আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন

বিশ্ব

চেন সুচেন: চীনকে চাঁদে পাঠিয়েছেন আমেরিকা থেকে বিতাড়িত যে বিজ্ঞানী

বিজ্ঞানী চেন সুচেন
বিজ্ঞানী চেন সুচেন

চীনের সাংহাই নগরীতে একটি পুরো যাদুঘরের ৭০ হাজার নিদর্শনের সবগুলোই শুধু একজন মানুষের জন্য নিবেদিত। তিনি হলেন ‘মানুষের বিজ্ঞানী’ চেন সুচেন। চীনের সবচেয়ে সম্মানিত এই বিজ্ঞানীকে নিয়ে লিখেছেন বিবিসির কবিতা পুরি :

চেনকে চীনের ক্ষেপণাস্ত্র এবং মহাকাশ কর্মসূচির জনক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।

যে রকেট দিয়ে চীনের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো সম্ভব হয়েছিল, সেটি ছিল তাঁরই গবেষণার ফসল। এরপর যে ক্ষেপণাস্ত্র চীনের পারমানবিক অস্ত্র ভাণ্ডারের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়, তাও সম্ভব হয়েছে এই বিজ্ঞানীর প্রচেষ্টায়।

চীনে বিজ্ঞানী চেন সুচেনের মর্যাদা জাতীয় নায়কের। কিন্তু যে দেশে তিনি পড়াশোনা করেছেন এবং দশ বছরেরও বেশি সময় কাজ করেছেন সেখানে তাঁর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কোনো স্বীকৃতিই নেই। মনেই করা হয়না তাকে।

চেনের জন্ম ১৯১১ সালে। চীনের সর্বশেষ রাজতন্ত্রের তখন ভঙ্গুর দশা। তার বাবা-মা দুজনেই উচ্চশিক্ষিত ছিলেন। বাবা অনেকদিন জাপানে কাজ করের দেশে ফিরে চীনের জাতীয় শিক্ষাক্রম তৈরিতে মূল ভূমিকা রাখেন।

ছোটোবেলাতেই চেনের ক্ষুরধার মেধার নানা ইঙ্গিত প্রকাশ হতে থাকে। সাংহাইয়ের জাও টং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষায় তিনি প্রথম হন। সেই সূত্রেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) বৃত্তি পান, যেটি ছিল সেসময় চীনা কোনো নাগরিকের জন্য একটি বিরল প্রাপ্তি।

১৯৩৫ সালে হালকা-পাতলা পোশাকে কেতাদুরস্ত এক যুবক চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে গিয়ে নামেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ জর্জিয়ার ইতিহাসের অধ্যাপক ক্রিস জেফারসন বলেন, আমেরিকাতে এসে চেনকে সম্ভবত বর্ণবাদী আচরণের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। তবে, অধ্যাপক জেফারসন বলেন, “একটি আশাবাদ এবং বিশ্বাস তখন আমেরিকাতে তৈরি হচ্ছিল যে, চীনে হয়ত মৌলিক পরিবর্তন আসছে।”

এমআইটি শেষ করে চেন ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে (ক্যালটেক) গেলেন সেসময়কার সবচেয়ে স্বনামধন্য অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হাংগেরিয়ান বংশোদ্ভূত থিওডর ভন কারমানের অধীনে একজন গবেষক হিসাবে। সে সময় চেনের সহকর্মী ছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী ফ্রাঙ্ক মালিনা।

সুইসাইড স্কোয়াড নামে তখন ক্যালটেকে মেধাবী উদ্ভাবকদের যে নেটওয়ার্ক গ্রুপ ছিল, মালিনা ছিলেন তার প্রধান একজন সদস্য। এই গ্রুপের নাম সুইসাইড স্কোয়াড কেন ছিল সে সম্পর্কে বলেন বিজ্ঞান লেখক ফ্রেজার ম্যাকডোনান্ড : ‘এই গোষ্ঠীটি ক্যালটেকের ক্যাম্পাসে একটি রকেট তৈরির চেষ্টা করছিল। কিন্তু যেসব রাসায়নিক দ্রব্য তারা ব্যবহার করছিল তাতে একদিন কিছু দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও কেউ তাতে মারা যায়নি, তবু তারপর থেকে এদের নাম হয়ে যায় সুইসাইড স্কোয়াড।’

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কারের শুনানিতে তার আইনজীবীর সাথে চেন সুচেন, ১৯৫০
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিস্কারের শুনানিতে তার আইনজীবীর সাথে চেন সুচেন, ১৯৫০

একদিন মালিনা এবং ‘সুইসাইড স্কোয়াড’ গ্রুপের কজন সদস্যের সাথে অংকের জটিল একটি সমস্যা নিয়ে চেনের আলাপ হয়। এর কিছুদিনের মধ্যে তিনি ঐ গোষ্ঠীর সদস্য হয়ে যান, এবং রকেট নিয়ে গবেষণায় ভূমিকা রাখতে শুরু করে দেন।

রকেট বিজ্ঞানকে সেসময় ‘পাগলাটে এবং কল্পনা-প্রেমীদের’ বিষয় হিসাবে দেখা হতো, বলেন ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড।

“সুনাম হারানোর ভয়ে কোনো বিখ্যাত প্রকৌশলী তখন এ নিয়ে খুব বেশী মাথা ঘামাতে চাইতেন না।”

কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর পর পরিস্থিতি বদলে গেল। সুইসাইড স্কোয়াডের দিকে নজর পড়ে মার্কিন সেনাবাহিনীর। যুদ্ধবিমানের ডানায় জেট ইঞ্জিন লাগিয়ে ছোট রানওয়ে থেকে কীভাবে ওড়া সম্ভব তার গবেষণার জন্য তারা এই গ্রুপটিকে অর্থ দিল।

সামরিক সেই তহবিলের কল্যাণে ক্যালটেকের রকেট বিজ্ঞানী থিওডর ভন কারমানের নেতৃত্বে ১৯৪৩ সালে প্রতিষ্ঠা হয় জেট প্রপালশান ল্যাব (জেপিএল)। ঐ প্রকল্পের মূলে ছিলেন চেন সুচেন এবং ফ্রাঙ্ক মালিনা।

চেন ছিলেন চীনা নাগরিক, কিন্তু চীনা প্রজাতন্ত্র তখন আমেরিকার মিত্র দেশ ছিল।

“ফলে আমেরিকার মহাকাশ বিজ্ঞান প্রকল্পে একজন চীনা বিজ্ঞানীর ভূমিকা নিয়ে তেমন কোনো সন্দেহ-সংশয় ছিলনা,” বলেন ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড।

গোপন অস্ত্র গবেষণা প্রকল্পে কাজ করার জন্য চেনকে অনুমতি দেওয়া হয়। তাকে এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান পরামর্শ বোর্ডের সদস্য করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ নাগাদ চেন সুচেন হয়ে ওঠেন জেট প্রপালশান অর্থাৎ জেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুত প্রক্ষেপণের বিশ্বসেরা একজন বিশেষজ্ঞ। তাকে এবং থিওডর ভন কারমানকে জার্মানিতে একটি মিশনে পাঠানো হয়।

তাদের দায়িত্ব ছিল নাৎসি প্রকৌশলীদের, বিশেষ করে সে সময়কার জার্মান রকেট বিজ্ঞানী ওয়ার্নার ফন ব্রাউনের সাথে কথা বলা। কারণ, রকেট প্রযুক্তি সম্পর্কে জার্মানির দক্ষতা জানার জন্য আমেরিকা তখন উন্মুখ ছিল।

কিন্তু চল্লিশের দশকের শেষ দিকে এসে আমেরিকায় চেনের ক্যারিয়ারের ওপর হঠাৎ পর্দা নেমে আসে। সেই সাথে সেখানে বসবাসও কঠিন হতে শুরু করে।

মাও জে দং ১৯৪৯ সালে চীনে কম্যুনিস্ট প্রজাতন্ত্রের ঘোষণা দেন। সাথে সাথেই ‘আরেকটি অশুভ রাষ্ট্র’ হিসাবে চীনের ভাবমূর্তি তৈরি হতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রে, বলেন ক্রিস জেফারসন।

“চীনকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মুগ্ধতা উবে গিয়ে হঠাৎ শুরু হয় সন্দেহ।”

জেপিএল-এ নতুন একজন পরিচালক নিয়োগ পান। যোগ দিয়েই তার মধ্যে বিশ্বাস জন্মায়, গবেষণাগারে একটি গুপ্তচর চক্র কাজ করছে। মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইকে তিনি সন্দেহভাজন কয়েকজনের নামও দেন।

“সন্দেহভাজনদের সবাই ছিল হয় চীনা না হয় ইহুদি”, বলেন ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড।

শীতল যুদ্ধ তখন শুরু হয়ে গেছে। একতরফাভাবে কম্যুনিস্ট তকমা লাগিয়ে লোকজনকে হেনস্থা করা, জেলে পোরার প্রক্রিয়া – যেটা কুখ্যাত ম্যাকার্থি জামানা নামে পরিচিত, তার ইঙ্গিত দেখা যেতে শুরু করেছে।

সেই দমবন্ধ পরিবেশের মধ্যে এফবিআই চেন, ফ্রাঙ্ক মালিনা এবং আরো কয়েকজন বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে এরা ‘কম্যুনিস্ট’ এবং দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

সাংহাইয়ে চেন সুচেন যাদুঘর
সাংহাইয়ে চেন সুচেন যাদুঘর

চেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের প্রমাণ হিসাবে এফবিআই ১৯৩৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র কম্যুনিস্ট পার্টির একটি নথি হাজির করে, যেখানে বলা হয় যে তিনি পাসাডেনা কম্যুনিস্ট পার্টির একটি সভায় যোগ দিয়েছিলেন।

চেন অবশ্য সবসময় বলে গেছেন তিনি কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য ছিলেন না, যদিও নতুন গবেষণায় দেখা গেছে ১৯৩৮ সালে তিনি এবং ফ্রাঙ্ক মালিনা একসাথে পাসাডেনায় ঐ সংগঠনের সদস্য হন।

তবে সেসময় মার্ক্সবাদে দীক্ষা নেওয়ার চেয়ে তাদের বর্ণবাদ বিরোধিতা প্রকাশে অনেকেই নিজেদের কম্যুনিস্ট হিসাবে পরিচয় দিতেন, বলেন ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড। তিনি বলেন, পাসাডেনার ঐ সংগঠনটিও যুক্তরাষ্ট্রে ফ্যাসিবাদের হুমকি তুলে ধরার চেষ্টা করছিল।

ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের অধ্যাপক জুয়োই ওয়াং বলেন, চেন যে কখনো যুক্তরাষ্ট্রে বসে চীনের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তি করেছে তার কোনো প্রমাণ নেই। কিন্তু তারপরও তাকে গৃহবন্দী করা হয়।

জেপিএলে তাঁর কাজের অনুমতি বাতিল করা হয়। সেসময় ক্যালটেকে তাঁর সিনিয়র থিওডর ফন কারমান সরকারের কাছে লেখেন যে চেন নিরপরাধ, কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।

পাঁচ বছর গৃহবন্দী করে রাখার পর ১৯৫৫ সালে প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার চেনকে চীনে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন।

স্ত্রী এবং যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া দুই সন্তানকে নিয়ে জাহাজে ওঠার আগে তিনি অপেক্ষমাণ রিপোর্টারদের বলেছিলেন, জীবনে আর কোনোদিন তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পা রাখবেন না।

“আমেরিকায় তিনি অন্যতম সুপরিচিত একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি সেখানে অনেক অবদান রেখেছিলেন, আরো রাখতে পারতেন। এটা শুধু তাকে অপমান নয়, এটি ছিল তাঁর প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা”, বলেন লেখক-সাংবাদিক তিয়ান উ ফ্যাং।

নায়কের মর্যাদা নিয়ে চেন তাঁর মাতৃভূমি চীনে ফিরে আসেন, কিন্তু সাথে সাথে তাকে চীনা কম্যুনিস্ট পার্টিতে নেওয়া হয়নি।

কম্যুনিস্টদের মধ্যে তাকে নিয়ে সন্দেহ ছিল। তাঁর স্ত্রী ছিলেন চীনা জাতীয়তাবাদী একজন অভিজাত বংশীয় নেতার কন্যা। ফলে তাদের আনুগত্য নিয়ে প্রশ্ন ছিল চীনা নেতাদের মধ্যে।

তবে ১৯৫৮ সালে চেন চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির সদস্য হন, এবং তখন থেকেই তিনি সরকারের সাথে কোনোরকম বিরোধিতায় যাননি। সে কারণে তিনি তাঁর পেশায় অসামান্য সাফল্য পান।

তিনি যখন চীনে ফিরে আসেন তখন দেশটিতে রকেট বিজ্ঞান নিয়ে খুবই সামান্য ধারণা ছিল। কিন্তু তার ১৫ বছরের মাথায় তাঁর তত্বাবধানে চীন প্রথম মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠাতে সক্ষম হয়।

কয়েক দশক ধরে তিনি চীনে নতুন এক বিজ্ঞানী প্রজন্মকে প্রশিক্ষিত করে তোলেন। এবং চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য চীনের সক্ষমতার ভিত্তি তৈরি করেন।

চীনে যে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি গড়ে তোলেন চেন, তাঁর আবিষ্কৃত অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯৯১ সালের উপসাগরের যুদ্ধে আমেরিকার বিরুদ্ধে চীনের সিল্ক-ওয়ার্ম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। পরে ২০১৬ সালে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা চীনা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ ইউএসএস মেসনে আক্রমণ করে।

ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র যে বিশেষ দক্ষতাকে ঠেলে দিয়েছিল, সেটিই পরে তাদেরকেই আঘাত করেছে।”

তিনি বলেন, স্থানীয় কম্যুনিজমের ভয়ে আমেরিকা এমন একজনকে বিতাড়িত করেছিল যিনি কিনা যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শত্রু দেশকে ক্ষেপণাস্ত্র এবং মহাকাশ বিজ্ঞানে পারদর্শী করে তোলেন। “এটি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সর্বনাশা একটি পদক্ষেপ।”

যুক্তরাষ্ট্রের রকেট প্রপালশান কোম্পানি অ্যারোজেটের সাবেক প্রধান ড্যান কিম্বাল বলেছিলেন, চেন সুচেনকে বহিষ্কার যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত বোকামি একটি পদক্ষেপ ছিল।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এখন নতুন করে চরম বৈরিতা শুরু হয়েছে। এবার অবশ্য এই দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে নয়, বরঞ্চ এই বিরোধ ব্যবসা এবং প্রযুক্তি নিরাপত্তা নিয়ে।তাদের দেশের মহাকাশ কর্মসূচিতে চেনের অবদান সম্পর্কে অধিকাংশ আমেরিকানের কোনও ধারনাই নেই, কিন্তু অনেক চীনা-আমেরিকান এবং যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া চীনা ছাত্র-ছাত্রীরা চেন সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন। তারা জানেন চেনকে কেন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হয়েছিল এবং বর্তমান পরিস্থিতির সাথে তারা চেনের ঘটনা-প্রবাহ তুলনা করেন।

সাংবাদিক তিয়ান উ ফ্যাং বলেন, “চীন ও আমেরিকার সম্পর্ক এখন এতই খারাপ যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই সব চীনারা এখন আতঙ্কিত যে তাদেরকেও চেনের মতো পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।”

ফ্রেজার ম্যাকডোনাল্ড বলেন, চেন সুচেনের অভিজ্ঞতা একটি সতর্কবাণী যে জ্ঞানকে বিসর্জন দিলে তার পরিণতি কী হতে পারে। “আমেরিকায় প্রযুক্তির উন্নয়নে সবসময় প্রধান ভূমিকাই রেখেছেন বাইরের দেশ থেকে আসা বিজ্ঞানীরা… কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি তাতে এ নিয়ে গর্ব করে কথা বলাও কঠিন হয়ে পড়েছে।”

ম্যাকডোনাল্ড বিশ্বাস করেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কর্মসূচিতে জেপিএলের অবদানকে ততটা স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি যতটা দেওয়া হয়েছে যুদ্ধের পর গোপনে জার্মানি থেকে নিয়ে আসা ওয়ার্নহার ফন ব্রাউন এবং অন্য জার্মান বিজ্ঞানীদের।

তিনি বলেন, নাৎসি হওয়া স্বত্বেও ব্রাউন তাঁর কাজের জন্য যত প্রশংসিত হয়েছেন, চেন বা জেপিএলের অন্য বিজ্ঞানীদের কপালে তার ছিটেফোঁটাও জোটেনি।

“দেশের সমাজতন্ত্র-মনা কিছু বিজ্ঞানীর — তাদের অনেক হয় চীনা না হয় ইহুদি – হাত ধরেই যে আমেরিকার মহাকাশ কর্মসূচির ভিত্তি তৈরি হয়েছিল সে গল্প যুক্তরাষ্ট্র কখনো শুনতে আগ্রহী হয়নি।”

দুর্বল একটি রাষ্ট্র থেকে অর্থনীতি এবং মহাকাশে পরাশক্তি হিসাবে চীনের যে পরিবর্তন, চেন ছিলেন তার অন্যতম কাণ্ডারি। কিন্তু তাঁর এই অসামান্য সাফল্য চীনের না হয়ে আমেরিকার সাফল্যের ইতিহাসের অংশ হতে পারতো।

বিজ্ঞাপন
মন্তব্য করুন

অনুগ্রহ করে মন্তব্য করতে লগ ইন করুন লগ ইন

Leave a Reply

ফসল

লাভজনক সবজি চাষ পদ্ধতি

সবজি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফসল। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় সবজিকে উদ্যানতাত্বিক ফসল (Horticultural crops) বলা হয়ে থাকে। পুষ্টিমানের দিক থেকে সবজি ফসল যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি বাণিজ্যিকভাবেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। সেজন্য সবজি চাষের আধুনিক কলাকৌশল জানা জরুরি।

আর আধুনিক কলাকৌশল বলতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদকেই বোঝানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু সবজি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। তবে সারাদেশে যেমন সব ধরনের সবজি উৎপাদিত হয়না ঠিক তেমনি সকল সবজিই আবার সারাবছর উৎপাদিত হয়না। একেক অঞ্চলে একেক ধরনের শাকসবজি উৎপাদিত হয়ে থাকে। আবার বছরের বিশেষ বিশেষ সময়ে বিশেষ বিশেষ সবজির জাত উৎপাদন করা যায়।

সারাদেশে সারাবছরই যেসকল সবজি সহজে উৎপাদিত হয়ে থাকে তাদের কিছু শাকসবজির কথা এখানে তুলে ধরছি। লালশাক, ডাটাশাক, পুইশাক, কলমিশাক, মিষ্টিআলু শাক, ঢেড়শ, গাজর, বরবটি, টমেটো, লাউ ও লাউশাক, পাটশাক, শশা, কাঁচকলা, বেগুন, পেপে, করলা, কচুশাক, কচুর লতি, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা ইত্যাদি পরিচিত শাকসবজি। তাছাড়া অপরিচিত বিশেষ কিছু সবজি বিশেষ বিশেষ এলাকার বিশেষত্ব হিসেবে উৎপাদিত হয়ে থাকে। উপরোক্ত ফসলগুলোর মধ্যে কিছু শুধু শাক আর বাকীগুলো শাক এবং সবজি উভয় হিসেবেই প্রচলিত রয়েছে।

কৃষিতাত্বিকভাবে রবি (শীতকাল) ও খরিপ (গ্রীষ্মকাল)- এ দুধরনের মৌসুম রয়েছে। খরিপের আবার দুটি ভাগ, যথা- খরিপ-১ (আগাম গ্রীষ্ম) এবং খরিপ-২ (বর্ষাকাল)। তবে শীতকালীন শাকসবজির মধ্যে বাহারি ও রকমারি বৈচিত্র একটু বেশি। শুধুমাত্র শীতকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলগুলোর মধ্যে রয়েছে- টমেটো, শীতলাউ, ফুলকপি, বাধাকপি, গাজর, সীম, মূলা, ব্রকলি, বাটিশাক, ওলকপি, শালগম, বেগুন, গোল আলু ইত্যাদিই প্রধান। অপরদিকে শুধুমাত্র গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে উৎপাদিত হয় এমন ফসলের মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন ধরনের কচু, ওলকচু, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, কাকরোল, পটোল, করলা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া ইত্যাদিই প্রধান।

সবজি ফসল উৎপাদন অন্যান্য ফসলের মতো নয়। সবজি ফসল উৎপাদনের জন্য বিশেষ ধরনের যত্নের প্রয়োজন হয়। আর বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ করতে গেলে অল্প পরিমাণ জায়গায় অধিক পরিমাণ ফসল ফলিয়ে লাভবান হওয়া সম্ভব। সবজি আবাদেও জন্য বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গা বেছে নিতে হবে। সেখানে ভালোভাবে চাষ-মই দিয়ে জমির মাটি জো অবস্থায় ঝুরঝুরে করে সেখানে এক মিটার প্রশস্ত এবং প্রয়োজনমত জমির আকার-আকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে লম্বা বেড তৈরী করে নিতে হবে। প্রতিটি বেডের মাঝখানে ৬ থেকে ৮ ইঞ্চি পরিমাণ গর্ত করে নালা সৃষ্টি করতে হবে। অর্থাৎ নালার মাটি তুলেই দুইপাশে বেড প্রয়োজনমত উঁচু করতে হবে।

