ময়মনসিংহে এ বছর সরকারিভাবে বোরো ধান, সেদ্ধ ও আতপ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি সেদ্ধ ও আতপ চাল সংগ্রহ করা হলেও ধানের ক্ষেত্রে ৬ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রাও অর্জন করা যায়নি।
লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ সংগ্রহ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। খাদ্য বিভাগের দাবি, সরকারিভাবে ধান ও চাল কেনার যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, এ বছর বাজারমূল্য তার চেয়ে বেশি। যে কারণে কৃষকেরা ধান ও চাল বাজারে বিক্রি করেছেন।
কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর সরকারিভাবে নির্ধারণ করা দাম ও বাজারমূল্য ছিল কাছাকাছি। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাজারমূল্য ছিল বেশি। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে নিয়ে যাওয়ার পর অনেক সময় হয়রানির শিকার হতে হয়। আবার ধানের আর্দ্রতা কম হলে কিনতে চায় না। এতে ধান বিক্রি হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। এসব কারণে কৃষকেরা বাজারে বিক্রি করেছেন। এ বছর বাজারে কিছুটা ভেজা ধানের দামও সরকারের দামের চেয়ে বেশি ছিল।
ময়মনসিংহ জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১৫ মে থেকে শুরু হয় সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ কর্মসূচি। প্রথম দফায় ৩১ আগস্ট সংগ্রহের সময়সীমা শেষ হয়। পরবর্তী সময়ে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। এ কর্মসূচিতে ছিল বোরো ধান, সেদ্ধ ও আতপ চাল কেনা। প্রতি কেজি ধান ২৬, সেদ্ধ চাল ৩৬ ও আতপ চাল ৩৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে সরকার।
জেলার ১৩টি উপজেলার ১৯টি খাদ্যগুদামে ৬২ হাজার ১৮৬ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর বিপরীতে সংগৃহীত হয়েছে ৩৯ হাজার ৮৩০ দশমিক ২৫০ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৬৪ শতাংশ। আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন। সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৫৮ শতাংশ বা ৪ হাজার ৫৮০ দশমিক ২২ মেট্রিক টন। তবে ধান সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রার ৯৪ শতাংশের বেশিই পূরণ হয়নি। ৪৩ হাজার ৭৭৩ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২ হাজার ৫৮৬ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন।
গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ গুদামে ৬৮০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেখানে কেনা হয়েছে মাত্র ১ মেট্রিক টন। অথচ ওই এলাকায় বোরো ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে। শ্যামগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইশরাত আহমেদ বলেন, ‘আমরা কৃষকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। কিন্তু বাজারে দাম বেশি থাকায় কৃষক আমাদের ধান দেননি।’
জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, কৃষক সরকারের কাছে ধান-চাল বিক্রি করতে বাধ্য নন। সরকারের দামের চেয়ে বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়া খুবই ইতিবাচক দিক। সরকার ধান কেনায় বাজারে দাম বেড়েছে। এতে কৃষকেরা লাভবান হয়েছেন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন