আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের ফ্রান্স বিরোধী বিক্ষোভে জড়ো হয়েছিল হাজার হাজার মানুষ।

বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বা ইসলামপন্থী দলগুলোর উত্থান ও শক্তি সঞ্চয়ের বিষয়টি এখন আবার আলোচনায় এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে কওমী মাদ্রাসা-ভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম এবং ইসলামপন্থী দলগুলো ঢাকার রাজপথে ফ্রান্স-বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে ব্যাপক শোডাউন করে তাদের শক্তিমত্তা দেখিয়েছে।

ধর্মভিত্তিক ইস্যু ছাড়াও রাজনৈতিক অনেক বিষয় নিয়ে ইসলামপন্থী দলগুলোর একটা অবস্থান তৈরির চেষ্টা দৃশ্যমান হচ্ছে।

এমনকি বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাস্কর্য নির্মাণ বন্ধের দাবি তুলেছে ইসলামপন্থী কয়েকটি দল, যা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং সরকারকেই অস্বস্তিতে ফেলেছে।

বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন, এই পরিস্থিতি বড় দলগুলোকে চাপের মুখে ফেলছে।

কিন্তু ২০২০ সালের বাংলাদেশে ইসলামপন্থী দলগুলোর উত্থানের পেছনে কী কারণ থাকতে পারে – অনেকেই সেই প্রশ্নের জবাব খোঁজার চেষ্টা করছেন।

শূণ্যতার সুযোগ

ইসলামপন্থী দলগুলো জনগণের মাঝে ছোট পরিসরে হলেও একটা নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে এবং এর ভিত্তিতেই দেশের প্রচলিত রাজনীতিতে তাদের একটা প্রভাব তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মধ্যে অনেকে মনে করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলছেন, ইসলামপন্থী দলগুলো এখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিষয় নিয়েও কথা বলছে। এক্ষেত্রে তিনি ইসলামপন্থী দলগুলোর সম্প্রতি ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবির বিষয়টিকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক চৌধুরী মনে করেন, দেশে রাজনৈতিক শূণ্যতার সুযোগ নিয়ে কট্টর ডানপন্থার উত্থান হচ্ছে।

“বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক শূণ্যতা চলছে, সেটা সবাই জানেন,” বলছেন তিনি, “যেখানেই রাজনৈতিক শূণ্যতা তৈরি হয়, সেখানেই উগ্রপন্থীদের উত্থান ঘটে, সেটা ডানপন্থী বলেন কিংবা বামপন্থী বলেন।”

“বাংলাদেশে বামপন্থীদের তো সেরকম তৎপরতা নাই। এই ডানপন্থীদেরই তৎপরতা বেশি আছে গ্রামপর্যায়ে। সুতরাং ডানপন্থীরা শূণ্যতা পূরণের চেষ্টা করবে, তা স্বাভাবিক। এবং সেটাই তারা করছে। সেজন্য এরা শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়, অনেক রাজনৈতিক বিষয়েও বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক শূণ্যতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলেছ। এর জেরে বিরোধী শিবিরের দূর্বলতা দৃশ্যমান। ইসলামপন্থী দলগুলো সেই শূণ্যতার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে তারা মনে করেন।

শূণ্যতার সুযোগ

ইসলামপন্থী দলগুলো জনগণের মাঝে ছোট পরিসরে হলেও একটা নিজস্ব অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে এবং এর ভিত্তিতেই দেশের প্রচলিত রাজনীতিতে তাদের একটা প্রভাব তৈরি হয়েছে বলে বিশ্লেষকদের মধ্যে অনেকে মনে করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলছেন, ইসলামপন্থী দলগুলো এখন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির বিষয় নিয়েও কথা বলছে। এক্ষেত্রে তিনি ইসলামপন্থী দলগুলোর সম্প্রতি ফ্রান্সের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবির বিষয়টিকে উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেন।

অধ্যাপক চৌধুরী মনে করেন, দেশে রাজনৈতিক শূণ্যতার সুযোগ নিয়ে কট্টর ডানপন্থার উত্থান হচ্ছে।

“বাংলাদেশে একটা রাজনৈতিক শূণ্যতা চলছে, সেটা সবাই জানেন,” বলছেন তিনি, “যেখানেই রাজনৈতিক শূণ্যতা তৈরি হয়, সেখানেই উগ্রপন্থীদের উত্থান ঘটে, সেটা ডানপন্থী বলেন কিংবা বামপন্থী বলেন।”

“বাংলাদেশে বামপন্থীদের তো সেরকম তৎপরতা নাই। এই ডানপন্থীদেরই তৎপরতা বেশি আছে গ্রামপর্যায়ে। সুতরাং ডানপন্থীরা শূণ্যতা পূরণের চেষ্টা করবে, তা স্বাভাবিক। এবং সেটাই তারা করছে। সেজন্য এরা শুধু ধর্মীয় বিষয় নয়, অনেক রাজনৈতিক বিষয়েও বক্তব্য বিবৃতি দিচ্ছে।”

রাজনৈতিক শূণ্যতার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে ফেলেছ। এর জেরে বিরোধী শিবিরের দূর্বলতা দৃশ্যমান। ইসলামপন্থী দলগুলো সেই শূণ্যতার সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে বলে তারা মনে করেন।

শূণ্যতার ইস্যু: বড় দুই দল

কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং বিরোধীদল বিএনপি রাজনৈতিক শূণ্যতার বিষয়কে ব্যাখ্যা করেছে তাদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসনের কারণেই উগ্রতা মাথা চাড়া দিচ্ছে।

“এখানে এখন কথা বলার বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। ভিন্নমত হলেই তাকে নির্যাতন বা দমন করা হচ্ছে,” বলেন মি. আলমগীর, “এই অবস্থা তৈরি করেছে সরকার। সরকারই সমাজকে সেদিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

তবে আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সদস্য অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ফারুক খান মনে করেন, দেশে কোন রাজনৈতিক শূণ্যতা নেই এবং ইসলামপন্থীদের কোন উত্থান তারা দেখছেন না।

জামায়াতের জায়গা নেবে তারা?

অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীর শূণ্য জায়গাও নেয়ার চেষ্টা করছে ইসলামপন্থী অন্য দলগুলো।

“ধর্ম নিয়ে রাজনীতিতে কওমী মাদ্রাসাভিত্তিক এবং পীরদের দলগুলোর মুল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল জামায়াতে ইসলামী। সেখানে জামায়াতের প্রকাশ্য তৎপরতা যেহেতু নাই, সেই খালি জায়গাও ইসলামী অন্য দলগুলো নেয়ার চেষ্টা করছে।”

বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে বেশ কয়েকটি ইসলামপন্থী দলের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীও রয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র একাধিক নেতা বলেছেন, জামায়তে ইসলামীই ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে নেতৃত্ব ছিল। সেই অবস্থান কোনো মেরুকরণের দিকে এগুচ্ছে কিনা- সেটা বিএনপি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

যদিও জামায়াতের নেতারা তাদের দূর্বলতা মানতে রাজি নন। তবে অন্য দলের তৎপরতার বিষয়েও তাদের কোন বক্তব্য নেই।

জোট ও ভোটের রাজনীতি

আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি-দুই দলের নেতারাই মনে করেন, ২০০১ সালের নির্বাচন থেকে ভোটের রাজনীতিতে ধর্মের প্রভাব বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে জোটবদ্ধ হয়ে রাজনীতির প্রবণতা।

জোটের রাজনীতি মেরুকরণ হয়ে আসছে দুই দলের নেতৃত্বেই। আর দুই দলই ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে সাথে রাখার চেষ্টা করে।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, এখন যেহেতু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ এবং জোটের ব্যানার থাকলেও তৎপরতা নেই। সেজন্য ইসলামপন্থী দলগুলো নিজেরা একটা শক্তি হিসাবে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে বলে তারা মনে করেন।

তবে দুই জোটে থাকা ইসলামপন্থী কয়েকটি দলের নেতাদের সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, বড় দুই দলের জোট থেকে সহসাই বেরিয়ে আসার চিন্তা তাদের নেই। তারা মনে করেন, তাদের পৃথক অবস্থান নিয়ে দাঁড়ানোর জন্য আরও সময় প্রয়োজন।

তারা বলেছেন, তারা শক্তি সঞ্চয় করে জোটে থেকে বড় দলগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করে এগুতে চাইছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক খান বলেছেন, দেশে ইসলামপন্থীদের উত্থান হচ্ছে, এমন কথা ঠিক নয়।- ফাইল ছবি

অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ

যদিও ইসলামপন্থীদের উত্থান হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করেন না। কিন্তু ইসলামপন্থী দলগুলো যে শক্তি সঞ্চয় করছে -সেটা আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেকে স্বীকার করেন। সেজন্য তারা বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন।

আর বিএনপির পাল্টা অভিযোগ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “হেফাজতে ইসলামকে সরকার এবং আওয়ামী লীগই সবসময় সাহায্য-সহযোগিতা করেছে এবং প্রশ্রয় দিয়েছে। তবে যখনই গণতন্ত্র থাকে না বা মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না, তখনই এমন বিষয়গুলো তৎপর হয়।”

সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যাপারে যুক্তি দিতে গিয়ে মি: আলমগীর আরও বলেছেন, “ধর্ম বিশ্বাস করা আর ধর্মান্ধতাতো এক জিনিস নয়। এখানে ধর্মান্ধতাকে প্রশ্রয় দেয়া হচ্ছে। এটা সচেতনভাবে করা হচ্ছে কিনা – তা বলতে পারবো না। তবে বিএনপি যেহেতু গণতান্ত্রিক শক্তি, সেজন্য তাদের নির্মূল করার চেষ্টা চালানো হয়। কারণ কর্তৃত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে যদি উগ্র কোন শক্তি থাকে, তাহলে তাদের সুবিধা হয়। বিশ্বে যেহেতু সন্ত্রাস এবং উগ্রতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার বিষয় আছে, সেখানে তারা সুবিধা পেতে পারে।”

তবে আওয়ামী লীগ নেতা অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল ফারুক খান বলেছেন, “হেফাজতে ইসলাম কোন রাজনৈতিক দল নয়। মাদ্রাসার শিক্ষা নিয়ে বিভিন্ন সময় হেফাজতের সাথে আমাদের আলোচনা হয়েছে। এখানে কোন রাজনীতি নেই।”

“বিএনপিই উগ্রতাকে প্রশ্রয় দেয়” বলে তিনি অভিযোগ করেন।

আওয়ামী লীগের আরও কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলে মনে হয়েছে, তাদের নেতৃত্ব ইসলামপন্থীদলগুলোর সাথে কোন সংঘাতে যেতে চায় না।

আর বিএনপির একাধিক সূত্র বলেছে, ইসলামপন্থীদের তৎপরতা বৃদ্ধির পেছনে সরকারের ভূমিকা কি আছে এবং পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, এগুলো দলটি পর্যবেক্ষণ করছে।

এদিকে নিজেদের অরাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে দাবি করলেও হেফাজতে ইসলাম যখন ২০১৩ সালের মে মাসে নাস্তিক ইস্যু তুলে ঢাকার শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়েছিল, তখন বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকেই দলীয় নেতাকর্মীদদের তাদের সহযোগিতা করার আহবান জানিয়ে বিবৃতি দেয়া হয়েছিল।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠার পর হেফাজতের সাথে সখ্যতা গড়ে তুলেছিল।

এর পেছনে দুই দলেরই রাজনৈতিক স্বার্থচিন্তা ছিল।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিকল্প শক্তি হবে কি?

ইসলাম নিয়ে লেখক ও গবেষক ওসমান গণি বলেছেন, ইসলামপন্থী দলগুলো এখন বিএনপি বা অন্য কোন দলের বিকল্প হতে পারবে না।

তিনি মনে করেন, ইসলামপন্থী দলগুলো ধর্মীয় ইস্যুতেই বিভিন্ন কর্মসূচি নিচ্ছে বা কথা বলছে।

“যেহেতু কোন ইস্যুতে কেউ যখন কথা বলছে না, তখন তুলনামূলক কম শক্তির বা তুলনামূলক কম সংগঠিত কেউ কথা বললেও তাতে জনসমর্থন চলে আসে। ইসলামপন্থী দলগুলোর ক্ষেত্রে এখন সেটাই হচ্ছে।

সেই দলগুলোর মূল্যায়ন

ইসলামপন্থী যে দলগুলো সাম্প্রতিক সময়ে নানা ইস্যুতে তৎপরতা চালাচ্ছে, এমন তিনটি দলের নেতারা বলেছেন, তারা শক্তি সঞ্চয় করছেন এবং সমাজে তাদের রাজনীতির প্রভাব পড়ছে বলে তারা মনে করেন।

তারা বলেছেন, তাদের একটা ভাল অবস্থান তৈরির সুযোগ তৈরি হয়েছে।

তারা এই অনুকুল পরিবেশ কাজে লাগিয়ে অবস্থান আরও শক্ত করার চেষ্টা করছেন বলে উল্লেখ করেন।

তবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সহ সভাপতি আব্দুর রব ইউসুফী বলছেন, রাজনৈতিক শূণ্যতা এখন রয়েছে। কিন্তু তারা সেটার সুযোগ নিচ্ছেন না।

তিনি আরও বলেন, “ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে আমরা রাজনৈতিক ব্যানারে না করে বিভিন্ন সংগঠনের নামে কর্মসূচি পালন করি। রাজনৈতিক ইস্যুতে সরকার আমাদেরকেও বাধা দেয়। আর অরাজনৈতিক বিষয়ে সরকার বাধা না দেয়ায় আমরা সেটা ইতিবাচক মনে করি। তবে সরকার হয়তো ইসলামপন্থীদের সাথে কোন সংঘাতে যেতে চাচ্ছে না। সেটাও আমরা মনে করি।”

আরও দু’টি ইসলামপন্থী দলের দু’জন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। তারা তাদের শক্তি বৃদ্ধির কারণ ব্যাখ্যা করেছেন ভিন্নভাবে।

তারা বলেছেন, রাজনৈতিক শূণ্যতার বিষয় এখন এসেছে। কিন্তু এক দশকেরও বেশি সময় ধরে তাদের প্রতি মানুষের সমর্থন বাড়ছে বলে তারা মনে করেন।

এর কারণ ব্যাখ্যা করে তারা বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে কাজের জন্য বাংলাদেশিদের যাওয়ার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। ফলে ঐ দেশগুলোর সাথে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। এর একটা প্রভাব একেবারে গ্রামাঞ্চলের মানুষের মাঝে পড়েছে। এছাড়া দেশে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার হচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে ইসলামপন্থী দলগুলো সাধারণ মানুষের কাছে অবস্থান তৈরির সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে।

তারা আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটকেও তাদের শক্তি বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হিসাবে দেখেন।

সমপ্রতি ঢাকায় ইসলামপন্থী দলগুলোর বিক্ষোভ থেকে ফ্রান্সের সাথে কূটনৈতিক ছিন্ন করার দাবি জানানো হয়েছিল।

কীভাবে কর্মসূচি পালন করছে?

ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতাদের অনেকেই হেফাজতে ইসলামের কমিটিতে আগেও ছিলেন এবং এখনও রয়েছেন।

হেফাজত যেহেতু কওমী মাদ্রাসা-ভিত্তিক একটা বড় সংগঠন হিসাবে অনেক আগেই অবস্থান করেছে।

দলগুলোর নেতাদের অনেকে জানিয়েছেন, ধর্মীয় বড় কোন বিষয় এলে বা স্পর্শকাতর কোন কোন ইস্যুতে এই ইসলামপন্থী দলগুলো হেফাজতের ব্যানারে কর্মসূচি নিয়ে থাকে। এছাড়া ধর্মীয় বিভিন্ন সংগঠন আছে, সেগুলোর ব্যানারও ব্যবহার করা হয়। তাতে তাদের জোটবদ্ধ শক্তি প্রদর্শনের একটা সুযোগ তারা পান।

তারা তাদের দলীয় ব্যানারে ধর্ম অবমাননার বিষয়গুলো নিয়ে তৎপরতা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছেন।

লোকসমাগম

লেখক ওসমান গণি বলছেন, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন সংগঠন এবং ইসলামপন্থী দলগুলো তাদের কর্মসূচিতে জমায়েতের ক্ষেত্রে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক এবং ধর্মভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ধর্ম অবমাননা এবং ফ্রান্স ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ের কর্মসূচিগুলোতে সাধারণ মানুষেরও স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল বলে তিনি মনে করেন।

সেটি স্বীকার করছেন ইসলামপন্থী নেতারা। একটি ইসলাপন্থী দলের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তাদের কর্মসূচিতে লোকসমাগমের জন্য তারা তাদের স্ব স্ব দল বা সংগঠনের সমর্থক মাদ্রাসার ওপর নির্ভর করেন। তবে কয়েক বছর ধরে জেলা-উপজেলা বা গ্রাম পর্যায়ে তাদের কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে, এমন চিত্র তারা পাচ্ছেন।

বিশ্লেষকরা বলেছেন, ডানপন্থীদের শক্তি বাড়ছে, সেটা অস্বীকার না করে বর্তমান বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে বড় দলগুলোর উচিত নিজস্ব কৌশল ঠিক করা।

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

    বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে

  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
  • বাংলাদেশে ইসলামপন্থীদের শক্তিবৃদ্ধি ঘটছে যেসব কারণে
বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ফসল

লাভজনক সবজি চাষ পদ্ধতি

সবজি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় সবজিকে উদ্যানতাত্বিক ফসল (Horticultural crops) বলা হয়ে থাকে। পুষ্টিমানের দিক থেকে সবজি ফসল যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বাণিজ্যিকভাবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। সেজন্য সবজি চাষের আধুনিক কলাকৌশল জানা জরুরি।

আর আধুনিক কলাকৌশল বলতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদকেই বোঝানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তবে সারাদেশে যেমন সব ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়না ঠিক তেমনি সকল সবজিই আবার সারাবছর উৎপাদিত হয়না। একেক অঞ্চলে একেক ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে। আবার বছরের বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ সবজির জাত উৎপাদন করা যায়।

সারাদেশে সারাবছরই যেসকল সবজি সহজে উৎপাদিত হয়ে থাকে তাদের কিছু শাকসবজির কথা এখানে তুলে ধরছি। লালশাক, ডাটাশাক, পুইশাক, কলমিশাক, মিষ্টিআলু শাক, ঢেড়শ, গাজর, বরবটি, টমেটো, লাউ ও লাউশাক, পাটশাক, শশা, কাঁচকলা, বেগুন, পেপে, করলা, কচুশাক, কচুর লতি, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি পরিচিত শাকসবজি। তাছাড়া অপরিচিত বিশেষ কিছু সবজি বিশেষ বিশেষ এলাকার বিশেষত্ব হিসেবে উৎপাদিত হয়ে থাকে। উপরোক্ত ফসলগুলোর মধ্যে কিছু শুধু শাক আর বাকীগুলো শাক এবং সবজি উভয় হিসেবেই প্রচলিত রয়েছে।

কৃষিতাত্বিকভাবে রবি (শীতকাল) ও খরিপ (গ্রীষ্মকাল)- এ দুধরনের মৌসুম রয়েছে। খরিপের আবার দুটি ভাগ, যথা- খরিপ-১ (আগাম গ্রীষ্ম) এবং খরিপ-২ (বর্ষাকাল)। তবে শীতকালীন শাকসবজির মধ্যে বাহারি ও রকমারি বৈচিত্র একটু বেশি। শুধুমাত্র শীতকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলগুলোর মধ্যে রয়েছে- টমেটো, শীতলাউ, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, সীম, মূলা, ব্রকলি, বাটিশাক, ওলকপি, শালগম, বেগুন, গোল আলু ইত্যাদিই প্রধান। অপরদিকে শুধুমাত্র গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলের মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ধরনের কচু, ওলকচু, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, কাকরোল, পটোল, করলা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া ইত্যাদিই প্রধান।

সবজি ফসল উৎপাদন অন্যান্য ফসলের মতো নয়। সবজি ফসল উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের যত্নের প্রয়োজন হয়। আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ করতে গেলে অল্প পরিমাণ জায়গায় অধিক পরিমাণ ফসল ফলিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব। সবজি আবাদেও জন্য বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গা বেছে নিতে হবে। সেখানে ভালোভাবে চাষ-মই দিয়ে জমির মাটি জো অবস্থায় ঝুরঝুরে করে সেখানে এক মিটার প্রশস্ত এবং প্রয়োজনমত জমির আকার-আকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে লম্বা বেড তৈরী করে নিতে হবে। প্রতিটি বেডের মাঝখানে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ গর্ত করে নালা সৃষ্টি করতে হবে। অর্থাৎ নালার মাটি তুলেই দুইপাশে বেড প্রয়োজনমত উঁচু করতে হবে।

এভাবে বেড তৈরীর একটি বিশেষত্ব হলো শাকসবজি চাষাবাদ অন্য সাধারণ ফসল আবাদের চেয়ে একটু ভিন্ন। এর জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি সতর্কতা ও যত্নের। শাকসবজির চাষাবাদে যেমন শুষ্ক মৌসুমে সেচের চাহিদা থাকে অপরদিকে বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সেজন্যই বেড তৈরী করে মাটি কিছুটা উঁচু করা হয় সেখানে আবার নালা তৈরী করে নিষ্কাষনের ব্যবস্থাও রাখা হয়। কিন্তু বেড এবং নালা তৈরী না করলে সেটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ হয়না। সেঠা হয় সাধারণ শাকসবজি চাষ। এতে ফলন অনেক কমে যায়।

পেপে, কাঁচকলা- এ জাতীয় সবজি বসতবাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তা বা পুকুরের ধারে সহজেই আবাদ করা যায়। লালশাক, ডাটা শাক, পাটশাক, মূলাশাক, গাজর, শালগম ইত্যাদি সবজি তৈরীকৃত বেডে ছিটিয়ে বীজ বুনে দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, ঢেড়শ, কচু, ওলকচু ইত্যাদি সবজি এক মিটারের বেডে দুই সারি করে নির্ধারিত দূরত্বে চারা লাগিয়ে আবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সেজন্য এসব সবজি উৎপাদনের জন্য আলাদাভাবে নার্সারিতে চারা তৈরী করে নিতে হয়। অপরদিকে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, চাল কুমড়া, পটোল, কাকরোল, করলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, সীম, বরবটি ইত্যাদি লতাজাতীয় সবজি চাষের জন্য উক্ত বেডে দুইটি সারি করে সেখানে জাংলা দিয়ে দিতে হয়। সাধারণত বেডের দুইপাশে খুটি দিয়ে পরে তা ইংরেজি অক্ষর ‘এক্স’ আকৃতিতে বা ‘ভি’ আকৃতিতে বাঁকিয়ে বেঁধে দিতে হয়।

বেড ছাড়াও লতাজাতীয় এসব সবজি অতি সহজেই ক্ষেতের আইলে, রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে বিশেষ ব্যবস্থায় আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য যেকোন ফসলের তুলনায় এসব সবজি ফসলের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। বিনা আবাদেই এসব সবজি চাষ করা যেতে পারে। সেজন্য বন্যা পরবর্তীতে পুনর্বাসনের সময় বিনাচাষে এসব আবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ জৈবভাবেই এসব সবজি ফসল উৎপাদন সম্ভব। আবাদের পূর্বে সামান্য পরিমাণ প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার ব্যবহার করে বাকীটা মেটাতে হবে বাড়িতে উৎপাদিত জৈব সারের মাধ্যমে। তারপর আন্তপরিচর্যা এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতেও জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। তখন এসব উৎপাদিত ফসল সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

কাজেই এভাবেই সারাবছর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বষ্পপরিসরে শাকসবজি উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে তা বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের শারীরিক পুষ্টি চাহিদার একটি বিরাট অংশ শাকসবজি থেকে আসা দরকার। দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড়ে কমপক্ষে আড়াইশ গ্রাম শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। আর সেটা নিবিড়ভাবে এবং নিরাপদভাবে খেতে হলে নিজের উৎপাদিত শাকসবজি খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম। কাজেই আমাদের সারাবছর অলস সময়টাকে কাজে লাগিয়ে আসুন নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় সবজির বাগান গড়ে তুলি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

বাংলাদেশ

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

একজন টেলিভিশন তারকা, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৫৪ সালের এদিনে জন্মগ্রহণ করেন চাঁদপুরে (সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ২৮শে জুন ১৯৫৬)। শাইখ সিরাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ভূগোলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও সংবাদপত্রের সঙ্গে।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

শাইখ সিরাজ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, চ্যানেল আই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তা প্রধান। টানা সাড়ে চার দশক ধরে তিনি গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি ও কৃষক তথা উৎপাদন-অর্থনৈতিক খাতে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন তিনি। পরে তার নিজস্ব পরিচালনাধীন টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’তে শুরু করেন কৃষি কার্যক্রম হৃদয়ে মাটি ও মানুষ। উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দু’টি রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৮) ও একুশে পদক (১৯৯৫) লাভ করেন।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রায় চার দশকের একনিষ্ঠ পথচলার মধ্য দিয়ে শাইখ সিরাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন উন্নয়ন সাংবাদিকতার এক অগ্রপথিক হিসাবে। গণমাধ্যমে তার উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের কৃষিতে। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে বৈপ্লবিক সাফল্য।

গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। একইসঙ্গে শহর-নগরের মানুষকে করেছেন কৃষিমুখি। ফলে দেশের অর্থনীতিতে কৃষির বহুমুখি অবদান সূচিত হয়েছে।

‘মাটি ও মানুষ’

বাংলাদেশের কৃষিতে গত কয়েক দশকে যে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে, শাইখ সিরাজকে বর্ণনা করা হয় সেই পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম প্রধান এক চরিত্র হিসেবে।

বাংলাদেশে যখন বিজ্ঞানীরা একের পর এক নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করে চলেছেন, কৃষিতে নতুন ধ্যান ধারণা এবং কৌশল চালুর জন্য সরকারের নানা পর্যায় থেকে চেষ্টা চলছে, সেগুলো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে বিরাট ভূমিকা রাখে তার কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান, ‘মাটি ও মানুষ।’

“শুরুতে এই অনুষ্ঠানটা হতো আমার দেশ নামে। তখন এটি ৫০ মিনিটের পাক্ষিক অনুষ্ঠান। পরে এটিকেই ‘মাটি ও মানুষ’ নামে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে রূপান্তরিত করি। আমার মনে হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি দরকার শিক্ষামূলক মোটিভেশনাল অনুষ্ঠান। কৃষকদের যদি নতুন বীজ, নতুন প্রযুক্তি, নতুন কৌশল, এসব ঠিকমত বোঝানো যায়, তাহলে কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব।”

গত চার দশক ধরে শাইখ সিরাজ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে কৃষি বিষয়ক তথ্যের প্রধান উৎস। উনিশ’শ আশির দশকে, যখনো টেলিভিশন ঘরে ঘরে পৌঁছায়নি, তখনো গ্রামের হাটেবাজারে, কমিউনিটি সেন্টারে প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় ‘মাটি ও মানুষ’ দেখার জন্য ভিড় করতো মানুষ।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

তবে কৃষকদের নতুন ধরণের কৃষিতে উৎসাহিত করার কাজটা সহজ ছিল না।

“আজকের কৃষক এবং তিরিশ বছর আগের কৃষকের মধ্যে তফাৎ আকাশ আর পাতাল। তখন কৃষকের কাছে একজন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা যে কথা বলতেন, একজন টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে আমি যেকথা বলতাম, সেটা তারা মানতে চাইতো না। তারা ভাবতো, আমরা যেধরণের কৃষির কথা বলছি, যদি সেটাতে ভালো ফসল না হয়? এ কারণে সে সহজে মোটিভেট হতে চাইতো না। সহজে নতুন প্রযুক্তি নিতে চাইতো না।”

“আমি যখন আশির দশকে উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ধানের কথা বলছি, গমের কথা বলছি, তখন পরিস্কার তারা আমাকে বলতো এই রাবার ভাত খাবো না। তখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধানের মান তেমন ভালো ছিল না। ভাতটা ছিল রাবারের মতো, ভাতের দানা উপর থেকে থালার উপর ফেললে সেটি রাবারের মতো ড্রপ করতো।”

কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন তাদের গবেষণায় নতুন নতুন সাফল্য পাচ্ছিলেন, আর সেই সঙ্গে শাইখ সিরাজও তার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষকদের মন জয় করার জন্য নতুন কৌশল নিচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফেলো শাইখ সিরাজ খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচন বিষয়ে সাংবাদিকতায় অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসাবে তিনি ২০০৯ সালে অর্জন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এ এইচ বুর্মা এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া তিনি পেয়েছেন এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গুসি পিস প্রাইজ, বৃটেনের বিসিএ গোল্ডেন জুবিলি অনার এ্যাওয়ার্ডস। বৃটিশ হাউজ অব কমন্স তাকে প্রদান করেছে বিশেষ সম্মাননা, বৃটিশ-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সংগঠন তাকে দিয়েছে গ্রীন এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া পেয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির স্বর্ণপদক, ডা. ইব্রাহিম মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক, রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্ণপদকসহ অর্ধশত দেশি-বিদেশি পুরস্কার ও সম্মাননা।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন। তিনি এদেশে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে নিরস বিষয় হিসাবে উপেক্ষিত কৃষিতে জাতীয় সংবাদের প্রধান খবরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শাইখ সিরাজের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- মৎস্য ম্যানুয়েল, মাটি ও মানুষের চাষবাস, ফার্মার্স ফাইল, মাটির কাছে মানুষের কাছে, বাংলাদেশের কৃষি: প্রেক্ষাপট ২০০৮, কৃষি ও গণমাধ্যম, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (সম্পাদিত), আমার স্বপ্নের কৃষি, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (২০১১), সমকালীন কৃষি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০১১), কৃষি ও উন্নয়ন চিন্তা (২০১৩) ইত্যাদি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

সিলেটে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা

সিলেট বিভাগের উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিক জমিতে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কৃষি বিজ্ঞানিরা মৌলভীবাজারের আকবরপুরে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন। এ ফুল চাষ মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।

কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের তথ্যমতে, যশোরে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধাসহ বিভিন্ন ধরনের ফুল চাষ হয়। যার বাজার দর প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। যশোরের ফুল সারাদেশের পাশাপাশি সিলেটেও আসে প্রচুর। সিলেটে ফুলের বাজার শত কোটি টাকার উপরে। কিন্তু সিলেটে ফুলের চাষ বাণিজ্যিকভাবে হয় না।

সিলেট বিভাগের মাটি অ্যাসিডিক হওয়ায় ফুল চাষ করা যাবে না, সেটাই ছিল প্রচলিক ধারণা। কিন্তু এ ধারণাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভুল প্রমাণ করেছেন মৌলভীবাজার আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একদল গবেষক। মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম শরিফুজ্জামানের নেতৃত্বে উচ্চমাত্রার অ্যাসিডিটিক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে ফুল চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পরীক্ষামূলক চাষে ফলনও হয়েছে ভালো। তাই সিলেট অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট অঞ্চলে অনেক জায়গা অনাবাদি ও পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে। প্রবাসীরা দেশের বাইরে অবস্থান করায় তাদের অনেক জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। এ জমিকে আবাদের আওতায় আনতে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষের উদ্যোগ নিয়ে আগ্রহী ১০০ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে আমন ধান কাটার পর এ অঞ্চলের অনেক জমি পতিত থাকে। ফলে ফুল চাষ করে অনাবাদি জমি থেকে কোটি টাকা উপার্জন সম্ভব।

বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মিরানা আক্তার সুমি জানান, চাষিরা প্রশিক্ষণ শেষে অনেক কিছু শিখেছেন। কী পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হয়, তা জেনেছেন। ধানের চেয়ে যেহেতু ফুলের দাম বেশি, তাই ফুল চাষে তাদের আগ্রহ বাড়ছে।

ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সরফ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘ভালোভাবে জমি চাষ করে নির্দেশিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়। অন্য ফসলের মতোই এর চাষ পদ্ধতি সহজ। বেড তৈরি করে ফুল চাষ করতে হয়। প্রতিটি বেডের দৈর্ঘ যে কোন মাপের হতে পারে। তবে প্রস্থে ১.২-১.৫ মিটার হলে ভালো।’

তিনি বলেন, ‘কলম (বীজ) লাগানো থেকে তিন মাস পর স্টিক সংগ্রহ শুরু হয়। সংগ্রহ করা যাবে পরবর্তী ২৫ দিন। গ্লাডিওলাস ৫টি জাতসহ মোট ১২টি প্রজাতির ফুলের পরীক্ষা করে আমরা সফল হয়েছি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

জৈব

জৈব পদ্ধতিতে ফসলের রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ

সবুজ বিপ্লবের সময়ে পেস্টিসাইড ব্যবহারকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীব বৈচিত্র্য, মাটির স্বাস্থ্য ও ফসলের গুণমানতা। এখন ভেবে দেখার সময় এসেছে, এত রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহার করা কি ঠিক হচ্ছে? এ প্রশ্ন শুধু ভারতে নয়, সারাবিশ্বের কৃষকসমাজ ও শস্যবিজ্ঞানীদের কাছে। তাই মনে হয় জৈব নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে সুসংহত রোগ পোকা নিয়ন্ত্রণ আগামী দিনে একমাত্র সমাধানের রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।

চলমান খরিফ মরসুমে আমাদের রাজ্যে প্রধানত ধান, খরিফ পেঁয়াজ, জুট, ইক্ষু, তিল ইত্যাদি ফসলের চাষ হয়ে থাকে। এ রাজ্যে ধানে ঝলসা রোগের আক্রমণ একটি গুরুতর বিষয়।

জৈব পদ্ধতিতে এই রোগ দমন করার একটি সহজ উপায় রয়েছে। ৫০ মিলিলিটার কেরোসিন তেলে ৮৫ গ্রাম থেঁতলানো রসুন মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। এরপর ৯৫০ মিলি. জল ও ১০ মিলি. তরল সাবান মিশিয়ে ভালোভাবে নেড়ে নিয়ে বোতলে রেখে দিতে হবে। ১৯ লিটার জলের সাথে ১ ভাগ মিশ্রণ মিশিয়ে সকালে/বিকেলে স্প্রেয়ার দিয়ে আক্রান্ত গাছে স্প্রে করতে হবে।

এই মিশ্রণটি আমেরিকান বোল ওয়ার্ম, আর্মি ওয়ার্ম, পেঁয়াজ-এর চিরুনি পোকা, আলুর টিউবার মথ, রুট নট নিমাটোড (কৃমি), আখের কাণ্ড ছিদ্রকারী পোকা, ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ, ডাউনি মিলডিউ ও ধানের ঝলসা রোগ প্রতিরোধে খুবই কার্যকরী।

এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পাতা খেকো পোকা ও জাব পোকা নিয়ন্ত্রণে ১ কেজি পেঁয়াজ থেঁতো করে ১ লিটার জলের সাথে মিশিয়ে ২৪ ঘণ্টা রেখে দেবার পর কচলিয়ে রস নিংড়ে নিতে হবে। প্রাপ্ত নির্যাসের সাথে ১০ লিটার জল মিশিয়ে আক্রান্ত ফসলে স্প্রে করতে হবে।

জৈব সার প্রয়োগ ও জৈব কীটনাশক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের উৎপাদন খরচ শতকরা ২৫-৩০ শতাংশ হ্রাস করা সম্ভব। উচ্চ পুষ্টিমানসম্পন্ন প্রযুক্তিতে উৎপাদিত জৈব সার, শাকসব্জী ও অন্যান্য ফসলের প্রয়োজনীয় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশিয়াম-এর সাথে অণুখাদ্যের যোগান দেয়।

জৈব পদ্ধতিতে উৎপন্ন কীটনাশক ও ছত্রাকনাশকগুলি ফসলে কোনওরকম দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ব্যতিরেকে, পোকা ও রোগ দমনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এতে মাটির স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উর্বরতা দীর্ঘমেয়াদী হয়। উৎপাদিত ফসল হয় স্বাস্থ্যসম্মত ও নিরাপদ।

বন্ধুপোকা মাকড়ের (পরজীবি ও পরভোজী) সংরক্ষণের জন্য জমির পাশে অব্যবহৃত জায়গায় ত্রিধারা, উঁচুটি, শালিঞ্চে ইত্যাদি আগাছা জাতীয় গাছের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।

দূরদর্শী পদক্ষেপের মাধ্যমে রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণ বৈচিত্র্য নির্ভর জৈব কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব আনা সম্ভব। তাই জৈব কৃষির পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয়ে কৃষিবিষমুক্ত, স্বাস্থ্যসম্মত সমাজ গড়ে তোলাই বাঞ্ছনীয়।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com