এভাবে বেড তৈরীর একটি বিশেষত্ব হলো শাকসবজি চাষাবাদ অন্য সাধারণ ফসল আবাদের চেয়ে একটু ভিন্ন। এর জন্য প্রয়োজন হয় বাড়তি সতর্কতা ও যত্নের। শাকসবজির চাষাবাদে যেমন শুষ্ক মৌসুমে সেচের চাহিদা থাকে অপরদিকে বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির পানি বের করে দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সেজন্যই বেড তৈরী করে মাটি কিছুটা উঁচু করা হয় সেখানে আবার নালা তৈরী করে নিষ্কাষনের ব্যবস্থাও রাখা হয়। কিন্তু বেড এবং নালা তৈরী না করলে সেটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আবাদ হয়না। সেঠা হয় সাধারণ শাকসবজি চাষ। এতে ফলন অনেক কমে যায়।

পেপে, কাঁচকলা- এ জাতীয় সবজি বসতবাড়ির আঙ্গিনায়, রাস্তা বা পুকুরের ধারে সহজেই আবাদ করা যায়। লালশাক, ডাটা শাক, পাটশাক, মূলাশাক, গাজর, শালগম ইত্যাদি সবজি তৈরীকৃত বেডে ছিটিয়ে বীজ বুনে দিলেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। তাছাড়া টমেটো, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপি, ঢেড়শ, কচু, ওলকচু ইত্যাদি সবজি এক মিটারের বেডে দুই সারি করে নির্ধারিত দূরত্বে চারা লাগিয়ে আবাদ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সেজন্য এসব সবজি উৎপাদনের জন্য আলাদাভাবে নার্সারিতে চারা তৈরী করে নিতে হয়। অপরদিকে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, শশা, চাল কুমড়া, পটোল, কাকরোল, করলা, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, সীম, বরবটি ইত্যাদি লতাজাতীয় সবজি চাষের জন্য উক্ত বেডে দুইটি সারি করে সেখানে জাংলা দিয়ে দিতে হয়। সাধারণত বেডের দুইপাশে খুটি দিয়ে পরে তা ইংরেজি অক্ষর ‘এক্স’ আকৃতিতে বা ‘ভি’ আকৃতিতে বাঁকিয়ে বেঁধে দিতে হয়।

বেড ছাড়াও লতাজাতীয় এসব সবজি অতি সহজেই ক্ষেতের আইলে, রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে বিশেষ ব্যবস্থায় আবাদ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। তবে অন্যান্য যেকোন ফসলের তুলনায় এসব সবজি ফসলের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। বিনা আবাদেই এসব সবজি চাষ করা যেতে পারে। সেজন্য বন্যা পরবর্তীতে পুনর্বাসনের সময় বিনাচাষে এসব আবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ জৈবভাবেই এসব সবজি ফসল উৎপাদন সম্ভব। আবাদের পূর্বে সামান্য পরিমাণ প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সার ব্যবহার করে বাকীটা মেটাতে হবে বাড়িতে উৎপাদিত জৈব সারের মাধ্যমে। তারপর আন্তপরিচর্যা এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ ঠেকাতেও জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। তখন এসব উৎপাদিত ফসল সকলের জন্য নিরাপদ খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

কাজেই এভাবেই সারাবছর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় স্বষ্পপরিসরে শাকসবজি উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে তা বাণিজ্যিকভাবেও লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আমাদের শারীরিক পুষ্টি চাহিদার একটি বিরাট অংশ শাকসবজি থেকে আসা দরকার। দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের গড়ে কমপক্ষে আড়াইশ গ্রাম শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। আর সেটা নিবিড়ভাবে এবং নিরাপদভাবে খেতে হলে নিজের উৎপাদিত শাকসবজি খাওয়াই সবচেয়ে উত্তম। কাজেই আমাদের সারাবছর অলস সময়টাকে কাজে লাগিয়ে আসুন নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় সবজির বাগান গড়ে তুলি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

বাংলাদেশ

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

একজন টেলিভিশন তারকা, কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৫৪ সালের এদিনে জন্মগ্রহণ করেন চাঁদপুরে (সার্টিফিকেট অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ২৮শে জুন ১৯৫৬)। শাইখ সিরাজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন ভূগোলে। ছাত্রজীবনেই সম্পৃক্ত হন বাংলাদেশ টেলিভিশন, বেতার ও সংবাদপত্রের সঙ্গে।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

শাইখ সিরাজ ইমপ্রেস টেলিফিল্ম লিমিটেড, চ্যানেল আই-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও বার্তা প্রধান। টানা সাড়ে চার দশক ধরে তিনি গণমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে দেশের কৃষি ও কৃষক তথা উৎপাদন-অর্থনৈতিক খাতে অপরিসীম ভূমিকা রেখে চলেছেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যে বিপুল গ্রহণযোগ্যতা লাভ করেন তিনি। পরে তার নিজস্ব পরিচালনাধীন টেলিভিশন ‘চ্যানেল আই’তে শুরু করেন কৃষি কার্যক্রম হৃদয়ে মাটি ও মানুষ। উন্নয়ন সাংবাদিকতার জন্য তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দু’টি রাষ্ট্রীয় সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার (২০১৮) ও একুশে পদক (১৯৯৫) লাভ করেন।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

টেলিভিশনসহ গণমাধ্যমের সঙ্গে প্রায় চার দশকের একনিষ্ঠ পথচলার মধ্য দিয়ে শাইখ সিরাজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন উন্নয়ন সাংবাদিকতার এক অগ্রপথিক হিসাবে। গণমাধ্যমে তার উদ্বুদ্ধকরণ প্রচারণায় আমূল পরিবর্তন এসেছে বাংলাদেশের কৃষিতে। বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সূচিত হয়েছে বৈপ্লবিক সাফল্য।

গ্রামীণ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন। একইসঙ্গে শহর-নগরের মানুষকে করেছেন কৃষিমুখি। ফলে দেশের অর্থনীতিতে কৃষির বহুমুখি অবদান সূচিত হয়েছে।

‘মাটি ও মানুষ’

বাংলাদেশের কৃষিতে গত কয়েক দশকে যে বিরাট পরিবর্তন ঘটেছে, শাইখ সিরাজকে বর্ণনা করা হয় সেই পরিবর্তনের পেছনে অন্যতম প্রধান এক চরিত্র হিসেবে।

বাংলাদেশে যখন বিজ্ঞানীরা একের পর এক নতুন উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন করে চলেছেন, কৃষিতে নতুন ধ্যান ধারণা এবং কৌশল চালুর জন্য সরকারের নানা পর্যায় থেকে চেষ্টা চলছে, সেগুলো সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে বিরাট ভূমিকা রাখে তার কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠান, ‘মাটি ও মানুষ।’

“শুরুতে এই অনুষ্ঠানটা হতো আমার দেশ নামে। তখন এটি ৫০ মিনিটের পাক্ষিক অনুষ্ঠান। পরে এটিকেই ‘মাটি ও মানুষ’ নামে সাপ্তাহিক অনুষ্ঠানে রূপান্তরিত করি। আমার মনে হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের চেয়ে বেশি দরকার শিক্ষামূলক মোটিভেশনাল অনুষ্ঠান। কৃষকদের যদি নতুন বীজ, নতুন প্রযুক্তি, নতুন কৌশল, এসব ঠিকমত বোঝানো যায়, তাহলে কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন নিয়ে আসা সম্ভব।”

গত চার দশক ধরে শাইখ সিরাজ হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের কৃষকদের কাছে কৃষি বিষয়ক তথ্যের প্রধান উৎস। উনিশ’শ আশির দশকে, যখনো টেলিভিশন ঘরে ঘরে পৌঁছায়নি, তখনো গ্রামের হাটেবাজারে, কমিউনিটি সেন্টারে প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় ‘মাটি ও মানুষ’ দেখার জন্য ভিড় করতো মানুষ।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৬৮তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

তবে কৃষকদের নতুন ধরণের কৃষিতে উৎসাহিত করার কাজটা সহজ ছিল না।

“আজকের কৃষক এবং তিরিশ বছর আগের কৃষকের মধ্যে তফাৎ আকাশ আর পাতাল। তখন কৃষকের কাছে একজন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা যে কথা বলতেন, একজন টেলিভিশন উপস্থাপক হিসেবে আমি যেকথা বলতাম, সেটা তারা মানতে চাইতো না। তারা ভাবতো, আমরা যেধরণের কৃষির কথা বলছি, যদি সেটাতে ভালো ফসল না হয়? এ কারণে সে সহজে মোটিভেট হতে চাইতো না। সহজে নতুন প্রযুক্তি নিতে চাইতো না।”

“আমি যখন আশির দশকে উচ্চফলনশীল নতুন জাতের ধানের কথা বলছি, গমের কথা বলছি, তখন পরিস্কার তারা আমাকে বলতো এই রাবার ভাত খাবো না। তখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধানের মান তেমন ভালো ছিল না। ভাতটা ছিল রাবারের মতো, ভাতের দানা উপর থেকে থালার উপর ফেললে সেটি রাবারের মতো ড্রপ করতো।”

কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন তাদের গবেষণায় নতুন নতুন সাফল্য পাচ্ছিলেন, আর সেই সঙ্গে শাইখ সিরাজও তার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষকদের মন জয় করার জন্য নতুন কৌশল নিচ্ছিলেন।

যুক্তরাষ্ট্রের অশোকা ফেলো শাইখ সিরাজ খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচন বিষয়ে সাংবাদিকতায় অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসাবে তিনি ২০০৯ সালে অর্জন করেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার এ এইচ বুর্মা এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া তিনি পেয়েছেন এশিয়ার মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গুসি পিস প্রাইজ, বৃটেনের বিসিএ গোল্ডেন জুবিলি অনার এ্যাওয়ার্ডস। বৃটিশ হাউজ অব কমন্স তাকে প্রদান করেছে বিশেষ সম্মাননা, বৃটিশ-বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সংগঠন তাকে দিয়েছে গ্রীন এ্যাওয়ার্ড। এ ছাড়া পেয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির স্বর্ণপদক, ডা. ইব্রাহিম মেমোরিয়াল স্বর্ণপদক, রণদা প্রসাদ সাহা স্বর্ণপদকসহ অর্ধশত দেশি-বিদেশি পুরস্কার ও সম্মাননা।

কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ
কৃষকের বন্ধু ও কৃষি উন্নয়ন এর পথিকৃৎ শাইখ সিরাজের ৭০তম জন্মদিন আজ

চ্যানেল আই ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে কৃষি বিষয়ক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে থাকেন। তিনি এদেশে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে নিরস বিষয় হিসাবে উপেক্ষিত কৃষিতে জাতীয় সংবাদের প্রধান খবরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শাইখ সিরাজের প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে- মৎস্য ম্যানুয়েল, মাটি ও মানুষের চাষবাস, ফার্মার্স ফাইল, মাটির কাছে মানুষের কাছে, বাংলাদেশের কৃষি: প্রেক্ষাপট ২০০৮, কৃষি ও গণমাধ্যম, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (সম্পাদিত), আমার স্বপ্নের কৃষি, কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট (২০১১), সমকালীন কৃষি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ (২০১১), কৃষি ও উন্নয়ন চিন্তা (২০১৩) ইত্যাদি।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশে হতে পারে সারের সংকট

সারের সংকট
সারের সংকট
সারের সংকট

চলতি বোরো মৌসুমে সার কিনতে কৃষকদের সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে বেশি দিতে হয়েছে। আর সরকারকেও সার বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে বাজেটে বরাদ্দের তিন গুণের বেশি—প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ এখন মিউরেট অব পটাশ (এমওপি) সার আমদানি নিয়ে বিপাকে পড়েছে।

ধান, আলু ও সবজি চাষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এমওপি সারের ৬০ শতাংশ আনা হতো রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে। ওই দুই দেশ নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়ায় এখন বাংলাদেশকে এমওপি কিনতে হচ্ছে কানাডা থেকে। বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়া ও আমদানিতে অনিশ্চয়তার কারণে বাংলাদেশে সারের সংকট হতে পারে। ভর্তুকির চাপ সামলাতে বাংলাদেশকে সব ধরনের সারের খুচরা মূল্য বাড়াতে হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিবিষয়ক সংস্থা ইউএসডিএর চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। ‘বাংলাদেশে সার সরবরাহ ও ব্যবহারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের এমওপি সারের ২০ শতাংশ সরবরাহ কমানো হলে সামনের বোরো মৌসুমে ধান, গম ও রবি মৌসুমের অন্যান্য ফসলের উৎপাদন ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কমতে পারে। এতে বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।

এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

এ এম এম শওকত আলী, সাবেক কৃষিসচিব

তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দেশে চলতি বোরো মৌসুমে নতুন করে আর সারের দরকার হবে না। সামনে আলুর মৌসুমে ইউরিয়া, এমওপিসহ অন্যান্য সারের চাহিদা বাড়বে। ওই সময়ের জন্য সার সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কানাডা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার সরবরাহকারী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।

জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কানাডা থেকে মোট আট লাখ টন এমওপি সার আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এ ব্যাপারে ওই দেশের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা স্মারক হয়েছে। ফলে এই সার নিয়ে সরকারের কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তবে সার বাবদ সরকারের বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি বাড়ছে। এই চাপ নিয়েও সরকার ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে ওই ভর্তুকি দিয়ে যাবে।’

কমানো হয়েছে চাহিদা

বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে ৬৯ লাখ টন রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এই চার ধরনের সার ব্যবহার হয় ৫৭ লাখ টন। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের ওই চার ধরনের সারের চাহিদা কমিয়ে ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

দেশে প্রয়োজনীয় সারের ৮০ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে এমওপি সারের বড় অংশ আসে রাশিয়া ও বেলারুশ থেকে।

প্রসঙ্গত, ওই চারটি প্রধান সার কৃষকদের কাছে বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিয়ে থাকে। চলতি অর্থবছরে সরকার প্রাথমিকভাবে সারে ভর্তুকি বাবদ ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে গত ছয় মাসে সারের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। বেশির ভাগ সারের দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাওয়ায় সরকারকে ভর্তুকির পরিমাণ ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা করতে হয়। কিন্তু অর্থবছরের শেষের দিকে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে হিসাব করে দেখা হয়েছে, ভর্তুকির পরিমাণ এবার বেড়ে কমপক্ষে ৩০ হাজার কোটি টাকা গিয়ে দাঁড়াবে।

জিপসাম, জিংক সালফেট ও অ্যামোনিয়াম সালফেট ও ম্যাগনেসিয়াম সালফেট সারে সরকার কোনো ভর্তুকি দেয় না। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করে থাকেন। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষককেও বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে।

সাবেক কৃষিসচিব এ এম এম শওকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমনিতেই এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমাদের ফসলের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে সারের কারণে নতুন করে যাতে আর সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। আর সরকারের অন্যান্য খাতের ভর্তুকি কমিয়ে প্রয়োজনে সারে ভর্তুকি বাড়াতে হবে, যাতে সারের দাম কম থাকে। কারণ, কৃষকের হাতে এখন টাকা কম। বিশ্ববাজার থেকেও খাদ্য আমদানি করা সামনের দিনে আরও কঠিন হতে পারে। ফলে দেশের উৎপাদন ঠিক রাখতে সারের দাম ও জোগান ঠিক রাখা উচিত।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোটেক

কৃষি উৎপাদন বাড়াতে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা এক সঙ্গে কাজ করতে রাজি

ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি
ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকেরাফাইল ছবি

ডাচ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে দুই দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছেন।

গতকাল সোমবার নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগে অনুষ্ঠিত কৃষি খাতের ব্যবসাবিষয়ক এক সম্মেলনে দুই দেশের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এগ্রি বিজনেস কনক্লেভে বাংলাদেশের প্রায় ৪০জন উদ্যোক্তা ডাচ কৃষি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরাসরি প্রযুক্তি সহযোগিতা ও ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেছে ওয়েগেনিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়।

আলোচনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা প্রযুক্তি কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা মেধাস্বত্ব সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিলে নেদারল্যান্ডসের ব্যবসায়ী ও বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি সহযোগিতা দিতে রাজি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে ডাচরা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তারাও তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী। এ ছাড়া ডাচ সরকার ইতিমধ্যে বাংলাদেশের বীজ, পশু খাদ্য, পোলট্রি, হর্টিকালচার ও এ্যাকুয়াকালচার বিষয়ে গবেষণা কার্যক্রম সম্পাদন করেছে, যা ওই দেশের বেসরকারি খাতকে আরও উৎসাহিত করেছে।

আলোচনায় কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করতে তৈরি আছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্কয়ার, ইস্পাহানি এগ্রো, একে খান অ্যান্ড কোম্পানি, প্যারাগন গ্রুপ, এসিআই, জেমকন গ্রুপসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশের উদ্যোক্তারা ডাচ প্রযুক্তির প্রয়োগ সরেজমিনে দেখতে যাবেন।

বাংলাদেশের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের পোল্ট্রিখাতে সহযোগিতার আলোচনা অনেকটা এগিয়েছে উল্লেখ করে মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের মধ্যে মৎস্য, পশুপালন ও হর্টিকালচারে সহযোগিতার বিপুল সম্ভাবনা আছে।

কনক্লেভ আয়োজনে প্রথমবারের মতো দূতাবাসের সঙ্গে অংশীদার হয়েছে নেদারল্যান্ডসের কৃষি মন্ত্রণালয়, নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি, নেদারল্যান্ডস ফুড পার্টনারশিপ, ডাচ-গ্রিন-হাইজডেল্টা, লারিভ ইন্টারন্যাশনাল, স্টান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ।

কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থানকারী নেদারল্যান্ডসের আয়তন বাংলাদেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কম। ২০২১-এ কৃষিপণ্য ও খাদ্য রপ্তানি করে নেদারল্যান্ডস ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি আয় করেছে।

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন

এগ্রোবিজ

পতিত জমিতে চিনাবাদাম চাষে লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মেহেরপুর: পতিত ও অনুর্বর বেলে মাটির জমিতে চিনাবাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মেহেরপুরের চাষিরা। ফলন ও বাজার দর ভালো এবং কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এই এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বাদামের চাষ। 

সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা, শ্যামপুর, টেংগারমাঠ ও গোপালপুর গ্রামের অধিকাংশ জমির মাটি বেলে। ফলে এই এলাকার চাষিরা ধান, গম, পাটসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে খুব একটা লাভবান হতে পারেন না।

ধান কাটার পর এ সব জমি সাধারণত পতিত থাকে। এজন্য ৯০ দিনের ফসল হিসেবে অল্প খরচে বাদাম চাষ করছেন এলাকার চাষিরা।  

মেহেরপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় এবার বাদাম চাষ হয়েছে ১৫ হেক্টর জমিতে। এবার এক বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করতে চাষিদের খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা সেক্ষেত্রে বাদামের ফলন হয়েছে ৬ থেকে ৭ মণ। আর এ  ফলনে প্রায় ২০ হাজার টাকা ঘরে তুলছেন তারা। বাজারে প্রতিমণ বাদাম বিক্রি হচ্ছে ২৭শ’ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত।  সদর উপজেলার মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাদাম চাষি খাঁজা আহমেদ, কাওছার আলী ও ফিরোজ হোসেন বাংলানিউজকে জানান, এলাকার মাটি বেলে হওয়ায় সাধারণত সবজি, আলু ও অন্যান্য ফসল চাষ করার পর জমি পতিত থাকে। সে সময়ে চিনা বাদামের চাষ করা হয়। বাদাম চাষে খরচ কম এবং উৎপাদন ও বাজার দর ভাল। তাই দিন দিন চাষিরা তাদের পতিত জমিতে চিনা বাদামের চাষ শুরু করছেন।  

এছাড়া বাদাম ছাড়ানো, শুকানোসহ যাবতীয় কাজ করে থাকেন এখানকার নারীরা। বাদামের গাছ আবার শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করছেন গৃহিণীরা।  

নারী শ্রমিক সাহানা খাতুন ও জরিমন নেছা বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বাদাম ছাড়ানো ও শুকানোর কাজ করে থাকি। এলাকার ২৫/৩০ জন নারী শ্রমিক এ কাজ করে আসছেন।  
গৃহিণী সাজেদা খাতুন ও জামেলা খাতুন জানান, বাদামের লতা জালানি হিসেবে বেশ ভাল। তাই লতাও বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, চিনা বাদামের চাষ সাধারণত পতিত জমিতে হয়ে থাকে। এলাকার চাষিরা এই জমিতে বাদামের চাষ করে বাড়তি আয় করছেন। তাই বাদাম চাষ যাতে আরও সম্প্রসারিত হয় সেজন্য কৃষি বিভাগ চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছে।  

সম্পূর্ণ খবরটি পড়ুন
বিজ্ঞাপন

শীর্ষ সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: শাইখ সিরাজ
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। দা এগ্রো নিউজ, ফিশ এক্সপার্ট লিমিটেডের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান। ৫১/এ/৩ পশ্চিম রাজাবাজার, পান্থাপথ, ঢাকা -১২০৫
ফোন: ০১৭১২-৭৪২২১৭
ইমেইল: info@agronewstoday.com, theagronewsbd@gmail.com