১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড়ের পর বাবাকে হারানো শিশু ওয়াজিউল্লাহর ঠাঁই হয়েছিল ভোলার চরফ্যাশনের এতিমখানায়। এরপর তাঁকে দত্তক নেন অস্ট্রেলিয়ার জ্যাক স্পাইবি ও জোন স্পাইবি। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে গিয়ে সেই পরিবারে তাঁর নাম হয়ে যায় ওয়াজি স্পাইবি। ওয়াজি এখন অস্ট্রেলিয়ার নামী শেফ। তাঁর হাতের খাবার ‘ওয়াজি ফুড’ ছাড়া তাসমানিয়া রাজ্যের বড় কোনো অনুষ্ঠানই যেন পূর্ণতা পায় না। বর্তমানে ‘ওয়াজি ফুড’ নামে নিজস্ব ক্যাটারিং সার্ভিস চালাচ্ছেন ওয়াজি। তাঁকে নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল প্রথম আলোর ছুটির দিনে ক্রোড়পত্রে।
নকশার পাঠকদের জন্য ওয়াজি স্পাইবি দিয়েছেন কয়েক পদের খাবারের রেসিপি।বিজ্ঞাপন
প্রণালি: সেদ্ধ আলু ছিলে ভালো করে ভর্তা করে নিন। হালকা আঁচে কড়াইয়ে মাখন দিয়ে দিন। বড় চামচ দিয়ে আলুগুলো চাপ দিন। রুটির আকার করে ফেলুন। এরপর দুই দিক মচমচে ভাজার মতো হওয়ার আগপর্যন্ত চুলায় রাখুন। হয়ে গেলে প্লেটে নামিয়ে নিন। অন্যান্য উপকরণ দিয়ে সালাদ তৈরি করুন এবং আলুর রয়েস্টির ওপর ঢেলে দিন। ওপরে স্যামন মাছগুলো সাজিয়ে দিন।
গরুর মাংস ও সালাদ
উপকরণ: গরুর মাংস (৪ অংশ করে) ২৫০ গ্রাম, বিফ পাউডার (গরুর মাংসের গুঁড়া) ৫০ গ্রাম, তেল ২০ গ্রাম, লেটুসপাতাকুচি পরিমাণমতো, টমেটোকুচি ৪টি, শসা ২টি, জলপাই তেল ১০০ গ্রাম, কাসুন্দি ১ টেবিল চামচ, লবণ ও মরিচ পরিমাণমতো।
প্রণালি: গরুর মাংস মসলা দিয়ে মাখিয়ে গরম তেলে ভেজে নিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। বাকি সব উপকরণ একসঙ্গে মাখিয়ে একটি সালাদ তৈরি করে নিন। এরপর নিজের মতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
কোয়েল ফ্রাই
উপকরণ: চীনা লাল খাবারের রং ১ টেবিল চামচ, বড় আকারের আস্ত কোয়েল (চামড়া ছাড়ানো) ৪টি, তেল ২৫০ গ্রাম, পাঁচফোড়ন ১ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো, ভুট্টার আটা ১ টেবিল চামচ, কাটা শসা ২টি, পেঁয়াজ কাটা ১টি, পাকা টমেটো কাটা (মাঝারি) ২টি, খেজুরের গুড়ের রস বা শিরা ৬০ মিলি লিটার ও চীনা মসলাদার লবণ ১ টেবিল চামচ।
প্রণালি: ১ লিটার পানিতে লাল খাবারের রং ভালো করে মিশিয়ে পানি গরম করুন। এবার লাল গরম পানিতে কোয়েল দিয়ে ৩০ সেকেন্ড পর চুলার আগুন নিভিয়ে দিন। পানি থেকে তুলে রেখে ঠান্ডা হতে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে কোয়েলগুলোকে মসলা, লবণ ও ভুট্টার আটা দিয়ে মাখিয়ে নিন। মাখানোর সময় অল্প পানি দিন। এরপর গরম তেলে দুটি করে কোয়েল একসঙ্গে দিয়ে দিন। ভালো করে ভেজে নিন। ভাজা হয়ে গেলে কোয়েল উঠিয়ে পেপার টিস্যুতে রেখে তেল শুকিয়ে নিন। এবার সালাদের উপাদান দিয়ে সালাদ বানিয়ে এর ওপর ভাজা কোয়েল রেখে ওপরে মসলাদার লবণ ছিটিয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।
মুরগির থাই কারি
উপকরণ: তেল ১ টেবিল চামচ, পেঁয়াজ কাটা ২টি, মরিচবাটা ৩ টেবিল চামচ, মুরগির মাংস, লম্বা টুকো ৮০০ গ্রাম, সবুজ ও লাল ক্যাপসিকাম কাটা (মাঝারি) ১টি করে, পেঁয়াজ শাক ১ গুচ্ছ, নারকেল ক্রিম ৫০০ মিলি, কাফির লাইম পাতা ৪টি, মটরশুঁটি (মাঝখান দিয়ে কাটা) ১৫০ গ্রাম, পেঁয়াজ ভাজা ২০ গ্রাম ও ধনেপাতা ১ গোছা।
