ভুট্টার মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে প্রোটিন আছে। যদিও এগুলি প্রথম শ্রেণির প্রোটিন নয়। অর্থাৎ মাছ, মাংসে যে পরিমাণ প্রোটিন পাওয়া যায়, সেটা এতে নেই। তবে ভাতের চেয়ে ভুট্টায় প্রোটিনের পরিমাণ বেশি।
এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিডের মধ্যে লাইসিন আর ট্রিপটোফ্যান আছে। আর আছে বিটা ক্যারোটিন, অর্থাত্ ভিটামিন এ। এ ছাড়া থায়ামিন, অর্থাত্ ভিটামিন বি-ও এতে পাওয়া যায়। ভুট্টায় ভিটামিন সি আছে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ভুট্টায় ভিটামিন সি-র পাশাপাশি অ্যান্টি অক্সিড্যান্টও আছে। ফলে, রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় গুণ এই ফসলে অনেকটাই বেশি। এ ছাড়াও ভুট্টায় ফাইবার থাকে অনেকটাই।
চোখের উপকারে
ভুট্টায় ক্যারোটিনয়েড লুটিন এবং জেক্সানথিনের মতো প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। এটি অপটিক টিস্যু থেকে ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিক্যালস দূর করে এবং দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। পাশাপাশি চোখের সূক্ষ্ম অংশগুলিকেও ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। গ্লুকোমা এবং ছানির মতো সমস্যা থেকেও রক্ষা করে।
রক্তাল্পতা দূর করতে
যাদের রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা কম তাদের জন্য এটি ওষুধের মতো কাজ করে। তাই রক্তাল্পতার চিকিৎসায় ভুট্টা খুবই সহায়ক।
হার্টের সুরক্ষায়
ভুট্টায় কোলেস্টেরলের এবং সোডিয়াম খাকে না। এতে থাকা ফাইবার ও ভিটামিন B3 থাকে সেটি ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমায়। ভুট্টার আটায় তৈরি রুটি হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারি।
বার্ধক্য রোধ করতে
ভুট্টা খেলে শরীরে কোলাজেন তৈরি হয়, যার কারণে ত্বক নরম ও মসৃণ হয়ে ওঠে। পাশাপাশি ভুট্টার বীজে থাকা ভুফেনোলিক অ্যাসিড এবং ফ্লেভোনয়েড, এই দুই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিক্যালসের সমস্যা দূর। ত্বকের নতুন কোষ তৈরির পাশাপাশি বলি রেখা মেটায়।
পেটের সমস্যা দূর করতে
এতে থাকা ফাইবার পেটে ব্যাথা, পেট ফাঁপা সহ পেটের বেশকিছু সমস্যা দূর করে। গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল কার্যকারিতাকে আরও উন্নত করে।
কিডনির সমস্যায়
ভুট্টা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ও কিডনির সমস্যাযর ক্ষেত্রেও উপকারি। মধ্যবয়সী এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে পরিমাণ বুঝে ভুট্টা খাওয়া উচিত। তবে যুবকরা প্রতিদিনই ভুট্টা খেতে পারেন।
স্নায়ুতন্ত্রের উন্নতিতে
ভুট্টা স্নায়ুতন্ত্রকে ভালভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, মানসিক চাপ কমাতে এবং অনিদ্রাজনিত রোগ দূর করতে সক্ষম এই ভুট্টা।
হাড় মজবুত করতে
ভুট্টায় প্রাকৃতিক ক্যালসিয়াম থাকে, যা হাড় মজবুত করে। এটি হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করে।
গর্ভাবস্থায়
গর্ভাবস্থায় খাদ্য হিসেবে ভুট্টা গ্রহণকে খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। কারণ ভুট্টায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, আয়রণ, এবং ফলিক অ্যাসিড সহ ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি ইত্যাদি। আর এইসব পৌষ্টিক উপাদান গর্ভবতী মহিলাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপকারী। একইসাথে গর্ভস্থ শিশুর জন্য ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়। এগুলি শিশুর মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড গঠনের ক্ষেত্রে যাবতীয় ত্রুটির সম্ভবনা খর্ব করে দেয়। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় মধুমেহ আক্রান্ত মহিলাদের জন্যও চিকিৎসকেরা খাদ্য হিসেবে ভুট্টা গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ভুট্টার একাধিক স্বাস্থ্য গুণ থাকলেও অনেক সময় ভুট্টা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক ও হয়ে ওঠে। ভুট্টায় থাকা উচ্চ মাত্রার ফাইবার পেটে ব্যথার জন্ম দেয়। শুধু পেটের যন্ত্রনাই নয়, একইসাথে পেট ফাঁপা, পেট খারাপ এর মতন একাধিক পেট সংক্রান্ত সমস্যা সৃষ্টি হয়।ভুট্টার মধ্যস্থিত গ্লুটেন আবার অনেক মানুষের ত্বকে অ্যালার্জির সৃষ্টি করে।কিছু ক্ষেত্রে আবার অধিক ভুট্টা গ্রহণ শরীরে পেলেগ্রা, ডায়রিয়া, চর্মরোগ এর মতো শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।
ভুট্টার একটি রেসিপি
নতুন কিছু খেতে মন চাইছে? আবার হাতে সময়ও কম। তাহলে বানাতেই পারেন তন্দুরি ভুট্টা। খেতেও ভালো, আবার স্বাস্থ্যকরও বটে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন