এনার্জি ড্রিংক হলো শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য পূরণ করার সেরা উপায়। এটি আপনাকে প্রাণোচ্ছল রাখতেও সহায়তা করে। তবে বাজার থেকে কেনা রাসায়নিক, ক্যাফেইন এবং চিনি বোঝাই এনার্জি ড্রিংক বেছে নিতে হবে না। কারণে সেগুলো স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী না-ও হতে পারে। আপনি কি জানেন যে, বাড়িতে স্বাস্থ্যকর এবং প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক তৈরি করা সম্ভব? আমাদের শরীরে যা কিছু প্রয়োজন তা প্রকৃতিতে রয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া প্রকাশ করেছে ঘরে বসে প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংকস তৈরির কয়েকটি উপায়।
আদা এবং এলাচ আপনাকে জাগিয়ে তোলা এবং শক্তিতে ভরপুর রাখার জন্য নো-ক্যাফেইন এবং চিনিমুক্ত পানীয় চান? এই আদা এবং এলাচের এনার্জি ড্রিংক খেতে পারেন যা দ্রুত তৈরি করা সম্ভব। একটি মগে খোসা ছাড়ানো আদার ২টি পাতলা টুকরো কেটে নিন, ১/২ ইঞ্চি পরিমাণ আদার রস বের করে নিন। মগের মধ্যে ১/৪ চা চামচ গুঁড়া এলাচ, ১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়া এবং ১/২ চামচ মধু (স্বাদ অনুযায়ী) দিয়ে গরম পানি মেশান। আদা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং হলুদ শক্তির স্তর বাড়ায়। এলাচ শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করে।
ডাবের পানি এবং লেবু ডাবের পানির উপকারিতা আমরা সবাই কম-বেশি জানি। তীব্র গরমে প্রাণ জুড়াতে ডাবের সুমিষ্ট পানি পান করেন অনেকেই। রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি পায়। এদিকে ভিটামিন সি-তে ভরপুর লেবুর গুণ সম্পর্কে সবারই জানা। দ্রুত শক্তি পাওয়ার জন্য এই দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে পান করতে পারেন। একগ্লাস ডাবের পানিতে এক চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিলেই যথেষ্ট। এটি আপনাকে সতেজ তো করবেই, শক্তি জোগাবে দ্রুত।
ব্যানানা ও গ্রিন স্মুথি এই প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক তাদের জন্য, যারা বাড়িতে নিয়মিত ওয়ার্কআউট করছেন। কলা এবং শাকসবজি স্মুদি হুই প্রোটিন সমৃদ্ধ ইলেক্ট্রোলাইট সরবরাহ করে এবং দিন শুরু করার জন্য ভালো কার্বস সরবরাহ করে। একটি ব্লেন্ডারের পাত্রে ১টি পাকা কলা ২ টেবিল চামচ পিনাট বাটার, ১ স্কুপ চিনিবিহীন হুই প্রোটিন, একমুঠো ধোয়া এবং কাটা পালংশাক, ১/২ কাপ দই, ১ কাপ আপনার ফ্যাটছাড়া দুধ যোগ করুন। মসৃণ হওয়া পর্যন্ত ব্লেন্ড করুন। ক্লান্তিকে বিদায় জানাতে এটি পান করুন।
কোকোনাট আইসড টি আপনাকে শক্তি জোগাতে চায়ে ক্যাফেইন থাকতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সাহায্যে ডাবের পানির আইসড টি আপনাকে শক্তি সরবরাহ করে। ১ কাপ ঠান্ডা গ্রিন টি, ১ চামচ মধু, এক চিমটি লবণ এবং ১ কাপ ডাবের পানি যোগ করুন এবং সবকিছু একসাথে নাড়ুন। পানীয়টিতে ঠান্ডা শসা যোগ করুন এবং সতেজ শক্তি বৃদ্ধির উপভোগ করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন