উপকরণ: মাংস ১ কিলোগ্রাম, বাসমতী চাল ৭৫০ গ্রাম, আলু ৬টি, সরষের তেল ৩ টেবিল চামচ, গোটা গরমমশলা ১ চা চামচ, পেঁয়াজ ৩টি, আদা-রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ, টক দই ২ টেবিল চামচ, লাল লঙ্কা গুঁড়ো ১ চা-চামচ, ধনে গুঁড়ো ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়ো অল্প, পাতিলেবু ১টি, নুন স্বাদমতো, তেজপাতা, ঘি, কেশর, বিরিয়ানি মশলা, কেওড়া জল পরিমাণ মতো, দুধ ১ কাপ।
প্রণালী: চাল ধুয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে তিন-চার ঘণ্টা। এ বার নুন-হলুদ আর সামান্য লঙ্কা গুঁড়ো মাখানো আলু সিদ্ধ করে রাখতে হবে। গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে পেঁয়াজ কুচি লালচে করে ভেজে নিন। আদা-রসুন বাটা, ধনে গুঁড়ো, লঙ্কা গুঁড়ো, টক দই দিয়ে ভাল করে কষুন। মাংসটা মশলায় দিয়ে কষিয়ে নিন, যতক্ষণ না ৮০-৯০ শতাংশ সিদ্ধ হয়ে আসছে। হাঁড়িতে তেজপাতা, লবঙ্গ, ছোট এলাচ দিয়ে জল ফুটিয়ে তাতে নুন আর অর্ধেক পাতিলেবুর রস দিয়ে ভিজিয়ে রাখা চাল দিয়ে দিন। সিদ্ধ হয়ে এলে সামান্য শক্ত থাকা অবস্থায় ভাতটা নামিয়ে জল ঝরিয়ে থালায় ছড়িয়ে রাখুন। হাঁড়িতে সামান্য ঘি ব্রাশ করে নিন। এ বার পরতে পরতে ভাত, আলু আর মশলা মাখানো মাংস সাজিয়ে বিরিয়ানি মশলা, ঘি আর কেওড়া জল দিতে হবে। এক কাপ দুধে কেশর ভিজিয়ে রাখুন আগে। এটাও দিন প্রত্যেক স্তরে। শেষে ভাল করে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে ঢিমে আঁচে তাওয়ায় বসাতে হবে ৩০ মিনিট।
পর্দা বিরিয়ানি
উপকরণ: ময়দা ১ কাপ, নুন স্বাদ মতো, সাদা তেল ৫ টেবিল চামচ, ইস্ট ১ টেবিল চামচ, গরম জল ১ কাপ, বাসমতী চাল ৩০০ গ্রাম (ভিজিয়ে রাখা), চিকেন ৫০০ গ্রাম, পেঁয়াজ ১টি, রসুন ৪-৫ কোয়া, আদা ১ ইঞ্চি, গোল মরিচ ১ টেবিল চামচ, গোটা ও গুঁড়ো গরমমশলা অল্প, আমন্ড ১০-১২টি, তেজপাতা ২টি, কাঁচা লঙ্কা ৪-৫টি, মটর/চানা ১ কাপ।
প্রণালী: ১ কাপ ঈষদুষ্ণ জলে ইস্ট আর ২ টেবিল চামচ ময়দা গুলে মিনিট পনেরো রেখে দিন। ইস্ট অ্যাক্টিভ হয়ে উঠবে এবং বুদবুদ তৈরি হবে। এতে অল্প নুন স্বাদ মতো মিশিয়ে নিন, সঙ্গে ২ টেবিল চামচ সাদা তেলও। মেশানোর সময়ে অল্প অল্প করে ময়দা দিতে থাকুন। আধঘণ্টা রেখে দিন। কড়াইয়ে ৩ টেবিল চামচ সাদা তেল দিয়ে তেজপাতা ফোড়ন দিন। এর মধ্যে পেঁয়াজ-আদা-রসুন কুচি দিয়ে মাংসটা দিন। গোটা গরম মশলা, নুন, মরিচ, কাঁচা লঙ্কা মেশান। আমন্ডও দিন। গরম মশলা গুঁড়ো দিয়ে চাপা দিন। কিছুক্ষণ পরে আধসিদ্ধ করে রাখা চাল মিশিয়ে দিয়ে মিনিট দশেক বেশি আঁচে রান্না করুন। এ বার মটর/চানা (আধসিদ্ধ) মিশিয়ে দিন। কিছুক্ষণ পরে গ্যাস নিভিয়ে বিরিয়ানি রেখে দিন ঠান্ডা করতে। ময়দা বেলে নিন বড় আকারে, কিছুটা পুরু করে। স্টিলের গোল পাত্রে সাদা তেল মাখিয়ে ময়দার খোলস রেখে ভিতরে বিরিয়ানি ভরে মুখটা আটকে দিন। প্রি-হিট করা আভেন বা প্রেশার কুকারে বেক করে নিন মিনিট কুড়ি।
প্রণালী: জলে আধঘণ্টা ধরে শুকনো লঙ্কা ভিজিয়ে রেখে মিক্সিতে বেটে নিতে হবে। হাঁড়ির জলে অল্প নুন আর তেল দিয়ে ভিজিয়ে রাখা চাল সিদ্ধ করে নিন খানিকটা। ৩/৪ ভাগ সিদ্ধ হয়ে এলে জল ঝরিয়ে থালায় বিছিয়ে রাখুন। কড়াইয়ে তেল গরম করে তেজপাতা, গোটা গরম মশলা ফোড়ন দিয়ে অল্প করে দই, পেঁয়াজ কুচি, আদা-রসুন বাটা দিয়ে দিন। কাঁচা মশলার গন্ধ চলে গেলে চিকেন দিন। ধনে পাতা, পুদিনা পাতা কুচি, বাকি পেঁয়াজ কুচি আর টম্যাটো কুচি দিন। মশলা রান্না হয়ে এলে শুকনো লঙ্কা বাটা, নুন, বাকি দইটাও দিয়ে দিন। চিকেন সিদ্ধ হলে তার উপরে ভাত স্তরে স্তরে সাজাতে হবে, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা দিয়ে। হাঁড়ির মুখ আটকে কম আঁচে বসান ২০ মিনিট। এই বিরিয়ানি কলাপাতায় পরিবেশন করলেই ভাল লাগবে।
হায়দরাবাদি বিরিয়ানি
উপকরণ: বাসমতী চাল দেড় কাপ, চিকেন ৫০০ গ্রাম, বিরিয়ানি মশলা ১/২ চা-চামচ, গোটা গরম মশলা, স্টার অ্যানিস ও মগ্গু অল্প, পেঁয়াজ ২টি (বেরেস্তা), ধনেপাতা কুচি ও পুদিনা পাতা কুচি ৪ টেবিল চামচ করে, ঘি বা সাদা তেল ৪ টেবিল চামচ, গরম দুধে (৩ টেবিল চামচ) কেশর (১/৪ চা-চামচ) ভেজানো।
প্রণালী: বেরেস্তা, টক দই, বাটা ও গুঁড়ো মশলা, বিরিয়ানি মশলা মাংসে মাখিয়ে ঘণ্টাদুয়েক ম্যারিনেট করুন। তেজপাতা, মগ্গু, গোটা গরম মশলা, তেল আর নুন দিয়ে চাল সিদ্ধ করে জল ঝরতে দিন। হাঁড়িতে ঘি মাখিয়ে চিকেন দিন। অল্প তেল ছড়িয়ে আঁচ কমিয়ে রান্না করুন। চিকেন হয়ে এলে ভাত ছড়িয়ে দিন উপরে। অল্প ঘি আর বেরেস্তা দিন। ধনে পাতা কুচি, পুদিনা পাতা কুচি, কেশর ভেজানো দুধ আর বিরিয়ানি মশলা দিতে হবে প্রতি স্তরে। গরম তাওয়ার উপরে হাঁড়ির মুখ বন্ধ করে, ভারী চাপা দিয়ে বসান।
অওয়ধি বিরিয়ানি
উপকরণ: মাটন ৫০০ গ্রাম, বাসমতী চাল ৩০০ গ্রাম, ঘি ১০০ গ্রাম, দুধে ভেজানো কেশর ১/২ চা-চামচ, জায়ফল গুঁড়ো দু’চিমটে, পেঁয়াজ ৩টি (বাটা ও কুচি), আদা-রসুন বাটা ৩ টেবিল চামচ, টক দই ২৫০ গ্রাম, গোটা ও গুঁড়ো গরম মশলা অল্প, জিরে গুঁড়ো ১ চা-চামচ, লাল লঙ্কার গুঁড়ো ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা-চামচ, ধনে গুঁড়ো দেড় চা-চামচ।
প্রণালী: ঘি গরম করে গোটা গরম মশলা দিয়ে ভিজিয়ে রাখা চাল দিন। অন্য দিকে আদা-রসুন বাটা, লাল লঙ্কার গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো, কাঁচা লঙ্কা, পাতিলেবুর রস দিয়ে মাটন আগে থেকে ম্যারিনেট করে রাখতে হবে। ঘি গরম করে বাটা মশলা ও গুঁড়ো মশলা দিয়ে মাটন কষে নিন। অল্প জল দিয়ে সিদ্ধ করুন। হাঁড়িতে ঘি মাখিয়ে তলায় তেজপাতা সাজিয়ে জল ঝরানো ভাত ও মাটন স্তরে-স্তরে সাজান। জায়ফল গুঁড়ো, কেশর-দুধ, ঘি, বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। শেষে কেওড়া জল, মিঠা আতর দিয়ে হাঁড়ির মুখ সিল করে দমে বসান আধঘণ্টা।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন