ভাত ছাড়া বাঙালি অচল, একথা বললে বোধ হয় বাড়িয়ে বলা হবে না। কারণ সারা দিনে এটা-সেটা যাই খান না কেন, ভাত না খেলে যেনো মনে হয়, কিছুই খাওয়া হয়নি। অনেকেই বলেন, ভাত যদি খেতেই হয়, তবে লাল চালের ভাত খাবেন।
একটা সময় ছিল যখন লাল চাল কেবল নিম্নআয়ের মানুষের খাবারের তালিকায় ছিল। আর এই লাল চাল খেয়েই নিম্ন আয়ের লোকজন সুস্থ-স্বাভাবিক, বলা চলে নীরোগ জীবনযাপন করতেন। সময়ের পালা বদলে এখন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্তরা অনেক বেশি স্বাস্থ্য সচেতন। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতার অংশ হিসাবে অনেকেই খাবার তালিকায় লাল চাল যোগ করছেন। তাহলে লাল চাল কি সাদা চালের চেয়ে ভালো, কেন খাবেন লাল চাল, জেনে নিন
লাল চালের ভাত ও সাদা চালের ভাতে যত তফাৎ
লাল চালে থায়ামিন ০.৬ মিলি গ্রাম, সাদা চালে থায়ামিন ০.১ মিলি গ্রাম। লাল চালে রিবোফ্লাভিন ০.১৪ মিলি গ্রাম, সাদা চালে রিবোফ্লাভিন ০.০৬ মিলি গ্রাম।লাল চালে নায়াসিন ৫ মিলি গ্রাম, সাদা চালে ২ মিলি গ্রাম। লাল চালে ভিটামিন বি৫ ১.৩ মিলি গ্রাম আর সাদা চালে ০.৭ মিলি গ্রাম।সাদা চালে আয়রন ২.২ মিলি গ্রাম, লাল চালে আয়রন ৪.৭ মিলি গ্রাম।
সাদা চালে সোডিয়াম ৬.৫ মিলি গ্রাম, ১৩ মিলি গ্রাম। লাল চালে ম্যাঙ্গানিজ ৩.২ মিলি গ্রাম আর সাদাতে ২.৫ মিলি গ্রাম। লাল চালে ম্যাগনেশিয়াম ১৩৩ মিলি গ্রাম আর সাদাতে ১২ মিলি গ্রাম। পটাশিয়াম ৩২০ মিলি গ্রাম হচ্ছে লালে, সাদাতে ১২০ মিলি গ্রাম। ভিটামিন-ই ২ মিলি গ্রাম লাল চালের ভাতে, সাদাতে০.৩ মিলি গ্রাম। এবং সাদা চালের ভাতে ৭ মাইক্রো গ্রাম সেলেনিয়াম থাকে। পক্ষান্তরে লাল চালের ভাতে সেলেনিয়াম থাকে ৭৮ মাইক্রো গ্রাম।
কেন খাবেন লাল চাল
লাল চালে প্রচুর অ্যানথোসায়ানিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। যা শরীরে প্রদাহ ও অ্যালার্জি কমায়। পাশাপাশি ক্যানসারের ঝুঁকি এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। তাই যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্যও সাদা চালের চেয়ে লাল চালের ভাতই ভালো।লাল চালে রয়েছে সেলেনিয়াম। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।আর পলিশ করা সাদা চালে খুবই সামান্য পরিমাণে সেলেনিয়াম থাকে।লাল চালে যে পরিমাণ আয়রন রয়েছে তা রক্ত শূন্যতায় ভোগা মানুষের জন্য ম্যাজিকের মতো কাজ করে। লাল চাল ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও খুব উপকারী।হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে সাহায্য করে লাল চাল। এ জন্য আবার তিনবেলা প্লেট ভরে লাল চালের ভাত খেলে কিন্তু হবে না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যেটুকু সাদা ভাত খাওয়া প্রয়োজন সেটুকু লাল চালের ভাত খেতে পারেন।
লাল চালে সামান্য পরিমাণে ক্ষতিকর ফাইটিক অ্যাসিড আছে। তাই লাল চালের ভাত খাওয়ার সময় বেশি আয়রন ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো। কারণ এতে হজমে সমস্যা হতে পারে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন