক মৃ বলেন, ‘আদিবাসীরা প্রকৃতি পূজারি বলে বন ও প্রকৃতির সঙ্গে আদিবাসীদের একটা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আমরা আপত্তি জানানোর পরও আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রাচীন মাংরুদামের ওপর সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই নির্মাণ কাজ বন্ধ না হলে আমরা আমাদের আন্দোলন জোরদার করব।’

মধুপুরে বসবাসকারী মান্দিরা জানায়, ১৮টি আদিবাসী সংগঠন সভা করে প্রকল্পের নামে মাংরুদাম ধ্বংসের চরম বিরোধিতা করে। প্রকল্পে স্থানীয় নৃগোষ্ঠী জনগণের সহায়তার কথা উল্লেখ থাকলেও আদিবাসীদের সঙ্গে সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। ২৯ এপ্রিল মাংরুদাম বিষয়ে নিজেদের দাবিগুলো জানাতে বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে যান জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের নেতারা। কর্মকর্তাদের মৌখিক আশ্বাসে সংগঠনের সভাপতি ইউজিন নকরেক ও সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীণ চিসিমসহ বেশ কয়েকজন নেতা ফেরার পথে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের উদ্বোধন করে ফেরেন। তবে সংগঠনের বেশিরভাগ নেতাকর্মীসহ বসবাসকারী মান্দিরা বিষয়টির প্রতিবাদ জানান।

জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীণ চিসিম বলেন, ‘প্রকল্পের নামটি নিয়ে আমাদের আপত্তি ছিল। যেহেতু জমি বন বিভাগের এবং আদিবাসী অধ্যুষিত বলে একটি রাস্তা ও অন্যদের দাবি অনুযায়ী মাংরুদামটি আলাদা করে প্রাচীর করে দেওয়ার প্রস্তাব ছিল আমাদের।’ স্মারকলিপি দিতে গিয়ে বন বিভাগ তা মেনে নেওয়ায় উদ্বোধনে তারা অংশ নিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।

মধুপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান যষ্টিনা নকরেক বলেন, ‘সংগঠনের নেতারা মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আমাকে রেঞ্জ অফিসে ডাকা হয়। বৃহত্তর স্বার্থে নেতারা সিদ্ধান্ত দিলে আমিও উপস্থিত ছিলাম প্রাচীর উদ্বোধনে।’ তবে আগেই কাজের অনুমোদন না দিয়ে সবার শ্মশানটি রক্ষায় অটল থাকা উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জয়েনশাহীর সিনিয়র সহসভাপতি রিচার্ড বিপ্লব সিমসাং বলেন, ‘বাপ-দাদাদের লাশগুলোকে যেখানে পোড়ানো হতো সেটিই দখল করে ফেলছে বন বিভাগ। বন বিভাগের সঙ্গে আমাদের কিছু দালাল মিলে এমনটি করছে। আমাদের অন্ধকারে রেখে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণের কাজটি করে ফেলতে চাইছে তারা। আমরা এটি কোনোভাবেই করতে দেব না।’

পরিবেশ

ছাদ বাগানের জন্য কয়েকটি টিপস

ছাদ বাগানীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। টবে, ড্রামে গাছ লাগানো হয়। কেউ ফল, কেউবা সবজির গাছ লাগান। কেউ সফল হন। কেউ সফল হন না। ছোট ছোট কিছু ভুল বাগানীরা করে থাকেন। সে কারণে যত্ন নিলেও ফল আসে না। এখানে ছাদ বাগানীদের জন্য কিছু টিপস দেয়া হলো, যা মানলে সফলতা পাওয়া সহজ হতে পারে।

প্রথমেই মনে রাখতে হবে, টবে বা ড্রামে গাছ লাগালে তাকে খাবার দিতে হবে। প্রকৃতিতে বিদ্যমান গাছের মতো সে খাবার সংগ্রহ করতে পারে না। রোগ-বালাই হলো কিনা সেটাও বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।

১. মাটির সাথে অবশ্যই কিছু কোকোপিট মেশাবেন। গাছের গোড়া স্যাতস্যাতে হতে দিবেন না। স্যাতস্যাতে হলে অসংখ্য রোগ হবে। মাটি ভেজা থাকবে তবে স্যাতস্যাতে না। কেকোপিট মেশালে পানি কম দিলেও হবে। কোকোপিট (নারকেলের ছোবলার গুড়া) পানি ধরে রাখে। অতি বৃষ্টি হলে গোড়ায় পানি জমতে দেয় না। হালকা হওয়ায় ছাদে ওজনের চাপ পড়ে না। এছাড়া কোকোপিটে কিছু পুষ্টি উপাদান আছে। যা গাছের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। কোকোপিটে চারা দ্রুত গজায়, বড় হয়। মাটির চেয়ে কোকোপিটে চারা ভালো হয়।

২. গাছের জন্য বিরিয়ানি হলো সরিষার খৈল-পচা পানি। মাটির হাড়িতে খৈল পচাতে হবে। কমপক্ষে ৫ দিন। ৭ দিন কিংবা বা ১৫ দিন হলে উত্তম। অল্প পানিতে পচিয়ে তার সাথে আরো পানি মিশিয়ে দিতে হবে। এটি গাছের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটু গন্ধ হয়, তাই অল্প একটু গুড় দিতে পারেন। ছাদে হাড়িতে পচালে বাসায় গন্ধ আসবে না। বৃষ্টির সময় খৈল-পচা পানি দেবেন না। পুকুরের নিচে থাকা পাক কাদা গাছের জন্য খুব উপকারী।

৩. আমরা জানি, মাটিতে অসংখ্য ক্ষতিকর ছত্রাক থাকে। যা গাছকে মেরে ফেলার জন্য যথেস্ট। তাই মাটি রেডি করার সময় কিছুটা বায়োডামা সলিট দিবেন। এটি উপকারী ছত্রাক। মাটিতে ক্ষতিকারক উপাদানগুলো মেরে ফেলে। আবার জৈব সারের কাজও করে। গাছের জন্য মাটি হবে ঝুরঝুরে, হালকা।

৪. যাই লাগান না কেন, ভালো জাতের বীজ কিনা নিশ্চিত হয়ে নেবেন। ভালো বীজে ভালো ফসল হবে। নতুবা যতই যত্ন নেন না কেন, সব পরিশ্রম বেলাশেষে জলে যাবে। বীজ থেকে নিজে চারা করা উত্তম। কারণ বাজার থেকে যে চারা কিনবেন সেটার জাত ভালো হবে সে নিশ্চয়তা কোথায়? ছত্রাকনাশক দিয়ে বীজ শোধন করে নেয়া উত্তম। পদ্ধতি হলো- ছত্রাকনাশক দেয়া পানিতে কিছুটা সময় বীজ ভিজিয়ে রাখতে হবে। ম্যানসার, মেটারিল দুটি ছত্রাকনাশক।

৫. গাছ বেশি তো ফলন বেশি- এটি ভুল ধারণা। অল্প জায়গায় বেশি গাছ লাগানো যাবে না। গাছ পাতলা করে লাগাতে হবে। বেশি লাগালে গাছ প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে না। একটি ফলের ক্রেটে মাত্র দুটি গাছ। একটি টবে একটি গাছ। ক্রেট বা টবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

৬. ছাদে মাচা দেয়া সমস্যা। কারণ ঘুঁটি থাকে না। এ জন্য ফলের ক্রেটের চারপাশে লাঠি বেঁধে সহজে মাচা দেয়া যায়। লতাপাতা জাতীয় গাছ লাগানোর পাত্র একটু গভীর হলে উত্তম। গাছের জন্য সবচেয়ে বেশি ভালো জৈব সার হলো পাতা-পচা সার, তারপর ভার্মি কম্পোস্ট, তারপর গোবর সার। পাতা-পচা সার সহজলভ্য নয়। দাম বেশি। কিন্তু ভার্মি কম্পোস্ট সহজলভ্য। মাটির সঙ্গে মিনিমাম ৪০% জৈব সার দেয়া উত্তম।
৭. নিম কীটনাশককে ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খুব অপছন্দ করে। এটি দিলে তারা বিরক্ত বোধ করে। গাছে বাসা বাঁধতে পারে না। প্রতি সাত দিনে একবার সব গাছের পাতায় নিম কীটনাশক স্প্রে করতে হবে। মাসে একবার ইপসম সল্ট স্প্রে করে দেয়া উত্তম। একইভাবে মাসে একবার পানির সঙ্গে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড মিশিয়ে স্প্রে করা ভালো।

৮. ডাটা, পুইশাক, লালশাক, ধনেপাতা এসব লাগাতে পারেন। মাত্র ২৫ দিনে খেতে পারবেন। লালশাক লাগালে নেট দিয়ে ঘিরে দেবেন। শাকপাতা লাগালে দ্রুত আউটপুট পাবেন। যা আপনাকে প্রেরণা দেবে। পুইশাক গাছের পাতায় দাগ হলে পাতা কেটে দিন। অথবা ছত্রাকনাশক স্প্রে করেন। অথবা গাছ উঠিয়ে আবার লাগান। ইউরিয়া সার দিলে পুইশাক দ্রুত বাড়বে। শশা গাছের বৃদ্বির জন্য ডিএপি সার দিলে ভালো হবে। শশা গাছে ছাড়া ছাড়া ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হয়। খুব রোদ, গাছের গোড়ায় মালচিং করে দিয়ে উত্তম ফল মিলবে। মালচিং হলো গাছের গোড়ায় বিশেষ পলিথিন কিংবা শুকনো পাতা, খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া।

৯. ফুল আসার পরে প্রানোফিক্স অথবা মিরাকুরান গাছের পাতায় শেষ বিকালে স্প্রে করবেন। বাসায় দুইটি গ্রুপের ছত্রাকনাশক রাখা ভালো। যেমন- ম্যানসার, মেটারিল। ১৫ দিনে একবার স্প্রে করবেন। এগরোমিন্ড গোল্ড অনুখাদ্য বা অন্য কোনো অনুখাদ্য বাসায় রাখতে হবে। মাসে কমপক্ষে একবার স্প্রে করবেন। অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টি, খাদ্যের অভাব, গাছ রোগাক্রান্ত, আবহাওয়া দ্রুত আপডাউন করা ইত্যাদি কারণে ফুল ঝরে পড়তে পারে। আবার পরাগায়ন না হলে ঝরে পড়তে পারে। এ জন্য হাতের মাধ্যমে পরাগায়ন করতে হবে। পুরুষ ফুলের পরাগদণ্ড নারী ফুলে গর্ভে ঘষে দিতে হবে।

১০. ছাদ বাগানে গাছ মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ পানি বেশি বা কম দেয়া। যতটুকু লাগে ঠিক ততটুকু পানি দিতে হবে। কোন গাছের কি চাহিদা, রোগ একটু স্টাডি করলে সহজে সফল হতে পারবেন।

১১. গাছের পাতার নিচে খেয়াল করবেন। বেগুন গাছের পোকা মারার জন্য সেক্স ফোরেমান ফাঁদ লাগাবেন। ডগা ছিদ্র বা ফল ছিদ্র হলে সাইপারমেত্রিন গ্রুপের কীটনাশক দিতে হবে। একটি বেগুন গাছ অনেক দিন ফল দেয়। ঢেড়স গাছ বেশি রোদ পড়ে এমন জায়গায় লাগাবেন। বেগুন, ঢেড়স, লালশাক, পুইশাক, ধনেপাতা, ডাটা শাক- এসব গাছের খুব যত্ন করতে হয় না।

১২. রসুন আর লবঙ্গ বেটে সেই পানি গাছে স্প্রে করলে পোকা কম আসবে। মরিচ গাছে নেপথলিন বেঁধে দিন, পোকা কম আসবে। পাতা কোকড়ালে ভার্মিটেক কিংবা এবোম কীটনাশক দিন। কোকড়ানো পাতা ফেলে দিন। মরিচ গাছে দশ দিন পর পর ডায়মেথট গ্রুপের (যেমন টাফগর) কীটনাশক দিলে উপকার হবে। সবকিছু করছেন, তারপরও কাজ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে গাছের জায়গা বদল করেন, উঠিয়ে অন্যত্র লাগান।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