প্রণালি: প্রথমে পেঁয়াজকুচি এবং অন্যান্য বাটা মসলা একসঙ্গে ভেজে নিন। এরপর মুরগির মাংস এবং লবণ যুক্ত করে আরও কিছু রান্না করে নিন। পেঁয়াজ ভাজা এবং ধনেপাতা ছাড়া বাকি সব একসঙ্গে দিয়ে রান্না করুন। মাংস সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত। রান্না হয়ে গেলে নামিয়ে পেঁয়াজ ভাজা এবং ধনেপাতা ছিটিয়ে পরিবেশন করুন।
ডিমের লাল ঝাল তরকারি
উপকরণ: মাঝারি আকারের পেঁয়াজ ২টি, তেল ৩০ মিলিগ্রাম, হলুদ ১ চা-চামচ, লাল মরিচবাটা ৩ টেবিল চামচ, পাকা টমেটো (টুকরা করা) ৩টি, টমেটোবাটা ২০০ গ্রাম, লবণ ও মরিচ পরিমাণমতো, সেদ্ধ ডিম (যেকোনো) ৮টি, তেল ভাজার জন্য ৪০০ মিলিগ্রাম, পেঁয়াজ ভাজা ২০ গ্রাম, ধনেপাতা ১ বা ২ গোছা।
প্রণালি: প্রথমে গরম তেলে ২টি পেঁয়াজ কেটে ভেজে নিন। পেঁয়াজ বাদামি রঙের হয়ে গেলে এতে হলুদ এবং লাল মরিচবাটা দিয়ে দিন। এরপর এতে তাজা টমেটো ঢেলে এক মিনিট রান্না করুন এবং এরপর টমেটোবাটা দিয়ে আরও ১ মিনিট রান্না করুন। তৈরি হয়ে গেলে আপনার রেড চিলি কারি ঢেলে নিন। এবার সেদ্ধ ডিমগুলো গরম তেলে বাদামি রং না হওয়া পর্যন্ত ভেজে নিন। ভাজা ডিমগুলো মাঝখানে কেটে নিয়ে কাটা অংশ ওপরের দিকে করে রেড চিলি কারির ওপর বসিয়ে দিন, খেয়াল রাখবেন যেন ডিম কারিতে ডুবে না যায়। এভাবে ৫ মিনিট রেখে দিন। এবার ডিমের ওপর পেঁয়াজ ভাজা এবং ধনেপাতা ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করুন।
শীতকাল এলেই বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে খেজুরের রস খাওয়ার চল বেড়ে যায়। অনেকে গাছ থেকে খেজুরের কলসি নামিয়ে সরাসরি কাঁচা রস খেয়ে থাকেন।
আবার অনেকে এই রস চুলায় ফুটিয়ে সিরাপ, পায়েস বা ক্ষীর বানিয়ে খান। এছাড়া রসের তৈরি ঝোলা গুড়, পাটালি গুড়, নলেন গুড়, ভেলি গুড়, বালুয়া গুড়, মিছরি গুড়সহ নানা ধরণের পিঠার বেশ সুখ্যাতি রয়েছে।
নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক
খেজুর আরব দেশের প্রচলিত ফল হলেও ওইসব দেশে খেজুর, মূলত ফল উৎপাদননির্ভর, যেখানে কিনা বাংলাদেশের খেজুর গাছ রস উৎপাদননির্ভর।
কৃষি তথ্য সার্ভিসের মতে, বাংলাদেশে সাধারণত কার্তিক থেকে মাঘ অর্থাৎ অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত খেজুরের রস সংগ্রহ হয়ে থাকে।
দেশটির সবচেয়ে বেশি রস সংগ্রহ হয় যশোর, কুষ্টিয়া ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে।
মূলত খেজুর গাছের ডালপালা পরিষ্কার করে, ডগার দিকের কাণ্ড চেঁছে তাতে একটা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চোঙ বসিয়ে দেয়া হয়। চোঙের শেষ প্রান্তে ঝুলিয়ে দেয়া হয় একটি মাটির হাড়ি বা কলসি।
সেই চোঙ দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা রস এসে জমা হতে থাকে মাটির হাড়ি বা কলসিতে। এভাবে একটি গাছ থেকে দৈনিক গড়ে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রস সংগ্রহ করা যায় বলে কৃষি তথ্য সার্ভিস সূত্রে জানা গিয়েছে।
কিন্তু গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এই খেজুরের রস খাওয়ার ক্ষেত্রে নিপাহ্ ভাইরাস আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
উপকরণ: বাঁধাকপির কুচি ৪ কাপ, কই মাছের টুকরো ৬টি, তেজপাতা ১টি, শুকনো মরিচ ২টি, মেথি অল্প পরিমাণ, মরিচবাটা ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, লবণ পরিমাণমতো, নারকেল কোরানো স্বল্প পরিমাণে, হলুদ পরিমাণমতো ও সরিষার তেল পরিমাণমতো।
প্রণালি: তেলে শুকনো মরিচ ও মেথি ফোড়ন দিতে হবে। ফোড়ন হয়ে এলে হালকা করে ভেজে উঠিয়ে রাখতে হবে। ওই তেলেই বাঁধাকপির কুচি ও পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভালো করে কষে নিতে হবে। তারপর লবণ, মরিচ ও হলুদবাটা দিয়ে আরও কিছুক্ষণ বসাতে হবে। সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভাজা মাছগুলো দিয়ে ঢাকা দিতে হবে। পানি শুকিয়ে গেলে এবং মাছ সেদ্ধ হয়ে এলে অল্প পরিমাণ নারকেল কোরানো দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: বড় শোল মাছ ৫০০ গ্রাম, টমেটো টুকরো আধা কাপ, সরিষার তেল ৩ টেবিল চামচ, টমেটোবাটা আধা কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, আদাবাটা ১ চা-চামচ, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, ধনেপাতা আধা কাপ, শুকনো মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, লবণ স্বাদ অনুসারে ও কাঁচা মরিচ ৭-৮টি (চেরা)।
প্রণালি: শোল মাছ লবণ, হলুদ ও সরিষার তেল মাখিয়ে ভেজে তুলে রাখতে হবে। আর ওই তেলেই পেঁয়াজ কুচি দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি রং হলে রসুন, আদা, মরিচের গুঁড়া, হলুদ ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। টমেটোবাটা দিতে হবে, কিছুক্ষণ কষানোর পর প্রয়োজনমতো গরম পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে ভেজে রাখা মাছগুলো দিতে হবে। ঝোল মাখা-মাখা হলে টমেটোর টুকরো আর ধনেপাতা দিয়ে কিছুক্ষণ পর নামিয়ে ফেলতে হবে। নামানোর আগে কাঁচা মরিচ দিতে হবে।
উপকরণ: ছোট টুকরো করে কাটা টাকি মাছ ২ কাপ, ডুমো ডুমো করে কাটা লাউ ৪ কাপ, হলুদ সিকি চা-চামচ, লবণ পরিমাণমতো, পেঁয়াজ ১ কাপ, ধনেপাতা কুচি পরিমাণমতো, রসুনবাটা ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ ১০-১২টি, আদাবাটা আধা চা-চামচ ও রাঁধুনি বাটা সিকি চা-চামচ।
প্রণালি: তেলে পেঁয়াজ দিয়ে হালকা করে ভেজে নিতে হবে। তারপর একে একে রসুনবাটা, আদাবাটা ও রাধুনি (গুঁড়া সজ) বাটা ও হলুদের গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষাতে হবে। কষানো হলে লাউ দিতে হবে। লাউ দিয়ে কিছুক্ষণ কষিয়ে অল্প পরিমাণে পানি দিতে হবে। পানি ফুটে উঠলে আগে থেকে হালকা করে ভেজে রাখা টাকি মাছ দিতে হবে। পানি শুকিয়ে এলে কাঁচা মরিচের ফালি ও সবশেষে ধনেপাতা দিয়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
উপকরণ: চিংড়ি মাছ ২০০ গ্রাম, সয়াবিন তেল পরিমাণমতো, বাঁধাকপি কুচি ১ কাপ, ক্যাপসিকাম কুচি ১ কাপ, টমেটো কুচি আধা কাপ, পেঁয়াজপাতা কুচি ১ কাপ, কাঁচা মরিচবাটা ১ চা-চামচ, ধনেপাতাবাটা ১ চা-চামচ, হলুদের গুঁড়া পরিমাণমতো, চিলি সস ২ চা-চামচ, টমেটো সস ২ চা-চামচ, বাঁধাকপির ভেতরের পাতা ৪টি, ভিনেগার ২ চা-চামচ, রসুন ১ চা-চামচ ও লবণ স্বাদমতো।
প্রণালি: বাঁধাকপির শক্ত অংশ ফেলে দিন। পাতার ভেতরের অংশ একটু ভাপিয়ে রাখুন। মাছ ধুয়ে ভিনেগার মাখিয়ে রাখুন। এবার কড়াইয়ে সয়াবিন তেল গরম হলে তাতে রসুন কুচি দিয়ে মাছগুলো দিন। একে একে কোঁচানো বাঁধাকপি, ক্যাপসিকাম, টমেটো ও পেঁয়াজপাতা দিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এরপর কাঁচা মরিচবাটা, ধনেপাতাবাটা, চিলি সস ও টমেটো সস দিয়ে নেড়ে নিন। পানি শুকিয়ে এলে নামিয়ে বাঁধাকপির পাতায় অল্প করে চিংড়ি মাছ সুতা দিয়ে বেঁধে স্টিমারে ভাপিয়ে নিন। সুতো কেটে পাতা খুলে পরিবেশন করুন।
অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন