আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

মিশ্র ফল চাষে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন সাখাওয়াত

নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় মিশ্র ফলের বাগান করে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন কৃষক সাখাওয়াত হাবিব। উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার দূরে শিরন্টি ইউনিয়নের ফুটকইল গ্রামে ৯৬ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে বাগানটি। যেখানে দুই বছর আগে ১২ হাজার ৮০০টি আমের গাছ লাগানো হয়েছিল।

১০ মাস আগে সেই বাগানের আমগাছের সারির ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন জাতের ১১ হাজার ৭০০টি বরইগাছ লাগানো হয়। আমগাছগুলো থেকে গত বছরই ফলন পান। আর এবারই প্রথম বরইগাছগুলোতে বরই ধরেছে। প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ মণের মতো বরই সংগ্রহ করা হচ্ছে। তার মিশ্র ফলের বাগানে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে শতাধিক কৃষকের।

সাখাওয়াত হাবিবের গ্রামের বাড়ি জেলার পত্নীতলা উপজেলার শিহাড়া ইউনিয়নের গোবিন্দবাটি গ্রামে। ২০০৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দেন। এরপর বড় ভাই হারুনুর রশিদ বাড়িতে বসে না থেকে আমবাগান ইজারা নিয়ে কাজ করার পরামর্শ দেন। বরেন্দ্র এলাকায় হিসেবে খ্যাত সাপাহারে তিনি মিশ্র ফলের বাগান করে সফলতা পেয়েছেন।

সাপাহারের ফুটকইল গ্রামে ২০১৮ সালে বছরে প্রতি বিঘা জমি ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে ১২ বছরের জন্য ৯৬ বিঘা জমি ইজারা নেন। ওই বছরেই জমিতে আম্রপালি, আশ্বিনা, বারি-৪ ও গৌড়মতি জাতসহ বিভিন্ন প্রজাতির ১২ হাজার ৮০০টি আমের গাছ লাগান। গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে সেই বাগান পরিদর্শনে যান সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবর রহমান।

তিনি আম গাছের সারির ফাঁকা জায়গাগুলোতে বরই গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন। তার পরামর্শে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বরই গাছের চারা সংগ্রহ করেন সাখাওয়াত। গত বছরের মে মাসে ফাঁকা জায়গায় বল সুন্দরী, কাশ্মেরী আপেল, বেবি কুল, সেডলেস ও থাইকুল জাতের ১১ হাজার ৭০০টি বরই গাছের চারা রোপণ করেন।

jagonews24

চারা লাগানোর ৮ মাসের মাথায় ডিসেম্বর মাসে গাছগুলোতে ফুল আসে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফল পরিপক্ব হয়। ডালে থোকায় থোকায় ধরে আছে বরই। বরইগাছগুলো ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে। বাগানে ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে পাকা বরই সংগ্রহ করেন।

বাগানেই তা কিনতে আসেন রাজশাহী ও পাবনার ব্যবসায়ীরা। জাতভেদে প্রতি মণ বরই পাইকারি বিক্রি হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ৯৬ বিঘা জমিতে বরই চাষ করতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ লাখ টাকা।

গত বছর আমের মৌসুমে মিশ্র ফলের বাগান থেকে ২৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছিলেন। এ বছর আমের মুকুল আসার পরপরই সম্ভাব্য ফলন ধরে নিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছে ৪১ লাখ টাকায় বিক্রির চুক্তি করেছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ লাখ টাকার বরই বিক্রি করা হয়েছে। বাজারে ভালো দাম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরও অন্তত ৯০ লাখ টাকা পাবেন বলে আশাবাদী সাখাওয়াত।

jagonews24

মিশ্র ফল বাগান করে সাখাওয়াত এলাকার অন্যান্য কৃষকদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। এই বাগান দেখতে এবং মিশ্র ফল বাগান গড়ে তোলার পরামর্শ নিতে আসছেন স্থানীয়রা।

কৃষক সাখাওয়াত হাবিব বলেন, ২০০৭ সালে নিজের একটি মোটরসাইকেল ও মায়ের দেয়া একটি গাভি বিক্রি করে ১ লাখ ১০ হাজার টাকায় পত্নীতলার নির্মইল এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১২ বিঘার আমের বাগান তিন বছরের জন্য ইজারা নেন। ওই বাগান পরিচর্যা করে পরের বছরই আম বিক্রি করেন ৪ লাখ টাকার।

লাভের টাকা খরচ না করে ১২ হাজার টাকা চুক্তিতে ১২ বছরের জন্য আরও ২০ বিঘা জমি ইজারা নেন। সেখানেও আমের বাগান করা হয়। এরপর প্রতিবছর পুঁজি বাড়তে থাকলে জমির পরিমাণও বাড়ানো হয়। ৯৬ বিঘার ওই মিশ্র ফল বাগান ছাড়াও সাপাহার ও পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে তার ৩৫০ বিঘার আম বাগান রয়েছে। এসব বাগানে প্রায় তিন কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।

jagonews24

সাখাওয়াত বলেন, অন্যান্য ফসলের তুলনায় মিশ্র চাষ অধিক লাভজনক। মিশ্র বাগানে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। প্রথমে গাছ লাগানো এবং জমি তৈরির পর কীটনাশক ও সামান্য পরিচর্যা ছাড়া কঠিন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না।

চাকরির পেছনে না ছুটে শিক্ষিত বেকার যুবকরা যদি নিজে কিছু করার উদ্যোগ নেয় তাহলে সফল হবে। পৈত্রিকসূত্রে ছয় বিঘা জমি পেয়েছিলাম। বাগান করে সফলতা পাওয়ায় বর্তমানে নিজের মালিকানায় আছে ৫০ বিঘা কৃষিজমি। সাপাহার উপজেলা সদরে জায়গা কিনে চারতলা ভবন করেছি। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকা হয়।

বাগানে কাজের শ্রমিক সাইদ উদ্দিন ও সুজন বলেন, জমির বেড তৈরি, পানি সেচ ও পরিচর্চা এবং বরই ভাঙ্গা সহ সব ধরনের কাজ বছরজুড়ে থাকে। এজন্য অন্য কোথাও যাওয়ার দরকার হয় না। এ বাগানো কাজ করে সংসার চলছে।

jagonews24

ফল বিক্রেতা হারুন-অর রশীদ বলেন, সাপাহার ও পোরশার মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় মিশ্র ফলের বাগান। গত দুই বছর থেকে এ বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করছি। এখান থেকে ফল সংগ্রহ করে ঢাকা, নওগাঁ, রাজশাহী, জয়পুরহাট পাবনা ও নাটোরসহ বিভিন্ন জেলায় পাইকারি বিক্রি করি। এই মৌসুমে বরই প্রতিমন ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায় কিনছি।

সাপাহার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মজিবর রহমান বলেন, বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে খ্যাত জেলার সাপাহার, পোরশা ও পত্নীতলা উপজেলার আংশিক এলাকা। পানি স্বল্পতার কারণে এসব এলাকার কৃষকরা ধান চাষ ছেড়ে ফলের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন।

আমের পাশাপাশি প্রতিবছরই উপজেলায় বরইয়ের চাষ বাড়ছে। সাখাওয়াতের সফলতা দেখে অনেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে। কৃষক সাখাওয়াতের মতো মিশ্র ফল বাগান গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাছে পরামর্শ নিতে আসছেন। আমের পাশাপাশি প্রতি বছরই উপজেলায় বরই চাষ বাড়ছে। বর্তমানে উপজেলায় বরই চাষ হওয়া জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ হেক্টর।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com