দৈনন্দিন

নিপাহ্‌ ভাইরাসঃ খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়

নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
নিপাহ্‌ ভাইরাস খেজুরের রস খাওয়ার আগে সতর্ক থাকতে যা করণীয়
খেজুরের রস সংগ্রহের প্রক্রিয়া।

শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।

আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।

নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক

খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।

দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।

মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।

সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।

কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্‌ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

জেনে নিন এই মরসুমে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ আপনার জন্য সেরা

দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই বর্ষার (Monsoon 2021) প্রভাবে চলছে বৃষ্টিপাত। এসময় কৃষকেরা খারিফ শস্য (Kharif Crops) বপনে তৎপর হয়ে ওঠেন। এই খরিফ মরসুমে কৃষকভাইরা সাধারণত অঞ্চলভেদে ধান, অড়হর, সোয়াবিন সহ বিভিন্ন চাষে মনযোগ দিয়ে থাকেন ৷ তবে এসব ছাড়াও, ঔষধি গুন সমৃদ্ধ (Medicinal Crops) গাছ চাষে বর্ষায় যে কতটা লাভ হতে পারে সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো জানেন না৷

বিশেষ করে বর্ষাকালেই এমন বহু ঔষধি গুন সম্পন্ন গাছ রয়েছে যাদের চাষ হতে পারে লাভজনক৷

বর্ষাকালে কোন কোন ঔষধি উদ্ভিদের চাষ করা যেতে পারে অথবা এই চাষ কীভাবেই বা করা যাবে সে বিষয়ে সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণেই অনেকের কাছে বিষয়টি অধরা৷ চলুন এই প্রতিবেদনে এমনই কিছু গাছ নিয়ে আলোচনা করা যাক যা কৃষকদের জন্য হতে পারে লাভদায়ক৷ তবে সঠিক সময়ে, সঠিক রোপন, সেচ, কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজন এগুলিতে, না হলে এর ওপর খারাপ প্রভাব পড়তে পারে৷

অশ্বগন্ধা –

বর্ষায় এর চাষ ভালো৷ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করতে পারেন৷ এর বিভিন্ন জাত রয়েছে৷ উন্নত মানের গাছের চাষে কৃষকের লাভের পরিমাণও বৃদ্ধি পেতে পারে৷ উল্লেখ্য, প্রতি হেক্টরে ৫ কিলোগ্রাম বীজ ব্যবস্থা করতে হবে৷ যদি কেউ ১ হেক্টর জমিতে অশ্বগন্ধার চাষ করতে চায় তাহলে তাকে প্রায় ৫০০ বর্গমিটারে নার্সারি তৈরি করতে হবে৷ প্রায় ১ সেন্টিমিটার গভীরে বীজ বপন করতে হবে৷

শতমূলী –

শীত বাদ দিয়ে বছরের যে কোনও সময়ে এই গাছের চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে এই চারা রোপন করলে সহজেই তা বেড়ে উঠতে থাকে৷ তবে বীজ বপনের আগে বীজ ১ দিন পর্যন্ত হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হয়৷

যষ্টিমধু –

জুলাই থেকে অগস্ট পর্যন্ত এর চাষ করা হয়৷ আর তাই জুন থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু করে দেন কৃষকেরা৷ জলনিকাশি ব্যবস্থা উচ্চমানের হওয়া প্রয়োজন এই গাছ চাষের জন্য৷ মনে রাখতে হবে এর চাষের আগে জমিতে কমপক্ষে ১৫ টন গোবর সার দেওয়া প্রয়োজন, এরপরেই এটি চাষ করা উচিত৷

ঘৃতকুমারী –

এর ভালো উৎপাদনের জন্য জলনিকাশি ব্যবস্থা ঠিক রাখতে হবে৷ এই ধরনের ঔষধি গুনসম্পন্ন গাছ শীতকাল বাদ দিয়ে যে কোনও সময় চাষ করতে পারেন৷ বর্ষাকালে দূরত্ব রেখে বীজ বপন করতে হবে৷ কম সময়ের মধ্যেই ব্যবহারোপযোগী হয়ে ওঠে এগুলি৷

অগ্নিশিখা বা কলিহারি –

এটি চাষের জন্য কৃষকেরা জুন মাসেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন৷ জুলাইয়ে ভালো বৃষ্টিতে এর চাষ শুরু করা যেতে পারে৷ উল্লেখ্য, ১ হেক্টর জমির জন্য প্রায় ১০ ক্যুইন্টাল কন্দের প্রয়োজন৷ এটি চাষের আগেও জমিতে গোবর সার প্রয়োগ করে তা প্রস্তুত করে নিতে হবে৷

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

পরিবেশ

শিখে নিন টবে দারুচিনির চাষের কৌশল

পৃথিবীতে ভোজ্য মসলা যতরকম আছে তারমধ্যে দারুচিনি সবথেকে উল্লেখযোগ্য। এই প্রাচীনতম মসলা বহুদিন ধরে ওষধি হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে চলেছে। এছাড়াও খাবারে স্বাদ বাড়ানো থেকে শুরু করে, পানীয় এবং তরল মশলাদার খাবারে স্বাদ বাড়ানোর জন্যও এই দারচিনির ব্যবহার হয়। এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গের সাথে সাথে দারুচিনির নামও মসলা হিসেবে একই পংক্তিতে উচ্চারিত হয়। বহু কৃষক দারুচিনির চাষ করে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। বাজারে এই দারুচিনির চাহিদা প্রচুর পরিমানে থাকায়, এই চাষে ভালো লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও সৌখিন মানুষেরাও ভালোবেসে দারুচিনির চাষ বাড়িতে করে থাকেন। দারুচিনি গাছের বাকল, ফুল, কুঁড়ি, পাতা, ফল, শেকড় সবকিছুই কাজে লেগে যায়। দারুচিনি গাছ বাড়িতে চাষ করতে গেলে ঘরে ছাদে দুই জায়গাতেই চাষ করা যায়।

মনে রাখতে হবে এই চাষ করতে গেলে উপযুক্ত পরিমানে রোদ দরকার। বাংলার জলবায়ুতে মূলত শীতকালে এই চাষ করা সবথেকে ভালো। জানুয়ারি মাসে দারুচিনি গাছে ফুল ফোটা আরম্ভ করে, এবং এই গাছের ফল পাকতে আরম্ভ করে জুলাইয়ে। সেইসময়ই ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে বাগানে বা টবে রোপন করে দেওয়া উচিত।

প্রয়োজনীয় রোদ (Sunlight)

কড়া সূর্যালোক দারুচিনি জন্য প্রয়োজনীয়, তাই এটি পর্যাপ্ত রোদ পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দারুচিনি রোপন করতে গেলে রৌদ্রোজ্জ্বল স্থান যেমন জানালার ধারে, ব্যালকনি কিংবা ছাদের খালি স্থান ব্যবহার করতে হবে।

উপযুক্ত মাটি (Soil)

দারুচিনি চাষের জন্য ভাল মানের মাটি ব্যবহার করা আবশ্যক। বাগানের মাটি ব্যবহার না করাই ভালো, কেননা এতে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। অনে সময় আমরা আশেপাশ থেকে মাটি নিয়েই টব ভরে গাছ লাগানো হয়।  বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংবেদনশীল গাছগুলোতে এই উপায় কার্যকরী হয় না। নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভাল এমন মাটি ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে উত্তম নিষ্কাশনযুক্ত বেলে দোআঁশ মাটি ব্যবহার করা সবথেকে উত্তম। জেনে রাখা ভালো দারুচিনি খরা একদমই সহ্য করতে পারে না। মাটির বিকল্প হিসেবে ১৫% ট্রাইকোকমপোস্টযুক্ত কোকোডাস্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

বাইরে চাষ করার জন্য এক মিটার (৩০ সেন্টিমিটার গভীর) পর্যন্ত গর্ত করে মাটি দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ঘরের ভিতরে বা ছাদবাগানের দারুচিনি চাষের জন্য একটি বড় পাত্র প্রয়োজন হবে।

রোপন (Planting)

দারুচিনির বীজ সংগ্রহও করা যায় অথবা নার্সারি থেকে দারুচিনির গাছ কিনেও আনা যায়।

বাইরে চাষের ক্ষেত্রে

দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে ১ মিটার x ১ মিটার এবং ৩০ সেমি গভীরতায় খনন করে মাটি দিয়ে গর্তটি পূরণ করতে হবে।

ঘরের মধ্যে টবে রোপনের ক্ষেত্রে

নিচে গর্ত সহ বড় সিরামিক পাত্র (৬০ x ৫০ সেমি) ব্যবহার করতে হবে। পাত্রটি মাটি বা কোকোডাস্ট দিয়ে পূরণ করে নিতে হবে। ৩০ সেন্টিমিটার গভীরতা এবং ৩০ সেন্টিমিটার প্রস্থের একটি গর্ত তৈরি করতে একটি বাগান ট্রোয়েল ব্যবহার করে নেওয়া ভালো। বীজ ব্যবহার করলে  ১.৫ সেন্টিমিটার গভীর গর্ত তৈরি করে নেওয়া উচিত। এবার গাছটি গর্তের মধ্যে রেখে মাটি দিয়ে চাপা দিতে হবে। বীজ ব্যবহার করলে প্রতি ১.৫ সেমি গর্তে একটি করে বীজ পুঁততে হবে এবং মাটি দিয়ে বীজটি ঢেকে দিতে হবে।

মাটি সবসময় ভেজা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জল দিতে হবে। দারুচিনি গাছ পাত্রে রোপন করার পর, টবের নিচের গর্ত থেকে জল বের না হওয়া পর্যন্ত জল দিতে হবে। টবের উপরের ৫ সেন্টিমিটার শুকিয়ে গেলেই আবার গাছটিকে জল দিতে হবে।

গাছের পরিচর্যা (Caring)

দারুচিনি গাছে নিয়মিত সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রথম বছর ৫০ গ্রাম টিএসপি, ৭৫ গ্রাম এমওপি ও ৫০ গ্রাম ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিবছর ২-৩ কেজি ট্রাইকোকম্পোস্ট ও সার প্রয়োগ শেষে একই হারে টিএসপি, এমওপি ও ইউরিয়া দিতে হবে।

দারুচিনি প্রথম ধরতে দুই থেকে তিন বছর সময় নেয় এবং তার পরে প্রতি দুই বছর পরপরই ফসল দিতে থাকে। দারুচিনি গাছ কম করে ১০-১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। তাই একে নিয়মিত করে ছোট রাখতে হবে। পাঁচ বছর বয়সী দারুচিনি গাছ থেকে নিয়মিত দারুচিনি সংগ্রহের ডাল পাওয়া সম্ভব। দারুচিনি ব্যবহার করার জন্য যে শাখাগুলি কাটা হবে সেগুলি থেকে বাকল তুলে নিতে হবে, বাকলগুলি ব্যবহার করার আগে জলে ভালোভাবে ভিজিয়ে নেওয়া উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

টবে লাগান মিষ্টি তেঁতুল গাছ

পৃথিবীতে জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, হারিয়ে যাচ্ছে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদ বৈচিত্র। চাষবাসের জমিরও সংকুলান ঘটছে সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে। গগনচুম্বী বাড়ি ঘিরে ফেলছে সমস্ত ফাঁকা জমিন। শখ করে মানুষ খোলা জায়গায় যে গাছ লাগবে অথবা ফল-ফুলের চারা সেই উপায়ও আর নেই। গাছ লাগানোর জন্য সামান্য জায়গাও ফাঁকা থাকছে না আর। তবে আমাদের করণীয় কী? বৃক্ষরোপন কি তবে অচিরেই বন্ধ হয়ে যাবে। বেঁচে থাকার জন্য তো গাছ লাগাতে হবেই। বাড়ির একটুকরো বারান্দা অথবা ব্যালকনিতেও সুন্দর ভাবে ইচ্ছা করলে গাছ লাগানো যায়। বাড়ির ছাদেও বানানো যায় সুন্দর বাগিচা। শহরের মানুষদের জন্য ছাদ বাগানের কোনও বিকল্পও নেই। বাড়ির মধ্যেকার ব্যালকনি অথবা ছাদের একটুকরো জমিতেও, ইচ্ছা করলে টবে চাষ করা যায় বিভিন্ন ফুলের ও ফলের গাছ।

শাকসবজি, পেয়ারা, লেবু প্রভৃতি দেশীয় গাছ টবে বাড়তে দেওয়া থেকে শুরু করে বর্তমানে বহু বিদেশী গাছের চারাও মানুষ ব্যালকনি অথবা ছাদে চাষ করছেন। তার মধ্যে থাই মিষ্টি তেঁতুল টবের চাষ পদ্ধতি হিসাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। প্রথমত মিষ্টি তেঁতুলের চাষ করতে গেলে, নার্সারি থেকে এই বিশেষ তেঁতুলের সঠিক বীজ নিয়ে আনতে হবে। তবে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কলম পাওয়া একটু দুষ্কর কাজ। বুঝে সঠিক চারা নিয়ে আসা বাগান মালিকের উপরেই বর্তায়।

থাই মিষ্টি তেঁতুলের ফুল থেকে ফল ধরতে প্রায় ৭ মাস সময় লাগে। বছরে দু’বার থাই মিষ্টি তেঁতুলের গাছে ফল ধরে। প্রথমবার বর্ষাকালে এবং দ্বিতীয়বার শীতকালে। এই গাছের পরিচর্যা আলাদা করে করার কোনও দরকার পড়ে না। গাছের যত্নআত্তি নিতে হয় ঠিকই, কিন্তু তা বলে, আলাদা করে কোনও বিশেষ যত্ন নিতে হয় না।

গাছ লাগানোর পদ্ধতি (Planting):

থাই মিষ্টি তেঁতুল চাষের জন্য আদর্শ মাটি হল, দো-আঁশ বা বেলে দো-আঁশ মাটি। এই দু’টি মৃত্তিকার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিন। তারপর বেছে নেওয়া মাটির দুই ভাগ অংশের সাথে গোবর, ১০০ গ্রাম, টিএসপি ১০০ গ্রাম, পটাশ, ২৫০ গ্রাম, হাড়ের গুঁড়ো এবং ৫০ গ্রাম সরিষার খোল একসঙ্গে মিশিয়ে ২০ ইঞ্চি মাপের বড় টবে জল মিশিয়ে রেখে দিতে হবে। ১০ থেকে ১২ দিন পর টবের মাটি ভালো করে খুঁচিয়ে দিয়ে আরও ৪-৫ দিন রেখে দিতে হবে। ৪ থেকে ৫ দিন বাদে মিষ্টি তেঁতুলের একটি ভালো চারা ওই টবে লাগান।

পরিচর্যা(Caring):

চারা লাগানোর প্রথম কয়েক মাস তেমন যত্নের দরকার পড়বে না। অবশ্যই গাছে এই সময়টুকু পর্যাপ্ত জলের যোগান, এবং আগাছা পরিষ্কারের কাজ করতে হবে।  ছয় মাস চারা লাগানোর সময়সীমা ফুরোলেই ১ মাস বাদে বাদে গাছে সরষের খোল মিশ্রিত পচা জল দিতে হবে। মনে রাখতে  হবে খোল দেওয়ার আগে গাছের মাটি খুঁচিয়ে নিতে হবে।

রোগ দমন (Disease management):

সাধারণত থাই মিষ্টি তেঁতুল গাছে পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায় না। কিন্তু বর্ষাকালে অনেক সময় তেঁতুল গাছে ছত্রাক হানা দেয়। এর ফলে তেঁতুল ফেটে যায়। এই অসুবিধার থেকে গাছকে বাঁচাতে হলে, বর্ষাকাল আসার আগেই ভালো ছত্রাকনাশক ওষুধ ১০ দিন অন্তর গাছে স্প্রে করে ছড়িয়ে দিতে হবে।

বাংলার বেজায় টক তেঁতুলের সঙ্গে থাই মিষ্টি তেঁতুলের কোনও তুলনাই চলে না। অত্যন্ত মিষ্টি খেতে এই তেঁতুল থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় চাষ প্রভূত পরিমাণে হলেও, আমাদের রাজ্য এই ফলের চাষ এখনও ততটা গতি পায়নি। কিন্তু আপনি আপনার ব্যালকনি অথবা ছাদে সহজেই এই থাই তেঁতুলের গাছ লাগাতে পারেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com