আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফুল

যখন ফোটে কুলাঞ্জন

তাকে কোনো দিনই দেখিনি বনে! দেখেছি গ্রামের পথে-প্রান্তরে, গ্রামীণ নিচু জমির ঝোপের কাছে। আপন মনে অনাদরে বেড়ে ওঠে কুলাঞ্জন। একদিন তার মিষ্টি ঠোঁটগোলাপি রং দেখিয়ে ডাক দিয়ে যায় আমাদের। কাছে নিয়ে আসে মৌমাছি, ভোমরা ও মধুপায়ী মৌটুসি পাখিদের। প্রশস্ত ও লম্বা সবুজ পাতার সঙ্গে গোলাপি রঙের ফুল দেখতে আকর্ষণীয়। লম্বা পুষ্পমঞ্জরিতে অসংখ্য অসম ফুল। রোদের আলোয় নীল আকাশের নিচে মনোমুগ্ধকর দৃশ্যের অবতারণা হয়। আদা গোত্রের এ উদ্ভিদকে কেউ চেনেন জংলি আদা নামে। পাহাড়িরা একে বলে ‘তারা’। আমাদের পাহাড়ে আরও কয়েক প্রজাতির তারা আছে। এরা মূলত কন্দজ গুল্ম।

গ্রামের পাতিশিয়াল, বনবিড়াল, মেছো বাঘ, বাগডাশ কুলাঞ্জন উদ্ভিদের ঝোপে বসবাস করে। প্রশস্ত পাতা এবং ঘনবদ্ধ কাণ্ড নিশাচর এসব বন্য প্রাণীকে দিনের বেলায় আড়াল করে রাখে।বিজ্ঞাপন

দুঃখজনক হলো, এ উদ্ভিদ গ্রামবাংলা থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বড় কোনো ঝোপ চোখে পড়ে না। সেসব ঝোপ এখন মেহগনির বাগান! পুরো বাংলাদেশের গ্রামবাংলা থেকে বন্য গাছপালার প্রজাতিগুলো এবং তাদের আবাস রয়েছে সংকটের মধ্যে। এ প্রজাতিগুলোর বসতি টিকিয়ে না রাখলে আমাদের বন্য গাছপালানির্ভর বন্য প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া বাড়বে। বাস্তুতন্ত্রের ব্যাঘাত ঘটলে পুরো খাদ্যজাল ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে। বেড়ে যাবে শস্যখেতে ক্ষতিকর পোকামাকড়। জগৎজুড়ে বাস্তুসংস্থানের এমন সংকট আমরা কিন্তু স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি।

কুলাঞ্জন (Alpinia nigra) বহুবর্ষজীবী বীরুৎ-জাতীয় গুল্ম। কাণ্ড প্রায় তিন মিটার হয়। পাতা অবৃন্তক, আয়তাকার থেকে বল্লমাকার। পুষ্পবিন্যাস প্যানিকেল। ফুল ফোটে মে থেকে জুন মাসে। গ্রামীণ অনাবাদি প্রান্তর, নিম্নাঞ্চল ও পাহাড়ি ঝরনাতীরবর্তী স্থানে জন্মে। নদী ও খালপাড়ের আর্দ্র জমিতে ভালো বেড়ে ওঠে। বর্তমানে এটি দেশের একটি দুর্লভ উদ্ভিদ। বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বাগেরহাট, ঝালকাঠি ও ভোলা এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে দেখা যায়। সুনামগঞ্জে একবার দেখেছি। বান্দরবান, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির বনেও আছে।

এটি মূল্যবান ভেষজ উদ্ভিদ। গ্রন্থিকন্দ শ্বাসনালির শ্লেষ্মাজনিত রোগ, বহুমূত্র, বাত ও যকৃতের সমস্যায় উপকারী। রাইজোম টনিক ও বেদনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। চর্মরোগ ও ছত্রাকজনিত রোগ নিরাময়ে উপকারী। ত্রিপুরার ক্ষুদ্র জাতিসত্তার অধিবাসীরা সবজি হিসেবে রাইজোমের কচি অংশসহ গাছের অঙ্কুরিত অংশ ব্যবহার করে। আমাদের পাহাড়ের মানুষ মহামূল্যবান এ উদ্ভিদের নানা অংশ ভেষজ চিকিৎসায় ব্যবহার করে। সেদ্ধ করা শিকড় পেটের পীড়ায় ভালো কাজ করে।

ভূগর্ভস্থ রাইজোম ও বীজ থেকে চারা গজায়। ফল বেরি এবং বহুবীজী। ভেষজ গুরুত্ব ছাড়াও কুলাঞ্জন শোভাবর্ধনকারী উদ্ভিদ হিসেবে শহর ও গ্রামের ফুলবাগানে, বাড়ির প্রান্তরে রোপণ করা যেতে পারে। শহরের ছাদবাগানেও মাঝারি থেকে বড় টবে লাগানো যাবে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ফুল

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

শীতকালীন মৌসুমী ফুলের মধ্যে চন্দ্রমল্লিকাও বেশ জনপ্রিয়। ক্রিসমাসের সময় ফোটে বলে একে ক্রিসেন্থিমামও বলা হয়। জাপান ও চীন এর আদি জন্মস্থান। এটি বিভিন্ন বর্ণ ও রঙের হয়ে থাকে। তাই একে ‘শরৎ রানি’ও বলা হয়। বাড়ির আঙিনা, বারান্দা ও ছাদে ফুলটি চাষ করা যায়।

জলবায়ু
চন্দ্রমল্লিকা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় ভালো জন্মে। বাংলাদেশে শীতকালই এ ফুল চাষের উপযুক্ত সময়।

মাটি
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেলে মাটি চন্দ্রমল্লিকা চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ ৬.০-৭.০ হওয়া জরুরি।

চারা তৈরি
বীজ, সাকার ও শাখা কলম থেকে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করা যায়। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে শাখা কলম করা শুরু হয়। একবছর বয়সী সবল ডাল থেকে ৮-১০ সেন্টিমিটার লম্বা ডাল তেরছাভাবে কেটে বেডে বা বালতিতে বসিয়ে দিলে তাতে শেকড় গজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে যখন ফুল দেওয়া শেষ হয়ে যায়; তখন গাছগুলোকে মাটির উপর থেকে ১৫-২০ সেন্টিমিটার রেখে কেটে দেওয়া হয়। কিছুদিন পর ওসব কাটা জায়গার গোড়া থেকে কিছু সাকার বের হয়। এসব সাকার ৫-৭ সেন্টিমিটার লম্বা হলে মা গাছ থেকে ওদের আলাদা করে ছায়াময় বীজতলায় বা টবে লাগানো হয়। মে-জুলাই মাসে চারাকে বৃষ্টি ও কড়া রোদ থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

রোপণ
শেষবারের মতো নির্দিষ্ট স্থানে কিংবা টবে রোপণের আগে চারাগুলোকে স্বতন্ত্র জমিতে বা টবে পাল্টিয়ে নিয়ে তাদের ফুল উৎপাদনের উপযুক্ততা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। জমি কিংবা টবে চারা রোপণের উপযুক্ত সময় অক্টেবর-নভেম্বর। জাতভেদে ৩০x২৫ অন্তর চন্দ্রমল্লিকা রোপণ করতে হবে।

সার
চন্দ্রমল্লিকা গাছ মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদন শোষণ করে থাকে। এ কারণে জৈব ও রাসায়নিক খাদ্যযুক্ত মাটিতে এ গাছ খুব ভালোভাবে সাড়া দেয়। প্রতি হেক্টরে ১০ টন পঁচা গোবর বা কম্পোস্ট, ৪০০ কেজি ইউরিয়া, ২৭৫ কেজি টিএসপি, ৩০০ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৬৫ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি বোরিক অ্যাসিড ও জিংক অক্সাইড সার প্রয়োগ করতে হবে। সাকার রোপণের ১০-১৫ দিন আগে পঁচা গোবর বা কম্পোস্ট এবং ইউরিয়া বাদে অন্যান্য সার ৭-১০ দিন আগে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সাকার রোপণের ২৫-৩০ দিন পর ইউরিয়া সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক সার সাকার রোপণের ৪৫-৫০ দিন পর গাছের গোড়ার চারপাশে একটু দূর দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সার মাটির সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।

কুঁড়ি
চন্দ্রমল্লিকার বেড ও টব আগাছামুক্ত রাখা উচিত। চারা লাগানোর মাসখানেক পর গাছের অাগা কেটে দিতে হয়। এতে গাছ লম্বা না হয়ে ঝোপালো হয়। চারা গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করতে হয়। বড় আকারের ফুল পেতে হলে ডিসবাডিং করা উচিত। অর্থাৎ মাঝের কুঁড়িটি রেখে পাশের দুটি কুঁড়ি কেটে ফেলতে হয়। আর মধ্যম আকারের ফুল পেতে চাইলে মাঝের কুঁড়িটি অপসারণ করা উচিত।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

সেচ
চন্দ্রমল্লিকার চারা বিকেলে লাগিয়ে গোড়ার মাটি চেপে দিতে হয়। চারা লাগানোর পর হালকা সেচ দিতে হয়। গাছ কখনো বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। তাই পানি এমনভাবে দিতে হবে যেন গোড়ায় বেশিক্ষণ পানি জমে না থাকে। চারা রোপণের আগে এবং পরে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পরিমাণমতো পানি সেচ জরুরি।

ঠেস
চন্দ্রমল্লিকার ফুল সাধারণত ডালপালার তুলনায় বড় হয়। তাই গাছের গোড়া থেকে কুঁড়ি পর্যন্ত একটা শক্ত কাঠি পুঁতে দিতে হবে। এতে ফুল নুয়ে পড়বে না। চারা লাগানোর সময় কাঠি একবারেই পুঁতে দেওয়া ভালো। এজন্য জাত বুঝে চন্দ্রমল্লিকা গাছের উচ্চতা অনুযায়ী বাঁশের কাঠি চারার গোড়া থেকে একটু দূরে পুঁতে দিতে হয়।

শোষক পোকা
এ পোকা পাতা ও ফুলের রস শোষন করে। ফলে আক্রান্ত পাতা ও ফুলে দাগ পড়ে। এমনকি ফুল এবং গাছও শুকিয়ে যায়। এ পোকা দমনের জন্য ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

শীতকালীন মৌসুমী ফুলের মধ্যে চন্দ্রমল্লিকাও বেশ জনপ্রিয়। ক্রিসমাসের সময় ফোটে বলে একে ক্রিসেন্থিমামও বলা হয়। জাপান ও চীন এর আদি জন্মস্থান। এটি বিভিন্ন বর্ণ ও রঙের হয়ে থাকে। তাই একে ‘শরৎ রানি’ও বলা হয়। বাড়ির আঙিনা, বারান্দা ও ছাদে ফুলটি চাষ করা যায়।

জলবায়ু
চন্দ্রমল্লিকা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রোজ্জ্বল জায়গায় ভালো জন্মে। বাংলাদেশে শীতকালই এ ফুল চাষের উপযুক্ত সময়।

মাটি
জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিষ্কাশিত দো-আঁশ ও বেলে মাটি চন্দ্রমল্লিকা চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ ৬.০-৭.০ হওয়া জরুরি।

চারা তৈরি
বীজ, সাকার ও শাখা কলম থেকে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করা যায়। জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে শাখা কলম করা শুরু হয়। একবছর বয়সী সবল ডাল থেকে ৮-১০ সেন্টিমিটার লম্বা ডাল তেরছাভাবে কেটে বেডে বা বালতিতে বসিয়ে দিলে তাতে শেকড় গজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে যখন ফুল দেওয়া শেষ হয়ে যায়; তখন গাছগুলোকে মাটির উপর থেকে ১৫-২০ সেন্টিমিটার রেখে কেটে দেওয়া হয়। কিছুদিন পর ওসব কাটা জায়গার গোড়া থেকে কিছু সাকার বের হয়। এসব সাকার ৫-৭ সেন্টিমিটার লম্বা হলে মা গাছ থেকে ওদের আলাদা করে ছায়াময় বীজতলায় বা টবে লাগানো হয়। মে-জুলাই মাসে চারাকে বৃষ্টি ও কড়া রোদ থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

রোপণ
শেষবারের মতো নির্দিষ্ট স্থানে কিংবা টবে রোপণের আগে চারাগুলোকে স্বতন্ত্র জমিতে বা টবে পাল্টিয়ে নিয়ে তাদের ফুল উৎপাদনের উপযুক্ততা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। জমি কিংবা টবে চারা রোপণের উপযুক্ত সময় অক্টেবর-নভেম্বর। জাতভেদে ৩০x২৫ অন্তর চন্দ্রমল্লিকা রোপণ করতে হবে।

সার
চন্দ্রমল্লিকা গাছ মাটি থেকে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য উপাদন শোষণ করে থাকে। এ কারণে জৈব ও রাসায়নিক খাদ্যযুক্ত মাটিতে এ গাছ খুব ভালোভাবে সাড়া দেয়। প্রতি হেক্টরে ১০ টন পঁচা গোবর বা কম্পোস্ট, ৪০০ কেজি ইউরিয়া, ২৭৫ কেজি টিএসপি, ৩০০ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৬৫ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি বোরিক অ্যাসিড ও জিংক অক্সাইড সার প্রয়োগ করতে হবে। সাকার রোপণের ১০-১৫ দিন আগে পঁচা গোবর বা কম্পোস্ট এবং ইউরিয়া বাদে অন্যান্য সার ৭-১০ দিন আগে মাটির সঙ্গে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সাকার রোপণের ২৫-৩০ দিন পর ইউরিয়া সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক সার সাকার রোপণের ৪৫-৫০ দিন পর গাছের গোড়ার চারপাশে একটু দূর দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সার মাটির সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে হবে।

কুঁড়ি
চন্দ্রমল্লিকার বেড ও টব আগাছামুক্ত রাখা উচিত। চারা লাগানোর মাসখানেক পর গাছের অাগা কেটে দিতে হয়। এতে গাছ লম্বা না হয়ে ঝোপালো হয়। চারা গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করতে হয়। বড় আকারের ফুল পেতে হলে ডিসবাডিং করা উচিত। অর্থাৎ মাঝের কুঁড়িটি রেখে পাশের দুটি কুঁড়ি কেটে ফেলতে হয়। আর মধ্যম আকারের ফুল পেতে চাইলে মাঝের কুঁড়িটি অপসারণ করা উচিত।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

সেচ
চন্দ্রমল্লিকার চারা বিকেলে লাগিয়ে গোড়ার মাটি চেপে দিতে হয়। চারা লাগানোর পর হালকা সেচ দিতে হয়। গাছ কখনো বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। তাই পানি এমনভাবে দিতে হবে যেন গোড়ায় বেশিক্ষণ পানি জমে না থাকে। চারা রোপণের আগে এবং পরে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পরিমাণমতো পানি সেচ জরুরি।

ঠেস
চন্দ্রমল্লিকার ফুল সাধারণত ডালপালার তুলনায় বড় হয়। তাই গাছের গোড়া থেকে কুঁড়ি পর্যন্ত একটা শক্ত কাঠি পুঁতে দিতে হবে। এতে ফুল নুয়ে পড়বে না। চারা লাগানোর সময় কাঠি একবারেই পুঁতে দেওয়া ভালো। এজন্য জাত বুঝে চন্দ্রমল্লিকা গাছের উচ্চতা অনুযায়ী বাঁশের কাঠি চারার গোড়া থেকে একটু দূরে পুঁতে দিতে হয়।

শোষক পোকা
এ পোকা পাতা ও ফুলের রস শোষন করে। ফলে আক্রান্ত পাতা ও ফুলে দাগ পড়ে। এমনকি ফুল এবং গাছও শুকিয়ে যায়। এ পোকা দমনের জন্য ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন
চন্দ্রমল্লিকা চাষের নিয়ম-কানুন

জাব পোকা
অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয় অবস্থাতেই গাছের নতুন ডগা বা ফুলের রস চুষে খায়। এটি গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনে মারাত্মক ক্ষতি করে। নোভাক্রন (০.১% ) বা রগর (১%) প্রয়োগ করে এ পোকা দমন করা যায়।

পাউডারি মিলডিউ
এ রোগ হলে গাছের পাতা ধূসর হয়ে যায়। পাতার উপরে সাদা সাদা পাউডার দেখা যায়। টিল্ট ২৫০ইসি ০.৫ মিলি বা ২ গ্রাম থিয়োভিট প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ফুল সংগ্রহ
জাতভেদে ফলন কমবেশি হয়। গাছ প্রতি বছরে গড়ে ৩০-৪০টি ফুল পাওয়া যায়। বাইরের পাপড়িগুলো সম্পূর্ণ খুললে এবং মাঝের পাপড়িগুলো ফুটতে শুরু করলে খুব সকালে বা বিকেলে ধারালো ছুরি দিয়ে দীর্ঘ বোঁটাসহ কেটে ফুল তোলা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন!

🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸
🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸

জাতঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট  চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বারি চন্দ্রমল্লিকা -১ ও বারি চন্দ্রমল্লিকা -২ জাত দুইটি  উদ্ভাবন করেছে।

জলবায়ু ও মাটি-

চন্দ্রমল্লিকা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রজ্জল জায়গা পছন্দ করে। বাংলাদেশে শীতকালই এই ফুল চাষের উত্তম সময়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিস্কাশিত দো আঁশ ও বেলে মাটি চন্দ্রমল্লিকা চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পি এইচ ৬.০-৭.০ হওয়া বাঞ্জনীয়।

চারা তৈরিঃ

বীজ, সাকার ও শাখা কলম থেকে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করা যায়। বীজ থেকে চারা করলে তা থেকে ভাল ফুল পাওয়া যায় না এবং ফুল পেতে অনেক দিন লেগে যায়। অন্য দিকে ডাল কেটে শাখা কলম করলে বা সাকার থেকে চারা করলে এ সমস্যা থাকে না। এদেশে শাখা কলম করেই সাধারনত চারা তৈরি করা হয়। জুলাই মাসের  মাঝামাঝি সময় থেকে শাখা কলম করা শুরু হয়। এক বছর বয়সী সতেজ সবল ডাল থেকে ৮-১০ সেমি লম্বা ডাল তেরছাভাবে কেটে বেডে বা বালতিতে বসিয়ে দিলে তাতে শিকড় গজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে যখন ফুল দেওয়া শেষ হয়ে যায় তখন গাছগুলোকে মাটির উপর থেকে ১৫-২০ সেমি রেখে কেটে দেয়া হয়। কিছু দিন পর ওসব কাটা জায়গার গোড়া থেকে কিছু সাকার বের হয়। এসব সাকার ৫-৭ সেমি লম্বা হলে মা গাছ থেকে ওদের আলাদা করে ছায়াময় বীজতলায় বা টবে লাগানো হয়। মে- জুলাই মাসে চারাকে বৃষ্টি ও  কড়া রোদ থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸
🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸

চারা রোপনঃ

শেষবারের মত নিদিষ্ট স্থানে কিংবা টবে রোপনের পূর্বে চারাগুলোকে স্বতন্ত্র জমিতে কিংবা টবে পাল্টিয়ে নিয়ে তাদের ফুল উৎপাদনের উপযুক্ততা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। জমি কিংবা টবে চারা রোপনের উপযুক্ত সময় অক্টেবর- নভেম্বর। জাতভেদে ৩০ x ২৫ অন্তর চন্দ্রমল্লিকা রোপন করতে হবে।

সার প্রয়োগঃ

চন্দ্রমল্লিকা গাছ মাটি থেকে প্রচুর পরিমানে খাদ্যোপাদন শোষন করে থাকে। এ কারণে জৈব ও রাসায়নিক খাদ্যযুক্ত মাটিতে এ গাছ খুব ভালভাবে সাড়া দেয়। ভাল ফলন পেতে হলে জমিতে সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতি হেক্টরে ১০ টন পঁচা গোবর/কম্পোস্ট,  ৪০০ কেজি ইউরিয়া, ২৭৫ কেজি টিএসপি, ৩০০ কেজি মিউরেট অব পটাশ, ১৬৫ কেজি জিপসাম, ১২ কেজি বোরিক এসিড ও জিংক অক্সাইড সার প্রয়োগ করতে হবে। সাকার রোপণের ১০-১৫ দিন পূর্বে পঁচা গোবর/কম্পোস্ট এবং ইউরিয়া বাদে অন্যান্য সার ৭-১০ দিন পূর্বে মাটির সাথে ভালভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। সাকার রোপণের ২৫-৩০ দিন পর ইউরিয়া সারের অর্ধেক প্রয়োগ করতে হবে এবং বাকি অর্ধেক সার সাকার রোপণের ৪৫-৫০ দিন পর গাছের গোড়ার চারপাশে একটু দূর দিয়ে প্রয়োগ করতে হবে। উপরি প্রয়োগের পর সার মাটির সাথে মিশিয়ে সেচ দিতে  হবে।

🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸
🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸

কুঁড়ি ভাঙ্গাঃ

চন্দ্র মল্লিকার বেড ও টব আগাছা মুক্ত রাখা উচিত। চারা লাগানোর মাস খানেক পর গাছের অগ্রভাগ কেটে দিতে হয়। এতে করে গাছ লম্বা না হয়ে ঝোপালো হয়। চারা গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারন করতে হয়। বড় আকারের ফুল পেতে হলে  ডিসবাডিং করা উচিৎ অর্থাৎ মাঝের কুঁড়িটি রেখে পাশের দুটি কুঁড়ি কেটে ফেলতে হয়। আর মধ্যম আকারের ফুল পেতে চাইলে মাঝের কুড়িটি অপসারন করা উচিত।

সেচঃ

চন্দ্রমল্লিকার চারা বিকালে লাগিয়ে গোড়ার মাটি চেপে দিতে হবে। চারা লাগানোর পর হালকা সেচ দিতে হবে। চন্দ্রমল্লিকার গাছ কখনো বেশি পানি সহ্য করতে পারেনা। তাই পানি এমনভাবে দিতে হবে যেন গোড়ায় বেশিক্ষণ পানি জমে না থাকে। চারা রোপনের পূর্বে এবং পরে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে পরিমানমত পানি সেচ জরুরি।

অন্যান্য পরিচর্যা

ঠেস দেয়াঃ

চন্দ্রমল্লিকার ফুল সাধারনত ডালপালার তুলনায় বড় হয়। তাই গাছের গোড়া থেকে কুঁড়ি পর্যন্ত একটা শক্ত কাঠি পুঁতে দিতে হবে।এতে ফুল নুয়ে পড়বেনা। চারা লাগানোর সময় কাঠি একবারেই পুঁতে দেয়া ভাল। এজন্য জাত বুঝে চন্দ্রমল্লিকা গাছের উচ্চতা অনুযায়ী বাঁশের কাঠি চারার গোড়া থেকে একটু দুরে পুঁতে দিতে হবে।একবারে গোড়াই পুতলে বা গাছ বড় হয়ে যাওয়ার পর পুতলে অনেক সময় শিকড়ের ক্ষতি হতে পারে, এমনকি শিকড়ে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার ফলে রোগ জীবানুও গাছে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করতে পারে।

🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸
🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸

শোষক পোকা দমনঃ

শোষক পোকা অতি ক্ষুদ্র আকৃতির। ছাই রঙের এ পোকাকে খালি চোখে দেখা যায়না। এপোকা পাতা ও ফুলের রস শোষন করে। ফলে আক্রান্ত পাতা ও ফুলে দাগ পড়ে। পাতা ও ফুল শুকিয়ে যায় এবং আক্রমণ বেশি হলে গাছও শুকিয়ে যায়। এ পোকা দমনের জন্য ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে তিশেয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করতে হবে।

জাব পোকা দমনঃ

জাব পোকা ফুলের প্রধান ক্ষতিকর পোকা। জাব পোকা গাড় সবুজ, বেগুনি বা কাল রঙের হয়। অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয় অবস্থাতেই গাছের নতুন ডগা বা ফুলের রস চুষে খায় এবং গাছের বৃদ্ধি এবং ফলনে মারাত্বক ক্ষতি করে।নোভাক্রন(০.১% ) বা রগর ( ১% ) প্রয়োগ করে এ পোকা দমন করা যায়।

🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸
🌼 সহজ উপায়ে চন্দ্রমল্লিকা চাষ করুন, আপনার বাগানকে রঙিন স্বপ্নে বদলে দিন! 🌸

পাউডারী মিলডিউ রোগ দমনঃ

এরোগ হলে গাছের পাতা ধূসর রং ধারন করে এবং পাতার উপরে সাদা সাদা পাউডার দেখা যায়। টিল্ট  ২৫০ইসি ০.৫ মিলি বা ২ গ্রাম থিয়োভিট প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর স্প্রে করে এরোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ফুল সংগ্রহঃ

চন্দ্রমল্লিকা ফুল কুঁড়ি অবস্থায় তুললে ফোঁটেনা। বাইরের পাপড়ি গুলো সম্পূর্ণ খুলে গিয়েছে এবং মাঝের পাপড়ি গুলো ফুটতে শুরু করেছে এমন অবস্থায় খুব সকালে অথবা বিকেলে ধারালো ছুরি দিয়ে দীর্ঘ বোঁটাসহ কেটে ফুল তোলা উচিত।

ফলনঃ

জাত ভেদে ফলন কম বেশি হয়। তবে গাছ প্রতি বছরে গড়ে ৩০-৪০ টি ফুল পাওয়া যায়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

আঙিনা কৃষি

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

আপনার ছাদকে করে তুলুন রঙিন আর মনোমুগ্ধকর! চন্দ্রমল্লিকা, যা তার মিষ্টি গন্ধ ও উজ্জ্বল রঙের জন্য পরিচিত, আপনার ছাদকে সেজে তুলতে পারে এক নান্দনিক ও মনোমুগ্ধকর বাগানে। সঠিক যত্ন আর পরিকল্পনার মাধ্যমে চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো আপনার ছাদকে রূপ দেবে এক সবুজ-সুন্দর স্বর্গে। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকার যত্ন আর সাজানোর যাত্রা!

🌿 চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে ছাদ সাজানোর অসাধারণ উপায় 🌼

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸 কেন চন্দ্রমল্লিকা বেছে নেবেন?

🌼 উজ্জ্বল রঙ: হলুদ, সাদা, লাল, গোলাপি—বিভিন্ন রঙের চন্দ্রমল্লিকা আপনার ছাদকে রঙিন করে তুলবে।

🌼 সহজ যত্ন: এই গাছটি সহজে বাড়ে এবং কম যত্নেই ভালো ফলন দেয়।

🌼 বায়ু বিশুদ্ধকরণ: চন্দ্রমল্লিকা আপনার ছাদে পরিবেশের তাজা বাতাস নিশ্চিত করে।

🌼 ঔষধি গুণ: কিছু চন্দ্রমল্লিকা প্রজাতি আরামদায়ক ঘ্রাণ ছাড়াও ঔষধি গুণসম্পন্ন।

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸 চন্দ্রমল্লিকার চাষের ধাপ

🌼 সঠিক পাত্র নির্বাচন করুনঃ মাটি ধরার জন্য মাটি বা সিরামিকের পাত্র ব্যবহার করুন। পাত্রে পানি নিঃসরণের জন্য ছিদ্র থাকা প্রয়োজন।

🌼 মাটির প্রস্তুতিঃ দো-আঁশ মাটির সঙ্গে পচা গোবর বা জৈব সার মিশিয়ে নিন। মাটি যাতে জলাধার রাখে এবং বাতাস চলাচল করতে পারে তা নিশ্চিত করুন।

🌼 চারা বা বীজ লাগানোঃ ভালো মানের চারা বা বীজ কিনুন। পাত্রে বা বেডে পর্যাপ্ত দূরত্ব রেখে গাছ লাগান।

🌼 সঠিক সেচ প্রদানঃ চন্দ্রমল্লিকা অতিরিক্ত পানি পছন্দ করে না। মাটি শুকনো লাগলে হালকা পানি দিন।

🌼 সার প্রয়োগঃ মাসে একবার তরল জৈব সার প্রয়োগ করুন। গাছ ফুল দেওয়ার সময় বাড়তি পটাশ ও ফসফেট প্রয়োগে ভালো ফল পাবেন।

🌼 সূর্যালোকের যত্নঃ গাছকে দিনে অন্তত ৫-৬ ঘণ্টা সরাসরি সূর্যের আলোতে রাখুন।

🌼 সময়মতো ছাঁটাই করুনঃ শুকিয়ে যাওয়া পাতা এবং ডাল ছেঁটে দিন। নতুন ডালপালা বাড়াতে প্রতি দুই মাসে গাছ ছাঁটাই করুন।

চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!
চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে সাজিয়ে তুলুন আপনার ছাদকে এক অনন্য সবুজ স্বর্গে!

🌸ছাদ সাজানোর কৌশল

🌼 রঙিন গাছের প্যাটার্ন তৈরি করুন: চন্দ্রমল্লিকার বিভিন্ন রঙের ফুল দিয়ে ছাদের এক কোণে সুন্দর প্যাটার্ন তৈরি করুন।

🌼 উচ্চতা ভেদে সাজান: পাত্রের উচ্চতা অনুযায়ী চন্দ্রমল্লিকার গাছগুলো সাজান।

🌼 বসার জায়গার চারপাশে রাখুন: ছাদে একটি বসার জায়গা তৈরি করে তার চারপাশে চন্দ্রমল্লিকা রাখুন।

🌼 আলো ব্যবহার করুন: সন্ধ্যায় ছাদের সৌন্দর্য বাড়াতে LED লাইট ব্যবহার করুন।

🌸চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে ছাদ সাজানো শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, এটি আপনার মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। একটু যত্ন আর পরিকল্পনা করলেই আপনার ছাদ হবে এক সবুজ আর রঙিন আশ্রয়স্থল। এখনই শুরু করুন চন্দ্রমল্লিকা দিয়ে আপনার ছাদ সাজানোর যাত্রা! 🌼

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়

চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়
চন্দ্রমল্লিকার ফুলের চাষ ও তার রোগ দমনের উপায়

চন্দ্রমল্লিকা একটি খুবই জনপ্রিয় ফুল। এই ফুলের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ হয়। বিভিন্ন রংয়ের এই ফুলগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমূল্য রয়েছে প্রথম সারিতে। অক্টোবরে কুঁড়ি আসে এবং নভেম্বরে ফুল ফোটে৷ গাছে ফুল তাজা থাকে ২০ থেকে ২৫ দিন৷  জনপ্রিয়তার দিক থেকে গোলাপের পরই এর স্থান। এটি বিভিন্ন বর্ণ ও রঙের হয়ে থাকে। এর মধ্যে তামাটে, সোনালি, হলুদ, বেগুনি, লাল, খয়েরি এবং “গ্রিন গডেস” নামের সবুজ চন্দ্রমল্লিকা অত্যন্ত জনপ্রিয়। চন্দ্রমল্লিকা ফুলের বাজারে চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

চাষ পদ্ধতি 

জলবায়ু ও মাটিঃ চন্দ্রমল্লিকা তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা আবহাওয়া এবং রৌদ্রজ্জল জায়গা পছন্দ করে। বাংলাদেশে শীতকালই এই ফুল চাষের উত্তম সময়। জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ সুনিস্কাশিত দো আঁশ ও বেলে মাটি চন্দ্রমল্লিকা চাষের জন্য উপযোগী। মাটির পিএইচ ৬.০-৭.০ হওয়া বাঞ্জনীয়।

চারা তৈরিঃ

বীজ, সাকার ও শাখা কলম থেকে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করা যায়। বীজ থেকে চারা করলে তা থেকে ভাল ফুল পাওয়া যায় না এবং ফুল পেতে অনেক দিন লেগে যায়। অন্য দিকে ডাল কেটে শাখা কলম করলে বা সাকার থেকে চারা করলে এ সমস্যা থাকে না। এদেশে শাখা কলম করেই সাধারনত চারা তৈরি করা হয়। জুলাই মাসের  মাঝামাঝি সময় থেকে শাখা কলম করা শুরু হয়। এক বছর বয়সী সতেজ সবল ডাল থেকে ৮-১০ সেমি লম্বা ডাল তেরছাভাবে কেটে বেডে বা বালতিতে বসিয়ে দিলে তাতে শিকড় গজায়। ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে যখন ফুল দেওয়া শেষ হয়ে যায় তখন গাছগুলোকে মাটির উপর থেকে ১৫-২০ সেমি রেখে কেটে দেয়া হয়। কিছু দিন পর ওসব কাটা জায়গার গোড়া থেকে কিছু সাকার বের হয়। এসব সাকার ৫-৭ সেমি লম্বা হলে মা গাছ থেকে ওদের আলাদা করে ছায়াময় বীজতলায় বা টবে লাগানো হয়। মে- জুলাই মাসে চারাকে বৃষ্টি ও  কড়া রোদ থেকে বাঁচানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

চারা রোপনঃ

শেষবারের মত নিদিষ্ট স্থানে কিংবা টবে রোপনের পূর্বে চারাগুলোকে স্বতন্ত্র জমিতে কিংবা টবে পাল্টিয়ে নিয়ে তাদের ফুল উৎপাদনের উপযুক্ততা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। জমি কিংবা টবে চারা রোপনের উপযুক্ত সময় অক্টেবর- নভেম্বর। জাতভেদে ৩০ x ২৫ অন্তর চন্দ্রমল্লিকা রোপন করতে হবে।

পটে বা টবে সার প্রয়োগ:

পটে জন্মানোর জন্য ২ ভাগ মাটি, ২ ভাগ গোবর সার, ১ ভাগ পাতা পচা সার ও ১ ভাগ হাড়ের গুঁড়ার সাথে ৩ গ্রাম টিএসপি, ৩ গ্রাম মিউরেট অব পটাশ এর মিশ্রণ ব্যবহার করা উত্তম। ৮ গ্রাম ইউরিয়া সারের অর্ধেক সাকার/কাটিং রোপণের ২৫-৩০ দিন পর গাছের দৈহিক বৃদ্ধির সময় এবং বাকি অর্ধেক ফুলের কুড়ি আসার সময় উপরি প্রয়োগ  করা উচিত।

কুঁড়ি অপসারণ:

অনাকাঙ্ক্ষিত অপরিপক্ক ফুলের কুঁড়ি অপসারণ করাকে কুঁড়ি অপসারণ বলা হয়। চারা গাছে তাড়াতাড়ি ফুল আসলে তা সঙ্গে সঙ্গে অপসারণ করতে হয়। বড় আকারের ফুল পেতে হলে  ডিসবাডিং করা উচিৎ অর্থাৎ মাঝের কুঁড়িটি রেখে পাশের দুটি কুঁড়ি কেটে ফেলতে হয়। আর মধ্যম আকারের ফুল পেতে চাইলে মাঝের কুড়িটি অপসারন করা উচিত।

রোগবালাই ও দমন ব্যবস্থা:

জাবপোকা: এ পোকা খুব ছোট আকৃতির, নরম ও কালো-সবুজ বর্ণের। শীতকালে এর প্রকোপ খুব বেড়ে যায়। এ পোকা গাছের পাতা, ডগা এবং ফুল থেকে রস চুষে খেয়ে গাছের ক্ষতি করে। আক্রান্ত নতুন কুঁড়ি ও পাতা কুঁকড়ে যায়।

দমন ব্যবস্থাঃ

  • এ পোকা দমনে প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত পাতা বা ফুল ছিঁড়ে ফেলে পোকাসহ ধ্বংস করা উচিত।
  • সাবান গুঁড়া ৫ গ্রাম/লিটার হারে পনিতে মিশিয়ে ৭-১০ দিন অন্তর ২-৩ বার স্প্রে করেও এ পোকা দমন করা যেতে পারে।

আক্রমণ বেশি হলে ডাইমেথয়েট জাতীয় কীটনাশক (পারফেকথিয়ন/সানগর/ রগর / টাফগর ৪০ ইসি) ২.০ মিলি./লিটার  অথবা ইমিটাক্লোপ্রিড জাতীয় (টিডো/ ইমিটাফ) ২ মিলি/লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পরপর ২-৩ বার স্প্রে করতে হবে।

ফুল সংগ্রহঃ

চন্দ্রমল্লিকা ফুল কুঁড়ি অবস্থায় তুললে ফোঁটে না। বাইরের পাপড়ি গুলো সম্পূর্ণ খুলে গিয়েছে এবং মাঝের পাপড়ি গুলো ফুটতে শুরু করেছে এমন অবস্থায় খুব সকালে অথবা বিকেলে ধারালো ছুরি দিয়ে দীর্ঘ বোঁটাসহ কেটে ফুল তোলা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফুল

গাঁদা ফুল চাষ

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

শীতে গাঁদা ফুলের চাষ

শীতকালের ফুলের মধ্যে গাঁদা অন্যতম। বিবাহ, জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, গৃহসজ্জা, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ও শহীদ দিবসসহ সব অনুষ্ঠানেই গাঁদা ফুলের বিকল্প নেই। কেটে যাওয়া ত্বকের রক্ত পড়া বন্ধ করতে, কাটা ঘা শুকাতে ও জীবাণুনাশক হিসাবে গাঁদা পাতার রস খুব উপকারী।

জাতঃ

চাইনিজ , রাজগাঁদা, আফ্রিকান ও ফরাসি জাতের গাঁদা আমাদের দেশে বেশি চাষ হয়। রঙ ভেদে গাঁদার জাত হচ্ছে হলুদ, লাল, কমলা, গাঢ় খয়েরি, লাল হলুদের মিশ্রণ ইত্যাদি। আফ্রিকান জাতের গাছ সোজা ও লম্বা, ৩০-১০০ সেমি লম্বা হয়। ফুল কমলা, হলুদ ও গাঢ় খয়েরি রঙের ছিটা দাগযুক্ত হয়। ফরাসি গাঁদার গাছ খাট ও ঝোপালো, ১৫-৩০ সেমি লম্বা হয়। ফুল আকারে ছোট,  প্রচুর ধরে ও রঙ লাল। কমলা সুন্দরীর গাছ খুব শক্ত। ফুল গাঢ় কমলা। শাখা প্রশাখা বেশি হওয়ায় ফুল বেশি ধরে। ফুলের আকার ৪.৫ থেকে ৫ সেমি। অনেক দিন পর্যন্ত ফুল ধরে। প্রতি গাছে ৫৫-৬০ টি ফুল পাওয়া যায়। রোগ সহনশীল।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

চারা তৈরিঃ

শাখা কলম ও বীজের মাধ্যমে গাঁদা ফুলের চারা তৈরি করা যায়। নভেম্বরে বীজতলায় বীজ বপন করে চারা উৎপাদন করতে হয়। সারা বছর চাষ করা গেলেও শীতকালে ফলন ভাল হয়। শাখা দিয়ে কলম করার জন্য গাঁদা গাছের শাখা ৮-১০ সেমি লম্বা করে কাটতে হবে। বীজতলায় শাখা ডালের টুকরাগুলো দু একটি পর্বসহ রোপন করতে হবে। উপযুক্ত সময় হচ্ছে মার্চ মাস। নিয়মিত সেচ দিয়ে বীজতলা ভিজিয়ে রাখতে হবে। ২০-২৫ দিনের মধ্যে পাতা গজায়।

জমি নির্বাচন ও তৈরিঃ

উঁচু, সুনিষ্কাশিত দো আঁশ ও উর্বর মাটি গাঁদা চাষের উপযোগী। চার পাঁচবার চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝুরঝুরে করে জমি তৈরি করতে হবে। টবে বা পাত্রে চাষ করলে তিন ভাগ দো আঁশ এঁটেল বা দো আঁশ মাটির সাথে একভাগ গোবর মিশিয়ে সার মাটির মিশ্রন তৈরি করতে হবে। এই সার মাটি টবে বা পাত্রে বা পলিব্যাগে ভরতে হবে।

সার প্রয়োগঃ

প্রতি শতক জমিতে পঁচা গোবর, ৪০ কেজি ইউরিয়া ২ কেজি, টিএসপি ৩ কেজি এবং এমওপি ২ কেজি সার প্রয়োজন । এ সারগুলো মাটির সাথে মিশাতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

চারা রোপনঃ

বীজ থেকে অথবা শাখা থেকে তৈরি একমাস বয়সের চারা রোপন করতে হয়। ডিসেম্বর মাসে চারা রোপন করতে হয় । সারি থেকে সারির দূরত্ব ৪০-৫০ সেমি এবং চারা থেকে চারার দূরত ৩০-৪০ সেমি হওয়া উচিত। চারা উৎপাদন না করে সরাসরি বীজ থেকেও গাঁদা চাষ করা যায়। এক্ষেত্রে প্রতি শতকে ৫-৬ গ্রাম বীজ জমিতে বপন করতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

পরিচর্যাঃ

মাটি শুকনোর আগেই সেচ দিতে হয়। গাছের গোড়াই পানি জমলে  নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। আগাছা জন্মালেই নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করতে হবে। গাঁদা ফুলে রোগ বালাই তেমন হয়না। তবে জাব পোকা আক্রমণ করলে ২ মিলি ম্যালাথিয়ন ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। গাছ বড় হলে খুটির সাথে বেধে দিলে গাছ  সোজা থাকে। এতে ফুলের গুনগত মান ভাল হয়। গাছে ফুলের সংখ্যা বৃদ্ধি করার জন্য ফুল আসার একমাস আগে গাছের ডগা ভেঙে দিতে হবে। একটি শাখায় ঘন হয়ে অনেকগুলো ফুল বা কুঁড়ি ধরলে উপরের একটি বা দুইটি রেখে বাকিগুলো ভেঙ্গে দিতে হবে যাতে ফুল বড় হয়। চারা রোপনের ১৫ দিন পর প্রতি শতাংশে ৫০ গ্রাম ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করা যেতে পারে। চারা মারা গেলে সেখানে চারা রোপন করা উচিত। চারা ঘন হলেও পাতলা করতে হবে।

গাঁদা ফুল চাষ
গাঁদা ফুল চাষ

ফুল সংগ্রহ ও ফলনঃ

ফুল কাঁচি বা ব্লেড দিয়ে বোটাসহ কেটে সংগ্রহ করতে হবে। খুব ভোরে ফুল তুলতে হয়। চারা রোপনের ৩৫-৪০ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গড়ে একটি গাছে জাত ভেদে ১৫-৪০ টি ফুল ধরে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com