আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

ফল

মাল্টা চাষের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা ও সমাধান

পুষ্টির অভাবে গাছে রোগ বালাই হয়। তাই গাছের পুষ্টি সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। পুষ্টির অভাবের সাথে যখন সকালের রোদের অভাব, অতি বৃষ্টি সর্বোপরি সেচের তারতম্য হলেই নানাবিধ রোগের প্রকোপ বাড়তেই থাকে।

সমস্যা ও সমাধান

প্রশ্নঃ মাল্টা গাছে কচি পাতায়, ছোট পোকায় ডিম পেরে রাখে আর সেই ডিমগুলি ডগার রস চুসে পাতা খেয়ে ফেলছে, কি করলে পোকার হাত থেকে মাল্টা গাছ বাচাতে পারবো ?

সমাধান: প্রতি লিটার পানিতে রিপকর্ট/মার্শাল ০.৩০ মিলি ১ লিটার পানিতে দিয়ে ৭ দিন পর পর দুইবার স্প্রে করতে হবে শেষ বিকেলে। গাছে নতুনভাবে পাতা আসলে সপ্তাহে একবার হলেও বিষ স্প্রে করুন।

প্রশ্নঃ মাল্টা গাছের পাতাগুলো কুকড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় কি করণীয়?

সমাধান: “লিফ মাইনার “মাল্টার অন্যতম ক্ষতিকর পোকা। প্রাথমিক অবন্থায় লার্ভাসহ আক্রমন পাতা সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলতে হবে, আঠালো হলুদ ফাদ ব্যবহার করতে হবে, হলুদ রঙের বয়ামের বাইরের অংশে পোড়া মবিলের প্রলেপ দিয়ে ফাদ তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি সম্রসারন অধিদপ্তর লিফ মাইনারের ক্ষেত্রে ডাইমেথোয়েট (টাফগর) সুপারিশ করেছে।

সবচেয়ে ভাল কাজ করে সবিক্রন। প্রতি লিটার পানিতে তিন মিলি হারে ৭ দিন পরপর মোট ২ বার টাফগর বা সবিক্রন স্প্রে করতে হবে শেষ বিকেলে। গাছে নতুনভাবে পাতা আসলে সপ্তাহে একবার হলেও বিষ স্প্রে করুন। কিন্তু গাছে ফল থাকা অবস্থায় স্প্রে করা যাবে না।

প্রশ্নঃ মাল্টা গাছের গা ও গোরা ফেটে আঠা বের হছে কি করব ?

সমাধান: এটিকে গ্যামোসিস বলা হয়। মাল্টার কমন রোগ। আঠা ঝড়া দেখামাত্র কিছুটা সুস্থ অংশসহ বাকল / ছাল তুলে ফেলা এবং কর্তিত অংশে বোর্দো মিশ্রণ বা কপার অক্সিক্লোরাইট জাতীয় ছত্রাক নাশক যেমন- কুপ্রাভিট ৫ গ্রাম/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছের বডি স্প্রে করে দিন। কর্তিত অংশ শুকিয়ে যাবার পর পুরো গাছ প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম কপার দিয়ে স্প্রে করে দিন। ৭ দিন পর আবার। অথবা পাথর চুন দিয়ে পেস্ট বানিয়ে ওখানে দিন। আশাকরি সমাধান হয়ে যাবে।

প্রশ্নঃ মাল্টা গাছের পাতা কেন এমন পুড়ে যাচ্ছে? কি মিশাবো মাটিতে ?

সমাধান: অল্প একটু চুন এক লিটার পানিতে মিলিয়ে ২৪ ঘন্টা পর মাটিতে দিয়ে দিবেন। তাতে অতিরিক্ত বোরনটা নিচের স্তরে চলে যাবে। তারপর এক সপ্তাহ পর জৈব সার দু কেজি এবং একমুঠো লাল বালু গাছটির গোঁড়া থেকে দূরে মাটিতে ভালো করে মিশিয়ে দিবেন। নিয়মিত সেচ দিবেন ঠিক হয়ে যাবে গাছ।

প্রশ্নঃ মাল্টা গাছের নতুন পাতাগুলো হলুদ হয়ে যাচ্ছে এর কারন কি ?

সমাধান: গাছ রিপটিং এর পরে অন্তঃত ৩-৭দিন পর্যন্ত আলোযুক্ত ছায়ায় রাখা প্রয়োজন। গাছে নাইট্রোজেনের ঘাটতি হলে নীচের দিক থেকে পাতা হলুদ হয়। সালফার ঘাটতি হলে উপরের নতুন পাতা হলুদ হবে।

আরেকটা কারণ হতে পারে অতিরিক্ত পানি দিলে। পাতা ঝরে পড়ছে কিনা খেয়াল করুন। পাতার বোটা শক্ত অথচ হলুদ হয়ে যাওয়া, গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকার প্রমাণ। মাটি শুকিয়ে না গেলে পানি দেবেন না।

আবার মাটি অতিরিক্ত শুকিয়ে গেলে, গাছের শেকড়ের গ্রোথে বাধাপ্রাপ্ত হলে পাতার রং হলুদ হয়ে যায়। নতুন রিপটিং এর পরে নতুন মাটিতে শেকড় ছাড়তে গাছ কিছুটা সময় নেয়, এই সময়ে পাতা থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে গাছ কিছু পাতা ঝরিয়ে ফেলে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্যে।

প্রশ্নঃ গাছ লাগানোর কতদিন পরে ফল এসেছে ?

সমাধান: কলমের গাছে প্রথম বছরেই ফল ধরে, কিন্তু প্রথম ছোট গাছে ফল রাখলে গাছের ক্ষতি হবে তাই পরের বছর রাখতে হবে ।

প্রশ্নঃ মাল্টা পরিপূর্ণ বড় হতে কত দিন লাগে ?

সমাধান: মাল্টা গাছে ফুল হওয়া থেকে ফল পাকা পর্যন্ত প্রায় ৮ মাস সময় লেগে যায়। জানুয়ারী থেকে ফেব্রুয়ারীর দিকে ফুল আসে, আর সেপ্টেম্বর থেকে নবেম্বর মাস পর্যন্ত গাছে ফল থাকে। দেশি মাল্টা ভাদ্র মাসে পাকে। গায়ের রঙ সবুজ থেকে খুব হাল্কা হলুদ হবে, চামরা টান টান ভাব দেখলে বুঝবেন খাওয়ার সময় হয়েছে। মাল্টা পরিপূর্ণ বড় হতে দু থেকে তিন মাস লাগে ।

প্রশ্নঃ গাছে মিডিয়াম সাইজ হয়ে মাল্টা ঝরে যায়। করনীয় কি ?

সমাধান: অনেক সময় পানি বেশী দেয়ার কারনে, কিছু ফুল ঝড়ে যাবে তার পরেও ফল আসবে, আর যদি বেশি ফলন পেতে চান তাহলে, মাল্টা গাছের গোড়া থেকে কিছুটা দূরে চারদিক গর্ত করে ফুল আসার পূর্বে, এক ভাগ মাটির সাথে এক ভাগ জৈব সার মিশিয়ে নিবেন। ১৫ দিন পর গাছে নতুন পাতা আসলে ছোট টবে আধা চা চামচ বড় টবে এক চা চামচ আর হাফড্রামে এক টেবিল চামচ বোরন দিতে হবে। বোরন সার গাছের গোড়ায় দেয়া যাবেনা। টবের কিনারা ঘেঁষে সার দিতে হয়। সার বিকেলে যখন সুর্য্যের তেজ কমে যায় তখন দিতে হয়।

ফুল থেকে গুটি আসার পরই পতি সপ্তাহে একবার লিবরেল জিংক প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম, লিবরেল বোরন (বোরাক্স/ বরিক এসিড) প্রতি লিটারে ২ গ্রাম একত্রে ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে, ফল পাকার পূর্ব পর্যন্ত।

গাছে পোকার আক্রমন হলে ফল ঝরে পড়ে অথবা গাছে ফুল আসার শেষের দিকে যখন ফল আসতে শুরু করে তখন যদি গাছের গোড়ার মাটি খুড়ে কোন রাসায়নিক সার দেওয়া হয় অথবা ভুল মেডিসিন ছোট ফলে স্প্রে করা হয় অথবা গাছকে এক জায়গার গাছ অন্য জায়গায় স্হানান্তর করা হয় তখন ফল ঝরে যাবে।

প্রশ্নঃ মাল্টার ওজনে ডাল ভেংগে যাচ্ছে-কি করি বলুন তো ?

সমাধান: গাছের তুলনায় মাল্টা খুব বেশি না হয়ে স্বাভাবিক হলে, খুঁটি জাতীয় ব্যাবস্থার মাধ্যমে ডাল রক্ষা করতে পারেন। প্রথম বছরে মাল্টা যদি খুব বেশি হয়, প্রতি পুস্প মঞ্জুরিতে সুস্থ্য ও সবল দেখে দুটি ফল রেখে, বাকীগুলো মার্বেল আকৃতি থাকা অবস্থায় ছাঁটাই করে দিতে হবে। তাহলে ফলন ভালো হবে। তবে পরিপক্কতার পূর্বে ব্যাগিং করলে অবাঞ্ছিত পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

মাল্টা গাছ লাগানোর পরে ফল ধরার পূর্ব পর্যন্ত ধীরে ধীরে ডালা ছেঁটে গাছকে নিদিষ্ট আকার দিতে হবে, যাতে গাছ উচু না হয়ে চারদিকে ছড়াতে পারে। কারন পার্শ্ব ডালে ফল বেশী ধরে। কাণ্ডের এক মিটার উচ্চতার সকল ডালা ছাঁটাই করতে হবে। ডালা ছাঁটাইয়ের পরে কাঁটা অংশে বোর্দোপেস্টের প্রলেপ দিতে হবে। মরা, শুকনা, রোগাক্রান্ত ডালা ছেঁটে ফেলতে হবে।

প্রশ্নঃ মাল্টা টক, কি করি বলুন তো ?

সমাধান: বাংলাদেশে যত গুলি জাত আছে বেশির ভাগ টক, তবে বারি ১ জাতটি মিস্টি হয়, তবে মিষ্টি জাতের মাল্টা যদি মাটির কারনে টক হয়, তখন হাড়ের গুড়ার সাথে সামান্য পাথর চুন প্রয়োগ করুন, চুন এ বিদ্যমান ক্যালসিয়াম ফলের মিষ্টতা বাড়ায়। অথবা গাছের গোড়ায় ম্যাগ্নেসিয়াম সালফেট গাছ প্রতি ২ চা চামচ ১৫ দিন পর পর দুই বার দিলে ফল মিস্টি হবে।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

এগ্রোবিজ

বিদেশ থেকে খালি হাতে ফিরে ড্রাগন চাষে সাফল্য

বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম
বাগানে চাষ করা ড্রাগন হাতে মিরাজুল ইসলাম

মিরাজুল ইসলাম (৩৩)। ১০ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা জটিলতায় খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কী করবেন ভেবে পাচ্ছিলেন না। এক বছর বেকার থাকার পর ইউটিউবে পতিত জমিতে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখেন। বাবার কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে নেমে পড়েন ড্রাগন চাষে। দেড় বছরের ব্যবধানে এখন উপজেলার সবচেয়ে বড় ড্রাগন বাগান তাঁর। এ বছর খরচ বাদে আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।

পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার ইন্দুরকানি গ্রামের বাসিন্দা মিরাজুল। উপজেলার টগরা গ্রামে দেড় একর জমিতে তিনি ড্রাগনের বাগান তৈরি করেছেন। তাঁর বাগানে এখন সাড়ে তিন হাজার ড্রাগন ফলের গাছ আছে।

মিরাজুল ইসলাম বলেন, শ্রমিক হিসেবে ১০ বছর সৌদিতে কাজ করে ২০১৯ সালে দেশে ফেরেন তিনি। আকামা সমস্যার কারণে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। কিছু একটা করবেন বলে ভাবছিলেন। একদিন ইউটিউবে ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখতে পান। সেই থেকে ড্রাগন চাষে আগ্রহ জন্মে। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে দেড় একর পতিত জমি ড্রাগন চাষের উপযোগী করেন। গাজীপুর থেকে ৬০ টাকা দরে ৬০০ চারা নিয়ে আসেন। বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। পরের বছর জুনে ফল পাওয়া শুরু করেন।

ড্রাগনের বাগান করতে মিরাজুলের খরচ হয়েছিল ছয় থেকে সাত লাখ টাকা। ইতিমধ্যে ফল বিক্রি করে তাঁর খরচ উঠে গেছে। সাধারণত মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত গাছে ফল আসে। বছরে ছয় থেকে সাতবার পাকা ড্রাগন সংগ্রহ করা যায়। এখন পরিপক্ব ও রোগমুক্ত গাছের শাখা কেটে নিজেই চারা তৈরি করেন। ড্রাগন চাষের পাশাপাশি বাগানে চুইঝাল, এলাচ, চায়না লেবুসহ মৌসুমি সবজি চাষ করেন। এ ছাড়া ড্রাগনের চারাও উৎপাদন করে বিক্রি করেন তিনি।

মিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বাগানের বেশির ভাগ গাছে এ বছর ফল ধরেছে। গত মঙ্গলবার বাগান থেকে দেড় টন ফল সংগ্রহ করেছেন। ২৫০ টাকা কেজি দরে ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারদের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয় বাজারে ৩০০ টাকা কেজি দরে ড্রাগন বিক্রি হয়। নভেম্বর পর্যন্ত আরও পাঁচ–ছয়বার বাগান থেকে ফল তোলা যাবে। আশা করছেন, খরচ বাদে এবার আট থেকে নয় লাখ টাকা লাভ থাকবে।

মিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার বাগান থেকে চারা নিয়ে অনেকে বাড়িতে ও ছাদে ছোট পরিসরে ড্রাগনের বাগান করেছেন। আমি এ পর্যন্ত ৪০ টাকায় দেড় হাজার চারা বিক্রি করেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পূর্ণ বয়সের একটি ড্রাগনের চারা রোপণের পর ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। এর মৃত্যুঝুঁকি নেই বললেই চলে। তবে কয়েক দিন পরপর সেচ দিতে হয়। বৃষ্টির পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখতে হয়। ড্রাগন ফল চাষে রাসায়নিক সার দিতে হয় না।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইশরাতুন্নেছা বলেন, মিরাজুল ইসলামকে ড্রাগন চাষে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছে কৃষি বিভাগ। উপজেলায় তাঁর বাগানটি সবচেয়ে বড়। তিনি নিরলস পরিশ্রম করে ছোট থেকে বাগানটি বড় করেছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পেঁয়াজের ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে সাথি ফসল বাঙ্গি

পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার
পেঁয়াজ তুলে নেওয়ার পর পুরো জমি ভরে গেছে বাঙ্গিগাছে। ফলন হয়েছে ভালো। পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামে গত শুক্রবার

পাবনার বেড়া উপজেলার বড়শিলা গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম তাঁর দুই বিঘা জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করে এবার প্রায় ৪০ হাজার টাকা লোকসান দিয়েছেন। অথচ পেঁয়াজের জমিতেই সাথি ফসল হিসেবে লাগানো বাঙ্গি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকার মতো লাভ করবেন বলে আশা করছেন। এই বাঙ্গি আবাদে তাঁর কোনো খরচ হয়নি। ফলে পেঁয়াজ আবাদের ক্ষতি পুষিয়ে যাচ্ছে।

সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বাঙ্গি আবাদ কইর‌্যা যে টাকা পাইল্যাম তা হলো আমাগরে ঈদের বোনাস। পেঁয়াজের দাম না পাওয়ায় আমরা (কৃষকেরা) যে ক্ষতির মধ্যে পড়িছিল্যাম, বাঙ্গিতে তা পুষায়া গেছে। এই কয়েক দিনে ১২ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচছি। সব মিলায়া ৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বেচার আশা করতেছি।’

সাইদুল ইসলামের মতো পাবনার বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলার অনেক কৃষক এবার পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গির আবাদ করেন। কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদ করতে গিয়ে বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছিলেন। সেই হিসাবে প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে তাঁদের খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকার বেশি। কিন্তু বাজারে সেই পেঁয়াজ কৃষকেরা বিক্রি করতে পেরেছেন প্রতি মণ ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকায়। এতে প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদে কৃষকদের এবার ২০ হাজার টাকার বেশি লোকসান হয়েছে।

কৃষকেরা বলেন, পেঁয়াজের জমিতে সাথি ফসল হিসেবে বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। জমিতে পেঁয়াজ লাগানোর পর তা কিছুটা বড় হলে এর ফাঁকে ফাঁকে এসব সাথি ফসল লাগানো হয়। পেঁয়াজের জন্য যে সার, কীটনাশক, সেচ দেওয়া হয়, তা থেকেই সাথি ফসলের সব চাহিদা পূরণ হয়ে যায়। ফলে সাথি ফসলের জন্য বাড়তি কোনো খরচ হয় না।

কৃষকেরা বলেন, বাঙ্গিতেই কৃষকের লাভ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। রমজান মাস হওয়ায় এখন বাঙ্গির চাহিদা ও দাম দুই-ই বেশি।

সাঁথিয়ার শহীদনগর গ্রামের কৃষক আজমত আলী জানান, তাঁর জমিসহ এই এলাকার জমি থেকে ৮ থেকে ১০ দিন হলো বাঙ্গি উঠতে শুরু করেছে। এবার বাঙ্গির ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। বাজারে এসব বাঙ্গি আকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এমন দাম থাকলে এক বিঘা থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, পেঁয়াজের সঙ্গে সাথি ফসলের আবাদ কৃষকদের মধ্যে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এ ব্যাপারে তাঁরাও কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

কাঁঠালের আইসক্রিম জ্যাম ও চিপস

জাতীয় ফল কাঁঠালের জ্যাম, চাটনি ও চিপস উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএআরআই) শস্য সংগ্রহের প্রযুক্তি বিভাগের একদল গবেষক। তাঁরা কাঁঠাল প্রক্রিয়াজাত করে মোট ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।

গত শনিবার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) ‘কাঁঠালের সংগ্রহত্তোর ক্ষতি প্রশমন ও বাজারজাতকরণ কৌশল’ শীর্ষক কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব তথ্য জানান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী। কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের (কেজিএফ) অর্থায়নে এবং নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের সহযোগিতায় গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালিত হয়।

কর্মশালায় ড. মো. গোলাম ফেরদৌস চৌধুরী বলেন, ‘এই প্রকল্পের আওতায় আমরা কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাত করে মুখরোচক ১২টি প্যাকেট ও বোতলজাত পণ্য তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসব পণ্য উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট। কাঁঠালের জ্যাম, আচার, চাটনি, চিপস, কাটলেট, আইসক্রিম, দই, ভর্তা, কাঁঠাল স্বত্ব, রেডি টু কুক কাঁঠাল, ফ্রেশ কাট পণ্যসহ আরও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেটজাত পণ্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। প্রক্রিয়াজাত পণ্যগুলো ঘরে রেখে সারা বছর খাওয়া যাবে। কাঁঠাল থেকে এসব পণ্য উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা কমানো সম্ভব বলে মনে করছেন গবেষক।’

কর্মশালায় নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের মুখ্য পরিদর্শক তারেক রাফি ভূঁইয়া বলেন, উদ্ভাবিত পণ্যগুলো বাজারজাত করার জন্য নিউভিশন কোম্পানি বিএআরআইয়ের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশের কয়েকটি জেলা ও উপজেলা শহরে পণ্যগুলো বিপণনের কাজ চলছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের শস্য সংগ্রহোত্তর প্রযুক্তি বিভাগের বিভাগের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মির্জা মোফাজ্জল ইসলাম। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সিনিয়র স্পেশালিস্ট (ফিল্ড ক্রপস) ড. নরেশ চন্দ্র দেব বর্মা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আবু হানিফ। উপস্থিত ছিলেন নিউভিশন সলিউশন্স লিমিটেডের প্রকল্প ম্যানেজার কায়সার আলম।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

ফল

কমলা চাষে সার ব্যবস্থাপনা, সেচ, আগাছা ব্যবস্থাপনা ও ফসল তোলা- দা এগ্রো নিউজ

কমলা

সার ব্যবস্থাপনা:  প্রতি গর্তে ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ১০০ গ্রাম টিএসপি সার ও এমওপি সার ১০০ গ্রাম প্রয়োগ করতে হয়।

সেচ ও আগাছা ব্যবস্থাপনা:  চারা গাছের গোড়ায় মাঝে মাঝে পানি সেচ দিতে হবে। বর্ষাকালে গাছের গোড়ায় যাতে পানি না জমে সেজন্য পানি নিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া কমলা গাছের আগাছা দমন করতে হবে।

ফসল তোলা: মধ্য কার্তিক থেকে মধ্য পৌষ মাসে ফল সংগ্রহ করতে হয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com