কৌশলে বাজার করতে পারলে টানাটানিতে পড়তে হবে না, বাজারে পণ্যের দাম দিনকে দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। আজকে যে দামে পণ্য কেনা হচ্ছে, দিন গড়াতেই বেড়ে যাচ্ছে তার দাম। ফলে টানাটানিতে পড়ে যাচ্ছে পুরো মাসের বাজারের বাজেটে। শুরু হওয়া নতুন আরেকটি মাসে প্রয়োজন হবে ঘরের নিত্যদিনের নানান প্রয়োজনীয় কেনাকাটা। তার আগেই জেনে নিন বাজারের খরচ কমানোর নয়টি খুবই সাধারণ কৌশল, যা পুরো বাজেটের উপরে চাপ কমাতে ভূমিকা রাখবে অনেকখানি। পুরো সপ্তাহের বাজার একসাথে
অনেকেই দৈনিক বাজার করেন অথবা দু’দিন পরপর বাজার করেন। এতেও কিন্তু খরচটা বেড়ে যায়। তাই বাজেট ও পরিমাণ নির্ধারণ করে পুরো সপ্তাহের বাজার একদিনে সেরে ফেলতে হবে। পচনশীল খাদ্য উপাদানগুলো বাজারের পরেই কেটে-ধুয়ে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে হবে। তালিকা তৈরি করুন কোন জিনিসগুলো পুরো সপ্তাহের জন্য প্রয়োজন সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে ফেলুন। চেষ্টা করবেন লিস্ট যথাসম্ভব প্রয়োজনের মাঝে রাখার। বাজার করার সময় আমরা প্রয়োজনের চাইতে পছন্দসই জিনিস বেশি কিনে ফেলি। খরচ তাতে বেড়ে যায় অনেকখানি। দূরে থাকুন সুপার শপ থেকে সুপার শপ থেকে একবারে প্রয়োজনীয় সকল জিনিস কিনে ফেলা সম্ভব হলেও, এখান থেকে বাজার করার ফলে খরচটাও বেশি হয় অজান্তে। বাজারে চেয়ে দাম কম বলা হলেও, বেশ কিছু জিনিসে দাম রাখা হয় বাড়তি। সাথে ভ্যাটের জন্য গুণতে হয় বাড়তি টাকা। ফলে পুরো খরচের হিসাব বেড়ে যায় অনেকটা। মাছ-মাংসের হিসেব করুন বাসায় সদস্য সংখ্যা কত ও একবারে কাঁচাবাজার কতদিনের জন্য করা হবে সেটা হিসেব করে তবেই মাছ ও মাংসের বাজার করুন। বাড়তি মাছ-মাংস ডিপ ফ্রিজে বহুদিন রাখা হলে আঁশটে গন্ধ চলে আসে, যা খাওয়া যায় না। তাই প্রয়োজন মাফিক কাঁচাবাজার করুন। অপরিচিত মসলা কেনা থেকে বিরত থাকুন রান্নায় ভিন্ন স্বাদ ও গন্ধ আনতে বিভিন্ন প্রকারের মসলা ব্যবহারের ঝোঁক থাকে অনেকের। ভিন্ন ও তুলনামূলক প্রচলিত মসলার দামও হয় সাধারণত কিছুটা বেশি। বাজার করার সময় এ ধরনের মসলা কেনা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কেটে রাখা ফল কেনা থেকে বিরত থাকুন বড় আকৃতির ফল কেনার সময় অনেকেই ফল কেটে ফলের ভেতরের অংশ দেখে কিনে থাকেন। এই কাজটি করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে ফল দ্রুত সময়ের মাঝে নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয় এবং বাহুল্য খরচ হয়। মৌসুমি ফল ও সবজি কিনুন প্রতি মৌসুমের সবজি ও ফলের ফলন হয় প্রচুর পরিমাণে। ফলে নির্দিষ্ট মৌসুমের ফল ও সবজির দামটাও হয় বেশ কম। তাই চেষ্টা করুন মৌসুমি ফল ও সবজি কেনার। যেমন গরমে বাঁধাকপি অল্প পরিমাণে পাওয়া গেলেও তার মূল্য রাখা হয় বেশ চড়া। তাই শীতকালেই ফ্রেশ বাঁধাকপি কেনা উচিত সুলভ মূল্যে। ঘরে তৈরি খাবারে প্রাধান্য দিন প্রায়শ বাইরে থেকে খাবার কেনা হয় কিংবা বাইরে খাওয়া হয়? এই অভ্যাসটি কমিয়ে ফেলুন যথাসম্ভব। ভাত-ভর্তা কিংবা নান, চাওমিন, পুডিং যেটাই কেনা হোক না কেন, দোকানের সব খাবারের দামই রাখা হয় অনেক বেশি। যা পুরো বাজেটের উপরেই প্রভাব ফেলে দেয়। রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার হার কমিয়ে আনলেও পছন্দের খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই। আপনার পছন্দের প্রতিটি খাবারই ঘরে তৈরি করা সম্ভব। তাও আবার খুব অল্প কিছু উপাদানে সহজ নিয়মেই। রেসিপি দেখে নিয়ম মেনে সে খাবারগুলো ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন।
সবসময় ব্র্যান্ডের পণ্য কেনা জরুরি নয় ধরুন দুইটি ভিন্ন ব্র্যান্ডের ডিশওয়াশারের মধ্যে একটি বেশ সুপরিচিত ব্র্যান্ডের ও অন্যটি তুলনামূলক নতুন ব্র্যান্ডের। পরিচিত ব্র্যান্ডের চেয়ে নতুন ব্র্যান্ডের ডিশওয়াশারের দাম বেশ কিছুটা কম নির্ধারণ করা হয়েছে। এমন ধরনের জিনিসের ক্ষেত্রে সকল ব্র্যান্ডের পণ্যই একই রকম কাজ করে। ফলে সাবান, গুঁড়া পাউডার, ডিশওয়াশারের মতো জিনিসগুলোতে ব্র্যান্ডের জিনিস না কিনলেও হবে এবং খরচ কমানো সম্ভব হবে।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন