আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ইসলাম

পরকালে মানুষ নিজেদের ব্যাপারে যেসব আক্ষেপ করবে

মৃত্যু পরবর্তী জীবনে মানুষ দুনিয়ার হিসাব-নিকাশ দেবে। সেখানে নিজ নিজ কৃতকর্মের ব্যাপারে আল্লাহ ছাড়া কোনো সাহায্যকারী থাকবে। অপরাধীরা সেখানে ৯টি আক্ষেপ, অনুশোচনা ও আকাঙক্ষা করবে। কিন্তু সেদিন তা কোনো কাজে আসবে না।

কেননা এ কথাগুলো সত্য ও সুস্পষ্ট যে, জন্মের পর মানুষের মৃত্যু হবে সুনিশ্চিত। পরকালে মানুষের দুনিয়ার জীবনের বিচার-ফয়সালা অনুষ্ঠিত হবে, তাও সুনিশ্চিত। তারচেয়ে আরও বেশি সুনিশ্চিত যে, মৃত্যুর পর মানুষ আর দুনিয়ায় আসতে পারবে না।

সুতরাং পরকালীন জীবনে মানুষ যে আক্ষেপ, অনুশোচনা ও আকাঙ্ক্ষা করবে, আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমেই তা তুলে ধরেছেন। যাতে মানুষ এসব বিষয়ে সতর্ক হতে পারে। নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিতে পারে। পরকালের চিরস্থায়ী জীবনে সফলতা লাভ করতে পারে।

কেননা মৃত্যুর পর মানুষের এসব আক্ষেপ, অনুশোচনা কিংবা আকাঙক্ষার কোনো মূল্য নেই।  তাই পরকালের সুন্দর ও সফল জীবন লাভে কুরআনে বর্ণিত মানুষের মৃত্যু পরবর্তী ৯ আক্ষেপ তুলে ধরা হলো-

– মাটি হওয়ার আকাঙ্ক্ষা

মৃত্যুর পর নিজেদের আমলনামা তথা কৃতকর্ম দেখে অবাধ্যতাকারীরা ভয় পেয়ে যাবে। আর মৃত্যু যন্ত্রণা ও আজাব থেকে বাঁচতে আকাঙ্ক্ষা করবে-

– ذَلِكَ الْيَوْمُ الْحَقُّ فَمَن شَاء اتَّخَذَ إِلَى رَبِّهِ مَآبًا – إِنَّا أَنذَرْنَاكُمْ عَذَابًا قَرِيبًا يَوْمَ يَنظُرُ الْمَرْءُ مَا قَدَّمَتْ يَدَاهُ وَيَقُولُ الْكَافِرُ يَا لَيْتَنِي كُنتُ تُرَابًا

‘এই দিবস (পরকাল) সত্য। অতপর যার ইচ্ছা, সে তার পালনকর্তার কাছে ঠিকানা তৈরি করুক। আমি তোমাদেরকে আসন্ন শাস্তি সম্পর্কে সতর্ক করলাম, যেদিন মানুষ প্রত্যেক্ষ করবে যা সে সামনে (মৃত্যুর আগে) পাঠিয়েছে।

আর (সেদিন তা দেখে) কাফেররা বলবে- ‘হায়, আফসোস! আমি যদি মাটি হয়ে যেতাম।’ (সুরা নাবা : আয়াত ৩৯-৪০)

– নেক কাজ করার আক্ষেপ

দুনিয়াতে যারা পরকালকে অস্বীকার করতো। পরকালের নেয়ামতের বিষয়টি বিশ্বাস করতো না, তারা পরকালের জন্য নেক করতে না পারার জন্য মনে প্রাণে আক্ষেপ করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

كَلَّا إِذَا دُكَّتِ الْأَرْضُ دَكًّا دَكًّا – وَجَاء رَبُّكَ وَالْمَلَكُ صَفًّا صَفًّا – وَجِيءَ يَوْمَئِذٍ بِجَهَنَّمَ يَوْمَئِذٍ يَتَذَكَّرُ الْإِنسَانُ وَأَنَّى لَهُ الذِّكْرَى – يَقُولُ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي – فَيَوْمَئِذٍ لَّا يُعَذِّبُ عَذَابَهُ أَحَدٌ – وَلَا يُوثِقُ وَثَاقَهُ أَحَدٌ

‘এটা অনুচিত। যখন পৃথিবী চুর্ণ-বিচুর্ণ হবে আর আপনার পালনকর্তা ও ফেরেশতাগণ সারিবদ্ধভাবে উপস্থিত হবেন। এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে, সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে?

সে (আক্ষেপ করে) বলবে- ‘হায়, এ জীবনের জন্যে আমি যদি কিছু আগে পাঠাতাম!’

সেদিন তার শাস্তির মত শাস্তি কেউ দেবে না। আর তার বন্ধনের মত বন্ধনও কেউ দেবে না।’ (সুরা ফাজর : আয়াত ২১-২৬)

> আমল বা হিসাবের পরিবর্তে মৃত থাকার আকাঙ্ক্ষা

মুমিন মাত্র ডান হাতে আমলনামা আকাঙক্ষা করবে। কিন্তু অপরাধী অবিশ্বাসী লোকেরা পরকালে বাম হাতে আমল নামা পেয়ে আকাঙ্ক্ষা করবে, আমলনামা না পাওয়ার, হিসাব না পাওয়ার এমনকি পরকালে যেন তারা মৃত অবস্থায় থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيهْ – وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيهْ – يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ

যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো। আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব! হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত।’ (সুরা হাক্বকাহ : আয়াত ২৫-২৭)

তারপরই দুনিয়ার ব্যাপারে আফসোস করবে, হা-হুতাশ করবে। আর জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এসব বলতে থাকবে-

مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيهْ – هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيهْ – خُذُوهُ فَغُلُّوهُ – ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ – ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ – إِنَّهُ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ – وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ – فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ – وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍ – لَا يَأْكُلُهُ إِلَّا الْخَاطِؤُونَ

‘আমার ধন-সম্পদ আমার কোনো উপকারে এলো না। আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল। ফেরেশতাদের বলা হবে- এদের ধর, গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও। অতপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে। অতপর তাকে শৃঙ্খলিত কর, সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে। নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না। আর মিসকিনকে খাবার দিতে উৎসাহিত করত না। অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোনো সুহূদ নেই। আর কোনো খাদ্য নেই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতিত। গোনাহগার ব্যতিত কেউ এটা খাবে না।’ (সুরা হাক্বকাহ : আয়াত ২৮-৩৭)

> রাসুলের পরিবর্তে অন্যদের বন্ধু করার আফসোস!

অবিশ্বাসীরা পরকালের ভয়াবহ পরিণতি দেখে আফসোস করে বলবে- আমরা কেন দুনিয়াতে নবুয়তের স্বীকৃতি দেইনি? রাসুলকে বাদ দিয়ে আমরা যদি অন্যকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম তবে আমাদের এ করুণ পরিণতি হতো না। আল্লাহ তাআলা বলেন-

يَا وَيْلَتَى لَيْتَنِي لَمْ أَتَّخِذْ فُلَانًا خَلِيلًا

হায়, আমার দূর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ২৭-২৮)

> রাসুলের আনুগত্য করতে না পারার আফসোস!

إِنَّ اللَّهَ لَعَنَ الْكَافِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمْ سَعِيرًا – خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا لَّا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا – يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللَّهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا

নিশ্চয় আল্লাহ কাফেরদেরকে অভিসম্পাত করেছেন এবং তাদের জন্যে জলন্ত অগুন (জাহান্নাম) প্রস্তুত রেখেছেন। তথায় তারা অনন্তকাল থাকবে এবং কোনো অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না। যেদিন আগুনে তাদের মুখমণ্ডল ওলট-পালট করা হবে; সেদিন তারা বলবে-

হায়। আমরা যদি আল্লাহর আনুগত্য করতাম ও রসূলের আনুগত্য করতাম। ( সুরা আহজাব : আয়াত ৬৪-৬৬)

সেদিন এসব অবিশ্বাসীরা আল্লাহর কাছে তাদের নেতা তথা পথভ্রষ্টকারীদের ব্যাপারে অভিযোগ করবে আর তাদের দ্বিগুণ শাস্তির আবেদন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا – رَبَّنَا آتِهِمْ ضِعْفَيْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَالْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِيرًا

‘তারা আরও বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা,! আমরা আমাদের নেতা ও বড়দের কথা মেনেছিলাম, অতপর তারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের পালনকর্তা! আপনি তাদের দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদের মহা অভিসম্পাত করুন।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ৬৭-৬৮)

> রাসুলের অনুসরণের আকাঙ্ক্ষা

অবিশ্বাসীরা বিশ্বনবির অনুসরণ না করে তাদের নেতাদের অনুসরণ করার কারণে পরকালে আফসোস করবে। আর বলবে, আমরা দুনিয়াতে কেন বিশ্বনবিকে অনুসরণ করিনি! সেদিন তারা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অবলম্বন করার  আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে বলবেন-

وَيَوْمَ يَعَضُّ الظَّالِمُ عَلَى يَدَيْهِ يَقُولُ يَا لَيْتَنِي اتَّخَذْتُ مَعَ الرَّسُولِ سَبِيلًا

জালেম সেদিন আপন হস্তদ্বয় দংশন করতে করতে বলবে-

হায় আফসোস! আমি যদি রসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম।’ (সুরা ফুরকান : আয়াত ২৭)

> সফলতা লাভের আকাঙ্ক্ষা

দুনিয়াতে মুমিনরা বিপদাপদে পড়লেই কিছু অবিশ্বাসী বলে বেড়াতো যে, আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন, আমরা বিপদে পড়িনি। অথচ তারা সঠিক পথের অনুসারী ছিল না। তারাই পরকালে সফলতা লাভের আকাঙ্ক্ষা করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَإِنَّ مِنكُمْ لَمَن لَّيُبَطِّئَنَّ فَإِنْ أَصَابَتْكُم مُّصِيبَةٌ قَالَ قَدْ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيَّ إِذْ لَمْ أَكُن مَّعَهُمْ شَهِيدًا

‘আর তোমাদের মধ্যে এমনও কেউ কেউ রয়েছে, যারা অবশ্য বিলম্ব করবে এবং তোমাদের উপর কোনো বিপদ উপস্থিত হলে বলবে, আল্লাহ আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে, আমি তাদের সাথে যাইনি।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৭২)

আর যখনই সঠিক পথের অনুসারীরা নেয়ামত লাভ করতো তখন অবিশ্বাসীরা এমনভাব দেখাতো যে, তাদের সঙ্গে সঠিক পথের অনুসারীদের কোনো বিরোধিতা ছিল না। তারাই পরকালের ভয়বাহ সময়ে আল্লাহর কাছে সফলতা লাভের আকাঙক্ষা করবে। আল্লাহ বলেন-

وَلَئِنْ أَصَابَكُمْ فَضْلٌ مِّنَ الله لَيَقُولَنَّ كَأَن لَّمْ تَكُن بَيْنَكُمْ وَبَيْنَهُ مَوَدَّةٌ يَا لَيتَنِي كُنتُ مَعَهُمْ فَأَفُوزَ فَوْزًا عَظِيمًا

পক্ষান্তরে তোমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো অনুগ্রহ এলে তারা এমন ভাবে বলতে শুরু করবে যেন তোমাদের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে কোনো মিত্রতাই (বিরোধিতা) ছিল না। (তারা সেখানে বার বার এ আকাঙক্ষা করতে থাকবে)-

‘হায়, আমি যদি তাদের সঙ্গে থাকতাম; তাহলে আমি ও যে সফলতা লাভ করতাম।’ (সুরা নিসা : আয়াত ৭৩)

> শিরক না করার আফসোস!

যারা দুনিয়াতে আল্লাহর সঙ্গে অন্যকে শরিক করতো, তারা পরকালে দুনিয়ায় শিরক করার বিষয়টি স্মরণ করে বলতে থাকবে-

وَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُشْرِكْ بِرَبِّي أَحَدًا

সে বলতে লাগলো- হায়, আমি যদি কাউকে আমার পালনকর্তার সাথে শরীক না করতাম।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ৪২)

> পুনরায় দুনিয়া আসার আকাঙ্ক্ষা

পরকালের ভয়াবহ বিপদাপদ দেখে অবিশ্বাসীরা বারবার তাদেরকে দুনিয়া পাঠানোর আবেদন করবে। যাতে তারা দুনিয়াতে এসে ভালো কাজ করে পরকালে সফলতা লাভ করতে পারে। সে কথা তুলে ধরে আল্লাহ তাআলা বলেন-

وَلَوْ تَرَىَ إِذْ وُقِفُواْ عَلَى النَّارِ فَقَالُواْ يَا لَيْتَنَا نُرَدُّ وَلاَ نُكَذِّبَ بِآيَاتِ رَبِّنَا وَنَكُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ

আর আপনি যদি দেখেন, যখন তাদের জাহান্নামের উপর দাঁড় করানো হবে! তারা বলবে- কতই না ভাল হত! যদি আমাদের পুনরায় (দুনিয়া) পাঠানো হতো; তাহলে আমরা স্বীয় পালনকর্তার নিদর্শনসমূহে মিথ্যারোপ করতাম না এবং আমরা বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যেতাম।’ (সুরা আনআম : আয়াত ২৭) 

পরকালের কঠিন সময়ে সব অবিশ্বাসীরা এ আফসোস ও আকাঙ্ক্ষা এবং নিজেদের কর্মে অনুশোচনা করতে থাকবে। অবশ্য সেদিন এসব আকাঙ্ক্ষা, আফসোস ও অনুশোচনার কোনোটিই কাজে লাগবে না।

আল্লাহ তাআলা বিশ্ব মানবতার জন্য এ আক্ষেপ, অনুশোচনা ও আকাঙ্ক্ষার বিষয়গুলো কুরআনে তুলে ধরেছেন। যাতে তারা মৃত্যুর আগেই নিজেদের সঠিক পরিচালিত করতে পারে। হেদায়েত লাভ করতে পারে।

আল্লাহ তাআলা বিশ্বমানবতার সব মানুষকে সঠিক দ্বীন বুঝার তাওফিক দান করুন। ইসলামের সঠিক লাভের তাওফিক দান করুন। সবাইকে ইসলামের সঠিক পথের অনুসারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ইসলাম

পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম ১৭ নভেম্ব

দেশের আকাশে ১৪৪৩ হিজরি সালের পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা গিয়েছে। ফলে রবিবার থেকে পবিত্র রবিউস সানি মাস গণনা করা হবে।

সেই হিসেবে দেশে আগামী ১১ রবিউস সানি ১৪৪৩ হিজরি (১৭ নভেম্বর, বুধবার) পবিত্র ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহম পালিত হবে।

শনিবার ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান। 

সভায় সব জেলা প্রশাসন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনা করে পবিত্র রবিউস সানি মাসের চাঁদ দেখার ব্যাপারে নিশ্চিত হয় চাঁদ দেখা কমিটি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

নামাজের রাকাতসংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন?

নামাজে থাকাকালীন কারও মনে সংশয় জাগে কত রাকাত হলো, রাকাত ভুলে ছুটে যায়নি তো? কিংবা নামাজের পরেও সন্দেহ জাগতে পারে রাকাত পূর্ণ হয়েছে নাকি হয়নি। নামাজের রাকাতসংখ্যায় সন্দেহ হলে কী করবেন- সে সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত নির্দেশনা:

নামাজ পড়ার সময়ে রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে এবং এই সন্দেহ প্রথমবারের মতো হলে ওই নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। নামাজ পুনরায় পড়া আবশ্যক। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)

নামাজের সালাম ফেরানোর পর যদি রাকাতসংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হয়, তবে তার নামাজ বাতিল হয়ে যাবে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৮)

কারও যদি নামাজের পর দৃঢ়বিশ্বাস হয় যে কিছু রাকাত পড়া হয়নি এবং যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ না হয়ে থাকে, তাহলে ছুটে যাওয়া রাকাত পড়ে নেবে। যদি নামাজ পরিপন্থী কোনো কাজ হয়ে যায়, তাহলে ওই নামাজ পুনরায় পড়বে। (ইবনে আবি শায়বা, খণ্ড: ২, পৃষ্ঠা: ২৪)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে যেদিকে তার মন বেশি যায়, সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তবে কমটির ওপর আমল করবে এবং প্রতি রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে এবং শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৮৮)

তিন রাকাত পড়া হয়েছে নাকি চার রাকাত- সে ব্যাপারে সন্দেহ হলে তিন রাকাত মনে করে চতুর্থ রাকাত পড়বে। এরপর শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ১৬৭৭)

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

আজান শোনার পর প্রিয় নবি (সা.)-এর সুন্নাত কী?

প্রিয় নবির ঘর সুমহান আদর্শের কেন্দ্রবিন্দু। এ ঘর থেকে বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিল উত্তম আদর্শ, পরিপূর্ণ আদব, অতুলনীয় শিষ্টাচার ও স্বাধীন সমাজ ব্যবস্থা। নবিজীর যুগে এমন সমাজ ব্যবস্থা প্রবতির্তত হয়েছিল যে, পরিবারের সবাই সমভাবে কাজ করতেন। পুরুষরা স্ত্রীদের কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতেন। আর একটি সময় হলেই সবাই একত্রিত হতেন। তা ছিল নামাজের আজান। আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুহূর্তের মধ্যে সবাই কাজ রেখে নামাজ পড়তে মসজিদে একত্রিত হতেন।

স্বয়ং বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিবারিক কাজে সময় দিতেন। স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করতেন। নামাজের আজান হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ ছেড়ে দিতেন। হাদিসে পাকের একাধিক বর্ণনা থেকে প্রমাণিত যে-

১. হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ঘরে কী কী কাজ করতেন? তিনি উত্তর দেন-

كان بشرًا من البشر: يفلي ثوبه ويحلب شاته، ويخدم نفسه

‘তিনি একজন মানুষ ছিলেন, তিনি তাঁর কাপড় সেলাই করতেন, ছাগলের দুধ দহন করতেন এবং নিজের কাজ নিজেই করতেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)

তিনি কি শুধু সাধারণ মানুষের মতো মানুষ ছিলেন? না তিনি ছিলেন চারিত্রিক মাদুর্য ও বিনয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কোনো গুণেই কেউ তার সমকক্ষ ছিল না। তিনি যেমন বিনয়ী ছিলেন, তেমনি ছিলেন অহংকারমুক্ত মানুষ।

প্রিয় নবি কেমন মানুষ ছিলেন? তিনি কোনো দিন কাউকে কষ্ট দেননি। তিনি ছিলেন প্রতিটি কাজে অংশগ্রহণকারী সেরা মানুষ। অন্যকে সেরা সাহায্যকারী ও শ্রেষ্ঠ মানুষ। ইবাদত-বন্দেগি ও আল্লাহর হুকুম পালনে তিনি ছিলেন অনুকরণীয় আদর্শ। তাঁর প্রতি নাজিল হয়েছে এ আয়াত-

لَقَدۡ کَانَ لَکُمۡ فِیۡ رَسُوۡلِ اللّٰهِ اُسۡوَۃٌ حَسَنَۃٌ لِّمَنۡ کَانَ یَرۡجُوا اللّٰهَ وَ الۡیَوۡمَ الۡاٰخِرَ وَ ذَکَرَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا

‘তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালকে ভয় করে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে তাদের জন্য রাসুলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।’ (সুরা আহজাব : আয়াত ২১)

আজান শোনার পর প্রিয় নবির সুন্নাত

কোরআনের ঘোষণার পরও তিনি আল্লাহর ইবাদাত ও তার অনুসরণ থেকে কখনো বিরত হতেন না। বরং মসজিদে আজান হওয়ার ধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাতে সাড়া দিয়ে সব কাজ রেখে মসজিদে ছুটে যেতেন। হাদিসের বর্ণনায় এসেছে-

হজরত আসওয়াদ বিন ইয়াজিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়ীতে কি কি ধরনের কাজ করতেন? উত্তরে তিনি বললেন-

كان يكون في مهن أهله، فإذا سمع بالأذان خرج

‘তিনি তার পরিবারের সব কাজে নিয়োজিত থাকতেনতবে আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতেন।’ (বুখারি)

ফরজ নামাজ মসজিদে পড়ার গুরুত্ব

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবনে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে, তিনি বাড়িতে ফরজ নামাজ পড়েছেন। তবে তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্তে যখন প্রচণ্ড রোগাক্রান্ত; শোয়া থেকে উঠতে পারছিলেন না; যখন মসজিদে যেতে অপরাগ ছিলেন তখন বাড়িতে নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু তিনি দরজা দিয়ে মসজিদে নামাজ পড়ার দৃশ্য অস্রুসিক্ত নয়নে অবলোকন করতেন।

প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মতের প্রতি খুবই দয়াশীল ছিলেন। কিন্তু নামাজের জামাতের অংশগ্রহণের ব্যাপারে তাঁর মতো এতো কঠোর দ্বিতীয় আর কেউ ছিল না। তিনি জামাতে অনুপস্থিত ব্যক্তিদের ব্যাপারে এভাবে কঠোর শাস্তি দেওয়ার কথা ঘোষণা দিয়েছিলেন যে-

لقد هممت أن آمر بالصلاة فتقام ثم آمر رجلاً أن يصلي بالناس ثم أنطلق معي برجال معهم حزم من حطب إلى قوم لا يشهدون الصلاة فأحرق عليهم بيوتهم

‘আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি কাউকে নামাজের ইমামতি করার আদেশ দেই আর আমি কাঠসহ কিছু লোককে সঙ্গে নিয়ে ঐ সব লোকদের বাড়িতে যাই; যারা জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়ার জন্য উপস্থিত হয়নি। এরপর তারাসহ তাদের বাড়ি-ঘরকে জালিয়ে দেই।’ (বুখারি ও মুসলিম)

মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে না!

মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ পড়ার প্রতি ছিল নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ গুরুত্ব। শরিয়তের ওজর ছাড়া আজান শোনার পর মসজিদে না গেলে নামাজ কবুল হবে মর্মেও প্রিয় নবি ঘোষণা করেছেন-

من سمع النداء فلم يجب فلا صلاة له إلا من عذر، والعذر خوف أو مرض

‘শরিয়তের ওজর ব্যতিত যে ব্যক্তি আজান শোনার পর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করলো নাতার নামাজ কবুল হবে না।’ (তিরমিজি) আর ওজর বলতে: শত্রুর ভয় অথবা রোগকে বুঝানো হয়েছে।

প্রিয় নবির যুগের সে দৃশ্য আজ কোথায়? কোথায় সেই নামাজি? মসজিদে আজান হয় ঠিকই কিন্তু মসজিদের কাতারপূর্ণ হয় না। অথচ বর্তমান সময়ে মসজিদে নামাজ পড়তে না যাওয়ার পেছনে নেই কোনো শরিয়তের ওজর। না কোনো শত্রুর ভয় কিংবা বিপদের ভয়।

মুমিন মুসলমান মাত্রই উচিত, আজান হলে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সোনালী যুগের মতো কাজ রেখে মসজিদে উপস্থিত হওয়া। একত্রে নামাজ আদায় করা। প্রিয় নবির প্রিয় সুন্নাতকে জাগ্রত করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের উপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

হিজরতের কঠিন বিপদে যে দোয়া নাজিল হয়েছি

মানসিক চাপ, বিষন্নতা ও জীবনের নানা কষ্ট থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর সাহায্যের বিকল্প নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের ঝুঁকির মুহূর্তে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা থেকে মদিনার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় চরম বিপদের মুহূর্তে প্রশান্তি স্বরূপ এ আয়াতটি নাজিল হয়। যা সত্যিই প্রশান্তির। এ আয়াতটি পড়লে এমনিতেই কঠিন বিপদে মিলে প্রশান্তি ও নিরাপত্তা। তাহলো-

رَّبِّ اَدۡخِلۡنِیۡ مُدۡخَلَ صِدۡقٍ وَّ اَخۡرِجۡنِیۡ مُخۡرَجَ صِدۡقٍ وَّ اجۡعَلۡ لِّیۡ مِنۡ لَّدُنۡکَ سُلۡطٰنًا نَّصِیۡرًا

উচ্চারণ : রাব্বি আদ্খিলনি মুদ্খালা সিদ্ক্বিও ওয়া আখরিঝ্নি মুখরাঝা সিদ্ক্বিও ওয়াঝ্আললি মিল্লাদুংকা সুলত্বানান নাছিরা

অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! তুমি আমাকে কল্যাণসহ প্রবেশ করাও এবং কল্যাণসহ বের কর। আর তোমার কাছ থেকে আমাকে দান কর সাহায্যকারী শক্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল : আয়াত ৮০)

উল্লেখ্য, এ আয়াতটি প্রিয় নবির হিজরতের সময় নাজিল হয়েছিল। যখন নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে বের হওয়ার এবং মদিনাতে প্রবেশ করার সময় উপস্থিত হয়েছিল।

কেউ কেউ বলেন, এ প্রার্থনামূলক আয়াতের মর্মার্থ হলো- সত্যের উপর আমার মৃত্যু দিও এবং সত্যের উপর আমাকে কেয়ামতের দিন উত্থিত করো।

আবার কেউ কেউ বলেন, সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবরে প্রবিষ্ট করো এবং কেয়ামতের দিন সত্যতার সঙ্গে আমাকে কবর থেকে বের করো ইত্যাদি।

ইমাম শাওকানি বলেন, এ আয়াতটি যেহেতু দোয়া; বিধায় এর ব্যাপকতায় উল্লিখিত সব কথাই এসে যায়।

কেউ কেউ বলেন, যারা বিভিন্ন কষ্ট ভোগ করেন, তারাও এ দোয়াটি প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজের পর পড়তে পারেন। আশা করা যায়, এতে তার উল্লেখিত রোগ ও সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।

আবার কেউ কেউ বলেছেন, যদি কারো ডায়বেটিস রোগ হয়; তবে এ রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম ও শৃঙ্ক্ষলাবদ্ধ জীবনের পাশাপাশি এ দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। এ রোগ থেকে মুক্ত থাকতে এটিকে কোরআনি আমল মনে করা হয়।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিভিন্ন রোগ মুক্তিতে কোরআনের এ আয়াতের আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। দুনিয়ার ও পরকালের সব বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ইসলাম

কেয়ামতের দিনের মুক্তিতে মুমিনের করণীয় কী?

শিরকমুক্ত ঈমান এবং নেক আমল ছাড়া কেয়ামতের দিন মুক্তির বিকল্প নেই। কেয়ামতের ময়দানে সব মানুষ আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবে। এমনকি নবি-রাসুলগণও আল্লাহর ভয়ে ভীত থাকবেন। কারণ কেউ জানেন না আল্লাহ তাআলা সে দিন কার সঙ্গে কীরূপ ব্যবহার করবেন।

হাদিসের বর্ণনায় যদিও কেয়ামতের দিনের ভয়বাহতার বর্ণনা দিয়েছেন প্রিয়নবি। তিনি সেদিন সেজদায় থাকবেন। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা তাকে সেজদা থেকে উঠতে বলবেন। তিনি সেজদা থেকে মাথা উঠিয়ে বিচার কাজ শুরু করার জন্য সুপারিশ করবেন। তারপরই শুরু হবে পরকালের বিচারকার্য।

সেদিন যার আমলনামা ভালো হবে সে সফল হবে। শুধু মানুষ নয়, সেদিন নবি-রাসুলরা কতটা ভয়াবহ সময় কাটাবেন তা হাদিসের একটি বর্ণনা থেকেই সুস্পষ্ট-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাজিল হয়-
وَأَنذِرْ عَشِيرَتَكَ الْأَقْرَبِينَ
(হে রাসুল!) আপনি আপনার নিকটাত্মীয়দেরকে সতর্ক করুন।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৪)
তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন-
> হে কুরাইশ দল! (তোমরা আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতের ধারায়) নিজেদের আত্মাকে প্রস্তুত কর। আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো কাজে আসতে পারব না।
> হে বনি আবদে মানাফ! আমি আল্লাহর কাছে তোমাদের কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র আব্বাস! আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো উপকার করতে পারব না।
> হে রাসুলের ফুফু সাফিয়্যাহ! আমি আল্লাহর কাছে আপনার কোনো কাজে আসব না।
> হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কন্যা ফাতেমা! তুমি আমার সম্পদ থেকে যা ইচ্ছা চেয়ে নাও। আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোনো কাজে আসব না।’ (বুখারি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের করণীয়-
এ সতর্কবার্তা ঘোষণার পরপরই মহান আল্লাহ তাআলা পরবর্তী আয়াতে প্রিয়নবিকে অনুসরণ ও অনুকরণ করার যে ঘোষণাগুলো দিয়েছেন, সে অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা। আর তাহলো-
‘আর মুমিনদের মধ্যে যারা তোমার অনুসরণ করে, তাদের প্রতি তোমার বাহুকে অবনত কর। তারপর যদি তারা তোমার অবাধ্য হয়, তাহলে বল, তোমরা যা কর, নিশ্চয় আমি তা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। আর তুমি মহাপরাক্রমশালী পরম দয়ালু (আল্লাহর) উপর তাওয়াক্কুল কর। যিনি তোমাকে দেখেন যখন তুমি (নামাজে) দণ্ডায়মান হও এবং সেজদাকারীদের মধ্যে তোমার ওঠা-বসা। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা শুআরা : আয়াত ২১৫-২২০)

আল্লাহর একত্ববাদ ও ইবাদতে যদি প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার নিজ বংশধর, চাচা, ফুফু ও কন্যার ব্যাপারে এমন ঘোষণা দেন তবে অন্যান্য মুসলমান কিভাবে আল্লাহর নাফরমানি করে প্রিয়নবির শাফায়াত লাভের আশা করতে পারে!

কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা থেকে এ কথা প্রমাণিত যে, শিরক মুক্ত ঈমান ও নেক আমল ছাড়া কোনো আদম সন্তানই পরকালে মুক্তি পাবে না। যারাই প্রিয় নবির অনুসরণ ও অনুকরণ করবে তাদের মুক্তি হবে নিরাপদ ও সহজ।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, শিরকমুক্ত ঈমান ও নেক আমলে নিজেদের জীবন সাজানো। কোরআন-সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শিরকমুক্ত ঈমান লাভ ও তার ইবাদত-বন্দেগিতে নিজেদের নিয়োজিত করার তাওফিক দান করুন। হাশরের ময়দানে হাদিসে ঘোষিত সব ধরনের শাফায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com