মেনোপজের পর নারীকে নানারকম শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সামনে পড়তে হয়। এরমধ্যে একটি সমস্যা হলো: দ্রুত হাড় ক্ষয়। বেশির ভাগ নারীকেই মেনোপজ পরবর্তী সময়ে হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যায় ভুগতে হয়। এরকম অবস্থায় ব্যথার পাশাপাশি সামান্য আঘাতে হাড় ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়।
সম্প্রতি আমেরিকান সোসাইটি অব বোন অ্যান্ড মিনারেল রিসার্চ (এএসবিএমআর)-এর বার্ষিক অধিবেশনে জেনেভা ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের একদল গবেষক তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে জানান, রোজ খাবারের সঙ্গে এক কাপ টক দই খেলেই হাড়ের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যেতে পারে। ওই গবেষণাপত্রটি নিয়ে এন্ডোক্রিনোলজিস্টরা খুবই আশাবাদী। বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে টানা তিন বছর কাজ করার পর গবেষণা পত্রটি উপস্থাপন করেন। গবেষণাপত্রে সমীক্ষকেরা জানিয়েছেন, যখন নারীর মেনোপজ হয়, তখন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাড় দ্রুত ক্ষয়ে যেতে শুরু করে। বহু ক্ষেত্রে এমনই ভঙ্গুর অবস্থা হয় যে, সামান্য ঠোকা লাগলেও হাড় ভেঙে যায়। খাবারের সঙ্গে যে ক্যালসিয়াম শরীরের মধ্যে ঢোকে, সেগুলো শরীরের অন্য জরুরি কাজে খরচ হয়ে যায়। হাড়ে পৌঁছনোর মতো ক্যালসিয়াম শরীরে অনেক সময়েই থাকে না। এই সময়ে খাবারে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ কমে গেলে শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য হাড় থেকে ক্যালসিয়াম একটু একটু করে চলে যায়। ফলে হাড় আরও দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়ে। গবেষকদের মতে, একমাত্র ক্যালসিয়াম-পুষ্ট খাবারই ওই সমস্যার কিছুটা সমাধান করতে পারে। তা ছাড়া যে সব খাবার শরীরে বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে, সেগুলোও খাদ্য তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
গবেষক দলের প্রধান ইমানুয়েল বিভার জানিয়েছেন, তিন বছরের সমীক্ষা চালিয়ে আমরা দেখেছি, মেনোপজে পৌঁছে যাওয়া যে সব নারী রোজ খাবারের সঙ্গে এক কাপ দই খান, তাদের হাড় অন্যদের থেকে বেশি শক্তিশালী হয়। সামান্য চোট লাগলেই তা ভেঙে যায় না। তিনি আরও বলেন, আমাদের গবেষণায় এমন বেশ কিছু নারীও ছিলেন, যারা তিন বছর ধরে খাবারের সঙ্গে দই খাননি। এই দু’ধরনের নারীর হাড়ের গঠন আমরা নিয়মিত পরীক্ষা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।
গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যে সব নারী নিয়মিত দই খেয়েছেন, তাদের হাড়ের ঘনত্ব বেড়েছে। পাশাপাশি কমেছে শরীরে চর্বির পরিমাণ।
গবেষকদের মতে, দইয়ের মধ্যে থাকা ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ‘ডি’ হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। তাছাড়া জমাট বাঁধার জন্য দইয়ে যে সব ব্যাকটেরিয়া থাকে সেগুলো একদিকে যেমন খাদ্যনালীতে ক্যালসিয়ামের শোষণ প্রক্রিয়া তরান্বিত করে, তেমনই হাড়ের ক্ষয়ও রোধ করে। গবেষকেরা বলছেন, খাদ্যনালীর মধ্যে বেশ কিছু এমন ব্যাকটেরিয়া থাকে যেগুলো দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। দইয়ের মধ্যে থাকা ব্যাকটেরিয়া এই সব ‘ভালো’ ব্যাকটেরিয়াকে সক্রিয় করে, যা আবার হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষার পক্ষে উপযোগী।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন